২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

বাংলাদেশে করোনার আক্রমণ ও মিয়ানমারে জান্তা

-

বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ আবার জেঁকে বসায় সরকার এক সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণা করেছে। অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বাংলাদেশে এখন করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা অনেক বেশি। হাসপাতালের সাধারণ ও আইসিইউ বেডগুলো ইতোমধ্যে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। মানুষের স্বাভাবিক চলাচল ও কাজকর্ম আবার থমকে যাচ্ছে। নতুন করে অজানা শঙ্কা দেখা দিচ্ছে সবার মাঝে।

বাংলাদেশে যখন করোনাভাইরাস নিয়ে এ অবস্থা, তখন পাশের দেশ মিয়ানমারে চলছে হত্যাযজ্ঞ। দেশটিতে কিছু দিন হলো নিয়ন্ত্রিত গণতান্ত্রিক সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করেছে সেনাবাহিনী। জনগণ এর বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছে করোনা মহামারীকে উপেক্ষা করেই। কিন্তু জান্তা সরকার জনগণের এই প্রতিবাদ ও বিক্ষোভকে দমন করার জন্য নির্বিচারে গুলি চালাতে কুণ্ঠিত হচ্ছে না। পাখির মতো মানুষ মারছে। তবুও জনগণের বাঁধভাঙা প্রতিবাদ অব্যাহত আছে।

বাংলাদেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ও মৃত্যু
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি মাসে স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী আগের টানা ১০ দিন ধরে করোনা রোগী শনাক্তের হার ছিল ৩ শতাংশের নিচে। অর্থাৎ ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নতুন সংক্রমিত করোনা রোগীর সংখ্যা ছিল ৫০০ এর কম। সবার মনে একটা আশা জন্মেছিল যে, বাংলাদেশে করোনা মহামারীর অবসান হতে যাচ্ছে। করোনা নিয়ে আর লিখতে হবে না, এমন আশা করেছিলাম। কিন্তু এক মাসের ব্যবধানে আবার সব ওলট-পালট হয়ে গেল। মার্চ মাসের শুরু থেকেই করোনা সংক্রমণ আবার বাড়তে শুরু করে। শীতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়ে, গরমে কমে যায়- এ ধারণাকে ভুল প্রমাণ করে দিয়ে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস ভয়ানক মূর্তি ধারণ করে একের পর এক সংক্রমণ ঘটিয়ে চলেছে এবং গত এক বছরের রেকর্ড পেছনে ফেলে দিয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতর নতুন করোনাভাইরাসের এ সংক্রমণকে করোনার ‘দ্বিতীয় ঢেউ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, করোনার এ দ্বিতীয় ঢেউ বাংলাদেশকে কোথায় নিয়ে যায়!

কারণ দেশে এখন প্রতিদিনই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্তের রেকর্ড সৃষ্টি হচ্ছে। ২ এপ্রিল শুক্রবার বিকেলে দেয়া স্বাস্থ্য অধিদফতরের রিপোর্টে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ছয় হাজার ৮৩০ জনের। এটি এক দিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। মৃত্যুও বাড়ছে। টানা তিন দিন অর্থাৎ ১, ২ ও ৩ এপ্রিল দিনে ৫০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সংক্রমিত হয়েছে ছয় হাজারের বেশি। গত বৃহস্পতিবার ১ এপ্রিল ৫৯ জন এবং ৩ এপ্রিল শনিবার ৫৮ জন মারা গেছে। করোনার সংক্রমণের সংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে মৃত্যুও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। এ অবস্থায় হাসপাতালগুলোতে প্রচণ্ড চাপ দেখা দিয়েছে। রাজধানী ঢাকায় করোনার জন্য নির্ধারিত হাসপাতালগুলোতে আইসিইউর পাশাপাশি হাসপাতালের সাধারণ শয্যার ধারণক্ষমতাও প্রায় শেষ। প্রায় একই অবস্থা ঢাকার বেসরকারি হাসপাতালেও।

২০২০ সালের ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছিল। ওই বছরের ১৮ মার্চ করোনায় মৃত্যু প্রথম রেকর্ড হয়। মার্চ ২০২০ সালে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু রেকর্ড হয়েছে। ওই মাসে গড়ে ৪১ জন মানুষ করোনায় মারা যায়। অথচ সাত দিন ধরে দেশে দৈনিক মৃত্যু হচ্ছে ৪৬ জন। অর্থাৎ বাংলাদেশে আগের সব রেকর্ড ভঙ্গ।

গত বছরের জুন-জুলাইয়ে করোনা সংক্রমণের প্রথম ঢেউয়ে সংক্রমণ ছিল তীব্র। এ বছরের মার্চ মাস থেকে করোনার ‘দ্বিতীয় ঢেউ’ শুরু হয়েছে। প্রথম ঢেউয়ের চেয়ে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণ বেশি তীব্র। প্রথমবারের চূড়ার (পিক) চেয়ে দ্বিতীয় ঢেউয়ে দৈনিক শনাক্ত বেশি হচ্ছে। গত বছরের মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত করোনা রোগী শনাক্তের হার ২০ শতাংশের উপরে ছিল। এরপর সেটি কমতে থাকে। ডিসেম্বরের ১৯ তারিখ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১০ শতাংশের নিচে নামে। ফেব্রুয়ারি মাসে তা ৩ শতাংশের নিচে নেমে যায়। তিন মাস পর ১৮ মার্চ শনাক্তের হার আবার ১০ শতাংশের উপরে উঠে গেছে। ৩ এপ্রিল ২৪ ঘণ্টায় ২৯ হাজার ৩৩৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় রোগী শনাক্তের হার ২৩ দশমিক ২৮ শতাংশ। ঢাকার ১০টি হাসপাতালের ১১৮টা আইসিইউ বেডের মধ্যে ১০৮টি বেডেই রোগী ছিল। আর সাধারণ দুই হাজার ৫১১টি বেডের মধ্যে দুই হাজার ৩৪২টি বেডেই রোগী ছিল। এবার করোনার সংক্রমণই শুধু তীব্র নয়; নতুন জাতের করোনাভাইরাস বা নিউ ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ হচ্ছে যেটি দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইংল্যান্ডে সংক্রমণ ঘটিয়েছে। এখন আর সাধারণ সর্দি-কাশিতে ভুগতে হচ্ছে না। অনেক সময় পেট খারাপ, মাথাব্যথা, শ্বাসকষ্ট হয়ে তিন-চার দিনেই মানুষ মারা যাচ্ছে। সরকারের তথ্য অনুযায়ী, ৩ এপ্রিল ২০২১ পর্যন্ত মোট ছয় লাখ ২৪ হাজার ৫৯৪ জনের করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। মারা গেছে ৯ হাজার ১৫৫ জন। মৃত্যু যে হারে বাড়ছে, অচিরেই হয়তো তা ১০ হাজারের ঘর অতিক্রম করতে পারে।

করোনা মোকাবেলায় অবহেলা
নতুন করে তীব্র আকারে করোনাভাইরাস সংক্রমণের জন্য অনেকেই সরকারের অবহেলাকে দায়ী করেছেন। পাশাপাশি, জনগণের উদাসীনতাও দায়ী। বিশেষ করে বিমানবন্দরের প্রতি নজর না দেয়াটাই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকা, যুক্তরাজ্য, ইউরোপ ও আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্টের খবর প্রায় প্রতিদিনই বাংলাদেশসহ বিশ্ব মিডিয়ায় প্রচারিত হচ্ছে। এ অবস্থায় সরকারের উচিত ছিল বাংলাদেশের বিমানবন্দরগুলোতে কড়া নজরদারি করা; যারা বাইরে থেকে দেশে প্রবেশ করছেন, তাদেরকে সঠিকভাবে কোয়ারেন্টিনে রাখা। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, এ ধরনের কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। সদর দরজার মতো বিদেশ থেকে যাত্রীরা বিমানবন্দর দিয়ে দেশে প্রবেশ করেছেন, কোনো নিয়ন্ত্রণ ছাড়া। এর আগে করোনা মহামারী দেখা দেয়ার সময়ও বিমানবন্দর নিয়ে আমরা অবহেলা করেছি। অনেক পরে বিমানবন্দর বন্ধ করা হয়েছে। অথচ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছিল। শুরুতেই বিমানবন্দর বন্ধ করে দিলে বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ ভালোভাবেই নিয়ন্ত্রণে রাখা যেত। আমাদের পাশে ব্যাংকক সিঙ্গাপুরের অবস্থা দেখুন। সেখানে এখনো জরুরিভাবে কেউ গেলে তাকে নির্ধারিত হোটেলে ১৪ দিন কঠোরভাবে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়; হোটেল কক্ষের বাইরে আসতে দেয়া হয় না। এমনকি খাবার হোটেল কক্ষের ভেতরে নয়, দরজার সামনে রেখে এসে জানিয়ে দেয়া হয়। আবার খাবার শেষ করে দরজার বাইরে তা রেখে দিতে হয়। কিন্তু হায়! বাংলাদেশে এসব পদক্ষেপ কল্পনাও করা যায় না।

সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সরকার ১৮ দফা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। এগুলোকে ‘সাদামাটা পদক্ষেপ’ই বলা যায়। সরকার পর্যটন বন্ধ করেছে নির্ধারিত কিছু জায়গায়। সারা দেশের সব পর্যটনই বন্ধ হওয়া উচিত ছিল। গণজমায়েত বা সমাবেশ না করার পরামর্শ দেয়া হলেও ঢাকায় ৩ এপ্রিল মেডিক্যালে ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে যে জমায়েত হয়েছে তা কল্পনাতীত। একজন পরীক্ষার্থীর সাথে মা-বাবা, ভাইবোনসহ তিন-চারজন করে এসেছেন। এতে শুধু পরীক্ষা কেন্দ্রই নয়, বাস, রিকশাসহ যানবাহনেও চাপ পড়েছে। এ পরিস্থিতিতে পরীক্ষা নেয়া কি এতই জরুরি ছিল? পরীক্ষা পিছিয়েও দেয়া যেত। বাংলা একাডেমির অমর একুশের বইমেলা ফেব্রুয়ারিতে হয়নি। মেলা যেহেতু নির্ধারিত সময়ে হয়নি, তা এ বছর বন্ধ রাখা যেত।

মুষ্টিমেয় কিছু প্রকাশকের চাপে কেন এ দুঃসময়ে বইমেলা করা হচ্ছে? ফেব্রুয়ারি ছাড়া অন্য মাসে মেলা তেমন জমেও না। মুষ্টিমেয় প্রকাশক কিছু প্রজেক্টের বই বিক্রির জন্য এ মেলার জন্য চাপ দিয়েছেন। মেলায় বিক্রয় তাদের মূল বিষয় নয়। তাদের কাছে সরকার জিম্মি হওয়া উচিত হয়নি। মেলার বেশির ভাগ প্রকাশকই বলেছেন তাদের বারোটা বাজিয়ে দেয়া হয়েছে। এক ইউনিটের স্টলের জন্য ন্যূনতম খরচ ৬০ হাজার টাকা। অথচ পুরো মাসে ১০ হাজার টাকার বই বিক্রয় হবে কি না, সন্দেহ; যদিও লকডাউন ঘোষিত হওয়ায় মেলা আর চলবে না।

সরকার ইউরোপ ও অন্য ১২টি দেশ থেকে যাত্রী আসার ব্যাপারে কড়াকড়ি আরোপ করেছে। এটি আগে করলে এর সুফল পাওয়া যেত। করোনার টিকা দেয়া নিয়েও হেলাফেলা করা হয়েছে। তাই অনেকেই মনে করেন, সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে না পারা, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পরিকল্পনা না থাকা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যাপারে সাধারণ মানুষকে বাধ্য না করানোর কারণে করোনা মহামারী বাংলাদেশে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সব সময় মধ্যপন্থা অবলম্বন ভালো নয়। তাই সরকারকে করোনা মহামারীর ব্যাপারে প্রয়োজনে কঠোরও হতে হবে। কারণ মৃত্যুর বন্যা শুরু হয়ে গেলে তা সামলানো কঠিন হয়ে পড়তে পারে।

বিভিন্ন দেশে কড়াকাড়ি
করোনা মহামারী অন্য দেশেও ব্যাপকহারে বাড়তে শুরু করেছে। ফলে বিভিন্ন দেশ কড়াকড়ির পথে হাঁটতে বাধ্য হচ্ছে। ইতোমধ্যে ফ্রান্সসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ বিধিনিষেধ জারি করেছে। প্রতিবেশী ভারত নতুন করে বিধিনিষেধ জারি করেছে। কঠোরতা অবলম্বন করেছে দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোও। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আগেই ঘোষণা করেছেন তিনি আগামী মে-জুনের মধ্যেই তার দেশের সবাইকে টিকাদান শেষ করতে চান।

দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোতে দ্রুত ছড়াতে শুরু করেছে ব্রাজিলে সৃষ্টি হওয়া করোনাভাইরাসের একটি ধরন। এ পরিপ্রেক্ষিতে চিলি তার সীমান্ত বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে। ব্রাজিলের সাথে বলিভিয়াও সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে। পুরো দেশ লকডাউন করে দিয়েছে পেরু। ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত দেশটি ব্রাজিল, যুক্তরাজ্য ও দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে সব ধরনের ফ্লাইট নিষিদ্ধ করেছে। ভারতে ৩ এপ্রিল নতুন ৮২ হাজার লোকের করোনা শনাক্ত হয়েছে। ২ অক্টোবরের পর এটি সর্বোচ্চ। ভারতের মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে কারফিউ জারি হয়েছে। সংক্রমণ এ রাজ্যেই বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, মহামারী রুখতে এখন পর্যন্ত টিকাই সেরা অস্ত্র। কিন্তু ইউরোপে এই টিকাদান অগ্রহণযোগ্যভাবে ধীরগতিতে এগোচ্ছে। উল্লেখ্য, করোনা মহামারী বিশ্বের ২২১টি দেশে বিস্তার লাভ করেছে। এখন পর্যন্ত ১৩ কোটির বেশি মানুষ আক্রান্ত এবং সাড়ে ২৮ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

মিয়ানমারে জান্তার হত্যাযজ্ঞ
সামরিক জান্তা আমাদের দক্ষিণ-পুবের দেশ মিয়ানমারে রক্তগঙ্গা বইয়ে দিয়েছে। জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ দমন করতে এখন পর্যন্ত দেশটিতে ৫৩৮ জনকে গুলি করে মেরেছে সেনাবাহিনী ও পুলিশ। শিশুরাও প্রাণহানি থেকে রেহাই পায়নি। গত ১ ফেব্রুয়ারি অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন নিয়ন্ত্রিত গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করে। এর আগে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সু চির দল বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়। কিন্তু সেনাবাহিনী নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে। ১ ফেব্রুয়ারি নতুন সংসদ বসার কথা ছিল। কিন্তু ওই দিনই সু চির সরকারকে হটিয়ে দেয় সেনাবাহিনী। এ পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানাচ্ছে।

মিয়ানমারের রাজধানী ও অন্যান্য শহরে বড় বড় বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভের মাত্রা বেড়ে গেলে জান্তা সরকার কঠোরভাবে তা দমনের সিদ্ধান্ত নেয়। এক একটি কর্মসূচির দিন ৩০ জন, ৫০ জন, ৬০ জন করে মানুষ হত্যা করেছে। সর্বশেষ গত ২৭ মার্চ এক দিনেই জান্তার গুলিতে ১১৪ জনকে হত্যা করা হয়। নিষ্ঠুর দমন পীড়নের এই ভয়াবহতার মধ্যেও বিক্ষোভ থেমে নেই। সেনা শাসনের বিরুদ্ধে শহরে শহরে এখন মোমবাতি প্রজ্বলন ও পদযাত্রা চলছে। বিবিসির খবরে বলা হয়েছে মিয়ানমারে সন্ত্রাসে অসংখ্য শিশুর মৃত্যু এবং অনেকেই আহত হয়েছে। সেভ দ্য চিলড্রেন জানিয়েছে এ পর্যন্ত ৪৩টি শিশু নিহত হয়েছে।

সামরিক সরকার অং সান সু চিকে জেলে বন্দী রেখে তার বিচারকার্যক্রম চালাচ্ছে। তার বিরুদ্ধে নতুন নতুন মামলা দেয়া হয়েছে। জান্তার হত্যাযজ্ঞের কারণে করোনা মহামারী পরিস্থিতি চাপা পড়ে গেছে। করোনার আক্রমণের চেয়ে সামরিক জান্তার নৃশংস আক্রমণে দেশটির জনগণ দিশেহারা।

লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক, জাতীয় প্রেস ক্লাব


আরো সংবাদ



premium cement