২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

পাশ কাটিয়ে যাবেন না

-

‘গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি’ (জিএফআই) জানাচ্ছে, ২০১৫ সালে বাংলাদেশ থেকে এক লাখ কোটি টাকার বেশি পাচার হয়েছে। তার আগের পাঁচ বছরের হিসাব নিলে গড়ে দেশ থেকে প্রতি বছর ৭৩ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। আমদানি রফতানির আড়ালে এই অর্থ পাচার করা হয়। জিএফআই জাতিসঙ্ঘ থেকে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত থেকে পাচারের হিসাবটি কষতে পারে। সাধারণত পণ্যের প্রকৃত মূল্য থেকে বাড়তি টাকাটা অডিট করে পাওয়া যায়। মূল্যের কারসাজি করে লুটেরাশ্রেণী এই মুদ্রা পাচার করে। খবরে জানা যাচ্ছে, ২০১৫ সালের পর জাতিসঙ্ঘকে বৈদেশিক বাণিজ্যের কোনো তথ্য দেয়নি বাংলাদেশ। ফলে এরপর থেকে মুদ্রা পাচার কতটা বেড়েছে সেটা আর আন্দাজ অনুমান করা যাচ্ছে না।

সম্প্রতি একটি ব্যাংকের পরিচালকদের বিদেশে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে বিপুল অর্থ খরচের খবর প্রকাশ হয়েছে। একজন ব্যক্তি কিংবা একটি পরিবার বিদেশে গিয়ে শত শত কোটি টাকা খরচ করছেন। ঘোরাঘুরি, বিনোদন ও কেনাকাটার জন্য শত কোটি টাকা বিদেশে গিয়ে খরচের বিষয় অবিশ্বাস্য। বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি এভাবে অঢেল অর্থ খরচের প্রমাণ পেয়েছে। ন্যাশনাল ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে এই ব্যাংকের কয়েকজন পরিচালক ১১৭ কোটি টাকা খরচ করেছেন। এতে বোঝা যাচ্ছে, শুধু বৈদেশিক বাণিজ্যের আড়ালে নয় বৈধতার আবরণেও মুদ্রা পাচারের কাজ হচ্ছে।

মুদ্রাপাচারের বাস্তবতা বোঝার জন্য কানাডা থেকে একজন প্রবাসীর একটি বিশ্লেষণমূলক লেখা থেকে উল্লেখ করলাম। তিনি লিখেছেন, ‘ম্যানশন আকৃতির আলিশান বাড়ির ড্রাইভওয়েতে হাল মডেলের দামি গাড়ি আর পেছনেই নোঙর করা ব্যক্তিগত স্পিডবোট। বাড়ির পেছন দিয়ে বের হয়েই ব্যক্তিগত বোটে লেকে ঘুরে আসা যায় কিংবা ড্রাইভওয়েতে পার্ক করে রাখা অতি দামি গাড়ি নিয়ে শাঁই শাঁই করে ছুটে যাওয়া যায় যেকোনো দিকে। এমন দৃশ্যের বর্ণনা দিলে যে কেউ এটিকে কোনো সিনেমার দৃশ বলে গণ্য করবেন। টরন্টো থেকে গার্ডিনার এক্সপ্রেস ধরে মাত্র ৪০ কিলোমিটার দূরত্বে এমন সিনেমাটিক জীবনযাপন করছেন বেশ কিছু বাংলাদেশী। না, তারা যে কানাডায় অনেক বছর আছেন, তুমুল জীবনসংগ্রামের পথ পাড়ি দিয়ে কিংবা ব্যবসা-বাণিজ্য করে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করেছেন, তা নয়। তাদের অধিকাংশই কানাডায় এসেছেন গত কয়েক বছরে এবং বাড়িগুলো কেনা হয়েছে এ সময়েই। কানাডায় তাদের দৃশ্যমান কোনো আয় নেই। তাদের অধিকাংশ বাংলাদেশের সরকারি বিভিন্ন বিভাগের বর্তমান বা সাবেক কর্মকর্তা।’

প্রবাসীর লেখাটি বাংলাদেশের একটি পত্রিকায় প্রকাশ করা হয়েছিল ২০২০ সালের নভেম্বরের শেষে। বিদেশে সম্পদ কেনার হিড়িকের জোয়ারে নিশ্চয়ই এ সময়ের মধ্যে কানাডায় বাঙালিদের আলিশান বাড়ির সংখ্যা আরো বহু বেড়েছে। জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে জিএফআইয়ের প্রতিবেদন সূত্রে পাওয়া খবর। ২০১৫ সালের পর থেকে জাতিসঙ্ঘ আমাদের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের তথ্য-উপাত্ত পাচ্ছে না। আবার ওই বছর জিআইএফের হিসাবে বাংলাদেশ মুদ্রা পাচার চূড়ায় পৌঁছেছিল। এ কাজটি অত্যন্ত সুচারুরূপে ভেতর থেকে করা হয়েছে। কাজটি যারা করেছে, তারা যে অত্যন্ত শক্তিশালী মাফিয়া চক্র তাতে কোনো সন্দেহ নেই, যাতে মুদ্রাপাচারের খবরটি প্রকাশ্যে আসতে না পারে। নিশ্চয়ই এর পরের বছরগুলোতে মুদ্রাপাচারের হার আরো বেড়েছে। গড়ে বছরে মুদ্রাপাচার এক লাখ কোটির বেশি ছাড়া কম হওয়ার কথা নয়। সেই হিসেবে এ পর্যন্ত কমপক্ষে পাচার হয়ে গেছে আরো ছয় লাখ কোটি টাকা। আমাদের জাতীয় বাজেটের আকার এখন পর্যন্ত এতটা উঁচুতে পৌঁছেনি।

বলা হয়, মুদ্রা পাচারকারীরা জাতির শত্রু। আমরা দেখতে পাচ্ছি, আমাদের কর্তৃত্বে রয়েছে এমনই এক চক্র। আমরা যদি দেশপ্রেমিক আত্মসচেতন জাতি হতাম এসব খবর প্রচার হওয়ার পর বেশি সময় লাগত না চক্রকে শনাক্ত করতে। আরো দুর্ভাগ্যের ব্যাপার হলো, এ নিয়ে খুব একটা আলোচনা নেই। নেই ইকোনমিক ইন্টেলিজেন্ট ইউনিটের কোনো তৎপরতা কিংবা দেশের অর্থে পরিচালিত গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর অভিযান।

লবিস্ট নিয়োগ নিয়ে এখন আর খবর নেই
দেশে একটা প্রচারণা আমরা দেখেছি, বিএনপি-জামায়াত আমেরিকায় লবিস্ট নিয়োগ করেছে। এজন্য জামায়াতের কোনো কোনো নেতার বিরুদ্ধে নিয়মিত প্রপাগান্ডা চালানো হতো। এ ধরনের প্রপাগান্ডা ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী ও তাদের মুখপাত্র সংবাদমাধ্যম ইনিয়ে বিনিয়ে সব সময় প্রকাশ করে এসেছে। কোনো ধরনের প্রমাণ ছাড়া এভাবে কালিমা লেপনের কাজটি নির্লজ্জভাবে করা হয়েছে বছরের পর বছর। অতি সম্প্রতি খবর বের হয়েছে, ক্ষমতাসীন দল নিজেই ২০১৪ সাল থেকে আমেরিকায় লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করেছে।
‘সরকারের পক্ষে লবিস্ট কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্রে’ শিরোনামে এক বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দৈনিক প্রথম আলো। ১০ জানুয়ারি ওই প্রতিবেদনে পত্রিকাটি জানাচ্ছে, অন্তত আট বছর ধরে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে কাজ করছে ওয়াশিংটনভিত্তিক লবিস্ট প্রতিষ্ঠান বিজিআর। গত ডিসেম্বরে মার্কিন বিচার বিভাগে জমা হওয়া নথি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বিজিআর গত বছরেও র‌্যাবের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগসহ নানা ইস্যুতে বাংলাদেশ সরকারের ব্যাখ্যা প্রচার করেছে। এ ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের আরো দুটো লবিস্ট প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে লবিং করছে। ফ্রিডল্যান্ডার নামে একটি গ্রুপের সাথে গত বছর চুক্তি করেন ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শহীদুল ইসলাম। অন্য একটি প্রতিষ্ঠান কোনওয়াগো কনসালটিংয়ের সাথে বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের (বিআইই) চুক্তি হয় একই বছর।

বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানের দেয়া প্রতিবেদন বিষয়ে লবিং প্রতিষ্ঠান সরকারের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রে সাফাই গেয়েছে। বাংলাদেশে গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যার বিবরণ, তার তথ্যপ্রমাণ উপস্থাপন এবং সর্বশেষ নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন ধাপে সরকারের পক্ষে কাজ করেছে বিজিআর। মার্কিন প্রশাসন, নীতিনির্ধারক, মানবাধিকার গোষ্ঠী ও গণমাধ্যমের সাথে সরকারের পক্ষে কাজ করার জন্য বাংলাদেশকে বিপুল অর্থ খরচ করতে হয়েছে। গত বছর বিজিআর মোট তিন লাখ ২০ হাজার ডলার পেয়েছে। অন্য দুটি প্রতিষ্ঠানের সাথে সরকার মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময় চুক্তি করে।

আওয়ামী লীগের জন্য একটি সুবিধার দিক রয়েছে। কিছু কথিত বুদ্ধিজীবী রয়েছেন তারা দলটির পক্ষে তিলকে তাল করে প্রচার করে থাকেন। কিছু ব্যাপারে তারা দলবদ্ধ হয়ে এমনভাবে সুর তোলেন জনগণ সেটা বিশ্বাস করা ছাড়া উপায় থাকে না। প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে এটা করার সামর্থ্য তারা রাখেন। আবার এ দেশের মিডিয়ার বৃহত্তর অংশ এই প্রচারবিদদের সাথে সমান্তরালে তাল মেলান। এতে কোনো একটি বিশেষ প্রপাগান্ডা মানুষকে গিলিয়ে ফেলা যায়। সাময়িকভাবে এর দ্বারা তারা লাভবানও হন। বাস্তবে দীর্ঘমেয়াদে এটি সবার জন্য ক্ষতি ও বিপদ ডেকে আনে।

নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আন্তরিক উপলব্ধি দরকার
পরপর তিনবার দেশ পরিচালনার মধ্যে বর্তমান সরকারের বড় একটি সমালোচনা ছিল জনগণের একটি অংশের নিরাপত্তা সঙ্কট, বিশেষ করে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের মানুষদের যখন গুম খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হতে হলো। রাষ্ট্রীয় মদদে রাজনৈতিক গোষ্ঠীর কিছু সদস্যের বিরুদ্ধে প্রাণসংহারী অভিযান প্রথমে হয়েছিল জামায়াতে ইসলামীর ওপর। অন্যরা তখন ধর্মীয় দলটির বিরুদ্ধে চালানো এসব অবৈধ কর্মকাণ্ডের পক্ষে যুক্তি খুঁজে নিয়েছিল। সবাই মিলে তখন চুপ করে থাকাকে শ্রেয় মনে করেছিল। কারণ তারা ভেবেছিল, এ অপরাধ রাষ্ট্র্র তাদের বিরুদ্ধে করবে না। বাস্তবতা হলো, রাষ্ট্রে যখন এ ধরনের কোনো অবৈধ প্রক্রিয়া শুরু হয় সেটা শেষ পর্যন্ত সবার ওপর এসে পড়ে। বিষয়টি প্রমাণ হতে বেশি দিন লাগেনি। বিগত বছরগুলোতে শত শত পরিবার তাদের আপনজনদের ফিরে পাওয়ার আর্জি নিয়ে রাষ্ট্রের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছে। এদের মধ্যে শেষে দেখা গেল শুধু জামায়াত নয়, অন্যান্য রাজনৈতিক গোষ্ঠী, সাধারণ নাগরিক, এমনকি সরকারি দলের লোকেরাও ছিলেন।

সংবাদমাধ্যমে বিচারবহির্ভূত হত্যার একঘেয়ে বয়ান আমরা দেখে আসছি। এ ধরনের প্রত্যেকটি ঘটনার মিডিয়ার বিবরণ হুবহু মিলে যায়। এমন অবাস্তব ব্যাপার নিয়ে রাষ্ট্র, সরকার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সবাই একসাথে ‘বোবা’ হয়ে থাকে। অন্য দিকে কয়েক শ’ মানুষের পরিবার বহুদিন ধরনা দিয়ে যাচ্ছে তাদের আপনজনদের খুঁজে পেতে। অভিযোগ করে থাকেন-তাদের আপনজনদের র‌্যাব, পুলিশ কিংবা অন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তুলে নিয়ে গেছেন। বিগত একযুগে প্রত্যেক বছর কতজন মানুষ গুম হয়েছেন তার তালিকা মানবাধিকার সংস্থার নথিতে রয়েছে। এগুলো অস্বীকার করলেই দায়মুক্ত হয়ে যাওয়া যাবে না।

আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষস্থানীয় সদস্যদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর আমরা দেশটির সমালোচনায় লিপ্ত হয়ে গেলাম। বললাম, দেশটি মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের বিপক্ষে ছিল। আবার বলা শুরু করলাম কিছু এনজিও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান তাদের কান ভারী করেছে। আগের সেই প্যাচাল, বিএনপি-জামায়াতের লোকেরা এসব করিয়েছে। এগুলো আওয়ামী লীগের প্রপাগান্ডা পুলের গতানুগতিক প্রতিক্রিয়া। নিষেধাজ্ঞা আরোপের তথ্যপ্রমাণ ও কারণ যুক্তরাষ্ট্র উল্লেখ করেছে যেমন দেশের ভেতর থেকে হারিয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের স্বজনরা আহাজারি করেই যাচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্র তাদের প্রদর্শিত তথ্য-উপাত্তে রেহাই না পাওয়া ওই পরিবারগুলোর কথাই বলা হয়েছে।

ম্যাগনিট্স্কি আইনের প্রয়োগ যুক্তরাষ্ট্রে ব্যক্তিবিশেষের ইচ্ছায় হয় না। এটি একটি প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ। তাদের নিষেধাজ্ঞাকে মোকাবেলা করতে হলে প্রপাগান্ডা কোনোভাবে আর কাজে আসবে না। এজন্য দরকার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ। সেটা হচ্ছে মানুষের বিঘ্নিত নিরাপত্তাকে ফিরিয়ে আনতে হবে। আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যে তসরুপ ও ত্রুটিবিচ্যুতি করেছে সেগুলোর অপনোদন করতে হবে।

এ আইনে নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্তরা যদি মিয়ানমার, উত্তর কেরিয়া, রাশিয়া ও চীনের নাগরিক হন তাহলে তাদের এটি কিছুটা এড়ানোর সুযোগ রয়েছে। এই দেশগুলো আত্মনির্ভরশীল। এসব দেশের লোকেরা যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে সুখী জীবনযাপন করবেন, এমন প্রত্যাশা কমই করেন। সাধারণত তারা তাদের সঞ্চয় কিংবা অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ কমই যুক্তরষ্ট্রে নিয়ে আসেন। আমাদের দেশ এখনো পরিপূর্ণভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা। অর্থনৈতিক সম্পর্ক এমন পর্যায়ে রয়েছে, আমরা তাদের ওপর বড় আকারে নির্ভরশীল। এ ছাড়া এখানকার মানুষের বিরাট একটা অংশ যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের জন্য ‘স্বপ্নের রাজ্য’ মনে করেন। তারা বৈধ-অবৈধ সম্পদ যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যান শেষ জীবন নিরাপদ নির্বিঘ্নে সেখানে কাটানোর জন্য। বাংলাদেশের বহু মানুষ দেশটির স্বাধীন সমাজে বসবাস করতে পছন্দ করেন।

এই নিষেধাজ্ঞায় পড়া ব্যক্তিদের জীবন সঙ্কীর্ণ হয়ে যায়। তাদের স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ব্যাংকে জমাকৃত অর্থ বাজেয়াপ্ত করা হয়। নাগরিকত্ব বাতিল হয়ে যায়। এর আওতায় তাদের সন্তান স্ত্রী ভাই বোন পিতা মাতাও পড়বেন। ফলে তাদের আশপাশের লোকেরা বাইরে পড়াশোনা চিকিৎসা গ্রহণও করতে গিয়ে বিপদে পড়বেন। নিষেধাজ্ঞা তালিকাটি আরো অনেক দীর্ঘ হতে পারে। গণতন্ত্র ও মানবাধিকারকে সমুন্নত করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এ তালিকা তৈরি করছে। বিশেষ করে যারা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ধ্বংস, ভোটাধিকার হরণ, দুর্নীতির মাধ্যমে জনসাধারণের প্রভূত ক্ষতি করেছেন তাদের এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনার প্রচেষ্টা তারা চালাবেন। সাম্প্রতিক সময়ে সারা বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া এমন নিষেধাজ্ঞার প্রকৃতি থেকে তা অনুমান করা যাচ্ছে।

সঙ্কট মোকাবেলার জন্য নৈতিক শক্তি ও মনোবল থাকতে হয়। একজন নিরপরাধ ব্যক্তির এমন শক্তি থাকা স্বাভাবিক। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা এমন সময় এলো, যখন নাগরিকদের অসংখ্য অভিযোগ। অনেকে পরিত্রাণের উপায় খুঁজছেন। এ অবস্থায় নিজেদের অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলো কাটিয়ে ওঠার জন্য সৎ ও আন্তরিক পদক্ষেপ নেয়াই সবচেয়ে প্রজ্ঞার কাজ হবে। মনে রাখতে হবে, আমরা নিজেরা যদি দুর্নীতিবাজ অন্যায়কারী না হই তাহলে পৃথিবীর কোনো দেশই আমাদের দমাতে পারবে না।
jjshim146@yahoo.com


আরো সংবাদ



premium cement