২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে সমৃদ্ধি অর্জন সম্ভব নয়

- ফাইল ছবি

চার পাশে নৈতিকতার অব্যাহত অধঃপতন দেখছি। কোনোভাবেই যেন আমরা কাক্সিক্ষত জায়গায় পৌঁছাতে পারছি না। আল্লাহ তায়ালা মানুষের মধ্যে ভালো ও মন্দ দু’টি চরিত্রই দিয়েছেন। এ দুয়ের পার্থক্য করতে বিবেকও দিয়েছেন। মানুষের বিবেক যেন সঠিক পথ অনুসরণের শিক্ষাটি পেতে পারে সে জন্য নবী ও রাসূল পাঠিয়েছেন। নবী ও রাসূলগণ তাদের কাজের মাধ্যমে শিক্ষা দিয়ে গেছেন কোনটি ভালো আর কোনটি খারাপ। সৃষ্টিকর্তা বলে দিয়েছেন কোনটা ভালো, কোনটা মানবজাতির জন্য কল্যাণকর, আর কোনটি খারাপ। সৃষ্টিকর্তার এই নির্দেশ বিশ্বজনীন ও পরম। এ নির্দেশই আমাদের জন্য আসল জায়গা। এই জায়গায় এসে আমরা নৈতিকতার পক্ষে কথা বলব। আল্লাহ আমাদের স্র্রষ্টা ও প্রতিপালক, তিনি সমগ্র মানবজাতিকে সামনে রেখে নির্দেশনা দিয়েছেন। আল্লাহ সর্বশেষ নবী ও রাসূল মুহাম্মদ সা:কে পাঠিয়েছেন মানবজাতিকে শিক্ষা দিতে এবং তাঁর মাধ্যমে কুরআন অবতীর্ণ করেছেন। কুরআন হলো মানবজাতির চলার মূল দিকনির্দেশনা।

বর্তমান যুগে নীতি ও নৈতিকতার সঙ্কট দেখা দিয়েছে। দিনে দিনে পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপের দিকে যাচ্ছে। স্বাধীনতার পূর্বাপর আমাদের দেশের বর্তমান সময় তুলনা করলে বিষয়টি আরো স্পষ্ট হবে। নৈতিকতার উন্নয়নের বিচারে আজ সবার মনে প্রশ্ন- আসলে আমরা কোন দিকে যাচ্ছি? পার্থিব ও বস্তুগত উন্নয়নের বিচারে বাংলাদেশ অনেক উন্নত হয়েছে, এটা স্বীকার করতেই হয়। অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রশংসা করার মতো। যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক ভালো হয়েছে। এখন দেশের যেকোনো প্রান্তে গাড়ি দিয়ে যাওয়া সম্ভব। পদ্মা সেতু চালু হলে গোটা দেশ একটি সড়ক যোগাযোগ নেটওয়ার্কের আওতায় চলে আসবে। বর্তমান সরকারের বিগত ১২ বছরের আমলে যেসব মেগা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে; সেগুলো দেশের বস্তুগত উন্নয়নে বিশাল ভ‚মিকা রাখছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে- আমরা কি নৈতিক মান উন্নত করতে পারছি?

যদি প্রধান নৈতিক গুণটি বিচার করি, সেটি হলো সত্য বলা। আমরা কতটা সত্য কথা বলছি। সব অন্যায়ের মূলে আছে মিথ্যা। রাসূল সা: বলেছেন, ‘মিথ্যা হলো সব পাপের জননী’। আল্লাহ তায়ালা কুরআনের অসংখ্য জায়গায় মিথ্যাবাদীর শাস্তি সম্পর্কে বলেছেন। আল্লাহর খুবই অপছন্দের একটি কাজ হলো মিথ্যা বলা। অথচ দুঃখের বিষয়, আমরা জাতিগতভাবে মিথ্যার সাথে নিজেদের অনেক বেশি জড়িয়ে ফেলেছি। কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া আমরা প্রায় সবাই মিথ্যার সাথে জড়িয়ে পড়েছি। যারা ক্ষমতায় আছেন তারা যেমন সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত নেই। যারা ক্ষমতার বাইরে তাদেরও একই অবস্থা। সত্য কথা বলার লোকের খুবই অভাব। একনিষ্ঠ সত্যবাদী মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। এটা আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যজনক। আল্লাহ তায়ালা নবী হিসেবে যাদের নির্বাচিত করেছেন তারা সবাই সত্যবাদী ছিলেন। আরো অনেক গুণ তাদের ছিল। সত্যবাদিতা হচ্ছে নবীদের অন্যতম প্রধান উপাদান। যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন, যারা সমাজকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তারা নেতৃত্বের যে পর্যায়েই থাকুন না কেন আমরা অনুরোধ করব তারা যেন সত্যবাদী হওয়ার চেষ্টা করেন। মিথ্যা পরিহার করেন। মিথ্যা পরিহার করে সত্যের ওপর অটল থাকতে পারলে আমরা অনেক বেশি সমৃদ্ধি অর্জন করতে পারব। গণমাধ্যমে অনেক দুর্নীতির খবর বের হয়। এর প্রধান কারণ সত্য কথা না বলা। সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে, কারণ আমরা সবাই আমাদের কৃতকর্ম লুকানোর চেষ্টা করি। আমরা সত্য প্রকাশ করতে ভয় পাই। সত্য প্রকাশ না করা ও মিথ্যার আশ্রয় গ্রহণ আমাদের বহু সমস্যা সৃষ্টির পেছনে অন্যতম কারণ। আমরা জাতি হিসেবে এগিয়ে যেত চাইলে, সমাজকে পরিবর্তন করতে চাইলে, একটি সুখী ও সমৃদ্ধ সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

বাংলাদেশকে শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধিশালী দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার অনেকগুলো উপাদান রয়েছে। আমরা একই ভাষাভাষী, সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ধর্ম এক, মাজহাবও একই- আমাদের ঐক্যের এত জায়গা থাকার পরও আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে না পারা বিস্ময়কর। মনে হয় এর প্রধান কারণ আমরা সত্যনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছি না। আমরা সত্য কথা বলাকে গৌরবের মনে করি না। বরং অবলীলায় মিথ্যা কথা বলছি। মিথ্যার আশ্রয় নিচ্ছি। অন্যের সমালোচনা করছি। অন্যের দোষ খুঁজছি।
দেশের ৯০ শতাংশ মানুষ মুসলমান। অথচ একজন মুসলিম হিসেবে, বিশ্বসী হিসেবে- তারা মনে করেন আল্লাহ তার ভালো কাজের পুরস্কার দেবেন, মন্দ কাজের শাস্তি দেবেন। যারা মুসলমান নন, তারাও স্র্রষ্টায় বিশ্বস করেন। পৃথিবীর সব ধর্মেই মিথ্যাকে নিন্দনীয় বলা হয়েছে। মুসলিম হিসেবে আমরা বিশ্বস করি, ইহজগতের পর আমাদের জন্য একটি পরজগৎ রয়েছে। সেখানে আমাদের কৃতকর্মের বিচার হবে। যার ভিত্তিতে পুরস্কার ও শাস্তি দেয়া হবে। এই বিশ্বাস আমাদের মনে গভীরভাবে প্রোথিত থাকলে মিথ্য বলতে পারি না। মিথ্যা হচ্ছে সব অন্যায়ের মূল। মিথ্যার ঘেরাটোপ থেকে আমাদেরকে বেরিয়ে আসতে হবে। মিথ্যাকে পরিত্যাগ করতে হবে। সত্যকে আঁকড়ে ধরতে হবে। সত্য কথা যদি আমার বিরুদ্ধে, আমার দলের বিরুদ্ধে, আমার পরিবারের বিরুদ্ধে যায় তারপরও সত্যকে মেনে নিতে হবে। প্রকাশ করতে হবে। আমাদের সত্যপন্থী হওয়ার চেষ্টা করতে হবে। এটা যদি আমরা করতে পারি তাহলে জাতি হিসেবে আমরা নিজেদের একটি বড় নৈতিক ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করতে পারব। তাহলে চার পাশে যে অত্যাচার, অনাচার, দুর্নীতি দেখছি তা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। মিথ্যার ওপরে এসব অনাচার প্রতিষ্ঠিত। এ জন্য আমাদের জাতীয় নেতাদের এগিয়ে আসতে হবে। তাদের মানুষ অনুসরণ করেন। নবীন প্রজন্ম তাদের দেখে শিখবে। নবীনরা ভবিষ্যতে দেশকে নেতৃত্ব দেবে। তাদের সামনে উদাহরণ হতে হবে বর্তমান নেতৃত্বকে। তখন তারা বলতে পারবে আমি আমার শিক্ষককে অনুসরণ করব, আমার রাজনৈতিক নেতাকে অনুসরণ করব। তিনি মিথ্যা কথা বলেন না, সত্য বলেন। তখন সমাজে সত্য প্রতিষ্ঠিত হবে।

সত্য কথা বলার নৈতিক গুণটি অর্জনে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যেও জোর দিতে হবে। শিক্ষার্থীদের সত্য বলতে উদ্বুদ্ধ করতে পাঠ্যপুস্তকে উপযুক্ত গল্প, কবিতা সংযোজন করতে হবে। বর্তমান স্কুল-কলেজের কারিকুলাম আমার দেখার সুযোগ হয়নি। তবে আমরা ছোটবেলায় এমন অনেক গল্প, কবিতা পড়েছি; সেখান থেকে আমরা সত্য কথা বলতে উদ্বুদ্ধ হয়েছি। সত্য কথা সম্মানের। মিথ্যা কথা খারাপ। আমাদের ধর্মে মিথ্যাকে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে। মিথ্যা কথা বললে পরকালে অনেক শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। আমাদের এর অনুশীলন করতে হবে। এই চেতনা লালন করতে হবে। সমাজের সর্বস্তরের সব মানুষ, যারা ক্ষমতায় আছেন, যারা ক্ষমতার বাইরে আছেন, যারা সমাজকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সবাইকে বলব যতটা সম্ভব মিথ্যার মূলোৎপাটন করুন।

আমাদের একটি ভুল ধারণা আছে যে, রাজনীতি করতে গেলে কোনো কোনো ক্ষেত্রে মিথ্যা বলা দোষের কিছু নয়। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে- মিথ্যা, মিথ্যাই। রাজনীতিক হোন বা সামাজ নেতা, অথবা শিক্ষক- তিনি যে অবস্থান থেকেই মিথ্যা কথা বলুন না কেন সেটি ঠিক নয়। একজন মুসলমান সেটি পারে না। কারণ একজন মুসলমান সব সময়ের জন্যই মুসলমান। আমাদের অনেকে ভাবতে পারেন যে, মসজিদে গিয়ে মিথ্যা কথা বলা যাবে না, খারাপ কিছু করা যাবে না, আল্লাহ আমাকে দেখতে পাচ্ছেন। কিন্তু আমরা ভুলে যাই- শুধু মসজিদ নয়, আল্লাহ সর্বত্রই আমাকে দেখছেন। আল্লাহ বলেছেন, আমাদের সব কাজ, প্রতিটি কথা রেকর্ড করা হচ্ছে। প্রতিটি পথচলা রেকর্ড হচ্ছে। আমাদের জীবনের প্রতিটি মুহূর্তের ভিডিও-অডিও ধারণ করতে আল্লাহ ফেরেশতা নিযুক্ত করে রেখেছেন। আমরা প্রকাশ্যে কী করছি ও বলছি, গোপনে কী করছি ও বলছি কোনো কিছুই ফেরেশতাদের রেকর্ডের বাইরে থাকছে না। এই অনুভ‚তি যদি কারো মধ্যে থাকে তাহলে তিনি মিথ্যা কথা বলতে পারেন না। কুরআনে বলা হয়েছে, ‘নিশ্চই যারা তার পালনকর্তাকে না দেখে ভয় করে, তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও মহাপুরস্কার। তোমরা তোমাদের কথা গোপনে বল অথবা প্রকাশ্যে বল, তিনি তো অন্তরের বিষয়াদি সম্পর্কে সম্যক অবগত।’ (সূরা মুলক, আয়াত : ১২-১৩) এটি ইসলামী নৈতিকতার অন্যতম মূল ভিত্তি। এই ভিত্তিতে অটুট থাকলে তাকে আল্লাহ অনেক পুরস্কৃত করবেন। সে কখনো মিথ্যা কথা বলতে পারে না। সে সত্যাশ্রয়ী হবে। সত্য প্রতিষ্ঠিত হলে সমাজে অবশ্যই খারাপ কাজ বন্ধ হবে। অন্যায় বন্ধ হবে। দুর্নীতি থাকবে না।

আমরা পত্রিকান্তরে দেখছি, সরকার বড় বড় প্রকল্প গ্রহণ করছে। বিপুল অঙ্কের অর্থ ব্যয় হওয়ার পরও সময়মতো সেগুলো শেষ হচ্ছে না। এতে জনগণের দুর্ভোগ বাড়ছে। ব্যয় বাড়ছে। এর জন্য সরকার যে ঋণ নিচ্ছে তার জন্য সুদ গুনতে হচ্ছে। তখন জনগণের মাথাপিছু সুদের পরিমাণ বাড়ছে। এই গোটা প্রক্রিয়ার সাথে কোনো-না-কোনোভাবে মিথ্যা জড়িত। সত্য কথা বলা হলে কোনো কিছু অতিরঞ্জিত করা যায় না। ৫০ টাকার জিনিসের দাম পাঁচ হাজার টাকা নির্ধারণ করা যায় না। সত্য কথা বললে কেউ ঘুষ খেতে পারবেন না। তখন ঘুষ বন্ধ হবে। দুদকের জিজ্ঞাসাবাদের ভয়ে একজন সরকারি কর্মকর্তা দুর্নীতিতে নাও জড়াতে পারেন। সেটি ভিন্ন কথা; কিন্তু সত্যবাদী হলে কেউ দুর্নীতি করতে পারবেন না। কেউ অন্যায় করলেও প্রকাশ্যে সেটি বলতে চান না। ফলে সত্যবাদী হলে তিনি অন্যায়ের পথে পা বাড়াবেন না। তাই সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। এটা তখনই সম্ভব; যখন কারো মনে আল্লাহভীতি তৈরি হয়। সে আল্লাহকে দেখছে না; কিন্তু আল্লাহ সব দেখছেন। এই অনুভ‚তি তার মনে দুর্নীতি ও অপরাধের বিরুদ্ধে প্রহরীর মতো কাজ করবে। এই প্রহরী সবসময় তাকে মনে করিয়ে দেবে যে, অনৈতিক কাজ করা যাবে না। মুসলমান মানে আল্লাহর নির্দেশের কাছে শর্তহীন আত্মসমর্পণ; যেহেতু মানুষকে কাজের স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে। এ জন্য একজন মুসলমানকে ইবাদতের মাধ্যমে অনুশীলন করতে হবে। আল্লাহর উপস্থিতি যদি তার স্মরণে থাকে তাহলে সে অনৈতিক পথে যাবে না। প্রতিটি কথা বলার আগে যদি কেউ মনে করে আল্লাহ তাকে দেখছেন, তার কথাগুলো রেকর্ড হচ্ছে, তাহলে সে অবশ্যই মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকবে। আমি যখন মিথ্যাকে পরিহার করব, সত্যকে আঁকড়ে ধরব তখন আমার প্রজন্মও সেটি শিখবে। এর উল্টোটা হলে তখন সন্তানের কাছে মিথ্যা বলা সহনীয় হয়ে যাবে। সে অবচেতন মনেই মিথ্যা কথা বলবে।

কেউ যদি মনে করে সে মুসলমান, আল্লাহকে বিশ্বাস করে, কালেমা পড়েছে তাহলে আল্লাহ তাকে মাফ করে দেবেন। এটা ঠিক, আল কুরআনে আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু আল্লাহ তো শাস্তিও দেবেন। কুরআনে শাস্তির কথাও বলা হয়েছে। সেই শাস্তি কতটা ভয়ঙ্কর হবে সেটিও বলা হয়েছে। আমরা এই শাস্তির কথা ভুলে যাই। যারা মিথ্যা কথা বলে, অন্যায় কাজ করে তার মনের মধ্যে একধরনের অশান্তি তৈরি হয়। আর সত্যবাদীর মনে শান্তি বিরাজ করে। এটা এক বিরাট অর্জন।
সত্য কথা বলা ও মিথ্যা পরিহার করা হলো আমাদের নৈতিকতার একটি বড় উপাদান। আমাদের সবাইকে চেষ্টা করতে হবে সত্যের কাছাকাছি আসার জন্য। যদি আল্লাহকে ভয় করি, যদি দৃঢ় বিশ্বাস থাকে যে আল্লাহ আমাকে দেখছেন, অন্যায় কাজের জন্য তিনি আমাকে শাস্তি দেবেন তাহলে কখনো আমি মিথ্যা কথা বলব না এবং আমি নিজেকে সংশোধন করব। আমি প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য কখনোই মিথ্যা কথা বলব না। এই অনুভ‚তি তৈরি করা অবশ্যই কঠিন। মানুষের প্রবৃত্তি তাকে অন্যায়ের প্রতি ধাবিত করে।

কেউ যদি আল্লাহর সাথে মিথ্যা কথা বলে সেটি হয়তো আল্লাহ মাফ করতে পারেন। কিন্তু যে মিথ্যা মানুষের ক্ষতি সাধন করে সেটি আল্লাহ মাফ করবেন না। কেউ যদি শিরক করে সেটি জুলুম, সেটি আল্লাহর সম্পর্কে মিথ্যা কথা। এটা আল্লাহ ক্ষমা করতে পারেন। কিন্তু মিথ্যা কথা বলার কারণে মানুষের অধিকার নষ্ট হলে সেটি আল্লাহ মাফ করবেন না। তাই আমরা সত্যকে ধারণ করার চেষ্টা করি, সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করি। মিথ্যা পরিহার করি। মিথ্যা পরিহার করা হলে দুর্নীতি প্রতিহত হবে। দুর্নীতি না থাকলে দেশ সমৃদ্ধশালী হবে। এ জন্য আমাদের আত্মসমালোচনা করতে হবে। আত্মসমালোচনা মানে আত্মশাসন। তাই আমরা মনে করি, কেউ যদি সত্য কথা বলার মতো মৌলিক গুণটি অর্জন করতে পারে তাহলে অন্য গুণগুলো অর্জন করা তার জন্য সহজ হয়ে যাবে। তখন বিশ্বের মানচিত্রে সুখী ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে বাংলাদেশের নামটি জ্বলজ্বল করবে।

লেখক : ফেলো, বাংলাদেশ একাডেমি অব সায়েন্স এবং সাবেক ডিন ও অধ্যাপক, ডিপার্টমেন্ট অব ফার্মাসিউটিক্যাল কেমিস্ট্রি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
মেইল : cmhasan@gmail.com


আরো সংবাদ



premium cement