যুগের প্রয়োজনে ক্যাশ ওয়াক্ফ
- প্রফেসর ড. এম এ মান্নান
- ০২ অক্টোবর ২০২০, ১৯:০৯
ইসলামী বিধানের মৌলিক ভিত্তি কুরআন ও সুন্নাহ। যুগের প্রয়োজনে ও প্রেক্ষাপটে কোনো বিষয়ের যুগোপযোগী ব্যাখ্যা হতে পারে। তবে সেটিও হতে হবে কুরআর-সুন্নাহর আলোকে। সে কারণে কোনো ইনোভেনশন (Innovation) নেই, আছে ডিসকভারি (Discovery)। মানে অভিনব নতুন কিছু প্রবর্তন (Innovation) করা হলে তো ইসলামের মৌলিক ভিত্তিটিই আর থাকে না। কিন্তু কুরআন-সুন্নাহর ইঙ্গিত থেকে কিছু বের করে নিয়ে আসাই হলো ডিসকভারি। তাই ইসলাম এত গতিশীল। সে কারণেই ইসলামী আইনের অন্যতম উৎস ইজমাহ। এটা হলো ইসলামের গভীর জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তিদের মধ্যে আলোচনার ভিত্তিতে কোনো বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছা। সময়ের পরিক্রমায় এই ঐকমত্য পরিবর্তন হতে পারে। তখন সমসাময়িক ইসলামিক বিশেষজ্ঞরা আলোচনার ভিত্তিতে নতুন সমস্যার নতুন সমাধান দেন। এই আলোচনায় ঐতিহাসিক নজির দেখা হয়। এক মাজাহাবের ইমামের ব্যাখ্যার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে অন্যান্য ‘ইসলামিক স্কুল অব থট’-এর দিকেও নজর দেয়া হয়। যেমন আমরা সুন্নি ধারার অনুসারী হলেও ইসলামিক ব্যাংকগুলো যে মুদারাবা বা ‘কস্ট প্লাস’ ধারণার ভিত্তিকে কাজ করে সেটি দিয়েছেন ইমাম মালিকি রা:। সৌভাগ্য যে সব মাজহাবের স্কলারদের সাথে কাজ করার সুযোগ আমার হয়েছে। আইডিবির (ইসলামিক উন্নয়ন ব্যাংক, জেদ্দা) শরিয়াহ বোর্ডে সারা বিশ্ব থেকে ইসলামিক চিন্তাবিদদের বাছাই করে নিয়ে আসা হয়েছে। তারা ইজমার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত দিতেন। এর দু’টি উদাহরণ দিচ্ছি এখানে :
আইডিবির পেইড-আপ ক্যাপিটেল ছিল দুই বিলিয়ন ডলার। কিন্তু এই টাকা কোথায় রাখা হবে? তখন সিদ্ধান্ত হলো পশ্চিমা একটি ব্যাংকে এই টাকা রাখা হবে। কিন্তু এর তো সুদ আছে। ২% বা ৩% সুদ হিসাবেও অনেক টাকা। আমার যতটুক মনে আছে তখন এক বছরে আট মিলিয়ন ডলার সুদ পাওয়া গেল। এখন এই টাকা কী হবে তার জন্য শরিয়াহ বোর্ডের সিদ্ধান্ত চাওয়া হলো। সুদের টাকা শুনে এক বাক্যে সবাই হারাম, হারাম বলে তা নাকচ করে দিলো। আমি দেখি মহা মুশকিল। সুদের টাকা তো আর হালাল হবে না। কিন্তু এটা কী করা যায়। তখন আমি বিনয়ের সাথে শরিয়াহ বোর্ডের সদস্যদের কাছে কিছু প্রশ্ন রাখি। আমাকে ওনারা কিছুটা গুরুত্ব দিতেন। কারণ, আমার ইসলামিক অর্থনীতি সম্পর্কে কিছুটা ধারণা ছিল, দুই-একটি বইও তখন বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়ে কয়েকটি দেশে ইসলামিক অর্থনীতির পাঠ্যবই হিসেবে স্বীকৃতিও পেয়েছে। আমি তাদের অভিমতের সাথে পুরোপুরি একমত হয়ে পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে বললাম যে, আমরা যদি টাকাটা না-ও নিই তাহলে আইন অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট ব্যাংক এটা তার আয় হিসেবে দেখাতে পারবে না। এটা ব্যাংকের দায়। তখন ব্যাংক এই টাকা খ্রিষ্টান মিশনারিদের মধ্যে বিতরণ করবে। আমি বলি, আপনি যদি ওই টাকা না নেন তখন তারা মুসলিম দেশগুলোতে খ্রিষ্টান মিশনারিদের কাছে ওই টাকা পাঠাবে। ওই টাকা তখন আমাদের মুসলমানদের খ্রিষ্টান বানানোর কাজে ব্যয় করা হবে। অথবা তারা মুসলমানদের মধ্যে এমন কাজ করবে যাতে মুসলমানদের মাথা বিগড়ে যায়।
তাদের কাছে একটি সত্য ঘটনা তুলে ধরি। এটা ঘটেছিল তুরস্কে। ইস্তাম্বুল থেকে আসা আমার এক সহকর্মীর কাছে এটা জেনেছি। ইস্তাম্বুলের এক চার্চ থেকে খ্রিষ্টান মিশন পরিচালকদের কাছে দৈনন্দিন প্রয়োজন মেটানোর জন্য টাকা চাওয়া হয়। তখন চার্চের প্রিস্টকে ডেকে জিজ্ঞেস করা হলো, তারা কয়জন মুসলমানকে খ্রিষ্টান বানিয়েছে? পাদ্রি বলেন, আমরা তো কিছু করিনি। প্রশ্ন করা হলো, কেন? কারণ, ওরাতো আর মুসলমান নেই। পাদ্রি বললেন, আমি কাউকে খ্রিষ্টান ধর্মে দীক্ষিত করিনি সত্য; কিন্তু তাদের নানা অনুষ্ঠানে দাওয়াত দিয়ে নিয়ে আসি। খাওয়া দাওয়া করাই, গিফট দিই। এতে ওরা নামাজ-কালাম পড়া, ইসলাম মানা ছেড়ে দিয়েছে। সে বলল, কনভার্ট করতে সমস্যা আছে। মুসলমান হলেও তারা ইসলাম মানেটানে না। ওই এলাকায় আর কেউ ইসলাম অনুসরণ করে না। ইভানজেলিক কর্তৃপক্ষ দেখল এটাই তো ভালো। মুসলমানের লেবাস আছে, খ্রিষ্টান হয়নি। এরা মুসলমানদের বিরুদ্ধে কথা বললে সেটিই তো বেশি বিশ্বাসযোগ্য হবে।
খ্রিষ্টান মিশনারিরা বহু দেশে এ কাজ করেছে। আমাদের দেশেও এটা করা হচ্ছে না তার নিশ্চয়তা নেই। এই কাহিনী তুলে ধরে আমি বোর্ডকে বললাম, আমরা যদি এই টাকাটা নিয়ে অমুসলিম দেশগুলোর মুসলমানদের পেছনে ব্যয় করি তাহলে কেমন হয়? তখন শরিয়াহ বোর্ড সিদ্ধান্ত দেয়, হ্যাঁ, আইডিবি এই টাকা নিতে পারবে কিন্তু কোনো মুসলিম দেশে খরচ করতে পারবে না। শুধু অমুসলিম দেশে মুসলিম কমিউনিটির কল্যাণে ব্যয় করা যেতে পারে। আইডিবি তখন ওই টাকা ভারত, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, অনেক আফ্রিকান রাষ্ট্রে মুসলমানদের বিভিন্ন ফাউন্ডেশন, কল্যাণমূলক সংস্থার জন্য খরচ করার সিদ্ধান্ত নেয়। এভাবে অমুসলিম দেশগুলোতে আইডিবির কাজ শুরু হলো।
আইডিবির শরিয়াহ বোর্ড তখন বলল, জ্ঞানের যেসব শাখায় মুসলিম উম্মাহ পিছিয়ে আছে সেগুলোতে অগ্রগতির জন্য স্কলারশিপ দেয়া হবে এই টাকা থেকে। এসব বিষয়ের মধ্যে রয়েছে : নিউক্লিয়ার ফিজিক্স, মেডিসিন, এগ্রিকালচার, স্পেস, ইত্যাদি। প্রতি বছর এসব খাতে হাজার হাজার স্কলারশিপ দেয়া হয় আইডিবি থেকে।
দ্বিতীয় ঘটনাটি ১৯৮৮ সালের, যে বছর বাংলাদেশে প্রবল বন্যা হয়। ওই বন্যায় দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। বিশেষ করে মসজিদ, মাদরাসা, স্কুলসহ অন্যান্য অবকাঠামো বন্যার পানিতে ভেসে যায়। সরকার আইডিবির সহায়তা কামনা করে। আইডিবির প্রেসিডেন্ট আমাকে বললেন, মান্নান কী করা যায়। আমি বললাম, দেখেন সুদের টাকা দেয়া যায় কি না। তিনি বললেন, শরিয়াহ বোর্ডের অনুমতি ছাড়া দেয়া যাবে না; তুমি কিছু প্রশ্ন তৈরি করো। আমি শরিয়াহ বোর্ডের কাছে যথাযথ বিনয়ের সাথে বললাম, দেখেন সুদের টাকা তো অমুসলিম রাষ্ট্রে খরচ করার অনুমতি দিয়েছেন কিন্তু এখন তো মুসলিম রাষ্ট্রের অবস্থা আরো খারাপ। আমাকে বাংলাদেশী হিসেবে সবাই জানত। আমি বললাম, বাংলাদেশে ৮০ শতাংশ মুসলমান, প্রচুর গরিব মানুষ আছে। কিন্তু বন্যায় দেশটির মসজিদ, মাদরাসা থেকে শুরু করে বহু অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে। আমরা অমুসলিম দেশের জন্য খরচ করছি অথচ মুসলিম দেশগুলোতেই মুসলমানরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে। তাহলে আমাদের করণীয় কী? আমার বক্তব্য শুনে শরিয়াহ বোর্ড সিদ্ধান্ত নিলো হ্যাঁ, এখানেও সুদের টাকা তারা দেবে। তবে ওই টাকা একান্তভাবে শুধু অবকাঠামো নির্মাণের কাজে খরচ করতে হবে। কোনোভাবেই তা খাওয়া যাবে না। এটাও তখন সরকারের জন্য বড় সহায়তা ছিল।
এই উদাহরণ থেকে স্পষ্ট, ইসলামী আইন গতিশীল। মৌলিক উৎস ঠিক রেখে যুগের প্রয়োজনে এর নতুন ব্যাখ্যা দিতে পারেন ইসলামিক বিশেষজ্ঞরা। ধারণার বিকাশ ঘটছে। এরই ধারাবাহিকতায় ক্যাশ ওয়াক্ফ সার্টিফিকেট এসেছে। এটা ইসলামিক অর্থনীতিতে নতুন সংযোজন। বিশ্বের অনেক মুসলিম দেশে এই ধারণা বিস্তৃত হয়েছে এবং ক্যাশ ওয়াক্ফের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ছে।
ক্যাশ ওয়াক্ফের ধারণাগত দিক সম্পর্কে আগে লিখেছি। এবার অপারেশনগত দিকটি ব্যাখ্যা করছি। কেউ ক্যাশ ওয়াক্ফ করতে চাইলে তাকে কোনো ইসলামিক ব্যাংকে গিয়ে কি করতে হবে? এর দুই ধরনের হিসাব রয়েছে : মুদারাবা ক্যাশ ওয়াক্ফ হিসাব (MCWA) ও মুদারাবা ক্যাশ ওয়াক্ফ সঞ্চয়ী হিসাব (MCWSA)। যেসব শর্ত ও নিয়ম মেনে আমাদের দেশে সাধারণত ক্যাশ ওয়াক্ফ হিসাব পরিচালনা করা হয় :
১. এটি ওয়াকিফ (গ্রাহক) ও ইসলামী ব্যাংকের মধ্যে সম্পাদিত ইসলামী শরিয়াহভিত্তিক একটি মুদারাবা চুক্তি। ওয়াকিফ-এর পক্ষ থেকে ব্যাংক ওয়াক্ফ ব্যবস্থাপনা পরিচালনা করবে।
২. মুদারাবা ওয়াক্ফ জমা চিরস্থায়ী দান (Perpetual Endowment) হিসেবে গ্রহণ করা হয়, এ জন্য এই হিসাব খোলার পর আর বন্ধ করা যায় না এবং ওই হিসাবের বিপরীতে কোনো চেক বই ইস্যু করা হয় না।
৩. এখানে ওয়াকিফ/গ্রাহক হচ্ছে ‘সাহিব আল মাল’ (অর্থের মালিক) এবং ব্যাংক হচ্ছে ‘মুদারিব’ (কারবার সংগঠক)।
৪. ব্যাংক মুদারাবা তহবিল বিনিয়োগ করে প্রাপ্ত আয় থেকে ‘উচ্চ ওয়েটেজ’-এর ভিত্তিতে প্রদত্ত মুনাফা ওয়াকিফ কর্তৃক নির্ধারিত খাতে অথবা ব্যাংক কর্তৃক শরিয়াহ্ সম্মত যে কোনো খাতে ব্যয় করতে পারবে। এ ছাড়াও ইসলামী শরিয়াহ বর্ণিত মুদারাবা চুক্তির অন্যান্য শর্তাবলি প্রযোজ্য হবে।
৫. মুদারাবা ক্যাশ ওয়াক্ফ হিসাব (MCWA)-এর ক্ষেত্রে ওয়াকিফ ক্যাশ ওয়াক্ফ হিসাবে এককালীন ওয়াক্ফকৃত সমুদয় অর্থ (যেমন ৫,০০০/- টাকা বা তদূর্ধ্ব যেকোনো অঙ্ক) এককালীন জমা করতে পারবেন। ক্যাশ ওয়াক্ফের সমুদয় অর্থ জমা হওয়ার পর ব্যাংক কর্তৃক ওয়াকিফকে একটি ক্যাশ ওয়াক্ফ সার্টিফিকেট দেবে। অথবা, মুদারাবা ক্যাশ ওয়াক্ফ সঞ্চয়ী হিসাব (MCWSA)-এর ক্ষেত্রে ওয়াকিফ সঞ্চয়ী হিসাবের মতো একটি ওয়াক্ফ হিসাব খুলে ক্যাশ ওয়াক্ফের মোট পরিমাণ ঘোষণা করে যেকোনো সময় যেকোনো পরিমাণ টাকা জমা করতে পারবেন। ওয়াকিফ ঘোষিত সমুদয় অর্থ ব্যাংকে জমা হওয়ার পর তাকে ক্যাশ ওয়াক্ফ সার্টিফিকেট দেয়া হবে।
৬. (বর্তমানে আমাদের দেশের ব্যাংকগুলোতে প্রচলিত) নিম্নবর্ণিত পাঁচটি খাতের অন্তর্ভুক্ত ৩৪টি উপ খাত যেমন : (ক) পরিবার পুনর্বাসন (খ) শিক্ষা ও সংস্কৃতি (গ) স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা (ঘ) সামাজিক উপযোগিতা (ঙ) জাকাত প্রাপ্তির উপযুক্ত ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের পুনর্বাসন, মুনাফা বণ্টনের একটি সাধারণ নির্দেশনা হিসেবে বিবেচিত হবে। জেনারেল ক্যাশ ওয়াক্ফের ক্ষেত্রে ওই হিসাবের মুনাফার অর্থ ব্যাংক কর্তৃক উল্লেখিত পাঁচটি খাতের যেকোনো খাতে অথবা শরিয়াহসম্মত অন্য কোনো খাতে ব্যয় করতে পারবে। অন্য দিকে স্পেসিফিক ক্যাশ ওয়াক্ফের ক্ষেত্রে ওয়াকিফ কর্তৃক মুনাফা কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের কাছে প্রেরণ করার নির্দেশনা প্রদান করা হলে সে ক্ষেত্রে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ওই হিসাবের মুনাফা উপকারভোগী হিসেবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের বরাবর প্রেরণের ব্যবস্থা করবে।
৭. ক্যাশ ওয়াক্ফ থেকে অর্জিত মুনাফা উল্লেখিত যেকোনো খাতে বা ওয়াকিফ কর্তৃক নির্ধারিত খাতে ব্যয় করা হবে। অব্যয়িত মুনাফা মূল ওয়াক্ফ হিসাবের সাথে স্বয়ংক্রিয়ভাবে যোগ করা হবে এবং তার ওপর যথানিয়মে মুনাফা অর্জিত হবে।
৮. ওয়াকিফ ব্যাংকে রক্ষিত তার অন্য যেকোনো হিসাব থেকে নির্দিষ্ট হারে ক্যাশ ওয়াক্ফ হিসাবে নিয়মিতভাবে অর্থ স্থানান্তরের জন্যও ব্যাংককে নির্দেশ দিতে পারেন।
৯. ওয়াকিফের মৃত্যু হলে ওয়াক্ফ হিসাবের মুনাফা তার নির্দেশিত খাতে ব্যয় করা হবে। এ ক্ষেত্রে ঘোষিত পরিমাণের চেয়ে কম অর্থ জমা হয়ে থাকলে মৃতের উত্তরাধিকারী (গণ) বাকি অংশ জমা দিতে পারবেন। উত্তরাধিকারী যদি বাকি অংশ জমা দিতে না পারেন তাহলে তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওয়াক্ফ হিসাবের জমাকৃত স্থিতির ওপর ক্যাশ ওয়াক্ফ সনদ প্রদান করা হবে।
মুনাফা বণ্টনের পাঁচটি খাত ও এর উপ খাতগুলো হচ্ছে :
পরিবার পুনর্বাসন :
১. দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর অবস্থার পরিবর্তন
২. শারীরিকভাবে পঙ্গু/অক্ষমদের এবং অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন
৩. ভিক্ষুক পুনর্বাসন
৪. দুস্থ মহিলাদের পুনর্বাসন
৫. শহরের বস্তিবাসী দরিদ্র জনগোষ্ঠীর অবস্থার উন্নয়ন।
শিক্ষা-সংস্কৃতি :
৬. এতিমদের শিক্ষা, যেমন : বিনামূল্যে শিক্ষা উপকরণ ও পোশাক বিতরণ
৭. দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য যুগোপযোগী শিক্ষার বিস্তার ও উন্নয়ন
৮. গৃহে শিশুদের অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা সুবিধা প্রদান, মায়েদের শিক্ষা সুবিধা কর্মসূচি
৯. শারীরিক শিক্ষা ও খেলাধুলার সুযোগ
১০. ইসলামী সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং শিল্পকলার বিকাশ ও উন্নয়ন
১১. দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা
১২. বৃত্তির আকারে মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষাক্ষেত্রে সহযোগিতা প্রদান।
১৩. উচ্চতর কারিগরি শিক্ষায় সহযোগিতা প্রদান
১৪. দুর্গম ও অবহেলিত অঞ্চলে শিক্ষাবিস্তারে সহযোগিতা প্রদান
১৫. কোনো নির্দিষ্ট মাদরাসা/স্কুল/ কলেজকে অর্থায়ন
১৬. মেধাবী প্রজন্মের জন্য সুশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ বৃদ্ধি
১৭. পিতা-মাতা এবং যেকোনো পূর্বসূরির স্মৃতি রক্ষার্থে শিক্ষা, গবেষণা, ধর্ম এবং সমাজ সেবার ক্ষেত্রে যেকোনো প্রকল্পে সহযোগিতা প্রদান
১৮. ‘শিক্ষা চেয়ার’ প্রদান।
স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাসেবা :
১৯. গ্রামীণ চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা প্রদান
২০. বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ (গৃহ, বস্তি, স্কুল, মসজিদ প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে)
২১. হাসপাতাল ও ক্লিনিক প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন চিকিৎসা কর্মসূচি পরিচালনা, বিশেষ করে গরিবদের জন্য
২২. স্বাস্থ্য গবেষণায় অনুদান, নির্দিষ্ট রোগের ক্ষেত্রে গবেষণা।
সামাজিক উপযোগিতা :
২৩. ঝগড়া ও কলহ নিরসন (গ্রাম্য মামলা/ মোকদ্দমা)
২৪. দুস্থ মহিলাদের ((Destitute Women) আইনগত অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আইনগণ সহযোগিতা প্রদান ২
৫. দরিদ্র মেয়েদের যৌতুকবিহীন বিবাহ অনুষ্ঠানে সহযোগিতা প্রদান
২৬. গ্রামের রাস্তাঘাট ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির রক্ষণাবেক্ষণ
২৭. শান্তিপ্রিয় অমুসলিমদের সহযোগিতা প্রদান
২৮. মাদকাসক্তি, জুয়া এবং অন্যান্য সামাজিক অনাচার যেমন চুরি ও বিবিধ অসামাজিক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি ও বন্ধের ব্যবস্থা করা
২৯. সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠান নির্মাণ, স্থাপন ও উন্নয়ন
৩০. আয় উৎপাদনকারী (Income Generating) কর্মসূচির মাধ্যমে নির্দিষ্ট মসজিদ/মসজিদ-সম্পত্তির উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণ
৩১. আয় উৎপাদনকারী কর্মসূচির মাধ্যমে নির্দিষ্ট কবরস্থানের রক্ষণাবেক্ষণ
৩২. আয় উৎপাদনকারী কর্মসূচির মাধ্যমে ঈদগাহের উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণ
৩৩. নওমুসলিমদের পুনর্বাসন।
জাকাত প্রাপ্তির উপযুক্ত ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের পুনর্বাসন :
৩৪. কুরআনে বর্ণিত জাকাত পাওয়ার যোগ্য আটটি খাত যেমন : ফকির, মিসকিন, জাকাত ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত/কর্মরত কর্মচারী, যাদের অন্তর দ্বীনের প্রতি অনুরাগী করা প্রয়োজন, দাস মুক্তি, ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি, আল্লাহর পথে জিহাদকারী ও মুসাফিরের মধ্যে বণ্টন করা।
এ ছাড়াও ওয়াকিফ শরিয়াহসম্মত যেকোনো সমাজকল্যাণ ও সেবামূলক খাত নিজ থেকে উল্লেখ করতে পারেন।
আমার এই লেখা পড়ে কেউ যদি ক্যাশ ওয়াক্ফ করতে উদ্বুদ্ধ হন তাহলে তার আরো কোনো প্রশ্ন থাকলে আমার সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন। আমি তার উত্তর দেবো।
লেখক : প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড; সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ, ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক, জেদ্দা
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা