২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

অর্থনীতিকে গ্রামমুখী করতে না পারার মূল্য

-

করোনাভাইরাসের মতো ক্ষুদ্র একটি অণুজীব গোটা বিশ্বব্যবস্থাকে নাড়িয়ে দিয়েছে। যে অণুজীবটি ইলেকট্রনিক মাইক্রোস্কোপে দেখতে হলেও যন্ত্রের শক্তি হাজার গুণ বাড়িয়ে নিতে হয়। সেটি এই মুহূর্তে বিশ্বের চিকিৎসাবিজ্ঞানকে যেমন পরাভূত করে চলেছে তেমনি বিশ্ব অর্থনীতির জন্য এক ভয়ঙ্কর অমানিশা ডেকে আনছে। ভাইরাসটি প্রমাণ করেছে মানুষকে হত্যার জন্য বিশ্ব যতটা প্রস্তুত মানুষকে রক্ষার জন্য ততটা নয়। প্রতি বছর শত শত বিলিয়ন ডলার ব্যয় হয় অস্ত্র তৈরি ও সংগ্রহের পেছনে। এ সবই মানুষকে মারার জন্য, সভ্যতাকে ধ্বংস করার জন্য। অথচ মানুষকে রক্ষার জন্য চিকিৎসাবিজ্ঞানের পেছনে এই মানুষই যথেষ্ট ব্যয় করতে ব্যর্থ হয়েছে। স্বাস্থ্য সুরক্ষা না থাকলে অর্থনৈতিক সুরক্ষা যে খুব কাজে আসে না সেটা প্রমাণ করেছে করোনাভাইরাস। যার পরিণতিতে যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী দেশগুলো আজ পর্যুদস্ত।

এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বলেছে, এই ভাইরাসের কারণে বিশ্বের ক্ষতি হতে পারে ৪.১ ট্রিলিয়ন ডলার, যা বিশ্ব জিডিপির ৫ শতাংশের সমান। আর বাংলাদেশের জিডিপি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে ২ থেকে ৪ শতাংশ। এ ধরনের একটি বৈশ্বিক মহামারীর ভয়ঙ্কর প্রভাব যে বাংলাদেশের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশের গায়ে লাগবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আমাদের রফতানি খাত বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ক্ষতির সম্মুখীন। আমাদের শহরমুখী অর্থনীতি কতটা ভঙ্গুর সেটাও প্রমাণ করেছে করোনাভাইরাস। তাই সরকার যখন গণছুটি ঘোষণা করে তখন করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধের স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করেই লাখ লাখ মানুষকে ঢাকার বাইরে ছুটতে দেখি। আবার যখন গার্মেন্টস শিল্প খোলা হবে বলে ঘোষণা দেয়া হলো তখনো লাখ লাখ মানুষ রাজধানীতে ছুটে আসে। অর্থনৈতিক দৈন্য যেখানে প্রকট সেখানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা যেন বিলাসিতা। তাই অনেকের মুখে শোনা গেছে কাজ না থাকলে তো ‘করোনাভাইরাসে মারা যাওয়ার আগেই না খেয়ে মারা যাবো।’

আমাদের নেতারা দেশের অর্থনৈতিক ভিত্তিকে শক্তিশালী করবেন বলে কথার ফুলঝুরি ছোটালেও তারা কতটা অদূরদর্শী সেটাও প্রমাণ করেছে এই বৈশ্বিক মহামারী। পাখিদের মধ্যে ঈগল ঝড়ের আগমন টের পায়। তখনই সে সাবধান হয়ে আকাশের এমন উচ্চতায় উঠে যায় যে ঝড় তার নাগাল পায় না। আর ছোট ছোট পাখি ঝড়ের আঘাতে মারা পড়ে। ছোটবেলায় গ্রামে ঝড়ের পর এমন অনেক পাখি মরে থাকতে দেখেছি। ঝড়ো হাওয়া যখন বইতো তখন দেখতাম আকাশের অনেক উঁচুতে পাখি উড়ছে। মায়ের কাছে জেনেছি সেগুলো ঈগল। আর বড় হয়ে জেনেছি যে ঈগলেরা ঝড়ের আগমন বুঝতে পারে, এটি বৈজ্ঞানিক সত্য। আমাদের দেশের অর্থনৈতিক পরিকল্পনাকারীরা করোনাভাইরাসের মতো ঝড়ের আভাসটি বুঝতে পারেননি। হয়তো আরো অনেক দেশের ক্ষেত্রে বিষয়টি সত্য। কিন্তু আমাদের গ্রামীণ অর্থনীতির ভিতটি যদি মজবুত করা যেত, অর্থনীতিকে শহরমুখী না করে গ্রামমুখী করা যেত, অর্থনীতিকে বিকেন্দ্রীকরণ করা যেত তাহলে আজকের ঝড়টি মোকাবেলা করা অনেক বেশি সহজ হতো।

আমি অর্থনীতির নগণ্য এক ছাত্র হিসেবে কয়েক দশক ধরে এই একটি বিষয়ের ওপর বিশেষভাবে জোর দিয়ে এসেছি। আমি বলে আসছি যে, মানুষকে ভালোবাসতে হবে। বিপন্ন মানবসভ্যতাকে রক্ষার জন্য এটাই সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল। অথচ অদৃষ্টের পরিহাস আজ যে যত বেশি মানুষ মারার ক্ষমতা রাখে তাকেই আমরা বেশি সভ্য বলছি। তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোকে পশ্চিমারা অসভ্য বলে গালি দেয়। কারণ তাদের কাছে পারমাণবিক বোমা, আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র নেই। করোনাভাইরাস প্রমাণ করেছে বিশ্বের কৃত্রিম সীমানাগুলো অর্থহীন। কোনো ভিসা ব্যবস্থা, কাঁটাতারের বেড়া, অত্যাধুনিক সীমান্ত ব্যবস্থাপনা দিয়ে করোনাভাইরাসের মতো অণুজীবকে ঠেকানো যায়নি। নিরাপত্তা পরিষদের যে পাঁচ শক্তি আজ বিশ্বকে নিজেদের খেয়াল খুশি মতো চালাচ্ছে তাদের ভোটো ক্ষমতা দিয়ে তো করোনাভাইরাস ঠেকানো যায়নি। ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় থাকা ইটালি সম্পর্কে আমার ব্যক্তিগত ধারণা খুবই তিক্ত। কর্মসূত্রেই ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ব্যাপকভাবে সফরের অভিজ্ঞতা আমার রয়েছে। কিন্তু ইটালিতে গিয়ে আমাকে প্রতারণার শিকার হতে হয়েছে। ১৯৭৩-৭৪ সালের দিকের ঘটনা এটা। ইউরোপে নোংরামির দিক দিয়েও এই জাতি শীর্ষে। তবে মানুষ হিসেবে ইটালিবাসীর জন্য আমার ভালোবাসা ও কল্যাণ কামনা রয়েছে।

আমাদের মতো কৃষিনির্ভর দেশে অর্থনীতিকে মজবুত করার জন্য অর্থনীতিকে গ্রামমুখী করার বিকল্প নেই। অথচ আমাদের উন্নয়ন শহরমুখী। এ দেশের ব্যাংকগুলোর মোট তহবিলের ৬০ শতাংশ বিনিয়োগ হয় শুধু ঢাকা শহরে এবং আশপাশের এলাকায়। ২০ শতাংশ চট্টগ্রামে এবং বাকি ২০ শতাংশ সারা দেশে। উন্নয়নকে গ্রামমুখী করার জন্য দুই যুগের বেশি সময় আগে আমি ‘সবুজ হাট প্রকল্প’ নামক এক নতুন ধারার ব্যাংকিংয়ের প্রস্তাব করেছিলাম। এখানে অর্থনীতির আনুষ্ঠানিক, অনানুষ্ঠানিক ও স্বেচ্ছামূলক কার্যক্রমের সমন্বয় করা হয়েছে। এখানে আমাদের দেশে অনুৎপাদনশীল অবস্থায় পড়ে থাকা হাজার হাজার ওয়াক্ফকৃত বা জনকল্যাণে দান করা সম্পত্তি ও সম্পদকে উৎপাদনশীল ধারায় নিয়ে আসার কথা বলা হয়েছে। এতে একদিকে সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার যেমন নিশ্চিত হবে, তেমনি দেশীয় পুঁজি সমাবেশের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন ও উন্নয়নের দ্বার উন্মুক্ত হবে। সেই সাথে বিদেশী সাহায্যের ওপর নির্ভরতাও কমবে।

এই প্রকল্পের লক্ষ্য ছিল দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পরিকল্পিতভাবে ১০-১৫টি দোকানের মাধ্যমে গ্রামীণ হাট বা বাজার সৃষ্টি করে এলাকায় উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সূচনা করা। এই হাট স্থাপনের জন্য ওয়াক্ফ বা এ ধরনের সম্পত্তিকে অগ্রাধিকার দেয়া। ব্যাংকের একটি পল্লী শাখা, কমিউনিটি সেন্টার ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র এই প্রকল্পের অবিচ্ছেদ্য অংশ হবে। গ্রামীণ পরিবারগুলোকে ঋণদান কার্যক্রমের আওতায় নিয়ে এসে ও সুষ্ঠু তদারকির মাধ্যমে সেই ঋণের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করবে এই সবুজ হাট উন্নয়ন মডেল।

একেবারে তৃণমূল পর্যায়ে থাকা একগুচ্ছ পরিবারকে ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচির আওতায় আনার মাধ্যমে এই প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হবে। যারা এই ঋণদান কর্মসূচিতে সফল হবে বা যারা ঋণের সুষ্ঠু ব্যবহারের মাধ্যমে আয় বৃদ্ধিমূলক কাজ সৃষ্টি করতে পারবে, তারা হবে প্রথম প্রজন্মের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা। তাদের সবুজ হাটে স্থাপিত দোকান ভাড়ায় বরাদ্দ দিয়ে আর্থিকভাবে আরো অগ্রসর হওয়ার সুযোগ করে দেয়া হবে। তাদের ব্যবসায় ক্ষুদ্রঋণ দিয়ে সহায়তা করবে সবুজ হাট ব্যাংক। তারা ব্যাংকের ম্যানেজারের সরাসরি তত্ত্বাবধানে থাকবেন। গ্রামীণ জনগণের প্রয়োজন, চাহিদা, আয়, জীবিকা নির্বাহের উপায় ইত্যাদি বিবেচনা করে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী বিক্রি হবে এসব দোকানে। এভাবে তৃণমূল পর্যায়ে উন্নয়নের চাকা ঘুরতে শুরু করবে এবং ক্রমে তা উপরের দিকে উঠে আসবে।

এই প্রকল্প বাজারবিমুখ ধারণার ওপর প্রতিষ্ঠিত। এখানে পরিবারের প্রয়োজন অনুযায়ী ঋণ দেয়া হবে। ঔপনিবেশিক ধ্যান-ধারণার ওপর ভিত্তি করে আমাদের দেশে যে ব্যাংক কার্যক্রম চলছে, সেখানে গ্রাম থেকে আমানত সংগ্রহ করে তা শহুরে ধনীদের ব্যবসায় প্রসারের জন্য বিনিয়োগ করা হয়। সবুজ হাট প্রকল্পে উন্নয়নের এই ধারাকে বদলে দেয়ার কথা বলা হয়েছে। যেখানে বিনিয়োগ শুরু হবে গ্রাম থেকে এবং ক্রমেই তা শহরে এসে ঠেকবে। তখনই সত্যিকার অর্থে দারিদ্র্য বিমোচন হবে। এই প্রকল্পে ব্যাংক কর্মকাণ্ডের আনুষ্ঠানিক, অনানুষ্ঠানিক ও স্বেচ্ছামূলক খাতের সমন্বয় ঘটবে বলে দারিদ্র্যের ওপর আঘাতটিও হবে সমন্বিত। এর মাধ্যমে স্থানীয় সুপ্ত অর্থনৈতিক তৎপরতার বিকাশ ঘটবে। ফলে অভ্যন্তরীণ বাস্তচ্যুতির ঘটনা কমে যাবে এবং প্রান্তিক চাষি ও অভিবাসী শ্রমিকের ভূমিহীন হওয়ার প্রবণতা কমবে।

বাংলাদেশের জনসংখ্যার ঘনত্বের কারণে একটি সবুজ হাট প্রকল্প পুরোপুরি বাস্তবায়িত হলে এর আওতায় ৩০-৪০ লাখ মানুষ চলে আসতে পারে। বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠা সবুজ হাট প্রকল্পগুলো আকারে এক রকম না হলেও সেগুলোকে একটি চেইন মার্কেটের মতো বিবেচনা করা যাবে। প্রকৃতিগত ক্ষুদ্রতার কারণে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানের জন্য সবুজ হাট প্রকল্পের ছোট ছোট বাজারগুলো পরস্পরের সাথে যুক্ত হতে পারে। এই প্রকল্পের আওতাধীন এলাকার ভোক্তা প্রকৃতি হবে সমজাতিক। তাই এদের নিত্যব্যবহার্য দ্রব্য পাইকারি বাজার থেকে কিনে ভোক্তাদের কাছে ছাড় দামে বিক্রি করা যায়। একইভাবে স্থানীয়ভাবে ছাড় দামের ওষুধের দোকানও দেয়া যেতে পারে। মৌলিক প্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করতে উৎপাদকদের ঋণ দিতে পারে সবুজ হাট ব্যাংক। কিছু কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের জন্য অংশগ্রহণমূলক অর্থায়নও করা যেতে পারে।

ক্ষুদ্র ঋণকে পরিবারের দোরগোড়ায় নিয়ে যাওয়া সবুজ হাট প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। এই ঋণের সুষ্ঠু ব্যবহার করে গ্রহীতারা ক্রমে সামনের দিকে এগিয়ে যাবেন। এ প্রকল্পে কৃষি খাতে উদ্বৃত্ত শ্রম কাজে লাগানোর চেষ্টা করা হবে। কৃষিভিত্তিক, কুটির বা ক্ষুদ্র শিল্পের উন্নয়নে ঋণ দেয়া হবে। এতে গ্রামীণ অভ্যন্তরীণ জীবনযাত্রার মান যেমন উন্নত হবে, তেমনি গোটা গ্রাম একটি উৎপাদন ক্ষেত্র বা কারখানায় পরিণত হবে। বাংলাদেশের মতো ঘনবসতিপূর্ণ জনসংখ্যার দেশে গ্রামীণ জনগণের একটি বড় অংশ যদি কৃষিকাজ থেকে সরেও আসে, তারপরও কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হবে না। এই বাড়তি শ্রমশক্তিকে উৎপাদনশীল অন্যান্য কাজে লাগানো যায়। ঘনবসতিপূর্ণ এবং শিক্ষার নি¤œহারসম্পন্ন দেশগুলোতে একেবারে তৃণমূল পর্যায়ে স্কুলচ্যুতির ঘটনা শুরু হয়। সবুজ হাট প্রকল্প চালুর পর যখন গ্রামীণ অর্থনীতির চাকা ঘুরতে শুরু করবে এবং সব জনবল শ্রমক্ষেত্রের সাথে যুক্ত হবে, তখন অকালে স্কুল থেকে ঝরে পড়ার প্রক্রিয়া থেমে যাবে।

দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো যদি শুরু থেকে দারিদ্র্যকে টার্গেট করত তাহলে আজ স্বাধীনতার প্রায় অর্ধশতাব্দী পরেও সারা দেশে ত্রাণের জন্য অভাবী মানুষের হাহাকার দেখতে হতো না। আমি সোশ্যাল ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকে থাকাকালে সবুজ হাট প্রকল্পের মাধ্যমে সেই চেষ্টাটি করেছিলাম। ব্যাংকের পঞ্চম বার্ষিক প্রতিবেদনে বিষয়টির বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে। সেটা দুই যুগের বেশি আগের ঘটনা। আজ এই করোনাভাইরাসের পরিস্থিতিতে আমার বলতে দ্বিধা নেই যে, তখন বাংলাদেশ ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ে থাকা আমলাদের অসহযোগিতার কারণেই এই প্রকল্প আলোর মুখ দেখতে পারেনি। এ ধরনের যুগান্তকারী চিন্তা বাস্তবায়নের পথে আমলারা কতটা প্রতিহিংসাপরায়ণ হতে পারেন তারও ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা তখন আমার হয়েছে। যদিও সব দেশের আমলাদেরই একটি সাধারণ চরিত্র রয়েছে। তারা কোনো কাঠামোগত পরিবর্তন বা আমূল পরিবর্তন চায় না। তারা নিজের ক্ষুদ্র স্বার্থটিকেই বড় করে দেখে। সে বাধ্য না হলে এমন কিছুর অনুমতি দেবে না যাতে তার কোনো স্বার্থ নেই।
আমি যখন অর্থনীতিকে শহর থেকে গ্রামমুখী করার কথা বলি তখন আমার বিরুদ্ধে অপবাদ দেয়া হয় যে আমি মধ্যপ্রাচ্য থেকে টাকা রাজনীতি করছি। অথচ সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকে বাইরে থেকে যে অর্থায়ন হয়েছে তার চুলচেরা হিসাব বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে রয়েছে। বিদেশী বিনিয়োগকারীরা তাদের শেয়ারের অর্থ মুনাফাসহ তুলেও নিয়ে গেছেন। একসময় আমাকেও ব্যাংক থেকে সরে যেতে হয়। তবে তার জন্য আমার কোনো আফসোস নেই। কারণ আমার কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য কখনো ছিল না, এখনো নেই। সব সময় আমি মানুষের কল্যাণে কাজ করার চেষ্টা করেছি, চিন্তাভাবনা করেছি। আজো সেই ভাবনা বন্ধ হয়নি। তবে নেতৃত্বের দূরদর্শিতার অভাব কিভাবে মানুষকে দুর্ভোগে ফেলতে পারে তা আজ চোখের সামনেই দেখতে পাচ্ছি।
আমি আজীবন যেসব ধারণার বিপণন করেছি সেখানে মানুষের কল্যাণের কথাই বলার চেষ্টা করেছি। এখনো সবুজ হাট প্রকল্পের ধারণা বাস্তবায়নের মাধ্যমে দারিদ্র্যের ওপর প্রচণ্ড আঘাত হানা যেতে পারে। এই ধারণা হতে পারে সোনার বাংলা গড়ার বৈপ্লবিক হাতিয়ার।হ


লেখক : ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের সাবেক অর্থনৈতিক পরামর্শক, অর্থনীতির অধ্যাপক, কিং আবদুল আজিজ বিশ্ববিদ্যালয়, জেদ্দা, প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান পরিকল্পনা কমিশনের সাবেক কর্মকর্তা।


আরো সংবাদ



premium cement