২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

‘এটা খুব স্ট্রংলি দেখতে হবে স্যার’

প্রদীপ কুমার দাশ - ছবি সংগৃহীত

ওসি প্রদীপকে দেখা যাচ্ছে তিনি একজন ‘স্যারের’ সাথে চলন্ত ভ্যান থেকে কথা বলছেন। তার বক্তব্যের বিষয়বস্তু এবং বলার ধরন দেখে অনুমান করা যাচ্ছে, তিনি শঙ্কিত নন। কিন্তু স্যারকে বলছেন, ‘তারা আমাদের ইচ্ছামতো পিটাইছে, কারেন্টের শক দিছে। এটা অত্যন্ত স্ট্রংলি দেখতে হবে।’ আরো কিছু কথা মোবাইলে ‘স্যার’কে জানানোর পর তিনি শরীরের দুটো অংশে জখমের চিহ্ন দেখানোর চেষ্টা করলেন। দীর্ঘক্ষণ বসে থাকলে শরীরের কোনো অংশ একটু মথিত হওয়ার মতো কিছু মনে হলো। পাশে থাকা লিয়াকতও প্রদীপের মতোই সুস্থ স্বাভাবিক। তিনিও প্রদীপের একই দাবিকে উত্থাপন করলেন।

আমরা যদি বাংলাদেশের গত এক দশকের মানুষের প্রতি আমাদের বিচারব্যবস্থার চিত্র দেখি তার সাথে এ ঘটনার তুলনা হতে পারে। আমাদের চোখের সামনে ভেসে উঠবে এ দেশের বহু রাজনীতিকের বিরুদ্ধে আনা মামলা গ্রেফতার রিমান্ডের সেসব ছবি। ওইসব ঘটনায় সাধারণত দেখা গেছে, একজন মানুষকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। তিনি সুস্থ স্বাভাবিক ছিলেন। পুলিশ হেফাজত থেকে আদালতের উপস্থিত করানোর সময় দেখা গেল, তিনি আর হাঁটতে পারছেন না। তাকে স্ট্রেচারে করে আনা হচ্ছে। কখনো তাকে কয়েকজনে মিলে পাঁজাকোলে করে অবচেতন অবস্থায় আদালতের সামনে হাজির করা হলো। পুলিশের দীর্ঘ রিমান্ডের পর একজন মানুষকে যখন আদালতে আনা হতো মানুষটিকে আর চেনা যেত না। অল্প কয়েক দিনের মধ্যে ওইসব মানুষের জীবনীশক্তি যেন কিভাবে হারিয়ে যেত। কী এমন আচরণ তাদের সাথে করা হতো যার ফলে মানুষগুলোর হাড়গোড় মুচড়ে যেত। অনেক সম্মানিত পরিচিত মানুষেরও এই দশা হতে দেখা গেছে। যাদের ওপর পুলিশের এমন অমানবিকতা নেমে আসত তাদের বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল অফেন্সের সুনির্দিষ্ট কারণটিও জানা যেত না। অর্থাৎ তারা কোনো ফৌজদারি অপরাধ করেছেন এমনটি তাদের রেকর্ড থাকত না। তার পরও কেন এই সাধারণ মানুষের ওপর এমন টর্চার করার ‘প্রয়োজন’ হতো আমরা জানি না। রাষ্ট্রের নাগরিক কেন এমন চরম বিদ্বেষের শিকার হতেন তা বিস্ময় হিসেবে থেকে যাবে।

প্রদীপ ও লিয়াকত অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহার হত্যাকারী হিসেবে জনসাধারণের বিবেকের আদালতের কাছে প্রমাণিত। মানুষ সন্দেহাতীতভাবে অনুমান করতে পেরেছে তাকে প্রদীপ ও লিয়াকত মিলে হত্যা করেছে। সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা কাজী প্রদীপের রোষানলে পড়ে জেলে পচছিলেন। ফরিদের বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা সাজিয়েছিলেন তিনি। তার চোখে মরিচের গুঁড়া ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন। নির্মম নির্যাতনের পর পানি চাইলে তাকে প্রদীপ নিজের প্রস্রাব খাওয়াতে চাইতেন। মলমূত্র মিশ্রিত পানি উপহার দিয়ে এ দেশের মানুষের সাথে চরম অন্যায় আচরণের নীতি তিনি গ্রহণ করেছিলেন। ফরিদুল মোস্তফার ভাগ্য ভালো, তাকে ক্রসফায়ারে দেননি। শুধু বর্বরোচিত নির্যাতন করে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছেন। টেকনাফে প্রদীপ ২০৪টি ক্রসফায়ারের ঘটনা ঘটিয়েছেন। তার আগে মহেষখালীতে ক্রসফায়ারে একজনকে হত্যার পর কিভাবে ঘটনাটি সামাল দিয়েছেন সবার জানা হয়েছে। প্রদীপ উচ্চ আদালতকে পাশ কাটানোর ক্ষমতা রাখেন। তার পক্ষে পুলিশ সদর দফতর ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দৃশ্যত কাজ করেছে। এই দেশের মানুষের মান ইজ্জতকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে আবার এ দেশের রাষ্ট্রীয় কাঠামো দিয়ে শতভাগ নিজের পক্ষে কাজ করানোর মতো তার দানবীয় ক্ষমতা রয়েছে।

বিবেকবান মানুষ হিসেবে বাংলাদেশীরা প্রদীপের বিচার চায়। তিনি যে দানবীয় দাপট দেখিয়েছেন মানুষ দেখতে চায় সেগুলোর অবসান হোক। তাকে রিমান্ডে নিয়ে অন্যায়ভাবে পিটিয়ে হাত-পা গুঁড়িয়ে দেয়া হোক এমনটা বিবেকবান মানুষেরা চায় না; যেমনটি এ দেশের হাজার হাজার মানুষের ওপর নেমে এসেছিল। এদের মধ্যে অনেক মানুষই ছিলেন দেশপ্রেমিক। কিন্তু তাদের নির্দয়ভাবে পিটিয়ে হাত-পা গুঁড়িয়ে দিয়ে পঙ্গু করে দিতে এ দেশের পুলিশেরই কোনো রকম বিবেকে বাঁধেনি। কেবল রাজনৈতিক সুবিধা নেয়ার জন্য এমনটি করা হয়েছে বলে মানুষের ধারণা। কত নিরপরাধ মানুষ রাজনৈতিক ব্যবস্থার গ্যাঁড়াকলে পুলিশের এমন ভয়াবহ নিমর্মতার শিকার হয়েছেন তার কোনো হিসাব-নিকাশ নেই। তার পরও প্রদীপের প্রতি মানুষ এমন বেআইনি নির্দয় ব্যবস্থা চায় না। কিন্তু ন্যায়বিচার চায়। বিষয়টি সরকারের অবশ্যই আন্তরিকভাবে দেখা উচিত।

রিমান্ড শেষে সুস্থ সবল প্রদীপ অনেকটাই যেন নির্দেশনা দিচ্ছেন ‘এটা স্ট্রংলি দেখতে হবে’। তিনি যাকে লক্ষ্য করে কথাটি বলছেন, তার পরিচয়টি প্রকাশ করা সরকারের কর্তব্য। পরের দিন প্রথম আলোয় কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বলেন, ‘প্রিজন ভ্যানে প্রদীপ কোন স্যারের সাথে কথা বলেছেন, তা একমাত্র তিনিই জানেন।’ প্রদীপের এতসব অপরাধের প্রতি জেলার পুলিশ সুপারের আনুকূল্য রয়েছে। এর পক্ষে অনেক তথ্যপ্রমাণ স্থানীয় মানুষেরা উপস্থাপন করছেন। আমরা ধরে নিলাম, মাসুদ সাহেবের সাথে প্রিজন ভ্যান থেকে তার যোগাযোগ হয়নি। তাহলে নিশ্চয়ই আরো উপরের মহলের সাথে তিনি যোগাযোগ করেছেন যারা তাকে এতগুলো হত্যাকাণ্ড করার পরও সমর্থন দিয়ে গেছেন। উপরের মহলের যারা কাজটি করছেন তারা কি প্রদীপের চেয়ে কম অপরাধী? তাদের বহালতবিয়তে রেখে প্রদীপদের কখনো ন্যায়বিচার করা সম্ভব হবে না। এটা একটা প্রদর্শনী হতে পারে। এমন প্রহসন এ দেশের জনসাধারণ বহু দেখেছে, এখন আর দেখতে চায় না।

প্রদীপের সাথে প্রভাবশালী মহলের গভীর সম্পর্ক রয়েছে- এমন ধারণা জনমনে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। এর কারণ ভয়াবহ খুন গুম ধর্ষণের মতো সব ঘটনা ঘটিয়েও তিনি বাংলাদেশ পুলিশে একজন বীর হয়ে রয়েছেন। বিচারের বদলে তার পক্ষে রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ পুরস্কার জুটছিল। এর সাথে সংবাদমাধ্যমে এমন খবরও প্রকাশিত হয়েছে, যাতে দেখা যায় পুলিশের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ, স্বরাষ্ট্র্র মন্ত্রণালয় তার অন্যায় কর্মকাণ্ডের পক্ষ হয়েছে। উচ্চ আদালতে তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মানুষ হত্যার মামলায় তার কিছু হয়নি। ফরিদুল মোস্তফা কাজীর করুণ দশা থেকে বুঝতে অসুবিধা হয় না রাষ্ট্রের ক্ষমতা প্রদীপের পক্ষে সর্বোচ্চ মাত্রায় ব্যবহার করা হয়েছে। টেকনাফের পুলিশ হয়েও প্রদীপ সারা দেশে কাজ করানোর মতো ক্ষমতা অর্জন করেন। সামাজিক মাধ্যমে প্রদীপের এমন ক্ষমতার উৎস সম্পর্কে প্রচুর তথ্য উপাত্ত পাওয়া যাচ্ছে। অন্য দিকে, রাষ্ট্র যেন তাকে জিজ্ঞাসাবাদে চিন্তিত, ইতস্তত করছে। একটা রাষ্ট্র কতটা বেপরোয়া ও হীনম্মন্য হলে এমন দানবদের একের পর এক ছাড় দিয়ে যায়।

ফাঁস হওয়া ওই আলাপে আরো দেখা যাচ্ছিল, প্রদীপ র‌্যাবে সামরিক বাহিনী থেকে আসা অফিসারের নাম জানাচ্ছেন। কয়েকজন কর্মকর্তা ‘প্রদীপের বিরুদ্ধে বাড়াবাড়ি করছে’। তাদের নাম জানানোর কী অর্থ দাঁড়ায়? অর্থাৎ একজন সামরিক কর্মকর্তা হত্যার পরও প্রদীপকে জিজ্ঞাসাবাদ করা যাবে না? কারণ প্রদীপ এমন জিজ্ঞাসাবাদ পছন্দ করছেন না। তিনি এসব কথা উপরের সেই ‘স্যার’কে জানাচ্ছেন এমনভাবে, সামরিক বাহিনীতে থেকে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে আসা র‌্যাবের অফিসাররা যেন অন্যায় কিছু করছেন। এ বিচারের প্রক্রিয়াটি সঠিকভাবে এগোতে হলে সংশ্লিষ্টদের অবশ্যই প্রভাবমুক্ত রাখতে হবে। বিচারের প্রয়োজনে ক্রিমিনালদের কি কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করা যাবে না? একটি স্বাধীন দেশে ক্রিমিনালেরা এ দুঃসাহস কোথা থেকে পায়? জাতি হিসেবে আমাদের আত্মমূল্যায়ন কখন হবে? আমরা চিহ্নিহ্নত ক্রিমিনালকে আশকারা দিচ্ছি। একজন সিরিয়াল কিলারের নিজের মধ্যে কোনো অনুতাপ নেই। শত শত অপরাধের ভয়াবহ শাস্তি হবে, সে ব্যাপারে যেন তার কোনো উদ্বেগ নেই। ব্যর্থ রাষ্ট্রের কথা বলা হয়। আসলে ‘ব্যর্থ রাষ্ট্র’ কাকে বলে? যেখানে নিরপরাধ মানুষের বিচার হয়ে যায়। আর অপরাধীরা খুন ধর্ষণ গুম করেও বড় গলায় কথা বলতে পারে। দুর্ভাগ্য আমাদের।

নিকট অতীতে মৌলিক অধিকার পাওয়ার জন্য অনেক নাগরিককে রাষ্ট্র্রের বিরুদ্ধে অসম লড়াইয়ে অবতীর্ণ হতে দেখা গেছে। বেঁচে থাকার অধিকার আদায়ের এ কঠিন সংগ্রাম করতে গিয়ে এ দেশের অনেক পরিবার সর্বস্বান্ত হয়ে গেছে। আমাদের কোনো অনুতাপ আসেনি। এখন আমাদের সূর্যসন্তানদের যারা হত্যা করছে তাদের প্রতি আইনানুগ আচরণ করার অধিকারও আমরা হারিয়ে ফেলছি। একজন মহাশক্তিধর পুলিশের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া শুরু হলেও শেষ পর্যন্ত এ বিচার হবে না- এমন ধারণা প্রবল। শুরু হওয়ার ব্যাপারটি সাধারণ কোনো বিষয় ছিল না। মূলত এ ক্ষেত্রে শ্রেণী স্বার্থ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। রাস্তায় এভাবে সিনহার হত্যাকাণ্ড সামরিক বাহিনীর অন্য অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের শঙ্কিত করে তোলে। সামরিক বাহিনীর অবসরে যাওয়া বাকি কর্মকর্তারাও সিনহার মতো অবস্থায় পতিত হন কি না। কিংবা তারা রাস্তায় নিজেদের সম্মান মর্যাদা নিয়ে চলতে পারবেন কি না। তাই, সামরিক বাহিনীর অবসরপ্রাপ্তদের সংগঠন ‘রাওয়া ক্লাব’ খুনিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নেমেছিল। গত এক যুগে সিনহাই প্রথম সামরিক বাহিনীর সদস্য যিনি প্রাণ হারিয়েছেন ব্যাপারটি এমন নয়। সামরিক বাহিনীর আরো অনেক সদস্য খুন গুম হয়েছেন। এই ক্লাব হয়তো সেগুলোকে ‘বিচ্ছিন্ন’ ঘটনা হিসেবে দেখেছে। তারা হয়তো ভেবেছেন, এগুলো রাজনৈতিক বিবেচনায় হচ্ছে। তারা মোটামুটি নিশ্চিত ছিলেন যে, ব্যাপারটা এতদূর গড়াবে না, বাকিদের জীবন বিপন্ন হবে না। সিনহা হত্যা তাদের সেই শঙ্কাকে জাগিয়ে দিয়েছে। এই শঙ্কা জাগার ফল এতটুকু যে, প্রদীপ লিয়াকত চক্র আপাতত গ্রেফতার হয়েছে। বিপুল ক্ষমতার অধিকারী প্রদীপকে শেষ পর্যন্ত বিচারের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছাতে হলে রাওয়া ক্লাবের এতটুকু চেষ্টা যথেষ্ট নয়। এ ব্যাপারে তাদের যে আরো শক্ত অবস্থান নিতে হবে, প্রিজন ভ্যান থেকে তাগড়া প্রদীপ ও লিয়াকতের ফোনের ভিডিও ফাঁস তা বলছে। তবে এভাবে কোনো রাষ্ট্র চলতে পারে না। সাধারণ মানুষের জীবন অরক্ষিত হয়ে রয়েছে।

নিষ্পাপ মানুষদের কেবলমাত্র রাজনীতির কারণে দুঃসহ অবস্থার মধ্যে পড়তে হয়েছে অবর্ণনীয়ভাবে। তাদের অনেককে রিমান্ডে নিয়ে পঙ্গু বা খোঁড়া করে দেয়া হয়েছে। এর বিচার চাইতে গিয়ে তাদের স্বজনেরা সর্বস্বান্ত হয়েছেন। বাড়িঘর জমিজমা শেষ হয়েছে। অনেকে পথে নেমেছেন। প্রদীপের অবস্থা দেখুন, তাকে ফুলের টোকাও দেয়া যাচ্ছে না। তার স্ত্রী অবৈধভাবে অঢেল সম্পদের মালিক। তাকে এখন সরকার খুঁজে পায় না। অথচ প্রদীপের পক্ষে গণ্ডায় গণ্ডায় আইনজীবী নেমে পড়েছেন। আজ চার দিক থেকে প্রশ্ন উঠেছে এই ক্রিমিনালের পক্ষে কারা এসব আইনজীবী? আর বাংলাদেশের গোয়েন্দা বাহিনী কেন তার টিকিটি খুঁজে পায় না?

বর্তমান বিচারব্যবস্থা একজন প্রমাণিত ক্রিমিনালের পক্ষেও যথেষ্ট সক্রিয়। অথচ সাধারণ মানুষেরা যাদের অর্থকড়ি নেই তারা বিচারের ব্যবস্থায় প্রবেশের সুযোগ পায় না। বাংলাদেশের গোয়েন্দা বাহিনী বিশ্বের মধ্যে সেরা। তারা এটা প্রমাণ করেছেন। বিশেষ করে বিরোধী দল এবং কথিত জঙ্গিদের বিরুদ্ধে তারা উচ্চমানের পারদর্শিতা দেখিয়েছেন। জঙ্গি নাটক এখন আর দেখা যাচ্ছে না। দেশে এখন সাধারণ রাজনৈতিক কার্যক্রম আর অবশিষ্ট না থাকার কারণ হচ্ছে, আমাদের গোয়েন্দা বাহিনীর উঁচু পারফরম্যান্স। দুর্ভাগ্য, এ গোয়েন্দা বাহিনী প্রদীপের স্ত্রীকে নাকি খুঁজে পায় না। আর আমাদের ইমিগ্রেশন তার বউকে সীমান্ত পার হওয়ার সময় শনাক্ত করতে পারে না। আমাদের অত্যন্ত দক্ষ একটা গোয়েন্দা বাহিনী থাকায় দেশের লাভ হবে তখনই যখন তারা দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমাদের গোয়েন্দা বাহিনীর পুরো শক্তি দেশের মানুষের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হতে দেখা গেছে। ফলে দেশের মূল শত্রুরা বেপরোয়া। সাধারণ মানুষের প্রাণ বিপন্ন। নিজের দেশের ভেতরেই মানুষ পরাধীন। সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা যখন নিজে শুধু বেঁচে থাকার জন্য পরিবারসহ পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা কি সেটা টের পায়নি? এ ধরনের আর কতশত মানুষ দেশের ভেতর চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন, তাদের বিপদ কি তারা শনাক্ত করতে পারেন না?

jjshim146@yahoo.com

 


আরো সংবাদ



premium cement