লাইনচ্যুত গণতন্ত্র উদ্ধার চেষ্টা
- জসিম উদ্দিন
- ১৭ নভেম্বর ২০২১, ১৯:৪৬
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, গণতন্ত্র আকস্মিক বা দৈবক্রমে সৃষ্ট কোনো শাসনব্যবস্থা নয়। আমরা একে রক্ষা করব, এর জন্য লড়াই করব, একে শক্তিশালী করব ও একে নবযৌবন দেবো। যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট প্রচারিত একটি পেজে বাইডেনের এ বক্তব্য কোট করা হয়েছে। দেশটি ৯ ও ১০ ডিসেম্বর একটি ‘গণতন্ত্র সম্মেলন’ আয়োজন করতে যাচ্ছে।
সম্মেলনের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যের কথা বলতে গিয়ে বাইডেনের বক্তব্যটি সংযুক্ত করা হয়েছে। গণতন্ত্র যখন ম্রিয়মাণ হয়ে যাচ্ছে এর পৃষ্ঠপোষকরা যখন নিজেরাই পিছু হটছে তখন যুক্তরাষ্ট্রের এ আয়োজন খুব একটা সাড়া জাগানোর মতো কিছু নয়। তবে এ সম্মেলনে কারা দাওয়াত পেল সেটা যেন একটি প্রেস্টিজ ইস্যু হয়ে গেছে। আর দাওয়াতের ক্ষেত্রে কী মানদণ্ড অনুসরণ করা হলো সেটাও পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে না। দাওয়াতি দেশগুলোর নাম এখনো প্রকাশ্যে ঘোষণা করা হয়নি। তবে আমন্ত্রিত শতাধিক দেশের নাম ফাঁস করেছে পলিটিক্যাল জার্নাল পলিটিকো।
সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর গণতন্ত্র নিয়ে যে উচ্চ আশাবাদ জেগেছিল সেটা এখন ফিকে হয়ে গেছে। এর অন্যতম প্রধান কারণ আমেরিকান নেতৃত্বে পশ্চিমা বিশ্বের দ্বিমুখীনীতি। তারা নিজেদের জন্য প্রতিষ্ঠিত উন্নত গণতন্ত্রকে বাকি বিশ্বের কাছে রফতানি না করে সেটা একটা হাতিয়ার বানিয়েছে। গণতন্ত্র না থাকাকে একটি অস্ত্র হিসেবে প্রয়োগ করেছে। মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করার পরিবর্তে সেটাকে বানিয়েছে চাপ প্রয়োগের মেশিন বা টুল। ইউরোপ আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ার একজন মানুষ ব্যক্তিগত জীবনে স্বাধীনতা ও মানবাধিকারের সর্বোচ্চ নিশ্চয়তা পায় রাষ্ট্রের কাছ থেকে। সেখানে প্রত্যেকটি মানুষের জীবন সম্মান ও সম্পত্তি পূর্ণ রক্ষিত হয়। রাষ্ট্রীয় বাহিনী কোনো একজন মানুষকে গুম করে ফেলবে, এটা কল্পনাও করা যায় না। ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা যা খুশি তা করবে এ সুযোগ নেই। আইন সবার জন্য সমান। তারা তাদের শাসক পরিবর্তনের পূর্ণ ক্ষমতা রাখেন।
এই মাপের একটি গণতন্ত্র কেন ভারত বা পাকিস্তানে প্রতিষ্ঠিত হলো না? ভারতের কথাই ধরুন। দেশটি স্বাধীনতা লাভ করেছে ‘গণতন্ত্রের মাতৃভ‚মি’ ব্রিটেনের কাছ থেকে। স্বাধীনতার পর থেকে পশ্চিমা বিশ্বের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ভারত। এতদিনে ইউরোপের স্টাইলে পূর্ণ মানবিক মর্যাদা নিয়ে একটি গণতান্ত্রিকব্যবস্থা ভারতে কায়েম হয়ে যাওয়ার কথা। অথচ দেশটিতে বিগত একদশকে গণতন্ত্রের প্রত্যেকটি ইন্ডিকেটর নিম্নমুখী। ধর্ম ও সম্প্রদায় প্রশ্নে দেশটির মানুষের মধ্যে বড় ধরনের মর্যাদাগত পার্থক্য রচনা করা হয়েছে। অনেক জায়গায় সংখ্যালঘুরা সম্মান হারাচ্ছে।
কোথাও কোথাও তারা জীবন ও সম্পত্তি হারাচ্ছে। শিক্ষা গ্রহণ, চাকরির সুযোগ নেয়ার ক্ষেত্রে মুসলিমরা একেবারে প্রান্তিক শ্রেণীতে এসে পৌঁছে গেছে। মানবাধিকারের প্রশ্নটি সেখানে পুরোপুরি প্রশ্নবিদ্ধ। কাশ্মিরে অব্যাহতভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভয়াবহ ঘটনা ঘটছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতেও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটে চলেছে। উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ও আসামে হেমন্ত শর্মার নেতৃত্বে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে। নির্বাচনী গণতন্ত্রের জন্য দেশটির সুনাম ছিল।
পৃথিবীর ‘সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ’ বলে ভারতকে নিয়ে গর্বও করা হতো। গণতন্ত্রের সুফল বলতে মানুষের প্রতিনিধি বাছাইয়ের সুযোগ দেশটিতে এখনো রয়েছে। তবে তারা এখন স্বৈরাচারকে নির্বাচিত করতে বাধ্য হচ্ছেন। ভ্যারাইটিজ ও ডেমোক্র্যাসির, ‘লিবারেল ডেমোক্র্যাসি’ ইনডেক্সে ভারতের মর্যাদা এখন ‘ইলেকটোরাল অটোক্রেসি’।
পাকিস্তানে বেশি সাম্প্রদায়িক সমস্যা নেই। স্বৈরশাসনও সেখানে কায়েম হয়নি। তার পরেও গণতন্ত্রের সুফল পাকিস্তান ভোগ করতে পারেনি। দেশটিতে সামরিক বাহিনীর হস্তক্ষেপ দেখা যায়। অনেক সময় নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে দিয়ে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা নিয়েছে। নিয়মিত বিরতিতে নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিনিধিত্বশীল সরকার কায়েম হওয়ার ঐতিহ্যও সৃষ্টি হয়েছে। জনগণের হাতে শাসক পরিবর্তনের ক্ষমতা রয়েছে। আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও প্রতিবেশী দেশের অস্থিতিশীলতার কারণে দেশটির উন্নয়ন অগ্রগতি ও গণতন্ত্র বিকশিত হতে পারেনি।
পশ্চিমারা এ দেশের গণতন্ত্র বিকশিত করার জন্য প্রণোদনা দেয়ার বদলে বরাবরই দাবার ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহার করেছে পাকিস্তানকে। এই দেশটি গণতান্ত্রিক শাসনের চর্চাকারী বটে তবে এর মাধ্যমে জনগণ সুবিধাপ্রাপ্ত হওয়া এখনো বহু দূরের বিষয়।
পশ্চিমা বিশ্ব নিজেদের চর্চিত গণতন্ত্রকে সারা বিশ্বে সংহত করতে চাইলে বিশ্বের বর্তমান এ বিশৃঙ্খল হাল হতো না। তারা আন্তরিকতা নিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বিশ্বের বেশির ভাগ দেশেই যায়নি। তবে কিছু কিছু দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা পাক সেটা তারা চেয়েছে। সেজন্য তারা বুদ্ধি পরামর্শ ও অর্থ দিয়ে প্রভাব খাটিয়েছে। এশিয়ায় এই ধরনের প্রতিষ্ঠিত গণতান্ত্রিক দেশের উদাহরণ হচ্ছে তাইওয়ান ও দক্ষিণ কোরিয়া। আমেরিকা সরাসরি এসব দেশে গণতন্ত্রকে প্রমোট করেছে। চীনের মোকাবেলায় তাইওয়ানে একটি প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা তাদের প্রয়োজন মনে হয়েছে, তাই তারা করেছে। একইভাবে উত্তেজিত বিশৃঙ্খল উত্তর কোরিয়ার মোকাবেলায় সুশৃঙ্খল গণতান্ত্রিক দক্ষিণ কোরিয়া প্রতিষ্ঠা তাদের স্বার্থেই প্রয়োজন। এ ধরনের আরো কিছু উদাহরণ সারা বিশ্বে পাওয়া যাবে যেখানে আমেরিকা বা পশ্চিমা বিশ্ব চেয়েছিল বলে এসব দেশে তারা উদার সহনশীল ও বহুত্ববাদী গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করেছে। তারাও পশ্চিমা বিশ্বের মতো গণতন্ত্রের প্রকৃত স্বাদ আস্বাদন করতে পারছে।
উপমহাদেশের দেশগুলো নিয়ে তাদের সেই ইচ্ছা ছিল না। এখানে তাদের দরকার ছিল প্রভাব ধরে রাখা। ফলে এ অঞ্চলের প্রায় প্রত্যেকটি দেশের গণতন্ত্র একেবারে নড়বড়ে। এমনকি ভবিষ্যতে এই অঞ্চলের কোনো কোনো দেশের, পশ্চিমা ধাঁচের গণতন্ত্র পরিত্যাগ করা ছাড়া উপায় থাকবে না। এদিকে চীন তাদের শাসনের মডেল নিয়ে হাজির হয়েছে। এই সুযোগে তারা উচ্চস্বরে এখন বলতে শুরু করেছে, পশ্চিমা গণতন্ত্র ব্যর্থ। অনেক দেশেই এর চর্চা বিশৃঙ্খলা ছাড়া অন্য কিছু বাড়ায়নি। এমন বলার মতো যথেষ্ট তথ্য উপাত্ত তাদের কাছে রয়েছে।
এ দেশগুলোর শাসকরা জনসাধারণের ওপর এমন স্টিমরোলার চালিয়েছে যে, একনায়ক শাসকরাও এমনটি চালায় না। নিজেদের শাসন পাকাপোক্ত করার জন্য জঘন্য সব অন্যায় তারা করেছে। মানুষের জীবনের মূল্য এসব দেশে কানাকড়িও নেই। যেনতেনভাবে মানুষ হত্যা করা হয়। গুম করে দেয়া হয়। অবৈধভাবে আটক করে রাখা হয়। এই ক্ষেত্রে প্রাণ হারানো কিংবা মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার ব্যক্তি ও তাদের পরিবার বিচারও পায় না। বিচারপ্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করার পথও তাদের বন্ধ করে রাখা হয়েছে।
পশ্চিমা গণতন্ত্রের নামে যা তা শাসন যখন চলছে তখন ভুক্তভোগীরা আমেরিকা ও ইউরোপের প্রভাবশালী দেশগুলোর সাহায্য প্রত্যাশা করেছে। দেখা গেল, তারা কোনো ধরনের সাহায্য করা তো দূরে থাক নিজেরাও এই খেলার সাথে যুক্ত হয়েছে। গণতন্ত্রের নামে এই অরাজকতা চালাতে দিয়ে পশ্চিমারা অন্যান্য সুযোগ বাগিয়ে নিয়েছে। ব্যাপারটা ছিল, এখন তোমরা জঙ্গলের শাসন কায়েম করো, আমাদের অসুবিধা নেই। তবে আমাদের স্বার্থটা রক্ষা করো।’ গণতন্ত্র ও মানবাধিকারকে অস্ত্র বানিয়ে পশ্চিমা আধিপত্য ধরে রাখার দিন যখন শেষ হতে চলেছে তখন ডেমোক্র্যাসি সামিটের আয়োজন সামান্য ‘বালির বাঁধ’ দেয়ার মতোই হবে। এ নিয়ে খুব আশাবাদী হওয়ার কিছু নেই। কেউ দাওয়াত না পেলে মর্যাদাহানি হওয়ার খুব বেশি কিছু আছে বলে মনে হয় না।
দু’দিনের সম্মেলনে বাইডেন রাজনৈতিক নেতা, নাগরিক সমাজ ও বেসরকারি উদ্যোক্তাদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন।
গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে হুমকি মোকাবেলায় তিনি যৌথ কর্মকৌশল গ্রহণের ডাক দেবেন। এ ব্যাপারে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের এক প্রচারপত্রে বলা হয়েছে, দেশে দেশে এমন নেতার উত্থান হচ্ছে যে, গণতন্ত্রের আদর্শ দুর্বল করছে। ভঙ্গুর আইনের শাসন, বর্ধমান বৈষম্য ও দুর্নীতির বিস্তার গণতন্ত্রকে ধসিয়ে দিচ্ছে। এমন স্বৈরশাসকের আবির্ভাব সাংবাদিক ও মানবাধিকারের রক্ষাকর্তাদের টার্গেট করছে; নির্বাচনী ব্যবস্থাকে শেষ করে দিচ্ছে। নিজেদের পক্ষে তারা তথ্যপ্রযুক্তিকে এমনভাবে ব্যবহার করছে, ভুল তথ্য ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দিয়ে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে দুর্বল করে দিচ্ছে।
প্রচারপত্রে আরো বলা হয়েছে, প্রমাণ করতে হবে গণতন্ত্র এখনো কার্যকর। এর মাধ্যমে জনগণের দৃশ্যমান উন্নয়ন সম্ভব। এজন্য গণতন্ত্রকামীদের একত্র হয়ে এগিয়ে আসতে হবে। স্বৈরাচারীদের দিক থেকে আসা হুমকিকে মোকাবেলা করতে হবে। এ সম্মেলন চিন্তাভাবনা, শোনা, শিক্ষা গ্রহণ, পরিকল্পনা গ্রহণ ও সে অনুযায়ী কাজ করার ভিত্তি তৈরি করবে। এই সম্মেলনের একটি ধারাবাহিকতা থাকবে। এটি বৈশ্বিক গণতন্ত্রায়নের পুনঃযাত্রা বা নতুন জীবন দানের জন্য কাজ করবে। সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীরা প্রতিশ্রুতি দেবেন। ঠিক এক বছর পর আরেকটি সম্মেলনের আয়োজন করবেন বাইডেন। কৃত প্রতিশ্রুতির কার্যকারিতা পর্যালোচনা করা হবে সেখানে।
এই প্রচেষ্টা বাইডেন প্রশাসন এমন এক সময় নিলেন এখন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব ও কর্তৃত্ব অনেকটাই ঢিল হয়ে গেছে। বিশ্বমোড়ল হিসেবে তাদের কথা আগের মতো আর খাটছে না। একমেরু বিশ্বের ভরকেন্দ্র বদলে আরো বেশ কিছু কেন্দ্র ইতোমধ্যে রচনা হয়ে গেছে। অনেক দেশে গণতন্ত্রের নামে এমন সব জঘন্য চর্চা হয়েছে যাতে সাধারণ মানুষের কাছে এই প্রমাণ এসে গেছে, পশ্চিমারা মানুষের অধিকার রক্ষায় নির্ভরযোগ্য এজেন্ট নয়। এদের আর বিশ্বাস করে ঠকা যায় না। অন্য দিকে রাজা বাদশাহদের শাসনের কথাই মানুষ স্মরণ করেছে। জনসাধারণের মঙ্গল কামনায় তারা অনেক কিছুই করেছেন। গড়পড়তা রাজা বাদশাহের শাসন, গণতন্ত্রের নামে স্বৈরাচারের চেয়ে অনেক ভালো। সেই দিক থেকে আমেরিকার গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার প্রচেষ্টার সম্ভাবনা ক্ষীণ বলেই মনে হয়।
বাংলাদেশের গণতন্ত্র ‘লাইফ সাপোর্টে’
উপরের মন্তব্যটি নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের। স্থানীয় সরকারের দ্বিতীয় দফা নির্বাচন প্রত্যক্ষ করার পর তিনি আরো মন্তব্য করেন, নির্বাচন এখন ‘আইসিইউ’তে। তার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান। এর আগেও তাকে এভাবে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনাতে দেখা গেছে। দেশের পরিস্থিতি এখন এতটাই স্পর্শকাতর; কথাবার্তা অনেক হুঁশিয়ার হয়ে বলতে হয়। বিশেষ করে সরকারের সমালোচনা করার কারণে যে কেউ যেকোনো সময় ফেঁসে যেতে পারেন। সেই ক্ষেত্রে লিখিত বক্তব্য অনেকটাই নিরাপদ। তিনি কুমিল্লা ও চট্টগ্রামের দুটো এলাকার দ্বিতীয় দফা নির্বাচনের উদাহরণ দেন। তিনি বলেন, কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত সদস্যপদে ৬৫ জন এবং চট্টগ্রামের রাউজানে ১৮২ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এভাবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় ‘শান্তিপূর্ণ’ নির্বাচন হলে নির্বাচন কমিশনের দরকার নেই বরং একজন সচিবের অধীনে এ কাজ হতে পারে। বাংলাদেশের জনগণ যে ভোটের অধিকার হারিয়ে ফেলেছে সেটা তিনি সরাসরি বলেননি। তবে তার ইতিবাচক কথাগুলোর মধ্যে তীব্র কটাক্ষ ছিল।
সবাই জানে, বাংলাদেশে এখন আর নির্বাচন বলে কিছু নেই। এর পরেও একদল লোক পাওয়া যাবে, বিনাশ হয়ে যাওয়া এই নির্বাচনব্যবস্থার পক্ষে তারা সাফাই গাইছে। মাহবুব তালুকদারের এ বক্তব্যকে তথ্যভিত্তিক নয় বলে দাবি করেছেন নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম। মাহবুব তালুকদার তার হাতে থাকা দুটো উপজেলা থেকে প্রাপ্ত তথ্য পড়ে শোনালেন।
প্রকৃতপক্ষে সারা দেশে ইউপি সদস্যদের বড় একটা অংশ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এর পরেও মাহবুব তালুকদারের এ বক্তব্যটি তথ্যভিত্তিক নয় কেন, বুঝে আসল না। আমরা দেখেছি, অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার ও সরকারের কিছু দায়িত্বশীল আমলা নির্বাচন নামের প্রহসনকে সমর্থন করেই চলেছেন। আরেক দল রয়েছেন যারা সব দায়দায়িত্ব চাপিয়ে দিচ্ছেন শুধু নির্বাচন কমিশনের ওপর।
তাদের কথাবার্তা এমন যে, বাংলাদেশের নির্বাচনব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যাওয়ার জন্য কেবল কয়েকজন নির্বাচন কমিশনার দায়ী। অথচ সবাই জানে, ক্ষমতাশীন দল ও তাদের শীর্ষ নেতৃত্বের ইচ্ছাই এখন সার্বভৌম। নির্বাচন কমিশনাররা কেবল শীর্ষ সার্বভৌম কর্তৃত্বের ইচ্ছার তামিল করে থাকেন। কারণ সংবিধান ও অন্যান্য লিখিত বিধিবিধান কিতাবে লিখিত। সেগুলো আপনা থেকে কিছু করতে পারে না। অন্য দিকে প্রশাসন পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করে সরকার।
jjshim146@yahoo.com
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা