২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

সংস্কৃতিবান রাজনীতিক জাহিদ হোসেন মুসার চলে যাওয়া

সংস্কৃতিবান রাজনীতিক জাহিদ হোসেন মুসার চলে যাওয়া - ছবি : নয়া দিগন্ত

‘জন্মিলে মরিতে হবে, অমর কে কোথা কবে’- কেউ না। তবে কেউ কেউ নিজ নিজ ক্ষেত্রে তাদের অবিস্মরণীয় ও উজ্জ্বল অবদানের জন্য দীর্ঘ দিন মানুষের মাঝে বেঁচে থাকেন। তেমনি একজন মানুষ জাহিদ হোসেন মুসা। তিনি ছিলেন বৃহত্তর যশোরের ঝিনাইদহের গৌরব, পঞ্চাশের দশকের প্রগতিশীল রাজনীতির অগ্রসৈনিক এবং সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। প্রায় ৮৯ বছর বয়সে সম্প্রতি তিনি পৃথিবীর মায়া ছেড়ে চলে গেছেন। এই গুণী ব্যক্তিত্বের ইন্তেকালে গৌরবদীপ্ত একটি অধ্যায়ের অবসান ঘটল।

রাজনীতি, সাহিত্যচর্চা, গণসঙ্গীত, রবীন্দ্র-নজরুল-সুকান্তপাঠ, নাট্যচর্চা, সমাজসেবা- তার জীবনের বিপুল বৈচিত্র্যের একেকটা দিক। জাহিদ হোসেন মুসা সব কিছু নিয়েই ছিলেন অনন্য। কিন্তু সেই মানুষটির ছোঁয়া আমরা আর পাবো না।

ছোটবেলা থেকেই রাজনীতি ও সাহিত্যের প্রতি তার ছিল প্রবল ঝোঁক। কলেজ জীবনে তিনি জড়িয়ে পড়েছিলেন মার্কসবাদ-লেনিনবাদ ও মাও সেতুংয়ের চিন্তাধারায়। সরাসরি কমিউনিস্ট পার্টি না করলেও ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি ন্যাপের সাথে, মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর সাথে কাটিয়েছেন ২২ বছরেরও বেশি সময়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথেও ছিল সুসম্পর্ক। তার সান্নিধ্যও পেয়েছেন তিনি। যশোর অঞ্চলের বেশ কয়েকজন রাজনীতিবিদ যারা জাতীয় রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছেন, তাদের রাজনীতির হাতেখড়িও হয়েছে তার কাছে।

অনন্য মানুষ জাহিদ হোসেন মুসার কিছুটা সান্নিধ্য পাওয়ার সুযোগ আমার হয়েছিল। আশির দশকের মাঝামাঝি দৈনিক বাংলা অফিসে তার সাথে আমার পরিচয়। দৈনিক বাংলার তৎকালীন চিফ রিপোর্টার শ্রদ্ধেয় মনজু ভাই (মনজুর আহমদ) আমাকে তার সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। অল্প সময়ের আলাপচারিতায় সে দিন খুব মুগ্ধ হয়েছিলাম। কারণ প্রথম পরিচয়েই তিনি আমাকে আপন করে নেন। সে দিন তার সাথে আমার যে ‘এইমাত্র’, অর্থাৎ প্রথম পরিচয় হয়েছে তা মনেই হয়নি। আমরা যেন ছিলাম বহুদিনের চেনা-জানা। ঝিনাইদহ থেকে ঢাকায় এলে তিনি দৈনিক বাংলা অফিসে মনজু ভাই ও জাহিদ ভাইয়ের (আনোয়ার জাহিদ) সাথে সাক্ষাৎ করে যেতেন। মনজু ভাই ও জাহিদ ভাই উভয়ই ছিলেন সম্পর্কে ভাতিজা। তাদের রাজনীতির হাতেখড়িও হয় তার কাছেই। আনোয়ার জাহিদ জাতীয় রাজনীতি ও সাংবাদিকতায় একটি আলোচিত নাম। মনজুর আহমদ ছাত্রজীবনে রাজনীতির সাথে জড়িত থাকলেও সাংবাদিক হিসেবেই খ্যাতিমান।

সংস্কৃতিবান অনন্য রাজনীতিক জাহিদ হোসেন মুসা সম্পর্কে মনজু ভাইয়ের কাছে অনেক কাহিনী শুনেছি। মনজু ভাই তাকে ‘মুসা চাচা’ বলে ডাকতেন। তার মৃত্যুর পর মনজু ভাই শোক প্রকাশ করে ফেসবুকে যে পোস্ট দেন তাতে লিখেছেন, ‘তিনি ছিলেন আমাদের তিন ভাইয়ের মুসা চাচা। নিজের চাচাদের কাছে পাইনি, কিন্তু পাশের বাড়ির বাসিন্দা হিসেবে সর্বক্ষণ তাকে পেয়েছি আমাদের অভিভাবক হিসেবে। তার কাছেই সেই স্কুল জীবনে আমার বাম রাজনীতির হাতেখড়ি। তিনি আমাকে মার্কস-অ্যাঙ্গেলস, লেনিন-স্ট্যালিন ও মাওকে চিনিয়েছেন। ১৯৫০ সালে যখন প্রথম ঝিনাইদহ মহকুমা আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা করা হয়, তিনি নির্বাচিত হয়েছিলেন সাধারণ সম্পাদক আর আমার বাবা ডা: কে আহমদ হয়েছিলেন সভাপতি। সে সময় বঙ্গবন্ধু আমাদের বাড়িতে এসেছেন। ছোটবেলায় তাদের অন্তরঙ্গ মেলামেশার কথা এখনো মনে পড়ে। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনে মুসা চাচা দায়িত্ব পালন করেছিলেন প্রধান সমন্বয়কের। তিনি ছিলেন একজন ভালো বক্তা। রাজনীতির বাইরে তিনি ছিলেন ঝিনাইদহের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মধ্যমণি। তাকে ছাড়া কোনো অনুষ্ঠান বা নাটক ঝিনাইদহে কখনো হতে দেখিনি। তিনি নাটক নির্দেশনা দিতেন, অভিনয় করতেন। মুসা চাচা জনসভায় গণসঙ্গীতও গাইতেন। ঝিনাইদহ শিল্পী সঙ্ঘের তিনি ছিলেন প্রাণপুরুষ, ছিলেন অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। ঝিনাইদহেই জীবন কাটানো এই উদ্যমী মানুষটি ছিলেন অজাতশত্রু। রাজনৈতিক মতান্তর থাকলেও কারো সাথে তার বিরোধ ছিল না। প্রবল দেশপ্রেম, সততা, নিঃস্বার্থ জনসেবায় তিনি ছিলেন এক উজ্জ্বল আদর্শ।’
দৈনিক বাংলা অফিস ছাড়াও প্রবীণ এই রাজনীতিকের সাথে আমার কয়েকবারই দেখা হয়েছে তার বড় ছেলে ওষুধ শিল্পের অন্যতম উদ্যোক্তা নাসের শাহরিয়ার জাহেদী ভাইয়ের অফিস ও ধানমণ্ডির বাসায়। তার অমায়িক ব্যবহার ও বিনয় আমাকে দারুণভাবে আকৃষ্ট করেছে। আলাপের সময় তাকে প্রাণবন্ত থাকতে দেখেছি। ঢাকা ও কলকাতায় তার অনেক মধুর স্মৃতি আছে। সেসব স্মৃতি তিনি মজা করা বলতেন। যেমন নির্দিষ্ট সেলুনে চুল কাটা, হেমন্তের গান, বাম রাজনীতিকদের চালচলন ও বিশেষ গুণ ইত্যাদি। তার সম্পর্কে জানতে গিয়ে শ্রদ্ধায় আরো নত হয়েছি। সহজ, সরল, সত্যসন্ধ ও মিশুক স্বভাবের মানুষটির বিবেকবোধ ও দেশপ্রেম অতুলনীয়।

জাহিদ হোসেন মুসা ১৯৩২ সালে ঝিনাইদহে সদর থানার নারিকেলবাড়িয়ার জমিদার পরিবারে জন্মেছিলেন। শৈশবে পাঠশালা পর্বেই নিভৃত পল্লীর নৈসর্গিক সৌন্দর্য তাকে বিমোহিত করত। কৈশোর থেকেই তিনি ছিলেন কবিগান, পালাগান, যাত্রা ও স্বদেশী প্রভৃতি গানের ভক্ত। লোকজ সাংস্কৃতিক পরিবেশেই তার বেড়ে ওঠা। ’৪৭-পরবর্তী সময়ে ঝিনাইদহের রাজনীতিতে প্রগতিশীল ধারার তিনিই পথদ্রষ্টা। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন ও তৎকালীন বাম রাজনীতির প্রবল জোয়ার মফস্বল শহর ঝিনাইদহকেও আলোড়িত করেছিল। জাহিদ হোসেনের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের ব্রত সেখান থেকেই। তখন থেকেই তিনি উপমহাদেশের বরেণ্য রাজনীতিবিদদের সাহচর্য লাভ করেন। যুবক বয়সে দেশ বিভাগ-উত্তর আটচল্লিশ থেকে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে তিনি যেমন অংশ নেন, তেমনি যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনে সরাসরি জড়িত থেকে কাজ করেছেন। পরবর্তীতে স্বৈরাচারী আইয়ুববিরোধী আন্দোলন যেমন বাষট্টির ছাত্র আন্দোলন, ৬ দফা, ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানে এবং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে নিশ্চুপ নির্লিপ্ত থাকেননি তিনি। এক কথায়, এ দেশের সচেতন যুব সমাজের যে প্রবল উপস্থিতি ছিল অগ্নিঝরা ওই সব আন্দোলনে, চল্লিশ দশকের ঝিনাইদহের তুখোড় ছাত্রনেতা ও সাংস্কৃতিক সংগঠক হিসেবে জাহিদ হোসেন মুসা ছিলেন তাদের অন্যতম।

এ সময় তিনি কাব্যচর্চাও করেছেন। পঞ্চাশের দশকে লেখা তার কবিতা ও গণসঙ্গীত মানুষকে সমাজ পরিবর্তনে উদ্দীপ্ত করেছে। পঞ্চাশ-পঞ্চান্ন বছর পর তার কবিতাগুলো নিয়ে বই প্রকাশিত হয় সহধর্মিণী নূরনাহার জিন্নাতুল ও সন্তানদের আগ্রহে। কাব্যগ্রন্থের নাম ‘অনেক দেরিতে’। ১৯৫১ থেকে ১৯৫৯ সালের মধ্যে লেখা ৬১টি এবং ষাটের দশকের আটটি কবিতা এতে স্থান পায়। কবিতাগুলো পাঠ করলে যে কারো চোখের সামনে ভেসে উঠবে ষাট-সত্তর বছর আগের রাজনীতি, আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি ও তৎকালীন সমাজের রূঢ় বাস্তবতা। নিজের কাব্যগ্রন্থ সম্পর্কে জাহিদ হোসেন মুসা লিখেছেন, ‘পঞ্চাশ-ষাটের দশকে আমার লেখাগুলো গণসঙ্গীতের ছোঁয়ায় রচিত। কিছু কিছু লেখায় তদানীন্তন সময়ের প্রগতিশীল রাজনীতি ও সংস্কৃতির ছাপ আছে। সেই সময়ের রাজনীতি ও সামাজিক মূল্যবোধের সাথে বর্তমান প্রজন্মকে পরিচিত করে তোলার উদ্যোগ আজ বড় বেশি প্রয়োজন বলে মনে হচ্ছে।’ তিনি ঠিকই বলেছেন, সেই পঞ্চাশ-ষাট বছর আগে রাজনীতির চেহারা কী ছিল কিংবা কেমন ছিল আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি, এর নিখুঁত ছাপ আছে কবিতাগুলোতে। যেমন ‘পতনের মুখে’ কবিতার লাইন- ‘ দেশ ডুবে যায়, শিক্ষা নাই/নাইরে বস্ত্র নাইরে অন্ন’। ‘এ দেশে’ কবিতার লাইন- ‘এ দেশে কেউ হাসে না/আমিই বা হাসবো কেন’। ‘ফেব্রুয়ারিকে’ কবিতায় আছে- ‘পীচ ঢালা রাস্তার/কালো রঙ লাল হয়/কোথাও কি দেখেছ?’ ‘ডলার-স্টার্লিং কীর্তন’ কবিতায়-‘মার্শাল এড আর ট্রুমান প্ল্যান/বৃটেন সাথে জোড়ে কলম্বো প্ল্যান/ পেটে যে ভাত নেই, কোন মতে বাঁচি মোরা খেয়ে শুধু ফ্যান।’ তেমনি ‘মুক্তির আরেক নাম মাওলানা ভাসানী’ কবিতায় তিনি লিখেন, ‘জনতার সংগ্রামের অগ্নিপুরুষ/দশ কোটি মানুষের শ্রেষ্ঠ মানুষ/শোষিতের সংগ্রামে বীর সেনানী/মজলুম জনতার প্রাণ ভাসানী।’ তার গণসঙ্গীতের একটি সিডিও বের হয়েছে। এতে কণ্ঠ দিয়েছেন শিল্পী মাহমুদুজ্জামান বাবু।

দেশবরেণ্য কবি আল মাহমুদের চোখে জাহিদ হোসেন মুসা একজন বিপ্লবী। তিনি তাকে ‘কবিতা ও গণসঙ্গীতের মানুষ’ হিসেবে লেখার শিরোনামে উল্লেখ করেন। ২০০৮ সালের ১৪ মার্চ দৈনিক নয়া দিগন্তে তার ‘অনেক দেরিতে’ নিয়ে লিখতে গিয়ে কবি আল মাহমুদ লিখেছেন, ‘মওলানা ভাসানীর অনুরাগী, বিপ্লবী কবিতা ও গণসঙ্গীতের উত্তাল তরঙ্গের মানুষ জাহিদ হোসেন মুসার একটি সুমুদ্রিত সঙ্কলন পেয়েছি। বইটি আমার দারুণ উপকারে লাগবে। কারণ জাহিদ হোসেন মুসা ইতিহাসের বৈপ্লবিক সাক্ষ্য গানে ও কবিতায় লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন। অতীতের উত্তাপ বইটিতে লেগে আছে। ছাইচাপা আগুন থেকে যেমন একটা আঁচ এসে গায়ে লাগলে আরাম বোধহয়, বিপ্লবী কবি জাহিদ হোসেন মুসার বইটিও আমার তেমন লেগেছে।’
কবি আল মাহমুদ তাকে উপযুক্ত বিশেষণই দিয়েছেন, ‘গণসঙ্গীতের মানুষ’। গণসঙ্গীত তার অস্তিত্বের সাথেই মিশে ছিল সেই কিশোর বয়স থেকেই। জাহিদ হোসেন মুসা নিজেই লিখেছেন, ‘এমন একটা সময় ছিল যখন ভারতীয় গণনাট্য সঙ্ঘের প্রভাবে পূর্ববাংলা ও পশ্চিম বাংলায় ঘরে ঘরে গণসঙ্গীতের জোয়ার বয়ে গিয়েছিল। সুকান্তের রচনা, সলিল চৌধুরীর সুর, হেমন্তের অনবদ্য কণ্ঠের অপূর্ব মিলনে গ্রামবাংলার আকাশ বাতাসকে মুখরিত করে রেখেছিল।’ সাংবাদিক মনজুর আহমদ আমাকে তার সম্পর্কে বলতে গিয়ে জানান, মুসা চাচা নিজে যেমন গণসঙ্গীত রচনা করেছেন, তেমনি গাইতেনও। তিনি গলা ছেড়ে গান গাইতেন। কোনো বাদ্যযন্ত্রের সাথে নয়, কিছু বাজাতেও পারতেন না। খালি গলায় কিন্তু মোটামুটি নিখুঁত সুরে গাইতেন। আর তার প্রিয় ছিল হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের গান। আশির দশকের শেষের দিকে হেমন্ত যখন ঢাকায় এসেছিলেন, তখন মুসা চাচা শুধু তাকে সামনা-সামনি দেখার জন্য ঝিনাইদহ থেকে চলে এসেছিলেন। তিনি ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট, শিল্পকলা একাডেমি ও ঢাকা ক্লাবের ঘরোয়া অনুষ্ঠানে গিয়ে তার গান শুনেছেন। বড় ছেলে মহুল অনুষ্ঠানের টিকিট কিনে রেখেছিল। প্রথম দিন মিলনায়তনে সামনের আসন পাননি। পরের অনুষ্ঠানে তার জন্য সামনের টিকিট সংগ্রহ করা হয়।

মনজু ভাই আরো জানান, তিনি যখন যশোর এসএম কলেজের ছাত্র ছিলেন, তখন থেকেই তার রাজনৈতিক চেতনার উন্মেষ ঘটে। তিনি কবিতা লিখতেন। কিন্তু ছাপাতেন না। অর্ধ শতাব্দী পর কবিতার বই ‘অনেক দেরিতে’ বের হলে তিনি তাতে লিখেছেন, ‘সহধর্মিণী ও সন্তানদের অনুরোধে বই প্রকাশ করার প্রচেষ্টা গ্রহণ করলাম। জানি না, কার কতটুকু উপকার হবে।’

অনেক সমাজকল্যাণমূলক কাজ করে গেছেন জাহিদ হোসেন মুসা। ২০০৯ সালে তার সভাপতিত্বে গঠিত হয় সমাজসেবামূলক সংস্থা ‘জাহেদী ফাউন্ডেশন।’ দুস্থ শিশু ও নারীদের জন্য খাদ্যসহায়তা কর্মসূচি, শিক্ষার উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ, স্বাস্থ্য খাতে প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা এবং ক্রীড়া উন্নয়নে সহযোগিতা করে আসছে এই ফাউন্ডেশন। তার পৃষ্ঠপোষকতায় যশোর কালেক্টরেট স্কুলে গড়ে ওঠে ‘জাহানারা হুদা একাডেমিক ভবন’। নিজ গ্রাম নারিকেলবাড়িয়ায় আমেনা খাতুন কলেজে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘মুসা মিয়া একাডেমিক ভবন’। ঝিনাইদহ শহরে গড়ে তোলা হয় ‘মুসা মিয়া বুদ্ধি বিকাশ বিদ্যালয়’। প্রত্যন্ত অঞ্চলের ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য হরিণাকুণ্ডে ‘ডায়াবেটিক সেন্টার’ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ঝিনাইদহ পৌরসভা এই কৃতী ও মহতী মানুষটির নামে শহরের একটি সড়কের নামকরণ করে তাকে সম্মানিত করেছে।

পরিণত বয়সেই তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন। তবু তার মৃত্যু আমাদের দারুণভাবে ব্যথিত করেছে। চাচাজানের সান্নিধ্য যে কয়েক দিন পেয়েছি, তা ছিল বড় অনুপ্রেরণা। একজন আদর্শ অমায়িক মানুষ হিসেবে তিনি সমাদৃত ছিলেন। জানাজায় মানুষের ঢল তার প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসারই বহিঃপ্রকাশ।

লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক, জাতীয় প্রেস ক্লাব।


আরো সংবাদ



premium cement