উন্নয়ন ও বৈষম্য
- প্রফেসর ড. এম এ মান্নান
- ১৬ জুলাই ২০১৯, ১৮:২০
বাংলাদেশে এই মুহূর্তে বহুল উচ্চারিত একটি শব্দ হলো ‘উন্নয়ন’। আমরা উন্নয়নের কথা বলছি। দুঃখজনক হলো, আমরা যে উন্নয়ন দেখছি সেখানে বৈষম্য কমছে না, উল্টো বাড়ছে। এর পেছনে কারণটি বুঝতে হলে আমাদের অর্থনীতির চরিত্রটি বুঝতে হবে। আমাদের অর্থনীতিকে মূলত তিনটি ভাগে ভাগ করা যায় : (ক) আনুষ্ঠানিক কর্পোরেট সেক্টর, (খ) অনানুষ্ঠানিক বা নন-কর্পোরেট সেক্টর ও (গ) স্বেচ্ছাসেবক খাত। আমাদের যে বাজেট তৈরি হয় তা কর্পোরেট খাতের ওপর ভিত্তি করে। নন-কর্পোরেট ও স্বেচ্ছাসেবক খাতকে উপেক্ষা করা হয়। এখানে উন্নয়নের সংজ্ঞাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভোক্তার আচরণ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে পল স্যামুয়েলসন ‘প্রেফারেন্স রিভিল্ড’-এর কথা বলে গেছেন। এর মানে হলো : বাজারে তিনটি দামে যেমন: ৫, ৬ ও ৭ টাকায় একই জিনিস বিক্রি হচ্ছে। কেউ যদি ৭ টাকায় জিনিসটি কেনে তাহলে তার প্রেফারেন্স রিভিল্ড হয়ে গেল। অর্থাৎ কেনার অভ্যাস দেখে ক্রেতা কোনটিকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে তা বোঝা যায়। এটা হলো ফিন্যান্সিয়াল প্রেফারেন্স বা আর্থিক অগ্রাধিকার। আমি মনে করি এর বাইরে আরো দুটি প্রেফারেন্স রয়েছে : ইকোনমিক প্রেফারেন্স ও সোশ্যাল প্রেফারেন্স বা মোরাল প্রেফারেন্স। এগুলোও রিভিল্ড করতে হবে। মজার বিষয় হলো, ফাইন্যান্স পছন্দ না করলেও কর্মজীবনের বড় অংশ এই ফাইন্যান্স নিয়েই আমাকে কাজ করতে হয়েছে। এ বিষয়ে শিক্ষকতাও করেছি। আইডিবিতেও একই বিষয়ে কাজ করেছি। ইকোনমি নিয়ে পড়াশুনা করার পর আমাকে ‘ল্যাঙ্গুয়েজ অব মানি’ নিয়ে বেশির ভাগ সময় কাজ করতে হয়েছে।
অর্থনীতির সামাজিক ও নৈতিক দিকগুলো বিশ্লেষণ করতে গিয়ে আমি বিভিন্ন সময় বক্তব্যে, এমনকি ছাত্রদের কাছেও একটি উদাহরণ দিয়ে থাকি। সেটা হলো, হাসকিং মেশিন বা ধান ছাঁটাইয়ের কল। গ্রামে একসময় ঢেঁকি ছিল। এখনো দু’এক জায়গায় হয়তো আছে। ঢেঁকিছাঁটা চাল স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। কিন্তু একটি হাসকিং মেশিন পঞ্চাশটা ঢেঁকির কাজ করতে পারে। তাহলে তো ঢেঁকির দরকার নেই। আমি বলছি, হ্যাঁ, হাসকিং মেশিন নিয়ে আসা যায়, আমি টেকনলজির বিরুদ্ধে নই। কিন্তু আমাকে এর সামাজিক মূল্যটি ভাবা উচিত। আমার দেখা উচিত, ঢেঁকি পাড় দিয়ে চাল তৈরির কাজটি কারা করে; হাসকিং মেশিন বসিয়ে কাদেরকে বেকার করছি! অনুসন্ধানে দেখা গেল গ্রামের গরিব, বেশির ভাগ বিধবা অথবা অন্য কাজ জানে না এমন মেয়েরাই সাধারণত ঢেঁকি পাড় দেয়ার কাজটি করে। তাহলে হাসকিং মেশিন বসানো হলে এই মেয়েগুলোতো বেকার হয়ে গেল। তাদের জন্য কি কর্মসংস্থানের কোনো ব্যবস্থা করা হয়েছে? এটা হলো টেকনলজির ইকোনমিক আসপেক্ট।
তাহলে এর মোরাল কনসিকোয়েন্স বা নৈতিক পরিণাম কী হবে? এই মেয়েগুলো কী করবে? তারা শহরমুখী হবে। অভ্যন্তরীণ অভিবাসন সৃষ্টি হবে। আমরা শহরে যত বস্তিবাসী দেখি এদের ৯০ শতাংশ অভ্যন্তরীণ অভিবাসনের ফলে সৃষ্ট। এরা সামাজিক সমস্যা তৈরি করছে। তাই উন্নয়নের জন্য অগ্রাধিকার ঠিক করতে হবে। আবার অগ্রাধিকার ঠিক করলেই হবে না, বিভিন্ন অগ্রাধিকারের মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান করতে হবে। সেই কাজটি আমাদের এখানে হচ্ছে না।
আমাদের বাজেটে এই নির্দেশনা থাকা উচিত ছিল, কিন্তু তা নেই। আমি উন্নয়নের কথা বলছি, উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ দিচ্ছি কিন্তু সমাজের ওপর কী প্রভাব পড়বে, কিভাবে প্রভাব পড়বে, তার প্রতিকার কী হবে- সেগুলো আমরা ভাবছি না। এর জন্য আমাদের উন্নয়ন খাতগুলোর ফিন্যান্সিয়াল, ইকোনমিক ও সোশ্যাল এনালাইসিস করা উচিত হবে। যদি দেখা যায় একটি হাসকিং মেশিন বসানোর কারণে ১০০ বিধবা বেকার হয়ে শহরে চলে যাবে তাহলে আমাদের কি হাসকিং মেশিন বসানো উচিত হবে? এতে হয়তো বলা হবে উন্নয়ন কম হবে, প্রবৃদ্ধি কম হবে। কিন্তু প্রবৃদ্ধি কিসের জন্য? আমরা যেভাবে জিএনপি হিসাব করি তা আসলে শুভঙ্করের ফাঁকি। আমার ১০০ টাকা আছে, আরেকজনের ২ টাকা আছে। গড় করলে ৫১ টাকা হবে। কিন্তু এই গড় থেকে প্রতিটি মানুষের সত্যিকারের অবস্থা কি বুঝা যায় না? অথচ আমরা এর উপরেই ভিত্তি করে হিসাব করছি। এই হিসাব আমাদের শিখিয়েছে পশ্চিমা অর্থনীতি। আমি মনে করি প্রতি বছর বাজেটের আগে প্রতিটি বরাদ্দের পেছনে যদি খাতওয়ারী বিশ্লেষণ করা হতো তা হলে খাতগুলো ওয়েল ফোকাসড হতো। কিন্তু তা হচ্ছে না।
আমাদের দেশে যখন বাজেট প্রস্তাব করা হয় তখন একদল এর পক্ষে, আরেক দল বিপক্ষে বিতর্কে লিপ্ত হন। একদল বাজেটকে কল্যাণমুখী বলে। আরেক দল বলে গরিব মারার বাজেট। এই একই কথা গত ২৭ বছর ধরে শুনে আসছি। এ ধরনের বিতর্ক অর্থহীন বলে মনে করি। কিন্তু আমি ফিন্যান্সিয়াল রুলস অব দ্য গেমের কাঠামোগত পরিবর্তন চাই। এর জন্য মৌলিক চিন্তাভাবনার প্রয়োজন। আর সে কারণেই স্বেচ্ছাসেবক খাতের কথা বলছি। আমরা কি সামাজিক মূল্যবোধকে অর্থনীতির সঙ্গে যুক্ত করতে পারি না? যেমন, যৌতুক ছাড়া যারা বিয়ে করবে তাদের জন্য কেনাকাটায় আমরা কি বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা করতে পারি না? কিংবা কোনো রিকশাচালককে ঋণ দেয়ার জন্য শর্ত জুড়ে দিতে পারি যে ধূমপান করা যাবে না। এভাবে আমরা সামাজিক মূল্যবোধকে ঋণের সঙ্গে যুক্ত করতে পারি। এটা একটি নতুন বৈপ্লবিক চিন্তা।
আমি সোস্যাল ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যান থাকাকালে বাধ্যতামূলক ছুটি চালু করেছিলাম যেন কর্মচারীরা ছুটি এনক্যাশ না করে পরিবারকে সময় দেয়। ব্যাংকে যারা চাকরি করেন তারা অত্যধিক পরিশ্রম করেন। স্বাভাবিক অফিস টাইমের বাইরেও কাজ করে হিসাব মিলিয়ে তাকে বাড়ি ফিরতে হয়, যত রাতই হোক না কেন। আমি নেইবারহুড এলাউন্স চালু করেছিলাম। এর মানে হলো, কর্মচারীদের যে বোনাস দেয়া হতো তার একটি অংশ প্রতিবেশীকে দিতে হবে। কাকে কাকে দেয়া হলো, সেটাও দেখাতে হবে। প্রতিবেশী বলতে আত্মীয়-স্বজনকেই বুঝায়। গরিব ভাই, বোন বা অন্য কেউ। এগুলো কিন্তু অর্থনীতির সামাজিক মাত্রা বা ডায়মেনশন। এই বিষয়গুলো সরকারের তরফ থেকে উচ্চারিত হলে অনেক বেশি কার্যকর হবে। আজ দেশে যে ছয়-সাতটা ইসলামী ব্যাংক আছে, তারা বিষয়গুলো চিন্তা করতে পারে। অর্থনীতির এই দিকগুলো নিয়ে কাজ করার জন্য আমি ওয়ার্ল্ড সোস্যাল ব্যাংকের কথা বলেছি। ২০১২ সালে গণভবনে ওআইসির সাবেক মহাসচিব ড. হামিদ আল গাবিদকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এই প্রস্তাব দিয়েছিলাম। আবারো মহাসচিবকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার ইচ্ছা ছিল আমার। কিন্তু দুঃখের বিষয় জনাব গাবিদ এখন অসুস্থ। তিনি সক্ষম হলে হয়তো আবারো প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করে বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিতাম।
এখনো মনে করি, আমাদের বিদেশী ঋণ নেয়ার দরকার নেই। অর্থনীতি নিয়ে কিছুটা পড়াশুনা করার সুবাদে, বিভিন্ন দেশের সমাজব্যবস্থাকে খুব কাছ থেকে দেখা ও বিভিন্ন সমাজ ও সম্প্রদায়ের মানুষের সাথে মেশার কারণে এই উপলব্ধি আমার হয়েছে। আমরা কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটির কথা বলি। কিন্তু ব্যক্তির দায়িত্বের কথা বলছি না। আমরা অধিকারের কথা বলি কিন্তু দায়িত্বের কথা বলি না। ব্যক্তির দায়িত্বই তার অধিকারকে নির্ধারণ করবে। সংবিধানে ব্যক্তির অধিকারের পাশাপাশি দায়িত্বগুলোও সংযুক্ত করা যায় কিনা তা ভেবে দেখা উচিত। উন্নয়নের ক্ষেত্রে আমরা নিজস্ব শক্তিকে কেন ব্যবহার করছি না। আমরা চীন বা ভারত থেকে উন্নয়ন সহায়তা নেব না- এ কথা আমি বলছি না। তবে অবকাঠামো উন্নয়নের ভয়াবহ দিকটি হলো এতে মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে যায়। অথচ টোল-ট্যাক্স আদায় করেই আমরা যমুনা সেতুর মতো বহু সেতু করতে পারি। টোল আদায়ের মাধ্যমে যমুনা সেতুসহ অনেক সেতুরই নির্মাণ খরচ উঠে গেছে। এখন যা পাওয়া যাচ্ছে তা উদ্বৃত্ত। আমাদের নিজস্ব শক্তির কথা বলতে গিয়ে অনেকবার ক্যাশ ওয়াক্ফের উদাহরণ দিয়েছি। এই ইন্সট্রুমেন্ট ব্যবহার করে আমরা যে অবকাঠামোগত উন্নয়ন করতে পারি সে কথা ভাবছি না। মূল কথা জনগণকে সমবেত করতে হবে, অনুপ্রাণিত করতে হবে। আমাদের সম্পদ থাকলেও সঠিক পথে তার উন্নয়ন না হওয়ায় সমৃদ্ধি যতটা হওয়া সম্ভব ছিল তা হচ্ছে না। আমাদের ধাপে ধাপে বৈদেশিক ঋণ থেকে মুক্ত হওয়ার চিন্তা করতে হবে।
এর জন্য আমি তিনটি অগ্রাধিকারের কথা আগেই বলেছি। অর্থাৎ আমাদের আর্থিক বিশ্লেষণে সামাজিক উপাদান যুক্ত করতে হবে। যেমন : কোনো পণ্য উৎপাদনকালে যদি বলা হয় যে এর মুনাফার একটি অংশ অটিস্টিক শিশুদের চিকিৎসায় ব্যয় করা হবে। তাহলে অনেকেই সামাজিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ওই পণ্যটি বেছে নেবেন। এতে পণ্যটির বিক্রি যেমন বাড়বে তেমনি সামাজিক কল্যাণ খাতে তহবিল জোগানোও সহজ হয়ে যাবে। সরকার প্রতিটি শিল্প-কারখানাকে এরকম একটি করে সামাজিক অ্যাসাইনমেন্ট দিতে পারে। এমনটা হলে ভালো কাজে প্রতিযোগিতা বাড়বে। শুধু ধড়পাকড় ও জেলে পাঠিয়ে দুর্নীতি দমন হবে না। মানুষের মনের পরিবর্তন ঘটানো না গেলে, তার মধ্যে জবাবদিহিতা তৈরি করা না গেলে, তার বিবেককে জাগ্রত করা না গেলে আমরা যতই যোগ-বিয়োগ করি না কেন, দেশের অবস্থার পরিবর্তন হবে না।
সামাজিক চেতনায় বিত্তবানদের উদ্বুদ্ধ করতে আমরা করমুক্ত এলাকা করার কথা ভাবতে পারি। সমাজের মাত্র ১০-১২ শতাংশ মানুষ প্রত্যক্ষ করদাতা। আবার এই কর আদায় প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত কিছু লোকের সৃষ্ট হয়রানির কারণে তৈরি হয় কর ফাঁকি দেয়ার প্রবণতা। আমার প্রস্তাবিত করমুক্ত এলাকা করার জন্য প্রাথমিকভাবে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যÑ এই দু’টি খাতের কথা ভাবতে পারি। উদাহরণ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা ধরা যাক। এটি পরিচালনার জন্য সরকারকে প্রতি বছর একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে অর্থ বরাদ্দ দিতে হয়। সরকার এই টাকা রাজস্ব বিভাগের মাধ্যমে কিছু সংখ্যক ধনী লোকের কাছ থেকে আদায় করছে। কিন্তু সরকার নিজে আদায় ও বরাদ্দের কাজটি না করে কিছু সংখ্যক প্রত্যক্ষ করদাতার সমন্বয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির ব্যয় নির্বাহের জন্য একটি ওয়াক্ফ ট্রাস্ট গঠন করে দিতে পারে। ট্রাস্টের সদস্যদের বলা হবে, সরকার তাদের কাছ থেকে কোনো আয়কর নেবে না, কিন্তু প্রত্যেকের জন্য নির্ধারিত করের টাকা তাদেরই মাধ্যমে ওই বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার কাজে ব্যয় হবে। সরকার বাইরে থেকে শুধু পর্যবেক্ষণ করবে প্রত্যেক সদস্য ট্রাস্টের তহবিলে ঠিকমতো অর্থ জোগান দিচ্ছে কিনা।
এ ধরনের উদ্যোগ সবক্ষেত্রে হয়তো সম্ভব হবে না, এটা শুধু সামাজিক খাতে সম্ভব হতে পারে। শিক্ষা বা স্বাস্থ্য খাতে। এ ব্যবস্থা প্রবর্তনের ফলে প্রথম সুফল হবে সরকারের রাজস্ব আদায় ও বরাদ্দ প্রক্রিয়ায় মধ্যস্বত্বভোগী শ্রেণীর বিলোপ ঘটবে। ফলে প্রশাসনের আকার ছোট হয়ে রাজস্ব ব্যয় কমবে। এতে আয়কর ফাঁকি দেয়ার প্রবণতা কমে গিয়ে সমাজসেবামূলক মনোভাবের বিকাশ ঘটবে। করদাতারা ভালো কাজের প্রতিযোগিতায় নেমে পড়বেন। কারণ তার কাছে ওই অর্থ তখন করের পরিবর্তে সামাজিক অনুদান হিসেবে গণ্য হবে। এতে তিনি আরো বেশি অর্থ ব্যয়ে উৎসাহিত হবেন। আর অর্থব্যয় প্রক্রিয়ায় করদাতার সংশ্লিষ্টতা থাকায় তহবিল তসরুপের আশঙ্কাও থাকবে না। সর্বোপরি যেহেতু এ ধরনের ব্যবস্থা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সামাজিক মর্যাদা বহুগুণ বাড়িয়ে দেবে, তাই একসময় তিনি স্বতঃস্ফূর্তভাবেই অর্থ ব্যয়ে উদ্বুদ্ধ হবেন।
লেখক : অর্থনীতিবিদ
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা