আফগানে বিশ্বাসঘাতক কোন পক্ষ?
- জসিম উদ্দিন
- ১৮ আগস্ট ২০২১, ২০:১৯
কাবুল থেকে প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির পালানোর পর ‘জঙ্গি’ শব্দটি পরিবর্তন হয়ে ‘যোদ্ধা’ হয়ে গেল। এটা ঠিক যে জঙ্গি বলতে যেসব উগ্রতা ও সীমালঙ্ঘনের দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করা হচ্ছে সেসবের বিবরণ সত্যিই আর পাওয়া যাচ্ছে না। ‘আফগান সরকারি বাহিনী’ পালিয়ে গেছে, তাদের অনেকে হয়তো বিজয়ী দলের সাথে মিশে গেছে। অথচ এই বাহিনীকে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র বিশেষ প্রশিক্ষণ দিয়েছিল। তাদের শেখানো হয়েছিল মানবাধিকার, নারীর মর্যাদা ও দেশপ্রেম ইত্যাদি। অন্য দিকে এ ধরনের নৈতিক মানবিক অবস্থান নেই তালেবানের। তার পরেও ‘উন্নত মূল্যবোধ’ নিয়ে সরকারি বাহিনী তালেবানের সামনে দাঁড়াতে পারেনি। তাহলে এতদিন প্রচারিত ঘটনাগুলো কি মিথ্যা; না মূল্যবোধ এখন অন্য কোনো অর্থ ধারণ করছে?
তাহলে কি খবর প্রকাশের নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি আমরা অর্জন করতে পারিনি? কোনো একটি জনপদে যখন বহিঃশক্তি আক্রমণ করে এবং নিরপরাধ নাগরিকদের হত্যা করে দেশের দখল নেয়, সেই সময় তারা ভয়াবহ পৈশাচিকতা ও নিষ্ঠুরতা চালায়। নারীরা অপমানিত লাঞ্ছিত হন। এমন একটি পরিস্থিতিতে বহিরাগতদের দৈত্য দানব হিসেবে খবর প্রচার করা একটি স্বাভাবিক ঘটনা। হয়তো ইতিহাসের হাজার হাজার বছর ধরে প্রচারের এ নিয়মটি ছিল। বিগত কয়েক যুগে আমরা এর ব্যতিক্রম দেখতে পাচ্ছি। দেখা যাচ্ছে শত অন্যায় অপরাধ নিষ্ঠুরতা নির্মমতা চালিয়েও বহিরাগতরাই সভ্য সংস্কৃতিবান নারীবাদী হিসেবে প্রচারিত হচ্ছে। তাদের চালানো বোমা হামলায় হতাহতের ঘটনা খবর হিসেবে গণ্য হচ্ছে না। খবর হয়ে যাচ্ছে স্থানীয় কিছু আচার আচরণ গোঁড়ামি ও কুসংস্কার। এমনকি এমন গোঁড়ামির বাড়াবাড়ি রকমের প্রচার করে বোমা হামলার খবরকে ঢেকে দেয়া হচ্ছে।
তালেবানের উগ্রতা জঙ্গিপনা আর নারীবিদ্বেষের খবর পশ্চিমে ফিল্টার হয়ে আমাদের মতো দুর্বল দেশগুলোতে প্রবেশ করে থাকে। আফগানিস্তানে পালাবদলের পর সেই ভাষ্যের সত্যতা না পেয়ে আমরাও যেন দিশা হারিয়ে ফেলছি। হিসাব মতে কাবুলে প্রবেশের সাথে সাথে তালেবানরা রক্তের বন্যা বইয়ে দেয়ার কথা। শত শত মানুষের লাশ পড়ে যাওয়ার কথা। কামান বন্দুকসহ আরো সব ভয়াবহ মারণাস্ত্রের আঘাতে শহরের ভবন ধসে যাওয়ার কথা। আগুনে পুড়ে সব ছারখার হওয়ার কথা। সব মিলিয়ে এতক্ষণে কাবুল হয়ে যেত এক মৃত্যুপুরী। ‘কাফেরের’ সাথে মেলামেশার কারণে নারীদের পাথর মারার দৃশ্য পাড়ায় মহল্লায় দেখা যাওয়ার কথা। এ ছাড়া তরুণীদের ঘর থেকে কেড়ে নেয়ার কথা। এসব কিছুইতো দেখা যাচ্ছে না।
সংবাদমাধ্যমের একজন পাঠক শ্রোতা হিসেবে বাংলাদেশের মানুষেরা এখন অনেকটা ধাঁধায় পড়ে গেছে। কারণ সাধারণত মিডিয়া তাদের এভাবে শিখিয়েছে আফগান মানে ‘বর্বরদের দেশ’। আফগানিস্তান নিয়ে আমাদের মিডিয়ার অ্যাক্টিভিজম তাদের মূল শত্রু আমেরিকার চেয়ে আমাদের তাদের প্রতি অধিক শত্রুভাবাপন্ন করে রেখেছে এতদিন।
গণমাধ্যম মানুষকে অনেক সময়ই ধোঁকা দেয়। তবে তারা খুব সচেতনভাবে এই ধোঁকা দেয় ব্যাপারটা এমন নাও হতে পারে। অনেক সময় এর পেছনে কাজ করে অজ্ঞতা। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কুসংস্কার এবং তৈরি হওয়া কল্পনা বিন্যাস থেকে এমনটা হতে পারে। আফগানিস্তান একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ। আধুনিক ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, দেশটির মানুষের স্বতন্ত্র জাতিসত্তা ও উন্নত মানবিক প্রতিরোধ ক্ষমতা রয়েছে। আফগানরা বহিরাগতদের শাসনকে কখনো মেনে নেয়নি। আগ্রাসনকে তারা মোকাবেলা করেছে সাহসের সাথে। এমন সাহসিকতা সাম্প্রতিক ইতিহাসে বিরল। যেমন তারা বিগত শতাব্দীর শেষের দিকে পরাশক্তি সোভিয়েত ইউনিয়নকে পরাজিত করেছে। এই চোট সহ্য করতে না পেরে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেছে। বিগত বিশ বছরে তারা লড়াই করেছে আরো শক্তিধর একক পরাশক্তি আমেরিকার বিরুদ্ধে। ন্যাটো জোটের অধীনে ইউরোপও সরাসরি আমেরিকাকে সাহায্য করেছে। সহযোগী হিসেবে ভারতও পরোক্ষভাবে যুক্ত হয়েছিল। আমেরিকার ফেডারেল প্রশাসনিক কাঠামোও কি এবার তাহলে টুকরো টুকরো হয়ে যাবে? এ ব্যাপারে আমরা এখনো খুব ভালো করে কিছু জানি না। তবে আপাতত দেখতে পাচ্ছি সাম্প্রদায়িকতা ও বর্ণবাদকে অত্যন্ত সফলভাবে ট্রাম্প কাজে লাগাতে পেরেছেন। দেশটির জনসাধারণ এখন সেভাবে ঐক্যবদ্ধ নয়; মতাদর্শিকভাগে দেশটি বিভক্ত হয়ে গেছে।
খবর হচ্ছে, স্থানীয় আফগানরা শেষ পর্যন্ত আমেরিকান জোটকে পরাস্ত করেছে। যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি পরাজয়ের লজ্জা এড়ানোর জন্য ‘পেছনের রাস্তা’ বেছে নিয়েছিল। দেশটির সবচেয়ে শক্তিমান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ তালেবানদের সাথে চুক্তি করে তারা পালানোর এই রাস্তা তৈরি করেছে। এর আগে ব্রিটিশরা এই দেশে পরাস্ত হয়ে বিতাড়িত হয়েছে। তারও আগে মোঙ্গলরা এ দেশের মানুষের সাথে পেরে উঠেনি। আধুনিক ইতিহাসে একটি জাতি যেজন্য গর্ব অহঙ্কার করতে চায়, আফগানদের গৌরবের সেই জায়গাটা আছে। লড়াকু জাতি তারা, আগ্রাসনের জবাব দিতে জানে। তালেবান এই সময়ের জন্য সামনে আসা জনসাধারণের ঐক্যের একটি প্রতীকী নাম মাত্র। কিছু জাতি যদি আফগানদের মতো এমন লড়াকু মনোভাব দেখাতে পারত বর্তমান বিশ্বের এমন দুর্দশা হতো না; বিশ্বের অনেক দেশই আগ্রাসনের হাত থেকে সহজে মুক্তি পেয়ে যেত; অনেক দেশের মানুষের বিজয় অর্জিত হতো আরো দ্রুত; বিদেশী আগ্রাসী আধিপত্যবাদী শক্তির পৃষ্ঠপোষকতায় জেঁকে বসে থাকা স্বৈরাচারী সরকার দীর্ঘস্থায়ী হতে পারত না। সরাসরি একটি দেশ আক্রমণ করে দখল নেয়ার চেয়ে এমন শাসন জাতির জন্য কম লাঞ্ছনা ও কষ্টদায়ক নয়। আফগানদের মতো প্রতিরোধের স্পৃহা দেখাতে পারলে এসব দেশ স্বল্প সময়ে সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক ও সাম্যপূর্ণ সমাজে রূপ নিতে পারত।
অনেক বড় করে খবর করা হচ্ছে বাইডেন প্রশাসনের ভুল। তিনি ভুল না করলে আফগানিস্তানে গনি সরকারের পতন হতো না। এমন খবরের প্রাধান্যের কোনো কারণ থাকতে পারে না। কিংবা এগুলো এখন কোনো খবর হতে পারে না। মূলত খবরের গেটকিপারের দায়িত্ব যারা পালন করেন তাদের কল্পনা আর বিদ্বেষ এখন এ ধরনের খবর প্রচারের কারণ। আবার এটি তৈরি করেছে মূলত পশ্চিমা মিডিয়া। তারা তৃতীয় বিশ্বের নিউজম্যানদের বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে শিক্ষা দিয়ে থাকে। প্রতিবেশী দেশ হিসেবে আফগানিস্তানে সংবাদমাধ্যমগুলো নিজেদের প্রতিনিধি পাঠিয়ে তা যাচাই করারও চেষ্টা করে না। যেভাবে শেখানো হয়েছে সেই পাঠ নিয়ে একপেশে সংবাদ প্রকাশ করেই দায়িত্ব পালন করে থাকে।
কাবুল বিমানবন্দরে সৃষ্ট নজিরবিহীন দৃশ্যের কথা মানুষ শতাব্দীর পর শতাব্দী ভুলবে না। ‘বিশ্বাসঘাতক’ শব্দটি নিয়ে আলোচনা হতে পারে। ‘মীর জাফর’ শব্দটির উচ্চারণ শুনলে এ শব্দটির অর্থ আমরা একেবারে দিবালোকের মতো স্পষ্ট করে বুঝতে পারি। তৎকালীন সুবে বাংলার নবাবের প্রধান সেনাপতির নাম এটি। তার ওপর নবারের অগাধ আস্থা ও পূর্ণ বিশ্বাস ছিল। এর পেছনে কারণ হলো, নবাব মনে করতেন জীবন দিয়ে হলেও সেনাপতি রাজ্য রক্ষা করবেন। অন্য দিকে মীর জাফরের মনে ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন লক্ষ্য। নবাবের আস্থার মূল্য পরিশোধ দূরে থাক তিনি পদটিকে ব্যবহার করে নবাব ও তার রাজ্যের সর্বনাশ ঘটিয়ে নিজের আখের গোছানোর মতলবে ছিলেন। ধুরন্ধর ইংরেজ ক্লাইভের সাথে তাই ষড়যন্ত্রে হন লিপ্ত। ইংরেজ বাহিনীকে মোকাবেলার বদলে তিনি এমন সুযোগ করে দেন যাতে নবাব পরাস্ত হন। তার অধীনে থাকা সৈন্যরা সামান্য কসরত করলে অল্পসংখ্যক ইংরেজ সৈন্য বানের পানির মতো ভেসে যেত। নবাব পরাস্ত হলেন। মীর জাফরের পুত্র মীরন তাকে অপমান লাঞ্ছিত করে নির্মমভাবে তাকে হত্যা করায়। স্বাধীন বাংলার ওপর নেমে আসে ২০০ বছরের পরাধীনতা। তাই বাংলার মানুষ মীর জাফর নাম শুনলেই ঘৃণাবোধ করে। অথচ আরবি মীর শব্দের অর্থ, রাজবংশের উত্তরাধিকার বা সামরিক বিশিষ্ট ব্যক্তির বংশধর। আর জাফর শব্দের অর্থ জলপ্রবাহ বা স্রোতস্বিনী নদী। কেবল একজন ব্যক্তির ঘৃণিত কর্মের কারণে ভাষাও কলঙ্কিত হয়ে গেল। তবে এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে জাতির সর্বনাশকারী ব্যক্তিকে পরিষ্কার চেনা যাচ্ছে। ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে নামটিই এখন পূর্ণ অভিশাপ বহন করছে।
২০০ বছর আগে বাংলা বা অন্যান্য রাজ্যের স্বাধীনতা হারানোর চেয়ে ভিয়েতনাম ও আফগানিস্তানে যে বিপুল ধ্বংসলীলা বহিঃশত্রুরা চালিয়েছে সেটা কোনো অংশে কম নয়। কিন্তু এসব দেশে প্রকৃত ‘মীর জাফর’ কে? অথবা ঠিক মীর জাফরের কাজ কারা করেছে; যেই কারণে আগ্রাসনকারীরা সুযোগ পেয়েছে। ভিয়েতনাম যুদ্ধে প্রায় ৯ লাখ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। এর মধ্যে দুই লাখের বেশি শিশু। এসব ঘটনার সাথে ‘জঙ্গিবাদের’ তুলনা আপনি কিভাবে করবেন? কিন্তু আপনি বুঝতেও পারছেন না সরাসরি বোমা মেরে মানুষ হত্যার চেয়ে এ ধরনের বাজে নামকরণকে অধিক ক্ষতিকর হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে ফেলা হয়েছে। এটা অন্য কিছু নয়; একদল প্রপাগান্ডিস্ট গোয়েবলস এর পেছনে লেলিয়ে দেয়া হয়েছে।
বিশ্বমিডিয়াকে তারা আচ্ছন্ন করে ফেলেছে। আমাদের দেশের সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম দেখুন। তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ খবর হলো, আফগানিস্তানে বিশৃঙ্খলা। যদিও দেশটিতে বিদেশী বাহিনী হটে যাওয়ার পর রক্তপাত না ঘটাটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ হতে পারত। কাবুল বিমানবন্দরের বিশৃঙ্খলা, সারা দেশের বিশৃঙ্খলা নয়।
আমেরিকান সৈন্য নিয়ন্ত্রিত কাবুল বিমানবন্দরে বিশৃঙ্খলার মধ্যে অনেক রহস্য রয়েছে। দেখা যাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ দৌড়াচ্ছে বিমানে ওঠার জন্য। রানওয়েতে যখন বিমান উড্ডয়নের প্রস্তুতি নিচ্ছে সেখানে তারা ঝাঁপিয়ে পড়ছে। কেউ কেউ ডানা ঝাপটে ধরে ঝুলে আছে। বিমান যখন আকাশ উঠছে তাদের কেউ কেউ খসে পড়ে গেছে। কেউ কেউ বিমানের পাখার ঘূর্ণনে মোমের মত গলে ছিন্নভিন্ন হয়েছে। এভাবে যারা বিমানে উঠতে চেয়েছে তারা কেউ বিদেশী নয়। সবাই আফগান। তালেবানের কর্মকাণ্ডের মধ্যে কোনো ধরনের প্রতিশোধ স্পৃহা এখনো দেখা যাচ্ছে না। তারা সবার জন্য ক্ষমা ঘোষণার পরও কেন এসব লোক পালিয়ে যাওয়ার জন্য জীবন দিয়ে দিচ্ছে? সেই প্রশ্নের উত্তর জানা দরকার। তাহলে এরা কি সেই সব লোক যারা আসলে দেশের মানুষের জন্য বিগত বিশ বছরে কিছু করেনি বরং সুযোগ পেলেই ক্ষতি করেছে। আগ্রাসী শক্তির সব সময় ওরা সহযোগী হয়েছে।
অনেকেই আফগান বিমানবন্দরে সায়গন থেকে আমেরিকার পালিয়ে যাওয়ার শেষ চিত্রটি দেখতে পাচ্ছেন। পার্থক্য হচ্ছে, সেখানে আমেরিকার সাথে যারা কলাবরেটর ছিল তারা পালানোর এ ধরনের কসরত করেনি। কিংবা তাদের সে সুযোগ হয়তো ছিল না। কাবুলে আশ্রয় নেয়া বিদেশী বাহিনীর সহযোগীরা আমেরিকান প্লেনে করে তাদের সাথেই চলে যেতে চাইছে। তারা হয়তো ভাবছে, এতদিন দেশ ও দেশের মানুষের বিরুদ্ধে যে অপরাধ তারা করেছে তার একটা মাশুল তাদের দিতে হবে। কারণ তাদের অন্যায় কর্মের হয়তো অনেক সাক্ষী রয়েছে। তারা একদিন মুখ খুলবে। সেই ভয় থেকে পালাতে গিয়ে সম্ভবত বিশৃঙ্খলা। আফগানিস্তনে বর্তমানে যারা বিজয়ী তাদের কারণে এই বিশৃঙ্খলা নয়, ব্যাপারটি পরিষ্কার।
আমেরিকা যখন বিশ বছর আগে আফগানিস্তান আক্রমণ করল তখন তার কী অধিকার ছিল এভাবে একটি স্বাধীন দেশের মানুষের ওপর বিমান হামলা চালিয়ে হাজার হাজার মানুষ হত্যা করার। আমেরিকার নেতৃত্বে তৈরি করা বিশ্ব সর্বজনীন মানবাধিকারের ঘোষণা কি তাদের এ আক্রমণকে বৈধতা দিতে পারবে? তাহলে কি আমেরিকা নিজে এর ভক্ষক হয়নি? তারা কি নিজেরাই বিশ্বাসঘাতক হয়ে যায়নি? আফগানিস্তানে যারা তাদের সহযোগী হয়েছে তারা কি বিশ্বাসঘাতক নয়? এখন অনেক শোরগোল শোনা যাচ্ছে যে আমেরিকা তার বন্ধুদের রক্ষা না করেই আফগানিস্তান থেকে পালিয়েছে। অনেকে তথ্য প্রমাণ উত্থাপন করছেন, কিভাবে দোভাষী হিসেবে কাজ করা আফগান নাগরিকদের দরখাস্তকে আমেরিকান দূতাবাস প্রত্যাখ্যান করেছে। আমেরিকা কি তাদের সহযোগীদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেনি? একই ধরনের বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ করা হয়েছে ভিয়েতনামে যারা তাদের কলাবরেটর হিসেবে কাজ করেছিল তাদের পক্ষ থেকেও।
খেয়াল রাখতে হবে,আফগানিস্তানে পরাস্ত শক্তি ও বিজয়ী শক্তি কাউকে শত্রু অথবা মিত্র হিসেবে নেয়ার পরামর্শ আমরা দিচ্ছি না। আমরা প্রকৃতপক্ষে খবর কোনটি সেটা শনাক্ত করার জন্য একটু সাহায্য করতে চাই পাঠকদের। তালেবানের বাংলা হচ্ছে ‘ছাত্র’। এরা আফগানিস্তানের নাগরিক। তারা আফগানিস্তানে ‘ইসলামী শরিয়াহ’ শাসন চায়। ‘ইসলাম’ ও ‘শরিয়াহ’ নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন বয়ান রয়েছে। সেই ক্ষেত্রে তালেবানের নিজস্ব একটি বয়ান রয়েছে। সে অনুযাযী তারা দেশটি একবার পরিচালনা করেছেও। তাদের নারীনীতি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা রয়েছে। অভিযোগ নারীর স্বাধীন চিন্তাধারা ও সমানভাবে মানুষের মধ্যে সম্মান মর্যাদা নিয়ে কাজ করার অধিকার দেয় না তালেবান। এটা আফগানিস্তানের একান্ত সমস্যা। এ সমস্যা তাদেরকেই সমাধান করতে দেয়া হোক। এজন্য বাইরে থেকে গিয়ে বোমা মেরে নারী-পুরুষ নির্বিচারে হত্যা করার লাইসেন্স তৃতীয় কোনো পক্ষ কিছুতেই পেতে পারে না।
jjshim146@yahoo.com
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা