হুমায়ূন আহমেদকে খুব মনে পড়ে
- সৈয়দ আবদাল আহমদ
- ১৮ জুলাই ২০২১, ২০:২৮, আপডেট: ১৮ জুলাই ২০২১, ২০:২৯
‘কী নাম তোমার খোকা? কাজল। কী সুন্দর নাম! কাজল। তোমাকে মাখতে হয় চোখে। তা-ই না? কিছু না বুঝেই মাথা নাড়লাম।’ শিশু বয়সে সিলেটের মীরাবাজারে গাছগাছালি ভরা এক বাড়িতে ঢুকে শুক্লাদির সাথে এভাবেই পরিচিত হয়েছিলেন হুমায়ূন আহমেদ।
প্রিয় হুমায়ূন আহমেদ, আপনাকে খুব মনে পড়ে! ১৯ জুলাই দিনটি আমাদের জন্য বেদনার। ৯ বছর আগের এ দিনটিতে আপনি আমাদের মাঝ থেকে চিরবিদায় নিয়েছিলেন। মৃত্যু দিনটি পালনের এ মুহূর্তে আপনার এমন কত কথাই না মনে পড়ছে! পড়বেই না কেন? শুধু কি শুক্লাদির সাথে পরিচয়? মনে রাখার মতো হাজারটা বিষয় আপনি রেখে গেছেন। কখনো কি এগুলো ভোলা যায়? না, যায় না। আপনি ছিলেন ‘কথার জাদুকর’। বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় কথাশিল্পী। মজার মজার গল্প, উপন্যাস, রূপকথা, স্মৃতিকথা, সায়েন্স ফিকশন, সিনেমা, ভ্রমণকাহিনী, আত্মজীবনী, গান- কী নেই, যা আপনি লিখে যাননি?
আড্ডার মজলিসে আপনি থাকতেন মধ্যমণি। আপনার কৌতুক, রসবোধ এতটাই মজাদার ছিল যে, হাসতে হাসতে পেট ফেটে যাওয়ার উপক্রম হতো। আপনার সাহচর্যে যারাই গেছে, তাদেরই আছে এমন অভিজ্ঞতা। আপনার ছিল বিচিত্র সব শখ। ছেলেবেলার সোনাঝরা স্মৃতি কত মধুর করে বলে গেছেন আপনি। আহ, কী মজা!
আপনার বাবার কথাই শুনি আপনার মুখ থেকে। ‘বাবার খুব শখ ছিল প্রথম সন্তানটি হবে মেয়ে। তিনি মেয়ের নাম ঠিক করে বসে আছেন। একগাদা মেয়েদের ফ্রক বানিয়েছেন। রুপার মল বানিয়েছেন। তার মেয়ে মল পায়ে দিয়ে ঝমঝম করে হাঁটবে- তিনি মুগ্ধ হয়ে দেখবেন। ছেলে হওয়ায় সব পরিকল্পনা মাঠে মারা গেল। এসব মেয়েলি পোশাক আমাকে দীর্ঘ দিন পরতে হয়। বাবাকে সন্তুষ্ট করতে মা আমার মাথার চুলও লম্বা রেখে দেন। সেই বেণী করা চুলে রঙ-বেরঙের রিবন পরে আমার শৈশবের শুরু।’
কাজল নামটা কিভাবে হলো সেটিও খুব মজা করে বলেছেন। লিখেছেন, ‘আমার মায়ের দ্বিতীয়বার টাইফয়েড হওয়ায় বাবা স্ত্রীর মৃত্যুর জন্য মানসিক প্রস্তুতি গ্রহণ করলেন। সেই প্রস্তুতির প্রমাণ হচ্ছে আমার নামকরণ। আমার নাম রাখলেন ‘কাজল’। বিভ‚তিভ‚ষণের পথের পাঁচালির অপুর স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছিল। অপুর ছেলের নাম ছিল কাজল। আমার ভালো নাম রাখা হলো ‘শামসুর রহমান’। বাবার নাম ফয়জুর রহমান। বাবার নামের সাথে মিলিয়ে ছেলের নাম। ছয় বছর পর্যন্ত আমাকে শামসুর রহমান নাম নিয়ে চলাফেরা করতে হলো। সপ্তম বছরে বাবা হঠাৎ সেই নাম বদলে রাখলেন হুমায়ূন আহমেদ। বছর দুই হুমায়ূন আহমেদ চলার পর আবার নাম বদলে দেয়ার ব্যবস্থা হলো। আমি কঠিন আপত্তি জানালাম। বারবার নাম বদলানো চলবে না।’
এবার সেই শুক্লাদির কথা। হুমায়ূন আহমেদ, আপনার লেখায় আছে, ‘মীরাবাজারের বাড়িটিতে শুক্লাদির সামনে নাম বলা এবং মাথা নাড়াবার পর আমি চুপ করে রইলাম। শুক্লাদি বললেন, কী জন্য এসেছ এ বাড়িতে?
বেড়াতে।
ও আচ্ছা- বেড়াতে? তুমি তা হলে অতিথি। অতিথি নারায়ণ। তা-ই না?
আবারো না বুঝে মাথা নাড়ালাম।’
হুমায়ূন আহমেদ, আমাদের মনে দাগ কেটে আছে এসব মজার কথা। শুক্লাদি ঘরে গিয়ে আপনাকে কদম ফুলের মতো একটা মিষ্টি এনে দিলেন। মিষ্টি খেতে খেতে আপনি বাড়ি চলে গেলেন। দ্বিতীয় দিনে আবার গেলেন ওই বাড়িতে মিষ্টির আশায়। শুক্লাদি মিষ্টি দিলেন।
সৌভাগ্য একা উপভোগ না করে ছোট বোন শেফুকে নিয়ে উপভোগ করতে তৃতীয় দিনে আপনি তাকে নিয়ে একসাথে আবারো গেলেন শুক্লাদির বাড়িতে। কিন্তু ওই দিন শুক্লাদির ঘরে মিষ্টি ছিল না।
তিনি আপনার হাতে তুলে দিলেন অসম্ভব সুন্দর এক বই- ‘ক্ষীরের পুতুল’। লেখক অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর। বইটিতে লিখে দিলেন, ‘দুজন দেবশিশুকে ভালোবাসা ও আদরে - শুক্লাদি।’
এই বই-ই ছিল আপনার ‘স্বপ্নলোকের চাবি’। এই বই খুলে দেয় আপনার স্বপ্নজগতের দরজা। বদলে দেয় আপনার জীবন। বই পড়ার আনন্দে আপনি হন বিভোর। বই ও বই-ই হয় আপনার নিত্যসঙ্গী। ভবিষ্যতে আপনি যে এত বড় একজন লেখক হয়ে উঠবেন, সেই সত্তা তখনই জন্ম নেয় আপনার মধ্যে।
হুমায়ূন আহমেদের প্রথম প্রকাশিত বই ‘নন্দিত নরকে’। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রসায়ন বিভাগের ছাত্র হিসেবে মোহসীন হলে থাকাকালে ১৯৭০ সালে হলে বসেই বইটি লিখেন। মাসিক ‘মুখপত্র’ নামে একটি পত্রিকায় এটি প্রথম ছাপা হয়। ১৯৭২ সালে দ্বিতীয়বার ছাপা হয় দৈনিক বাংলায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগের অন্যতম দিকপাল অধ্যাপক ড. আহমদ শরীফ মাসিক মুখপত্রের তৃতীয় বর্ষ সংখ্যায় ‘নন্দিত নরকে’ নামটি দেখে আকৃষ্ট হয়ে গল্পটি পড়েছিলেন।
১৯৭২ সালে হুমায়ূন আহমেদের বন্ধু আহমদ ছফার আগ্রহে ‘নন্দিত নরকে’ খান ব্রাদার্স থেকে প্রথম বই আকারে বের হয়। দাম ছিল সাড়ে তিন টাকা। বইটির ভ‚মিকা আহমদ শরীফ স্বতঃপ্রণোদিত হয়েই লিখে দেন। ১৯৭২ সালের ১৬ জুন তিনি লিখেছিলেন, “গল্পের নাম ‘নন্দিত নরকে’ দেখেই আকৃষ্ট হই। লেখক তো বটেই, তার নামটিও ছিল আমার অপরিচিত। তবুও ‘নন্দিত নরকে’ পড়তে শুরু করলাম ওই নামের মোহেই। পড়ে অভিভ‚ত হলাম। গল্পে সবিস্ময়ে প্রত্যক্ষ করেছি একজন সূদর্শী শিল্পীর, একজন কুশলী স্রষ্টার পাকা হাত। বাংলা সাহিত্য ক্ষেত্রে এক সুনিপুণ শিল্পীর, এক দক্ষ রূপকারের, প্রজ্ঞাবান দ্রষ্টার জন্মলগ্ন যেন অনুভব করলাম। হুমায়ূন আহমেদ বয়সে তরুণ, মনে প্রাচীন দ্রষ্টা, মেজাজে জীবন রসিক, স্বভাবে রূপদর্শী, যোগ্যতায় দক্ষ রূপকার। ভবিষ্যতে তিনি বিশিষ্ট জীবনশিল্পী হবেন এই বিশ্বাস ও প্রত্যাশা নিয়ে অপেক্ষা করব।’
ড. আহমদ শরীফের প্রতিটি কথা অক্ষরে অক্ষরে ফলেছে। জীবনশিল্পী তো বটেই, হুমায়ূন আহমেদ হলেন বাংলাদেশের কিংবদন্তিতুল্য লেখক। বিংশ শতাব্দীর বাঙালি কথা-সাহিত্যিকদের মধ্যে অন্যতম তিনি। সংলাপপ্রধান শৈলীর জনক। তার প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা তিন শতাধিক।
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ভাষায়, ‘হুমায়ূন আহমেদ একটি শতাব্দীর সবচেয়ে জনপ্রিয় লেখক। তিনি সাহিত্যে নতুন যুগের সৃষ্টি করেছেন। তিনি শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের চেয়েও জনপ্রিয় লেখক।’ হুমায়ূন আহমেদ মধ্যবিত্ত জীবনের সুখদুঃখ হাসিকান্নার গল্প অত্যন্ত সাবলীলভাবে তুলে এনেছেন।
‘শঙ্খনীল কারাগার’ তার প্রথম লেখা হলেও ছাপা হয় নন্দিত নরকের ছয় মাস পর ১৯৭২ সালেই। বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) নাটককে তিনি জনপ্রিয় করেন। সিরিজ নাটক ‘এইসব দিনরাত্রি’ দিয়ে শুরু। এরপর বহুব্রীহি, অয়োময়, কোথাও কেউ নেই, নক্ষত্রের রাত। হিমু, মিসির আলি, শুভ্র, বাকের ভাই তার গল্পের আকর্ষণীয় চরিত্র। তরুণদের এসব চরিত্র খুবই আকৃষ্ট করে। হলুদ জামার হিমুকে কে না চেনে?
হুমায়ূন আহমেদের বড় সাফল্য, তিনি বাংলাদেশে একটি বিশাল পাঠকসমাজ তৈরি করেছেন। তিনি তরুণদের বই পড়ায় আগ্রহী করে তুলেছেন। আর একটি বিষয়, তার বইয়ের কারণে পশ্চিমবঙ্গের বই আসার জোয়ার বন্ধ হয়েছে।
আমার ভালো লাগছে এত বড় একজন লেখকের কিছুটা হলেও সান্নিধ্য পেয়েছি। তাকে প্রথম দেখি ১৯৮৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রসায়ন বিভাগে ড. এস জেড হায়দার স্যারের কক্ষে। আমি তখন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় রসায়নের তৃতীয় বর্ষ অনার্সের ছাত্র। আমার বিশ্ববিদ্যালয় রসায়ন বিভাগের ড. সৈয়দ শফিউল্লাহ স্যারের একটি চিঠি পৌঁছাতে ওখানে গিয়েছিলাম। হুমায়ূন আহমেদ রসায়ন বিভাগের তখন শিক্ষক। আমি তার সাথে পরিচিত হলাম। তিনি পলিমার কেমিস্ট্রিতে পিএইচডি করেন আমেরিকায়। লেখক হিসেবে নয়, রসায়নের শিক্ষক হিসেবে তাকে তখন চিনেছিলাম। দৈনিক বাংলায় সাংবাদিক হিসেবে কাজ করতে গিয়ে দেখলাম, আমার প্রথম দেখা সেই রসায়নের শিক্ষক আসলে একজন অসামান্য লেখক। দৈনিক বাংলা ও সাপ্তাহিক বিচিত্রা অফিসে তিনি প্রায়ই আসতেন। দৈনিক বাংলার ফিচার সম্পাদক সালেহ চৌধুরী ও কবি হাসান হাফিজের সাথে তার খুব বন্ধুত্ব ছিল। সালেহ ভাইকে তিনি খুব সম্মান করতেন। সালেহ ভাইও খুবই পছন্দ করতেন হুমায়ূন আহমেদকে। দৈনিক বাংলায় হুমায়ূন আহমেদের ‘দূরে কোথাও’ নামে একটি ধারাবাহিক উপন্যাস বের হতো। আমি রসায়নের ছাত্র হওয়ার হুমায়ূন ভাই আমাকে স্নেহ করতেন। ফিলিপস পুরস্কার পাওয়ার পর অভিনন্দন জানিয়েছিলেন। আমার সাথে ছবি তুলে রসিকতা করে বলেছিলেন, ‘একজন সেলিব্রিটির সাথে ছবি তোলার মজাই আলাদা।’ এরপর সালেহ ভাইয়ের সাথে তার কাছে কয়েকবারই আড্ডায় গেছি। সালেহ ভাই তার সম্পর্কে বলতেন, ‘জীবন ও জগতের প্রতি হুমায়ূনের ছিল সীমাহীন ভালোবাসা। এই ভালোবাসার কথাই তিনি তুলে ধরেছেন তার সাহিত্য সম্ভারে। সবার উপরে মানুষ সত্য- এটিই হুমায়ূন সাহিত্যের সারকথা।’ প্রধানমন্ত্রীর অফিসে তিনি গিয়েছিলেন ১৯৯৫ সালে। সেখানেও আছে তার সাথে আমার মজার স্মৃতি। ‘আগুনের পরশমণি’ ছবিটি মধুমিতা সিনেমা হলে নাইট শোতে একসাথে বসে দেখেছিলাম। আমার স্ত্রী ও হুমায়ূন আহমেদের পরিবারও উপস্থিত ছিল। ছবিটি সম্পর্কে আমার মন্তব্যে হুমায়ূন ভাই খুব খুশি হয়েছিলেন।
দৈনিক আমার দেশ পত্রিকায় বাংলা নববর্ষ পয়লা বৈশাখ নিয়ে সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম। তার বৈশাখ ভাবনা প্রকাশ করতে গিয়ে বলেছিলেন, ‘খ্রিষ্টীয়বর্ষ কাজের আর বাংলা নববর্ষ হচ্ছে হৃদয়ের।’ তিনি আরো বলেছিলেন, ‘ছোটবেলায় বৈশাখে আম কুড়াতাম। আমার শখ ছিল আম কুড়ানো। বৈশাখে একটা ঝড় হবে, সে ঝড়ে কে কত আম কুড়াতে পারে এটি ছিল আমাদের ভীষণ একটা আনন্দ!’
বৃষ্টি, জোছনা, নিসর্গ ও সমুদ্র হুমায়ূন আহমেদের ভালোলাগার বিষয়। গাজীপুরে তিনি ‘নুহাশ পল্লী’ গড়ে তোলেন। এই নুহাশ পল্লীতে নিসর্গের মাঝে প্রায়ই তিনি বৃষ্টি আর জোছনা উপভোগ করতেন। ‘বৃষ্টি বিলাস’ নামে একটি ঘর সেখানে আছে। সেন্টমার্টিনে ‘সমুদ্র বিলাস’ নামে তার একটি বাড়ি ছিল। জোছনা উপভোগ করতে একবার তিনি সুনামগঞ্জ গিয়েছিলেন। জোছনা ও বৃষ্টি সম্পর্কে তিনি লিখেছেন, ‘কোনো কোনো রাতে অপূর্ব জোছনা হয়। সারা পৃথিবী ঘন নরম আলোয় ভাসতে থাকে। ভাবি, একা একা বেড়ালে ভালো হতো। জোছনা দেখতে দেখতে আমার হঠাৎ মনে হলো- প্রকৃতির কাছে কিছু চাইতে নেই, কারণ প্রকৃতি মানুষের কোনো ইচ্ছাই অপূর্ণ রাখে না। মাঝে মধ্যে বৃষ্টি নামে। কান্নার সুরের মতো সে শব্দ। আমি কান পেতে শুনি। বাতাসে জাম গাছের পাতার শব্দ হয়। সব মিলিয়ে হৃদয় হা হা করে ওঠে।’
হাছন রাজা ও লালন শাহের ভক্ত ছিলেন হুমায়ূন। তার নাটক সিনেমায় তাদের গান ব্যবহার করেছেন। নিজেও গান লিখেছেন। নিজের পছন্দের বেশ কয়েকটি গান আছে। যেমন- একটি ছিল সোনার কন্যা, আমার আছে জল, মরিলে কান্দিসনা আমার দায়, আমার উড়াল পঙ্খীরে, চাঁদনী পসর রাতে প্রভৃতি।
হুমায়ূন আহমেদ তিন শতাধিক বই লিখেছেন। বেশির ভাগ পাঠকেরই বইগুলোর নাম জানা। বাংলা একাডেমির বইমেলায় এখনো তার বই-ই একচেটিয়া বিক্রি হয়। তার সাহিত্যকর্ম নিয়ে এখন গবেষণা হচ্ছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগে হুমায়ূন আহমেদের দেশপ্রেম নিয়ে পিএইচডি করেছেন সানজিদা ইসলাম। বিষয় ‘হুমায়ূন আহমেদের কথাসাহিত্যে স্বাদেশিক চেতনা।’ মুক্তিযুদ্ধের ওপর হুমায়ূনের ৯টি উপন্যাস ও ৯টি গল্পকে ঘিরেই এই গবেষণা। এর মধ্যে জোছনা ও জননীর গল্প, অনিল বাগচীর একদিন, ১৯৭১, শ্যামল ছায়া তো আমার কাছে অনন্য- দৈনিক প্রথম আলোকে বললেন, হুমায়ূন গবেষক কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের মেয়ে সানজিদা ইসলাম। গবেষণা সম্পর্কে সানজিদা বলেন, ‘হুমায়ূন আহমেদ দেশের সবচেয়ে পাঠকপ্রিয় কথাশিল্পী। শরৎ সাহিত্য পিএইচডির বিষয় হলে হুমায়ূন আহমেদ হবে না কেন?’ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার অনুজ যার কবিতা ও ছড়ার ভক্ত আমি, ড. খালেদ হোসাইন এ পিএইচডি থিসিসের তত্ত্বাবধান করেছেন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় হুমায়ূন আহমেদ বন্দিশিবিরে ছিলেন। অলৌকিকভাবে বেঁচে যান। তবে তার বাবা পাকিস্তানিদের হাতে শহীদ হন।
হুমায়ূন আহমেদের জীবনের শেষ দিনগুলো কাটে নিউ ইয়র্কে কোলন ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য। সেখানেও তিনি লেখা বন্ধ করেননি। লিখেছেন, ‘নিউ ইয়র্কের আকাশে ঝকঝকে রোদ্দুর’। নিউ ইয়র্কের বেলেভ্যু হাসপাতালে তিনি মারা যান। ব্যাংককের বুমরুনগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় খবরটি পাই। তখন আমার খুব খারাপ লেগেছিল। তার ইচ্ছা ছিল নবীজির সা: এর জীবনীগ্রন্থ লিখবেন। তা চমৎকারভাবে শুরুও করেছিলেন। কিন্তু শেষ করতে পারেননি।
তিনি ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর জন্মে ছিলেন নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে নানাবাড়িতে। আর এখন গাজীপুরের নুহাশ পল্লীতে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন। তার মৃত্যু দিবসে তার প্রতি ভালোবাসা ও বিনম্র শ্রদ্ধা।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি গান মনে পড়ছে- ‘তবু মনে রেখো যদি দূরে যাই চলে, তবু মনে রেখো।’
প্রিয় হুমায়ূন আহমেদ, আমরা সব সময় আপনাকে মনে রাখব। কখনো ভুলব না। আপনাকে ভোলা যায় না।
লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা