ক্যাশওয়াক্ফ আন্দোলনের ২৫ বছর : বিশ্ব সামাজিক ব্যাংক প্রতিষ্ঠা
- প্রফেসর ড. এম এ মান্নান
- ২৬ মার্চ ২০২১, ২১:৩১, আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২১, ২১:৩২
‘ক্যাশওয়াক্ফ সার্টিফিকেট’ ইসলামী অর্থনীতি ও আমাদের ব্যাংকিং সেক্টরে নতুন সংযোজন। বাংলাদেশেই এটি প্রথম কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বীকৃতি লাভ করে এবং আর্থিক ইন্সট্রুমেন্ট হিসেবে ব্যাংকিং খাতে যুক্ত হয়। এখন এটি বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত একটি বিষয়। সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড (এসআইবিএল) ১৯৯৭ সালে প্রথম ‘ক্যাশওয়াক্ফ সার্টিফিকেট’ প্রবর্তন করেছে। থ্রি-সেক্টর (আনুষ্ঠানিক, অনানুষ্ঠানিক ও স্বেচ্ছাসেবক খাত) ব্যাংকিং মডেল বাস্তবে রূপ দিতে ১৯৯৫ সালের শেষ দিকে যাত্রা শুরু করে এসআইবিএল। স্বেচ্ছাসেবক খাতের অংশ হলো এই ‘ক্যাশওয়াক্ফ সার্টিফিকেট’। স্বেচ্ছাসেবক খাতের পুঁজিবাজারের কার্যক্রম সংগঠিত করার প্রক্রিয়া হিসেবে এটি চালু হয়। পরবর্তী সময়ে ইসলামী শরিয়াহভিত্তিক অন্যান্য ব্যাংকও এই ধারণা গ্রহণ করে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে ইসলামের স্বেচ্ছাসেবক খাতের (ওয়াক্ফ) সুফল ছড়িয়ে দিতে উদ্যোগী হয়। এর লক্ষ্য হলো, সমাজের সচ্ছল জনগোষ্ঠীর সঞ্চয়ের একটি অংশ দিয়ে ‘ক্যাশওয়াক্ফ সার্টিফিকেট’ কেনার মাধ্যমে এর অর্জিত আয় বিভিন্ন ধর্মীয়, শিক্ষা ও সামাজিক সেবামূলক কাজে ব্যয় করা। এটা দিয়ে বিত্তশালীদের পারিবারিক উত্তরাধিকারের ক্ষমতায়নও করা যায়। মুসলিম সমাজের দারিদ্র্য বিমোচন ও কল্যাণ সাধনের অমিত সম্ভাবনাময় এই হাতিয়ার এখন মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, তুরস্ক; নাইজার, সোমালিয়াসহ আফ্রিকার অনেক দেশ; যুক্তরাষ্ট্রের মেমফিসে মুসলিম কমিউনিটি এবং আলবেনিয়াসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। গত সিকি শতাব্দীতে ‘ক্যাশওয়াক্ফ’ একটি আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। সময়ের সাথে সাথে এই আন্দোলন কেবল বেগবান হবে।
ইসলামে ওয়াকফ ও সাদাকায়ে জারিয়ার মূল্য কারো অজানা নয়। মুসলিম বিশ্বের সর্বত্র ওয়াক্ফের ধারণাটি সুপ্রতিষ্ঠিত। ইসলামের শুরুর দিকে ওয়াকফ ধারণা বিস্তার লাভ করলেও তখন মূলত ভূ-সম্পত্তি ওয়াক্ফ করার রীতি ছিল। মুসলিম বিশ্বের ইতিহাসে তুর্কি সাম্রাজ্যে সবচেয়ে বেশি ওয়াকফ সম্পত্তি ছিল। অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে, একসময় দেখা গেল সাম্র্রাজ্যের কৃষি-সম্পত্তির তিন-চতুর্থাংশই ওয়াকফ সম্পত্তিতে পরিণত হয়েছে। ফলে মানুষ যখন ওয়াকফ করার জন্য আর জমি পাচ্ছিল না, তখন এর বিকল্প নিয়ে ভাবতে শুরু করে। এরই প্রেক্ষাপটে ক্যাশওয়াকফ ধারণার উদ্ভব। তখন আলেমরা বললেন, হ্যাঁ, নগদ অর্থ (ক্যাশ) ওয়াকফ হতে পারে। কিন্তু শরিয়াহ সংশ্লিষ্ট কিছু প্রশ্নের সুরাহা না হওয়ায় তখন বিষয়টি বিতর্কের মধ্যে আটকে যায় এবং ‘ক্যাশওয়াকফ’ প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়নি।
এভাবে প্রায় ৫০০ বছর কেটে যায়। আমি নিজে ইসলামিক উন্নয়ন ব্যাংকের (আইডিবি) রিসার্চ সেন্টারের দায়িত্বে থাকাকালে ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট আহমেদ মোহাম্মদ আলী আমাকে মুসলিম বিশ্বের ওয়াক্ফ নিয়ে গবেষণা করতে বলেন। আমার এক সহকর্মী ছিলেন তুরস্কের মারমারা ইউনিভার্সিটির ভিসি। তিনি এ প্রসঙ্গে অটোমান আর্কাইভের কথা জানান। তুর্কি ভাষা বুঝি না। তাই তাকে ক্যাশওয়াকফ সম্পর্কে অটোমান পণ্ডিতদের চিন্তাভাবনা জানাতে অনুরোধ করি। ওয়াকফ সম্পর্কে জানতে কায়রোর আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়েও লোক পাঠাই। বাংলাদেশে ওয়াক্ফের অবস্থা নিয়ে গবেষণা করাও আমার টার্গেট ছিল। অটোমান আর্কাইভে ক্যাশওয়াকফ সম্পর্কে গ্রন্থে বিশাল ভাণ্ডার রয়েছে। এর অনেক কিছু আমি ইংরেজিতে অনুবাদ করিয়ে নিই। তখনই আমার মনে, ক্যাশওয়াকফকে ইসলামী অর্থনীতির মূল ধারায় নিয়ে আসার ভাবনা উদয় হয়। ভেবে দেখি, ক্যাশওয়াকফকে যদি ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বন্ড বা সার্টিফিকেট আকারে ছাড়া যায়, তা হলে সেটি কার্যকর হতে পারে। মূলধন অক্ষত রেখে ওয়াক্ফকৃত অর্থের মুনাফা জনকল্যাণে (ওয়াক্ফ নির্ধারিত খাতে) ব্যয় করবে ব্যাংক। এ ব্যাপারে ইসলামী বিধান বা শরিয়াহগত যেসব প্রশ্ন ছিল, সেগুলোর সমাধান তালাশ করি।
আমি যখন এই চিন্তাভাবনা করছি, তখন বিশ্বের অনেক দেশে ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তবে সেগুলোর আলাদা কোনো পুঁজিবাজার ছিল না। ফলে পুঁজিবাজার নিয়ে গবেষণার সিদ্ধান্ত নেয় আইডিবি। এটা ১৯৮১-৮২ সালের কথা। আমার সৌভাগ্য যে, ওই গবেষণা করার দায়িত্বটি আমাকে দেয়া হয়েছিল। সেই সুবাদে সম্ভবত ইসলামী বিশ্বে আমিই প্রথম ইসলামিক ফ্রেমওয়ার্কে শেয়ার মার্কেটের আচরণ নিয়ে গবেষণা করেছিলাম। আধুনিক ইতিহাসে এটাই ছিল ইসলামিক শেয়ার মার্কেটের বিষয়ে প্রথম গবেষণা। এরই ধারাবাহিকতায় ক্যাশওয়াক্ফ বাস্তবায়নের জন্য এটাকে ‘ইউনিট অব অ্যাকাউন্ট’ করার কথা ভাবি। আল্লাহর রহমতে এতে আমি সফল হয়েছি। আমার ডিজাইন করা ক্যাশওয়াক্ফ সার্টিফিকেট থেকে শুরু করে অনেক কিছুই প্রায় অপরিবর্তিত অবস্থায় প্রতিটি ব্যাংক গ্রহণ করেছে। ওয়াক্ফ, ক্যাশওয়াক্ফ ও ক্যাশওয়াক্ফ সার্টিফিকেট- তিনটি সম্পূর্ণ আলাদা জিনিস। প্রথম দু’টি বায়বীয় ধারণা। কিন্তু ‘ক্যাশওয়াক্ফ সার্টিফিকেট’ হলো একটি ‘ইউনিট অব অ্যাকাউন্ট’। ইসলামের ইতিহাসে এই প্রথম ক্যাশওয়াক্ফকে ‘মনিটাইজ’ করা হলো।
ক্যাশওয়াক্ফ সার্টিফিকেট ধারণাটি ব্যাখ্যা করার জন্য ১৯৯৮ সালের অক্টোবরে আমেরিকার হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির ‘সেকেন্ড হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি ফোরাম অন ইসলামিক ফিন্যান্স’ থেকে আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। আমি সেখানে প্রেজেন্টেশন দিয়েছি। সেখানে বহু মুসলিম স্কলার ছিলেন। মূলত এরপরই এ ধারণা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। পরে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, তুরস্কসহ বিভিন্ন দেশের সেমিনার, সিম্পোজিয়ামে যোগ দিয়ে ক্যাশওয়াক্ফের ধারণাটি আরো বিস্তৃত পরিসরে তুলে ধরি।
বাংলাদেশে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পাওয়া ক্যাশওয়াক্ফকে তুর্কি স্কলার মুরাত চিজাকচা তার ইসলামিক ক্যাপিটালিজম অ্যান্ড ফাইন্যান্স বইয়ে ‘মান্নান মডেল’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘একটি আর্থিক ইন্সট্রুমেন্ট হিসেবে ১৯৯৭ সাল থেকে সোস্যাল ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক ক্যাশওয়াক্ফ সার্টিফিকেট চালু করেছে। ক্যাশওয়াক্ফ চালুর মাধ্যমে ওয়াক্ফ করার ক্ষেত্রে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে চলে আসা ধনীদের একচেটিয়া অধিকারের অবসান ঘটে। এখন গরিবরাও চাইলে সম্পদ (অর্থ) ওয়াক্ফ করার ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারেন। তাত্ত্বিকভাবে অগণিত মানুষ এখন ক্যাশওয়াক্ফ সার্টিফিকেট কিনতে পারেন। মাত্র এক হাজার টাকার মতো ছোট ছোট আর্থিক ইউনিট দিয়ে এই সার্টিফিকেট কেনা যায়। কিস্তিতেও এই সার্টিফিকেট কেনার ব্যবস্থা রয়েছে।’
বাড়ির মনিব যেমন ক্যাশওয়াক্ফ করতে পারেন, তার গৃহকর্মীও তা করতে পারেন। এটি করতে গিয়ে আমার অভিজ্ঞতা হলো- মানুষ এ ধরনের দানের ক্ষেত্রে সাড়া দেয়। আজ ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের প্রায় ১০০ কোটি টাকার এই তহবিল রয়েছে। এসআইবিএলের রয়েছে ২৫-৩০ কোটি টাকার তহবিল। এ থেকে শুধু গরিবরা নয়, ধনীরাও পরোক্ষভাবে উপকৃত হচ্ছেন। ব্যাংকের হাতে থাকা ‘ক্যাশওয়াক্ফ’-এর কোটি কোটি টাকার তহবিল কাজে লাগাবে কে? সে তো ধনীরাই। এই খাত থেকে তারা সহজে বিনিয়োগ ঋণ নিতে পারেন। কারণ এর কোনো ‘কস্ট অব ফান্ড’ নেই। এতে দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। তখন ক্যাশওয়াক্ফের সুফল গোটা সমাজে চক্রাকারে ঘুরতে থাকবে।
ক্যাশওয়াক্ফের আন্দোলন গোটা মুসলিম বিশ্বে ছড়িয়ে দেয়া সম্ভব। বিশ্বের মুসলমানদের কাছ থেকে মাথাপিছু যদি মাত্র এক ডলার করে ক্যাশওয়াক্ফ সংগ্রহ করা যায়, তাহলে কত বিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করা যাবে, তা কি কল্পনা করা যায়? এই প্রক্রিয়ায় একদিন ‘বিশ্ব সামাজিক ব্যাংক’ প্রতিষ্ঠিত হবে বলেও আমি মনে করি।
২০০২ সালে ইন্দোনেশিয়া থেকে এক গ্রুপ ব্যাংকার বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন। তারা বিশ্ব সামাজিক ব্যাংকের ধারণায় যারপরনাই চমৎকৃত হন এবং এই ব্যাংকের সদর দফতর ইন্দোনেশিয়ায় প্রতিষ্ঠার আগ্রহ প্রকাশ করেন। তারা ফিরে গিয়ে ক্যাশওয়াকফ বিস্তারের উদ্যোগ নেন এবং এটি এখন সেখানে বেশ জনপ্রিয়।
ক্যাশওয়াক্ফের এই ধারণাকে উৎসাহের সাথে গ্রহণ করেন ওআইসির সাবেক মহাসচিব হামিদ আল গাবিদ। এ বিষয়ে আমার লেখা বই নিজে ফরাসি ভাষায় অনুবাদ করে ছাপিয়ে বিলি করেছেন। তার নিজ দেশ নাইজারে এই ধারণার বিস্তার ঘটিয়েছেন। ২০১২ সালে তিনি বাংলাদেশ সফরে এলে তার সঙ্গী হিসেবে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে আমার সাক্ষাৎ করার সুযোগ হয়েছিল। তখন প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমি বিশ্ব সামাজিক ব্যাংকের ধারণা তুলে ধরি। তিনি বেশ উৎসাহ দেখান। আল গাবিদ ঢাকায় এই ব্যাংকের সদর দফতর স্থাপনের প্রস্তাব দিলে প্রধানমন্ত্রী জমিও দিতে রাজি হন। তিনি আমাদের এগিয়ে যেতে বলেন। প্রধানমন্ত্রীর স্বতঃস্ফূর্ত কথায় আমরা অনুপ্রাণিত হই। ভেবেছিলাম, তার এই উৎসাহ হয়তো স্বাভাবিক গতিতেই বাস্তবে রূপ নেবে। অন্তর থেকে চেয়েছিলাম এটা ঢাকায় হোক। আমার চিন্তা ছিল, এর সদস্যপদ হবে প্রাতিষ্ঠানিক। দেশের ইসলামী ব্যাংকগুলো, মুসলিম বিশ্বের বড় বড় আর্থিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান, ট্রাস্ট, ফাউন্ডেশন ইত্যাদি এর সদস্য হতে পারে। মুসলিম দেশগুলোর বাইরেও যেসব দেশে বড় মুসলিম কমিউনিটি আছে, তাদের প্রতিষ্ঠান এর সদস্য হতে পারবে। ভারতে বিশাল মুসলিম কমিউনিটি রয়েছে। তাদের বিভিন্ন সামাজিক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশাল এনডাওমেন্ট ফান্ড রয়েছে। এসব ফান্ড যদি বিশ্ব সামাজিক ব্যাংকের সদস্য হয়, তাহলে তা মুসলিম বিশ্বের দারিদ্র্যবিমোচনে বিশাল ভূমিকা রাখতে পারে। ২০১০ সালে বাংলাদেশে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট সফরে এসেছিলেন। তিনি আইডিবিতে আমার জুনিয়র কলিগ ছিলেন। তিনি আমার আইডিয়াটির কথা জানতেন। তিনি এসে জিজ্ঞেস করেছিলেন, এটা কত দূর অগ্রসর হলো। তবে আমার শারীরিক অসুস্থতা ও প্রধানমন্ত্রীর ব্যস্ততার কারণে বিষয়টি আর এগোয়নি। কিন্তু আমি মনে করি, ‘বিশ্ব সামাজিক ব্যাংক’ কোনো কল্পনা বা অবাস্তব কিছু নয়; দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য এটি খুবই বাস্তব একটি প্রতিষ্ঠান।
মানুষ মরণশীল। তিনি যতই বিত্তবৈভবের মালিক হোন না কেন, তাকে একদিন অবশ্যই মৃত্যুবরণ করতে হবে। ইসলাম বলে, মানুষের মৃত্যুর পর সাদাকায়ে জারিয়াহ ছাড়া তার সব কাজের অবসান হবে। সাদাকায়ে জারিয়া হিসেবে ক্যাশওয়াক্ফ তার পরকালীন কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। আপনি নিশ্চই আপনার সন্তান বা অন্য কারো ভরণপোষণ বা ভবিষ্যৎ যেমন লেখাপড়া, বিয়ে ইত্যাদি নিয়ে ভাবেন। এই ভাবনা থেকেও আপনি ক্যাশওয়াক্ফ সার্টিফিকেট কিনতে পারেন। এতে উত্তরাধিকারীর হাতে সম্পদ বিনষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। আপনার বংশধরেরও ক্ষমতায়ন হবে এতে। অনেক বিত্তশালী সমাজের কল্যাণ করতে চান। ক্যাশওয়াক্ফ সার্টিফিকেট তাদের জন্য বিরাট সুযোগ। তার ওয়াক্ফ করা অর্থের লভ্যাংশ দিয়ে ধর্মীয় বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন বা পরিচালনা করা যেতে পারে।
কেউ পছন্দ করুক বা না করুক, ‘ক্যাশওয়াক্ফ সার্টিফিকেট’ একটি বৈশ্বিক ঘটনা। কোনো করপোরেট প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দেশের সব মানুষের কাছে পৌঁছানো সম্ভব না হলেও ক্যাশওয়াক্ফ সার্টিফিকেট পৌঁছানো সম্ভব। ওয়াক্ফে যে সামাজিক দায়িত্ব পালনের কথা বলা হয়েছে, সেটি আমাদের করপোরেট সেক্টরে স্বীকৃত; যাকে আমরা বলছি ‘করপোরেট সোস্যাল রেসপনসিবিলিটি’ (সিএসআর)। পশ্চিমা বিশ্বের এই ধারণা আমাদের সবাই বোঝেন। এই সামাজিক দায়িত্ব পালনের ধারণা ইসলামের একেবারে শুরু থেকেই রয়েছে।
বিশ্বে দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য আমরা যত ধরনের মডেল দেখছি, সেগুলো আসলে ব্যবসায় ছাড়া আর কিছু নয়। দারিদ্র্য বিমোচনের কথা বলা হলেও এসব মডেল আসলে ব্যবসায়িক মুনাফা হাসিলের পথ। ব্যক্তি, সমাজ, রাষ্ট্র এমনকি আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ক্ষেত্রেও আমরা একই অবস্থা দেখি। এই চিত্রটি আমূল বদলে দিতে পারে ক্যাশওয়াক্ফ আন্দোলন।
লেখক : প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড; সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ, ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক, জেদ্দা
[email protected]
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা