আমার অতৃপ্তি কোথায়
- ড. গাজী মো: আহসানুল কবীর
- ১৭ মার্চ ২০২১, ১৫:২৩
‘ভাষা’ যাকে আমরা অনেক আদর করে সম্মান দিয়ে সুন্দর করে বলে থাকি মাতৃভাষা। কেন? কারণ সেটি যেমন দেশ মাতৃকার ভাষা তেমনি মায়ের গর্ভ থেকে জন্মগ্রহণের পর মায়েরই কোলে অনেক যত্নে বেড়ে ওঠার সময় কোলের শিশুকে লক্ষ্য করে মা বিভিন্ন সময়ে আদর করে অনেক ধরনের কথা, ধ্বনি উচ্চারণ করেন। কোনটির অর্থ হয়, কোনটির হয়তো কোনো অর্থই হয় না। তার পরও ‘মা’ নিজের মতো করে নিজের মনে বলতেই থাকেন শুধু গর্ভের ধনটার প্রতি আদর প্রকাশের জন্য। মায়ের মুখের এসব অর্থহীন বা অর্থবোধক ধ্বনিগুলোই শিশুর কানে আঘাত করে পরে তার মুখের ভাষা হিসেবে বেরিয়ে আসে। সুতরাং ‘মা’ একজন শিশুর জীবনে শুধু প্রথম শিক্ষকই নন, তিনি তার ভাষার প্রধান ওস্তাদ ও ধ্বনিবিদও। অবুঝ শিশুকালে মায়ের মুখে এ ধ্বনি শিক্ষার যে কী মূল্য, কত বহুমুখিতা তা যদি বিশ্লেষণ করা যেত তবে আমি হলফ করে বলতে পারি তা নিয়ে এক বিশদ তর্কসম্ভার সৃষ্টি হতে পারে। যাহোক, সেটি অন্য উপলক্ষ। আজ আমি সে দিকে যাবো না। আমি আজ আমাদের জীবনে কখনো কখনো ভাষা আর বানানের যে ঘোরপ্যাঁচ ঘটে, তা নিয়ে একটু কথা বলতে চাই।
দেখুন, আমাদের কিছু ভাষাগত ও বানানের ভুলকে অনেকেই মনে করেন- এ এমন কিছুই না, এত হতেই পারে। কিন্তু আমি মনে করি, এসব দেখতে ছোট ভুল ছোট মনে হলেও এগুলো থেকেও বড় সঙ্ঘাত সংঘর্ষ সৃষ্টি হতে পারে। তাই এসব ছোট ছোট ভুলও একধরনের অপরাধ। এগুলো সময় থাকতেই শুধরে নেয়া ভালো। আর মূল কথা হলো, ভুল জিনিস নিয়ে আপনি থাকবেন কেন? তাই শুধরে নেয়া অবশ্যই উচিত।
এসব ভুল যিনি বা যাদের ধরিয়ে দেয়ার কথা, তারা আজকাল আর তা হয়তো দেন না। আর তাই এগুলো অনেকের জীবনে এভাবে চলে আসছে। আমি বলছিলাম, শিশুকালে ও বাল্যকালে এগুলো শিক্ষকের কাছ থেকেই শেখার কথা। না শেখালে, না শিখলে আপনি জানবেন কিভাবে? শুধু বই খুলে পড়ালেই শিক্ষা হয় না, জীবনে চলতে শেখানোই শিক্ষা। কেন যে আজকাল সেভাবে শেখানো হয় না, তা আমি জানি না।
আমাদের শিক্ষকরা শেখাতেন। চমৎকার শিক্ষক, ততোধিক চমৎকার পণ্ডিত স্যার। আজো মনে আছে, সেই ১৯৫৮ সালে যখন আমি চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ি, আমাদের স্যার ক্লাসে এসে জিজ্ঞাসা করলেন, আচ্ছা বলত, লেফটেন্যান্টের ইংরেজি বানান কী? আমরা বলতে পারিনি। স্যার আমাদের এ কঠিন বানানটি শিখিয়ে দিলেন সহজভাবে। বললেন, বল আমার সাথে ‘মিথ্যা তুমি দশ পিঁপড়া’-৩ বার বল। আমরা বললাম। এটাই লেফটেন্যান্টের বানান, বুঝলি? কিভাবে? Lie u ten ant (lieutenant)। জীবনেও আর এ বানান ভুলিনি।
স্যার বললেন, আরো আছে। ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তা বানানে Jakarta এর আগে ‘D’ লাগাবি (সে সময়ের প্রচলিত বানানে ইন্দোনেশীয় ভাষায় (‘djakarta’)। মনোবিজ্ঞান ইংরেজিতে সাইকোলজি এর আগে একটা ‘P’ লাগাবি (Psychology)। প্রাইমারি স্কুলের স্যার নিজেও হাসতে হাসতে আমাদের এভাবে বানানগুলো শেখালেন। আপনাদের বলতে পারি আমরা বিরক্ত হইনি সেদিন, বরং মজা পাচ্ছিলাম। স্যার তো গল্প করছিলেন। সিলভার বার্ডেড কোম্পানির বইটি খুলে পড়াচ্ছিলেন না (সে সময়ের পাঠ্যবই)। বললেন, আরো কঠিন বানান হলো পেট খারাপ বা পেটের অসুখের ইংরেজি ডায়রিয়া। ভেঙে ভেঙে ভাগ করে আমাদের বলালেন, ডায়া রো ইয়া (Dia rrho ea) অর্থাৎ Diarrhoea. এত সব কঠিন ইংরেজি বানান শিখেছিলাম সেই গ্রামের শ্রদ্ধেয় প্রাইমারি শিক্ষক আবদুল লতিফ মাস্টার সাহেবের (এখন মরহুম) কাছে। আর সেই শেখাই জীবনের মজবুত শেখা হয়ে রইল আজো। এরপর যখন ১৯৬০ সালে হাইস্কুলে ক্লাস সিক্সে পড়ি, ME স্কলারশিপ পরীক্ষা দেবো। তাই আমার নোয়াখালী জিলা স্কুলের কফিল স্যার ইংরেজি ক্লাসে এক দিন আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন translate কর দেখি ‘আমি নামাজ পড়ি’। আমি বললাম ও I read Namaz. স্যার হো হো করে হেসে দিলেন। আমি কিন্তু ক্লাসে ফার্স্ট বয়। স্যার বললেন, আরে ব্যাটা, বই পড়া আর নামাজ পড়া এক নয়, গাছ থেকে পড়া কি এক? শেখালেন বই পড়া তো reading. গাছ থেকে পড়া ধপাস করে পতিত হওয়া, কিন্তু নামাজ পড়া হলো ইবাদত করা, আল্লাহর কাছে হাজির হয়ে বলা। সুতরাং ইংরেজি হবে- I say my prayers/I say my salaat. শিখে গেলাম চমৎকারভাবে। খুব মজা পেয়ে বাসায় গিয়ে বাবাকে বললাম। বাবা নিজে আরো মজা পেয়ে বললেন স্কলারশিপ পরীক্ষা দেবে, সুতরাং ইংরেজি translation ভালো করে শিখবে।
বাবা তখন আমাকে আরো কঠিন একটি ইংরেজি translation জিজ্ঞাসা করলেন। আচ্ছা বল তো ‘বাড়ি ফিরতে পথে আমার রাত হলো’। এর ইংরেজি কী? খুবই কঠিন, তোতলাতে লাগলাম। বাবা বললেন, ভেঙে ভেঙে বলো এভাবে- রাত হলো/পথে/যখন আমি বাড়ি ফিরছিলাম। আমি চেষ্টা করলাম হাত-পা ভাঙা ইংরেজিতে এভাবে- It became night in the way when I was coming back home. অবশ্য এত সুন্দর করে তো, এত সঠিকভাবে বলতে পারিনি। শিক্ষক শিখিয়ে ছিলেন to house হবে, to home হবে না। আমার বাবা আমার ইংরেজিটি শুনে বললেন, হ্যাঁ কিছুটা তো হয়েছে, আর কত হবে? মাত্র সিক্সে পড়। তবে শোন, এর সুন্দর ইংরেজি হলো ‘I was benighted on my way back home. শিখে রাখ এভাবে noun-এর আগে ‘be’ যোগ করে verb-এর participle রূপ করা যায়। এমনই আর একটি সুন্দর ইংরেজি হলো- আমি নোয়াখালীতে স্কুলজীবন শুরু করেছিলাম এর ইংরেজি ‘I was schooled at Noakhali. সেই যে শিখেছি কাঁচা বয়সে আজো মনে গেঁথে আছে। শুধু গেঁথেই নেই, এমনিভাবে ইংরেজি করার চেষ্টাও করি। কেউ কেউ হয়তো ভাবতে পারেন- এ বানিয়ে বলছে। না, এতটুকুও না। একটি সময় ছিল যখন সব কিছুরই foundation অনেক শক্ত ছিল, নিখাদ ছিল।
ভাবুন তো একবার আগ্রার তাজমহল তৈরি হয়েছিল আজ থেকে চার শ’ বছর আগে। কী অবিস্মরণীয় স্থাপনা, কী স্থাপত্যশৈলী! তখন ছিল কি এমন আধুনিক প্রাতিষ্ঠানিক architectural বিজ্ঞান? ভাবুন একবার আমাদের আজকের BUET-G architecture dept. শুরু মাত্র ষাটের দশকের শুরুতে, তার আগে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, তারও আগে নওয়াব আহসান উল্লাহর প্রতিষ্ঠিত Survey School. তার আগে? জানি না। প্রাতিষ্ঠানিক স্থাপত্যবিদ্যা ছিল না, তা বলব না। তবে আমার একটি প্রশ্ন চার শ’ বছর আগে যে তাজমহল বানানো হয়েছিল, আজ তেমনি একটি তাজমহল কি বানানো যাবে? অনেকেই চটপট বলবেন, আজ কত অত্যাশ্চর্য স্থাপত্য নির্মাণ হচ্ছে না? হ্যাঁ হচ্ছে। কিন্তু অষ্টম আশ্চর্য তো হচ্ছে না। যাই হোক আমি আবার অন্য দিকে চলে যাচ্ছি। বলছিলাম আগে সব কিছুরই foundation শক্ত ছিল। আসল কথায় ফিরে আসি।
আমি যখন সেই স্কুলজীবনেই- আমাদের নোয়াখালী জিলা স্কুল দেশের ১৭ জেলার সর্বোৎকৃষ্ট ১৫টি জিলা স্কুলের একটি। আমাদের একজন পণ্ডিত স্যার ছিলেন। নাম (পরম শ্রদ্ধেয়) ক্ষিতিশ চন্দ্র। খুব সহজ সরল। পরতেন হাতে ধোয়া ধুতি, সাথে মোটা কাপড়ের হাফ হাতা ফতুয়া, পায়ে টায়ারের সস্তা স্যান্ডেল। বিড়ি খেতেন, নোয়াখালীর স্থানীয় খায়ের বিড়ি। আমাদের ব্যাকরণ পড়াতেন। আমি ক্লাসে ফার্স্ট বয়, থাকি স্কুলের হোস্টেলে। স্যারের বাসাও কাছে। একই দীঘিতে প্রতিদিন গোসল করি। পারতপক্ষে গোসলের সময় স্যারের নজর থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করতাম, ভয়ে। কারণ দেখলেই ওরই মধ্যে একটি পদ, সন্ধি, সমাস, ণত্ব বিধান-ষত্ব বিধানের প্রশ্ন করে বসবেন। কিন্তু ক্লাসে তো আর নিস্তার নেই। টিচার্স রুম থেকে লম্বা করিডোর অতিক্রম করে শেষ মাথায় আমাদের ক্লাসে ঢোকার আগেই বিড়ির ছোট শেষাংশটুকু ফেলে পায়ের নিচে চেপে আগুন নিভিয়ে বারান্দা থেকে বাইরে ছুড়ে ক্লাসে এক পা দিয়েই প্রশ্ন- ক‘তো (মানে, বল তো) ‘দম্পতি’ কোন সমাস? এর ব্যাসবাক্য কী? তার পর ব্যাখ্যা, কেন অন্য দ্বন্দ্ব সমাসের মতো এর ব্যাস বাক্য দম ও পতি হলো না, কেন তা ‘জায়া ও পতি’ ইত্যাদি ইত্যাদি।
ব্যাকরণের হেন দিক নেই যা আমার স্বর্গীয় পণ্ডিত স্যার ক্লাসে, রাস্তাঘাটে, এখানে-সেখানে শেখাননি। ক্লাস নাইন-টেনে স্যার আমাদেরকে যে চমৎকার পদ্ধতিতে বাংলা বানান শিখিয়েছিলেন, তা আজো মনে গেঁথে আছে। মনে হয় কালই পড়েছি। যেমন-
১) ণত্ব বিধান ও ষত্ব বিধান :
i) ঋ, র, ষ এর পর সবই মূর্ধন্য ‘ণ’ হবে :
তৃণ, পূর্ণ, ভূষণ, ভীষণ
ii) ট-বর্গে (ট, ঠ, ড, ঢ---) যুক্ত সব ‘ণ’ হবে : লণ্ঠন, কণ্ঠ, ভাণ্ডার।
iii) কতগুলো শব্দে এমনিতেই মূধর্ন্য ‘ণ’ হয় : অণু, কণা, কোণ, মণি-মাণিক্য, লবণ, পুণ্য, বাণিজ্য, শাণিত।
iv) ‘ট’ ও ‘ঠ’-এর সাথে যুক্ত থাকলে সব ‘ষ’ হবে : নষ্ট, দৃষ্টি, নিষ্ঠা।
v) ই-কার, উকার এর পর ‘ষ’ হয় : নিষিদ্ধ, বিষন্ন, অভিষেক।
vi) বিদেশী শব্দে কখনো ‘ষ’ হবে না- গ্রিস, মিশন, ভিশন।
আমরা কত যে ভুল করি যা শুদ্ধ করতে স্যার শিখিয়েছিলেন-
‘স’ যুক্ত শব্দে :
‘স’-এর অর্থ হলো সাথে বর্তমান অর্থাৎ-
‘সাক্ষর’ মানে স-অক্ষর অর্থাৎ অক্ষরের সাথে বর্তমান, অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন
‘সপরিবার’ মানে পরিবারের সাথে বর্তমান, পরিবারসহ।
একইভাবে ‘সস্ত্রীক’ মানে স্ত্রীসহ, ‘সপুত্রক’ মানে পুত্রসহ।
‘স্ব’ যুক্ত শব্দে :
‘স্ব’-এর অর্থ নিজ। সুতরাং এখানে ‘স্বাক্ষর’ মানে নিজের অক্ষর অর্থাৎ যাকে আমরা বলি signature. প্রতিনিয়ত আমরা সাক্ষর/স্বাক্ষর শব্দগুলো ব্যবহার করি। অনেকেই ভুল করি।
এই যে দেখুন ছোট্ট দু’টি শব্দ ‘কী’ ও ‘কি’। কোনটি কোথায় বসবে আমরা প্রায়ই গুলিয়ে ফেলি। কিন্তু গুলিয়ে ফেলার কিছু নেই। খুবই সহজ। যেমন আমরা ভাত খাই, ফুটবল খেলি এসবের উত্তরের জন্য প্রশ্ন করি কী খাই? কী খেলি? অর্থাৎ ‘কী’ শব্দটি খাই ও খেলি এর কর্ম বোঝাতে যখন ব্যবহৃত হয়, তখন ‘কী’ বসবে। কিন্তু যদি এটি অব্যয় হয় (হ্যাঁ-বোধক বা না-বোধক) তখন ‘কি’ বসবে। যেমন তুমি কি যাবে? আমি কী খাই? এবং আমি কি খাই? এ দু’টি কথার মধ্যে আকাশ-পাতাল পার্থক্য আছে। যেমন প্রথম প্রশ্নটির উত্তর হতে পারে আমি ভাত খাই, মাছ খাই ইত্যাদি। আর দ্বিতীয়টির উত্তর হবে হ্যাঁ, আমি খাই অথবা না, আমি খাই না। এসব ছোট ছোট নিয়ম জানা থাকলে স্কুলজীবনে শিক্ষক শেখালে আর ভুল হতো না। আজকাল আর এসব ব্যাকরণের বালাই নেই, নেই আমার ক্ষিতিশ স্যারের মতো অতিনিষ্ঠাবান শিক্ষকও। তাই তো আমরা চলছি এমন জীবন নিয়ে যেখানে ‘ভুল, সবই ভুল/এই জীবনের পাতায় পাতায় যা লেখা, সে ভুল।’
দোষ কাকে দেবো? কারিকুলামেও পরিবর্তন এসেছে। আমাদের স্কুলজীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ পাঠ ছিল বাংলায় ‘দ্রুত পঠন’ ইংরেজিতে ‘Rapid reading.’ শিক্ষক আমাদের শেখাতেন একটি জিনিস পড়তে গিয়ে কোথায় অল্প থামব, কোথায় বেশি থামব, কোথায় thrust দেবো, কোথায় স্বর নিচু করে আনব, কী গতিতে পড়তে হবে ইত্যাদি। আমি আমার চাকরিজীবনের শেষ পর্যায়ে যখন ২০০৫ সালের শুরুতে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে (NCTB) চেয়ারম্যান হিসেবে প্রশাসনিক দায়িত্বে যোগ দিলাম, তখন একপর্যায়ে জানতে পারলাম বোর্ডের সব বই থাকলেও কোনো শ্রেণীর জন্য দ্রুত পঠন বা Rapid reader নেই। আমি অবাক হলাম। বোর্ডসভায় প্রস্তাব আনলাম। সে প্রস্তাব পাস হলো। ফলে বোর্ডের দ্রুত পঠন বই চালু করলাম ২০০৬ থেকে। নাম আমি নিজেই দিলাম ‘আনন্দ পাঠ’। জানি না আজো সে বই আছে কি না। দ্রুত পঠনের কী প্রয়োজন তা বোঝা যায়, যখন দেখি টেলিভিশনের পর্দায় বা কোনো অনুষ্ঠানে কেউ একটা কিছু দেখে দেখে পড়ছেন, কিন্তু কোথায় কিভাবে উচ্চারণ হবে, কোথায় থামতে হবে দুঃখজনকভাবে বলতে হয় অনেক ক্ষেত্রেই তা সঠিক নয়। তাই সে পড়া থেকে কেউ খুব একটা কিছু বোঝেও না, উদ্ধারও করতে পারে না। শুনে মজা তো পায়ই না।
আসলে আজকাল শিক্ষার ধরনই পাল্টে যাচ্ছে। আমাদের সময় লেখাপড়া শুরু করতাম আদর্শলিপি বইটি দিয়ে। অক্ষরজ্ঞান শুরুর আগেই বা এর পাশাপাশি শিক্ষকের সাথে গলা মিলিয়ে পড়তাম- মিথ্যা বলা মহাপাপ, সদা সত্য কথা বলিবে, স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল, দশে মিলি করি কাজ হারি জিতি নাহি লাজ, দুঃখী জনে কর দয়া, যে সহে সে রহে, লোভে পাপ পাপে মৃত্যু, যেখানে দেখিবে ছাই উড়াইয়া দেখ তাই, কোথায় স্বর্গ কোথায় নরক? কে বলে তা বহুদূর? সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই, শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড প্রভৃতি।
শিশুকালে এগুলো নিয়ে শুধু কোরাস গেয়েছি, আর বড় হয়ে উপরের ক্লাসে ভাব সম্প্রসারণ করেছি। আজকাল আর কেউ এগুলো পাঠ্যবইয়ে দেখেও না, পড়েও না। কেন, জানি না। আমার প্রশ্ন এখানেই, একজন শিক্ষক হিসেবে অতৃপ্তিও এখানেই।
লেখক : সাবেক চেয়ারম্যান, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোড
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা