স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও কিশোরের কান্না!
- সৈয়দ আবদাল আহমদ
- ১১ মার্চ ২০২১, ২১:৩০
২৬ মার্চ প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। একটি দেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তির দিনটি খুবই আনন্দের এবং গৌরবের।
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আমরা শুরু করেছিলাম মহান মুক্তিযুদ্ধ। নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর সে বছর ১৬ ডিসেম্বর আমরা বিজয় ছিনিয়ে আনতে সক্ষম হই। বিশ্বের বুকে স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে বাংলাদেশ। ১৯৭২ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশ স্বাধীনতার প্রথম বার্ষিকী উদযাপন করে। রক্তে অর্জিত আমাদের সেই স্বাধীনতারই আজ ৫০ বছর পূর্তি, সুবর্ণজয়ন্তী, এর চেয়ে আনন্দের দিন আর কী হতে পারে?
স্বাধীনতা নিয়ে ইসমাইল হোসেন সিরাজীর একটি বিখ্যাত উক্তি আছে। সেই উক্তিটি হচ্ছে- ‘আলোক ব্যতীত যেমন পৃথিবী জাগে না, স্রোত ব্যতীত যেমন নদী টেকে না, স্বাধীনতা ব্যতীত তেমনি জাতি কখনো বাঁচিতে পারে না।’ দীর্ঘ দিন আমরা পরাধীন ছিলাম। ব্রিটিশের পরাধীনতার পর পাকিস্তানের পরাধীনতা। এই পরাধীনতায় কোনো রকমে আমরা বেঁচে ছিলাম, যাকে ‘বেঁচে থাকা’ বলা যায় না। তাই একদিন আমরা বাঁচার মতো বাঁচতে পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে ফেলি। নয় মাস সশস্ত্র যুদ্ধ করে স্বাধীনতার লাল সূর্য ছিনিয়ে আনি। সেই দিনটিই ২৬ মার্চ। এক গোলাপ ফোটানো দিন। লক্ষ প্রাণের দানে, এক সাগর রক্তের বিনিময়ে এসেছে এই অমূল্য দিন।
একাত্তরের রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের চিঠি নিয়ে ‘একাত্তরের চিঠি’ শিরোনামে গ্রন্থ সম্পাদনা করতে গিয়ে সাহিত্যিক রশীদ হায়দার লিখেছেন, ‘স্বাধীনতার জন্য প্রাণের আবেগ যখন দুর্দমনীয় হয়ে ওঠে, তখন পৃথিবীর যত ভয়ঙ্কর মারণাস্ত্রই ব্যবহার করা হোক না কেন, সেই আবেগের কাছে তা তুচ্ছ হয়ে যায়। তার প্রমাণ আমরা পেয়েছি আমেরিকা-ভিয়েতনাম যুদ্ধে। বিশ্ববাসী সেই প্রমাণ পুনরায় প্রত্যক্ষ করে ১৯৭১ সালে আমাদের মুক্তিযুদ্ধে।’
সত্যিই সেদিন স্বাধীনতার জন্য আমাদের প্রাণের আবেগ দুর্দমনীয় হয়ে উঠেছিল। তাই রক্ত ঝরাতে আমরা পিছপা হইনি। আর রক্ত দিয়েই আমরা লিখেছি বাংলাদেশের নাম। তাই বাঙালি জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় একাত্তর, শ্রেষ্ঠ ঘটনা মুক্তিযুদ্ধ আর শ্রেষ্ঠ অর্জন স্বাধীনতা।
স্বাধীনতার চেয়ে প্রিয় কোনো শব্দ নেই। এ শব্দটির উচ্চারণে শরীরে আনন্দের শিহরণ বয়ে যায়। এই আনন্দ একেকজনের কাছে একেক রকম। কেউ স্বাধীনতা উপভোগ করে গলা ছেড়ে মুক্তির গান গেয়ে। কেউ ভরদুপুরে শানবাঁধানো ঘাটে পা ভিজিয়ে কবিতা পড়ে। কেউ এক পশলা বৃষ্টিতে ভিজে স্বাধীনতার স্বাদ গ্রহণ করে। স্বাধীনতা মানে মুক্তি। স্বাধীনতা মানে লাল সবুজের পতাকা হাতে দুরন্ত গতিতে কিশোরের ছুটে চলা। স্বাধীনতা মানে কবি শামসুর রাহমানের ‘স্বাধীনতা তুমি’ কবিতার শব্দের ঘুঙুর।
মনীষীদের দৃষ্টিতে স্বাধীনতা
দার্শনিক প্লেটো বলেছেন, ‘স্বাধীনতা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের গৌরব। একমাত্র গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রেই স্বাধীন মানুষেরা বসবাস করতে ভালোবাসে।’ এ সম্পর্কে রুশোর উক্তি হচ্ছে, ‘যে দেশে গণতন্ত্র নেই, সে দেশে ‘স্বাধীনতা নেই।’ শিলার বলেছেন, ‘স্বাধীনতা যেখানে সীমাহীন, আনন্দও সেখানে সীমাহীন।’ জর্জ বার্নার্ডশ-এর মত হচ্ছে, ‘স্বাধীনতার অর্থই দায়িত্ব।’ বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা তার ‘লং ওয়াক টু ফ্রিডম’ বইয়ে লিখেছেন, ‘স্বাধীনভাবে কথা বলতে না পারা পরাধীনতারই শামিল। স্বাধীনতার সুউচ্চ পাহাড়ের চূড়ায় ওঠার জন্য আমাকে দীর্ঘপথ পাড়ি দিতে হয়েছে। অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আমি স্বাধীনতার পাহাড়ে আরোহণ করেছি। পাহাড়ে উঠে দেখতে পেলাম আশপাশে আরো অনেক পাহাড় আছে। সেগুলোতেও উঠতে হবে আমাকে। আমি এখন যে পাহাড়ে আছি সেটা একটু বিশ্রাম নেয়ার জায়গা মাত্র। আমাকে ছুটতে হবে অনেক দূরে। এ পথে আসবে অনেক বাধা-বিপত্তি। তবুও আমাকে ছুটতে হবে। বিশ্রাম নেয়ার কোনো অবকাশ নেই।’
বাংলাদেশের অর্জন কতটুকু?
স্বাধীনতার ৫০ বছরের পূর্তিকালে আমরা মনীষীদের এই উক্তিগুলো যদি পর্যালোচনা করি তাহলে কী দেখতে পাই? বাংলাদেশে সত্যিকারের স্বাধীনতা কি আমরা ভোগ করতে পারছি? নাগরিকরা কতটা স্বাধীন? গণতন্ত্র ও মতপ্রকাশের অবস্থানের দিক থেকে বাংলাদেশের স্থান কোথায়? ন্যায়বিচার ও মানবাধিকারের দৃষ্টান্ত এখানে কি আছে?
এগুলোর উত্তর খুঁজতে গেলে হতাশই হতে হবে। তবে এটা ঠিক, গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের অর্জন কম নয়। এ সময়ে দেশের যে উন্নয়ন হয়েছে তাকে কোনোভাবেই খাটো করে দেখা যায় না। বিশেষ করে সামাজিক খাতের উন্নয়ন বিশ্বে উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। এই সেদিন, জাতিসঙ্ঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন নীতি সংক্রান্ত কমিটি (সিডিপি) এলডিসি থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের যোগ্যতা অর্জনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে। অর্থাৎ বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় উন্নীত হয়েছে। অবশ্য অর্থনীতিবিদ ড. ওয়াহিদ উদ্দীন মাহমুদ বলেছেন, এর অর্থ নতুন করে আমরা উন্নয়নশীল দেশ হতে যাচ্ছি না। এলডিসি হলো উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যেই কিছু দেশের গ্রুপ (উপ-গ্রুপ), যারা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) অধীনে কিছু সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার জন্য সুনির্দিষ্ট তিনটি সূচকের অনগ্রসরতা নিয়ে চিহ্নিত হয়।
আমরা সেই সূচকের শর্তগুলো পূরণ করে উন্নয়নশীল দেশের সেই উপ-গ্রুপ থেকে বেরিয়ে যাচ্ছি এবং এলডিসির সুবিধাগুলো এরপর থেকে আর পাবো না। থিংকট্যাংক সিপিডি বলেছে, এলডিসি তালিকা থেকে বের হওয়ায় বাংলাদেশে চার ধরনের প্রভাব পড়বে। শুল্কমুক্ত বাজারসুবিধা হারাবে, বিভিন্ন দেশের সাথে বাণিজ্য ইস্যুগুলো কঠিন হবে, দেশের ভেতরে ব্যবসা-বাণিজ্যে অবাধ নীতির স্বাধীনতা হ্রাস পাবে এবং আইন কানুন প্রতিপালনের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হবে।
ক্ষুদ্র একটি উন্নয়নশীল দেশ হয়েও ইতোমধ্যে বিশ্বের নিকট প্রাকৃতিক দুর্যোগের নিবিড় সমন্বিত ব্যবস্থাপনা, ক্ষুদ্র ঋণের ব্যবহার এবং দারিদ্র্য দূরীকরণে বাংলাদেশের ভূমিকা রয়েছে। জাতিসঙ্ঘ সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার আটটি লক্ষ্যের মধ্যে শিক্ষা, শিশুমৃত্যু কমানো এবং দারিদ্র্য হ্রাসকরণের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে দেশটি। নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের মতে, কিছু ক্ষেত্রে বিশ্বকে চমকে দেয়ার মতো সাফল্য আছে বাংলাদেশের। যেমন শিক্ষাসুবিধা, নারীর ক্ষমতায়ন, মাতৃ ও শিশু মৃত্যুহার এবং জন্মহার কমানো, গরিব মানুষের জন্য শৌচাগার ও স্বাস্থ্যসুবিধা প্রদান এবং শিশুদের টিকাদানকার্যক্রম। কৃষিক্ষেত্রে ধানের বাম্পার ফলন, মৎস্য চাষ এবং যোগাযোগের ক্ষেত্রে সড়ক সেতু কালভার্ট নির্মাণেও বাংলাদেশের উন্নতি লক্ষণীয়।
তবে প্লেটোর ভাষায় স্বাধীনতা যে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের গৌরব, সেই ‘গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র’ আজও হয়ে উঠতে পারেনি বাংলাদেশ। গণতন্ত্রের ধারণাকে আমরা ধূলিসাৎ করে দিয়েছি। এর স্থান দখল করেছে কর্তৃত্ববাদ। সুশাসন এখানে নির্বাসিত। বিচারের বাণী এখানে নীরবে নিভৃতে কাঁদছে। মিডিয়ার মতে, বিচারব্যবস্থা ভেঙে পড়ার দ্বারপ্রান্তে। নামমাত্র নির্বাচন হলেও নির্বাচনীব্যবস্থা একেবারেই ভেঙে পড়েছে। বিনা ভোটে নির্বাচন হয়, দিনের ভোট আগের রাতেই হয়ে যায়। সংসদ থাকলেও সেখানে চলে একটিমাত্র দলেরই ‘কেচ্ছাকাহিনী’। ওই দলের নির্দেশেই চলে ‘গৃহপালিত বিরোধী দল’।
হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির সাউথ এশিয়া ইনস্টিটিউট ও মিত্তাল ফাউন্ডেশনের আয়োজনে ‘পঞ্চাশ বছরে বাংলাদেশ : ফিরে দেখা ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক এক অনলাইন আলোচনা অনুষ্ঠিত হয় গত বৃহস্পতিবার। এতে অংশ নিয়ে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর চললেও বাংলাদেশে এখনো কার্যকর নির্বাচনব্যবস্থা তৈরি করা যায়নি। ২০০৮ সালের পর যেসব নির্বাচন হয়েছে সেগুলো ‘নন-ইলেকশন’ বলা যায়। একইভাবে বাংলাদেশে সংসদও অকার্যকর। সেখানে কারো জবাবদিহির ব্যাপার নেই। রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়া অভিজাত শ্রেণী ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে পরিশোধ না করার রীতি চালু করেছে। অধ্যাপক রওনাক জাহান বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো কালো আইন দিয়ে সংবাদমাধ্যমকে শৃঙ্খলিত এবং মতপ্রকাশকে বাধা প্রদান করার ঘটনা উদ্বেগজনক।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ফ্রিডম সংস্থা ২০২১ সালের তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, রাজনৈতিক অধিকার ও নাগরিক স্বাধীনতা একদমই কম বাংলাদেশে। রিপোর্টে বলা হয়, বিশ্বের ২১০টি দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে আংশিক স্বাধীন দেশগুলোর মধ্যে তলানিতে বাংলাদেশ। এর আগে গত ৩ ফেব্রুয়ারি ইকোনমিক ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের গণতন্ত্রের সূচকে বাংলাদেশকে ‘হাইব্রিড রেজিম’ দেশের তালিকায় স্থান দেয়া হয়। অর্থাৎ বাংলাদেশে কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থা রয়েছে। গত ২৮ জানুয়ারি ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের বার্ষিক রিপোর্টে বলা হয়, দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশের আরো অবনতি হয়েছে। এ ছাড়া ক্ষমতার অপব্যবহার, বিচারহীনতা, মতপ্রকাশ ও জবাবদিহিতার অভাবকেও বর্তমান অবস্থার অন্যতম কারণ বলে উল্লেখ করেছেন তারা।
বিনা বিচারে হত্যা, গুম, রিমান্ডের নামে নির্যাতন এবং ধর্ষণের মতো ঘটনাও বাংলাদেশের ইমেজকে দারুণ ক্ষুণ্ন করছে। ৩ মার্চ হাইকোর্টে পুলিশপ্রধান আইজিপির পক্ষে দেয়া রিপোর্টে বলা হয়, গত পাঁচ বছরে (২০১৬-২০২০) শুধু বিভিন্ন থানাতেই ২৬ হাজার ৬৯৫টি ধর্ষণের ঘটনায় মামলা হয়েছে।
কার্টুনিস্ট কিশোরের কান্না!
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় ১০ মাস আগে গ্রেফতার হয়েছিলেন লেখক মুশতাক আহমেদ। জীবন নিয়ে তিনি আর ঘরে ফিরতে পারেননি। বিনা বিচারে অন্ধকার কারাগারে ছিলেন। বন্দী অবস্থায়ই তাকে মৃত্যুবরণ করতে হয়। কারাগারে তার মৃত্যুর কারণ ‘নির্মম নির্যাতন’ বলেও অভিযোগ রয়েছে।
কারাগার থেকে বেঁচে ফিরেছেন কার্টুনিস্ট কিশোর। জামিনে তিনি বৃহস্পতিবার মুক্ত হয়েছেন। কিন্তু তার জীবনটা এখন আর স্বাভাবিক নেই। গত বছরের ২ মে বাসা থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোরকে তুলে নেয়। অভিযোগ মতে, এরপর অজ্ঞাত স্থানে ৬৯ ঘণ্টা রেখে কার্টুন নিয়ে প্রশ্ন ও নির্যাতন চালানো হয় তার ওপর। কারাগারে নির্যাতনের কথা বর্ণনা করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন কিশোর। আইনজীবীর চেম্বারে সাংবাদিক শেখ সাবিহা আলম তাকে প্রশ্ন করেছিলেন, কেমন আছেন? কিশোর কান দেখিয়ে বলেন, দেখুন, পুঁজ পড়ছে। দেখান কালশিটে পড়া দুই পা। এর আগে আইনজীবীর কক্ষে ঢোকেন খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। মুশতাক আহমেদের কথা তুললে ফুঁপিয়ে কাঁদছিলেন। জানা যায়, স্বাধীন দেশে কিশোর নামের একজন যুবকের কার্টুন আঁকাই ছিল অপরাধ। স্বাধীনতার ৫০ বছরে দেশ থেকে তার এটাই কি ছিল পাওয়া?
লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা