২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

সব কিছু খেল তামাশা নয়

-

ক্রিকেট খেলা নিয়ে আমাদের অতি সচেতনতা ও মাত্রাছাড়া মতামত প্রকাশ বিদেশীদের বিভ্রান্ত করতে পারে। প্রথমত তারা মনে করতে পারে, পৃথিবী বিখ্যাত সব খেলা ও অ্যাথলেটে আমরা অত্যন্ত পারদর্শী। অথচ সারা বিশ্বে প্রচলিত রয়েছে এমন খেলায় বিশ্ব আসরে অংশ নেয়ার মতো যোগ্যতা আমাদের হয় না। বিশ্বকাপ ফুটবলের আসরে কোনো দিন বাংলাদেশ যোগ্যতা অর্জন করেনি। নিকট ভবিষ্যতে বাংলাদেশ যে বিশ্বকাপ ফুটবলে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারবে না, এ ব্যাপারে নিশ্চিত করে বলা যায়। বিশ্ব অলিম্পিকে আমরা ১৯৮৪ সাল থেকে এ যাবৎ অংশগ্রহণ করে একটি পদকও অর্জন করতে পারিনি। এটি একটি রেকর্ড হয়ে থাকছে অলিম্পিকে। সাধারণ জ্ঞানের প্রশ্ন হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সম্ভবত এটি চালুও হয়ে গেছে।

অলিম্পিকে ১৪৫টি দেশ এ পর্যন্ত পদক পেয়েছে। এর মধ্যে ইউরোপের মাত্র ৩৮ হাজার জনসংখ্যার দেশ লিচেনস্টেইনও রয়েছে। আমরা ১৭ কোটি জনসংখ্যার দেশ হয়ে সেটি পারিনি। ফলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশকে নিয়ে হাসিঠাট্টা রয়েছে। ক্রিকেট ছাড়া অন্য কোনো খেলায় বৈশ্বিক পর্যায়ে বাংলাদেশ শক্ত কোনো দল নয়। ক্রিকেট মূলত উপমহাদেশের খেলা। এ খেলাটিকে জাতীয় পর্যায়ে অনেক দেশে উৎসাহিত করা হয় না। অনেক বেশি সময়সাপেক্ষ খেলা হওয়ায় চীন, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও ফ্রান্সের মতো পরিশ্রমী জাতি খেলাটিকে গ্রহণ করেনি। খেলার মতো বিষয়ে তারা বেহিসাবি সময় ব্যয় করতে রাজি নয়। সত্য কথা হচ্ছে, পৃথিবীর সব জাতি ক্রিকেটের সমঝদার হলে আমাদের অবস্থানটা কী হতো, ভাবা কঠিন নয়। আমরা হয়তো ফুটবল বিশ্বকাপের মতো ক্রিকেটেও ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার সমর্থক হয়েই মারামারি করতাম। ‘হুজুগে বাঙালি’ কথাটি দার্শনিকরা ভেবেচিন্তে বলেছেন।

জীবনের বাস্তবতা বোঝাতে খেলার আয়োজন হয়েছে। এটি মূলত একটি বিনোদন। কঠিন সময়ের মধ্যে রিলাক্স করা যায় এর মাধ্যমে। দু’টি পক্ষ যখন খেলে- একদল জয়ী হয়, অন্য দলকে হারতে হয়। এর বিকল্প কিছু নেই। জয়ী হলে সীমাহীন বাহবা আর হেরে গেলে মাত্রাতিরিক্ত তিরস্কার, এমনটি কোনোভাবে কাম্য হতে পারে না। এটি একটি অসম্ভব ব্যাপার যে, সবাই জয়ী হবে।

বাংলাদেশ দল বিশ্বকাপ বিজয়ী দল নয়। এ দলের উত্থান সাময়িক বলেই প্রতীয়মান হয়। অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের মতো ধারাবাহিক ক্রিকেট জাতি হিসেবে আমাদের এখনো উত্থান ঘটেনি। আমাদের খেলার পাইপলাইনে সে মানের খেলোয়াড় তৈরি করা যায়নি।

এবারের টি-২০ বিশ্বকাপে উপর্যুপরি পরাজয়ের পর আমরা গুরুতর প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছি। জাতি হিসেবে আমরা যে সহিষ্ণু নই, এটি তার প্রমাণ। সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া দেখাতে কোনো বাধা থাকে না। তারা যা খুশি তা বিভিন্ন মঞ্চে বলতে পারেন। কিন্তু জাতীয় সংবাদমাধ্যমও দিশা হারিয়ে ফেলবে- সেটি ভালো কোনো লক্ষণ নয়। যেভাবে গণমাধ্যমে মন্তব্য করা হচ্ছে, তাতে মনে হতে পারে, বাংলাদেশের তালপট্টি দ্বীপটি অন্য কোনো দেশ দখল করে নিয়েছে। তাই সংবাদমাধ্যম সরকারি কর্তৃপক্ষের কঠোর সমালোচনা করছে, যাতে অচিরেই সামরিক অভিযান চালিয়ে সেটি পুনর্দখল করা যায়।

ক্রিকেট বোর্ডের কর্তাব্যক্তিদের নিয়ে যে সমালোচনা হয়েছে, তার বাস্তবতা রয়েছে। একটি খেলার ব্যবস্থাপনা কারা করবেন সেটি সম্পূর্ণরূপে জানাশোনা ব্যাপার। ফুটবলের কোচ যদি বানিয়ে দেয়া হয় হা-ডু-ডুর সাবেক খেলোয়াড়কে, আবার পেঁয়াজের ব্যবসায়ীকে যদি বানিয়ে দেয়া হয় হকির প্রধান কর্মকর্তা- সে খেলা গোল্লায় যাবে, তাতে সন্দেহ নেই। সেরা খেলোয়াড়কে বাদ দিয়ে নামেমাত্র খেলেছে এমন কাউকেও নেতা বানানো সঠিক হবে না। আবার সংশ্লিষ্টদের মতামতের প্রয়োজন রয়েছে। তাই প্রতিটি খেলার মূল ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ নিয়মিত নির্বাচনের মাধ্যমে বাছাই হবেন। দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করলে পরবর্তী বছর সেই ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ আবার নির্বাচিত হবেন। এই সাধারণ নিয়মটি প্রতিটি খেলাপ্রিয় জাতির ক্ষেত্রে দেখা যায়। ব্যতিক্রম ঘটেছে আমাদের দেশে।

ক্রিকেট ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অসংখ্য গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। কথাগুলো আমরা বলতে চাইছি- এটি উদ্দেশ্যহীন নয়। জাতি হিসেবে আমাদের অবস্থান ও মর্যাদার কথা আমরা বলি। প্রকৃতপক্ষে আমরা অসচেতন অসহিষ্ণু জাতি। আচরণ প্রদর্শনের ক্ষেত্রে আমরা চরম উদাসীন। সে জন্য জাতি হিসেবে আমরা দ্রুত অধঃপতনের দিকেই হাঁটছি।

বিচার কি খেলা হতে পারে
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে আমরা কারাগারে পাঠিয়ে দিলাম। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নারীর ‘অবমাননা’ করেছেন। ঘটনাটি ২০১৯ সালের মাঝামাঝি। তাকে ডাকা হয়েছিল একটি টিভি টকশোতে। তিনি ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেছিলেন। নারী সঞ্চালক তাকে পেয়েই বেশ উত্তেজনা বোধ করলেন। সেই টকশোকে তিনি সম্ভবত আরো প্রাণবন্ত করতে চাচ্ছিলেন। তিনি ব্যারিস্টার মইনুলকে আক্রমণাত্মক প্রশ্ন করলেন। প্রশ্নটি ছিল- রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামী-সংক্রান্ত। এমন আক্রমণের মুখে পড়ে তিনি হকচকিয়ে যান। একপর্যায়ে তিনি নিজেকে রোধ করতে পারেননি। উত্তেজনা সৃষ্টিকারী নারীকে ‘চরিত্রহীন’ বলে ফেলেন। বাংলাদেশের নারী সংগঠনগুলো এ নিয়ে চরম উত্তেজিত হয়ে গেল। তাদের বেশ কিছু সংগঠন রয়েছে। এরা সবাই চার দিক থেকে এক জোট হয়ে হইচই শুরু করল। তারা যৌথ সংবাদ সম্মেলন করলেন। আদালতে মামলা হলো। তথ্যপ্রমাণ সব হাজির ছিল। দ্বিতীয়বার ভাবার কোনো প্রয়োজন হলো না। মইনুল সাহেবকে জেলে পাঠিয়ে দেয়া হলো। ভাবখানা এমন যে, এ ব্যক্তি জামিন পেলে সমাজের বিপুল ক্ষতি হয়ে যাবে।

বাংলাদেশ রাষ্ট্রে ভেতরের শক্তিগুলোর এমন একতা বহুবার দেখা গেছে। এই একতা ব্যবহার করা হয়েছে মইনুলদের মতো সম্মানী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একহাত নেয়ার জন্য। এ দিকে সমাজে কত নারী সম্মানহানির শিকার হচ্ছেন তার খোঁজ খবর কেউ রাখে না।

আমাদের হাইপ্রোফাইল নারী অধিকার সংগঠনগুলোর নড়াচড়া আমরা তখন দেখি না। সম্প্রতি এক ডাক্তার ভয়াবহ অভিযোগ এনেছেন। তাকে জোরপূর্বক ভোগ করেছেন এক সিনিয়র সাংবাদিক। এখনো সেই সাংবাদিককে ধর্ষণের জন্য অভিযুক্ত করেনি নারী অধিকার সংগঠনগুলো। যৌথ সংবাদ সম্মেলন করবেন তা বহু দূরের বিষয়। এই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক গর্ভপাত করানোর অভিযোগও এনেছেন ওই নারী। কোন অপরাধটির অভিযোগের সারবত্তা আছে সেটি বুঝতে আমাদের অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। জাতি হিসেবে আমরা এতটা অথর্ব নই। তার পরও আমরা বিচারের ক্ষেত্রে নিজেদের চরম স্বাধীনতা ভোগ করছি। সে বিচারই আমরা শুধু করছি যে বিচার করা আমাদের পছন্দনীয়।

বর্তমান সরকারের এক যুগের বেশি শাসনে একই লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। ‘হুজুর’দের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষেত্রে তা আরো বাজেভাবে দৃশ্যমান হয়েছে। আলেম বা হুজুররা যখন সরকারের প্রতিপক্ষ হিসেবে সামনে এলেন, তাদের ওপর চরম খড়গ নেমে আসে। তাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হলো। জেলে পুরে দেয়ার পর তাদের বিরুদ্ধে নারীঘটিত কেলেঙ্কারি আবিষ্কার করা হলো। প্রত্যেকের মোবাইলে নাকি পাওয়া যাচ্ছিল পর্নো ছবি। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর রিমান্ড। কোনো ছাড় নেই। অন্য দিকে চলচ্চিত্রের একজন নায়িকার পক্ষে আমরা দেখলাম, সবাই একজোট হয়ে অবস্থান নিলো। অথচ তিনি ‘ব্যভিচার’ করছেন বলে প্রমাণ ছিল। এখন লুঙ্গি কাছা মেরে এক অদ্ভুত পোশাক পরে তার জন্মদিন পালন করছেন। তিনি যে প্রদর্শনী দিয়েছেন, সেটি সিনেমার কোনো অনুষ্ঠান ছিল না। জন্মদিনের প্রোগ্রাম তাকে কেন কাছা মেরে করতে হবে, তা কারো জানা নেই। জনাকীর্ণ একটি হোটেলে তিনি প্রদর্শনীটি করেন। এর আগে তাকে এক পুলিশ কর্মকর্তার (যিনি তার স্বামী নন) সাথে আপত্তিকর অবস্থায় দেখা গেছে। রিমান্ড-বিষয়ক উচ্চ আদালতের রায় তার ক্ষেত্রে কেন বাস্তবায়িত হয়নি, তা আমাদের মহামান্য আদালত খুব শক্তভাবে আদায় করেছেন। ম্যাজিস্ট্রেটরা কয়েকবার ক্ষমা চেয়েছেন এ জন্য। আলেম ওলামা, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও বহু নিরপরাধ মানুষের বিরুদ্ধে সরকার রিমান্ড অস্ত্রটিকে যথেচ্ছ ব্যবহার করেছে। যাই হোক, অন্তত সিনেমার একজন নায়িকার সূত্র ধরে হলেও সাধারণ মানুষের নিস্তার পাওয়ার সুযোগ হয়তো হবে। তাই এটি খুব বেশি মন্দ নয়।

জাতি যখন নিজেই তামাশার পাত্র হলো
রাজনীতি নাকি রাজার নীতি? এর মাধ্যমে নাকি মানুষের মুক্তি মেলে। সেই রাজনীতিকে আমরা পরিকল্পনা করে নির্বাসনে পাঠিয়ে দিলাম। মাঠেঘাটে এখন আর কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি নেই। অন্য দিকে ভোট হয়ে গেছে পরিপূর্ণ একটি তামাশা। এখন মহাসমারোহে চলছে ইউপি নির্বাচন। সবাই জানে, ভোট আর হয় না। ক্ষমতাসীনরা নিজেরা মেম্বার-চেয়ারম্যান ভাগাভাগি করে নিচ্ছে। বনাবনি না হলে লাশও পড়ছে। সারা দেশে একই দিনের একটি নির্বাচনে আগে যে সহিংসতা হতো- বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা এই ইউপি নির্বাচনে প্রতিদিন তার চেয়ে বেশি সহিংসতা হচ্ছে। প্রায় প্রতিদিন লাশও পড়ছে।

ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা এ নিয়ে কেমন খেলাধুলা করছেন, তার অনেক উদাহরণ তুলে ধরা যায়। কুষ্টিয়া থেকে এক ইউপি চেয়ারম্যানের পক্ষে এক যুবলীগ নেতার রাখা বক্তব্য ভাইরাল হয়েছে। সেই বক্তব্য নিয়ে একটি দৈনিক প্রতিবেদন লিখেছে। পত্রিকাটি শিরোনাম করেছে ‘লড়াই করে থানাকে হটায়ে দিতে পারি আমি সেই রবিউল’। নেতারা নাকি এই যুবলীগ নেতাকে প্রশ্ন করেছিলেন, আপনি কী কী পারেন। তিনি বললেন, ‘আমি রবিউল কুষ্টিয়ায় বসে থাকব, কাল যদি মনে করেন সমাবেশ করব, ১০ হাজার লোকের জমায়েত করতে পারব। আমার কিছু ছেলেপেলে আছে। দুই-তিন ঘণ্টা থানার সামনে লড়াই করতে পারি। লড়াই করে থানাকে হটায়ে দিতে পারি।’

খবরে জানা যায়, নির্বাচন উপলক্ষে বাজারে ক্ষুদ্র অস্ত্রের ব্যাপক চাহিদা। সীমান্ত হয়ে নিয়মিত বাংলাদেশে বিপুল অস্ত্র আসে। সারা দেশে বিশাল অস্ত্র ক্রেতা-বিক্রেতা সিন্ডিকেট। অন্য দিকে রয়েছে সারা দেশে এই রবিউলদের দৌরাত্ম্য। দুর্ভাগ্য আমাদের, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী খুব ব্যস্ত এবং আমাদের আদালতও এখন জমজমাট। সেখানে অসংখ্য মানুষের আহাজারি। এদের বেশির ভাগের দাবি, তারা কোনো অপরাধ করেননি। বোঝা যাচ্ছে, অপরাধী নয়- নিরপরাধের দিকে আমাদের রাষ্ট্রের পুরো শক্তি ক্ষয় হয়ে যাচ্ছে।

গত ১ নভেম্বরের খবর। রাজধানীর শাহীনবাগে বিএনপির এক দোয়া মাহফিল থেকে ১২ নেতাকর্মীকে ধরে নিয়ে আসে পুলিশ। গুম হয়ে যাওয়া বিএনপি নেতা সাজেদুল ইসলামের মা হাজেরা খাতুন এর আয়োজক। গুম হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের সংগঠন ‘মায়ের ডাক’-এর আহ্বায়ক তিনি। তিনি দীর্ঘ দিন হাসপাতালে ছিলেন। সুস্থ হয়ে বাসায় ফেরার পর দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেন। বিএনপির নেতাকর্মীরা তাকে দেখতে দোয়া মাহফিলে অংশ নিয়েছিলেন। রাষ্ট্রকাঠামো পুরোটাই যেন আমরা নিপীড়নের অস্ত্র বানিয়ে নিয়েছি। যারা খুন-গুম-সন্ত্রাস করে সমাজকে তটস্থ করে রাখছে তাদের বিরুদ্ধে পুলিশের কোনো ব্যবস্থা নেই। অন্য দিকে যারা নিজেদের সুস্থতা ও ভালো রাখার জন্য আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করছেন, তাদের ওপর চড়াও হচ্ছে পুলিশ।

মানুষের একটি ইচ্ছাশক্তি রয়েছে। সে যা হতে চাইবে তাই সে হয়ে উঠবে। জাতি হিসেবে আমরা যে নিষ্ঠাবান নই আজ তাই প্রমাণিত হয়েছে। আমরা গুরুতর বিষয়গুলোকে পুরোই খেল বানিয়ে নিয়েছি। আর আমরা খেলাকে বানিয়ে নিয়েছি গুরুতর বিষয়। প্রকৃতপক্ষে সেই খেলায়ও আমরা আন্তরিক ও কর্তব্যপরায়ণ নই। আমরা গুরুতর বিষয় নিয়ে খেলছি, আবার খেলা নিয়েও খেলছি। এ জগতের একজন মহান স্রষ্টা রয়েছেন। তিনিও বলছেন, চার দিকে যা আছে তা স্থায়ী নয়, ধ্বংসশীল। ‘কুল্লু মান আলাইহা ফান।’ (সূরা আর রহমান-২৬) যা কিছু রয়েছে চার দিকে, এগুলোর আসল বাস্তবতা নেই। এগুলো শেষ হয়ে যাওয়ার জন্য বা কল্পনা বা ফান। এর পরই বলা হয়েছে- স্রষ্টা নিজে স্থায়ী। যারা এ শেষ হতে যাওয়া পৃথিবীতে বিশ্বাসী হবে আর সে অনুযায়ী নিষ্ঠাবান হবে তারাই পাবে স্রষ্টার ‘দয়া’। জাতি হিসেবে আমরা এই চরিত্রের নই বলে প্রমাণ দিচ্ছি। তবে বিচ্ছিন্নভাবে কেউ যদি এই চরিত্রের হন তা হলে সে স্রষ্টার পরবর্তী স্থায়ী জগতে জায়গা পাবেন।
jjshim146@yahoo.com


আরো সংবাদ



premium cement