২১ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

টেকসই উন্নয়নে বিজ্ঞান গবেষণা

টেকসই উন্নয়নে বিজ্ঞান গবেষণা - ফাইল ছবি

বর্তমান যুগটি হচ্ছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির। আজকের বিশ্বে উন্নত জাতিগুলোর উন্নতির পেছনে রয়েছে বিজ্ঞান, গবেষণা ও প্রযুক্তি। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মধ্যে পার্থক্য আছে। বিজ্ঞান হলো তাত্ত্বিক বিষয়। এটা যখন জীবনে প্রয়োগ করা হয় সেটি হলো প্রযুক্তি। প্রযুক্তি হলো প্রায়োগিক বিজ্ঞান। বিজ্ঞানকে সাধারণ মানুষ চোখে দেখে না। সেটি সাধারণ মানুষের চোখের সামনে নিয়ে আসে প্রযুক্তি বা টেকনোলজি। আজকে বিশ্বের যে উন্নতি তা প্রযুক্তির কল্যাণে। বিজ্ঞান আসে প্রযুক্তির আগে। বিজ্ঞান ব্যবহারযোগ্য হওয়ার আগ পর্যন্ত আমরা সেটিকে ‘প্রযুক্তি’ বলি না।

কোনো দেশের উন্নয়নের পেছনে মূল চালিকাশক্তি হলো প্রযুক্তি। তার আগে সেখানে গবেষণা থাকতে হবে এবং সেই গবেষণার ভিত্তিতে প্রডাক্ট পাওয়া যাবে। অর্থনীতি, সমাজনীতি ইত্যাদি নিয়েও গবেষণা হয়। কিন্তু সেটি ভিন্ন ধারার। সেখান থেকে প্রডাক্ট পাওয়া যায় না। গবেষণা থেকে পাওয়া প্রডাক্টটিই হলো টেকনোলজি। আমাদের হাতের মোবাইল ফোন থেকে শুরু করে মঙ্গল গ্রহে পাঠানো কৃত্রিম উপগ্রহ পর্যন্ত এ সবকিছুই প্রযুক্তি। এগুলো কিন্তু নিরেট কোনো তত্ত্ব নয়।

বিজ্ঞানকে প্রযুক্তিতে রূপান্তর করেই উন্নত দেশগুলো আজ এ পর্যায়ে এসেছে। তাই আমাদের দেশকেও উন্নত করতে হলে এই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে উন্নতি লাভ করতে হবে। আমাদের দেশে শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান পড়ানো হয়; কিন্তু সেটিকে প্রযুক্তির পর্যায়ে আনার প্রচেষ্টা তেমন জোরালো নয়। আমরা সংস্কৃতি বা ক্রীড়াক্ষেত্রে অনেক উন্নতি করতে পারি। একটি ভালো ক্রিকেট দল বা ফুটবল দল গঠন করতে পারি। এতে বিশ্বে আমাদের সুনাম বাড়তে পারে; কিন্তু তা আমাদের জিডিপি বাড়াতে পারবে না। আমরা যতক্ষণ পর্যন্ত প্রযুক্তিগত উন্নতি করতে না পারব, ততক্ষণ দেশের মানুষের আর্থিক উন্নয়ন ঘটবে না। অর্থাৎ উন্নত অর্থনীতি, উন্নত জীবনযাত্রা, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি- এসব কিছুর জন্যই চাই প্রযুক্তি। এজন্য প্রয়োজন গবেষণা ও উদ্ভাবনের।

বিজ্ঞানকে যখন প্রযুক্তিতে রূপান্তর করা হয় সেটিকে আমরা ইনোভেশন (innovation) বলি। ইনোভেশন ও ইনভেনশন (invention) নামে দু’টি শব্দ আছে। ইনভেনশন মানে আবিষ্কার বা উদ্ভাবন। আর ইনোভেশন হলো নতুনত্ব বা নতুন কিছু প্রবর্তন। এগুলো কোথা থেকে আসবে? এর জন্য চাই গবেষণা। আজকে চীনের যে উন্নতি তার পেছনে অবদান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির। তারা প্রযুক্তিকে সহজলভ্য করতে পেরেছে, সস্তায় পণ্য তৈরি করতে পারছে। চীন একটি সুশৃঙ্খল রাষ্ট্র, সেখানে শ্রম সস্তা, অন্যান্য দেশের মতো শ্রমিক অসন্তোষ নেই। ফলে তারা আমেরিকার মতো সুপার পাওয়ারকেও অর্থনীতিতে টেক্কা দিচ্ছে। আমেরিকা থেকে কোনো পণ্য কিনতে যেখানে দশ টাকা ব্যয় করতে হয় সেখানে একই পণ্য চীন মাত্র এক টাকায় দিচ্ছে। তাই বিশ্বের পণ্যবাজার এখন চীনের দখলে। চীন কিন্তু মৌলিক গবেষণা বেশি করেনি। তারা যেটা করেছে সেটিকে আমরা বলি ‘রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং’।

‘রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং’ হলো, অন্য কোনো দেশ কোনো প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। চীন সেটি নিয়ে এসে খুলে দেখেছে, প্রযুক্তিটি কিভাবে কাজ করে। দেখে নিজেরাই ওই প্রযুক্তির পণ্য আবার তৈরি করেছে। ফলে তারা জিনিসটি সস্তায় অন্যের কাছে বিক্রি করতে পারছে। এতে তারা যেমন বাজার দখল করছে, তেমনি নিজেদের অর্থনীতিকেও সমৃদ্ধ করতে পারছে। আমাদেরকেও বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে। আমরা যেসব প্রযুক্তি ব্যবহার করি তার প্রায় সবটুকুই বাইরে থেকে আনা। আমরা যত দিন পর্যন্ত এসব পণ্য নিজস্ব বা দেশীয় (indigenous) প্রক্রিয়ায় তৈরি করতে না পারব, তত দিন প্রকৃত অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে যাত্রা শুরু করতে পারব না। দেশে তৈরি করা পণ্যটি দামে সস্তা হবে। এতে শুধু বৈদেশিক মুদ্রারই সাশ্রয় হবে না আমাদের শ্রমশক্তিকেও কাজে লাগানো যাবে। তাই দেশকে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ করতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে টার্গেট করতে হবে।
কিন্তু কথা হলো, এই উদ্ভাবন কারা করবে? প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের জায়গা হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো। বাংলাদেশে গবেষণামূলক অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো সায়েন্স ল্যাবরেটরি। একসময় আমি নিজে এর চেয়ারম্যান ছিলাম। এ ছাড়া আছে অ্যাটমিক এনার্জি কমিশন। তারাও অনেক গবেষণা করে থাকেন। কৃষিক্ষেত্রে আমাদের অনেক গবেষণা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, আমাদের কৃষিক্ষেত্রে গবেষণামূলক অনেক ভালো কাজ হয়েছে। অনেক উদ্ভাবনী কাজ হয়েছে। মেশিনারি না হলেও বায়োটেকনোলজির দিক দিয়ে অনেক উদ্ভাবন হয়েছে। বিশেষ করে জেনেটিক মডিফিকেশন করে আমরা ফসলের নতুন নতুন জাত উদ্ভাবন করতে পেরেছি। এতে আমাদের ফলন বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদেরকে মেশিনারিজ উদ্ভাবনের পথেও অগ্রসর হতে হবে।

গবেষণার প্রাথমিক ক্ষেত্র হলো বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার সঙ্গে স্কুল-কলেজের শিক্ষার পার্থক্য হচ্ছে, এটা একই সঙ্গে জ্ঞান বিতরণ (dissemination of knowledge) ও জ্ঞান সৃষ্টির (creation of knowledge) জায়গা। স্কুল কলেজে শুধু জ্ঞান বিতরণ করা হয়। পাঠ্যপুস্তক থেকে শিক্ষকরা পড়ান, শিক্ষার্থীরা সেগুলো পড়ে। এই প্রক্রিয়া মাঝেমধ্যে কিছুটা আপডেটেড হলেও সত্যিকার অর্থে কোনো জ্ঞানের সৃষ্টি করে না। বিশ্ববিদ্যালয় হলো, জ্ঞান সৃষ্টির জায়গা। মজার বিষয় হলো, মানুষ আর কিছু সৃষ্টি করতে না পারলেও জ্ঞান সৃষ্টি করতে পারে। আমরা লোহা সৃষ্টি করতে পারি না। আমরা অ্যাটম সৃষ্টি করতে পারি না। শুধু একটি জিনিস দিয়ে আরেকটি জিনিস তৈরি করতে পারি। কিন্তু কবি কবিতা লিখলে বা শিল্পী ছবি আঁকলে সেটি হলো সৃষ্টি। কেউ কিছু ডিজাইন করলে সেটিও সৃষ্টি। এই জ্ঞান সৃষ্টির জায়গা হলো বিশ্ববিদ্যালয়। আর এই সৃষ্টি হয় গবেষণা থেকে।

আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে মৌলিক গবেষণার ক্ষেত্র বানাতে হবে। সেখানে মেধাবী শিক্ষার্থীরা থাকে। তাদেরকে কাজে লাগতে হবে। সেখানে যে উদ্ভাবন হবে সেটি অন্যরা কাজে লাগাবে বা বাণিজ্যিকীকরণ করবে। এই কাজে লাগানোর বিষয়টিই হলো প্রযুক্তি। সৃষ্ট জ্ঞান পাবলিক ডোমেইনে নিয়ে আসতে হবে। এটা দু’ভাবে হবে : প্রকাশনা ও প্যাটেন্ট-এর মাধ্যমে। যত দূর জানি আমাদের দেশে প্যাটেন্ট খুব কম হয়। যখন সায়েন্স লেবরেটরিতে ছিলাম তখন আমাদের উদ্ভাবিত অনেক পণ্যের প্যাটেন্ট করতে দেখেছি।

দুঃখের বিষয় হলো, বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক গবেষণার জন্য যে ধরনের তহবিল থাকা দরকার আমাদের দেশে সেটি নেই। এ দিকে সরকারের নজর দেয়া খুবই জরুরি। বিগত কয়েক বছরে অবশ্য সরকার এ দিকে কিছুটা মনোযোগ দিয়েছে বলে মনে হয়। এটা ভালো দিক। তবে এই মনোভাব ধরে রাখতে হবে। আমাদের আরেকটি দুর্বলতা রয়েছে, গবেষণামূলক প্রকাশনার (research publication) ক্ষেত্রে। এটা উদ্ভাবনের প্রাথমিক পর্যায়। আমাদের দেশে এই গবেষণামূলক প্রকাশনার সংখ্যা খুবই কম। এ ক্ষেত্রে প্রতিবেশী ভারত অনেক এগিয়ে আছে। তারা গবেষণামূলক প্রকাশনার জন্য গবেষকদের নানা সুযোগ সুবিধা দিচ্ছেন। আমাদেরকেও সে ধরনের ব্যবস্থা নিতে হবে। রিসার্চ পাবলিকেশনের জন্য শিক্ষকদের পদোন্নতি, প্রণোদনা ইত্যাদির ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতিটি মানসম্মত প্রকাশনার জন্য আর্থিক প্রণোদনার ঘোষণা থাকলে গবেষণামূলক প্রকাশনার সংখ্যা বাড়বে।

আমাদের এখানে পদোন্নতি সবসময় মেধার ভিত্তিতে হয় না। এটা হওয়া উচিত। আমাদেরকে প্রথমে গবেষণার জন্য সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে। এরপর ইনসেনটিভ বা প্রণোদনা দিতে হবে। এই দাবিগুলো আমাদের শিক্ষকদের কাছ থেকে আসতে তেমন একটা দেখা যায় না। নিজেও একসময় শিক্ষক ছিলাম। আমাদের শিক্ষকরা বেশির ভাগ সময় নিজস্ব সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির দাবি নিয়ে আসেন। এর দরকার নেই তা বলব না। কিন্তু পাশাপাশি তাদের উচিত গবেষণা এবং প্রকাশনার জন্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি আর ইনসেনটিভের দাবি জানানো। মানসম্মত গবেষণামূলক প্রকাশনাই বিশ্ববিদ্যালয়কে র‌্যাংকিংয়ে এগিয়ে দেয়। এই র‌্যাংকিংয়ের দিকে তাকালেই আমাদের অবস্থান আমরা স্পষ্ট দেখতে পারি। আবার বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার জন্য সরকারকে শুধু পর্যাপ্ত তহবিল দিলেই হবে না, মনিটরিংও করতে হবে। সেই তহবিল যেন সত্যিকারের যোগ্য লোকটির কাছে পৌঁছে সেই ব্যবস্থাও করতে হবে। তহবিল যেন প্রকাশনা ও প্যাটেন্ট পাওয়ার কাজে লাগে তা নিশ্চিত করতে হবে। এর ভিত্তিতে গবেষককে মূল্যায়ন করতে হবে। দেখতে হবে গবেষকের কয়টি গবেষণামূলক প্রকাশনা আছে, কয়টি প্রডাক্টের প্যাটেন্ট তিনি করাতে পেরেছেন। মোট কথা হলো, পর্যাপ্ত তহবিল জোগান দেয়া ছাড়া আমাদের পক্ষে গবেষণাক্ষেত্রে অগ্রসর হওয়া সম্ভব নয়।

আমাদের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বলতে গেলে গবেষণার কোনো কাজ হয় না। এটাও মূলত তহবিলের অভাবে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ও অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনা করতেই উদ্যোক্তাদের নাভিশ্বাস ওঠে। তারা গবেষণার জন্য তহবিল জোগাবেন কিভাবে? গবেষণা প্রকাশনা আসে মূলত মাস্টার্স লেভেল ও পিএইচডি প্রোগ্রাম থেকে। আমাদের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যলয়গুলোকে পিএইচডি প্রোগ্রামের অনুমতি দেয়া হয়নি। এর পেছনে অবশ্য অনেক যুক্তি আছে, ম্যানিপুলেশনের আশঙ্কা থাকে। কিন্তু এই অনুমতি না দিলে গবেষণা কার্যক্রম বিস্তৃত হবে না। এ ছাড়া মানসম্মত যেসব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে সেগুলোকে সরকারের পক্ষ থেকে গবেষণার জন্য তহবিল দেয়ার বিষয় বিবেচনা করা প্রয়োজন।

আমাদের আরেকটি বড় দুর্বলতা হলো এখানে যেসব মেধাবী শিক্ষার্থী আছে তারা দেশে পিএইচডি করতে চায় না। তারা জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপে চলে যাচ্ছে। একদল বিসিএস দিয়ে সরকারি চাকরি করতে যায়। আরেক দল গবেষণা করতে বিদেশে পাড়ি জমায়। অত্যন্ত যোগ্য শিক্ষার্থীরা এখানে গবেষণা করতে চায় না। তাই আমরা উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ছি। বিদেশে গিয়ে আমার কোনো ছাত্র যখন গবেষণা করে সেটি ওই দেশের সম্পদ হয়ে যায়। তারা সেটি নিয়ে প্রযুক্তিতে রূপান্তর করে প্যাটেন্ট করে ফেলে। আমাদের দেশের মেধাবীদের গবেষণার সুফলটুকু বিদেশীরা নিয়ে নিচ্ছে। আমরা পাচ্ছি না। যে গুটি কয়েকজন দেশে ফিরে আসে তাদেরকেও আমরা কাজে লাগাতে পারি না। এ জন্য তাদেরকে পর্যাপ্ত ও প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে। তখন তার মনে বিদেশে যাওয়ার আগ্রহ থাকবে না। সে দেশের উন্নয়নে মনোযোগী হবে। তখন দেশেই প্রযুক্তির উদ্ভাবন ও বিস্তার ঘটতে পারবে। প্রযুক্তির জন্য আমাদের বিদেশনির্ভরতা কমবে।

মোট কথা হলো বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে করায়ত্ত করতে না পারলে আমাদেরকে আমদানিনির্ভর দেশ হয়েই থাকতে হবে। দেশকে উন্নত করতে চাইলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে ধারণ করতে হবে। এ জন্য বাজেটে গবেষণা ও প্রযুক্তি উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ বাড়াতে হবে। বাংলাদেশে এই বরাদ্দ তুলনীয় দেশগুলোর তুলনায় একবারেই কম। তা না হলে আমরা অর্থনৈতিক উন্নয়নের যে স্বপ্ন দেখছি তা টেকসই হবে না।

লেখক : ভাইস প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশ একাডেমি অব সায়েন্স এবং সাবেক ডিন ও অধ্যাপক, ডিপার্টমেন্ট অব ফার্মাসিউটিক্যাল কেমিস্ট্রি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ই-মেইল: cmhasan@gmail.com


আরো সংবাদ



premium cement