২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

বড় বিপদ কোনটি

-

বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় বিপদ বা সঙ্কট এখন কোনটি। অনেক সমস্যা ও প্রতিকূলতার মধ্যে অনেকে হয়তো একটা তালিকা তৈরি করতে বসবেন। পেঁয়াজের দাম থেকে শুরু হবে রাস্তায় মানুষের বেঘোরে জীবনদান পর্যন্ত, অসংখ্য সমস্যা তালিকায় স্থান পাবে। এগুলো আমাদের দেশের অভ্যন্তরে তৈরি হওয়া বিপদ-আপদ। এগুলোকে আমরা চাইলে ধীরে সহনীয় করতে পারব। এর মোকাবেলা ও নিয়ন্ত্রণও নিজেদের কাছে। এসব বিপদের একটা সীমা-পরিসীমা রয়েছে। এগুলো নিয়ে জাতির দিশা হারানো উচিত নয়। সমস্যা আছে; সমাধানও হবে। তাই এগুলোকে সমাধান-অযোগ্য সবচেয়ে বড় বিপদ হয়তো বলা যায় না।

জাতির সামনে এমন বিপদও রয়েছে যার সমাধান নিজেদের কাছে নেই। মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিতাড়িত হয়ে আমাদের দেশে আশ্রয় গ্রহণ, এমনই একটি সঙ্কটের জন্ম দিয়েছে। এর ফলে সৃষ্ট সমস্যা মোকাবেলা করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে আজো। রোহিঙ্গারা যেখানে আশ্রয় নিয়েছেন, সেখানকার মানুষ ও পরিবেশের ওপর এর বিরাট প্রভাব পড়েছে। এলাকাটি পাহাড়-সাগর-নদীর সমন্বয়ে প্রকৃতির অনন্য এক সমাহার। একে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ সংরক্ষিত একটি এলাকা বলা যায়। বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ জনপদ। একটি দেশের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার জন্য যতটুকু বনভূমি দরকার, বাংলাদেশে তার অর্ধেক বনভূমিও নেই। কক্সবাজার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান বনাঞ্চল। একই সাথে, সমুদ্রসংলগ্ন কক্সবাজার প্রাকৃতিক সম্পদ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যশোভিত এলাকা। এখানে রয়েছে বিশ্বের দীর্ঘত সমুদ্রসৈকত। পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় এলাকা হিসেবে এটি গড়ে উঠতে যাচ্ছে।

বাংলাদেশের পর্যটক আকর্ষণের একটি প্রধান কেন্দ্র কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত। এখানে যোগাযোগ ব্যবস্থাও উন্নত হচ্ছিল। কক্সবাজারে গড়ে উঠেছে আন্তর্জাতিক মানের একাধিক হোটেল। রোহিঙ্গাদের আগমনে পুরো এলাকার জনবিন্যাস বদলে গেছে। সেখানকার রোহিঙ্গা আর বাঙালিদের সংখ্যা সমান হয়ে গেছে। রোহিঙ্গাদের বসবাসের সংস্থান করতে গিয়ে এলাকার প্রাকৃতিক পরিবেশ তছনছ হয়ে গেছে। পুরো অঞ্চলের প্রকৃতির ওপর দীর্ঘমেয়াদে বিরূপ প্রভাবের ফলে ওই অঞ্চলে প্রাণপরিবেশের চরম ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। পুরো অঞ্চলকে টার্গেট পর্যটন স্পট হিসেবে গড়ে তোলার প্রচেষ্টা থমকে গেছে। পুরো এলাকার পুরো চিত্রই যেন পাল্টে গেছে।

কক্সবাজারের যে অঞ্চলটিতে রোহিঙ্গারা আশ্রয় নিয়েছে, সেখানকার স্থানীয় মানুষেরা প্রধানত দরিদ্র। মাছ ধরে শিল্পকারখানার শ্রমিক হিসেবে কাজ করে তারা জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। রোহিঙ্গারা স্থানীয়দের জীবিকায় ভাগ বসিয়েছে। তাই স্থানীয় মানুষেরা জীবিকা হারাচ্ছে। এটা কয়েক লাখ রোহিঙ্গা উপস্থিতির ‘নগদ বিপদ’। সবচেয়ে বড় আশঙ্কার ব্যাপার হচ্ছে, বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা গোষ্ঠী নিজেই। এত মানুষ একসাথে থাকতে গেলে নিরাপত্তা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সেখানে প্রতিদিন কিছু না কিছু আইনশৃঙ্খলা সমস্যার উদ্ভব হচ্ছে। রোহিঙ্গারা নিজেরাও প্রাণ হারাচ্ছে। প্রাণ দিচ্ছে স্থানীয় মানুষও। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এ নিয়ে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে।

এ বিশৃঙ্খলা শুধু উখিয়া-টেকনাফে সীমাবদ্ধ থাকবে না। রোহিঙ্গারা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। অসৎ অনেকে সহায়সম্বলহীন রোহিঙ্গাদের অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যবহার করার পাঁয়তারা করছে। রোহিঙ্গারা নিজেদের বঞ্চিত দেখে বিপথগামী হতে পারে। এমন কিছু লক্ষণ এর মধ্যে দেখা গেছে। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং নিরাপত্তার জন্য তারা হুমকি হয়ে ওঠা অসম্ভব নয়। শুধু বাংলাদেশ নয়, এ নিপীড়িত ও বঞ্চিত মানুষেরা হুমকি হয়ে উঠতে পারে পুরো অঞ্চলের জন্য। ইস্যুটি মিয়ানমারের সাথে বাংলাদেশের দ্বন্দ্বকে আরো উসকে দেবে। সব সময় বাংলাদেশ ধৈর্য ধারণ করে থাকতে পারবে, এটি আশা করা যায় না স্বাভাবিকভাবেই।

এর মধ্যে মিয়ানমার তার সীমান্তে দেয়াল নির্মাণ এবং সামরিক স্থাপনা নির্মাণ বৃদ্ধি করছে। দেশটি সীমান্তে সামরিক মহড়া চালাচ্ছে। তারা বাংলাদেশের উখিয়া-টেকনাফ আকাশ সীমান্ত বিভিন্ন সময় লঙ্ঘন করেছে। বঙ্গোপসাগরকে ঘিরে তারা নৌশক্তি বাড়াচ্ছে। তারা এ সাগরে শক্তির প্রদর্শনও করেছে। সীমান্ত পেরিয়ে তাদের দেশের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীগুলো বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। কয়েক দশক ধরে এ অঞ্চলটি অস্থির ও অনিরাপদ হয়ে আছে। পুরো দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব এর ফলে হুমকির সম্মুখীন। এ বিপদকে আমরা চাইলেই সমাধান করে ফেলতে পারব না। মনে হয়, বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি কী, সেটা আর উল্লেখ করার প্রয়োজন নেই।

এ পরিস্থিতির উদ্ভব এক দিনে হয়নি। রোহিঙ্গাদের নিয়ে বিপজ্জনক খেলার মহড়া আমাদের চোখের সামনেই হয়েছে। এ ব্যাপারে আমাদের সতর্কতা ও সচেতনতার বিষম অভাব এখন হাড়ে হাড়ে ভোগাচ্ছে জাতিকে। চরম নির্বিকার ভূমিকার চড়া মূল্য দিতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। একই ধরনের আরেকটি হুমকির লক্ষণ ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠছে। এটারও হঠাৎ করে উদ্ভব ঘটেনি। আসামে নাগরিকপঞ্জি বা এনআরসি তৈরির ইতিহাস চার দশকের। শেষ পর্যন্ত এটি যে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্য ভয়াবহ হয়ে উঠবে তা আমরা বুঝতে চাইনি। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, ভারত থেকে অনুপ্রবেশ শুরু হয়ে গেছে। বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি সংশ্লিষ্ট লোকজনদের আটক করছে। বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের হার আরো অনেক বেশি বলে খবর প্রকাশিত হচ্ছে।

যশোর ও ঝিনাইদহ সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশকারী ভারতীয় নরনারীরা আসাম থেকে আসছে না। তারা আসছে দক্ষিণের বেঙ্গালুরু থেকে। তাই বলে আসাম ও ভারতের অন্যান্য অঞ্চল থেকে অনুপ্রবেশ ঘটবে না, সে লক্ষণ কিন্তু নেই। ভারতের বেঙ্গালুরু থেকে তারা এমন এক সময় বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করছে যখন সারা ভারতে নাগরিকপঞ্জি তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার। ইতোমধ্যে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারীরা জানাচ্ছে, তাদের ওপর হুমকি-ধমকি শুরু হয়ে গেছে। জীবন বাঁচাতে তারা সহায়সম্পত্তি ছেড়ে দিয়ে বাংলাদেশমুখী হচ্ছে। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার অনুপ্রবেশে ইন্ধন দিচ্ছে। এ ধরনের ৫৯ জনকে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার নিজেদের জিম্মায় নিয়েছে। এদেরকে কেন্দ্রীয় সরকার বাংলাদেশে ঠেলে দেয়ার জন্য কর্নাটকের অনন্তপুর থেকে ট্রেনে করে পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া রেল স্টেশনে পাঠায়। তাদের সাথে ছিল কর্নাটকের পুলিশের একটি দল। তারা আটক ব্যক্তিদের হাওড়া রেল পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এরপর তাদের ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের কাছে তুলে দেয়ার কথা ছিল। ইতোমধ্যে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে প্রবল প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। মানবাধিকার কর্মীরা হাওড়া স্টেশনে এর প্রতিবাদে মিছিল করেছেন। পরে তাদের অনুপ্রবেশ করানোর চিন্তা আপাতত স্থগিত করা হয়েছে।

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের এ ক্ষেত্রে দায়িত্বহীনতার সমালোচনা করেছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো। নিজের দেশে কিছু লোককে এভাবে ধরে জোর করে অন্য দেশে ‘পুশ’ করে দেয়া সমীচীন হতে পারে না। ওই লোকদের নাগরিকত্ব নির্ধারিত হয়নি আজ পর্যন্ত। তারা যদি বাংলাদেশের নাগরিক বলে প্রমাণ করা হয় তাহলে বৈধ পন্থা রয়েছে। প্রয়োজনে তাদের বৈধভাবে বাংলাদেশে পাঠানো যায়। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ উদারতা দেখিয়েছে। কিন্তু আমরা এর আগেও ভারতের ‘পুশইন’ প্রচেষ্টা দেখেছি। তারা জোর করে বাংলাদেশে এটা করার চেষ্টা করেছে। সর্বশেষ, ভারতে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের জোর করে বাংলাদেশে ঠেলে দেয়ার চেষ্টা করেছে তারা। দুই সরকারের মধ্যে উচ্চ বন্ধুত্বের দাবি করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে ভারত স্বচ্ছতা সহকারে বাংলাদেশের সাথে দেনদরবার করতে পারে। সেটা কিন্তু তারা করছেন না।

নাগরিকপঞ্জি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে যে অস্বস্তি বিরাজ করছে, সেটা ভারত প্রকাশ্যে স্বীকার করতে চাচ্ছে না। বরং দেশটি বাংলাদেশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে চোখবুজে বারবার আশ্বস্ত করে চলেছে। এটি তাদের দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার বলে এক কথায় শেষ করে দিতে চাচ্ছে। এ নিয়ে বাংলাদেশকে কোনো চিন্তা করতে নিষেধ করছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, ভারতের আশ্বাসের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ফারাক্কা বাঁধ, তিস্তার পানি, সীমান্ত হত্যা- এসব ব্যাপারে তাদের আশ্বাস শূন্যগর্ভ কিছু বুলি হয়ে রয়েছে। আসামে ভারতের ‘অনাগরিক’ হওয়া মানুষের গন্তব্য কোথায়, সরকারিভাবে সেটা তারা প্রকাশ্যে বলছে না। তবে বিজেপির নেতারা মাঠের বক্তৃতায় সেটা স্পষ্ট করে বলছেন। বাংলাদেশের সাথে আনুষ্ঠানিক আলোচনায় বলছেন তারা এর উল্টো। এদিকে, বাংলাদেশ অভিমুখে অনুপ্রবেশ শুরু হয়েছে। আর ভারত সরকারের চেয়ে ক্ষমতাসীন বিজেপির আস্ফালনকারী নেতাদের কথাই কাজে বেশি প্রমাণিত হচ্ছে।

আমরা অনাহূত পরিস্থিতির শিকার হয়ে যাচ্ছি। ভারত ও মিয়ানমার- মাত্র এ দুটো দেশের সাথে বাংলাদেশের সীমান্ত। আর দুটো দেশের পক্ষ থেকেই বিরাট হুমকি আসছে। এ হুমকি ভবিষ্যতের জন্য নয়। সরাসরি আমরা আক্রান্ত হয়েছি। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিরাপদ থাকছে না। কিন্তু এ হুমকি বহু আগেই আঁচ করা গেছে। বাংলাদেশের রয়েছে একটি শক্তিশালী সেনাবাহিনী। দেশের জাতীয় বাজেটের একটি বড় অংশ প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় করা হয়। এ ব্যয় এই জন্যই করা হয় যেন স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সুরক্ষিত থাকে। ব্যাপারটি সব সময় সশস্ত্র যুদ্ধের নয়। উপযুক্ত নীতি-কৌশল প্রণয়ন এবং অগ্রিম ব্যবস্থা নেয়াই অনেক সময় যথেষ্ট। কিন্তু রোহিঙ্গা পরিস্থিতি বলছে, আমরা সেটা করিনি। ‘সময়ের এক ফোঁড় অসময়ের দশ ফোঁড়’।

জাতি হিসেবে নিজেদের রাষ্ট্রীয় অস্তিত্ব এবং সার্বভৌমত্ব সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এ ক্ষেত্রে আধুনিক রাষ্ট্র সবচেয়ে সজাগ। তারা সাধারণত সামনের দিকে চেয়ে থাকে। অদূর ভবিষ্যতে আপতিত হতে পারে এমন সমস্যা সমাধানে তারা তৎপর হয়। রোহিঙ্গাদের ওপর যে অমানবিক নির্যাতন কয়েক দশক ধরে চলেছে, তার আঁচ যে আমাদের গায়ে এসে পড়বে, সেটা কি যথাসময়ে বাংলাদেশের বোঝা উচিত ছিল না? রোহিঙ্গারা যদি মিয়ানমারের অধিবাসী না হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের লাগোয়া মেক্সিকোর নাগরিক হতো, তাহলে কি কয়েক দশক ধরে তাদের ওপর এমন নির্যাতন চলতে পারত কিংবা তারা যদি ব্রিটেন কিংবা ফ্রান্সের কোনো প্রতিবেশী রাষ্ট্রের বাসিন্দা হতো, তাহলে কি এমনটি হতে পারত? নিজেদের জাতীয় নিরাপত্তা সঙ্কট বিবেচনায় নিয়ে শক্তিশালী দেশগুলো এ ব্যাপারে দ্রুত হস্তক্ষেপ করত অবশ্যই। আমরা এ সঙ্কট আগাম মোকাবেলা করতে পারিনি, সেটা বলার আর অপেক্ষা রাখে না। এমনকি রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ প্রশংসা কুড়িয়েছে; কিন্তু এর কূটনৈতিক ও কৌশলগত সুযোগ নিতে পারেনি। তার বড় প্রমাণ নিজেদের বন্ধুদের কাছ থেকেও এ ব্যাপারে সমর্থন আদায় করতে ব্যর্থ হওয়া।

এর খেসারত আমাদের দিতে হচ্ছে। নিজেদের জাতীয় জীবনের ওপর হুমকি হয়ে থাকছে রোহিঙ্গা সঙ্কট। ভারত তার দেশের বিপুলসংখ্যক একটা জনগোষ্ঠীকে নিজেদের ‘নাগরিক নয়’ বলে দাবি করে হুমকি দিচ্ছে। এসব মানুষের পরিচয় কী? তারা কি মঙ্গোলীয় না ব্রিটিশ? তাদের ধর্মীয় পরিচয় কি ইহুদি কিংবা খ্রিষ্টান? তাদের গায়ের রঙ গৌর বর্ণ কিংবা কুচকুচে কালো? না, তাদের ধর্মীয় পরিচয় হলো, তারা সাধারণ মুসলমান। জাতীয় পরিচয় বাঙালি কিংবা পাশাপাশি অন্য কোনো নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী। এরা যখন দেশটির নাগরিকত্ব হারাবে, তাদের আটক করার চেষ্টা করা হবে কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে রাখার জন্য। সেখানে জীবনযাত্রা হবে বড়ই কঠিন কিংবা নাগরিকত্ব হারিয়ে তারা যখন লাঞ্ছনা জীবন থেকে পালাতে চাইবে, তারা যাবে কোথায়? তারা সুদূর ব্রিটেন কিংবা ফ্রান্সে চলে যেতে পারবে না। তাদের সহজ ও অনিবার্য গন্তব্য হবে প্রতিবেশী বাংলাদেশ। বিশাল একটি জনগোষ্ঠীকে ভারত সরকার যদি বন্দুকের নলের মুখে বাংলাদেশে ঠেলে না-ও দেয়, তবুও তারা পালিয়ে বাংলাদেশে আসবেই। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বিপদটি হচ্ছে সার্বভৌম জাতি হিসেবে টিকে থাকা। এ দেশের সবচেয়ে বড় সঙ্কট হচ্ছে, শান্তিতে বসবাস। এসব বিষয়ে অতীতে আমরা যতটা গাফেল হয়ে থেকেছি, এখনো যদি একই নীতি গ্রহণ করি, আমাদের জন্য আরো কঠিন ও কষ্টকর সময় অপেক্ষা করছে।

jjshim146@yahoo.com


আরো সংবাদ



premium cement
নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন প্রধান উপদেষ্টা, অন্যদের কথা ব্যক্তিগত : প্রেস উইং সালাহর জোড়া গোলে জিতল লিভারপুল ১০ সাংবাদিকসহ ১১ জনের ব্যাংক হিসাব জব্দ টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের ৬ দফা মেনে নেয়ার আহবান হাসিনা-কন্যা পুতুলের সূচনা ফাউন্ডেশনের ব্যাংক লেনদেন স্থগিত বুটেক্স-পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হবে প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে : প্রেস উইং ব্যর্থ টপ অর্ডার, মুমিনুলের ফিফটির পর পথ দেখাচ্ছেন লিটন তেজগাঁওয়ে বুটেক্স ও ঢাকা পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ বেলজিয়ামের উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহ বাড়ছে এসডিজি কার্যক্রমে যুক্ত হচ্ছে ড. ইউনূসের ‘থ্রি জিরো তত্ত্ব’

সকল