‘বিচারপতি তোমার বিচার করবে যারা...’
- ড. আবদুল লতিফ মাসুম
- ২৮ আগস্ট ২০১৯, ২০:২৭
রাষ্ট্রব্যবস্থায় ক্ষমতাকেন্দ্রগুলোর বিভাজন একটি স্বীকৃত দর্শন। এ দর্শনের মূলকথা হচ্ছে, ক্ষমতা যদি একজন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানে কেন্দ্রীভূত থাকে তাহলে ‘একনায়কতন্ত্র বা স্বৈরতন্ত্র’ কায়েম হতে পারে। প্রচলিত প্রবাদবাক্য এ রকম : অ্যাবসোলুট পাওয়ার করাপ্ট অ্যাবসোলুটলি। এ সর্বাত্মক ক্ষমতা বিভাজন ধারণার লক্ষ্য হচ্ছে বিকেন্দ্রীভূত ক্ষমতার মাধ্যমে নাগরিক স্বাধীনতা রক্ষা করা। শাসন কাঠামোর আবর্তন-বিবর্তন অবশেষে রাষ্ট্রের তিনটি বিভাগ : আইন, বিচার ও শাসন- এ তিনটি অঙ্গে বিভক্ত হয়েছে। সভ্যতার সুপ্রভাত থেকে রাষ্ট্র কর্তৃত্ব-রাজা-বাদশা, শাসক-সম্রাট এবং স্বৈরশাসকেরা ক্ষমতাকে একীভূত করতে চেয়েছে।
আর প্রজা বা নাগরিক সাধারণ ক্ষমতাকে নিজেদের মধ্যে বণ্টনে প্রয়াসী হয়েছে। সে এক দীর্ঘ ইতিহাস। আধুনিক ইতিহাসে গণতন্ত্রের নামে শাসনক্ষমতা দৃশ্যত নাগরিক সাধারণের হাতের নাগালে এসেছে; কিন্তু বারবার ক্ষমতা লোলুপ শাসকেরা কার্যত জনগণের ক্ষমতাকে ব্যক্তির হাতের মুঠোয় নেয়ার চেষ্টা করেছে। সে কারণে ‘সংসদীয় স্বৈরতন্ত্র’ বা ‘রাজকীয় রাষ্ট্রনায়ক’-এর মতো প্রত্যয়ের উদ্ভব হয়েছে। মনীষী জন লক রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাকে নির্বাহী, আইন ও যুক্তরাষ্ট্রীয়- এভাবে বিভাজন করেন; কিন্তু তিনি এতটা জোরে ক্ষমতার স্বতন্ত্রীকরণের কথা বলেননি।
অবশেষে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী মন্টেস্কু ক্ষমতার স্বতন্ত্রীকরণ বিষয়টিকে পূর্ণাঙ্গ তত্ত্বে পরিণত করেন। ১৭৪৮ সালে তার সুবিখ্যাত গ্রন্থ দ্য স্পিরিট অব ল’জ-এ বিষয়টি বিস্তারিত আলোচনা করেন। লক এবং মন্টেস্কু ব্রিটিশ সংসদীয় ধারার প্রেক্ষাপটে বিভাজন তত্ত্বটি প্রদান করেন। অবশেষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান প্রণেতাদের হাতে এ তত্ত্বটি প্রায়োগিক বাস্তবতা অর্জন করে। ‘ফেডারালিস্ট পেপার’ নামে খ্যাত মার্কিন সাংবিধানিক দলিলপত্রে এসব বিষয় বিস্তারিত আলোচিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে সুস্পষ্ট করে রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গ নির্দেশিত হয়েছে। এগুলো হলো- ১. প্রেসিডেন্সি, ২. কংগ্রেস (সিনেট+হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভ) ও
৩. জুডিশিয়ারি বা বিচার বিভাগ। বহু বিভাজনে বিভক্ত মার্কিন রাষ্ট্রমণ্ডলীর বা প্রদেশগুলোর ঐক্য ও সংহতি সুদৃঢ় করার জন্য জুডিশিয়ারি বা সর্বোচ্চ আদালতকে রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গের মধ্যে ভারসাম্য বিধানের আইনগত ক্ষমতা দিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দু’টি বিভাজনের ওপর প্রতিষ্ঠিত। প্রথমত, ফেডারেল বা যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার থেকে অঙ্গরাষ্ট্রগুলো পৃথক। দ্বিতীয়ত, প্রেসিডেন্ট, কংগ্রেস এবং সুপ্রিম কোর্টের পারস্পরিক ক্ষমতা পৃথকভাবে প্রকাশিত। রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা একে ‘চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স’ বা ক্ষমতার ভারসাম্য বলে থাকেন। এ তত্ত্বটিকে কর্তৃত্ববাদী প্রবণতার বিপক্ষে একটি রক্ষাকবচ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। পৃথিবীর সর্বত্র এ তত্ত্বটি জনপ্রিয়তা অর্জন করে।
বাংলাদেশের মানুষ ভাগ্যবান এই অর্থে যে, তাদের মৌলিক স্বাধীনতা রক্ষা করার জন্য সংবিধানের সাত অনুচ্ছেদে ‘সুপ্রিমেসি অব কনস্টিটিউশন’ বা সংবিধানের নিরঙ্কুশ প্রাধান্যের কথা বলা হয়েছে। অপর দিকে, রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি নির্ধারণ করতে গিয়ে ২২ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্রের নির্বাহী অঙ্গসমূহ হইতে বিচার বিভাগের পৃথকীকরণ রাষ্ট্র নিশ্চিত করিবে।’ সংবিধানের ৯৪ অনুচ্ছেদের ৪ ধারায় বলা হয়েছে, ‘এই সংবিধানের বিধানাবলির সাপেক্ষে প্রধান বিচারপতি ও অন্যান্য বিচারক বিচারকার্য পালনের ক্ষেত্রে স্বাধীন থাকিবেন।’ কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, স্বাধীনতার বিগত প্রায় ৫০ বছরে সত্যিকার অর্থে নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগের পৃথকীকরণ কোনো সরকারই সম্পন্ন করেনি।
বিষয়টি জনপ্রিয় হওয়ার কারণে নির্বাচনের আগে প্রতিটি রাজনৈতিক দল তাদের ঘোষিত নির্বাচনী ইশতেহারে পৃথকীকরণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বিস্ময়ের ব্যাপার, এ ক্ষেত্রে যতটুকু অগ্রগতি হয়েছে তা একটি অনির্বাচিত, অপ্রত্যাশিত সরকারের পক্ষ থেকেই হয়েছে। ২০০১ সালে বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ প্রেসিডেন্ট থাকাকালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল। তৎকালীন আইন উপদেষ্টা সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ এ বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ধারণা করা হয়, আমলাতন্ত্রের কৌশলের কারণে বিষয়টির সুরাহা হয়নি। ২০০৭-০৮-এর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগের স্বতন্ত্রীকরণের আইনটি স্বীকৃত হয়। তৎকালীন আইন উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বিষয়টিকে তার মিশন হিসেবে গ্রহণ করেন। পরবর্তী আওয়ামী লীগ সরকার আইনগত বিষয়টিকে প্রায়োগিক ক্ষেত্র পর্যন্ত নিতে অনেক অদলবদল করে।
মাসদার হোসেন মামলার রায় কার্যকর করতে অনেক সংস্কার এবং দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি রয়েছে, যা ক্ষমতাসীন সরকার কার্যকর করেনি। নীতিগত অনুমোদন হলেও বাস্তবে যখন আইনটি কার্যকর করার পদক্ষেপ নেয়া হয়, তখন বিভিন্নপর্যায়ে সুপ্রিম কোর্টের সাথে আওয়ামী লীগ সরকারের মতপার্থক্য স্পষ্ট হয়ে ওঠে। পরবর্তীকালে আওয়ামী লীগ সরকার সুপ্রিম কোর্টের ওপর চূড়ান্ত নিয়ন্ত্রণ আরোপের জন্য সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী গ্রহণ করে। এই সংশোধনী অনুযায়ী ‘সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল’-এর পরিবর্তে জাতীয় সংসদ বিচারকদের অভিশংসন বা বিচার করার এখতিয়ার নিজ হাতে তুলে নেয়। প্রথমত, হাইকোর্টে সরকারের এই উদ্যোগ চ্যালেঞ্জ হলে দীর্ঘ সময়ের পরে হাইকোর্ট এ উদ্যোগের বিপক্ষে রায় দেন। সরকার তাদের নিয়োজিত সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির পক্ষ থেকে অনুকূল রায় প্রত্যাশা করে; কিন্তু অনেক সমীকরণের পর সর্বোচ্চ আদালতের আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন। তার মানে হলো, আওয়ামী লীগের সুপ্রিম কোর্ট দখলের প্রচেষ্টা মারাত্মকভাবে ধাক্কা খায়। এরপর প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাকে কী পরিণতির সম্মুখীন হতে হয়েছে তা সবারই জানা কথা। এরপর নিয়ম মোতাবেক পরবর্তী বিচারপতিকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ না করে দলীয় বিবেচনায় নিয়োগ দেয়া হয় বলে অভিযোগ উত্থাপিত হয়।
এই সুদীর্ঘ ভূমিকা এ মুহূর্তে উচ্চ আদালতের সঙ্কটকে ব্যাখ্যা করার জন্য। হাইকোর্টের তিনজন বিচারপতিকে বিচার কাজ থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিষয়টি তাদের অবহিত করার পর তিন বিচারপতি ছুটি চেয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র ২২ আগস্ট সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। এই তিন বিচারপতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বিষয় নিয়ে আদালতপাড়া তথা সিভিল সোসাইটিতে নানা গুঞ্জন ও আলোচনা চলছে। দেশে সাধারণভাবে এই ধারণা প্রচলিত যে, সরকারের আদেশ ব্যতীত গাছের পাতাও নড়ে না। ক্ষমতাসীন সরকার নিম্ন আদালত দখলের পর ক্রমেই উচ্চ আদালত দখলের জন্য এক যুগ ধরে চেষ্টা করে যাচ্ছে। বিরোধী দল তথা ভিন্নমত পোষণকারীরা ক্রমাগত প্রবলভাবে অভিযোগ করে যাচ্ছেন যে, তারা উচ্চ আদালত থেকে ন্যায়বিচার পাচ্ছেন না। সব কিছুই দলীয়করণ করা হচ্ছে। বিরোধী নেতাদের কারা জামিন দিচ্ছেন বা দিচ্ছেন না, সে অনুযায়ী সরকারের অনুগ্রহ অথবা নিগ্রহ মোকাবেলা করছেন বিচারপতিরা। সেই সাথে সামগ্রিকভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারের সংস্পর্শে উচ্চ আদালতের বিচারকেরাও দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত হচ্ছেন। উচ্চ আদালতের বিষয় বৈশিষ্ট্যের কারণে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ উত্থাপিত হয়নি; কিন্তু আকাশে-বাতাসে কথাগুলো চলছিল।
এসব পরিপ্রক্ষিতে ওই তিন বিচারপতির বিরুদ্ধে যখন ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তখন প্রচলিত ধারণা এ রকম ছিল যে, তারা হয়তো ক্ষমতাসীন সরকারের বিরোধী মহলের লোক হয়ে থাকবেন অথবা যেকোনো কারণে সরকারের স্বার্থহানি করে থাকবেন; কিন্তু পরবর্তীকালে সংবাদপত্রের মাধ্যমে জনগণ যা জেনেছে তা রীতিমতো লজ্জাকর, বিপজ্জনক ও অচিন্তনীয়। প্রথম দিকে সরকারি মুখপাত্র কি অভিযোগে তাদের বিচার কাজ থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে তা খোলাসা করেননি। তবে ‘ওপেন সিক্রেট’ বলে সবাই জেনেছে।
বিষয়টি ঢাকঢাক গুড়গুড় করে প্রকাশিত হয়েছে। এই তিনজনের মধ্যে অন্তত দু’জনের বিরুদ্ধে একটি চ্যানেলে অর্থের বিনিময়ে রায় দেয়ার অভিযোগ উঠেছে; কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট সরাসরি এ অভিযোগ করেনি। অন্যজনের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়টি এখনো প্রকাশিত হয়নি। ইতোমধ্যে পক্ষ-বিপক্ষের আইনজীবীরা উদ্যোগ সম্পর্কে ইতিবাচক মন্তব্য করলেও গৃহীত প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে। আমরা সবাই অবহিত, সুপ্রিম কোর্টে প্রকৃত অর্থে একটি শূন্যতা বা অস্পষ্টতা রয়েছে। ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের পর ইতঃপূর্বের বিচারকদের অভিশংসনের জন্য নির্ধারিত ‘সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল’ বহাল রয়েছে।
পর দিকে সরকার ওই আদেশের বিরুদ্ধে একটি রিভিউ করেছেন। গৃহীত ব্যবস্থাকে ইন হাউজ কমিটির কাজ বলে একটি প্রচ্ছন্ন ধারণা দেয়া হয়েছে; কিন্তু কোনো কোনো প্রবীণ আইনজীবী মনে করেন, সেটি সঠিক নয়। সংবিধানে বহাল সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলই তদন্ত পরিচালনার জন্য যথার্থ ফোরাম। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘ষোড়শ সংশোধনীর বিরুদ্ধে একটি রিভিউ বিচারাধীন রয়েছে। প্রধান বিচারপতি তার পজিশনের কারণেই এমন তদন্ত করতে পারেন। তার কাছে অভিযোগ এসেছিল, সেটা আমলে নিয়ে তিনি তদন্ত করবেন- সেই তদন্ত শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করা উচিত’। ষোড়শ সংশোধনীর বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান বাহাত্তরে যে সংবিধান উপহার দিয়েছিলেন, আমরা সেখানে ফিরতে চাই। দ্বিতীয়ত, যারা অন্যায় করবে, তারাই বিচার করবে, সেই অন্যায়ের বিচার হয় না। প্রমাণিত অসদাচারণ এবং অসামর্থ্যরে কারণে বিচারপতিদের সরানো তাদের হাতেই রাখা অগণতান্ত্রিক বিধান ১৯৭৭ সালে যুক্ত করা হয়েছিল; সেটা আমরা জনপ্রতিনিধিদের কাছে আনতে চেয়েছি। একজন বিচারপতির পদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ; সেই পদটি নিয়ে উইলি-নিলি খেলা যায় না।
আইনমন্ত্রীর ভাষ্য মোতাবেক, ‘এখন সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলও নেই। তার কারণ রায়টি রিভিউয়ের মধ্যে রয়েছে। বাহাত্তরের সংবিধানের চারটি উপ-অনুচ্ছেদ ছিল, ১৯৭৭ সালে বেআইনিভাবে আনা ৯৬ অনুচ্ছেদে যুক্ত করা হয়েছিল আটটি উপ-অনুচ্ছেদ। ষোড়শ সংশোধনীর রায়ে পদত্যাগ-সংক্রান্ত উপ-দফাটি পুনরুজ্জীবিত করা হয়নি।’ মন্ত্রী মহোদয়ের ব্যাখ্যায় এটা স্পষ্ট হয়েছে, তারা উচ্চ আদালতকে নিয়ন্ত্রণের খায়েশ এখনো পরিত্যাগ করেননি; কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের সিনহা কর্তৃক প্রদত্ত রায়ের সুবিধাটুকু নিতে চান। তিনজন তদন্তাধীন বিচারক পদত্যাগও করতে পারবেন না, তার কারণ ‘এটা সংবিধানে নেই তাই পদত্যাগ করার স্কোপ নেই। সে কারণে ষোড়শ সংশোধনীর রিভিউ পিটিশন ও তার দ্রুত শুনানি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।’ সুপ্রিম কোর্টে এর আগে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল দু-চারটি তদন্ত করেছেন। জাল সনদ ও ৫০ হাজার টাকা ঘুষ নেয়ার মামলায় তদন্ত শুরুর পরে দু’জন বিচারপতি পদত্যাগ করেছিলেন। লিফলেট বিতরণের ঘটনায় বিচারপতি মুজিবুর রহমান খালাস পেয়েছিলেন।
বিচারপতিদের প্রতি মানুষের আস্থা ও বিশ^াস ছিল অনড়। নিম্ন আদালত থেকে উচ্চ আদালত পর্যন্ত যে ভয়াবহ দুর্নীতির কথা শোনা যাচ্ছে, তা মানুষকে বিস্মিত না করে পারে না। বিশেষ করে উচ্চ আদালতের মতো পবিত্র অঙ্গনে যদি সত্যি সত্যিই অর্থের বিনিময়ে রায় ক্রয় করা যায়, তাহলে মানুষের দাঁড়ানোর আর জায়গা রইল কোথায়? ওয়ান-ইলেভেনের সরকারের সময় থেকে বিচারব্যবস্থার ক্ষেত্রে যে ভৌতিক কাণ্ড শুরু হয়েছে, আজ তা দেও-দানব হয়ে সামগ্রিক বিচারব্যবস্থাকে গিলে ফেলছে। এ থেকে উত্তরণের জন্য বিচার অঙ্গনকেই দায় নিতে হবে। বিধিমালা তৈরি করে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে বিচারপতি নিয়োগের দাবি তুলেছে জাতীয় আইনজীবী ঐক্যফ্রন্ট। বিচার বিভাগের স্বকীয়তা, স্বতন্ত্র ও মর্যাদা রক্ষার মাধ্যমেই নাগরিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করা সম্ভব।
লেখক : অধ্যাপক, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
Mal55ju@yahoo.com
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা