অর্থনীতির পশ্চাৎযাত্রা তিতপল্লা ইউপির দৃষ্টান্ত
- মুজতাহিদ ফারুকী
- ০৪ আগস্ট ২০২০, ২১:৫৭
ঈদুল আজহার পর সদ্য গ্রামের বাড়ি থেকে ফিরেছি। প্রায় ছয় মাস ধরে করোভাইরাসজনিত মহামারী এবং এক মাসের বেশি সময় ধরে চলমান বন্যার কারণে মনে হয়েছিল, এলাকার গরিব মানুষের জীবনে বোধ হয় কিছুটা বিপর্যস্ত হয়েছে। কিন্তু পরম করুণাময়ের অপার রহমত, তেমনটা দেখতে পাইনি। যেমনটা খবর পেলাম এবং নিজের চোখে দেখলাম, তাতে মনে হলো, এই দেশের ওপর আল্লাহর বিশেষ রহমত আছে।
আমার বাড়ি জামালপুর-টাঙ্গাইল মহাসড়কের ওপর। ১২ নং তিতপল্লা ইউনিয়নের পশ্চিম পাড় দিঘুলী গ্রামে। এখানে বাসস্ট্যান্ড ঘিরে গড়ে উঠেছে দোকানপাট। একটি বর্ধিষ্ণু অর্থনৈতিক কেন্দ্রের মতোই নানা ধরনের কয়েক শ’ দোকানপাট ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে এখানে। আছে ছোট্ট কাঁচা বাজার, যেটি জামতলি বাজার নামে পরিচিত। আছে ধান-চালের বেপারি থেকে শুরু করে ইলেকট্রনিক সামগ্রী, ফার্নিচার, মোবাইল টেলিফোন সেবা, গৃহনির্মাণসামগ্রী, এমনকি অত্যাধুনিক টাইলসের দোকান পর্যন্ত। আছে একাধিক ব্যাংকের শাখা।
গত ১০-১২ বছর ধরে দেখছি, আশপাশের এলাকায় মানুষ নিজেদের বাড়িঘর উন্নয়নে বেশ মনোযোগী হয়েছে। বোঝা যায়, তাদের জীবনে কিছুটা হলেও সচ্ছলতা এসেছে। সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের গ্রামে কুঁড়েঘর প্রায় নেই বললেই চলে। কুঁড়েগুলো টিনের ঘরে এবং টিনের ঘরগুলোর বেশির ভাগ সেমিপাকা দালানে রূপান্তরিত হয়েছে। কয়েকটি দোতলা বাড়িরও দেখা মেলে গ্রামে হাঁটলে। এসব রূপান্তরের জন্য যে গৃহনির্মাণ সামগ্রী দরকার, যেমন ইট বালু সিমেন্ট রড এবং আনুষঙ্গিক সব সরঞ্জাম- একসময় মানুষ জামালপুর শহর থেকে কিংবা দক্ষিণের ধনবাড়ি বা মধুপুর থেকে কিনে আনত। সেগুলো এখন নিজের গ্রামেই মিলছে। ঘরে ঘরে ঢুকেছে টিভি, ফ্রিজ, ফ্যান, লাইট, রাইস কুকার পর্যন্ত। মোট কথা, একটি অনুন্নত ও দরিদ্র গ্রামেও আধুনিক নগর জীবনের সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে। উন্নয়নের একটি বাস্তব চিত্র এখানে দৃশ্যমান। আমার ধারণা ছিল, দীর্ঘ সময়ের লকডাউন এবং সঙ্গনিরোধের মতো স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের পর এবারের দীর্ঘমেয়াদি বন্যায় মানুষের অর্থনৈতিক ক্ষতি চরম পর্যায়ে পৌঁছবে। কিন্তু পরিস্থিতি তেমন গুরুতর মনে হলো না।
এটা ঠিক যে, ব্যবসায়ীদের অনেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। অনেকের আয়-রোজগার প্রায় শূন্যে নেমে এসেছে। এমনই একজন জামতলি বাজারের ওয়েল্ডিং ব্যবসায়ী আতিক। আতিকের নিজের ভাষ্য, তার প্রতি মাসে আয় ছিল ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। কিন্তু করোনাকালের পুরো সময় ধরে তার আয় প্রায় শূন্য। অথচ শ্রমিকের বেতন, দোকানের ভাড়া, নিজের পরিবার পরিচালনাসহ নিয়মিত সব খরচ তাকে বহন করতেই হচ্ছে। ফলে ধারকর্জ হয়েছে বেশুমার। এমনই অবস্থা আরো অনেক ব্যবসায়ীর। এসব ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর নাম সরকারের প্রণোদনার তালিকায় নেই। তারা কখন কিভাবে এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারবেন, তারও কোনো নিশ্চয়তা নেই।
তার পরও বলতে হবে, সাধারণ মুটে মজুর শ্রেণীর যেসব মানুষ অন্যের দোকানে বা বাড়িতে কাজ করে খাবার জোগাড় করতেন তারা এখনো খাবারটা পাচ্ছেন। সরকারিভাবে ভিজিডি, ভিজিএফ, বয়স্কভাতা, বিধবাভাতা, পঙ্গুদের ভাতা চালু আছে। সঙ্গে যোগ হয়েছে ১০ টাকা কেজির চাল দেয়ার কার্ড। এগুলো সম্ভবত দেশের সবখানেই চালু আছে। সরকারের পক্ষ থেকে এবং বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে ত্রাণ সাহায্যও একটি বড় ভূমিকা রেখেছে গরিব মানুষদের স্বস্তিতে থাকার পেছনে। তবে আমার ইউনিয়নে একটি ব্যতিক্রমী ঘটনার কথা জানা গেল। সেটিই বলতে চাইছি।
মানুষের জীবনযাত্রায় প্রকট অভাব এবং হাহাকার না থাকার কিছু প্রত্যক্ষ কারণ আছে। আমাদের ইউনিয়নের প্রায় ৩৫ হাজার মানুষের মধ্যে ৮০ শতাংশই কৃষিজীবী। তারা ধান চাষের ওপরেই বেঁচে থাকেন। সেটিই তাদের অর্থনীতি। আর সুখবর হলো এই, এবারেও ধানের ফলন হয়েছে খুবই ভালো। মানুষের ঘরে অন্তত খাবারের জোগানটুকু আছে। তাই হাহাকার পড়ার কোনো কারণ ঘটেনি। শিক্ষার হার জেলার গড়ের চেয়েও কম, ৩৮ শতাংশ মাত্র। চাকরিবাকরি করার মতো শিক্ষিত মানুষের সংখ্যা কত তার কোনো হিসাব কোথাও নেই।
এলাকার অনেকের সাথে আলাপ করে জানা গেল, তিতপল্লা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ সেলিম। তিনি পুরো জামালপুর জেলায় একমাত্র স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে আওয়ামী লীগ, বিএনপির প্রার্থীকে হারিয়ে বিজয়ী হয়েছেন। ইউনিয়নবাসী অনেকেই দাবি করেন, যেকোনো কারণেই হোক এই ইউনিয়নে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছিল। মানুষ নিজের ভোট নিজে দিতে পেরেছে। অন্য সব ইউনিয়নের মতো এখানে নৌকার প্রার্থী ব্যালটে সিল মারার সুযোগ পাননি। সে কারণেই কিনা জানি না, চেয়ারম্যান সাহেব নিজের টাকা থেকে প্রচুর ত্রাণ বিলিয়েছেন মানুষের মধ্যে। আর চেয়ারম্যানের এক আপন বড়ভাই যিনি ঢাকা ও সাভারে গার্মেন্টসহ নানা ব্যবসায়ের সাথে যুক্ত, তিনিও অন্তত ১০-১৫ ট্রাক ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেছেন তিতপল্লা ইউনিয়নের ২৪টি গ্রামে। মামুনুর রশিদ নামের সেই বড়ভাইয়ের প্রশংসা শুনলাম এলাকাবাসীর মুখে। তিনি সাত-আট ট্রাক চাল ডাল এবং কয়েক ট্রাক আলু, তেল, পেঁয়াজ ইত্যাদি বিলি করেছেন ছোটভাই চেয়ারম্যানের মাধ্যমে। নিজে দিয়েছেন লাখ লাখ টাকার নগদ অর্থ সাহায্য। বর্তমান দুঃসময়ে আমাদের ইউনিয়নে গরিব মানুষেরা অন্তত না খেয়ে যে কষ্ট পাননি তার পেছনে এই ধনবানের বদান্যতার একটি বড় অবদান আছে।
আমাদের দেশে টাকা থাকলেও গরিবদের উদারভাবে সাহায্য করার মতো মন অনেকেরই থাকে না। মামুন সাহেবের সেই মন-মানসিকতা আছে এবং তিনি মানুষের দুঃসময়ে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন নিঃস্বার্থভাবে। শুধু তা-ই নয়। মামুন সাহেব এলাকার কোনো কোনো মসজিদ, মাদরাসা, স্কুল, কলেজের জন্য নিয়মিত অনুদান দিয়ে থাকেন। তার কোম্পানির দানের তালিকায় এসব প্রতিষ্ঠানের নাম লেখা আছে। প্রতি মাসে সেখান থেকে টাকা চলে আসে স্বয়ংক্রিয়ভাবে। ভালো লাগার বিষয় এটাই। আর এটি একটি বড় দৃষ্টান্ত হতে পারে দেশের সব ধনবান ব্যক্তিদের জন্য। এভাবে দেশের প্রতিটি ধনবান সচ্ছল মানুষ যদি সমাজের কাজে সরাসরি অবদান রাখেন, তাহলে কেবল যে গরিবরাই উপকৃত হবেস, তা-ই নয়। সরকারের ওপরও বাড়তি চাপ কমবে। কোনো একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ফসলহানি, মহামারীর মতো পরিস্থিতি দেখা দিলেই মানুষকে আর নাজুক অবস্থায় পড়তে হবে না।
এই লেখা পড়ে কোনো পাঠকের মনে হতে পারে, বোধহয় নিজ এলাকার চেয়ারম্যান ও তার বড় ভাইয়ের সুনাম গাইতেই এই লেখা লিখছি। তাদের উদ্দেশে বলি, চেয়ারম্যানের সাথে পরিচয় থাকলেও তার বড় ভাইয়ের সাথে পরিচয় থাকা দূরের কথা, তার নামটিও আমি প্রথম শুনেছি গত শনিবার এলাকার মানুষের অবস্থা সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে গিয়ে। সাংবাদিক হিসেবে দায়িত্বের অংশ হিসেবেই কাজটি করেছি এবং এসব তথ্য জানতে পেরেছি।
ধনবান ব্যক্তিদের সমাজকর্মে এগিয়ে আসার এই দৃষ্টান্ত উল্লেখ করা এবং এটিকে সরকারি কার্যক্রমের পরিপূরক হিসেবে দেখতে চাওয়ার একটি যৌক্তিক কারণ আছে। আমেরিকার গবেষণা সংস্থা ‘ওয়েলথ এক্স’ গত ১৪ মে এক প্রতিবেদনে গত এক দশকে বিশ্বে ধনী ব্যক্তির সংখ্যা বৃদ্ধির হারে শীর্ষে থাকা দশটি দেশের তালিকা প্রকাশ করেছে। সেই তালিকার এক নম্বরে আছে আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ। প্রতিবেদনে বলা হয়, এই ১০ বছর সময়ে বাংলাদেশে প্রতি বছর গড়ে ১৪ দশমিক তিন শতাংশ হারে ধনাঢ্য ব্যক্তির সংখ্যা বেড়েছে। ১৭ কোটি মানুষের দেশে সংখ্যাটি বিশাল। দেশে বর্তমানে কিভাবে মানুষ বড়লোক হচ্ছে তার বহু দৃষ্টান্ত এরই মধ্যে দেশবাসীর জানা। ব্যাংকের টাকা গায়েব হওয়া, ঋলখেলাপি, ক্যাসিনো ব্যবসা, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি এবং প্রকল্পের নামে ৭০০ টাকার বালিশ সাড়ে ছয় হাজার টাকায় কেনার মাধ্যমে সরকারি অর্থে হরিলুটের যে ‘মচ্ছব’ সমাজে চলছে তাতে শতকরা ১৪ জনের আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়াটা বিস্ময়ের কিছু হয় না। আমাদের আকাক্সক্ষা হলো, এই ‘আঙুল ফুলে কলাগাছে’রা কিছুটা হলেও সমাজের কাজে লাগুক। তাদের সেই মনটা তৈরি হোক। কারণ আমরা জানি, করোনার বিরূপ প্রভাবে দেশে দারিদ্র্যের হার বেড়ে যাচ্ছে। কতটা বাড়বে তারও পূর্বাভাস মিলছে বিভিন্ন গবেষণার ফলাফল থেকে।
করোনা মহামারীতে বিশ্ব অর্থনীতি বিপর্যস্ত এ কথা সবারই কমবেশি জানা। কিন্তু যেটা আমাদের জানা নেই সেটা হলো, এই মহামারীর ফলে সারা বিশ্বে দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করা মানুষের সংখ্যা ১০০ কোটি ছাড়িয়ে যাবে। বাংলাদেশ, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান এবং ফিলিপাইনসহ এশিয়ার দেশগুলোতে অর্থনীতিতে যে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে তার ধাক্কা কাটিয়ে ওঠা সহজ হবে না। এসব তথ্য উঠে এসেছে লন্ডনের কিংস কলেজ ও অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটির গবেষণায়। এতে বলা হয়েছে, ‘উন্নয়নশীল দেশগুলোতে কোভিড-১৯ মহামারী খুব দ্রুতই অর্থনৈতিক সঙ্কটে পরিণত হবে।’
আমাদের দেশের সরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএস এক প্রতিবেদনে বলেছে, চলতি মহামারীর পর দেশের এক কোটি ৬৪ লাখ মানুষ নতুন করে দরিদ্রের কাতারে যুক্ত হয়েছে। মানুষের উপার্জন কমে যাওয়ায় দারিদ্র্যের এই হার বেড়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনার আগে দেশে দারিদ্র্যের হার ছিল ২০ দশমিক ৪ শতাংশ, সেটি বেড়ে এখন ২৯ দশমিক ৪ শতাংশ। গত এপ্রিলে প্রকাশিত ব্র্যাকের জরিপে জানা যায়, কোভিড-১৯ মহামারীর প্রভাবে দেশে নিম্নবিত্তদের আয় ৭৫ শতাংশ কমেছে। ফলে বেড়ে গেছে চরম দারিদ্র্যের হার বা হতদরিদ্রের সংখ্যা। বলা হয়েছে, আগের তুলনায় চরম দরিদ্রের সংখ্যা শতকরা ৬০ ভাগ বেড়েছে। ৬৪টি জেলায় পরিচালিত ব্র্যাকের জরিপ অনুযায়ী, ৭২ শতাংশ মানুষের কাজ কমে গেছে, নয়তো তারা আয়ের সুযোগ হারিয়েছেন। আট ভাগ মানুষের কাজ থাকলেও মজুরি পাচ্ছেন না।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির ৬ জুন প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনার কারণে আয় কমে যাওয়ায় দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বেড়েছে। ফলে সার্বিকভাবে দারিদ্র্যের হার ৩৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এদিকে গত এপ্রিলে নিজেদের গবেষণার ফলাফল তুলে ধরে সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) জানায়, কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে অর্থনীতিতে যে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে, তাতে দেশের দারিদ্র্যের হার ১৫ বছর আগের অবস্থানে ফিরে যেতে পারে। ২০০৫ সালে দেশে দারিদ্র্যের হার ছিল ৪০ শতাংশ। সানেম বলছে, ‘বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার ৪০ দশমিক ৯ শতাংশে পৌঁছতে পারে। নতুন করে আরো ২০ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ দরিদ্র হবে।’
দেখা যাচ্ছে, দেশী-বিদেশী সব গবেষণার তথ্যেই এটি স্পষ্ট যে, অদূর ভবিষ্যতে দেশকে একটি বড় অর্থনৈতিক মন্দার মোকাবেলা করতে হবে। কিন্তু গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো আমাদের করণীয় সম্পর্কে যেসব পরামর্শ ও সুপারিশ রেখেছিল, বিশেষ করে জাতীয় বাজেটে যে ধরনের পদক্ষেপ নেয়া দরকার বলেছিল সেসবের খুব একটা প্রতিফলন আমরা বাজেটে দেখতে পাইনি।
তাই সম্ভাব্য মন্দা কাটিয়ে উঠতে আমরা দেশের বিত্তবান মানুষদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই। আমার ইউনিয়নের যে দৃষ্টান্ত উল্লেখ করেছি সেভাবে তারা যদি শুধু নিজ এলাকার গরিব মানুষের পাশে দাঁড়ান, তাদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন তাহলে সঙ্কট কাটিয়ে ওঠা আমাদের জন্য কিছুটা হলেও সহজ হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা