২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

২০৪১ সালের স্বপ্ন

- ফাইল ছবি

২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে (গত ২৯ জুন) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, ‘বাংলাদেশকে ২০৪১ সাল নাগাদ আর বিদেশ থেকে ঋণ নিতে হবে না, বরং বাংলাদেশ ঋণ দেবে। বাজেটের সুফলও দীর্ঘ সময় ধরে পাওয়া যাবে।’ খুবই আশার ও খুশির কথা। ঋণের প্রসঙ্গে মন্ত্রী বাংলাদেশকে মালয়েশিয়া, চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার সাথে তুলনা করেছেন। আসলে তুলনা করতে হলে টোটালিটিকে নিয়ে তুলনা করতে হবে। তুলনা হবে সমানে সমান। হাতি ও ঘোড়ার মধ্যে তুলনা চলে না। হাতির সাথে হাতির তুলনা হয়। বাঘের সাথে বাঘের তুলনা হতে পারে। সুন্দরবনের বাঘের সাথে আফ্রিকার বাঘের তুলনা করা যায়। কিন্তু অর্থমন্ত্রী যে তুলনা করলেন, তা সমান নয়। এমন তুলনা কোনো পরিসংখ্যান অনুমোদন করে না। তাই চীন, মালয়েশিয়া বা দক্ষিণ কোরিয়ার সাথে এ ধরনের তুলনা গ্রহণযোগ্য নয়।

চীনের আকার বিশাল। চীনের পরিস্থিতি আর আমাদের দেশের পরিস্থিতি কিন্তু এক নয়। তাদের সম্পদ ও আমাদের সম্পদ এক নয়। বাংলাদেশ কোনোভাবেই চীনের সাথে তুলনীয় নয়। চীনের যে ডিসিপ্লিনড লেবার রয়েছে, তা আমাদের নেই। জনসংখ্যার তুলনায় বিপুল সম্পদ রয়েছে মালয়েশিয়ার। অপর দিকে, বাংলাদেশে ১৭ কোটি মানুষ। সিঙ্গাপুরের সাথেও বাংলাদেশের তুলনা চলে না। সেটি একটি ক্ষুদ্র নগররাষ্ট্র, আকারে ঢাকা নগরীর চেয়েও ছোট। আমাদের শিক্ষিত শ্রমিক নেই। ডেভেলপমেন্ট ইজ এ ফাংশন অব লেবার, কোয়ালিটি অব ম্যানপাওয়ার। আমরা প্রশিক্ষিত শ্রমিকদের নিজ দেশে রাখতে পারছি না। আমাদের গ্র্যাজুয়েটরা বাইরে চলে যাচ্ছে। আমরা কেন তাদেরকে ব্যবহার করতে পারছি না? বিষয়টি নিয়ে ভাবা দরকার এবং এসব খাতে পর্যাপ্ত সংস্কার করা প্রয়োজন।

লিডারশিপও বড় একটি বিষয়। চীনে মাও সে তুং এবং চৌ এন লাই, মালয়েশিয়ায় মাহাথিরের মতো ডেডিকেটেড লিডার ছিলেন বা আছেন। তারা সব খাতে শৃঙ্খলা আনতে পেরেছিলেন। ফলে এসব দেশ আজ শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। মালয়েশিয়ায় ভূমিপুত্র বেশি, সে দেশে চীনাদের সংখ্যাও কম নয়। সেখানে ভূমিপূত্ররা তেমন কাজ করতেন না। তাদের নেতারা ভূমিপুত্রদের কাজের সুবিধা করে দেন, তবে চীনা বা ইন্ডিয়ান কমিউনিটিকেও বঞ্চিত করা হয়নি। তারা যে সাহসী নেতৃত্ব দিতে পেরেছেন, তাদের মধ্যে যে চূড়ান্ত সততা ছিল, সে কারণেই তারা পশ্চিমা লিডারশিপকে পর্যন্ত চ্যালেঞ্জ করার সাহস দেখিয়েছেন এবং স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করেছেন। তাদের সম্পদও ছিল অনেক। তাদের নিজের পায়ে দাঁড়ানোর দৃঢ় ইচ্ছা ছিল। আমাদের বাজেটে সেই প্রবণতাটি অনুপস্থিত। রাজনৈতিক সদিচ্ছা না থাকলে শুধু বক্তৃতা দিয়ে কিছু হবে না। শুধু মুখে বললে হবে না : মালয়েশিয়া করেছে, দক্ষিণ কোরিয়া করেছে। লিডারশিপে উপযুক্ত পরিবর্তন আনতে হবে, ম্যানপাওয়ার উন্নত করতে হবে। প্রতিটি ক্ষেত্রে উন্নত করতে হবে নৈতিকতার মান।

আমাদের এ দেশে তো কোনো কাজই দুর্নীতি ছাড়া হয় না। ঘুষ না দিলে কাজ হয় না। কী করে এটা প্রতিরোধ করা যায়, তা ভাবতে হবে। দুর্নীতি সব দেশে আছে। তা বলে এই নয় যে, আমরা দুর্নীতি করার লাইসেন্স পেয়ে গেছি। বাংলাদেশ দুর্নীতিতে ‘চ্যাম্পিয়ন’ হয়েছিল, এখনো দুর্নীতির সূচকে খুব ভালো অবস্থানে নেই। তবে মালয়েশিয়া ও চীনের অবস্থা এমন নয়। আমাদের এখানে প্রতিদিন যে মৃত্যুর মিছিল, ধর্ষণের মিছিল, খুনের মিছিল- এগুলো চীনে নেই; মালয়েশিয়া বা দক্ষিণ কোরিয়ায় নেই। তাই আমাদের পলিসি হওয়া উচিত কম্বাইন্ড পলিসি প্যাকেজ। অর্থমন্ত্রী যেদিন ঋণ কমানোর কথা বলেছেন, সেদিনই পত্রিকায় খবর বের হয়েছে যে, সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশীদের জমানো টাকার পরিমাণ বেড়েই চলেছে। সেই টাকাগুলো যেন দেশে থাকে, সে ব্যবস্থা আমাদেরকে আগে করতে হবে। প্রায় প্রতি বছর কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়ে দুর্নীতিকে উৎসাহিত করা হচ্ছে মাত্র। তাহলে সম্পদ গিয়ে কোথায় জমা হচ্ছে?

সম্প্রতি এক ডিবেটে আমেরিকান সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স বলেছেন, ধনী লোকদের মধ্যেও ক্ষুদ্র একটি অংশ, অর্থাৎ পাঁচ বা ছয়জন ধনী লোকের হাতে আমেরিকার অর্ধেক সম্পদই জমা হয়ে আছে। তাই আমরা যদি তাদের মডেল অনুসরণ করি তাহলে আমাদের অবস্থা তাদের মতোই হবে। তখন ঋণ শোধ করা দূরের কথা, ঋণের বোঝা আমাদের ঘাড়ে আরো চেপে বসবে। আমাদের উচিত, নিজস্ব সম্পদের উন্নয়ন ঘটানো। আমাদের উদ্বৃত্ত শ্রম রয়েছে। তবু এটা আমরা কাজে লাগাচ্ছি না। কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছি না। উদ্বৃত্ত শ্রমই সম্পদ। এই শ্রম সম্পদ তৈরি করে। এগুলো সোনার খনির মতো। এই সম্পদ তৈরির জন্য অনানুষ্ঠানিক খাত ও স্বেচ্ছাসেবক খাতের কথা বলেছি। আমাদের দেশে বাজেটে এসব খাত পুরোপুরি অনুপস্থিত। অথচ আমরা বিদেশ থেকে ঋণ করার চিন্তায় অস্থির।

মূল কথা হলো, আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন মডেলটি হতে হবে নিজেদের সম্পদের ওপর ভিত্তি করে। আমাদের ঘর আমাদের সম্পদ দিয়েই সাজাতে হবে। আমার গ্রামের বাড়ি যদি আমেরিকান জিনিসপত্র দিয়ে সাজাই, তাহলে তা যেমন অদ্ভুত দেখাবে, তেমনি সেটা এই সমাজে তেমন ব্যবহারযোগ্যও হবে না। আমাদের উন্নয়নের পথটি এমন যে, ঢাকার কোনো নামকরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ওকগাছ ভালোভাবেই চিনবে, কিন্তু আখগাছকে ধানগাছ ভেবে ভুল করে বসবে। আমাদের প্রতিটি ক্ষেত্রেই এ ধরনের বিশৃঙ্খলা রয়েছে। ‘আয় বুঝে ব্যয় করো’-প্রবাদটি অনেক পুরনো। কিন্তু আমরা সে কথা মনে রাখি না।

জীবনের শুরুতে সিরাজগঞ্জ কলেজে অধ্যাপনা করেছি। তখন বেতন পেতাম সব মিলিয়ে ২৪০ টাকা। তখন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের বেতন ছিল ৩০৫ টাকা। সে সময় ওই টাকাতে বেশ সুন্দরভাবে সংসার চালিয়েছি। বেশ সুখে সময় কাটিয়েছি। কিন্তু এখন আমাদের প্রয়োজনের তুলনায় লোভ অনেক বেড়েছে। আমরা এখন প্রয়োজন ও লোভের মধ্যে সীমারেখা টানতে ব্যর্থ হচ্ছি। আমাদের অবাস্তব প্রত্যাশা অনেক বেড়েছে। এর ফল হয়েছে নৈতিক অধঃপতন। আর বেড়েছে দুর্নীতি। আমরা মধ্যআয়ের দেশ হতে চাই, কিন্তু আয়টাকেই সংজ্ঞায়িত করতে পারিনি। ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, আইএমএফ যে হিসাবের ভিত্তিতে যেভাবে বলে, আমরা চোখ বুজে তাদের অনুসরণ করি। এখানেই আমাদের সংস্কার প্রয়োজন। এই সংস্কারের উদ্যোগ নিতে হবে রাজনীতিকদের। আমলারা সেই ঝুঁকি নেবেন না। কারণ, পরীক্ষায় ব্যর্থ হলে তাদের জন্য চাকরির সমস্যা হতে পারে। শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বেই এই সমস্যা। বিভিন্ন দেশে কাজ করতে গিয়ে আমি এটা দেখেছি।

তাই শুধু বিনিয়োগের সুযোগ দিলেই কালো টাকা দূর হবে না। কেন কালো টাকা জমছে, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করে এর সমাধান করতে হবে। বিদেশ থেকে টাকা আনা ও পাঠানোর প্রক্রিয়া সহজ করতে হবে। আমাদের এখানে বৈধ পথেও কেউ বিদেশ থেকে টাকা আনতে বা পাঠাতে চাইলে যে হয়রানির শিকার হতে হয়, তা অকল্পনীয়। তাই হয়রানি থেকে মুক্তি পেতে মানুষ হুন্ডির আশ্রয় নেয়। আইনকানুন পরিবর্তন করা কোনো কাঠামোগত সংস্কার নয়, প্রান্তিক সংশোধন মাত্র। কিন্তু আমরা যেহেতু বর্তমানের কথা বলছি, তাই এগুলো পরিবর্তনের মধ্য দিয়েই আমাদেরকে প্যারাডাইস চেঞ্জের দিকে যেতে হবে। বাজেটের পুরনো অ্যাকাউন্টিং সিস্টেম পরিবর্তন করতে হবে। শুধু ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্টিং নয়, ইকোনমিক ও সোস্যাল অ্যাকাউন্টিংও আমাদের করতে হবে।

সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের পঞ্চম বার্ষিক রিপোর্টে এই অ্যাকাউন্টিংগুলো করেছিলাম। ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্টিংয়ের পাশাপাশি মানবপুঁজি খাতে বিনিয়োগ এবং সামাজিক পুঁজি খাতে বিনিয়োগের ব্যালান্সশিট দিয়েছি। সেখানে ১৯৯৭, ১৯৯৮ ও ১৯৯৯ সাল- এ তিন বছরে বিনিয়োগ, ঋণগ্রহীতা, সুবিধাভোগী এবং প্রতিটি খাতে প্রবৃদ্ধির হার দেখানো হয়েছে। মানবপুঁজির ব্যালান্সশিটে আমানতের মান, সঞ্চয়ের মাত্রা এবং ঋণগ্রহীতাদের বিনিয়োগ, এর প্রকৃতি ও মালিকানা কাঠামোর পাশাপাশি সুবিধাভোগীদের সংখ্যা বিবেচনা করা হয়েছে। সামাজিক পুঁজির ব্যালান্সশিটে বিস্তৃত পরিসরে কৌশলগত সামাজিক বিনিয়োগ ক্রেডিটকে তুলে ধরা হয়েছে, যা পরিবার ও সামাজিক মূল্যবোধকে শক্তিশালী এবং সুশীলসমাজকে উজ্জীবিত করার পাশাপাশি ভর্তুকি প্রদানের মাধ্যমে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক ইউটিলিটি সেবা খাতগুলোর কর্মসূচিকে সহায়তা করে।

আমি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট ফার্মের সাথে আলোচনা করে, তাদের সম্মতি নিয়েই মানবপুঁজি খাতে বিনিয়োগ এবং সামাজিক পুঁজি খাতে বিনিয়োগের ব্যালান্সশিট দিয়েছি। আমি ধারণা দিয়েছি; তারা ডিজাইন করে দিয়েছেন। আর সে কারণেই বার্ষিক প্রতিবেদনে স্থান পেয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এই প্রতিবেদন অনুমোদন করেছে। বিনিয়োগের স্বতন্ত্র অংশগুলো যদি বিশ্লেষণ করা যায়, তখনই কালো টাকা আলাদা হয়ে যাবে। কাউকে ১০০-২০০ কোটি টাকা ঋণ দেয়া হবে, আর ব্যক্তিটির সামাজিক ও নৈতিক মূল্যবোধগুলো বিশ্লেষণ করা হবে না, এটা ঠিক নয়। এমন হলে ঋণখেলাপি তৈরি হতেই থাকবে।

আমাদের বাজেটে এগুলো নেই। এটাই কাঠামোগত পরিবর্তন। এভাবে বিশ্লেষণ করা হলে প্রথমেই ঋণের অবস্থা প্রকাশ হয়ে পড়ত। অনেক দিন ধরেই এসব কথা বলে আসছি এবং বারবার বলছি। এসব কথা বলার জন্যই আমি ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের লোভনীয় চাকরি থেকে আগাম অবসর নিয়ে, পেনশনের ক্ষতি স্বীকার করে বাংলাদেশে চলে এসেছি। এসে সোস্যাল ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমে আমার ধারণাগুলো বাস্তবায়নের চেষ্টা করে হয়তো খানিকটা সফলও হয়েছি। যদিও তা একেবারে প্রাথমিক অবস্থায়, কিন্তু আমার বক্তব্যগুলো তো সামনে আনা গেছে। রাতারাতি সব কিছু বদলে যাবে, সেটা মনে করি না। আবার শুধু ধারণা থাকলেই হয় না, তা বাস্তবায়নের জন্য প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন। এখন সময় এসেছে। আমাদের বর্তমান অর্থমন্ত্রী একজন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট। তিনি এই ব্যালান্সশিটগুলো করতে পারেন। ব্যাংকগুলোকে এসব ব্যালান্সশিট তৈরি করার নির্দেশ দিলে দেখবেন, খেলাপি ঋণ এমনিতেই কমে গেছে।

সম্প্রতি দেশের বেসরকারি খাতের সবচেয়ে বড় ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডে খেলাপি ঋণের অবস্থা নিয়ে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে আইএমএফের একজন সিনিয়র ইকোনমিস্ট বলেছেন, এর ফলে যে ‘মাল্টিপ্লায়য়ার ইফেক্ট’ দেখা দেবে তা হবে প্রকৃত ক্ষতির তিন থেকে চার গুণ। এ ধরনের পরিস্থিতি রোধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বাজেটে এর উল্লেখ নেই। একটা ব্যাংক ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, আর ঋণ শোধ করার স্বপ্ন দেখানো হচ্ছে। লর্ড কেইনস বলেছেন, ‘ইন দ্য লং রান উই আর অল ডেড।’ ২০৪০ সালে কী হবে, সেটা দিয়ে আমরা কী করব? তখন আমাদের মতো অনেকেই আর বেঁচে থাকবেন না। ২০৪১ সালে আমরা ঋণ দেবো বলছি, কিন্তু তখন আমাদের মাননীয় অর্থমন্ত্রীর বয়স কত হবে? অনেকে মনে করেন, আসলে এসব কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।

যখন পাকিস্তান প্লানিং কমিশনে ছিলাম, তখন ২০ বছর মেয়াদি পারসপেকটিভ প্লান করা হতো। এক সময় দেখা গেল, মেয়াদটি অনেক দীর্ঘ হয়ে গেছে। এত দিনে ডেটা, ভেরিয়েবলগুলো পুরোপুরি বদলে যায়। এরপর এটাকে করা হলো ১০ বছর মেয়াদি। দেখা গেল, সেটাও অনেক বেশি। এরপর পাঁচ বছর করেও সেটা টেকানো গেল না। এখন এক বছরের পারসপেকটিভ প্লান করা হয়। পৃথিবী এত দ্রুত বদলাচ্ছে যে, এই এক বছরেও অনেক কিছুর পরিবর্তন ঘটে যাচ্ছে। মানুষের আচরণ নিয়ে কোনো ভবিষ্যদ্বাণী করা যায় না। তাই বলে পরিকল্পনা থাকবে না, ভিশন থাকবে না তা বলছি না। কিন্তু ভিশনের সাথে বাস্তবতার সামঞ্জস্য থাকতে হবে।

আমাদের সরকারি ব্যাংকগুলোতে ২০ বছর ধরে চলছে একই পরিস্থিতি। কোনো ছাত্র ২০ বছর ধরে ফেল করতে থাকলে তাকে আরো পড়ানোর কী কারণ থাকতে পারে? এসব ব্যাংক একীভূত করে বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেয়াই হওয়া উচিত তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা। হয়তো বিশাল কাজ মনে হবে এটাকে। কিন্তু এভাবে তো কোনো রাষ্ট্র চলতে পারে না। আমাদের অর্থমন্ত্রী কেন এ বিষয়গুলোকে উপেক্ষা করছেন? ক্রস সেকশন ডেটা ও টাইম সিরিজ ডেটা কেন অ্যানালাইজ করা হচ্ছে না। ডেটা তো কোনো রাজনৈতিক সেøাগান নয়, এটা খুবই টেকনিক্যাল ব্যাপার। এটা করা হলে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে। পাশাপাশি, করণীয়ও স্পষ্ট হয়ে যাবে।

লেখক : প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড; সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ, ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক, জেদ্দা
[email protected]


আরো সংবাদ



premium cement