১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০২ মাঘ ১৪৩১, ১৫ রজব ১৪৪৬
`

ভারতের জিডিপিতে অতুষ্টি

-

অর্থনীতিতে মাপামাপির রেওয়াজ বলে কিছু তো থাকারই কথা। বাইরের লোককে তা দেখাতে চাই আর না চাই অন্তত নিজের তো জানা দরকার যে অর্থনীতি আগাল না পিছাল এবং কতটুকু। তাই সব দেশেরই স্ট্যাটিস্টিক্যাল ব্যুরো নামের প্রতিষ্ঠান থাকে। কোন পদ্ধতিতে কেমনে কী মাপবে তারও ছকে বাধা নিয়ম আছে। দুনিয়ার সব রাষ্ট্র প্রায় একই নিয়মে মাপামাপি করে থাকে আরো একটা কারণে। সেটা হলো, দুনিয়াতে আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংক নামে গ্লোবাল অর্থনৈতিক বহুরাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের উপস্থিতি; সেই ১৯৪৫ সাল থেকে যার শুরু। বেচাকেনা, পণ্য বিনিময় ও ব্যবসাবাণিজ্যের আন্তঃরাষ্ট্রীয় ও গ্লোবাল হয়ে ওঠা বাস্তব করে তুলেছে এ দুই প্রতিষ্ঠান। যদিও এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আছে যেগুলোর অনেকটাই সত্যি। কারণ এই অসম ও ব্যাপক বৈষম্যের দুনিয়াতে কোনো গ্লোবাল বাণিজ্য চালু রাখতে বা একটা সিস্টেম চালু রাখতে গেলে সেখানেও ওই বৈষম্য থাকবেই। সিস্টেমের সুবিধাগুলো গরিব রাষ্ট্রের অনুকূলে হবে না এটাই স্বাভাবিক। এক কথায় ওই দুই প্রতিষ্ঠান ব্যাংকের মালিকানার মতোই; যার যত শেয়ার মালিকানা তার গলার স্বর তত উঁচু। এটাই মূল কারণ। কিন্তু সে জন্য গ্লোবাল বাণিজ্য ব্যবস্থার দরকার নেই বা আইএমএফ-বিশ্বব্যাংক নিপাত যাক ধরনের স্লোগান তোলা হবে নির্বুদ্ধিতা এবং আত্মঘাতী। কারণ আমাদের দরকার বৈষম্যহীন বা অন্তত কম বৈষম্যমূলক এক গ্লোবাল বাণিজ্য ব্যবস্থা। তাই বিদ্যমান ব্যবস্থা সম্পর্কে আপত্তি ও বৈষম্যের কথা বলে যেতে হবে।

এবারের ঘটনার শুরু। বাংলাদেশ জিডিপির মাপে ভারতকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। যেমন, ভারতের মিডিয়ার মতোই প্রথম আলোও লিখছে, ‘ভারতে তোলপাড়, বাংলাদেশে আত্মতৃপ্তি।’ আইএমএফের এক প্রতিবেদন নিয়েই সব আলোচনা। বাংলাদেশ তো আগেই জিডিপিতে পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে দিয়েছিল। এবার মাথাপিছু জিডিপিতে পেছনে ফেলতে যাচ্ছে ভারতকে। ভারত কেন পিছিয়ে পড়ল, তার চেয়েও বড় আলোচনা, বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়ে গেল।

কিন্তু কোনো দেশ অর্থনীতিতে ভালো করবে কেউ খারাপ, তাতে তোলপাড় হবে কেন? এর একটা সাধারণ জবাব হলো, এখন করোনার কালের অর্থনীতি পাক্কা সাত মাস বসে পার করেছে, তাই বিশ্বজুড়েই একটা মন্দা বয়ে যাচ্ছে। কাজেই এটা আর কতটা খারাপ হতে পারে এ নিয়ে মাপামাপির মাতামাতি তো হবেই। কিন্তু না ভারতের এই মাতামাতি এর চেয়েও বেশি এবং কারণও ভিন্ন।

প্রথম কারণ
ভারতের মাতামাতিটা আইএমএফ নিজেই তৈরি করেছে। কেন? ভারতের অর্থনীতি জাগছে না ডুবছে সেটা আইএমএফের বিশেষ আগ্রহের বিষয়। জেনুইন প্রকাশ্য কারণ হলো, ভারতের জনসংখ্যা- ১৩৮ কোটি, বিশাল ফিগার। এক বিরাট বাজার। ফলে হবু গ্লোবাল নেতা হওয়ার ন্যূনতম শর্ত পূরণ করা গুটিকয়েক দেশের একটা ভারত। যদিও এটুকুতেই সে কোনো একদিন গ্লোবাল নেতা হবেই তা নিশ্চিত হয় না। আবার অন্য দিকে আইএমএফ নিজের জন্মের ম্যান্ডেটেই বলা আছে যে, ১৯৩০ সালের মতো গ্লোবাল মহামন্দা যেন দুনিয়াতে আর না আসে সেটা ঠেকাতেই মূলত এই আইএমএফের জন্ম। কাজেই ভারতের অর্থনীতি ভালো করা মানেই গ্লোবাল অর্থনীতিতে এর ইতিবাচক প্রভাব থাকবে- যেটা আইএমএফের নিজের ইচ্ছা ও অস্তিত্বের পক্ষে এক সাফাই। আবার অন্য দিকে আইএমএফের অপ্রকাশ্য ভারতপ্রীতির একটা দিক আছে। সেটির কারণ হলো, আইএমএফের রিপ্লেসমেন্ট প্রতিষ্ঠান হিসেবে ব্রিকস উদ্যোগ সক্রিয় হয়ে গেছে চীনের নেতৃত্বে। যদিও ভারত সেখানে চীনের প্রধান সহযোগী। আবার এটাও সত্যি চীন এখনো আইএমএফের বড় সদস্যই, যদিও চীনের বড় মালিকানা শেয়ার কিনে-নেয়া আমেরিকা ঠেকিয়ে দিয়েছে। তবু নতুন গ্লোবাল নেতা চীনের সাথে আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের সম্পর্ক কোথায় গিয়ে ঠেকে তা নিয়ে অপ্রকাশ্য অস্বস্তি থাকা অস্বাভাবিক নয়।

সব মিলিয়ে ভারতের অর্থনীতির প্রতি আইএমএফের নজর থাকা আছে। করোনার আগে থেকেই ব্যাপকভাবে ডুবতে থাকা ভারতের অর্থনীতি করোনার প্রভাবে চরমভাবে বিপর্যস্ত। গত কোয়ার্টারে ভারতের জিডিপি ছিল নেগেটিভ ২৪%, যেটা অর্থবছর শেষে গড়ে প্রায় নেগেটিভ ১০.৪% হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আর সেটা প্রকাশ করতে গিয়েই আইএমএফ বাংলাদেশকে টেনে এনে একটা তুলনা করে বসেছে। ব্যাপারটাকে আরো করুণ করে তুলেছে কলকাতার এক মানুষের দুঃখ প্রকাশ করা টুইট-বার্তা। তিনি বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু। লিখেছেন, ‘আইএমএফের প্রাক্কলন দেখাচ্ছে যে ২০২১ সালে বাংলাদেশ মাথাপিছু জিডিপিতে ভারতকে ছাড়িয়ে যাবে। যেকোনো উদীয়মান অর্থনীতির ভালো করাটা সুসংবাদ। তবে অবাক করা বিষয় হচ্ছে, পাঁচ বছর আগেও যে ভারত ২৫ শতাংশ বেশি এগিয়ে ছিল, সেই ভারত এখন পিছিয়ে যাচ্ছে। এখন ভারতের প্রয়োজন একটি সাহসী আর্থিক ও মুদ্রানীতি তৈরি করা।’ এসব তথ্য মোদির মাজা ভেঙে দিয়েছে। বিশেষ করে যখন আগামী আট মাসের মধ্যে মোদিকে বিহার, পশ্চিমবঙ্গ আর আসামের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য-নির্বাচন মোকাবেলা করতে হবে। বিরোধীরা এই প্রথম মোদিকে শক্ত ডাটা দিয়ে ঘায়েল করার সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে। অতএব অনেকেই মোদিকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসছে।

দ্বিতীয় কারণ
মিথ্যা বলার বিরাট অসুবিধা হলো কখনো তা নিজেরই বিরুদ্ধে হাজির হয়ে যায়। ভারতের রাজনীতিকদের বিশেষ করে মোদির অবস্থা হয়েছে তাই। ভারতের হিন্দুমনের একটা কমন ব্যাখ্যা হলো, সাতচল্লিশের ভারতভাগে যেন শুধু বাংলাদেশ থেকেই ভারতে মাইগ্রেশন হয়েছে। উল্টাটা না। ভিত্তিহীন হলেও এই কথা তারা সেই সাতচল্লিশ থেকে আউড়ে চলেছে। একালে দুটি পক্ষের রাজনীতি এমন ভাষ্যের উপর দাঁড়িয়ে আছে- আসামের মুসলমানবিদ্বেষী অসমীয় এবং বোড়ো জাতিবাদ আর সারা ভারতজুড়ে বিজেপির মোদি-অমিতের বয়ান তো আছেই। মিথ্যা বয়ান দিয়ে হিন্দুমনকে খেপিয়ে মুসলমান খেদানোর নাগরিকত্ব আইনের পক্ষে সাফাই তৈরি করতে মোদি-অমিত ঘুসপিটা (অনুপ্রবেশকারী মুসলমান), উইপোকাকে পিষে মেরে ফেলা, বঙ্গোপসাগরে ছুড়ে ফেলা ইত্যাদির বয়ান নিয়ে এসেছে। যেটা দাঁড়িয়ে আছে এই ভিত্তিতে যে বাংলাদেশটা এতই গরিব যে সমৃদ্ধ ও মহান ভারতের হিন্দুদের সম্পদ যেন এরা খেয়ে ফেলছে বা খেতে দলে দলে এখনো ভারতে যাচ্ছে। আর এটাই ভারতের প্রধান সমস্যা। তাই এর সমাধানে মোদি মুসলমান খেদানো নতুন নাগরিকত্ব আইন করছেন। হিন্দুমন (ভোটার) যেন ‘দেশ রক্ষার্থে’ এই ভেবে ঘৃণায় জেগে ওঠে, আর এ কাজে সহায়তা করতে শুধু বিজেপিকেই ভোট দেয়- এই হলো বিজেপির ভোটের রাজনীতির মূল বয়ান।

কিন্তু আইএমএফের ইকোনমিক আউটলুক রিপোর্ট বাংলাদেশের সাথে তুলনায় ভারতের অর্থনীতি কত পিছনে গেছে; আর কৌশিক বসুর প্রকাশিত দুঃখে ২৫ বছরের পরাজয়ের বাণী ইত্যাদি সবই মোদিকে একেবারে ন্যাংটা করে দিয়েছে। এখন নির্বাচন সামলানো কঠিন হয়ে যাবে। কারণ, ভারত বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে পড়া অর্থনীতির দেশ এটা যখন আইএমএফের মতো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান তথ্যপ্রমাণ দিয়ে সাক্ষ্য দেয় তার মানে তো মোদির বয়ান একেবারেই ফুটা হয়ে যাওয়া, তার নাগরিকত্ব আইনসহ পুরো হিন্দুত্ববাদের বয়ানে মারাত্মক ধস নেমে আসা। মোদির মুখ্য বয়ানই যদি মিথ্যা হয়ে যায় তবে পশ্চিমবঙ্গে আর আসামে মোদি-অমিত নির্বাচন করবেন কী দিয়ে, কোন বয়ানে? এই হলো তাদের মারাত্মক সঙ্কটের দিকটা। ফলে তারা এখন দিগি¦দিক শূন্য হয়ে জিডিপি মাপামাপি-এটারই ত্রুটি খুঁজতে নেমে পড়েছে।

জিডিপির সমালোচনা
দুনিয়ার কোনো একটা স্ট্যাটিস্টিক্যাল ফিগার, গ্রাফ বা ম্যাপ সব তথ্য দিতে পারে না, সব প্রশ্নের তা জবাব নয়। অর্থাৎ সব ফিগার বা গ্রাফেই সীমাবদ্ধতা থাকে। জিডিপির পরিমাপও তেমনই।

জিডিপি বা বাংলায় মোট দেশজ উৎপাদন-এর মানে হলো গত অর্থবছরের তুলনায় এবার মোট পণ্য ও সেবা মূল্যে (অ্যাডেড ভ্যালু) কতটুকু বেড়েছে আর তা মুদ্রায় (সাধারণত ডলারে) কত, এরই প্রকাশ। তবে সাথে আমদানি করা পণ্য ও সেবা যা এসেছে তা বাদ দিয়ে হিসাব করতে হবে, যে কারণে ডোমেস্টিক বা দেশজ শব্দটার ব্যবহার। এর পরে দেশের মোট জিডিপিকে দেশের জনসংখ্যা দিয়ে ভাগ করে গড়ে মাথাপিছু জিডিপির ধারণা তৈরি করা হয়। এটি একেবারেই রাফ বা মোটের ওপর ধরনের ধারণা। এখানে মাথাপিছু মানে সমাজের প্রতিটা মানুষের এটা ন্যূনতম আয় তা দাবি করা হচ্ছে না; বরং হরেদরে সবাই সমান হলে কি হতো এমন একটা গড় ধারণা মাত্র। এ ছাড়া জিডিপির আরেক সীমাবদ্ধতা হলো, সব দেশে ও মুদ্রার ক্রয়ক্ষমতা (পারচেসিং পাওয়ার) এক নয়। ফলে দুটি দেশের মধ্যে জিডিপির তুলনা করতে বসা- জিডিপি পরিমাপের এক বিরাট সীমাবদ্ধতা। এরই কারেকশন হিসেবে বিশ্বব্যাংক ইতোমধ্যে পিপিপি (পারচেসিং পাওয়ার প্যারিটি) সূত্র প্রয়োগ করে সব রাষ্ট্রের জিডিপিকেই তুলনাযোগ্য করে এনেছে।

প্রগতিবাদ ও জিডিপি : এবার আইএমএফের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০২০ অর্থবছর শেষে বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি হবে ১৮৮৮ ডলার, আর ভারতের মাথাপিছু জিডিপি হবে ১৮৭৭ ডলার। আর এই কথাটাতেই বিজেপি ও আমাদের দেশের ভারতপ্রীতি থাকা কর্তব্য মনে করা কিছু মানুষের চিত্ত জ্বলে গেছে।

আসলে ব্যাপারটা হলো, গড় মাথাপিছু আয় কত সেটি হলো দেশের সাথে দেশের তুলনার প্রয়োজনে কিছুটা অন্তত তুলনীয় করতে কী করা যায় সেই অর্থে একটা মাপক। মোট আয় ভাগ মোট জনসংখ্যা, এই সোজা পদ্ধতিতে। আগেই বলেছি, পদ্ধতিমাত্রেরই সীমাবদ্ধতা থাকবেই। এটা মনে করা মারাত্মক ভুল যে কোনো দেশের মানুষের ন্যূনতম আয় আর মাথাপিছু জিডিপি এক। অবশ্যই তা নয়। বরং মাথাপিছু আয় আর মানুষের ন্যূনতম আয়ের ফিগার অথবা শিল্পশ্রমিকের ন্যূনতম মজুরির সাথে তুলনা করলেই বোঝা সম্ভব সমাজের আয়-বৈষম্য কত মারাত্মক।

প্রগতিবাদিতার আড়ালে সিপিডি
এটা বেশ কৌতুকের যখন একটা থিংকট্যাংক বা অর্থনীতিতে দাতা প্রকল্প অথবা অবকাঠামো প্রকল্পের কনসাল্টেন্সি প্রতিষ্ঠান একালে একই সাথে নিজেকে ‘প্রগতিবাদী’ সংগঠন হিসেবেও তুলে ধরতে চায়। অথচ তাদের ভাষ্যমতে কনসাল্টেন্সি আর কমিউনিস্টগিরি এক সাথে চলার কথা নয়। ভারতের প্রতি প্রীতিবশত তারা এ কাজ করেছে। বাংলাদেশের সিপিডি আইএমএফের রিপোর্টে মোদির বেড়াছেড়া অবস্থা দেখে আর বসে থাকতে পারেনি। যদিও সিপিডির এমন কাজ নতুন নয়। ২০০৪ সালে সিপিডি নির্বাচনে ‘সৎ প্রার্থী দিতে হবে’ এই আন্দোলন করেছিল। এরপর ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার হয়ে বাংলাদেশকে ভারতের শিখণ্ডি করে এখন তা পরিণতিতে নিশীথ ভোটের সরকার হয়ে চলছে। সেকালের এক কোটি টাকার দুর্নীতি উচ্ছেদের দুদক এখন দুর্নীতি মাপে হাজার কোটিতে। ভারতের নর্থ-ইস্ট আসামকে দিতে চায় বিনা পয়সার করিডোর, পোর্ট, সাথে প্রায়োরিটি ইত্যাদি। অথচ সে সময় সিপিডি গালাগালি করে তাদের বিরোধিতাকারীদের বললেন ‘ওরা মূর্খ’! অথচ আজ যখন বিনা পয়সার প্রায়োরিটিতে পোর্ট সার্ভিসে গিয়ে ঠেকেছে সব কিছু তখন সিপিডি চেয়ারম্যান রেহমান সোবহান একটা বিবৃতি দিয়েও এর বিরোধিতা করেননি। এইভাবে বয়ান-চিন্তায় ও নৈতিকভাবে দেউলিয়া সিপিডি এখন দেখছি মোদির পক্ষে দাঁড়িয়েছে। তাদের দাবি, আইএমএফের রিপোর্ট পিপিপির ধারণা ছাড়াই জিডিপি হিসাব কষেছে। অথচ ফ্যাক্টস হলো, আইএমএফ তার World Economic Outlook (WEO) রিপোর্ট পিপিপি অ্যাডজাস্টমেন্ট ব্যবহার করে তা করা শুরু করেছিল সেই ১৯৯৩ সাল থেকেই। তাহলে কিসের ভিত্তিতে সিপিডির এই দাবি যে, এবারের ১৩ অক্টোবরের রিপোর্ট পিপিপি ব্যবহার ছাড়াই জিডিপি মাপামাপি করেছে? এর প্রমাণ কী? এ ছাড়া আবার আইএমএফ হঠাৎ ব্যতিক্রম করে এবার পিপিপি ব্যবহার করবে না কেন, এর ব্যাখ্যা কী? এই ব্যাখ্যা না দিলে সিপিডির দাবি বিশ্বাসযোগ্য হবে না।

আবার বলা হয়েছে, এতে নাকি বাংলাদেশ আত্মতুষ্টিতে ভুগছে- ‘বাংলাদেশের আত্মতুষ্টিতে ভোগা ঠিক হবে না’। প্রথমত বাংলাদেশে পাবলিকের মধ্যে জিডিপি কোনো আলোচনার ইস্যুই নয়। আর আমাদের স্ট্যাটিস্টিক্স বিভাগে দলীয় লোকজন বসানো আর তা ম্যানিপুলেট করার পর থেকে স্বাধীনভাবে যারা জিডিপি নিয়ে আগ্রহী ছিলেন তারাও অনাগ্রহী হয়ে যায়। কারণ এদের ম্যানিপুলেশনের প্রধান কায়দা হলো জিডিপি তুলনার ভিত্তিবছর বদলে দেয়া। এতে আমাদের জিডিপি ২-২.৫% বাড়িয়ে দেখানো আছে বলে এখন মনে করা হয়। মজার কথা হলো, মোদিও ভারতে একই পার্সেন্টে তাদের জিডিপি ম্যানিপুলেট করেছেন। সার কথায় বাংলাদেশে আত্মতুষ্টিতে ভুগতে পারে একমাত্র সরকার, বাকি সবাই অনাগ্রহী। কিন্তু সেই সরকারও এখন বোঝে, তার সম্পর্কে পাবলিকের ধারণা এতই খারাপ যে তা কোনো আত্মতুষ্টি জাগবে না। তাই এবার সরকারও তেমন চেষ্টা করেনি।

লেখক : রাজনৈতিক বিশ্লেষক
[email protected]


আরো সংবাদ



premium cement
কুয়েটে ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ জুলাই ঘোষণাপত্র : যমুনায় বৈঠকে বসেছে বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন দলের প্রতিনিধিরা ই-বুকে মূসক অব্যাহতি দিলো এনবিআর গাজার যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে নতুন সমস্যা বকশীগঞ্জ বিয়ের ১৮ দিনের মাথায় নববধূর রহস্যজনক মৃত্যু এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা শুক্রবার গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপ নিশ্চিত, তবে... জাবিতে শিবিরের প্রকাশনা উৎসব : শিক্ষার্থীদের উপচে পড়া ভিড় সার্ভার সচল, সঞ্চয়পত্র বিক্রি শুরু প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির প্রধান উপদেষ্টার সংলাপে বিএনপি জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা

সকল