চলে গেল নিস্তরঙ্গ একটি বছর
- সালাহউদ্দিন বাবর
- ০৫ জানুয়ারি ২০২০, ২০:৩৬
২০১৯ পার হয়ে আমরা নতুন বছরে পদার্পণ করেছি। সদ্যবিগত বছরটি নানা কারণে জাতীয় জীবনকে তরঙ্গায়িত করে যেতে পারেনি। এ বিষয়টি আমাদের চিন্তাভাবনা, চেতনায় এবং মনমগজে নিতে হবে। ইতিবাচক পরিবর্তনের কিছু অর্জন হয়নি, তাই ২০১৯ সালে এমন কিছু প্রাপ্তিযোগ ছিল না। কেউ কেউ ভাবতে পারেন, মাত্র একটি বছর দেশের জন্য তেমন গুরুত্ববহন করে না। তাহলে এভাবেই যদি হেলাফেলায় একে একে বছরগুলো পার হয়ে যায় কোনো ইতিবাচক অর্জন ব্যতিরেকেই; আর এমন করে বছরগুলোর সমষ্টি যদি প্রাপ্তির খাতা শূন্য রেখে বিদায় নেয়, তবে বলতে হবে- জাতীয় জীবন থেকে ৫০ বছর তো অতীত হয়েছে, আগামী ৫০ বছরেও এ জাতির প্রাপ্তির খাতা পূর্ণ হবে না। আর এমন ‘কচ্ছপ গতি’ কখনোই বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যের চাকা সামনে নিয়ে যেতে পারবে না। এসব কারণেই এই জনপদের সমস্যার কোনো কূলকিনারা নেই। এ থেকে উত্তরণের আশা কারো থাকলেও সে আশার হেতু কী, এর উত্তর কারো কাছে থাকে না। তাই কল্পনায় ফানুস উড়ানো আর বাস্তবতা এক নয়। এমন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের পথ দেখাতে পারেন দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতৃত্ব। দৃঢ় প্রতিশ্রুতি, গভীর নিষ্ঠা ও কঠিন প্রত্যয় নিয়ে অগ্রসর হতে হবে। অতীতে দেশকে পরিচালিত করার দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে ব্যর্থতা কোথায় তার সঠিক বিশ্লেষণ ও প্রতিকার করতে হবে। জাতীয় দৈনিকগুলো ২০১৯ সালের সালতামামি করেছে। তাতে নানা অপূর্ণতা, নাগরিক ভোগান্তি, সমস্যা-দুর্যোগ এসব তুলে ধরা হয়েছে। গেল বছরটিতে প্রধান আলোচ্য বিষয় ছিল দুর্নীতি এবং ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গ ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের শিক্ষাঙ্গনে মারদাঙ্গা ভূমিকা। বোধগম্য নয়, সরকার কেন তাদের নিজেদের ঘরের কিছু নেতার দুর্নীতি ধরে জানান দিলো যে, এ নিয়ে অভিযান চালানো হবে। কিন্তু এরপর আর সেই অভিযান নিয়ে কোনো সাড়াশব্দ নেই। এ বিষয়টি গত বছর ব্যাপক আলোচনার সূত্রপাত করেছিল। জনসাধারণের মনে এমন আশা তৈরি হয়েছিল যে, দেশের অন্যতম বড় সমস্যা দুর্নীতি নিয়ে কিছু একটা করা হবে। কেননা এ সমস্যা দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে বড় অন্তরায়। আর সরকার উন্নয়নের বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বলছে। তাই এ ধারণা সৃষ্টি হয়, এবার দুর্নীতির ‘শেষ দেখা’ পর্যন্ত সরকারি অভিযান অব্যাহত থাকবে। কিন্তু এরপর কেন পিছু হটা হলো, তার ব্যাখ্যা দেয়া হয়নি। দুর্নীতি বিষয়টি শুধু দেশের ভেতরের নয়- আন্তর্জাতিক পর্যায়েও বাংলাদেশের ভাবমর্যাদাকে দারুণভাবে বিনষ্ট করছে। পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের যে তালিকা রয়েছে, তাতে বাংলাদেশের নাম শীর্ষে। এই গ্লানি দেশ পরিচালনাকারীদের ব্যর্থতা হলেও সাধারণ নাগরিকরা এতে নিদারুণ লজ্জাবোধ করে থাকেন। জুয়া ও নেশা সাংবিধানিকভাবে দেশে নিষিদ্ধ। কিন্তু গত বছর বহু জুয়ার আড্ডার নানা খবর এসেছে পত্রপত্রিকায়। এসব আড্ডা সাজিয়েছিল সরকারি দলের প্রভাবশালী সহযোগীরাই। ওই আড্ডাগুলো এক দিনে জমেনি, দীর্ঘ দিন ধরে চলে আসছিল প্রশাসনের সম্পূর্ণ জ্ঞাতসারেই। দুর্নীতির এই ভয়াবহ ক্ষত নিয়েই চলতে হয়েছে জাতিকে। নারীদের প্রতি যৌন নির্যাতনের অসংখ্য ঘটনা গত বছরও ঘটেছে। ক্ষমতাসীনরা নারীর নিরাপত্তা মর্যাদা সম্ভ্রম নিয়ে উচ্চকণ্ঠ হলেও বাস্তবে যদি এর প্রতিফলন ঘটত; তবে হয়তো সারা দেশে এত নারী নির্যাতনের শিকার হওয়ার ঘটনা ঘটত না।
এ দেশের ছাত্ররাজনীতি নিয়ে ২০১৯ সালে বহু কথা হয়েছে। এসব আলোচনা থেকে স্পষ্ট হয়েছে, ছাত্ররাজনীতি ঐতিহ্য হারিয়েছে, পথভ্রষ্ট হয়েছে। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন সরকারের অঙ্গ ছাত্রসংগঠনটি নীতি-নৈতিকতার সব মাত্রা অতিক্রম করেছে। এ সংগঠনের মাথায় এত মারাত্মক পচন ধরেছে, যার ফলে সে মাথাই কেটে ফেলতে হয়েছে। কিন্তু তাতেও এই সংগঠন এতটুকু শৃঙ্খলার মধ্যে আসেনি। তাদের উচ্ছৃঙ্খল ও মারদাঙ্গা চরিত্রের প্রকাশ ঘটে বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরারের ওপর নজিরবিহীন নির্মম হামলার মধ্য দিয়ে। এটাই প্রথম ও শেষ নয়। অতীতে এমন বহু নির্মমতা তারা ঘটিয়েছে। বছরের শেষে এসে ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুরের ওপর জঘন্য হামলা চালায় ছাত্রলীগ। অতীতে এদের এতটা প্রশ্রয় দেয়া হয়েছে যে, এখন আর বাগে আনা যাচ্ছে না। ডাকসু ভিপি নির্বাচনে ছাত্রলীগের প্রার্থীকে নুর পরাজিত করেছেন। এই পরাজয়কে ছাত্রলীগ আজো মেনে নিতে পারেনি। জনমতের প্রতি তাদের শ্রদ্ধা-বিশ্বাস নেই সামান্যও। এমন সংগঠনের পক্ষে ছাত্রসমাজের সমস্যা প্রতিবিধান করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তাই প্রশ্ন উঠবে, এমন অর্বাচীন সংগঠনটির ব্যাপারে তাদের মূল সংগঠন কি কোনো ব্যবস্থা নিতে অক্ষম?
বিদায়ী বছরটিতে ২০১৮ সালের ১১তম সংসদ নির্বাচন নিয়ে নানা আলোচনা ও সমালোচনা হয়েছে। গোটা বছরটি ধরে এ নিয়ে দেশে এবং বিদেশে ব্যাপক নিন্দা-সমালোচনা শোনা গেছে। একাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচনে এত বেশি অনিয়ম ঘটেছিল, যা কিনা নজিরবিহীন। নির্বাচনে ব্যাপক হারে সংঘটিত ন্যক্কারজনক ঘটনা এ দেশের গণতন্ত্রের জন্য হুমকি বলে ধরে নেয়া হয়েছে। সারা দেশে মানুষ ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেয়ার সুযোগ পায়নি। এমন অভিযোগও রয়েছে যে, ভোটের দিনের আগের রাতে নানা ছলচাতুরী কৌশলে ভোটের বাক্স ব্যালট দিয়ে অন্যায়ভাবে ভরিয়ে দেয়া হয়েছে। এমন অশুদ্ধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে ভূমিকা রাখে নির্বাচন কমিশন ও প্রজাতন্ত্রের প্রশাসন। সব নির্বাচন অবাধ নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠানের জন্য যাবতীয় সাংবিধানিক ক্ষমতা-কর্তৃত্ব দেয়া হয়েছে নির্বাচন কমিশনকে। কিন্তু সেভাবে নির্বাচন করার মহৎ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে এই কমিশন। এটা শুধু অপরাধ নয়, সাংবিধানিক কর্তব্যকর্মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে ক্ষমতাসীনদের প্রতি পক্ষপাতিত্ব দেখিয়ে মারাত্মক অন্যায় করা হয়েছে। তাদের এই গর্হিত ভূমিকার কারণে দেশে গণতন্ত্র বিপর্যস্ত হয়েছে, মানুষ তার ভোটাধিকার হারিয়েছে। কমিশনের এমন জঘন্য অন্যায়ের পাশাপাশি প্রশাসনও ক্ষমতাসীনদের প্রতি অনুরাগের বশবর্তী হয়ে নির্বাচনে চরম পক্ষপাতমূলক আচরণ করেছিল। প্রশাসনের দায়িত্ব হচ্ছে নির্বাচনের পরিবেশ সমুন্নত রাখা, যাতে ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের ক্ষেত্রে কোনো বাধার মুখোমুখি না হয়। একাদশ সংসদ নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা হারানোর ক্ষেত্রে যে প্রত্যক্ষ কারণগুলো ছিল, তার অন্যতম হচ্ছে যারা নির্বাচনী বিধান লঙ্ঘন করে ভোটে কারচুপি ও অপকর্ম করেছে, তাদের প্রতিহত করা হয়নি। প্রশাসন এই গুরুদায়িত্ব পালন করেনি। প্রশাসনের কর্মকর্তারা মূলত প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারী। অথচ ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে প্রশাসন এই নীতি সম্পূর্ণ পরিত্যাগ করে ক্ষমতাসীন সরকারের ‘অনুগত’ হিসেবে ভূমিকা রেখেছে। এটা সরকারি কর্মচারী বিধির মারাত্মক লঙ্ঘন।
এমন নির্বাচনের মাধ্যমে যে জাতীয় সংসদ গঠিত হয়েছে, অনিবার্যভাবেই তা জনপ্রতিনিধিত্বমূলক হতে পারে না। সেই সাথে সংসদীয় গণতন্ত্রের মূল চেতনা- ‘সংসদ হবে দেশের রাজনীতির প্রাণকেন্দ্র।’ নবগঠিত সংসদ তাও পূরণ করতে পারেনি। বিরোধী দলহীন সংসদ গোটা বছরে তেমন কোনো ভূমিকাই রাখতে সক্ষম হয়নি, যা উল্লেখ করা জরুরি। সংসদে প্রকৃত কোনো বিরোধী দল না থাকায় সেখানে সরকারের কোনো জবাবদিহি দেখা যায়নি। অথচ সংসদীয় গণতন্ত্রে বিরোধী দলের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে ক্ষমতাসীনদের ভুলত্রুটি ধরে তা নিয়ে সমালোচনা ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া। সংসদীয় গণতন্ত্রে সরকারের পাশাপাশি বিরোধী দলের সক্রিয় অংশগ্রহণে এই পদ্ধতির সরকারব্যবস্থার সাফল্য নির্ভর করে। ২০১৯ সালে জাতীয় সমস্যাসংক্রান্ত এমন বহু কিছু ছিল, যা সংসদে বিস্তারিত আলোচনার দরকার ছিল। কিন্তু ‘বিরোধী’ দলের এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ লক্ষ করা যায়নি। সংসদের এমন নিষ্ক্রিয়তার ফলে রাষ্ট্রীয় তিন অঙ্গের একটি হিসেবে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি ব্যর্থ হওয়ায় গোটা রাষ্ট্রে ভারসাম্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
২০১৯ সালের বিদায়ক্ষণ ছিল আওয়ামী লীগের ক্ষমতা নেয়ার পরপর দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম বর্ষের পূর্তি। যদি তাদের এই সময়টার নির্মোহ মূল্যায়ন করা হয়, তবে এ কথা বলা যাবে না যে, তারা তাদের দায়িত্ব পালন নিয়ে শুভ সূচনা করতে পেরেছেন। তাই আগামী দিনে তাদের পক্ষে গত মেয়াদের চেয়ে ভালো একটা কিছু করার ব্যাপারে ভরসা করা যায় না। গত বছরটিতে এমন কোনো রাজনৈতিক অস্থিরতা ছিল না যে, তারা বলতে পারেন- দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে পরিবেশ পরিস্থিতি অনুকূল ছিল না; বরং এটাই ধরে নিতে হবে, তারা যোগ্যতা-দক্ষতার মাপকাঠিতে উত্তীর্ণ নন। আজকের ক্ষমতাসীনদের হাতেই বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থার সূচনা। সেই থেকে এ পর্যন্ত দলটি সবচেয়ে দীর্ঘ সময় দেশে সরকার চালিয়েছে। কিন্তু এই দীর্ঘ সময়ে কেবল সংবিধান রচনা এবং তার প্রবর্তন ব্যতীত এমন কোনো কৃতিত্বের কথা উল্লেখ করা যাবে না, যা এই দলের দেশ পরিচালনার ইতিহাসে একটা গৌরবের স্মারক হয়ে থাকবে। আওয়ামী লীগের আচরণ ও কার্যধারায় একটা বিষয় খুব বেশি লক্ষ করা যায় যে, তাদের মধ্যে এক ধরনের অহমিকা সব সময় কাজ করে থাকে। তারা যা করেন তা যেন সমালোচনার ঊর্ধ্বে এবং সেটাই সর্বোত্তম। এ জন্য তারা কখনোই তাদের প্রতিপক্ষের মত ও পথকে সহ্য করেন না। গত বছর সংসদের বাইরে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর অলঙ্ঘনীয় যেসব সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে তা ভোগ করতে দেয়া হয়নি। সভা সমাবেশ করার যে অধিকার রাজনৈতিক সংগঠনের রয়েছে, কর্তৃত্ববাদী আচরণ করে সেগুলোতে বাধা দেয়া হয়েছে। বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অসংখ্য গায়েবি মামলা করা হয়েছে। বিরোধী দলগুলোর প্রতি এমন আচরণে সরকারের চরিত্রের সে দিকটি ফুটে ওঠে যে, ভিন্নমতের অধিকারের প্রতি তারা শ্রদ্ধাশীল নন। অথচ দেশের শাসনতন্ত্র গণতন্ত্রকে সর্বাধিক অগ্রাধিকার দিয়ে বলেছে, ‘প্রজাতন্ত্র হইবে গণতন্ত্র’। এখন প্রশাসনের এজাতীয় আচার-আচরণ থেকে সংবিধানের সে চেতনার প্রতি তারা কতটা শ্রদ্ধাশীল তা উপলব্ধি করা যায়। এই প্রেক্ষাপটে নতুন বছরে গণতন্ত্রের কী হাল হতে পারে তা না বোঝার কোনো কারণ নেই।
গেল বছরে যে এন্তার সমস্যা দেশ কাটিয়ে এসেছে, সেগুলোর প্রতিবিধানের প্রতি নজর দিয়ে তা থেকে বেরিয়ে আসার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে পারলেই নতুন বছরটি অগ্রগতির একটি মাইলফলক হয়ে উঠতে পারে। এ জন্য গণতন্ত্র, সুশাসন ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় প্রশাসনকে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হতে হবে এবং অঙ্গীকার প্রদর্শন জরুরি। নতুন বছরের প্রথমেই রয়েছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচন। এই নির্বাচনের স্বরূপ থেকেই বোঝা যাবে, সরকার ও নির্বাচন কমিশন গণতন্ত্রের প্রতি কতটা নিষ্ঠাবান ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ভবিষ্যতে দেশে কতটা বিকশিত হতে পারবে গণতন্ত্র? ঢাকাবাসী প্রায় দুই কোটি মানুষ এখন তাকিয়ে আছে আগামীতে করপোরেশনে তাদের ভোটাধিকার কতটা নিশ্চিত হবে সে দিকে। তাদের একাদশ সংসদ নির্বাচনের যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, তার যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ওপর নির্ভর করছে উন্নয়নের ধারা। ইতোমধ্যে বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে, বাংলাদেশ উন্নয়নের বিভিন্ন সূচকে ২০১৯-এ পিছিয়ে পড়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে দেশে গণতন্ত্র থাকা অত্যন্ত জরুরি। কেননা রাষ্ট্রীয় কাজে যদি কোনো প্রকার জবাবদিহিতা না থাকে, সে ক্ষেত্রে দুর্নীতি অনিয়ম বিশৃঙ্খলা প্রশাসনে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তাই জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা অপরিহার্য, আর শুধু গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায়ই প্রশাসনে জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা পেতে পারে। সিটি করপোরেশনের নির্বাচন থেকেই দেশে গণতন্ত্রের হারিয়ে যাওয়া বিশুদ্ধতা ফিরে আসুক। একই সাথে জাতীয় অগ্রগতির জন্য প্রয়োজন সুশাসনের আর সুশাসন একক কোনো বিষয় নয়। মানুষ তার অধিকার ফিরে পাক, আইন তার নিজস্ব গতিতে চলুক, প্রশাসন অনুরাগ-বিরাগের ভিত্তিতে নয়; বরং ন্যায্যতাকে অনুসরণ করুক। এভাবেই দেশ আগামী দিনে এগিয়ে যাওয়ার পথ অনুসরণ করতে পারবে।
চলতি বছর বাংলাদেশের স্থপতি ও জাতির মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী। সরকার এই শতবার্ষিকী উদযাপনের জন্য নানা আয়োজন উদ্যোগ নিয়েছে। জাতির এই মহান সন্তানকে সরকার যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভালোবাসা দিক তা দেশবাসীর কাম্য। সেই সাথে এই অনুরোধ থাকবে, সেই নেতার কর্ম-আদর্শকে অনুসরণ করা উচিত। তিনি সারা জীবন এ দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং সব নির্যাতন বৈষম্য দূর করা, সর্বোপরি গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন। এসব আদর্শের প্রতিফলন ঘটেছে ১৯৭২ সালে তার সরকারের প্রণীত বাংলাদেশের সংবিধানে যা জাতির এগিয়ে যাওয়ার আলোকবর্তিকা। সে মহৎ আদর্শ অনুসরণ করে সরকার দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাক। এটাই নতুন বছরের কামনা। মুজিবের এই আদর্শকে অনুসরণ করাই হবে তার প্রতি সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রদর্শন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা