দুর্নীতির মচ্ছব ও আমাদের গন্তব্য
- সৈয়দ মাসুদ মোস্তফা
- ২০ ডিসেম্বর ২০১৯, ২০:১৭
জাতীয় ক্ষেত্রে আমাদের কিছু ইতিবাচক অর্জন থাকলেও সর্বনাশা দুর্নীতি সব অর্জনকেই ম্লান করে দিচ্ছে। ফলে আমরা জাতি হিসেবে বিশ^ দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারছি না। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের দুর্নীতির ধারণা সূচকে ২০১৮ সালে বাংলাদেশে দুর্নীতি উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। গত বছর বাংলাদেশ দুর্নীতি সূচকে ১০০ এর মধ্যে স্কোর করেছে ২৬। আগের বছর এটি ছিল ২৮। ২০১৭ সালে বাংলাদেশের সার্বিক অবস্থান ছিল নিচের দিক থেকে ১৭। ২০১৮ তে হয়েছে ১৩। উপরের দিক থেকে ২০১৮ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৯; যা কোনো ইতিবাচক খবর নয়।
আমাদের জাতীয় উন্নয়ন ও অগ্রগতির ক্ষেত্রে দুর্নীতিই হচ্ছে প্রধান অন্তরায়। রাষ্ট্রের এমন কোনো খাত নেই যেখানে দুর্নীতির মহামারীতে আক্রান্ত হয়নি। এক গবষেণায় দেখা গেছে, দেশে ক্রমবর্ধমান ও নিয়ন্ত্রণহীন দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরা গেলে জিডিপি ২ শতাংশ বাড়ানো সম্ভব। দুদক সূত্রও বলছে, দুর্নীতির কারণে প্রতি বছর কমপক্ষে ১৮ হাজার কোটি টাকা মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) যোগ হতে পারছে না। তবে অর্থনীতিবিদদের কেউ কেউ মনে করছেন জিডিপির চলতি মূল্যকে ভিত্তি ধরে হিসাব করলে বছরে অঙ্কটা দাঁড়াবে প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা, যা জাতীয় অর্থনীতির জন্য রীতিমতো অশনিসঙ্কেত।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের রাজনৈতিক অঙ্গীকার ও ঘোষণা থাকলেও সদিচ্ছার অভাবেই বাস্তবায়নটা বেশ দুরূহ হয়ে উঠেছে। মূলত অপরাধ করে পার পাওয়া ও বিচারহীনতার অপসংস্কৃতির কারণেই দেশে অপরাধপ্রবণতার পারদটা এখন ঊর্ধ্বমুখী। আমাদের দেশে উচ্চপর্যায়ের লোকদের বিচারের আওতায় আনার উদাহরণ খুব একটা দেখা যায় না। ব্যাংক খাতে নিয়ন্ত্রণহীন দুর্নীতি, জালিয়াতি, ভূমি-নদী-জলাশয় দখল, সরকারি ক্রয় খাতে রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণের কারণে দুর্নীতি এখন প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেতে চলেছে। দুদক ও অন্যান্য জবাবদিহিমূলক প্রতিষ্ঠানগুলোর উদাসীনতা, দুর্বলতা ও স্বেচ্ছাচারিতার কারণেই দুর্নীতি প্রায় সব ক্ষেত্রেই এখন অপ্রতিরোধ্য। ফলে দেশের আর্থিক খাতে এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
দেশের ব্যাংকগুলোতে চলছে ভয়াবহ তারল্য সঙ্কট। বাংলাদেশ ব্যাংক খেলাপি ঋণের ব্যাপারে দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষে, যা ১২ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে। দেশের সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে চলছে লুটপাটের মহোৎসব। বর্তমানে দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ প্রায় এক লাখ ১২ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা। টাকা পাচারকারী আর ঋণখেলাপিদের বেপরোয়া লুটপাটে দেশের ব্যাংকগুলো প্রায় দেউলিয়া। লাগামহীন অনিয়মের কারণে গত কয়েক মাসে শেয়ারবাজার থেকে বিদেশীরা ৬০০ কোটি টাকার পুঁজি প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
শুধুই ব্যাংক আর শেয়ারবাজার নয়, দুর্নীতির মচ্ছব চলছে সরকারের সব প্রকল্প এবং প্রতিষ্ঠানজুড়ে। গত মে মাসে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ফ্ল্যাটের জন্য ছয় হাজার ৭১৭ টাকায় একেকটি বালিশ ক্রয়ের মহাদুর্নীতিসহ ৩৬ কোটি টাকার বেশি লুটপাটের ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর দুর্নীতির বিশ্বরেকর্ড গড়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর আর ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একটি পর্দা কিনতে দাম দেখিয়েছে সাড়ে ৩৭ লাখ টাকা। ইতোমধ্যে হাসপাতালটির যন্ত্র ও সরঞ্জাম কেনাকাটাতেই অন্তত ৪১ কোটি টাকার দুর্নীতির প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। নাগরিক টিভির অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাসপাতালের একটি অক্সিজেন জেনারেটিং প্ল্যান্ট কেনার খরচ দেখানো হয়েছে পাঁচ কোটি ২৭ লাখ টাকা। একটি ভ্যাকুয়াম প্ল্যান্ট ৮৭ লাখ ৫০ হাজার, একটি বিএইইস মনিটরিং প্ল্যান্ট ২৩ লাখ ৭৫ হাজার, তিনটি ডিজিটাল ব্লাড প্রেসার মেশিন ৩০ লাখ ৭৫ হাজার টাকায়, আর একটি হেড কার্ডিয়াক স্টেথোসকোপের দাম ১ লাখ ১২ হাজার টাকা। এমন অবিশ্বাস্য দামে ১৬৬টি যন্ত্র ও সরঞ্জাম কিনেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালটির ১১ কোটি ৫৩ লাখ ৪৬৫ টাকার মেডিক্যাল যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম কেনাকাটায় বিল দেখানো হয়েছে ৫২ কোটি ৬৬ লাখ ৭১ হাজার ২০০ টাকা। বই ক্রয়েও চাঞ্চল্যকর অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। সাড়ে পাঁচ হাজার টাকার বই স্বাস্থ্য অধিদফতর কিনেছে সাড়ে ৮৫ হাজার টাকায়! গোপালগঞ্জের শেখ সায়েরা খাতুন মেডিক্যাল কলেজের জন্য ‘প্রিন্সিপাল অ্যান্ড প্র্যাকটিস অব সার্জারি’ নামক পাঠ্যবইয়ের ১০ কপির মোট দাম পরিশোধ করা হয়েছে আট লাখ ৫৫ হাজার টাকা। শুধু এই একটি আইটেমের বই-ই নয়, দু’টি টেন্ডারে ৪৭৯টি আইটেমের সাত হাজার ৯৫০টি বই কিনেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। এসব বইয়ের মূল্য বাবদ পরিশোধ করা হয়েছে ছয় কোটি ৮৯ লাখ ৩৪ হাজার ২৪৩ টাকা, যা রীতিমতো অবিশ্বাস্য বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
নানা প্রকল্পের নামে সরকার সংশ্লিষ্টদের বেপরোয়া দুর্নীতিতে উৎসাহিত হয়ে এখন প্রশাসনের লোকজনও জড়িয়ে পড়েছে স্বেচ্ছাচারিতা আর দুর্নীতিতে। হারিয়ে গেছে জবাবদিহি আর শৃঙ্খলার সব রীতিনীতি। পুকুর কাটা শিখতে রাজশাহীর বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ১৬ কর্মকর্তা রাষ্ট্রের এক কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয় করে ইউরোপ সফরের খবর গণমাধ্যম থেকে জানা গেছে। বিদেশে দেশ থেকে অর্থ পাচার প্রবণতাও আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। সম্প্রতি জাতিসঙ্ঘের বিনিয়োগ বাণিজ্য সংস্থার রিপোর্টে বাংলাদেশ থেকে বিদেশে টাকা পাচারের এক উদ্বেগজনক তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম সমস্যা লাগামহীন অর্থপাচার।’ বাংলাদেশ আর্থসামাজিক খাতে উন্নতি করলেও সুশাসন ও সুষ্ঠু আর্থিক ব্যবস্থাপনার অভাব আমাদের জাতিসত্তাকে ক্রমেই হীনবল করে ফেলছে। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এসব বন্ধ না হলে রাজস্ব আয় কাক্সিক্ষত মাত্রায় যেমন বাড়বে না, ঠিক তেমনিভাবে আগামী দিনে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলাও প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে।
পাওয়া তথ্যমতে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে দেশের মোট রাজস্ব আয় ছিল এক লাখ ৮২ হাজার ২৪৪ কোটি টাকা। জাতিসঙ্ঘের বিনিয়োগ বাণিজ্য সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, এর ৩৬ শতাংশ পাচার হয়ে থাকলে এই সময়ে পাচার হয়েছে ৬৫৪ হাজার কোটি টাকা, যা দিয়ে দু’টি পদ্মা সেতু নির্মাণ করা সম্ভব। আগের দিনে দেশ থেকে হুন্ডি ও চোরাচালানের মাধ্যমে টাকা পাচার হতো, এখন হচ্ছে ব্যাংকিং চ্যানেলেও। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে তা প্রতিরোধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।
মূলত দেশে দুর্নীতি বা অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনের ক্ষেত্র অবারিত থাকায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিদেশে অর্থ পাচার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অবৈধ উৎস থেকে অর্থ উপার্জন করায় তা নিরাপদ রাখার জন্যই বিদেশে পাচার করা হচ্ছে। পত্রিকার পাতা খুললে প্রায়ই এ ধরনের দুর্নীতির খবর আমাদের চোখের সামনে ভেসে উঠছে। সম্প্রতি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের দুর্নীতির যে খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, তা রীতিমতো আঁতকে ওঠার মতো। ইসলামী মূল্যবোধভিত্তিক এই রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানটিতে পবিত্র কুরআন মাজিদ মুদ্রণ নিয়ে বড় ধরনের দুর্নীতি হয়েছে বলে সরকারি তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। জানা যায়, ইফার ২০০৯-১৮ অর্থবছরের ১০ বছরের এই নিরীক্ষায় ৯৬টি খাতে সর্বমোট ৭৯৬ কোটি ৭৮ লাখ টাকার অনিয়ম ধরা পড়েছে। তার মধ্যে কুরআন শরিফ মুদ্রণ পাঁচটি খাতে ১৬ কোটি ৭০ লাখ চার হাজার টাকা আত্মসাৎ হয়েছে। গত ৯ জুলাই ২০১৯ থেকে ১০ অক্টোবর ২০১৯ পরিচালিত এই নিরীক্ষার খসড়া রিপোর্টটি গত ২৪ নভেম্বর ধর্ম মন্ত্রণালয়ে এগ্রিড মিটিংয়ের মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত হয়েছে।
ফলে রিপোর্টে অনিয়মের পুরো টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত এবং অনিয়মের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। নিরীক্ষার প্রাথমিক প্রতিবেদনে ইফার ১৩৪টি খাতে প্রায় এক হাজার কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগের ব্যাপারে ইফার জবাব চাওয়া হয়। এরপর ইফা ডিজির পক্ষ থেকে কয়েক দফায় প্রায় ৮২ কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত দেয়াসহ জবাব দেয়া হয়েছে বলে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে। গণশিক্ষা প্রকল্পের ২০১৭-১৮ অর্থবছরে আরবি শিক্ষাবিষয়ক টিচার্স গাইড, অনুশীলন ও ড্রয়িং খাতা ইত্যাদি মুদ্রণ বাবদ ১০ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার টাকা বিল পরিশোধ করা হয়। অথচ এ ধরনের কোনো গাইড ও সামগ্রী ছাপানো হয়নি। সন্ত্রাস প্রতিরোধ ও সামাজিক সমস্যা সমাধানে ইসলাম শীর্ষক কর্মসূচির পুস্তক মুদ্রণ ও বাঁধাই বাবদ তিন কোটি ২৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা পরিশোধ করা হলেও পুস্তক মুদ্রণের কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, ‘সামাজিক সমস্যা সমাধানে ইসলাম’ শীর্ষক গ্রন্থ মুদ্রণের জন্য ২০১০-১১ অর্থবছরে দুই লাখ ২০ হাজার কপি এবং ২০১১-১২ অর্থবছরে দুই লাখ ৮০ হাজার কপি মুদ্রণের কার্যাদেশ হয়। এই কার্যাদেশ অনুযায়ী বিল গ্রহণের নথিপত্র পাওয়া গেলেও বই ছাপানো বা পাঠানোর কোনো রেকর্ড দেখাতে পারেনি ইফা কর্তৃপক্ষ। এ অভিযোগের জবাবও দেয়নি সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটি। ফলে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাসহ ওই টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিতে বলেছে সংশ্লিষ্ট অডিট টিম।
এমনকি উগ্রবাদ ও সন্ত্রাস প্রতিরোধ কর্মসূচির বরাদ্দ থেকে ইফা প্রেসকে দেয়ার নামে ৩০ লাখ ৫৩ হাজার ৭২৯ টাকা আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রদত্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। ২০১১-১২ অর্থবছরে এই টাকা স্থানান্তরের প্রমাণ পাওয়া গেলেও এর কোনো হিসাব দেখাতে পারেনি ইফা কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া উগ্রবাদবিরোধী প্রচারণার টাকা ইফা প্রেস খাতে কেন স্থানান্তর করা হয়েছে সে বিষয়েও কোনো জবাব পায়নি অডিট টিম। ইফা ডিজি সামীম মো: আফজাল ও প্রকল্প পরিচালক ড. সৈয়দ এমরান ২০১৪-১৮ অর্থবছরে নিয়মবহির্ভূতভাবে মোট ১৪ লাখ ৯২ হাজার ৭৪১ টাকা রয়্যালিটি নিয়েছেন। এর মধ্যে ডিজি গ্রহণ করেছেন ১০ লাখ ২৬ হাজার ৩৭৫ টাকা এবং অপর পরিচালক নিয়েছেন চার লাখ ৬৬ হাজার ২৬৬ টাকা। অথচ এ ধরনের রয়্যালিটি বা সম্মানী নেয়া বন্ধের ব্যাপারে সরকারের আদেশ রয়েছে। এ ছাড়া এমন সম্মানী নেয়ার ক্ষেত্রে অর্থ বিভাগের অনুমতি নেয়া বাধ্যতামূলক। কিন্তু এ ব্যাপারে প্রথাসিদ্ধ কোনো নিয়মই অনুসরণ করা হয়নি।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ডিজি একজন বিচারিক কর্মকর্তা। তিনি জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর মামলার রায়ও দিয়েছেন। পরে তিনি ইসলামিক ফাউন্ডেশনে প্রেষণে মহাপরিচালক হিসেবে নিযুক্তি পেয়েছেন। কিন্তু ১০ বছরের দায়িত্ব পালনের সময় রাষ্ট্রীয় এই প্রতিষ্ঠানটিতে প্রায় হাজার কোটি টাকার অনিয়মের ঘটনায় তার অতীত নিয়েও প্রশ্ন তোলার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। কারণ ইফায় দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে তিনি নিজের যোগ্যতা ও দক্ষতার স্বাক্ষর রাখতে পারেননি।
সারা দেশেই এখন দুর্নীতির মচ্ছব চলছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকার শূন্য সহনশীলতা ঘোষণা করলেও বাস্তবে তার তেমন প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না, বরং তা নেতিবাচক রাজনীতির সঙ্কীর্ণ বৃত্তেই আটকা পড়েছে। দেশে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন থাকলেও এ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটির তেমন কোনো সাফল্য নেই। মূলত দেশে গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের বিচ্যুতি ও আইনের শাসনের দুর্বলতার কারণেই রাষ্ট্রাচারে দুর্নীতিসহ নানা অনিয়ম স্থায়ী রূপ নিতে শুরু করেছে এবং সার্বিক পরিস্থিতিও অবনতিশীল।
মূলত লাগামহীন দুর্নীতি ও শাসক গোষ্ঠীর উদাসীনতার কারণেই জাতি হিসেবে আমাদের গন্তব্য অনেকটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা, নিয়ন্ত্রণহীন দুর্নীতি ও রাষ্ট্রাচারের বিচ্যুতিই এ জন্য প্রধানত দায়ী। কারণ দেশে গণতন্ত্র, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠিত না থাকায় গোষ্ঠীবিশেষের ক্ষমতা এখন রীতিমতো নিরঙ্কুশ। আর এই নিরঙ্কুশ ক্ষমতাই নিরঙ্কুশ দুর্নীতির জন্য প্রধান অনুষঙ্গ। মনীষী লর্ড অ্যাকটনের ভাষায়, ‘সকল ক্ষমতা দুর্নীতিগ্রস্ত। কিন্তু নিরঙ্কুশ ক্ষমতা নিরঙ্কুশভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত’। আমরা বোধহয় সেই অশুভ বৃত্তেই আটকা পড়েছি।
smmjoy@gmail.com
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা