২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

নির্বাচন কমিশন আইন ও আস্থার সঙ্কট

-

বিশ্বাসে মেলে বস্তু, তর্কে বহুদূর। বাংলা ভাষায় কথাটি প্রবাদতুল্য। কারণ বিশ্বাসই হচ্ছে সব কর্মকাণ্ডের মূলভিত্তি। ব্যক্তি বনাম ব্যক্তি, গোষ্ঠী বনাম গোষ্ঠী এমনকি রাষ্ট্র বনাম রাষ্ট্রে বিষয়টি এতবার এতভাবে আলোচিত হয়েছে যে, এটি অস্বীকার করে লাভ নেই। একবার বিশ্বাস ভঙ্গ হলে মানুষ বলে বিশ্বাসঘাতক। কেউ তাকে বিশ্বাস করতে চায় না। আধুনিক সমাজব্যবস্থা এতটাই জাগতিক হয়েছে যে, অনেকে মনে করতেন- বিশ্বাসের বদলে বাস্তবতাই হচ্ছে কাজের ভিত্তি। সম্পর্কের বন্ধন।

মানুষের জাগতিক উন্নয়ন এবং আধুনিকায়ন এগিয়েছে, হাতের কাছে চাইলেই পাওয়া যায় সবকিছু। উৎপাদনের উপকরণ সম্পর্কে গতানুগতিক বিষয়টি এরকম যে, ভূমি, মূলধন, শ্রম এবং সংগঠকের মিলন হলেই উৎপাদন সম্ভব হয়। আজকাল ব্যাংক ও ব্যবসার সফলতার কারণে এগুলোর জোগান দেয়া কোনো কঠিন বিষয় নয়। আধুনিক সমাজের অভিজ্ঞতা এই যে, উৎপাদনের উপকরণগুলোর সমন্বিত হওয়ার পরও ব্যবসায় বা উৎপাদনব্যবস্থা লাভজনক হয় না। উপকরণগুলো পৃথক পৃথকভাবে তাদের লাভ বাণিজ্য খোঁজে। যেমন- মালিক চায় আরো অনেক লাভ। শ্রমিক চায় আরো অনেক বেতন। মূলধন চায় আরো আরো সুদ। সবকিছুই একত্রিত আছে; কিন্তু লাভ হয় না কারখানায়। কেউ কাউকে বিশ্বাস করে না। পারস্পরিক স্বার্থের সুবিধা তীব্র। আবার আজকাল ব্যাংকঋণ নিয়ে ব্যবসায়ীরা পরিশোধ করেন না। কারখানার মালিকরা কেবল লোকসান দেখাতে থাকে। ব্যাংকে লালবাতি জ্বলে। বিশ্বব্যাপী এই সামগ্রিক অবস্থায় উৎপাদনের পঞ্চম উপকরণটি আবিষ্কৃত হয়েছে। আর সেটি হচ্ছে বিশ্বাস। সকল ধর্মেও বিশ্বাস বা ঈমানকে প্রথম ও প্রধান শর্ত বিবেচনা করা হয়।

গোটা বিশ্বব্যাপী উৎপাদনব্যবস্থা, সমাজনীতি ও রাজনীতিতে বিশ্বাসযোগ্যতার অভাব প্রকট। বাংলাদেশ সম্পর্কে বিষয়টি আরো সংবেদনশীল। প্রাচীন ইতিহাসেও আমাদের সুনাম নেই। পরিব্রাজকরা আমাদেরকে অলস, আমুদে ও অবিশ্বস্ত বলে বর্ণনা করেছেন। বর্তমান সময়েও আমাদের সমাজবেত্তারা নিজেদেরকে আত্ম প্রতারণায় নিমজ্জিত জাতি হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ‘ছলনাময়ের বিচিত্র রাজনীতি’ দ্বারা আমরা আক্রান্ত। আমাদের ‘অর্থনীতি পরার্থপরতর’ নয়। বরং সাধু ভাষায় বলা হয় লুম্পেন বা ভ্রষ্ট-নষ্ট অর্থনীতি। আমরা পরস্পর প্রতারণায় লিপ্ত। আমাদের রাজনীতিবিদরা প্রতারণা, প্রবঞ্চনা ও বিভীষিকাকে রাজনীতির অবলম্বন বানিয়েছেন। গত ৫০ বছরে রাজনৈতিকভাবে দুই পক্ষ অথবা পক্ষগুলোর নিয়মতান্ত্রিক সমাধান হয়েছে এরকম নজির নেই। এমনকি বিদেশী প্রভুরা মধ্যস্থতা করেও আমাদের বিশ্বাস ও আস্থাকে সমন্বিত করতে পারেননি। বাংলাদেশের রাজনীতি সম্পর্কে যারা গভীর গবেষণা করেন, তারা সকলেই স্বীকার করেন যে, আস্থা ও বিশ্বাসের সঙ্কটই হচ্ছে বাংলাদেশ রাষ্ট্রব্যবস্থার মূল প্রতিবন্ধক।

যেমন, সংসদীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করলেও নির্বাচনকালীন সময়ে যে সংযম ও সততা প্রদর্শিত হওয়ার কথা, তা কখনো হয়নি। তাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থায় ফিরে যেতে হয়েছে আমাদেরকে। আবার সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা যখন কোনো দলের ক্ষমতা গ্রহণের প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে, তখন তারাই নিজেদের নাক নিজেরাই কেটেছে। কারণ সেদিন যাকে অবিশ্বাস করেছি, সেই অবিশ্বাসের জালে এখন আমিই বন্দী। সে কথাই সত্য ‘তোরা যে যা বলিস ভাই, আমার সোনার হরিণ চাই’। তাই বিশ্বাস ভঙ্গে কোনো দ্বিধাদ্বন্দ্ব নেই। অনুশোচনা নেই। লোক লজ্জা ও ভয় নেই।

২০১৪ সালে আমরা বলেছিলাম- এটি একটি নিয়মরক্ষার নির্বাচন। শিগগিরই একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আন্তর্জাতিক সমাজ সে কথা বিশ্বাস করেছিল। তারা আশ্বস্ত করেছিল আন্দোলনরত বিরোধী পক্ষকে। কিন্তু অবশেষে তিনি বিশ্বাস ভঙ্গ করেছেন। ২০১৮ সালে তিনি বলেছিলেন, আমায় বিশ্বাস করুন। জাতি দেখেছিল তিনি বিশ্বাস ভঙ্গ করেছেন। নির্বাচন দিনে নয়, রাতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। অবাক পৃথিবী অবাক! ছাত্ররা নিরাপদ সড়কের আন্দোলন করেছিল। আমরা বলেছিলাম, ঘরে ফিরে যাও বাছা। তোমাদের কিছু হবে না। আমরা ঘর থেকে বের করে করে তাদের পরিবার পরিজনকে নিপীড়ন, নির্যাতনে জর্জরিত করেছিলাম। ছাত্ররা কোটাবিরোধী আন্দোলন করেছিল। আমরা বলেছিলাম, মেনে নিলাম সবকিছু। তোমরা যা চাও, তারচেয়েও বেশি কিছু। কিন্তু অবশেষে তারা হামলা, মামলা এবং পেটুয়া বাহিনীর পিটুনি খেতে খেতে নিঃশেষ হয়েছে। তাদের প্রতীক পুরুষটি যেখানেই যায়, সেখানেই মার খায়। প্রতারণা কৌশলই আমাদের প্রধান নীতি কৌশল হয়ে দাঁড়িয়েছে। ম্যাকিয়াভেলির মতো আমাদের নীতি হচ্ছে- ‘শিয়ালের মতো ধূর্ত ও সিংহের মতো সাহসী’। তাই আস্থার সঙ্কট সর্বত্র।

বিগত একযুগ- ১৩ বছরে এই আস্থার সঙ্কট দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়েছে। প্রলম্বিত হয়েছে দিবা থেকে দিবায়। রাত্রি থেকে রাত্রিতে। অতি সাম্প্রতি আস্থা ও বিশ্বাসের সঙ্কটটি কেন্দ্রীভূত হয়েছে প্রাথমিকভাবে নির্বাচন কমিশন গঠন এবং চূড়ান্তভাবে নির্বাচনী আইন প্রণয়ন প্রশ্নে। যে প্রক্রিয়ায় গত বছরগুলোতে যে নির্বাচন কমিশন দুটো কাজ করেছে, তাতে গোটা জাতি তাদের উপর আস্থা রাখতে পারেনি। তাই ২০২৩ সালের জাতীয় নির্বাচন যখন সমাগত, তখন সে আস্থা ও বিশ্বাসের সঙ্কটটি আবার ফিরে এসেছে। ক্ষমতাসীন সরকার সেই আগের কায়দায় নির্বাচন কমিশন গঠন করতে চেয়েছে। বাদ সেধেছে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ। সুশীলসমাজ আস্থার সঙ্কটের কথা মনে করে বিকল্প প্রস্তাবনা দিয়েছে। দেশের শীর্ষস্থানীয় বুদ্ধিজীবীবৃন্দ তাদের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার কথা জানিয়েছেন। তারা আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছিলেন। তখন সরকার পক্ষ থেকে বারবার বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন আইন করার মতো সময় এখন নেই। এটি তাড়াহুড়া করে করা যাবে না। তখন এই কথা বললেও এখন দেশবাসী দেখছে, কোনো পক্ষের সাথে কোনোরকম আলোচনা না করে একরকম হঠাৎ করেই তারা আইনের খসড়া সংসদে পাঠিয়েছে।

আইনের যে প্রস্তাবনা সংসদে পাঠানো হয়েছে তা যথা পূর্বাং তথা পারং। এই আইনটিকে প্রশ্নবিদ্ধ আখ্যা দিয়ে উত্থাপনের বিরোধিতা করেছে বিরোধী দল। কিন্তু হ্যাঁ জয়যুক্ত হয়েছে। হ্যাঁ জয়যুক্ত হয়েছে। হ্যাঁ জয়যুক্ত হয়েছে। বিরোধী দলের আপত্তি কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে গেছে। যারা মোটেই রাজি ছিল না, এখন তারা নতুন আইনের মাধ্যমে বিগত বছরগুলোর অন্যায়-অপকর্মও ন্যায়ানুগতা দিতে চাচ্ছে। বলা হয়েছে, এই বিলে সার্চ কমিটির মাধ্যমে এর আগে গঠিত সব নির্বাচন কমিশনের বৈধতা দেয়ার পাশাপাশি কমিটির কাজ নিয়ে আদালতে কোনো ধরনের প্রশ্ন তোলার সুযোগ থাকবে না। ২০১২ ও ২০১৭ সালে যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করেছিলেন, সেই প্রক্রিয়াটি আইনের অধীন আনা হচ্ছে। এতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনের অন্যান্য পদে যোগ্যতা-অযোগ্যতাও নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। এই আইন গঠনের মধ্য দিয়ে বিগত ৫০ বছরের মাথায় দেশ একটি আইনি কাঠামো পেতে যাচ্ছে। এতে নাগরিক সাধারণের খুশি হওয়ার কথা। সরকারি ভাষ্য অনুযায়ী ‘বিলটি আইনে পরিণত হলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগদান স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হবে। গণতন্ত্র সুসংহত এবং প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করবে। জনস্বার্থ সমুন্নত হবে।’

আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি ছয় সদস্যের অনুসন্ধান কমিটি গঠন করবেন। ইসিতে নিয়োগের জন্য এই কমিটি আইনে বর্ণিত যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের খুঁজে বের করবে। এ ক্ষেত্রে তারা রাজনৈতিক দল ও পেশাজীবী সংগঠনগুলোর কাছেও নাম আহবান করতে পারবে। অনুসন্ধান কমিটি প্রতিটি শূন্যপদের বিপরীতে দু’জন করে ব্যক্তির নাম প্রস্তাব করবে। এর মধ্য থেকে রাষ্ট্রপতি সিইসি ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দিবেন। বিলটি গত শনিবার ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল ২০২২’ জাতীয় সংসদে উত্থাপিত হয়েছে। বিলটি সংসদে তোলার পর তা পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য এক সপ্তাহের সময় দিয়ে আইন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। সংসদীয় কমিটি প্রতিবেদন দেওয়ার পর বিলটি পাসের জন্য সংসদে তোলা হবে। যে দিন বিলটি পাসের জন্য সংসদে তোলা হবে, সে দিন সংসদ সদস্যগণ আলোচনার সুযোগ পাবেন।

উল্লেখ্য যে, আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে একটি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। আগামী নির্বাচনকে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ করার প্রয়াসে বিগত কয়েক মাস ধরে রাজনৈতিক অঙ্গনে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে আলোচিত হয়ে আসছে। রাজনৈতিক অভিজ্ঞমহল মনে করেন যে, এই বিল আইনে পরিণত করার পিছনে সরকারের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে। বিরোধীদের সমালোচনার জবাবে আইনমন্ত্রী বলেছেন, ‘আইন হলে বিএনপি আর ভোট চুরি করতে পারবে না। এজন্যই তাদের গাত্রদাহ।’ বস্তুত আইনমন্ত্রীর কথাটা উপেক্ষণীয় নয় বলে মনে করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। আগামী নির্বাচনে একটি উলট-পালট হয়ে গেলে সত্য সত্যই ক্ষমতাসীনদের জন্য তা বুমেরাং হয়ে উঠবে। সুতরাং ভবিষ্যৎ কৌশলের অংশ হিসেবে তারা এ আইনটি করে থাকতে পারে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন। সুজনের সভাপতি এম হাফিজ উদ্দিন খান বলেন, ‘সরকারের এখানে অসৎ উদ্দেশ্য আছে। তারা আগের মতো নির্বাচন করতে চায়।’ অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আবদুল মতিন বলেন, ‘ইসি গঠনের সাচিবিক দায়িত্ব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের হাতে থাকলে সার্চ কমিটির সদস্যদের কিছু করার থাকে না। সদস্যদের হাতে তালিকা ধরিয়ে দেয়া হয়’। সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহদীন মালিক বলেন, এটি একটি ছলতাচুরীর আইন। এটি দুর্ভাগ্যজনক। জনগণের সাথে ছলচাতুরী করতে সরকার ইসি আইনকে বেছে নিয়েছে। এটা তো হতে পারে না। সরকার আগামী নির্বাচনে জয়ের জন্য এটি করেছে।’

সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, সার্চ কমিটির প্রস্তাবিত নামের তালিকা প্রকাশ করা না হলে তাদের নিয়ে আলোচনার সুযোগ থাকছে না। সংসদে এসব নাম নিয়ে বিতর্কের ব্যবস্থা থাকা দরকার। ইসি আইন নিয়ে দীর্ঘ মেয়াদে বিতর্কের সৃষ্টি হবে। সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, বর্তমান সিইসি কে এম নুরুল হুদা বিএনপি সরকারের ভুক্তভোগী আওয়ামী সরকারের সুবিধাভোগী ছিলেন। নিজেদের মতো নির্বাচন করতে সরকার কারো সাথে আলোচনা না করে ইসি আইন করেছে।

যেকোনো বিষয় বিবেচিত হয় উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে। কথায় বলে- নিয়ত অনুযায়ী বরকত। এ সম্পর্কিত হাদিসটি হচ্ছে- ‘সব কাজই নিয়তের ওপর নির্ভরশীল’। সুতরাং উদ্দেশ্যের যথার্থতা দ্বারা সবকিছু বিবেচিত হয়। সরকার তাদের উদ্দেশ্য সম্পর্কে খোলামেলা কথা বললেও বিরোধী দল ও সিভিল সোসাইটির বক্তব্য প্রমাণ করে যে, ‘ডাল মে কুচ কালা হ্যায়’। দীর্ঘ ১২ বছরে অনাস্থা ও অবিশ্বাসসের যে পাহাড় নির্মিত হয়েছে তা অনায়াসে অতিক্রম করা যাবে না। তা ছাড়া প্রায়োগিক অর্থে যদি আইনটি পর্যালোচনা করা হয়, তাহলে বোঝা যাচ্ছে যে অতীতের পুনরাবৃত্তি হতে যাচ্ছে। অন্যান্য দেশে বিশেষত প্রতিবেশী শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানে এ-সংক্রান্ত আইনটিতে ত্রিপক্ষীয়- সরকার, বিরোধী দল ও বিচার বিভাগের সমন্বিত ব্যবস্থা রয়েছে। সত্যিই যদি আমরা বিশ্বাস অর্জন করতে চাই, তাহলে এর বিকল্প নেই। এখনো সময় আছে।

দুর্ভাগ্যের বিষয় আমাদের অবিশ্বাস ও আস্থাহীনতার সংস্কৃতি এতটাই মজবুত যে, সরকার আইনটি করার ক্ষেত্রে বিরোধী দল ও বিজ্ঞ ব্যক্তিদের সহায়তা নেয়নি। অপর দিকে সরকারি দলের উদ্দেশ্য যতই মহৎ থাকুক না কেন বিগত বছরগুলোতে তারা বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে। গ্রামীণ প্রবাদটি এরকম- ‘যার গোষ্ঠী কুমিরে খায়, ঢেঁকি দেখে ভয় পায়’। গত ১২ বছর আমাদের কুমিরে খেয়েছে। সুতরাং বিশ্বাস বিসর্জিত হয়েছে। আস্থার সঙ্কট মারাত্মকভাবে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরেছে দেশ-জাতি-রাষ্ট্রকে।

লেখক : অধ্যাপক, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
Mal55ju@yahoo.com


আরো সংবাদ



premium cement