২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

আফগানিস্তানে মার্কিন পরাজয়ের গুচ্ছকারণ

- ফাইল ছবি

২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ মার্কিন সেনাবাহিনীর জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল মার্ক মিলে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের আর্মস সার্ভিসেস কমিটির শুনানিতে হাজির হয়ে আফগান যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র পরাজিত হয়েছে বলে অকপটে স্বীকার করেছেন। পরাজয়ের গ্লনি নিয়ে আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের হুড়মুড় করে সৈন্য প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া আধুনিক বিশ্বের ইতিহাসের দু’টি ঘটনা বিশ্ববাসীকে স্মরণ করিয়ে দেয়। প্রথমটি : ১৯৭৫ সালের ২৯ এপ্রিল ১০ বছরের যুদ্ধে পরাজয়বরণ করে ভিয়েতনাম থেকে মার্কিন বাহিনীর সায়গন থেকে পশ্চাৎপসরণ। দ্বিতীয়টি : ১৯৭৯ সালে ইরানের ইসলামী বিপ্লব। বিশেষ করে ইরান বিপ্লবের সময় বিশ্বব্যাপী ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছিল। ইরানের ইসলামী বিপ্লবের বিষয়ে মানুষের তুমুল আগ্রহ ও কৌত‚হল সৃষ্টি হয়েছিল। ৩১ আগস্ট ২০২১ দীর্ঘ ২০ বছরের যুদ্ধের সমাপ্তি টেনে যুক্তরাষ্ট্র একটি দায়সারা চুক্তির আড়ালে তড়িঘড়ি আফগানিস্তান ত্যাগ করে। মার্কিন বাহিনীর বেশির ভাগ অংশ মূল্যবান অস্ত্র ও যন্ত্রপাতিসহ রাতে বাগরাম বিমানঘাঁটি দিয়ে পলায়ন করে। এবারো আমেরিকার নেতৃত্বে পাশ্চাত্যের শক্তধর বাহিনীকে বিতাড়িত করে তালেবানের বিজয়ে ইরানি বিপ্লবের মতো সারা বিশ্ব ফের আলোড়িত হয়। পশ্চিমা বিশ্ব ও খোদ মার্কিনিরাও এটিকে যুক্তরাষ্ট্রের অপমানজনক পরাজয় হিসেবে আখ্যায়িত করছেন। রিপাবলিকান কমিটির শীর্ষ রিপ্রেজেন্টেটিভ মাইক ম্যাককল বলেন, ‘আমি জীবনে কখনো চিন্তাও করিনি যে, আমাকে দেখতে হবে যে আমরা তালেবানের কাছে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করব’ (ডেইলি স্টার : ১৫/০৯/২০২১)। কাজেই প্রশ্ন দাঁড়ায় কেন যুক্তরাষ্ট্র ২০ বছর যুদ্ধের পর তালেবানের সাথে পরাজয়ের চুক্তি করল? মার্কিন প্রশাসনের এ পিছু হটার সিদ্ধান্ত আসলে হুট করে নেয়া নয়। ভেবেচিন্তে বিস্তারিত পর্যালোচনা করেই অপমানকর পশ্চাৎপসরণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ। এর পেছনে অনেক কারণ রয়েছে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করেন। এর কিছু আলোচনা করা যেতে পারে।

ক. যুদ্ধের অস্পষ্ট বা অস্বচ্ছ কারণ : রণকৌশলবিদদের মতে কোনো যুদ্ধে জয়ের প্রধান উপাদান একটি সঠিক কারণ বা উদ্দেশ্য। যুদ্ধে জয়ের জন্য জীবন বিলিয়ে দিয়ে যুদ্ধ করে সৈনিক। এই সৈনিক কোনো রোবট নয়। প্রথমেই সে বুঝতে চায় আমি যে জীবন দেবো, কেন? কারণটা তার কাছে মনঃপূত হলেই অকাতরে জীবন দেবে। এ ধরনের জীবন বাজি রাখা সৈনিক যে দলের পক্ষে যুদ্ধ করে, তারাই বিজয়ী হয়। ২০০১ সালের অক্টোবরে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বুশ ‘৯/১১’-এর নির্মম হামলার প্রতিশোধ নিতে আফগানিস্তান আক্রমণ করেছিলেন; কিন্তু আফগানিস্তানের কোনো নাগরিক সেই হামলায় জড়িত ছিলেন না বা আফগানিস্তান অন্য কোনো দেশে কোনো হামলা চালায়নি। ওই হামলার কথিত মাস্টার মাইন্ড ওসামা বিন লাদেন একজন সৌদি নাগরিক। অতিথি হিসেবে আফগানিস্তানে আশ্রিত ছিলেন। প্রেসিডেন্ট বুশ বিন লাদেনকে আমেরিকার কাছে হস্তান্তরের কথা বললে সে সময়ের তালেবান সরকার লাদেনের বিরুদ্ধে অভিযোগের তথ্যপ্রমাণ চায়। এতে বুশ প্রশাসন ক্ষিপ্ত হয়ে আফগানিস্তানে হামলা চালিয়ে দখল করে নেয়। এভাবে ঠুনকো অজুহাতে ১০ বছর আফগানিস্তানে দখলদারিত্বের পর ২০১১ সালে বিন লাদেনকে আমেরিকার কমান্ডো বাহিনী হত্যার দাবি করে। এতে তাদের প্রতিশোধের শেষ অজুহাতটা ফুরিয়ে গেলে পরবর্তীতে মার্কিন সৈন্যদের কাছে যুদ্ধের কারণ অস্পষ্ট হয়ে ওঠে। এ অস্পষ্টতা নিয়ে আরো ১০ বছর জোরপূর্বক যুদ্ধ চালিয়ে যায়; কিন্তু সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ ছাড়া যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া সৈনিকদের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে।

খ. জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি : ২০ বছরের যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। ‘এশিয়া টাইমস’-এর তথ্যমতে, যুক্তরাষ্ট্রের খরচ হয়েছে মোট ২ দশমিক ৬ ট্রিলিয়ন ডলার। মোট খরচের ২৯৬ বিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়েছে আফগানফেরত সৈনিকদের চিকিৎসায়। ৯৩৩ বিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে আফগান সামরিক অভিযানে, যা মোট খরচের ৪১ শতাংশ। যুদ্ধের সময় প্রতিদিনের খরচ ছিল ৩০০ মিলিয়ন ডলার (সূত্র : নয়া দিগন্ত : ১৯/০৪/২০২১ ও ২৪/০৮/২০২১)। আর শুধু আফগানিস্তানে তাদের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তায় ব্যয় হয়েছে আট হাজার ৮০০ কোটি টাকা (যুগান্তর : ১৬/০৮/২০২১)। এ যুদ্ধে দুই হাজার ৪৪৮ জন মার্কিন সৈন্য নিহত ও ২০ হাজার ৭২২ জন আহত হয়েছে (নয়া দিগন্ত : ২৪/০৮/২০২১)। যুদ্ধের ময়দানে নিহত হওয়া ছাড়াও ৩০ হাজার ১৭৭ মার্কিন সেনা আফগানিস্তান ও ইরাক যুদ্ধ থেকে ফিরে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে আত্মহত্যা করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াটসন ইনস্টিটিউটের প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছে, ২০০১ সালের পর থেকে ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধফেরত ৬০ হাজার বা ১৩.৫ শতাংশ সেনা ‘পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস সিন্ড্রম’ রোগে ভুগছেন। মানসিক রোগে আক্রান্ত মার্কিন সেনাদের মোট সংখ্যা পাঁচ লাখ, যাদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। মূলত এ কারণেই সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তালেবানের সাথে চুক্তির মাধ্যমে সেনাদের ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ নেন (নয়া দিগন্ত : ০৫/০৮/২০২১)।

গ. অভ্যন্তরীণ চাপ : দীর্ঘ যুদ্ধের ফলে অর্থ ও জনবলের ক্ষয়ক্ষতির পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের ভেতর থেকেই মার্কিন প্রশাসনের ওপর চাপ ক্রমেই বাড়ছিল। প্রশাসন যুদ্ধের প্রকৃত অবস্থা আড়ালে রাখলেও মার্কিন জনগণের ওপর অর্থনৈতিক চাপের প্রভাব পড়তে থাকে। নাগরিকদের অনেক সরকারি সুবিধার পরিধি সঙ্কুচিত হয়ে পড়ায় সামরিক ব্যয়কেই দায়ী করা হচ্ছিল। তা ছাড়া আমেরিকানরা দ্রুততার সাথে সহজসাধ্য উপায়ে ও কম খরচে যুদ্ধ জয়কেই পছন্দ করে। ফলে ডেমোক্র্যাটিক ও রিপাবলিকান উভয় দলের নেতারা আফগানিস্তানে অর্থ অপচয়, অস্ত্র ক্ষয় ও জীবন হানিকে অর্থহীন মনে করে ঐকমত্যে পৌঁছেছে, আরো পাঁচ বছর থাকলেও আফগানিস্তানের পরিস্থিতির কোনো পার্থক্য হবে না। তা ছাড়া ডোনাল্ড ট্রাম্পের করা সৈন্য প্রত্যাহারের চুক্তির প্রতিও মার্কিন জনগণের নজরদারি ছিল। তাই তো মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্র অ্যান্তোনি ব্লিংকেন বলেছেন, ‘আমরা আগের সরকার থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের বেঁধে দেয়া সময় উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছি মাত্র।’

ঘ. মার্কিন দখলদারিত্বকে আফগানদের প্রত্যাখ্যান : আফগানরা কখনো বিদেশী শক্তির দখলদারিত্ব মেনে নেয়নি। ঊনবিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ এবং বিংশ শতাব্দীতে সোভিয়েত দখলদার বাহিনীকে সমূলে পর্যুদস্ত করেছে। আফগানিস্তানের ভ‚মিকে বলা হয় ‘সাম্রাজ্যবাদের কবর’। তাই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামে মার্কিন ঔপনিবেশকেও তারা বৈধতা দেয়নি। গোত্রভিত্তিক স্বাধীনচেতা ও কঠোরভাবে ইসলামী বিধিবিধানের অনুসারী একটি সমাজ কিছুতেই পশ্চিমা ধাঁচের গণতান্ত্রিক শাসনের নামে অভিভাবকত্ব মেনে নিতে পারেনি। তা ছাড়া দিনের পর দিন মার্কিন বাহিনীর নেতিবাচক আচরণ আফগানদের শত্রুতে পরিণত করেছে। দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকার খবর মোতাবেক মার্কিন আগ্রাসনের পর ২০১২ সালের ১১ মার্চ মার্কিন সার্জেন্ট রবার্ট বেলস নিজের সেনাঘাঁটি থেকে বের হয়ে পাশের গ্রামে গিয়ে ঠাণ্ডা মাথায় ৯ শিশুসহ ১৬ নিরীহ গ্রামবাসীকে হত্যা করে। উত্তরাঞ্চলের পানশির জেলার ‘জাঙ্গাবাদ’ গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছিল। বিভিন্ন সময়ে ওই এলাকায় বিমান হামলা ও গুলি করে ৪৯ জন সাধারণ মানুষকে মার্কিনিরা হত্যা করে। সেই আমেরিকানদের সহযোগিতায় আবার আফগান সরকারি বাহিনী বেসামরিক লোকজন ও নারীদের ওপর নির্যাতন চালিয়ে জনমনে মার্কিনিদের ব্যাপারে ঘৃণা আরো বাড়িয়ে তোলে। আর মার্কিন ড্রোন হামলা, রাতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তালেবান তল্লাশি ও নারী-শিশুদের নির্যাতন প্রভৃতি মার্কিন সৈন্যদের বিষয়ে আফগানদের মন বিষিয়ে দেয়। এমনকি তালেবান টার্গেটের নামে বিয়েবাড়ি, জানাজার নামাজ প্রভৃতি সামাজিক কর্মকাণ্ডেও ড্রোন হামলা চালিয়ে নির্বিচারে নাগিরকদের হত্যা করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন ইউনির্ভাসিটি ২০১৯ সালের একটি গবেষণায় বলেছে, মার্কিন বাহিনীর ক্রসফায়ার, ‘ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস’, গুপ্তহত্যা, বোমা নিক্ষেপ, রাতে অতর্কিত হামলা, গুচ্ছবোমা নিক্ষেপ ইত্যাদিতে বহু বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। বার্তা সংস্থা এপির তথ্যমতে, ২০০১ সাল থেকে প্রায় এক লাখ ৫৭ হাজার মানুষ আফগানিস্তানের যুদ্ধে নিহত হয়েছে; যার মধ্যে ৪৭ হাজার বেসামরিক লোক। দুই লাখ ৭০ হাজার মানুষ বিদেশে পালিয়েছে, ৪০ লাখ মানুষ বাস্তুহারা হয়েছে (ডেইলি স্টার : ১৯/০৬/২০২১)। স্কটিশ ইতিহাসবিদ উইলিয়াম ডালরিম্পল ২০০৯-১০ সালে আফগানিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চল সফর করে ২০১২ সালে ‘রিটার্ন অব আ কিং দ্য ব্যাটেল ফর আফগানিস্তান’ নামক গবেষণাধর্মী বই লিখেছেন। তিনি তৎকালীন কারজাই মন্ত্রিসভার সদস্য আনওয়ার খানের সাথে তার নিজ গ্রামে বেড়াতে গিয়েছিলেন, যেখানে ১৮৪২ সালে ব্রিটিশদের শেষ প্রতিরোধ ধ্বংস করে ২০০ সৈন্যের কবর রচনা করা হয়েছিল। আনওয়ার খান ওই লেখককে বলেছিলেন, ১৮৪২ সালের ব্রিটিশ ও ২০০৯ সালের মার্কিনিদের মধ্যে হুবহু মিল রয়েছে। তখনো বিদেশীরা এসেছিল নিজেদের স্বার্থে, আমাদের জন্য নয়; এবারো তাই। ওরা বলে, ‘আমরা তোমাদের বন্ধু, আমরা সাহায্য করতে চাই। কিন্তু ওরা মিথ্যা বলেছিল’ (প্রথম আলো : ১৯/০৮/২০২১)। ডালরিম্পল ঘুরে ঘুরে দুর্নীতি, অযোগ্যতা প্রভৃতির অভিযোগ বিভিন্ন জায়গায় কারজাই সরকারের বিরুদ্ধে শুনতে পান। তিনি বলেন, ‘এসব ক্ষোভই তালেবানদের প্রত্যাবর্তনের পথ করে দিয়েছে।’ এই লেখক সেই গ্রামের ‘ঘিলজাই’ উপজাতির এক সভায় বসেছিলেন মতবিনিময়ে। সেখানে প্রবীণ একজন নাগরিকের কাছে তিনি জানতে পারেন; এক আমেরিকান অফিসার তাকে প্রশ্ন করেছিলেন, আপনারা কেন আমাদের ঘৃণা করেন? উত্তরে সেই প্রবীণ আফগানি বলেছিলেন, ‘তোমরা আমাদের ঘরের দরজা ভেঙে বাড়িতে ঢুকে মেয়েদের চুল ধরে টানো, শিশুদের লাথি মারো। আমরা এটি মানতে পারি না। আমরা এর জবাব দেবো, দাঁতভাঙা জবাব দেবো (প্রাগুক্ত)। অন্য দিকে মার্কিনিদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত যে সরকারের সুরক্ষা আফগান সেনাদের দেয়ার কথা সেই সরকারের কোনো জনসমর্থনই ছিল না। সেই সরকারের নেতারা ছিলেন দুর্নীতিতে আকণ্ঠ নিমিজ্জিত, তাদের অনেকেই ছিলেন বিদেশী পাসপোর্টধারী এবং পরিবার বিদেশে বাস করত।

ঙ. বাইডেনের ব্যক্তিগত আগ্রহ : আফগানিস্তানে যুদ্ধ বন্ধ করে সৈন্য সরিয়ে নিয়ে আসার ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ব্যক্তিগত আগ্রত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্য প্রত্যাহারে যথেষ্ট প্রভাব ফেলেছে। অনেক পর্যবেক্ষক মনে করেন ২০২২ সালে অনুষ্ঠিতব্য মধ্যবর্তী নির্বাচন সামনে রেখে অভ্যন্তরীণ হিসাব-নিকাশ থেকেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। তবে গোয়েন্দারা ফোরকাস্ট করেছিল, আফগান সরকারের পতন ঘটিয়ে তালেবানরা কাবুল দখল করতে ৬ মাস থেকে ১৮ মাস সময় নেবে। কিন্তু ৯ দিনের মধ্যে কাবুলের পতন ঘটে যাবে, এটি চিন্তাও করতে পারেনি। বাইডেনের রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ ছাড়াও আফগান সরকারের প্রতি তার একটি অভিমান ছিল। ওবামা প্রশাসনের ভাইস প্রেসিডেন্ট থাকাকালে তিনি ২০০৯ সালে কাবুল সফরে গিয়ে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইয়ের সাথে অনাকাক্সিক্ষত এক বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। হামিদ কারজাইকে তার ভাইয়ের দুর্নীতির বিষয়ে সতর্ক করার জবাবে কারজাই মার্কিনিদের বিরুদ্ধে বেসামরিক মানুষ হতাহতের অভিযোগ তুললে বাইডেন প্রচণ্ড ক্ষেপে গিয়ে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় করেন। সেই থেকে বাইডেন আফগান সরকারের প্রতি হতাশ ছিলেন। কাজেই আমেরিকান জেনারেলরা আফগান সরকারের সাথে তালেবানের একটি রাজনৈতিক সমঝোতা ও স্থিতিশীলতা আসার আগ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে সৈন্য অপসারণের নির্দেশে অটল থাকেন বাইডেন। এ অবস্থায় মার্কিন গোয়েন্দাদের পূর্বাভাস ভুল প্রমাণ করে অত্যন্ত দ্রুততার সাথে কাবুল দখল করে তালেবান মার্কিন বাহিনীর পরাজয় নিশ্চিত করে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেয়। (দ্বিতীয় কিস্তি পরবর্তীতে)

লেখক : নিরাপত্তা বিশ্লেষক
Email: [email protected]


আরো সংবাদ



premium cement
আ’লীগ নেতাদের নিয়ে ’জাগোনারীর’ সমাবেশ, আমন্ত্রণে নেই বিএনপি-জামায়াত জাহাজে ৭ খুনের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব হলেন সরওয়ার আলম প্রধান উপদেষ্টার সাথে বিশ্বব্যাংকের আবাসিক পরিচালকের বিদায়ী সাক্ষাৎ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় তরুণদের প্রস্তুতি নিতে হবে : পরিবেশ উপদেষ্টা চুয়াডাঙ্গায় বিজিবির অভিযানে ৪টি স্বর্ণের বার উদ্ধার স্বামীসহ সাবেক এমপি হেনরীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা সিলেটে ৫ হাজার কোটি টাকার দুই ‘মেগা’ প্রকল্প বাতিল পৌনে চার ঘণ্টায় ঢাকা থেকে ট্রেন যাবে খুলনায়, কাল উদ্বোধন দেশে ফ্যাসিবাদী ষড়যন্ত্র এখনো চলছে : বিএনপি মহাসচিব চৌদ্দগ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধাকে নাজেহাল করার ঘটনায় জামায়াতের নিন্দা

সকল