ঐতিহ্যের ঢাকাই মসলিন ফিরে এলো
- সৈয়দ আবদাল আহমদ
- ০৩ জানুয়ারি ২০২১, ২০:০০
নতুন বছরে একটি খবর মনে আনন্দ বইয়ে দিয়েছে। খবরটি হলো, ঢাকাই মসলিনের পুনর্জন্ম। ঢাকাই মসলিন বাংলার হারানো গৌরব ও ঐতিহ্য। মসলিন আবার ফিরে আসবে এমন আশা কেউ করেনি। কারণ গত পৌনে দুই শ’ বছরে জাদুঘর ছাড়া এর অস্তিত্ব কোথাও পাওয়া যায়নি। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে একদল গবেষক ছয় বছর প্রচেষ্টা চালিয়ে ঢাকাই মসলিনকে ফিরিয়ে এনেছেন। সত্যিই জাতির জন্য আনন্দের খবর। মনে সূর্যোদয় হওয়ার মতোই সুখবর!
আমার নিজের সাংবাদিকতা জীবনে প্রিয় বিষয়ের একটি ‘ঢাকা নগরী’। প্রাচ্যের এই রহস্যনগরীকে নিয়ে অসংখ্য প্রতিবেদন রচনা করেছি। আমার বইয়ের নামও ‘বুড়িগঙ্গা তীরের রহস্যনগরী’। এই নগরীকে জানতে গিয়ে এবং নগরীর রহস্য অনুসন্ধান করতে গিয়ে ‘ঢাকাই মসলিন’ ও ‘ঢাকাই জামদানি’ সম্পর্কে অনেক মজার এবং একই সাথে অনেক করুণ কাহিনী জেনেছি। ঢাকাই মসলিন এতটাই মিহি কাপড় ছিল যে, দিয়াশলাইয়ের বাক্সের ভেতর একটি পুরো শাড়ি রাখা যেত। একটি আংটির ভেতর দিয়ে মসলিনের শাড়ি বের করা যেত। পলাশীর যুদ্ধের পর শিল্প বিপ্লবের ফলে এবং ইংরেজদের চক্রান্তে মসলিন শিল্প ধ্বংস হয়ে যায়। মসলিন যাতে বুনতে না পারে, এ জন্য ইংরেজরা কারিগরদের আঙুল কেটে দেয়ার মতো ঘটনাও ঘটায়। তখন নকশা করা মসলিনকে বলা হতো জামদানি। বর্তমানে নারীদের কাছে জামদানির খুব কদর। এমন নারী নেই, যার ঘরে একটি জামদানি শাড়ি নেই। তবে এই জামদানি অনেক পরিবর্তিত । আগের মসলিন জামদানির সাথে এর কোনো তুলনাই হয় না। অবশ্য এটা ঠিক, ঢাকাই জামদানিই মসলিনের ঐতিহ্য এখন বহন করছে।
ঢাকাই মসলিন পুনর্জন্মের খবরটিতে বলা হয়েছে, একদল গবেষক ছয় বছর ধরে চেষ্টা চালিয়ে বাংলার ঐতিহ্যরূপী মসলিন ফিরিয়ে এনেছেন। গবেষণা প্রকল্পের প্রধান বৈজ্ঞানিক অধ্যাপক মনজুর হোসেন জানান, তারা মসলিনের ছয়টি শাড়ি তৈরি করেছেন। এর একটি প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দিয়েছেন। কিন্তু শুরুতে এক টুকরা মসলিন কাপড় জোগাড় করতে কলকাতা থেকে লন্ডন পর্যন্ত তাদের ছুটতে হয়েছে। মসলিন বোনার সুতা ‘ফুটি কার্পাস’ তুলার গাছ থেকে তৈরি হয়। সেই গাছও খুঁজে বের করতে হয়েছে। মসলিনের জিআই বা স্বত্বের ভৌগোলিক সূচকের অনুমোদন পাওয়া গেছে গত ২৮ ডিসেম্বর। ঢাকাই মসলিনের শেষ প্রদর্শনী হয়েছিল ১৮৫১ সালে লন্ডনে। এর ১৭০ বছর পর বাংলাদেশে আবার বোনা হলো ঐতিহ্যের ঢাকাই মসলিন শাড়ি।
খুব ভালো লাগছে ২০০৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর দৈনিক আমার দেশের উদ্বোধনী সংখ্যায় ‘ঢাকাই মসলিন আবার ফিরে আসছে’ শিরোনামে আমার আশাজাগানিয়া ফিচার প্রথম ছাপা হয়েছিল। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ফ্যাশন ডিজাইনার বিবি রাসেল ঢাকাই মসলিন ফিরিয়ে আনার প্রথম কাজ শুরু করেন। এ নিয়ে তিনি আমাকে একটি দীর্ঘ সাক্ষাৎকারও দিয়েছিলেন।
ঢাকাই মসলিনের পুনর্জন্মের খবর সম্পর্কে জানতে চাইলে বিরি রাসেল জানান, খবরটি তিনিও দেখেছেন। তবে ঢাকাই মসলিন নিয়ে তার গবেষণার সাথে এর সংশ্লিষ্টতা নেই। তিনি জানান, মসলিন নিয়ে তার উদ্যোগ অব্যাহত আছে। তার অগ্রাধিকার এখন তাঁতিদের কিভাবে বাঁচানো যায়। কারণ তারা এখন প্রচণ্ড আর্থিক সঙ্কটে। ফলে মসলিন গবেষণা এগিয়ে নেয়া যাচ্ছে না। তিনি বলেন, ঢাকাই মসলিন ফিরিয়ে আনা গেলে খুবই ভালো। নতুন গবেষণার ব্যাপারে তিনি খোঁজ নেবেন বলে জানান।
ঢাকাই মসলিন সম্পর্কে বিবি রাসেল
২০০৪ সালে বিবি রাসেল মতিঝিলে তার প্রতিষ্ঠান, বিবি প্রোডাকশন্সে দেয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে মসলিন নিয়ে গবেষণা সম্পর্কে আশাব্যঞ্জক এ খবরটি আমাকে জানিয়েছিলেন।
মুঘল আমলে ঢাকাই মসলিনের খ্যাতি পৃথিবীময় ছড়িয়ে পড়েছিল। সেই মসলিন বিশ্বের বড় বড় মিউজিয়ামে এখনো সংরক্ষিত আছে। লন্ডনের ভিক্টোরিয়া আলবার্ট মিউজিয়াম, রোম, প্যারিস, ভারতের আহমেদাবাদ মিউজিয়াম ইত্যাদি ঘুরে জগদ্বিখ্যাত সেই মসলিন দেখে এসেছেন বিবি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমার চোখ দুটোতে ঢাকাই মসলিন ভাসছে। এর পুনরুজ্জীবন ঘটানোই এখন আমার স্বপ্ন।’
লন্ডনে ফ্যাশনের ওপর উচ্চতর পড়াশোনা করে বিবি রাসেল দীর্ঘ ২০ বছর ইউরোপে কাটিয়েছেন এবং ফ্যাশন ও মডেলিংয়ে খ্যাতি অর্জন করেন। ১৯৯৪ সালে তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং ‘ফ্যাশন ফর ডেভেলপমেন্ট’ স্লোগান নিয়ে বাংলাদেশে তাঁতশিল্পের উন্নয়নে কাজ শুরু করে দেন। সবার প্রতি বিবির আহ্বান- ‘তাঁতিদের বাঁচান, তাদের স্বপ্ন পূরণে সহযোগিতা করুন।’
সাক্ষাৎকারে বিবি জানিয়েছেন, ইউরোপের মিউজিয়ামে মসলিন দেখে ভেবেছি, কিভাবে আমাদের এ গৌরব ফিরিয়ে আনা যায়, পুনরুদ্ধার করা যায় মসলিন তৈরির ফর্মুলা। এরপর চুপচাপ গবেষণা শুরু করি। বড় বড় মিউজিয়ামে গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করছি। মুঘল আমলে ঢাকাই মসলিন তৈরির গ্রামগুলোয় যাচ্ছি, তাঁতিদের কাছে খোঁজখবর নিচ্ছি। তবে ঢাকাই মসলিনের ওপর তেমন রিসার্চ ওয়ার্ক ও তথ্যসমৃদ্ধ বই নেই।
তিনি জানান, মসলিন তৈরি হতো উন্নতমানের কার্পাস তুলায় (ফুটি কার্পাস)। সেই কার্পাস গাছ এখন নেই। ‘ফুটি কার্পাস’ আবার কিভাবে চাষ করা যায় তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সাথে কথা বলছি। এ গবেষণায় খাদি বস্ত্রের উদ্ভাবক শৈলেন গুহ তাকে অনেক সহযোগিতা করেছেন বলে জানান বিবি।
ঢাকার জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত মসলিন প্রসঙ্গে বিবি বলেন, এ মসলিন উনিশ শতকের, মুঘল আমলের আসল মসলিন নয়। এ মসলিন আমার কাছেও রয়েছে। বর্তমানে তিনি যে মসলিন বস্ত্র তৈরি করেছেন, তাকে ঠিক ‘মসলিন’ বলা যায় না। এটি আসল মসলিনের ১০ ভাগের ১ ভাগ মাত্র। তিনি আশাবাদী, আসল মসলিন পুনরুজ্জীবিত হবে এবং নতুন করে রচিত হবে ইতিহাস।
কিংবদন্তির সেই মসলিন
ইতিহাসে আছে, মুঘল আমলে তৈরি করা ঢাকাই মসলিন ঘাসের ওপর রাখলে এবং তার ওপর শিশির পড়লে কাপড় দেখাই যেত না। কয়েক গজ মসলিন কাপড় ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দেয়া যেত বলে জনসাধারণ একে ‘হাওয়ার কাপড়’ বলত। এমনকি একটি আংটির ভেতর দিয়ে এক থান কাপড় অনায়াসে টেনে বের করা যেত। ‘ফুটি কার্পাস’ নামক তুলা থেকে প্রস্তুত অতি চিকন সুতা দিয়ে মসলিন তৈরি করা হতো। চরকা দিয়ে কাটা, হাতে বোনা মসলিনের জন্য ৩০০ কাউন্টের সুতা ব্যবহার করা হতো। ফলে মসলিন হতো কাচের মতো স্বচ্ছ। এই মসলিন রাজকীয় পোশাক তৈরিতে ব্যবহার করা হতো। মসলিন প্রায় ২৮ রকম হতো যার মধ্যে জামদানি এখনো ব্যাপকভাবে প্রচলিত।
বিবি রাসেল বলেন, মসলিন বোনার জন্য অতি সূক্ষ্ম সুতা তৈরি করতে পারত কুমারী মেয়েরা। ভোরের সূর্য ওঠার আগেই সুতা কাটার কাজ তারা শেষ করত। দিয়াশলাইয়ের বাক্সে ওই সূক্ষ্ম মসলিন রাখা যেত। তখন তাঁতে নকশা করা মসলিনকে ‘জামদানি’ বলা হতো।
এ সম্পর্কে আরো জানা যায়, এক পাউন্ড মসলিন সুতা দৈর্ঘ্যে হতো ২৫০ মাইল। সম্রাট আকবর বাংলায় নিযুক্ত সুবাদারের সাথে এ বন্দোবস্ত করেন যে, দিল্লির দরবারে যত টাকার মসলিন দরকার হবে, তা জোগাতে হবে। মুঘল সম্রাজ্ঞী নূরজাহান মসলিনের অতি অনুরাগী ছিলেন। নূরজাহান যে মসলিন ব্যবহার করতেন, তার নাম ছিল ‘মলবুস খাস’। রোমে প্রাচীন সমৃদ্ধির দিনে সেখানকার নারীদের প্রিয় বিলাসসামগ্রী ছিল এই মসলিন। মিসরের মমি আবৃত হতো মসলিনে।
এশিয়া ছাড়াও ইউরোপের বিভিন্ন ব্যবসা কেন্দ্র-লন্ডন, প্যারিস ও আমস্টারডামে মসলিন একচেটিয়া অধিকার বিস্তারে সমর্থ হয়। এমনকি আরব বণিকদের মারফত উত্তর আফ্রিকাতেও তা প্রভাব বিস্তার করে। ১৮৫১ সালে লন্ডনের বিশাল প্রদর্শনীতে ঢাকাই মসলিন বিশেষ প্রাধান্য পেয়েছিল।
জেমস টেলরের লেখায় জানা যায়, ১৭৮৭ সালে ঢাকা থেকে যে পরিমাণ মসলিন ইংল্যান্ডে রফতানি করা হয়েছিল, তার মূল্য ছিল ৩০ লাখ টাকা। ১৮১৭ সালে এই রফতানি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। বিবি রাসেল বলেন, ঢাকার মসলিনের মতো এত সূক্ষ্ম ও মিহি সুতি বস্ত্র পৃথিবীর কোথাও তৈরি হতো না। বৃহত্তর ঢাকার সোনারগাঁ, কাপাসিয়া, ধামরাই, তিতাবদি এবং কিশোরগঞ্জের জঙ্গলবাড়ি ও বাজিতপুরে মসলিন শিল্প ছিল। কাপাসিয়া এলাকায় উন্নতমানের ফুটি কার্পাস তুলা উৎপন্ন হতো, যা দিয়ে সূক্ষ্ম মসলিন তৈরি হতো।
প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ অধ্যাপক আবদুল করিমের লেখা থেকে জানা যায়, ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী কোনো কোনো এলাকায় ‘ফুটি’ নামে এক প্রকার তুলা জন্মাত। এর সুতা থেকে তৈরি হতো সবচেয়ে সূক্ষ্ম মসলিন বস্ত্র। এ সুতিবস্ত্রই বিশ্বব্যাপী ‘ঢাকাই মসলিন’ নামে খ্যাত ছিল। বৃহত্তর ঢাকা জেলার প্রায় সব গ্রামেই তাঁতশিল্প ছিল। কয়েকটি স্থান ছিল উৎকৃষ্টমানের মসলিন তৈরির জন্য প্রসিদ্ধ। এগুলো হচ্ছে- বর্তমান ঢাকা জেলার ঢাকা ও ধামরাই, গাজীপুর জেলার তিতাবদি, নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও এবং কিশোরগঞ্জ জেলার জঙ্গলবাড়ি ও বাজিতপুর। ঢাকার তাঁতীদের তৈরি কাপড়ের মান বিভিন্ন ধরনের হতো। সম্রাট, উজির, নওয়াব প্রমুখ অভিজাত শ্রেণীর মানুষের জন্য বোনা হতো সূক্ষ্ম ও মিহি বস্ত্র এবং দরিদ্রদের জন্য মোটা ও ভারী কাপড়। কাপড়ের সূক্ষ্মতা, স্বচ্ছতা, উৎপাদনের উৎস ও ব্যবহার ভেদে ঢাকাই মসলিনের বিভিন্ন নাম দেয়া হতো। যেমন- মলমল (সূক্ষ্মতম বস্ত্র), ঝুনা (স্থানীয় নর্তকীদের ব্যবহৃত বস্ত্র), রঙ্গ (স্বচ্ছ ও জাতি জাতীয় বস্ত্র), আবি রাওয়ান (প্রবহমান পানির তুল্য বস্ত্র), খাস (বিশেষ ধরনের মিহি), শবনম (ভোরের শিশির), আলাবালি (অতিমিহি), শিরবন্দ (পাগড়ির উপযোগী), ডোরিয়া (ডোরাকাটা), জামদানি (নকশা আঁকা) প্রভৃতি। সবচেয়ে সূক্ষ্ম মসলিনের নাম ছিল ‘মলমল’। বিদেশী পর্যটকরা একে বলতেন ‘মলমল খাস’। এগুলো বেশি দামি এবং এ রকম একপ্রস্থ বস্ত্র তৈরি করতে তাঁতিদের দীর্ঘ দিন, এমনকি ছয় মাস পর্যন্ত সময় লাগত। এই বস্ত্র সম্রাট ও নওয়াবগণই ব্যবহার করতেন। সম্রাটদের জন্য সংগৃহীত বস্ত্রের নাম ছিল ‘মলবুল খাস’ এবং নওয়াবদের জন্য ‘সরকার-ইআলা’।
বিশ্বজুড়ে মসলিনের খ্যাতি
অধ্যাপক আবদুল করিম মসলিন সম্পর্কে আরো লিখেছেন, মুঘল আমলে বাংলার রাজধানী ঢাকায় স্থানান্তরিত হওয়ার পর থেকে ঢাকাই মসলিনের খ্যাতি বেড়ে যায় এবং তা দূর-দূরান্তের বিদেশী ক্রেতাদের আকৃষ্ট করে। মুঘল সম্রাট ও অভিজাতরা ঢাকার মসলিন শিল্পের প্রসারে পৃষ্ঠপোষকতা করেন। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে ঢাকাই মসলিনের বেশ চাহিদা ছিল। ব্যবসায়ীরা সক্রিয় ছিলেন ঢাকায়। বাংলার রাজধানী মুর্শিদাবাদে স্থানান্তরিত হওয়ার পর সুবাদার ও দিওয়ান এবং অন্য অভিজাতদের জন্য ঢাকা থেকে মসলিন কিনে সেখানে পাঠানো হতো। আঠারো শতকের গোড়ার দিকে ওসটেন্ড কোম্পানি বাংলায় আসে। তারা ঢাকাই মসলিন সংগ্রহ করত দালাল, পাইকার ও নিজস্ব কর্মচারীদের মাধ্যমে। মসলিনের রফতানি বাণিজ্য লাভজনক দেখে তারা ঢাকায় কুঠি স্থাপন করে। জানা যায়, ১৭৪৭ সালে ঢাকা থেকে যে পরিমাণ মসলিন রফতানি এবং সম্রাট-নওয়াবদের জন্য সংগৃহীত হয়, তার মূল্য ছিল তখনকার সময়ের ২৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা। পলাশীর যুদ্ধের পর ঢাকার মসলিন শিল্পে বিপর্যয় নেমে আসে এবং অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ দিকে ঢাকার মসলিনের রফতানির পরিমাণ ১৭৪৭ সালের চেয়ে অর্ধেকে নেমে আসে। ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে ঢাকার মসলিন উৎপাদন হ্রাস পেয়ে ১০ লাখ রুপিতে দাঁড়ায়। মুঘল বাদশাহ, নওয়াব এবং পদস্থ কর্মকর্তাদের পৃষ্ঠপোষকতার অভাবই ঢাকাই মসলিন শিল্পের অবনতির কারণ। তবে মসলিনের চূড়ান্ত বিলুপ্তির কারণ ইউরোপের ‘শিল্প বিপ্লব’ এবং আধুনিক বাষ্পশক্তি ও যন্ত্রপাতির আবিষ্কার। এভাবে ইংল্যান্ডের শিল্প-কারখানায় উৎপাদিত সস্তা দামের পণ্যের সাথে প্রতিযোগিতায় ‘হেরে যায়’ ঢাকাই মসলিন। বাংলার এই ঐতিহ্যকে ধ্বংস করে দিতে ইংরেজদের চক্রান্তও কাজ করে। ইংরেজরা মসলিন কারিগর বা শিল্পীদের ওপর অত্যাচারও করেছে। অনেক মসলিন শিল্পীর আঙুল কেটে দেয়া হয়, যাতে তারা মসলিন বুনতে না পারেন।
লেখক : জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিক
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা