২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

‘ভ্যাকসিন ডিভাইড’

‘ভ্যাকসিন ডিভাইড’ - ছবি : সংগৃহীত

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও অক্সফাম ধনী দেশগুলোর অর্থের জোরে বিপুল ভ্যাকসিন মজুদ করার সমালোচনা করছে। সংস্থা দুটো হিসাব করে দেখেছে, ৭০টি গরিব দেশের প্রতি ১০ জন মানুষের মধ্যে একজনের জন্য তারা চলতি বছর ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা করতে হিমশিম খাবে। অন্য দিকে কিছু ধনী দেশ ভ্যাকসিন প্রয়োজনের অতিরিক্ত ডোজ মজুদ করার নীতি গ্রহণ করেছে। ওই দুই সংস্থা এক বার্তায় বলেছে, ধনী দেশগুলোর এমন দৌড়ঝাঁপ প্রত্যেকটি মানুষের ভ্যাকসিন পাওয়ার বৈশ্বিক প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করবে।

ওই বার্তায় তারা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে, ধনী দেশগুলোর মানবাধিকারের দৃষ্টিকোণ থেকে বাধ্যবাধকতা রয়েছে। প্রতিটি মানুষের কাছে অবাধে ভ্যাকসিন পৌঁছার ক্ষেত্রে বাধা তৈরি হয়, তারা এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবে না। বরং তাদের এমন প্রতিশ্রুতি রয়েছে যে, তারা ভ্যাকসিন পাওয়ার কাজটির জন্য সহযোগিতা ও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে গরিব দেশগুলোর প্রতি। বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, তারা শুধু নিজেদের বাঁচার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছে। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী টিকা সরবরাহ করতে না পারায় ধনী দেশগুলো ইতোমধ্যে টিকা উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোর প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেছে।

যুক্তরাজ্যে ডিসেম্বরের শুরুতে সাধারণ মানুষ ভ্যাকসিন পেয়েছে। তারা প্রথমেই বৃদ্ধাশ্রমগুলোতে তা সরবরাহ করেছে। ৮০ বছরের বৃদ্ধ সামনের সারির স্বাস্থ্যকর্মী ও সামাজিক সেবাদানকারীদের টিকা দিয়ে নিজেদের দেশের মানুষের সর্বোচ্চ কল্যাণ করার চেষ্টা করেছে তারা। সব ক’টি ধনী দেশে একই ধরনের টিকাদান প্রক্রিয়া চলছে। অন্য দিকে বিশ্বের গরিব মানুষের প্রতি কোনো দায় তারা বোধ করছে না।
যুক্তরাজ্য ফাইজার থেকে এ বছরের জন্য চার কোটি ডোজ টিকা কিনেছে কোভিডের। চলতি বছরে ওই দেশের দুই কোটি মানুষ এ টিকা পাবে। ভাইরাস সংক্রমণ থামিয়ে দেয়ার জন্য সবার টিকা নেয়ার প্রয়োজন নেই। যাদের এ ভাইরাসে কাবু হওয়ার আশঙ্কা বেশি, তারা এটি গ্রহণ করলে বাকি সবাই নিরাপদ হয়ে যাবে। বিশেষজ্ঞরা এমনই বলছেন। যুক্তরাজ্যের জনসংখ্যা ২০২০ সালে ছয় কোটি ৮০ লাখ। এই দুই কোটি টিকা তাদের জন্য যথেষ্ট হতে পারত। কিন্তু দেখা গেল, দেশটি অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও মডার্না থেকেও টিকার অগ্রিম অর্ডার দিয়ে রেখেছে।

জানা যাচ্ছে, যুক্তরাজ্য সব মিলিয়ে ৩৫ কোটি ৭০ লাখ ডোজ টিকার ক্রয়াদেশ দিয়েছে। এগুলো দিয়ে প্রায় ১৮ কোটি মানুষ একবার করে টিকা নিতে পারবে; অর্থাৎ দেশের জনসংখ্যার প্রায় তিন গুণ টিকার অগ্রিম আয়োজন তারা করে রেখেছেন। এভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ১০৩ কোটি ডোজ করোনার টিকা প্রাপ্তি নিশ্চিত করেছে। এই টিকা দিয়ে ইইউর দেশগুলোর প্রত্যেককে দু’বার করে টিকা দেয়ার পরও ১৩ কোটি টিকা বেঁচে যাবে। এসব দেশে জনসংখ্যা ৪৫ কোটির কম। এখানেই শেষ নয়। তারা টিকা উৎপাদনকারীদের কাছ থেকে আরো ৬৬ কোটি ডোজ টিকা পাওয়ার প্রতিশ্রুতি আদায় করে রেখেছেন।

একজন মানুষের বিপরীতে ধনী দেশগুলো কেন দু- তিনটি করে টিকা সংগ্রহ করছে? এ প্রশ্নটি জাগ্রত হওয়া স্বাভাবিক। এ টিকার কার্যকারিতা নিয়ে নানা ধরনের প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কোনো একটি টিকা বেশি কার্যকর, কোনোটি কম। আবার টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথাও সামনে এসেছে। পাশ্চাত্যের একটি দেশে ফাইজারের টিকার প্রয়োগের পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা জানা যায়। সেখানে ২১ জন মানুষ মারা গেছেন বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য দেশেও বিভিন্ন টিকার প্রয়োগের পর নানা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। সম্ভবত ধনী দেশগুলো সব টিকার নিরাপদ কার্যকারিতা দেখবে। যে টিকাটি সবচেয়ে কার্যকর এবং নিরাপদ সেটি নিজেদের দেশের মানুষের মধ্যে প্রয়োগ করবে। এ কারণেই প্রতিটি বিকল্প উৎস থেকে প্রয়োজনের চেয়ে কয়েক গুণ টিকা তারা সংগ্রহ করে রাখছেন।

অক্সফাম জানিয়েছে, টিকা উৎপাদনকারী পাঁচটি ওষুধ কোম্পানির সামর্থ্য নেই যে, তারা বিশ্বের সব মানুষের জন্য একটি করে টিকা দিতে পারবেন। সংস্থাটি হিসাব করে দেখেছে, এ পাঁচটি কোম্পানির ৫৯৪ কোটি ডোজ টিকা উৎপাদন করার সক্ষমতা রয়েছে, যা দিয়ে ২৯৭ কোটি মানুষ টিকা পেতে পারেন। এগুলো যদি প্রয়োজনের নিরিখে সমভাবে বণ্টিত হতো তা হলে, তাদের মতে, পুরো বিশ্ব নিরাপদ হয়ে যেত। বাস্তবে পাঁচটি কোম্পানি ৫৩০ কোটি ডোজ টিকা সরবরাহে চুক্তি করেছে। এর মধ্যে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, হংকং, জাপান, স্ইুজারল্যান্ড, ইসরাইল ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন কিনে নিয়েছে ২৭২ কোটি ৮০ লাখ টিকা যা মোট উৎপাদনের ৫১ শতাংশ। অথচ এসব দেশে মাত্র ১৩ শতাংশ মানুষ বসবাস করে। অক্সফাম সতর্ক করেছে, ধনীদের এই টিকা উন্মাদনার জন্য বিশ্বের ৬১ শতাংশ মানুষই ২০২২ সাল পর্যন্ত কোনো টিকা পেতে সক্ষম হবে না।

টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো অতিরিক্ত অর্থ কামানোর মোহ পরিত্যাগ করলে তারা সারা বিশ্বের সব মানুষের জন্য করোনার টিকার ব্যবস্থা করে দিতে সহজে সক্ষম হতেন। তবে এ জন্য মানুষকে তাদের নিছক ক্রেতা (কাস্টমার) হিসেবে বিবেচনার হীন মানসিকতা পরিবর্তন করতে হতো। তারা যদি টিকা উৎপাদন, বিতরণ ও সংরক্ষণ সম্পর্কিত জ্ঞান কুক্ষিগত করে না রেখে সবার জন্য উন্মুক্ত করে দিয়ে ব্যাপকভাবে টিকার উৎপাদনের জন্য অনুমতি দিয়ে দেন তা হলে সবার কাছে সহজে স্বল্পসময়ে টিকা পৌঁছানো সম্ভব। সারা বিশ্বের সব মানুষের কাছে টিকাটি পৌঁছে দেয়ার জন্য অনেকে কাজ করছেন। তারা বলছেন, ওষুধ কোম্পানিগুলো উদারতা দেখালে এটি সহজে সম্ভব। কিন্তু ওষুধ কোম্পানিগুলো উল্টো টিকার দরদাম করছে। অনেকটা দরদাম করে যেখানে যত দামে পারছেন, তারা বিক্রি করছেন। একচেটিয়া বাজারের কারণে তাদের এখন সবচেয়ে রমরমা অবস্থা। অন্য দিকে টিকার বিনিময়ে রাজনৈতিক প্রভাব অর্জন করার অভিযোগ উঠেছে চীনের বিরুদ্ধে। এ পর্যন্ত বিশ্বে ২০ লাখ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছে। আরো কত মানুষ এতে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ দেবেন তা নিশ্চিত করে কেউ জানেন না। এর মধ্যেই টিকা নিয়ে বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড পুরোদমে চলছে।

ধনী দেশগুলোকে টিকা উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোর চেয়ে কিছুটা বেশি মানবিক দেখা যাচ্ছে। তবে এই মানবিকতা খণ্ডিত। তারা কেবল নিজেদের দেশের মানুষকে বাঁচাতে তৎপর। এমনকি নিজেদের দেশের বৃদ্ধ রোগাক্রান্ত মানুষের প্রতি তাদের বাড়তি দরদও পরিলক্ষিত হচ্ছে। টিকা সংগ্রহে তাদের আগ্রাসী তৎপরতার কেন্দ্রে রয়েছে তাদের জনগণ। জাতীয়তাবাদী দৃষ্টিকোণ থেকে এটি অভিনন্দন পেতে পারে। তবে মানবিকতার দৃষ্টিকোণ থেকে এটি সঙ্কীর্ণ মানসিকতা। তার পরও অনেক কর্তৃত্ববাদী স্বৈরাচারীর চেয়ে এসব ধনী দেশের সরকারকে ‘ভালো’ বলতে হবে। কর্তৃত্ববাদী সরকারগুলো নিজেদের ক্ষমতাকে নিরঙ্কুশ করার কাজে টিকাকে ব্যবহার করেছে। টিকা সংগ্রহ অভিযানকেও তারা কাজে লাগিয়েছে নিজেদের এবং নিজেদের শুভাকাক্সক্ষীদের অর্থ কামানোর একটা হাতিয়ার হিসেবে।

বিশ্ব মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রক্ষেপিত হিসাবে দেখা যাচ্ছে, ২০২০ সালের জুন থেকে পরবর্তী এক বছরে কোভিড-১৯ এর জন্য বিশ্ব অর্থনীতির ক্ষতি হচ্ছে ১২ ট্রিলিয়ন ডলার। অক্সফাম হিসাব করে দেখেছে একটি টিকা সংগ্রহ করে একজন মানুষের কাছে পৌঁছানো পর্যন্ত কত খরচ হয়। তাদের হিসাবে মাত্র ৭০০ কোটি ডলার খরচে পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের কাছে করোনার টিকা পৌঁছে দেয়া সম্ভব। এ খরচটি কোভিড-১৯ দ্বারা ক্ষতি হওয়া বিশ্ব অর্থনীতির ওই এক বছরের চেয়ে মাত্র দশমিক ৫৯ শতাংশ; অর্থাৎ মহামারীর ক্ষতির চেয়ে এই খরচ ১ শতাংশও নয়। অক্সফামের মতে, এই পরিমাণ অর্থ খরচ করে তারা বিশ্ব মানবতাকে নিরাপদ করতে পারতেন। যার মাধ্যমে তাদের অর্থনীতিও বাঁচতে পারত। তার পরও সে ধরেনের কিছু করার জন্য কেউ এগিয়ে আসেননি। মানুষের স্বার্থপরতা ও আত্মকেন্দ্রিকতার চূড়ান্ত নজির প্রদর্শিত হচ্ছে। কোভিড-১৯ মানুষ চেনার এক আজব ভাইরাস।

কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক বিস্তারের পর দেখা গেল, ধনী ও গরিবের মধ্যে বিস্তর ফারাক হয়ে যাচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তি যতই পৃথিবীকে গ্রাস করে নিচ্ছে এ ফারাক ততই বাড়ছে। এ ধরনের একটি প্রেক্ষাপটে বিশেষজ্ঞরা এ বৈষম্যের নাম দিলেন ‘ডিজিটাল ডিভাইড’। এ নিয়ে অনেক গবেষণা আলোচনা সমালোচনা হয়েছে। করোনা মোকাবেলায় ধনীদের একচেটিয়া বেঁচে থাকার চেষ্টায় অতিরিক্ত যোগ্যতা অর্জন এবং অন্য দিকে গরিবদের পিছিয়ে পড়ে দুস্থ হয়ে যাওয়াকে কেউ এখনো ‘ভ্যাকসিন ডিভাইড’ নামে চিহ্নিত করছেন না।

বাংলাদেশের ভরসা ভারত
করোনার টিকা নিয়ে অন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারের মতো আমরা ভারতের ওপর নির্ভর করেছি। কারণ ভারত আমাদের ‘জোরালো আশ্বাস’ দিয়েছে। যেমন তারা আমাদের প্রায় সময়ে অত্যন্ত জোরালো আশ্বাস দিয়ে থাকেন। ওই সব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারে ভারতের প্রতি আস্থা রাখার মর্যদা বা সুফল এখনো আমরা পাইনি। তার পরও আমাদের সরকার তাদের ওপর আস্থা রেখেছে। এ ধরনের আস্থা রাখার বহুমাত্রিক নেতিবাচক প্রভাব এ দেশের শাসকরা ভেবে দেখতে চান না।

অর্থ ও ক্ষমতার জোরে ধনী দেশগুলোর অল্প কিছু মানুষ অর্ধেকের বেশি টিকা অগ্রিম কিনে নিয়েছেন। যে পিরিয়ডে সবাই মূল উৎস থেকে টিকা কেনার তৎপরতা চালিয়েছে, তখন আমরা সেকেন্ডারি সোর্সসহ ভারত থেকে টিকা পাওয়ার আশ্বাসে সন্তুষ্ট হয়ে বসে থেকেছি। কারণ তারা বলেছেন, আমাদের দুই দেশের বন্ধুত্ব এতটাই বেশি যে, আমরা একসাথে টিকা নেবো। এক ভাই পেলে অন্য ভাইও টিকা পাবে। ভারতের করোনা পরিস্থিতি ও তাদের সামর্থ্যরে ব্যাপারটা আমরা মূল্যায়ন করতে পারলাম না। দেশটি করোনার আক্রান্তের ক্ষেত্রে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক দুস্থ দেশ। এই উপমহাদেশের দেশগুলোর চেয়ে ভারত করোনা ব্যবস্থাপনায় অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। করোনা ব্যবস্থাপনায় প্রতিবেশী পাকিস্তান ও বাংলাদেশের চেয়েও তারা পিছিয়ে। দেশটিতে এ পর্যন্ত করোনায় দেড় লাখের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।

গরিব দেশটির ১৪০ কোটি মানুষ কখন টিকা পাবেন, তার নিশ্চয়তা নেই। টিকা পাওয়া নিয়ে ভারত সরকার নিজ দেশে নানা রাজনীতি করেছে। বিজেপি সরকার এটিকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার চেষ্টায় রয়েছে। এ ধরনের একটি দেশের কাছ থেকে আমরা পর্যাপ্ত টিকা পাবো এমন হাওয়াই প্রতিশ্রুতির ওপর আশ্বস্ত থাকা বোকামি ছিল, না আমরা ভারতের প্রতি আমাদের ‘আলগা’ বন্ধুত্বের ভাব দেখাচ্ছি, সেটি বিশেষজ্ঞরা ভেবে দেখতে পারেন।

১৬ জানুয়ারি পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ভারতে টিকা কর্মসূচি সূচনা করেছেন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বাংলাদেশের প্রতি মোদি সরকারের প্রতিশ্রুতি যে ছিল অন্যান্য প্রতিশ্রুতির মতোই ভিত্তিহীন, তা আর উল্লেখের প্রয়োজন পড়ে না। ভারতে তিন হাজার ছয়টি কেন্দ্রে একযোগে টিকা দান শুরু হয়েছে। প্রথম ধাপে স্বাস্থ্যকর্মী ও বিভিন্ন জরুরি পরিষেবার সাথে জড়িত তিন কোটি মানুষ বিনামূল্যে টিকা পাবেন। এর পরের ধাপে ২৭ কোটি মানুষ টিকা পাবেন। উন্নত দেশগুলো যেভাবে টিকার বিলিবণ্টনের নিয়ম স্থির করেছে দরিদ্র ভারতও সেটা অনুসরণ করছে। ওই সব দেশের মতো ভারত সরকারও তার জনগণের প্রতি আন্তরিকতা প্রদর্শনের চেষ্টা করছে।

করোনার একেবারে শুরুর দিকে মোদি প্রতিবেশীদের নিয়ে করোনা প্রতিরোধে ডিজিটাল সম্মেলনের আয়োজন করেছিলেন। তখন থেকে তিনি তার ‘প্রতিবেশী প্রথম’ নীতির আলোকে আশপাশের দেশগুলোকে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দেয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। এ জন্য একটি তহবিল গড়ার কথা বলেছিলেন। ওই তহবিলের শেষ পর্যন্ত কী হলো, জানা যায়নি। তবে প্রতিবেশীদের মধ্যে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্কটির ব্যাপারে মোদি সবসময় আলাদাভাবে উল্লেখ করেন। তিনি দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বের এ নিদর্শনটিকে সারা বিশ্বের জন্য ‘অনুকরণীয়’ বলেও দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চান। কাজের ক্ষেত্রে যখন এমন প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন দেখা যায় না, তখনো ১৪০ কোটি মানুষের দেশ ভারতের মর্যাদাহানি হয়, সেটি উপলব্ধি করার চেষ্টা ভারতের শাসকশ্রেণী করে না। তাদের ভাষায় ‘ভাই’ হয়েও ভারতের সাথে একসাথে কেন টিকা পায়নি বাংলাদেশ?

jjshim146@yahoo.com


আরো সংবাদ



premium cement