গবেষণায় প্লেজারিজম
- সৈয়দ মাসুদ মোস্তফা
- ১১ নভেম্বর ২০২০, ১৮:৩৬
মূল্যবোধের বিচ্যুতি ও অবক্ষয় আমাদের জাতীয় জীবনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে পড়েছে। রাষ্ট্রের এমন কোনো বিভাগ নেই যেখানে অবক্ষয়, অনিয়ম ও দুর্নীতির অনুপ্রবেশ ঘটেনি। গণমানুষের সর্বশেষ ভরসাস্থল বিচার বিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও এসব অভিযোগ থেকে মুক্ত নয়। ফলে সাধারণ মানুষ ন্যায়বিচার প্রাপ্তি ও জানমালের নিরাপত্তা নিয়ে আস্থাহীনতায় ভুগছেন। শিক্ষক সমাজকে জাতির জাগ্রত বিবেক বলে মনে করা হয়। সাধারণ মানুষের মধ্যে বদ্ধমূল ধারণা, অবক্ষয়ের জয়জয়কারের মধ্যেও শিক্ষকসমাজ মূল্যবোধের চর্চার ক্ষেত্রে অপেক্ষাকৃত ভালো রয়েছেন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে একশ্রেণীর অসাধু, মূল্যবোধহীন, উচ্চাভিলাষী ও সুযোগসন্ধানী শিক্ষকের কারণে সে আস্থার জায়গাটাও নষ্ট হতে চলেছে। যারা নিজেরা অবক্ষয়মুক্ত থেকে শিক্ষার্থীদের মূল্যবোধ অনুশীলনের তালিম দেবেন তাদের বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠেছে কথিত গবেষণার নামে চৌর্যবৃত্তির। যা আমাদের পুরো শিক্ষক সমাজকেই আসামির কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে এবং শিক্ষাবিষয়ক সব গবেষণাকেই করেছে প্রশ্নবিদ্ধ।
গবেষণা প্রতিটি জাতিরাষ্ট্রের শিক্ষাব্যবস্থায় অতি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। আর তা হলো মানুষের বুদ্ধিবৃত্তিক অনুসন্ধান প্রক্রিয়া এবং নতুন কিছু আবিষ্কার বিষয়ক গবেষকদের লব্ধ উচ্চতর জ্ঞান। বস্তুত গবেষণা একটি ধারাবাহিক কার্যপ্রক্রিয়া যা নির্দিষ্ট ধাপ অনুসরণের মাধ্যমে সম্পাদিত হয়। ফলে প্রতিটি দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে গতিশীল, সমৃদ্ধ ও পরিশীলিত করার জন্য শিক্ষাবিষয়ক গবেষণা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। কিন্তু আমাদের দেশে শিক্ষা নিয়ে যে ধরনের গবেষণার প্রয়োজন ছিল সে সংস্কৃতি এখনো পর্যন্ত গড়ে ওঠেনি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার সব স্তরে শিক্ষাসংক্রান্ত ধারাবাহিক গবেষণাকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়। ‘ন্যাশনাল সেন্টার ফর এডুকেশন রিসার্চ’ যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার সমস্যাগুলো চিহ্নিতকরণ ও সমাধানের ক্ষেত্রে গবেষণার মাধ্যমে অবদান রাখে। গবেষণার মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম, এর চর্চা ও পরিকল্পনাকে সময়ের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ ও গতিশীল করে প্রযুক্তির ব্যবহার ও মূল্যায়ন পদ্ধতি কিভাবে গ্রহণযোগ্য করা যায় সে বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ, পরিকল্পনা ও কৌশল নির্ধারণ করা হয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অ্যামেরিকান এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশন (এএআরএ) নামে একটি জাতীয় গবেষণা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির কাজ হলো, শিক্ষা উন্নয়নের জন্য শিক্ষাসংক্রান্ত অগ্রগতি সম্পর্কে মানুষকে উৎসাহিত, শিক্ষার উৎকর্ষ সাধন এবং নাগরিকদের কল্যাণের জন্য শিক্ষাবিষয়ক গবেষণার ইতিবাচক ফলাফল শিক্ষাক্ষেত্রে প্রয়োগ করার উদ্যোগ গ্রহণ করা। এডুকেশন রিসার্চ প্রোগ্রামের মাধ্যমে শিক্ষার সামাজিক দিকগুলো নিয়ে গবেষণা আর শিক্ষাক্ষেত্রে সমাজের চ্যালেঞ্জগুলো সমাধানের প্রচেষ্টা চালানো হয়। ব্রিটিশ এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশন মনে করে, বিশ্বমানের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়ন নির্ভর করে গুণগত ও উচ্চমানের শিক্ষাসংক্রান্ত গবেষণার ওপর। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই শিক্ষা একটি নির্দিষ্ট দর্শন দ্বারা পরিচালিত হয়, যেখানে শিক্ষাকে প্রকৃত অর্থে মূল্যায়ন করা সম্ভব হয় না। সঙ্গতকারণেই এই রিসার্চ সংস্থাটি ক্রিটিক্যাল অ্যানালাইসিস ও গবেষণার মাধ্যমে নতুন শিক্ষানীতি, উচ্চশিক্ষার পদ্ধতি নির্ধারণ, অনুশীলন ও তার মূল্যায়নের পদ্ধতি বের করে সেটি সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করে। প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা আলোচনা ও বিশ্লেষণ করে গবেষণালব্ধ নতুন ধারণার প্রস্তাবগুলো উপস্থাপন করে।
আমাদের দেশে শিক্ষা গবেষণায় যদিও এ ধরনের বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান নেই, তবে সীমিত পরিসরে হলেও বিষয়ভিত্তিক গবেষণা রয়েছে। আর এ ধরনের গবেষণার জন্য প্রতিটি পাবলিক বিশ^বিদ্যালয়ের প্রায় প্রতিটি বিভাগে উচ্চতর গবেষণার সুযোগ রাখা হয়েছে। গবেষণার জন্য যোগ্য যেকোনো ব্যক্তির জন্য এই গবেষণা এবং গবেষণার মাধ্যমে অভিসন্দর্ভ প্রণয়ন ও উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ রয়েছে অবারিত। তবে আমাদের দেশের উচ্চতর বিশেষ করে বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এ ধরনের গবেষণায় বেশি অংশগ্রহণের মাধ্যমে নিজেদের পেশাগত দক্ষতাবৃদ্ধির সাথে সাথে শিক্ষার্থীদের সুপ্তপ্রতিভার বিকাশ ঘটাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করেন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে সে আস্থার জায়গায়ও রীতিমতো বিপত্তি ঘটেছে। আমাদের অবক্ষয় এতই প্রান্তিকতায় নেমে এসেছে যে, শিক্ষা গবেষণায়ও একশ্রেণীর শিক্ষক গড্ডলিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে দিয়েছেন। সম্প্রতি এমনই চাঞ্চল্যকর খবর প্রকাশিত হয়েছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে। যা একশ্রেণীর শিক্ষকের মূল্যবোধহীনতার দিকেই অঙ্গুলি নির্দেশ করে।
প্রাপ্ত তথ্য মতে, গবেষণার শিষ্টাচার বা নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে একই গবেষণা পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা এমফিল এবং পিএইচডিতে ব্যবহার করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের একজন অধ্যাপক। শিরোনাম পরিবর্তন করে আগের অংশ পরে এবং পরের অংশ আগে উল্লেখ করে একই লেখা দিয়ে নিয়েছেন দুই ডিগ্রি। রেফারেন্স ছাড়া অন্যের লেখা তুলে দিয়ে যেমন প্লেজারিজম করেছেন, তেমনি নিজের লেখায় ব্যবহৃত উদ্ধৃতি-কবিতা-বক্তব্যের কোনো রকম উল্লেখ ছাড়া ব্যবহার করে নিয়েছেন প্রতারণার আশ্রয়। ফলে যা এমফিল থিসিস, অনেকাংশে তা-ই পিএইচডি। আর এর মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক দ্রুততম সময়ে প্রভাষক থেকে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট অধ্যাপকের এমফিল থিসিসের শিরোনাম বাংলাদেশে মরমি সাহিত্য ও রুমী চর্চায় ছৈয়দ আহমদুল হকের অবদান। অন্য দিকে পিএইচডির শিরোনাম সৈয়দ আহমদুল হক ও বাংলাদেশে সুফিবাদ। আহমদুল হকের নামের বানানে এমফিল থিসিসে ‘ছৈয়দ’ এবং পিএইচডি থিসিসে ‘সৈয়দ’ লেখা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক একই সাথে এমফিল ও পিএইচডি গবেষক, যার জীবন ও কর্মের ওপর এমফিল ও পিএইচডি থিসিস লিখলেন তার নামটাই সঠিকভাবে লিখতে পারেননি। একই রেফারেন্স এমফিল থিসিসে পৃষ্ঠা নম্বর ব্যবহার করেছেন এক, পিএইচডি থিসিসে আরেক। আবার কোথাও দুই বা পাঁচ লাইনের উদ্ধৃতির জন্য রেফারেন্স উল্লেখ করেছেন ১০ পৃষ্ঠা। এসব অসঙ্গতির জন্য গবেষণার মানের কথা বাদ দিলেও নৈতিক স্খলনের বিষয়টি কোনোভাবেই এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ আছে বলে মনে হয় না।
এ দিকে পিএইচডির অনুসন্ধান করতে গিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, এই অধ্যাপকের এমফিল গবেষণার বৈধতা নিয়েও। এমফিল গবেষণার ১৩ নম্বর পৃষ্ঠা থেকে ১৭২ নম্বর পৃষ্ঠা পর্যন্ত অন্তত ৩৯টি কবিতা-কবিতাংশ ও উদ্ধৃতি রেফারেন্স উল্লেখ না করে নিজের নামে চালিয়ে দিয়েছেন। এসব উক্তি ও কবিতার অনেকগুলো আবার হুবহু কপি করেছেন পিএইচডি থিসিসেও। এ ছাড়াও পিএইচডি থিসিসের ২২ নম্বর পৃষ্ঠা থেকে ২৩৯ নম্বর পৃষ্ঠা পর্যন্ত অন্তত ১৬টি উক্তি ও উদ্ধৃতি চিহ্নিত করা গেছে যেগুলোর ক্ষেত্রে কোনো রেফারেন্স উল্লেখ করেননি। তার বিরুদ্ধে শেখ সাদী, রুমি, ইকবাল, শেকসপিয়ার, লালন, রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলের মতো মনীষীদের লেখা নিজের নামে চালিয়ে দেয়ার অভিযোগও উঠেছে।
এর আগেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষকের গবেষণা নিয়ে বড় ধরনের বিতর্কের সৃষ্টি হয়। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক ও শিক্ষিকার যৌথভাবে লেখা ‘এ নিউ ডাইমেনশন অব কলোনিয়ালিজম অ্যান্ড পপ কালচার : এ কেস স্ট্যাডি অব দ্য কালচারাল ইমপেরিয়ালিজম’ নামক আট পৃষ্ঠার একটি গবেষণা প্রবন্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সোস্যাল সায়েন্স রিভিউ’ নামে একটি জার্নালে প্রকাশিত হয়। কিন্তু তা ১৯৮২ সালের শিকাগো ইউনিভার্সিটির জার্নাল ক্রিটিক্যাল ইনকোয়ারিতে প্রকাশিত ফরাসি দার্শনিক মিশেল ফুকোর দ্য সাবজেক্ট অ্যান্ড পাওয়ার নামে একটি নিবন্ধ থেকে প্রায় পাঁচ পৃষ্ঠা হুবহু নকল বলে অভিযোগ। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে এক লিখিত অভিযোগের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এই জালিয়াতির কথা জানিয়েছিল ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো প্রেস।
শুধু মিশেল ফুকোই নন, বুদ্ধিজীবী অ্যাডওয়ার্ড সাঈদের ‘কালচার অ্যান্ড ইম্পেরিয়ালিজম’ গ্রন্থের পাতার পর পাতাও তারা হুবহু নকল করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ তদন্ত শেষে গঠিত ওই কমিটির প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়। প্রতিবেদনে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ার কথা বলা হয়। প্রায় তিন বছর পর সিন্ডিকেটের সভায় তদন্ত কমিটির রিপোর্ট উত্থাপন করা হয়। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‘প্লেজারিজমের যে অভিযোগ ছিল, আমাদের তদন্তে ‘দ্যাট হ্যাজ বিন প্রোভেন’। আমাদের তদন্তে তাদের যৌথভাবে লেখা ছয়টি গবেষণা নিবন্ধনে প্যারার পর প্যারা হুবহু নকল পাওয়া গেছে।’
শুধু তাই নয়; ৯৮ শতাংশ হুবহু নকল পিএইচডি গবেষণা অভিসন্দর্ভের (থিসিস) মাধ্যমে ‘ডক্টরেট’ ডিগ্রি নেয়ার অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওষুধপ্রযুক্তি বিভাগের একজন সহযোগী বিরুদ্ধে। এই গবেষণার সহতত্ত্বাবধায়ক অভিযোগ করেছেন, একাধিকবার অনুরোধ করলেও সংশ্লিষ্ট গবেষক তাকে থিসিসের কোনো কপি দেননি।
জানা গেছে, ২০১৪ সালের দিকে ‘টিউবারকিউলোসিস অ্যান্ড এইচআইভি কো-রিলেশন অ্যান্ড কো-ইনফেকশন ইন বাংলাদেশ : অ্যান এক্সপ্লোরেশন অব দেয়ার ইমú্যাক্টস অন পাবলিক হেলথ’ শীর্ষক ওই নিবন্ধের কাজ শুরু করেন সংশ্লিষ্ট অধ্যাপক। তার পিএইচডি অভিসন্দর্ভে চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ ওঠার পর তা সংগ্রহ করে যাচাই করেছে দেশের প্রথম শ্রেণীর একটি জাতীয় দৈনিক। গবেষণার জালজালিয়াতি শনাক্ত করার বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় সফটওয়্যার টার্নইটইনের মাধ্যমে অভিসন্দর্ভটি যাচাই করে দেখা গেছে, ২০১২ সালে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী-গবেষকের জমা দেয়া একটি ‘স্টুডেন্ট পেপারস’-এর সাথে সংশ্লিষ্ট অধ্যাপকের নিবন্ধের ৯৮ শতাংশ হুবহু মিল রয়েছে। এটিসহ মোট ১৭টি জার্নাল, আর্টিক্যাল ও গবেষণাপত্রের সাথে নিবন্ধনটির বিভিন্ন অংশের উল্লেখযোগ্য মিল পাওয়া গেছে, যেগুলোর সবই তার অভিসন্দর্ভের আগে প্রকাশিত হয়েছে। টার্নইটইন সফটওয়্যার থেকে পাওয়া গবেষণার অরিজিন্যালিটি রিপোর্টসহ এ সংক্রান্ত সব তথ্য ও নথিপত্র সংশ্লিষ্ট দৈনিকের কাছে রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।
পত্রিকাটি অনুসন্ধান শুরু করার পর অভিযুক্ত অধ্যাপক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারে সংরক্ষিত নিজের অভিসন্দর্ভের কপিটি ‘অবৈধ’ প্রক্রিয়ায় নিয়ে ঘষামাজা করেছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার প্রমাণ মিলেছে বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারের ভারপ্রাপ্ত গ্রন্থাগারিকের বক্তব্যে। তিনি দাবি করেছেন, ‘অতি সম্প্রতি সংশ্লিষ্ট গবেষকের পিএইচডি অভিসন্দর্ভে কিছু ঘষামাজা নজরে এসেছে। যা নিঃসন্দেহের বড় ধরনের চৌর্যবৃত্তি।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষকদের বিরুদ্ধে গবেষণায় বড় ধরনের নয়-ছয় ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। তদন্তে এসব অভিযোগের প্রমাণও পেয়েছে তদন্ত কমিটি। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, কথিত গবেষণার নামে যারা এসব অপকর্ম করেছেন এখন পর্যন্ত কাউকেই শাস্তির আওতায় আনা হয়নি। জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ৭৩-এর অধ্যাদেশ অনুযায়ী পরিচালিত হয়। কিন্তু সেখানে জালিয়াতির শাস্তি নিয়ে নির্দিষ্টভাবে কিছু বলা নেই। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রতিনিয়তই এই ধরনের ঘটনা ঘটছে।
সাম্প্রতিক সময়ে সে প্রবণতা উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। কিন্তু সুনির্দিষ্ট আইন না থাকার কারণেই নাকি এসব নকলনবিসদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাচ্ছে না। যদিও তদন্ত কমিটি গবেষণায় অনিয়মরোধে নীতিমালা তৈরি করতেও সুপারিশ করেছে বলে জানা গেছে। কিন্তু দীর্ঘদিনেও এর কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি লক্ষ করা যায়নি। ফলে ভুয়া গবেষণার মাধ্যমে যারা চাকরি বা পদোন্নতি নিয়েছেন তারা এখনো রয়েছেন বহাল তবিয়তে। তাই আমাদের শিক্ষা ও উচ্চতর গবেষণাকে কলঙ্কমুক্ত করতেই এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি উঠেছে সব মহল থেকেই। অন্যথায় আগামী দিনে এই প্রবণতা আরো বাড়বে; অনিশ্চিত হয়ে পড়বে উচ্চশিক্ষার ভবিষ্যৎ! বহির্বিশ্বে আমাদের শিক্ষা ও গবেষণা হবে প্রশ্নবিদ্ধ।
smmjoy@gmail.com
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা