২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

জাতির নড়বড়ে বিবেক

জাতির নড়বড়ে বিবেক - ছবি : নয়া দিগন্ত

সমগ্র জাতি কোনো একটি জৈব দেহসত্তা নয়। যেখানে রক্ত প্রবাহিত হয়। আর রয়েছে একটি মাথা ও একটি অন্তর। শত শত মাইল বিস্তৃত স্নায়ুতন্ত্র সারা দেশ থেকে সব খবর তার মাথায় পাঠায়। তার পর মস্তিষ্ক সেটি কালচার করে অন্তরের কাছে পাঠায় ভালো-মন্দ বিবেচনা করার জন্য। অর্থাৎ মানুষের মতো উচ্চ বুদ্ধি ও নৈতিক শারীরিক সত্তা নেই জাতির। এর পরও ‘জাতির বিবেক’ বলে একটি কথা খুব জোরালো প্রচলিত আছে। তা হলে সেই বিবেকটার অস্তিত্ব কোথায়? আর সেটির কার্যকারিতাইবা কিভাবে হয়? আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থার কাঠামোটাই জাতির দেহ। আর এটির কোনো প্রাণ না থাকায় যারা এই কাঠামোর বিভিন্ন স্তরে দায়িত্ব পালন করেন তাদের অন্তর জাতির বিবেক হিসেবে কাজ করে।

একটি দেশের বিচারব্যবস্থা এই কাঠামোর একেবারে শীর্ষে থাকে যদিও রাষ্ট্র চলে নির্বাহী আদেশে। এ আদেশ দেন নির্বাচিত শাসকরা। রাজা-বাদশাহরা ও স্বৈরশাসকরাও এ দায়িত্ব পালন করেন। তবে চলমান বিশ্বব্যবস্থার ‘সৌজন্য’ হচ্ছে বিচারব্যবস্থার প্রাধান্য। সর্বোচ্চ আদালত যে রায় দেন সেটি সরকারের নির্বাহী প্রধানও মানতে বাধ্য। মুশকিল হচ্ছে রাষ্ট্র তার যে অ্যাজেন্সিগুলো দিয়ে আদেশের বাস্তবায়ন করে তার নিয়ন্ত্রণ নির্বাহীদের হাতে। বিচারক যদি রায় দেন শাসককে বন্দী করা হোক। আর শাসক যদি সেটি মেনে নেন তা হলে তাকে বন্দী হয়ে যেতে হয়। কেউ নিজে স্বেচ্ছায় বন্দী হবেন না বা নিজে থেকে বিচারের মুখোমুখি হন না। শুধু এখানে শেষ নয়; শাসকরা নিজেদের সুবিধামতো বিচারের রায়কে নিজেদের অ্যাজেন্সিগুলোর মাধ্যমে প্রয়োগ করে থাকেন। তারাই অগ্রাধিকার নির্বাচন করেন কোন রায়টি তারা বাস্তবায়ন করবেন, কোনটি করবেন না, আর কোনটি আংশিক বাস্তবায়ন করবেন। শেষ পর্যন্ত বিচারকের বিবেচনা নয়, শাসকের পছন্দই বিচার হয়ে দাঁড়ায়। জাতির বিবেক তাই ঠিকভাবে কাজ করলেও অনেক সময় তা মাঠে মারা যায়।

জাতির পুরোভাগে থাকে গণমাধ্যম। তাদের অগণিত কর্মীই মূলত জাতির বিবেক হিসেবে কাজ করেন। বিচারকের রায় দেয়ার আগের দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় তারাই তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও উপস্থাপন করেন। সুতরাং কোনো ঘটনা যদি সাংবাদিকরা না দেখেন বিবেকের কাছে তা মূল্যায়িত হওয়ার সুযোগ কম থাকে। সাংবাদিকতার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় নৈতিকতাকে খুব গুরুত্ব দিয়ে পড়ানো হয়। এর লক্ষ্য থাকে জাতির বিবেক যাতে সঠিক কাজ করে। এ শিক্ষার প্রভাব কর্মক্ষেত্রেও প্রতিফলিত হয়। তবে অনেক দেশের ক্ষেত্রে সাংবাদিকতায় নৈতিকতা বড় দাগে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের নামটি সামনের কাতারে থাকবে, এতে সন্দেহ নেই। বাংলাদেশ রাষ্ট্রকাঠামোর উপরের তলা থেকে একেবারে মাঠের সাংবাদিকতা চর্চায় অকার্যকর কাহিল বিবেকের অবস্থাটা আমরা টের পাচ্ছি।

আমরা এর একটি উদাহরণ দিচ্ছি। কাতার প্রবাসী ফেনীর এক ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী। এই ভদ্রলোককে এখন আর ব্যবসায়ী বলা যায় না। প্রথমে প্রতারণার শিকার হন; পরে রাষ্ট্রযন্ত্রের নির্মম যাতনায় ‘যায় যায় প্রাণ’ অবস্থায় রয়েছেন। তিনি হুন্দাই কোম্পানির সাথে যৌথ ব্যবসা করতেন কাতারে। কয়েক শ’ বাংলাদেশী তার এ ব্যবসায় খাটতেন। বাংলাদেশী দূতাবাসের কর্মকর্তাদের যোগসাজশে তার ব্যবসা হাতিয়ে নিয়েছে একটি চক্র। তারা তার বিরুদ্ধে মামলাও ঠুকে দেন। শেষ পর্যন্ত তার ও তার পরিবারের পাসপোর্ট জব্দ করে দূতাবাস। তিনি জানান চক্রটি প্রথমে তার কাছে ১০টি ভিসা চায়। তিনি নিয়মানুযায়ী তাদের সেটি দিতে পারেননি। এরপর ব্যবসায় নানাভাবে সুযোগ সুবিধা চায়। তিনি সেটিও দিতে পারেননি। এরপর জবরদস্তি করে তার কাছ থেকে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি নিয়ে নেয় অপরাধীরা। এখন তিনি নাগরিকত্বহীন অবস্থায় কাতারে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

এ অবস্থায় তিনি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতে ২০১৮ সালের ৯ ডিসেম্বর পাসপোর্ট ফিরে পেতে রিট করেন। আদালত এক মাসের মধ্যে আলীকে পাসপোর্ট ফেরত দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। দূতাবাস আদালতের আদেশ মান্য করার বদলে তাকে ভিসা বাতিলের মেমো পাঠায়। ২০১৯ সালের ১২ মার্চ তিনি আবারো রিট করেন। এবার আদালত ৭ দিনের মধ্যে পুরনো পাসপোর্ট নবায়ন অথবা নতুন পাসপোর্ট দেয়ার আদেশ দেন। দূতাবাস এবার তাকে ডেকে নিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দেয়। একজন প্রবাসী ওয়েজ আর্নার যখন এভাবে অন্যায়ের শিকার হচ্ছিলেন, তিনি তখন পুরো রাষ্ট্রকেই পাচ্ছিলেন তার বিরুদ্ধে । এমনকি ‘চতুর্থ এস্টেট’ খ্যাত মিডিয়াকেও পেলেন চক্রের সাথে। জুলাই মাসের ১৪ তারিখে একটি দৈনিক পত্রিকায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে তিনি আকুল আবেদন জানান এই সিন্ডিকেট থেকে রেহাই পেতে। পত্রিকাটি এটি খবর হিসেবে নয়, বিজ্ঞাপন হিসেবে ছেপেছে।

একটি গণতান্ত্রিক দেশের সর্বোচ্চ আদালতের আদেশ এভাবে যারা ভণ্ডুল করে দিলো তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেই। এ ঘটনায় দেখা যাচ্ছে দু’বার একই চক্র এই বড় অপরাধ করেছে। শুধু তা-ই নয়, চক্রটি উল্টো আলীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি জাতীয় দৈনিকে এ অন্যায়ের প্রতিকার চাওয়া হলেও তিনি গত ২৭ জুলাই পর্যন্ত প্রতিকার পাননি। কারণ ওই দিন দেখা গেল তিনি একটি জনপ্রিয় টকশো অনুষ্ঠানে এসে তার বিরুদ্ধে ঘটা অপরাধের বর্ণনা দিচ্ছিলেন। সেখানে তিনি তার পরিবারের দেশে থাকা সদস্য ও তার সাথে কাতারে থাকা স্ত্রী-সন্তানদের দুরবস্থা নিয়ে করুণ বিলাপ করছিলেন। তিনি জানাচ্ছিলেন, এই ভয়াবহ নিপীড়ন থেকে বাঁচার জন্য আত্মহত্যা করা ছাড়া তার কাছে আর কোনো পথ খোলা নেই। এই টকশোতে উপস্থিত ছিলেন একজন সিনিয়র সাংবাদিক। তিনি জানান, কাতারে সব বাংলাদেশী মিডিয়ার প্রতিনিধি রয়েছে। আলীর কাছে জানতে চান, তিনি স্থানীয় প্রতিনিধিদের সাথে যোগাযোগ করেছেন কি না। আলী উত্তরে বলেন, ‘শুনতে খারাপ লাগলেও আজ আমাকে বলতে হবে। সাংবাদিকরা টাকা খান, তারা ওই সিন্ডিকেটের সদস্য।’ এর বাইরে নাকি কোনো সাংবাদিক তিনি পাননি। এর পরই টকশোর মধ্য থেকে এই সিনিয়র সাংবাদিক মেসেজ পাঠান কাতারে। সেখান থেকে একজন সাংবাদিক পাল্টা মেসেজে তাকে জানান, ‘আলী একজন বাজে লোক। তার বিরুদ্ধে আদম ব্যবসার অভিযোগ আছে। তিনি দূতাবাসের বিরুদ্ধে বাহাদুরি করতে গিয়েছিলেন।’ সিনিয়র সাংবাদিক টকশো চলাকালে বার্তাটি পড়ে শোনালে এর জবাবে আলী খুব রেগে যান। তিনি জানান, এসব অভিযোগ নিয়ে সিন্ডিকেটের সদস্যরা কাতারে দুটো মামলা করেছিল। তিনি ওই দু’টি মামলায় নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন। মামলা থেকে তিনি খালাস পেয়েছেন। পত্রিকার বিজ্ঞাপনে আলী এসব ডকুমেন্ট আকারে দিয়েছেন। তখন সিনিয়র সাংবাদিকের টকশোতে চুপ হয়ে যাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না।

বাংলাদেশে গণমাধ্যমের বিস্ফোরণ ঘটেছে। এর সংখ্যা বহুগুণে বেড়ে গেছে। শুধু কাতারের মতো ক্ষুদ্র দেশে নয়, বাংলাদেশের উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে এখন অগণিত সাংবাদিক। প্রশ্ন হচ্ছে সাংবাদিকদের কাজ কী? সম্প্রতি হেলেনা জাহাঙ্গীর নামের সরকারদলীয় এক নারীকে নানা অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি ‘জয়যাত্রা টেলিভিশন’ নামের একটি আইপি টিভির মালিক। ফাঁস হওয়া অডিও রেকর্ডে জানা যাচ্ছে, তার মালয়েশিয়া প্রতিনিধি যিনি হতে যাচ্ছিলেন তার কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ নেয়া হচ্ছে। আমাদের অসংখ্য চ্যানেল আর তাদের প্রতিনিধি ছড়িয়ে যাচ্ছেন সারা বিশ্বে। তারা কি আসলে সাংবাদিক? কেউ যদি ডোনেশন দিয়ে প্রতিনিধিত্ব ক্রয় করেন, তিনি কি সাংবাদিকতা করবেন না চাঁদাবাজি করবেন? আলীর মতো কত মানুষ এ চাঁদাবাজির খপ্পরে পড়ে নিঃস্ব হচ্ছেন, তার খোঁজ কে রাখবে? আর তাদের বাঁচাবেইবা কে?
হেলেনার প্রসঙ্গ থেকে জাতির বিবেকের কার্যকারিতা আমরা আরো ভালো করে বুঝে নিতে পারব। তার আটকের তৃতীয় দিন কয়েকটি পত্রিকার করা শিরোনাম তুলে ধরছি। আমরা জাতীয় দৈনিকগুলোর নাম নিতে চাই না। শিরোনাম ছিল যেমন : ‘যে কৌশলে ব্ল্যাকমেইল করতেন হেলেনা’, ‘সম্পদের ছড়াছড়ি, তবু হেলেনার ছলচাতুরী’, ‘হেলেনার বিপুল সম্পদের সন্ধান, অভিজাত এলাকায় ১৫টি ফ্ল্যাট’, ‘টার্গেট করে ফাঁদে ফেলতেন হেলেনা জাহাঙ্গীর’, ‘নাম ও যশের জন্য সব কিছু করতেন হেলেনা : পুলিশ’, ‘হেলেনার উত্থান যেভাবে’। এ ছাড়া বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলোও এ ধরনের খবর খুব উৎসাহ নিয়ে প্রকাশ করে। তারা এমন ঘটনা দিয়ে ব্রেকিং করে দর্শক টানতে চায়। জাতীয় পত্রিকার চেয়ে সংবাদ প্রকাশের মান ও নৈতিকতার ক্ষেত্রে জাতীয় টিভি স্টেশনগুলো এগিয়ে আছে বলার সুযোগ কম।

পত্রিকায় প্রকাশিত শিরোনামে যেসব অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে, তা সত্য হলে হেলেনা একজন অপরাধী। এসব অপরাধ তাকে গ্রেফতারের ঠিক আগের দিন তিনি করেননি। কিংবা তিনি এসব শুধু বিগত ছয় মাস বা এক বছর ধরে করছেন, এমন নয়। এগুলো তিনি কমপক্ষে এক যুগ বা এক দশক ধরে করছেন। আরো বেশি সময় ধরেও করতে পারেন। এই দীর্ঘ সময় ধরে তিনি যখন অবৈধ কাজগুলো করছিলেন, তখন আমাদের জাতির বিবেক কোথায় ছিল? তিনি আদালতের সামনে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর সাথে ২৫ বার বিদেশ সফর করেছেন। একজন নারীর কৃত এমন অপরাধ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে সরকারি অ্যাজেন্সিগুলো তার প্রধানমন্ত্রীর সাথে সফরে বাধা দিতেন। অপরাধীর বিচার করতে হলে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হবে। আদালতের নিজস্ব কোনো চ্যানেল নেই। সরকারি অ্যাজেন্সিগুলো তার চ্যানেল। সময়মতো সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো যখন অপরাধীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় না কিংবা নিতে ব্যর্থ হয়, এ দায়িত্ব তখন মিডিয়ার ওপর অর্পিত হন। প্রশ্ন হচ্ছে এসব অপরাধ যখন একজন নারী মহা ধুমধামে করছিলেন, মিডিয়া ও তার সাংবাদিকরা কোথায় ছিলেন?

সামরিক বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত একজন চৌকস কর্মকর্তা হত্যার আগে টেকনাফের ওসি প্রদীপকে আমরা অপরাধী হিসেবে পাইনি। তিনি অনেক মানুষকে খুন করেছেন। ধর্ষণ করেছেন। অনেকের অর্থসম্পদ লুটে নিয়েছেন। সাধারণ মানুষের বাসাবাড়ি দখল করে টর্চার চেম্বার বানিয়েছেন, রঙ্গশালা বানিয়েছেন। এ ধরনের অপরাধ একটি স্বাধীন দেশের মধ্যে বসে সামান্য একজন পুলিশ কর্মকর্তা করে যাচ্ছিলেন। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হচ্ছে, তিনি সাংবাদিক ও জনপ্রতিনিধিদেরও নির্যাতন করেছেন। একজন সাংবাদিক তার অপরাধ সাম্রাজ্য নিয়ে সংবাদ করায় তার কী ভয়াবহ পরিণতি হয়েছে, সবাই দেখেছেন। দুঃখের বিষয় সাংবাদিক কমিউনিটি তার জন্য কোনো রিমেডি দিতে পারেনি। তিনি বাঁচার জন্য সাংবাদিকদের কাছে ধরনা দিয়ে উপকার পাননি। এমনকি তিনি ঢাকায় এসেও রেহাই পাননি। হাজার হাজার চ্যানেল আর লাখ লাখ প্রতিনিধি হলেই দেশের মিডিয়া এগিয়ে যায় না। সাহেদ, সাবরিনা, সম্রাট শামীম প্রমুখ বড় বড় ক্রিমিনালকে আমরা দেখেছি। এদের মধ্যে অনেকে আবার মিডিয়ার আশীর্বাদপুষ্ট। কেউ কেউ একেবারে নিয়মিত টকশো মাতিয়ে দিতেন। কিছু চ্যানেলে এদের অনেকের যাতায়াত ছিল নিয়মিত। জাতীয় পর্যায়ে এমন অপরাধী শত শত। সারা দেশের তাদের সংখ্যা হবে হাজার হাজার। অন্য দিকে সাংবাদিকের সংখ্যা এর চেয়েও বেশি। সাংবাদিকের অন্তর যদি বিবেকের কাজ করে, তা হলে দেশ এমন চোর-বাটপারে ছেয়ে যাওয়ার কথা নয়।

সাংবাদিক নেতৃত্বও বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বের মতো দৃষ্টিকটুভাবে বিভক্ত। শুধু যে প্রেস ক্লাবকেন্দ্রিক সাংবাদিকরা বিভিন্ন ধারায় বিভক্ত এমন নয়। সাংবাদিক ও মিডিয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বার্থ নিয়ে যারা ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেন, তারাও বিভক্ত হয়ে পড়ছেন। সর্বশেষ আমরা দেখলাম পত্রিকার স্বার্থসংশ্লিষ্ট, সম্পাদক পরিষদের মধ্যেও এ বিভক্তি দেখা দিয়েছে। পরিষদের সাধারণ সম্পাদক পদত্যাগ করেছেন। তিনি কয়েকটি অভিযোগ উত্থাপন করেছেন। এসব অভিযোগ যাচাই করার সুযোগ কম। নিজের সম্পাদিত পত্রিকায় ওই সব অভিযোগ তিনি গুরুত্বের সাথে প্রকাশ করেছেন। এরপর দেখা গেল সভাপতির পক্ষ থেকে বক্তব্য দিয়ে অন্য দু’টি পত্রিকায় খবর প্রকাশ হতে। একটি ঘটনার ব্যাপারে যখন দু’টি ভিন্নমুখী বক্তব্য আসে তাতে নিশ্চিত করে বলা যায়, একটি বক্তব্য সত্য নয়। হতে পারে দুটোই সত্য নয়। আমরা বুঝতে পারছি জাতির বিবেক বলতে যে সাংবাদিকদের বোঝানো হচ্ছে তাদের অবস্থা কাহিল। অন্য দিকে আদালত অনেক ক্ষেত্রে রায় দিচ্ছেন। সেসব রায় ভুক্তভোগীর পক্ষেও যাচ্ছে। এখন যারা এর বাস্তবায়ন করবেন তারা যদি আদালতের রায়কে গুরুত্বপূর্ণ কিছু মনে না করেন, তা হলে তো আর কিছু করার থাকে না। তাই বলতে হয়, জাতির বিবেক এখানে নড়বড়ে।

jjshim146@yahoo.com


আরো সংবাদ



premium cement