পশ্চিমা সমাজের সভ্যতাগত সঙ্কট
- প্রফেসর ড. এম এ মান্নান
- ০৮ জানুয়ারি ২০২১, ২০:৫৪
পাকিস্তান প্লানিং কমিশনে কাজ করার সময় ১৯৭০ সালের শেষ দিকে আমি পিএইচডি করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাই এবং মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হই। বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে আমরা বাংলাদেশীরা মিলে ডিফেন্স লিগ গঠন করি এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠন করতে থাকি। ডিফেন্স লিগের কাজের একটি অংশ ছিল পাকিস্তান সরকারের কর্মকর্তাদের পক্ষ ত্যাগে রাজি করানো। তখন মুহিত সাহেব (সাবেক অর্থমন্ত্রী) ওয়াশিংটনে পাকিস্তান দূতাবাসে কাউন্সিলর ছিলেন।
আমরা ডিফেন্স লিগের সদস্যরা মিলে তাকে পক্ষ ত্যাগে রাজি করাই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরীর পক্ষ ত্যাগের পেছনেও ডিফেন্স লিগের সদস্যদের অবদান ছিল। তখন ইসলামাবাদ থেকে আমাকে দেশে ফিরে আসার নির্দেশ দেয়া হয়। আমি অস্বীকার করলে কেন্দ্রীয় (পাকিস্তান) সরকার আমার নাগরিকত্বের স্বীকৃতি বাতিল করে দেয়। ফলে আমার পাসপোর্ট অকার্যকর হয়ে যায়। আমি রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়ি। ১৯৭১ সালের শেষ থেকে ১৯৭৩ সালের শেষ পর্যন্ত দুই বছরের বেশি সময় আমাকে রাষ্ট্রহীন থাকতে হয়েছে।
আমার পিএইচডির ইউএসএআইডি ফেলোশিপও বাতিল হয়ে যায়। আমাকে বলা হয়, পাকিস্তান সরকার অনুমোদন দিলেই কেবল আমার ফেলোশিপ অব্যাহত থাকবে। তখন বিদেশ-বিভুঁইয়ে আমার জন্য এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি হয়। পরিবার আমার সাথে। এর আগে সরকারি চাকরির বেতন, ফেলোশিপ ও অন্যান্য ভাতা মিলিয়ে মাসে ৯০০-১০০০ ডলার পেতাম। এই আয় রাতারাতি শূন্যে এসে যায়। অবস্থা এমন হয় যে মেয়ের জন্য ৬ ডলার দিয়ে বার্বি ডল কেনার ক্ষমতাও আমার ছিল না। এই দুর্দিনে মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটিতে আমার পিএইচডি কোর্সের শিক্ষকরা আমার প্রতি সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। তারা স্টেট ডিপার্টমেন্টে সুপারিশ করেন, সে ভালো ছাত্র তার ফেলোশিপ কনটিনিউ করা হোক। কিন্তু জবাবে বলা হলো, তার হোম কান্ট্রি যদি অনুমোদন করে তাহলে এটি করা যাবে। কিন্তু হোম কান্ট্রি তা করেনি। আমি সবেমাত্র মাস্টার্স কোর্স শেষ করেছি। তখন শিক্ষকরা আমাকে কমিউনিটি কলেজে পড়ানোর ব্যবস্থা করে দিলেন। কাজটি আমার বেঁচে থাকার অবলম্বনই শুধু হয়নি, একই সাথে আমেরিকান সমাজের একেবারে ভেতরের কিছু ঘটনা দেখার সুযোগ আমার হয়েছিল।
কমিউনিটি কলেজ আসলে ইন্টারমিডিয়েট কলেজ। যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারে না বা সামর্থ্য নেই, তারা এখানে পড়তে আসেন। তারা মেধার দিক দিয়ে মাঝারি বা নিম্নগোছের। শ্রমিক পরিবারগুলো থেকে আসা। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মূলত এই শ্রেণীর সমর্থন বেশি পাচ্ছেন। আমেরিকার অনেক রাজ্য শিল্পরাজ্য হিসেবে পরিচিত। সেখানে বিশাল বিশাল শিল্প কমপ্লেক্স রয়েছে। এই শিল্প শ্রমিকরা প্রধানত হোয়াইট। অদ্ভুত এদের জীবনযাপন। কারখানায় কাজ করেন, আর ফাস্টফুড খান। বিশাল দেহী, অন্য কোনো ভাবনা তাদের কম। সুস্বাস্থ্যের বালাই নেই। আমাদের দেশের যারা গার্মেন্টে বা কৃষি খামারে কাজ করেন তারা এই শ্রেণীর আমেরিকানদের তুলনায় অনেক বেশি সুস্বাস্থ্যের অধিকারী।
আমি পার্টটাইম টিচার, ঘণ্টায় ১২ ডলার পাই। এটি বেশ ভালো পরিমাণ বলতে হবে। কারণ তখন আমেরিকায় ন্যূনতম মজুরি ছিল চার ডলার। মাসে ৭-৮টি লেকচার থাকত। তাতে যা পেতাম তা দিয়ে আমার কোনো মতে চলে যেত। একদিন আমি কলেজের অফিসে গিয়েছি। ক্লাসে যাবো বলে অপেক্ষা করছি। আমার কাছে এক ছাত্র আসে। এসেই হাউমাউ করে কান্নায় ভেঙে পড়ে। আমি ভয় পেয়ে যাই। কোনো শ্বেতাঙ্গকে কখনো এভাবে কাঁদতে দেখিনি। আমার ভয় পাওয়ার কারণ ছিল ভিন্ন। আমি ভেবেছি আমার কোনো দোষ হয়েছে কি না, যদি হয় তাহলে আমার চাকরি থাকবে কি না। ভাবলাম, নিশ্চই এমন কিছু করেছি; যে কারণে ওর মনে আঘাত লেগেছে। প্রিন্সিপালের কাছে রিপোর্ট গেলেই তো চাকরি শেষ। তাই ভয়ে ভয়ে তাকে জিজ্ঞেস করি কী হয়েছে, কাঁদছো কেন। ‘আমি কি তোমার সাথে দুর্ব্যবহার করেছি? কোনো কটু কথা বলেছি? কাঁদছো কেন, কী সমস্যা। তুমি বসো।’ উত্তরে সে বলে, ‘না তেমন কিছু নয়, আপনি আমার পছন্দের টিচার। আই লাইক ইউ, লাভ ইউ’। তার কথায় কিছুটা আশ্বস্ত হয়ে জিজ্ঞেস করি, তাহলে কী হয়েছে? সে যা বলল তার সারমর্ম হলো, তার বয়স যখন ১৬ বছর; তখন তার বাবা-মা আলাদা হয়ে যায়।
গত পাঁচ বছর ধরে তার সাথে বাবা-মায়ের কোনো যোগাযোগ নেই। সে কমিউনিটি কলেজ থেকে বৃত্তি পেয়েছে। সেই টাকা দিয়ে পড়াশোনা করে। তবে তার বৃত্তি ধরে রাখার শর্ত হলো তাকে ন্যূনতম ‘এ’ গ্রেড পেতে হবে। সে জানালো যে, অন্য সব বিষয়ে ‘এ’ জোগাড় করতে পারলেও আমি তাকে ‘আই’ মার্ক দিয়েছি। এর মানে হলো সে ফেল করেছে বা পরীক্ষা দেয়নি। এই ‘আই’ মার্ক যদি অফিসে যায় তাহলে তার বৃত্তি বন্ধ হয়ে যাবে। তখন আমি বলি, ‘তোমার জন্য কী করতে পারি। তুমি পরীক্ষা দাওনি, আসনি, আমি কী লিখতে পারি বলো?’ প্রথমে সে বলতে চায়নি। পরে সে জানায় যে, ও অড জব করে। গত ছয় বছর ধরে নিজে কামাই করে চলছে। পড়াশোনার খরচও জোগাড় করছে। বাবা-মা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে বলে, তারা সবসময় ঝগড়া করত, মারামারি করত। পরে তারা আলাদা হয়ে যান। এখন কারো সাথে তার যোগাযোগ নেই। আমেরিকান সমাজে এ ছেলের মটিভেশনটি হলো, সে বাজার অর্থনীতিতে কাজ করবে আর পয়সা পাবে। তার পড়াশোনার লক্ষ্য পুরোটাই ব্যক্তি ও আত্মস্বার্থকেন্দ্রিক। পড়াশোনা করে সে ভালো রেজাল্ট করবে। তখন ভালো চাকরি পাবে। সে নিজের বাইরে আর কিছু চিন্তা করছে না।
আরেক দিনের ঘটনা। আমি বাসা থেকে কলেজে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। এমন সময় এক মেয়ে টেলিফোন করে। তার বয়স ১৬ পার হয়েছে। আমার ক্লাসে সে বেশ ভালো করত। তাই সহজে তাকে চিনতে পারি। বেশ সুন্দরী ও স্মার্ট। সে বলে, ওর বাবা ওকে ঘর থেকে বের করে দিয়েছেন। আমি বলি, বলো কি? সে বলল, তার বয়স ১৬ পেরিয়ে গেছে। তাই তার বাবা বলে দিয়েছেন নিজের পথ দেখ, অন্য কোথাও গিয়ে নিজের সব ব্যবস্থা নিজে করো। এ কথা শুনে আমি থ। এটা আমার জন্য ছিল একটি ‘কালচারাল শক’। বাবা-মায়ের সাথে তার ঝগড়াঝাটি হয়েছে কি না তা জিজ্ঞেস করি। জানাল, তেমন কিছু নয়। তার ১৬তম জন্মবার্ষিকী পালনের সময় বাবা এসে বললেন, মা, তোমার এখন বাড়ি থেকে বিদায় নেয়ার সময় হয়েছে। বাবা তাকে একটি টাইপরাইটার ও কিছু টাকা হাতে ধরিয়ে বলেছেন যে কাল থেকে সে যেন বাড়িতে আর না আসে। বাবার বাড়ি থেকে বিদায় হয়ে সে একটি এপার্টমেন্টে ওঠে। জীবন চালানোর জন্য তাকে অড জব বেছে নিতে হয়। তার একটি বয়ফ্রেন্ডও ছিল। ফলে তার সময় হলো, সে কখন অড জব করবে, কিভাবে বয়ফ্রেন্ড মেনটেইন করবে, আর কখন ক্লাস করবে? কাজ না করলে এপার্টমেন্ট ভাড়া দিতে পারবে না, খেতে পারবে না। আবার কমিউনিটি কলেজে পয়সাও দিতে পারবে না। তখন বয়ফ্রেন্ডও থাকবে না। সে কারণেই আমাকে ফোন করা। সব মিলিয়ে সে বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে। আমাকে টেলিফোন করে কান্নায় ভেঙে পড়ে।
এটি কিন্তু আমাদের মতো সনাতন সমাজের চিন্তাচেতনা থেকে পুরোপুরি উল্টা। বরং ওই বয়সের মেয়েকে বা ছেলেকে বাবা-মা আরো আঁকড়ে রাখতে চান। মেয়েটিকে যত দিন বিয়ে দিতে না পারছেন; তত দিন তো রাখছেনই, বিয়ের পরও সে কিভাবে আছে সেই চিন্তায় ব্যাকুল থাকে। জামাইর বাড়িতেও মেয়েকে এখনো একা পাঠানো হয় না। মেয়ে পক্ষের কেউ না কেউ সাথে যান। মেয়ের শ্বশুর বাড়িতে তত্ত্ব-তালাশ করা হয়। লোকজন পাঠিয়ে খবর নেয়া হয়। বাবা-মা জামাই-মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। আরো কত কি। এটি আমাদের সমাজের রীতি ও সৌন্দর্য। আর পশ্চিমা সমাজে সন্তানের বয়স ১৬ বছর হলে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়। এরপর বলা হয়, মাঝে মধ্যে এসো। ক্রিসমাসে এসো বা অন্য কোনো অনুষ্ঠানে এসো।
আরেকটি ঘটনা। চার্লস নামে একটি ছেলে আমার সাথে ইকোনমিকসে পিএইচডি করত। একবার ক্রিসমাসের সময় সে আমাকে বলল, আমি তার মায়ের সাথে দেখা করতে যেতে চাই কি না। আমি যেখানে থাকি সেখান থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে তার মায়ের বাড়ি। তবে আমেরিকায় এ দূরত্বে যাওয়া-আসা তেমন কোনো বিষয় নয়। আমি তার সঙ্গী হই। তার মায়ের জন্য একটি কেক কিনি। ওর বাবা ও মা দু’জনই আছেন। মা শিক্ষিকা, বাবা কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ার। চার্লস বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। আমাদের বেশ ভালোভাবেই আপ্যায়ন করা হলো। একপর্যায়ে দেখি ছেলেটি তার বাবার সাথে তর্ক করছে। বিষয়টি ছিল ছেলে বাবাকে একটি কাজ করে দেবে; কিন্তু পারিশ্রমিক নিয়ে দরে বনছিল না। বাবা কম দিতে চান কিন্তু ছেলে বেশি চায়। পরিশেষে তারা মাঝামাঝি একটি দরে একমত হন। এবার ফেরার পালা। ক্রিসমাসের সময়ে মিশিগানের আবহাওয়া প্রায়ই বিরূপ থাকে, বৃষ্টিপাত হয়, তুষারঝড় হয়। সে দিনও প্রবল তুষারঝড় শুরু হয়েছে। আমি ভেবেছিলাম হয়তো তার মা থেকে যেতে বলবেন। না, তা বলেননি। বরং, ‘ওকে, ফাইন’ বলে বিদায় দিলেন। ওদের বাড়িটি কিন্তু বিশাল। ও চলে গেলে আমাকেও তার সাথে যেতে হবে। ফিরে যেতে যেতে চার্লস জানাল যে তার বাবা খুবই কৃপণ। তাকে দিয়ে কাজ করাবেন কিন্তু পয়সা কম দিতে চান। অন্য দিকে মা খুবই দয়ালু। কারণ তিনি তাকে কোনো ইন্টারেস্ট ছাড়াই লোন দিয়েছেন। বাবা লোন দিতে রাজি নন। কিন্তু পড়াশোনা চালানোর জন্য তার টাকা দরকার।
এই হলো আমেরিকা। আমাদের দেশে কোনো মা ঝড়ের মধ্যে তার ছেলেকে ঘরের বাইরে যেতে দিতে রাজি হবেন? আজ সে কারণেই ট্রাম্প বলছেন যে মানুষ মরছে আপত্তি নেই, কিন্তু চাকরি করতে হবে। আসলেই তাই। ওখানকার মানুষ কেউ মরল কি বাঁচল তার তোয়াক্কা করেন না। ভাবনা একটাই- বিয়ার খেতে হবে, চাকরি করতে হবে। এখানে অনেকে মনে করেন আমেরিকা বুঝি স্বর্গ। কিন্তু সেখানেও দারিদ্র্য আছে, ছিন্নমূল মানুষের সারি আছে। ফুটপাথে ঘুমানো জনগোষ্ঠী আছে। লাসভেগাসের ঝলমলে চাকচিক্যের পেছনে আরেকটি ঘোর অন্ধকার জগত আছে। আমেরিকার দারিদ্র্য আমাদের চেয়ে ভয়াবহ। কারণ এখানে একটি মানবিক অনুভূতি আছে, দরদ আছে। সেটি ওখানে নেই। রাষ্ট্র যতটুকু সাহায্য করে ওটুকুই।
আমেরিকার জীবন ছেড়ে পাপুয়া নিউগিনির টেকনোলজি ইউনিভার্সিটিতে পড়াতে গিয়ে আরেক বিচিত্র জীবনের মুখোমুখি হই আমি। ওখানে ক্লাসে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্রদের যখন জিজ্ঞেস করি; সে শিক্ষা শেষে কী করবে, উত্তর পেতাম গ্রামে ফিরে যাবে। তারা শহরে থাকতে চায় না। তারা নিজের সম্প্রদায় ও গ্রামে অবদান রাখার মাধ্যমে সুনাম অর্জন করতে চায়। তাদের লক্ষ্য সামাজিক সুনাম অর্জন, বিপুল অর্থ কামানো নয়।
আজকে পশ্চিমা সমাজ সভ্যতাগত সঙ্কটে পড়েছে। অন্য কোনো সভ্যতা এ সঙ্কট তৈরি করেনি। নিজেরাই এর জন্য দায়ী। সেখানে পারিবারিক বন্ধন এমনভাবে ভেঙে পড়েছে যে তাদের তরুণ-তরুণীরা সন্তান নিতে আগ্রহী নয়। পরিবারপ্রথা বিলুপ্তির পথে। পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধন টিকিয়ে রাখতে কোনো অনুপ্রেরণা নেই। সেখানে ব্যক্তিস্বার্থ, ব্যক্তিকেন্দ্রিকতাকে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। এগুলো কিভাবে আরো জোরদার হয় সেই চেষ্টা অবিরত চলছে। পশ্চিমা সমাজের ঢেউ আমাদের সমাজের গায়েও লেগেছে। আমাদের সচেতনভাবে এই ঢেউ মোকাবেলা করতে হবে; যেন আমাদের পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধনটি ভেঙে না পড়ে। তাহলে আমাদেরও অস্তিত্বের সঙ্কটে পড়তে হবে।
লেখক : প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড; সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ, ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক, জেদ্দা
[email protected]
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা