গতিহীন শিক্ষা প্রকল্প
- সৈয়দ মাসুদ মোস্তফা
- ০৮ জানুয়ারি ২০২২, ১৯:৪৮, আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২২, ২০:৫৭
দেশে সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পগুলো দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার আখড়ায় যেন পরিণত হয়েছে। শুধু উন্নয়ন প্রকল্পই নয়, বরং রাষ্ট্রের প্রায় সব সেক্টরই এখন এই অশুভ বৃত্তে। সে ধারাবাহিকতায় সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পগুলোও নৈরাজ্যের কবলে পড়েছে। একশ্রেণীর মধ্যস্বত্বভোগীর অবৈধ উচ্চাভিলাষ ও লাগামহীন দুর্নীতির কারণেই প্রকল্পগুলো নির্ধারিত মেয়াদে ও বরাদ্দকৃত অর্থে শেষ হচ্ছে না। ফলে প্রকল্প বাস্তবায়নে রাষ্ট্রের প্রভূত অর্থের অপচয় হলেও আমরা কাক্সিক্ষত ফল পাচ্ছি না। আত্মস্বার্থ ও গোষ্ঠীস্বার্থ চরিতার্থকরণ এবং অনিয়ন্ত্রিত অনিয়মের কারণে বারবার প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে, একই সাথে বাড়ছে ব্যয়ও; অথচ কাজের যথাযথ মান নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না বলে অভিযোগ বেশ জোরালো। এসব অতি পুরনো খবর হলেও নতুন খবরও বাতাসে ভাসছে, যা আমাদের রাষ্ট্রাচারে সক্ষমতাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি দেশে ১৭৩ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার চারটি রেন্টাল (ভাড়াভিত্তিক) বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ আরো পাঁচ বছর বাড়িয়েছে সরকার। যখন প্রয়োজন হবে, তখনই এসব কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কিনবে সরকার; অন্যথায় এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র ‘স্ট্যান্ডবাই’ থাকবে। বিষয়টি নিয়ে আত্মসচেতন মহলে নানাবিধ প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, নতুন মেয়াদে বিদ্যুতের ক্রয়মূল্য আগের চেয়ে কমবে। সম্প্রতি সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এই মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ৬৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। কিন্তু মন্ত্রীর মূল্য কমার কথায় কেউই আশ্বস্ত হতে পারছে না। প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির খপ্পর থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি আমাদের দেশের শিক্ষা প্রকল্পগুলোও যা শুধু দেশের শিক্ষা অবকাঠামো উন্নয়নে বড় ধরনের নৈরাজ্যের সৃষ্টি করেনি; বরং ক্ষেত্রবিশেষে তাকে অনিশ্চয়তার মুখেও ঠেলে দিয়েছে।
শিক্ষা প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানাচ্ছেন, গৃহীত শিক্ষা প্রকল্প বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতা ও ধীরগতি শিক্ষা অবকাঠামো উন্নয়নে বড় ধরনের অচলাবস্থা সৃষ্টি করেছে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষার ১০টি প্রকল্প পড়েছে এই অশুভবৃত্তে। ফলে প্রকল্পগুলোর ভবিষ্যৎ নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। কোনো কোনো প্রকল্পের চার বছরের মেয়াদ শেষে অগ্রগতি মাত্র ৫ শতাংশ বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) অধীনে শিক্ষার তিনটি প্রকল্পের অগ্রগতি মেয়াদ শেষে ১০ শতাংশের নিচে। বাকিগুলোরও তেমন অগ্রগতি নেই। সব মিলে শিক্ষাবিষয়ক নানা প্রকল্প চলছে কচ্ছপ গতিতে। জানা গেছে, প্রত্যাশিত অগ্রগতি না থাকায় নির্ধারিত সময় শেষে চার প্রকল্পে মেয়াদ বেড়েছে এক বছর। ২০২০-২১ অর্থবছরে এডিপিভুক্ত উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর বাস্তবতা ও আর্থিক অগ্রগতি নিয়ে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত পর্যালোচনা সভা থেকে এমন তথ্যই জানানো হয়েছে। মূলত প্রকল্প বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অযোগ্যতা, অদক্ষতা ও উচ্চাভিলাষের কারণেই এগোতে পারছে না শিক্ষা সংশ্লিষ্ট এসব প্রকল্প। ‘আইসিটির মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার প্রচলন (পর্যায়-২)’ প্রকল্পটি গত জুনে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত প্রকল্পটির উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি নেই।
গত ২০১৬ সালের জুলাইয়ে শুরু হওয়া এ প্রকল্পে পাঁচ বছরে ব্যয় হয়েছে মোট বরাদ্দের মাত্র ৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ প্রকল্পের অগ্রগতি একেবারেই হতাশাজনক। মেয়াদ শেষ হওয়ায় প্রকল্পটি আগামী বছরের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু বর্ধিত সময়েও প্রকল্প বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা পাওয়া যাচ্ছে না। এ ছাড়া গত অর্থবছরে আরএডিপিতে (সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি) ব্যয়যোগ্য বরাদ্দ ছিল ১৯ কোটি ১৮ লাখ টাকা।
এর বিপরীতে গত অর্থবছরে (মে পর্যন্ত) ব্যয় হয়েছে এক কোটি ২৮ লাখ টাকা, যা আরএডিপিতে বরাদ্দের মাত্র ৬ দশমিক ৬৮ শতাংশ। গত অর্থবছরেও এ প্রকল্পের ৯৩ দশমিক ৩২ শতাংশ অর্থ অব্যয়িত থেকে গেছে। প্রকল্পের এমন বেহাল দশার ব্যাপারে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা মুখে কুলুপ এঁটেছেন। তারা এ বিষয়ে কোনো তথ্য বা বক্তব্য দিতে রাজি হচ্ছেন না। বিষয়টি রহস্যজনকই মনে করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।
২০১৭ সালের জুলাইয়ে সূচিত ‘ঢাকা শহরের সন্নিকটবর্তী এলাকায় ১০টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন’ প্রকল্প চলতি বছরের জুনে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এ প্রকল্পের অগ্রগতিও উল্লেখ করার মতো নয়। চার বছরে মোট বরাদ্দের মাত্র ৫ দশমিক ৬৯ শতাংশ অর্থ খরচ হয়েছে। এ প্রকল্পের মেয়াদও এক বছর বাড়ানো হয়েছে। গত অর্থবছরে এ প্রকল্পে আরএডিপিতে ব্যয়যোগ্য বরাদ্দ ছিল ৫৭ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এর বিপরীতে ব্যয় হয়েছে ২৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা, যা ব্যয়যোগ্য আরএডিপি বরাদ্দের প্রায় ৪২ দশমিক ৭১ শতাংশ। গত অর্থবছরেও এ প্রকল্পের ৫৭ দশমিক ২৯ শতাংশ অর্থ অব্যয়িত থেকে গেছে, যা প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বহীনতা, উদাসীনতা, অযোগ্যতা ও নেতিবাচক মানসিকতাকেই স্মরণ করিয়ে দেয়। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষ রহস্যজনকভাবে নীরব।
‘সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়সমূহের উন্নয়ন’ প্রকল্প গত ২০১৭ সালে শুরু হয়। চলতি বছরের জুনে প্রকল্প কাজ শেষ হওয়ার কথা। অথচ সাড়ে চার বছর পরে এ প্রকল্পে আর্থিক অগ্রগতি দাঁড়িয়েছে মাত্র ৬ দশমিক ৬৫ শতাংশ। প্রকল্পের মেয়াদও এক বছর বাড়াতে হয়েছে। এ ছাড়া গত অর্থবছরে আরএডিপিতে ব্যয়যোগ্য বরাদ্দ ছিল ২৫৫ কোটি টাকা। গত মে মাস পর্যন্ত এর বিপরীতে ব্যয় হয়েছে ১৬০ কোটি ৯৫ লাখ টাকা, যা ব্যয়যোগ্য আরএডিপি বরাদ্দের ৬৩ দশমিক ১২ শতাংশ। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রকল্প শুরু হওয়ার দেড় বছর পরে পরিচালক (পিডি) নিয়োগ করা হয়েছে। এভাবে শুরুতেই পিছিয়ে গেছে প্রকল্পটি। এ ছাড়া করোনার কারণে দুই বছর অর্থ বরাদ্দ বন্ধ থাকায় প্রকল্পের গতি কমেছে। কিন্তু প্রকল্প শুরু হওয়ার দীর্ঘ দিন পর কেন পিডি নিয়োগ হলো বা পিডি ছাড়াই কিভাবে প্রকল্প গ্রহণ করা হলো তার কোনো সদুত্তর দিতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা। ফলে বিষয়টি নিয়ে নানাবিধ প্রশ্নের সৃষ্টি হওয়া অস্বাভাবিক নয়।
এই অশুভ বৃত্ত থেকে মুক্ত নয় অন্যান্য প্রকল্পও। ‘৯টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন’ প্রকল্প গত জুনে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা সম্ভব হয়নি। অথচ এ প্রকল্পে গত মে পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে মোট বরাদ্দের মাত্র ১৩ দশমিক ৯ শতাংশ। সে হিসাবে ৮৬ দশমিক ১ শতাংশ বরাদ্দ অব্যয়িতই থেকে গেছে। এমন শোচনীয় অবস্থায় বাধ্য হয়ে মেয়াদ বাড়াতে হয়েছে আগামী জুন পর্যন্ত। এর মধ্যে গত অর্থবছরে আরএডিপিতে ব্যয়যোগ্য বরাদ্দ ছিল ৩৯ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। গত মে পর্যন্ত মোট বরাদ্দের ৭৩ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ ব্যয় হয়েছে। প্রকল্প সূত্র জানাচ্ছে, বিদ্যালয় স্থাপনের জন্য জমি অধিগ্রহণেই বড় একটি সময় চলে যায়। আর প্রকল্পের ব্যয় মূলত হয় জমির মূল্য পরিশোধকেন্দ্রিক। সব স্কুলের জমি অধিগ্রহণ হলে প্রকল্প ব্যয় সন্তোষজনক পর্যায়ে যাবে। গত অর্থবছরেও প্রকল্পের অগ্রগতি ৭৩ দশমিক ৫ ছিল বলে এ প্রতিবেদকের কাছে দাবি করেন তিনি। ২০১৪ সালের শুরুতে চালু হওয়া ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি ফর অটিজম ও নিউরো ডেভেলপমেন্টাল ডিজঅ্যাবিলিটিস প্রকল্প শেষ হবে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে।
অথচ সাড়ে সাত বছরে এই প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে মোট বরাদ্দের মাত্র ১৫ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। অন্য দিকে গত ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রকল্পের অনুক‚লে আরএডিপিতে বরাদ্দ ছিল সাত কোটি ২৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে ব্যয় হয়েছে তিন কোটি ২৫ লাখ টাকা, যা আরএডিপি বরাদ্দের ৪৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এ বিষয়ে শিক্ষা বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য হচ্ছে, অনেক প্রকল্পের পরিচালকের কর্মসূচি বাস্তবায়নে পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই। যারা তুলনামূলক দক্ষ ও বিচক্ষণ তারা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে পারেন। কিন্তু অন্যরা পিছিয়ে যান। এ ছাড়া যোগ্য স্থানে যোগ্য ব্যক্তিরা আসীন না হওয়ায় প্রকল্প থেকে কাক্সিক্ষত ফল পাওয়া যাচ্ছে না। তারা আরো বলেছেন, প্রকল্পে অদক্ষ, অযোগ্যরা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পেলে জাতি এর সুফল পায় না; কিন্তু ঋণের বোঝা ঠিকই বাড়ে। আর শিক্ষাবিদদের এমন বক্তব্য খুবই বাস্তবসম্মত ও যৌক্তিক। তাই এই বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসার পরামর্শ এসেছে বিভিন্ন মহল থেকেই।
২০১২ সালের জুলাইয়ে শুরু হওয়া তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে নির্বাচিত বেসরকারি কলেজের উন্নয়ন প্রকল্প চলতি বছরের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা। এ প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে মোট বরাদ্দের ৭১ দশমিক ৫৮ শতাংশ। গত অর্থবছরে এ প্রকল্পে আরএডিপিতে ব্যয়যোগ্য বরাদ্দ ছিল ২৩৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা। এর মধ্যে গত মে পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ২১১ কোটি ৪০ লাখ টাকা। এ প্রকল্পে ৩৭ দশমিক ২৭ শতাংশ বরাদ্দই ব্যয়ের বাইরে থেকে গেছে। কারিগরি প্রকল্প জেনারেশন ব্রেক থ্রæতে (দ্বিতীয় পর্যায়) গত অর্থবছরে আরএডিপিতে বরাদ্দ ছিল দুই কোটি ৩৭ লাখ টাকা। এর বিপরীতে গত মে পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে এক কোটি ৩০ লাখ টাকা, যা বরাদ্দের ৫৫ দশমিক ১৯ শতাংশ। সভা সূত্র জানায়, গত ২০২০-২১ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে মাউশির আওতাধীন ৯টি বিনিয়োগ প্রকল্প ও একটি কারিগরি সহায়তা প্রকল্পের অনুক‚লে আরএডিপিতে ব্যয়যোগ্য মোট বরাদ্দ ছিল এক হাজার ৩৮১ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
এর মধ্যে প্রায় পুরো অর্থ ছাড় হলেও ব্যয় হয়েছে এক হাজার কোটি ৮৬ লাখ টাকা, যা মোট বরাদ্দের ৭২ দশমিক ৪৪ শতাংশ। ২৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ বরাদ্দ অব্যয়িতই থেকে গেছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতির ব্যাপারে মাউশির পক্ষে বলা হয়েছে, জমি অধিগ্রহণে বড় সময় চলে যায় কোনো কোনো প্রকল্পে। আবার কোনো প্রকল্পে মামলার কারণে গতি শ্লথ হয়ে যায়। তা ছাড়া করোনায় অনেকটা সময় আশানুরূপ কোনো কাজ হয়নি।
২০১৮ সালে শুরু হওয়া ‘সরকারি কলেজে বিজ্ঞান শিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণ’ প্রকল্পের মেয়াদ এক বছর বাকি থাকলেও আর্থিক অগ্রগতি মাত্র ১৫ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। ‘শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে জেলা সদরে সরকারি পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কলেজের উন্নয়ন’ প্রকল্পটির মোট আর্থিক অগ্রগতি ৬৭ দশমিক ৯৮ শতাংশ বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য হচ্ছে, প্রকল্পের অগ্রগতি আশানুরূপ না থাকায় অতীতে অনেক পিডিকে (প্রকল্প পরিচালককে) অপসারণ করা হয়েছে। কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়নের গতি ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি বরং বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পগুলো পুরনো বৃত্তেই রয়ে গেছে।
দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বার্থবাদিতা পুরো জাতিসত্তাকেই অক্টোপাসের মতো চেপে ধরেছে। রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রতিটি রন্ধ্রে প্রবেশ করেছে লাগামহীন স্বেচ্ছাচারিতা। সুশাসন ও আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাবেই রাষ্ট্রাচারের সব ক্ষেত্রেই স্থবিরতা নেমে এসেছে। নেতিবাচক রাজনীতি, জবাবদিহিতার অভাব ও ভঙ্গুর গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি এ জন্য কম দায়ী নয়। আর এ শুভ বৃত্ত থেকে আলাদা নয় দেশের শিক্ষাবিষয়ক উন্নয়ন প্রকল্পগুলোও। এমনিতেই বৈশ্বিক মানদণ্ডে আমাদের শিক্ষা অনেকটাই পশ্চাৎপদ। আর এ ক্ষেত্রে আমাদের সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। কিন্তু শিক্ষা প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়ম, উদাসীনতা ও দীর্ঘসূত্রতা শিক্ষা অবকাঠামো উন্নয়নে বড় ধরনের প্রতিবন্ধক হয়ে দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনার জন্য শিক্ষা প্রশাসনে স্বচ্ছতা, গতিশীলতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা দরকার; অন্যথায় আমাদের শিক্ষা বৈশ্বিক মানদণ্ডে পশ্চাৎপদই থেকে যাবে যা অনাকাক্সিক্ষত ও অনভিপ্রেত।
[email protected]
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা