২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

রাজধানী দেশে দেশে : কিছু প্রসঙ্গ

- ছবি : নয়া দিগন্ত

সম্প্রতি নয়া দিগন্তের প্রথম পাতায় একটি খবর উঠেছে। তা ইন্দোনেশিয়ার নতুন রাজধানী নিয়ে। সাত হাজার দ্বীপের এই বিশাল এশীয় দেশের (আয়তনে একটি বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্র, লোকসংখ্যাও কম নয়) উত্তর পূর্বাংশে, বোর্নিও দ্বীপের কালিমান্তান প্রদেশের এক প্রান্তে এই নতুন রাজধানী শহর গড়ে তোলা হচ্ছে।

দেশে দেশে যদিও সাধারণত স্বৈরাচারী শাসকরাই কারণে-অকারণে দীর্ঘ দিনের সুপ্রতিষ্ঠিত ও সুপরিচিত রাজধানী বদলিয়ে প্রধানত নিজের সুবিধা মাফিক অঞ্চল এবং বিপুল রাষ্ট্রীয় ব্যয়ে তা স্থানান্তরিত করে থাকেন। ইন্দোনেশিয়ার বেলায় ঘটেছে অন্য রকম। সে দেশের বর্তমান রাষ্ট্রপতি ও সরকারপ্রধান জোকো উইদোদো একনায়ক বা স্বৈরাচারী রূপে পরিচিত নন বরং তার কিছুটা সুনাম রয়েছে। তারই বাস্তব চিন্তাপ্রসূত প্রকল্প নয়া রাজধানী। কথা উঠেছে অচিরেই যে, বিরাট দেশের এক কোনায় ও সুদূরে কেন রাজধানী সরানোর এত তোড়জোড়? বিশেষ করে, এর পেছনে যখন বিশাল অঙ্কের অর্থ ব্যয় ঘটবে রাষ্ট্রীয় কোষাগার হতে। নতুন রাজধানীর নাম ‘মুসান্তারা’ বলে জানা যায়। যার মানে, ‘সন্তান’ এটা মূলত হিন্দু জনগোষ্ঠীর ঘনিষ্ঠ সংস্কৃত ভাষার শব্দ যদিও ইন্দোনেশিয়ার হিন্দু জনসংখ্যা খুব বেশি নয়। প্রধানত সে দেশের ছোট্ট মালদ্বীপে তাদের বসবাস আর বালি হচ্ছে একটা বিখ্যাত পর্যটন এলাকা। এখানকার হিন্দু ধর্মাবলম্বী জনগোষ্ঠীর জীবনাচার, সংস্কৃতি ও স্বাতন্ত্র্য বিদেশী পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয়। বালির রাজধানীর নাম দেনপাশার।

ইন্দোনেশীয় ভাষায় (এর নাম বাহাস ইন্দোনেশীয়) সংস্কৃতের প্রভাব উল্লেখযোগ্য, অতীত সংযোগের কারণে। যেমন, সে দেশের প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট সুকর্ন ও তার কন্যা মেঘবতী সুকর্নপুত্রীর নামেই রয়েছে সংস্কৃত ভাষার প্রমাণ। ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় বিমান সংস্থার নাম ‘গারুদা’। এটা মূলত সংস্কৃত ভাষার ‘গরুড়’ পাখির নাম। হিন্দুদের পুরাণে গরুড় পক্ষীর সবিশেষ উল্লেখ রয়েছে। যা হোক, দীর্ঘ দিন ধরে বর্তমান রাজধানী জাকার্তা নগরী আর সমস্যার ভার বইতে পারছে না। তাই প্রেসিডেন্ট বাধ্য হলেন রাজধানী সরানোর চিন্তা করতে। তার যুক্তিগুলো ফেলনা নয় মোটেই। যদিও নতুন রাজধানী এখান থেকে বহু দূরে; তবে ভবিষ্যতে সেটারও একই সমস্যা দেখা দিতে পারে।

রাজধানী সরানো নিয়ে সেই পাকিস্তান আমলে বহুলালোচিত স্বৈরাশাসক এবং স্বঘোষিত ফিল্ড মার্শাল আইউব খান কম হইচই বাধাননি। ১৯৫৮ সালের ২৭ অক্টোবর তিনি দেশের প্রথম সামরিক অভ্যুত্থান করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা জবরদখল করেছিলেন। আইউব খান ছিলেন সুদর্শন পাঠান এবং বিশ্ববিখ্যাত স্যান্ডহার্স্ট (ইংল্যান্ড) মিলিটারি একাডেমির ছাত্র। তাকে অবিভক্ত পাকিস্তানের প্রথম দেশীয় প্রধান সেনাপতি করা হয়েছিল ১৯৫০ সালেই। এর আগে ছিলেন ঢাকায়; প্রদেশের জিওসি। ক্ষমতা করায়ত্ত করে তিনি ১৯৫৯ সালেই করাচি মহানগর থেকে দীর্ঘকালীন কেন্দ্রীয় রাজধানী সরিয়ে প্রথমে নিজের প্রভাবাধীন সেনাসদর রাওয়ালপিন্ডি এবং পরে পাশেই ‘ইসলামাবাদ’ নামের সম্পূর্ণ নতুন শহরে সরানোর চিন্তা করেন। তার বক্তব্য ছিল, করাচি শত্রু দেশ ভারতের হামলার আওতায়। রাজধানী তাই হাজার মাইল দূরে সরাতে হবে। তবে তার সাধের ‘পিন্ডি-ইসলামাবাদ যে সেই ভারতের হাত থেকে মোটেই নিরাপদ নয়। তা তিনি ভুলে গিয়েছিলেন। আর নিজের গড়া ইসলামাবাদের মসনদে বসার আগেই তাকে দেশের গদি থেকে চিরবিদায় নিতে হয়। পবিত্র ইসলামকে আইউব খান কতটা কেমন আবাদ করে গেছেন তা দেশবাসী দেখেছেন।

ইসলামাবাদে বছর দু’য়েক রাজত্ব করেছেন আইউবের নিযুক্ত প্রধান সেনাপতি এবং দেশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে উত্তরসূরি কুখ্যাত ইয়াহিয়া খান। এ দিকে পাকিস্তানের ‘জাতির পিতা’ মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর (১৮৭৬-১৯৪৮) স্মৃতিবিজড়িত করাচি মহানগর একটি বিভাগীয় শহরে অবনমিত হয়ে যায়। তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ বুঝতে পেরেছিলেন আইউবের উদ্দেশ্য কী ছিল; সুদূর পাটওয়ায় মালভ‚মিতে ও মারগালা পাহাড়ের ওপর দেশের রাজধানী স্থানান্তরের পেছনে। তাই ঢাকায় ‘আইউব নগর’ নামে রাজধানী করে এ দেশের মানুষকে শান্ত করা যায়নি।

ইন্দোনেশিয়ার মতো মালদ্বীপও রাজধানী নিয়ে মহা সমস্যায়। ইন্দোনেশিয়ার না হয় কয়েক হাজার অপেক্ষাকৃত বৃহৎ দ্বীপ রয়েছে, মানুষ নেই। মালদ্বীপের রাজধানী মালে শহর জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্কটে ডুবে যেতে পারে ভারত মহাসাগরে। এখনই মালে বিস্তীর্ণ পানির ওপর কোনো মতে মাথা তুলে ভেসে আছে। অন্য দিকে ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তা মহানগরী বিখ্যাত হলেও বিশেষজ্ঞরা আগেই আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন। এ শহর দেবে যেতে পারে। কারণ এখানে ভূগর্ভের পানি অতিরিক্ত তোলা হচ্ছে। কারণ জাকার্তায় লোকসংখ্যা অত্যধিক। ফলে শহরটিতে থাকা অত্যন্ত সমস্যাবহুল ব্যাপার এবং এমন নগরকে পরিকল্পনায় আনা প্রায় অসম্ভব। তাই নগরশৃঙ্খলা ও সুব্যবস্থাপনা সম্ভব নয় সেখানে। বৃহৎ ইন্দোনেশীয় যেমন রাজধানী নিয়ে বিপাকে, তেমনি এশিয়ার আরেক দেশ ক্ষুদ্র মালদ্বীপও বেকায়দায় রাজধানী মালে নিয়ে। তবে ইন্দোনেশিয়ার বহু শহর থাকলেও মালদ্বীপে সব মিলিয়ে দুই-তিনটির বেশি শহর নেই গোটা দেশে। তাই তার সমস্যা, অসুবিধা ও বিপদ অনেক বেশি ইন্দোনেশিয়ার চেয়ে। কয়েক বছর আগে সার্ক সদস্য, মালদ্বীপের মন্ত্রিসভার বৈঠক বসেছিল সচিবালয় বা প্রেসিডেন্ট হাউজে নয়, একেবারে সাগরতলে। জলবায়ু পরিবর্তনের সম্ভাব্য সঙ্কট মোকাবেলায় আগাম প্রস্তুতি নিতে এটা করা হয় কাচের আড়ালে।

বাংলাদেশ সে তুলনায় ভালোই আছে, যদিও জলবায়ু পরিবর্তিত হলে দেশের উপক‚লের বহু এলাকা ডুবে যাবে। রাজধানী ঢাকা সাগর থেকে বেশ দূরে। তা বলে আত্মসন্তোষের অবকাশ নেই। এ দেশে সমস্যা প্রকৃতি ও পরিবেশ নয়, রাজনীতি। তাই বেশ কিছুদিন আগে ঢাকার একটি পত্রিকাতেই খবর, ঢাকার নাম পাল্টে যেতে পারে। তবে এতে চমক থাকলেও তাকলাগানো এ খবরের বিষয়ে আর কিছু জানা যায়নি। অন্য দিকে বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের বিরোধীদের কথা হলো, যে দেশে সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়ার কবর নিয়ে আপত্তি এবং তার দেহাবশেষ ঢাকার কবর থেকে তুলে বঙ্গোপসাগরে ফেলে দেয়ার আশঙ্কা অবাস্তব নয়, সে দেশে সব কিছু সম্ভব হতে পারে।

যা হোক, ঢাকার আগের নাম ‘জাহাঙ্গীরনগর’ ফিরে আসার সম্ভাবনা নেই। কেননা এ নামে ঢাকার অদূর, সাভারের লাল মাটিতে ভার্সিটি রয়েছে ১৯৭০ থেকেই। অনেকে প্রশ্ন করেন, ঢাকার প্রতিষ্ঠাতা কি মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীর নাকি বাংলার সুবেদার ইসলাম খাঁ? ১৬০৮ সালে ঢাকা নগর নতুন করে গড়ে উঠেছিল প্রধানত ইসলাম খাঁর উদ্যোগে। তবে তিনি দিল্লির সম্রাট জাহাঙ্গীরের নিয়োজিত ও প্রেরিত এবং সম্রাটের নামে এই সুবাদারই ঢাকার নামকরণ করেছিলেন।

আবার জাহাঙ্গীরের আত্মজীবনী ‘তুজুক-ই-জাহাঙ্গীরী’তে জানা যায়, তিনি ঢাকায় এসে বুড়িগঙ্গার জোয়ারভাটা দেখে খুব অবাক হয়ে মন্তব্য করেন, ‘যেখানে নদী সকালে এক রকম, বিকেলে অন্য রকম; সে দেশে থাকা যায় না। এমন জায়গায় কখন কী ঘটে, বলা যায় না।’

রাজধানী নিয়ে যখন কথা এলোই, তখন বলতে হয় মধ্যযুগের দিল্লির বাদশাহ বা সুলতান মুহাম্মদ বিন তুগলকের তুগলকি কাণ্ডকারখানা। তিনি ব্যাপকভাবে সমালোচিত তার খাময়েখালিপনা ও হঠকারিতার জন্য। চতুর্দশ শতকের এই সুলতান অদ্ভুত পদক্ষেপ নিয়ে শেষাবধি ব্যর্থ হয়েছিলেন। এমনি এক পদক্ষেপ হলো সাম্রাজ্যের রাজধানী দিল্লি থেকে বহু দূরে দাক্ষিণাত্যের দেবগিরিতে স্থানান্তর। তবে নানান অসুবিধায় তা টিকেনি। সম্রাটকে আবার দিল্লিতে ফিরতে হয়। দেবগিরির ‘দৌলতাবাদ’ নামে দিয়েও লাভ হয়নি। মাঝখান দিয়ে রাষ্ট্রীয় কোষাগার তথা জনগণের বিপুল অর্থের নিদারুণ অপচয় এবং মানুষের অনেক কষ্ট হয়েছিল। কোনো স্থান সাম্রাজ্যের অপেক্ষাকৃত মধ্যবর্তী হলেও যে সব সময়ে রাজধানী করা ঠিক হয় না তার প্রমাণ এটা।

মধ্য এশিয়ার বিশাল রাষ্ট্র ও সাবেক সোভিয়েত ‘প্রজাতন্ত্র’ কাজাখস্তান। লোকজন সাধারণত মুসলিম এবং চেহারা মঙ্গোলয়েড। তবে দেশটি যেমন বৃহৎ, এর শাসকরাও জনবিচ্ছিন্ন এবং ব্যক্তিপূজার ক্ষেত্রে বৃহৎ ভূমিকা রেখেছে। যেমন, সে দেশের রাজধানী দীর্ঘদিন ছিল দক্ষিণ প্রান্তের আসমা আতায়। পরে নাম হলো তালিমাতি। সেখান থেকে রাজধানী স্থানান্তর করা হলো দেশটির উত্তরাংশের আস্তানায়। শুধু তা-ই নয়, দীর্ঘকালীন স্বৈরশাসক, একনায়ক ও ক্ষমতালোভী নূর সুলতান নজররায়েভ নিকট অতীতে নজর দিলেন স্বীয় ক্ষমতা সংহতকরণের দিকে। এ জন্য তিনি আস্তানার নাম দিলেন ‘নুর সুলতান’, অর্থাৎ নিজ নামে নামকরণ। সে নাম আজো আছে। গণতন্ত্রবিরোধী নুর সুলতান বাধ্য হয়ে ক্ষমতা থেকে বিদায় নিয়েও শক্তিশালী ‘জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য ছিলেন। তবে সম্প্রতি গণ-আন্দোলনের মুখে তাকে সরিয়ে উত্তরসূরি প্রেসিডেন্ট কাসেম জোমার্ত মুখরক্ষার চেষ্টা করেছেন। স্তাবকগোষ্ঠী নুর সুলতানের নামে রাজধানীর নামকরণকে ‘ভালোবাসেন’ বলে ব্যক্তিপূজাকে বাহ্বা দিলেও কাজাখ জনগণ ভীষণ ক্ষুব্ধ।

আফ্রিকাতেও রাজধানী নিয়ে কত কী হয়েছে। যেমন, মহাদেশটির ‘তেলসমৃদ্ধ গরিব দেশ’ নাইজেরিয়া। দীর্ঘদিন এর সুপরিচিত রাজধানী ছিল লাগোসে। এখন রাজধানী এর বেশ কিছুটা উত্তরে আবুজা শহরে। তবে লাগোস নাকি ‘অর্থনৈতিক’ রাজধানী।

একই মহাদেশের উত্তর প্রান্তের যুদ্ধজীর্ণ দেশ লিবিয়া। একদেশ হলে কী হবে, সরকার দু’টি। একটির রাজধানী পশ্চিমের ত্রিপোলি (যা আগেও ছিল রাজধানী)। আরেকটির রাজধানী বেনগাজি নগরী, যা দেশের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত। পশ্চিমে জাতিসঙ্ঘ সমর্থিত গভর্নমেন্ট ন্যাশনাল অ্যাকর্ড আর পূর্বে হাফতারের নেতৃত্বে গভর্মেন্ট অব ন্যাশনাল বিদ্রোহী বাহিনীর দখলকৃত শাসন। এদের পেছনে অন্যতম রাষ্ট্র, স্বৈরাচারী জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ সিসির শাসিত মিসর (মহাদেশের বৃহত্তম দেশ, জনসংখ্যায়) বিশ্বের আরো অনেক স্বৈরশাসকের মতো তিনিও দেশের রাজধানী (প্রাচীন কায়রো থেকে) সরানোর ঘোষণা দিয়েছেন। ক্ষমতায় এসে জনমতের কোনো তোয়াক্কা না করেই এ ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। দেশ যাক, কী করেন শেষাবধি।

আফ্রিকাতেই রাজধানী নিয়ে আরো তথ্য বিদ্যমান। সাহারা মরুভূমির দেশ মালির রাজধানী বামাকো হলেও বেশি পরিচিত হচ্ছে প্রাচীন নগর (মাটির প্রাসাদ খ্যাত) টিমবাকটু। উগান্ডার রাজধানী কাম্পালার চেয়ে কম পরিচিত নয় বিমান ছিনতাই ঘটনার দরুন আলোচিত এন্টেবি। বিখ্যাত নেলসন ম্যান্ডেলার দক্ষিণ আফ্রিকায় যেমন একাধিক রাজধানী, তেমনি এশিয়ার দেশ লাওসের রাজধানী ভিয়েনশিয়েনের চেয়ে কম পরিচিত বলা যায় না পুরাকীর্তির শহর লুয়াং প্রবাংকে। অপর দিকে ইউরোপের প্রাগ নগর ঐক্যবদ্ধ চেকোশ্লোভাকিয়ার রাজধানী বলে পরিচিত ছিল। দেশটা ভেঙে শ্লোভাক প্রজাতন্ত্র গঠিত হয়েছে, যার নতুন রাজধানীর নাম ত্রাতি¯ভ্লাভা এবং এটা আমাদের অনেকের অজানা। সমাজতন্ত্রী মার্শাল জোসিপ বর্জ টিটোর বজ্রমুষ্টিতে এক থাকা দেশ, যুগোশ্লাভিয়া তার মৃত্যুর পর একসময়ে ভেঙে যায়। তখন এই এক দেশ থেকে ক্রমে ক্রমে হাফ ডজন দেশ জন্ম নিলো। দেশের কেন্দ্রীয় রাজধানী বেলগ্রেড হলো নবগঠিত রাষ্ট্র সার্বিয়ার রাজধানী। জাগ্রেব ও সারায়েভো যথাক্রমে নতুন দেশ ক্রোশিয়া ও বসনিয়ার রাজধানী। লুবলিয়ানা হলো নতুন দেশ ¯েøাভেনিয়া আর প্রিস্টিনা মুসলিম অধ্যুষিত কসোভোর রাজধানী। ইউরোপীয় দেশ দি নেদারল্যান্ডসের রাজধানী আমস্টার্ডাম হলেও, সে দেশে দি হেগ নগরী আন্তর্জাতিকভাবে বেশি পরিচিত। জার্মানি এখন অভিন্ন বলে সাবেক রাজধানী বার্লিনকে ফিরে পেয়েছে। তাই সাবেক পশ্চিম জার্মানি কিংবা এর রাজধানী বন শহরে নেই। সুইজারল্যান্ডের রাজধানী বার্ন। তবে সে দেশের জেনেভা ও জুরিখ বেশি খ্যাতনামা। ১৯১৭ সালে বৃহৎ রাশিয়ার সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের আগে জারদের সময়ে রাজধানী ছিল সেন্ট পিটার্সবার্গ বা পেত্রোগ্রাদে (যার পর নাম করা হয়েছিল ‘লেনিনগ্রাদ’)। এখন সেখানে সমাজতন্ত্র নেই। তবে রাজধানী কমিউনিস্ট যুগের মতো মস্কোতেই রয়েছে।

বলা হয়, যে দেশ যত উন্নত বা বিখ্যাত, সে দেশের রাজধানী ছাড়াও তত বেশি জায়গা বিদেশে সুপরিচিত। বর্তমান ইউক্রেন যেন অনেকটা তার সাক্ষ্য দিচ্ছে রাজধানী কিয়েভ ছাড়াও ওডেসা বন্দর এবং খারকভ ও দোনোস্ক শহরের মধ্য দিয়ে।


আরো সংবাদ



premium cement