২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

একজন প্রেসিডেন্টের কাহিনী

একজন প্রেসিডেন্টের কাহিনী - ছবি : সংগ্রহ

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হঠাৎ করে মার্কিন বাহিনীকে ইরানে হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এ ধরনের আক্রমণের সুদূরপ্রসারী ফলাফল কী হতে পারে, তার ভাবনাচিন্তা ছাড়াই তিনি উত্তেজিত হয়ে এ সিদ্ধান্ত নেন বলে পরে অনুমান করা গেছে। অল্প সময়ের মধ্যে তার সুমতি হয়, কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে তিনি এ সিদ্ধান্ত বাতিল করে দেন।

বিচ্ছিন্ন বিক্ষিপ্ত চিন্তা ও অস্থির প্রকৃতির কারণে ট্রাম্প এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, না অন্য কোনো কারণে এভাবে আক্রমণের পরিকল্পিত নির্দেশ প্রদানের পর সামান্য সময়ের ব্যবধানে তা প্রত্যাহার করে নিলেন, তার বিচার-বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। কয়েকটা যৌক্তিক কারণকে বিশ্লেষকেরা হাজির করলেও প্রথমে এ ধরনের চরম নির্দেশ প্রদান অস্থির মতিত্বের ফসল ছাড়া অন্য কিছু বলা যায় না। বিশ্লেষকেরা জানাচ্ছেন, এ হামলার আদেশ প্রত্যাহার করে নেয়ার কারণ, আমেরিকা জানতে পেরেছে ইরানের শীর্ষ নেতৃত্ব কখনোই মার্কিন ড্রোন ভূপাতিত করার নির্দেশ দেয়নি, বরং যারা ড্রোনটি ভূপাতিত করেছে, তাদের ওপর ইরানের নেতৃত্ব ক্ষুব্ধ হয়েছেন। কারণ, তেহরান চায়নি কোনো ধরনের উত্তেজনা সৃষ্টি হোক।’ আরো দুটো মতামত জানা যাচ্ছে, প্রথমটি হচ্ছে- ওই সময় ইরানে হামলার জন্য মার্কিন বিমানগুলো প্রস্তুত ছিল না। অন্যটি হলো এই হামলার ফলে মার্কিন অর্থনীতি বিরাট চাপে পড়তে পারে। এসব শঙ্কা থেকে পেছনে হটেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

এ ব্যাপারে ট্রাম্প নিজে থেকে যে কথাটি বলেছেন, সেটা হচ্ছে তিনি জানতে পেরেছেন- হামলা চালালে এমন সংখ্যক মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা রয়েছে, যেটা একটা ড্রোন ভূপাতিত করার প্রতিশোধ হিসেবে ঢের বেশি। তাই মনুষ্যবিহীন একটি বিমান হারানোর বদলা হিসেবে শত শত মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়াকে ট্রাম্প মেনে নিতে পারেন না। তবে এ ধরনের মানবিক মনোভাব ট্রাম্পের স্বভাবসিদ্ধ আচরণের সাথে মানানসই নয়। এ যাবৎ দেখা যায়, তিনি সাধারণত সব ব্যাপারে অবলীলায় মিথ্যা বলতে অভ্যস্ত। মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেয়ার পর তিনি এর মধ্যে ‘১০ হাজার মিথ্যা’ বলে ফেলেছেন। চলতি বছরের ৭ জুন ছিল হোয়াইট হাউজে ট্রাম্পের ৮৬৯তম দিন। যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষমতার একেবারে মাথায় বসে তিনি এ ক’দিনে ১০ হাজার ৭৯৬টি মিথ্যা বলেছেন অথবা ভিত্তিহীন দাবি করেছেন। অর্থাৎ, গড়ে প্রতিদিন তিনি ১২টির বেশি মিথ্যা কথা বলেছেন। ‘ফ্যাক্ট চেকার’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান যাচাই-বাছাই করে এ হিসাব দিয়েছে।

অনেকের মতে, এটি ট্রাম্পের অস্থির মস্তিষ্কের ফসল। গবেষকেরা বলছেন, ট্রাম্প মোটেও ধীরস্থির নন। তার মস্তিষ্ক শান্ত সুবোধ মানুষের মতো কাজ করে না। মস্তিষ্কের সব অংশ সমন্বিতভাবে কাজে লাগিয়ে তিনি সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। একটি বাহিনী যেমন নিজেদের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান করে সঠিক ও সুবিবেচনাপ্রসূত কাজ করে; তেমনি একজন মানুষ তার মস্তিষ্কে থাকা প্রতিটি তথ্য-উপাত্তকে কাজে লাগিয়ে অধিকতর সুবিধাজনক সিদ্ধান্তটি নিয়ে থাকে। ট্রাম্পের মস্তিষ্ক সেভাবে কাজ করে না। তার মস্তিষ্কে থাকা প্রতিটি তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে তিনি সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। ফলে এলোমেলো আবোল-তাবোল সিদ্ধান্ত তিনি নিয়ে থাকেন। ক্ষমতার তিন বছরে তিনি এক একটি সিদ্ধান্ত এত বেশিবার বদল করেছেন যে, এর আগের কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট এমনটি করেননি। একজন সুস্থ স্বাভাবিক সাধারণ মানুষ সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে আরো বেশি ভারসাম্যপূর্ণ হয়ে থাকে।

আমেরিকায় রেসলিং বা মল্লযুদ্ধ বেশ জনপ্রিয়। এ ব্যাপারে একটি কথা চালু রয়েছে, এগুলো ‘পাতানো খেলা’। কে হারবে কে জিতবে, সেটা আগে থেকে নির্ধারিত থাকে। বলী খেলার সে মঞ্চে একজন আরেকজনকে যেভাবে ঘায়েল করে, সেটা ভয়াবহ। দুর্বল ও অসুস্থ ব্যক্তিরা এমন বর্বরোচিত খেলা সহ্য করতে পারে না। নারীদের অনেকেও এ মল্লযুদ্ধ দেখতে পারে না। কিন্তু এমন নির্দয় মারামারি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের খুব পছন্দ। এই প্রতিযোগিতায় তার উদ্ভট সব ক্রিয়াকাণ্ডের ভিডিও চিত্র ইউটিউবে রয়েছে। এই ধনকুবের দেদার অর্থ ছিটাতেন ওই পাশবিক কুস্তি খেলায়। প্রতিপক্ষকে মারধর করে মাথা কামিয়ে দেয়ার নির্দয়তা তিনি করেছেন। যৌন নিপীড়নের ক্ষেত্রেও তিনি ‘চ্যাম্পিয়ন’। তার বিরুদ্ধে নির্যাতিত কমপক্ষে ২২ জন নারী অভিযোগ এনেছেন। অবিশ্বাস্য হলো, আমেরিকানরা এই ‘বাজিকর’কেই তাদের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করেছেন। হয়তো আরো এক টার্মে তিনি বিশাল দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন। জনগণের এমন পছন্দের বিষয় শুধু বিস্ময়কর নয়, তা মেনে নেয়া যায় না।

আমেরিকার ৪৫তম প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প রাজনৈতিক নিয়োগের ক্ষেত্রে এক নজিরবিহীন রেকর্ড স্থাপন করেছেন। শাসনক্ষমতার খুব কম সময়ের মধ্যে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা, ব্যক্তিগত প্রধান কর্মকর্তা, প্রধান যোগাযোগ কর্মকর্তা, পররাষ্ট্র ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন বা তিনি নিজেই বরখাস্ত করেছেন। মন্ত্রিসভা সাজানো ও ব্যক্তিগত স্টাফ নিয়োগ নিয়ে ট্রাম্প এমন সব ক্রিয়াকাণ্ড করেছেন, এক কথায় যা আজগুবি অদ্ভুত ও বেমানান। মন্ত্রিসভা ও ফেডারেল সংস্থায় নিয়োগ দেয়ার পর এ পর্যন্ত ১০ জনকে আবার বরখাস্ত করেছেন তিনি। ট্রাম্পের সাথে তাল মেলাতে না পেরে সাতজন নিজে থেকে ইস্তফা দিয়েছেন।

হোয়াইট হাউজের ১৬ জন কর্মকর্তাকে তিনি বরখাস্ত করেছেন। আর নিজ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন ১৪ জন কর্মকর্তা। ঠিক এর আগের প্রেসিডেন্ট, ওবামার সময়ে বরখাস্ত ও ইস্তফা দেয়ার এই সংখ্যা পুরো সময় মিলে মাত্র এক-দু’জন হবে। এমনকি, ট্রাম্পের দলের উগ্র প্রেসিডেন্ট হিসেবে পরিচিত বুশ জুনিয়রের সময়ও বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তার সংখ্যা একেবারে নেই বললে চলে। একজন মন্ত্রীর পদত্যাগ একটা বিরাট ব্যাপার। প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বরখাস্ত, রদবদল ও ইস্তফা থেকে ট্রাম্পের চিন্তাভাবনা কতটা অস্থির ও অসঙ্গত তা অনুমান করা যায়। সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন সম্পর্কে তিনি মন্তব্য করেছেন, ‘তিনি অপদার্থ এবং জন্মের আলসে।’ বরখাস্ত করার সময় নিজের টুইটে ট্রাম্প এই মন্তব্য করেন। মানুষের প্রতি তার তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য অত্যন্ত দৃষ্টিকটু।

অস্থির আচার-আচরণ প্রকাশ পায় ট্রাম্পের দৈনন্দিন কাজকর্মেও। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদবিষয়ক ওয়েবসাইট অক্সিওস ডটকম সম্প্রতি ট্রাম্পের সময়সূচি ফাঁস করে দিয়েছে। হোয়াইট হাউজের একটি সূত্রের মাধ্যমে গত ৭ নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারির ১ তারিখ পর্যন্ত, তিন মাসে ট্রাম্পের প্রতিদিনের সময়সূচি পেয়েছে সংবাদমাধ্যমটি। এতে দেখা যাচ্ছে, প্রতিদিন তিনি দেরি করে ঘুম থেকে ওঠেন। এরপর তিনি মজা করে টিভি দেখেন, সংবাদ পড়েন আর সামাজিক মাধ্যম টুইটারে সক্রিয় থেকে দিন পার করে দেন। অক্সিওস ডটকম জানায়, ট্রাম্প ওই তিন মাসে ২৯৭ ঘণ্টা ১৫ মিনিট ফোন কল করে, সংবাদপত্র পড়ে, টুইটার ও টেলিভিশন নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। সময়সূচি নির্ধারিতÑ এমন বৈঠক করেছেন ৭৭ ঘণ্টা। ভ্রমণ করেছেন ৫১ ঘণ্টা এবং দুপুরের খাবার খেতে ব্যয় করেছেন ৩৯ ঘণ্টা। সকালের নাশতা, বিকেল ও রাতের খাবার মিলিয়ে আরো কত সময় ব্যয় করেছেন সেটা জানা গেল না। তাহলে বোঝা যেত, খাওয়া-দাওয়ার মজা নিতে নিতেই দিনের বেশির ভাগ সময় তার কেটে যায়।

ফাঁস হওয়ার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করা না গেলেও ট্রাম্পের ব্যক্তিগত সচিবের উষ্মা প্রকাশ থেকে বিষয়টির বাস্তবতা বোঝা যায়। এমন তথ্য বানোয়াট বা ভুল- এ কথা বলে ব্যক্তিগত সচিব ম্যাডেলিন ওয়েস্টারহুড তা উড়িয়ে দিতে পারেননি। তিনি বলেছেন, ‘হোয়াইট হাউজের ভেতর থেকে এ ধরনের তথ্য ফাঁস করা লজ্জাজনক ও বিশ্বাসভঙ্গের শামিল।’ টুইটারে দেয়া ম্যাডেলিনের এমন বক্তব্যে এর সত্যতাকে এক ধরনের স্বীকার করে নেয়া হলো। সময় ব্যয়ের হিসাব থেকে এ বিষয়টি অনুমেয় যে, জীবনকে ‘ভোগ’ করার ক্ষেত্রে ট্রাম্প কোনো ধরনের ছাড় দেন না। তার পুরনো অভ্যাসমাফিক রেসলিং নিয়ে মেতে না থাকলেও খাওয়া-দাওয়া ও আমোদ-ফুর্তির কোনো ঘাটতি নেই। বিদেশে সফরে গিয়েও তার বিনোদনের ঘাটতি দেখা যায় না। তিন দিনের সফরে এক দিন বা এক দিনের বড় একটি অংশই তার কাটে গলফ খেলে। জাপান সফরে এটি দেখা গেল। পৃথিবী যখন বড় ধরনের সঙ্কট ও সমস্যার মধ্যে আটকে আছে, দুনিয়ার সবচেয়ে ক্ষমতাধর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তখন সময় কাটাচ্ছেন হালকা চালে বিনোদন করে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ নিয়ে তদন্ত এ আমলের একটি উল্লেখযোগ্য দিক। কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে এ যেন সাপ বেরিয়ে আসা। তদন্ত করা হচ্ছিল নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ নিয়ে। বেরিয়ে এলো ট্রাম্পের স্বৈরাচারী মনোভাবের বিষয়। তিনি নিয়মকানুন কিছুই মানেন না। পরে ওই তদন্তের মূল বিষয় হয়ে যায় ট্রাম্পের অবৈধ হস্তক্ষেপ। ট্রাম্প এ তদন্ত বন্ধ করতে যারপরনাই অপচেষ্টা চালিয়েছেন। হোয়াইট হাউজের আইনজীবী ডন মেগানকে তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন, তদন্তের প্রধান কর্মকর্তা মুলারকে বরখাস্তের ব্যবস্থা করতে। এমনকি এ খবরটি যখন ফাঁস হয়ে যায় তখন মেগানকে বলেন, তিনি যেন এ বিবৃতি দেন যে, কথাটি সত্য নয়। তবে মেগান তা করতে অস্বীকৃতি জানান। এ তদন্ত চালানো শেষ পর্যন্ত সম্ভব হচ্ছে ট্রাম্পেরই অধীনস্থ কিছু কর্মকর্তার সৎ ও সাহসী ভূমিকার কারণে। তদন্তের প্রথম পর্বে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের বিষয়। দ্বিতীয় পর্বটি হলো, ট্রাম্প কিভাবে তদন্ত কাজ ব্যাহত করার অপচেষ্টা চালিয়েছেন সে বিষয়ে। এ তদন্তে এ কথাটিও প্রমাণিত হয়েছে, ট্রাম্পের নেতৃত্বে হোয়াইট হাউজ একটি ‘দোজখ’। ব্যাপারটি অনেকে গুজব বলে উড়িয়ে দিতে চান। বাস্তবে দেখা যায়, সেখানে এমন ব্যক্তির নেতৃত্বে আমেরিকার প্রশাসন চলছে, যিনি নিজেই অস্থির ক্ষ্যাপাটে একজন মানুষ।

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন ও হয়রানির অভিযোগ রয়েছে। ১৯৮০ সাল থেকে ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়া পর্যন্ত ২২ জন নারী তার বিরুদ্ধে যৌন আক্রমণের নানা মাত্রার অভিযোগ আনেন। এর মধ্যে তার সাবেক স্ত্রী ইভানা তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনেছেন। চলতি জুনে লেখক ই জ্যা ক্যারল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনেন। নিউ ইয়র্ক ম্যাগাজিনে তিনি এ অভিযোগ উত্থাপন করেন। ক্যারলের দুই বন্ধু ম্যাগাজিনটিকে ব্যাপারটির সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত করেছেন। ঘটনাটি ঘটে একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের ড্রেসিংরুমে। মিস ইউএসএ এবং মিস টিন ইউএসএ প্রতিযোগীদের ওপর ট্রাম্প যৌন হয়রানি করেছেন। তিনি তাদের ড্রেসিংরুমে ঢুকে পড়েন। কয়েকজন প্রতিযোগী এ ব্যাপারটি ফাঁস করে দেন। সবচেয়ে বড় অভিযোগটি আনেন পর্ন তারকা স্টরমি ডানিয়েল। নির্বাচনের মওসুমে যাতে স্টরমি এই কেলেঙ্কারি ফাঁস করে না দেন, সে জন্য ট্রাম্প তার আইনজীবীর মাধ্যমে একটি চুক্তিও করে নেন। এক লাখ ৩০ হাজার ডলারের বিনিময়ে ‘নন-ডিসক্লোজার এগ্রিমেন্ট’ হয়েছিল। শেষ রক্ষা হয়নি, সব ফাঁস করে দিয়েছেন স্টরমি।

পৃথিবী নামক গ্রহটি ক্রমেই জটিল ও কঠিন হয়ে উঠছে। হিংসা-ঘৃণা-বিদ্বেষ চরম আকার ধারণ করছে। শক্তিমানেরা দুর্বলদের ওপর চড়াও হচ্ছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ছোটখাটো আরো অনেক যুদ্ধ হলেও বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়নি মানবতা। এর অন্যতম কারণ, বিশ্বশক্তির মধ্যে একটি ভারসাম্য। আমেরিকার একক আধিপত্যের বিপরীতে রাশিয়া ও অন্যান্য শক্তির মাধ্যমে ভারসাম্য স্থাপন করেছে। ইতিবাচক ভূমিকা পালন করেছে আমেরিকার মসৃণ গণতন্ত্র চর্চা। কতগুলো নৈতিক মানদণ্ড সে দেশের প্রেসিডেন্টের ক্ষমতাকে জবাবদিহিতার মধ্যে সীমায়িত রেখেছে। এ প্রথম আমেরিকায় এমন একজন লোক প্রেসিডেন্ট হলেন, মানুষ হিসেবে প্রতিটি ক্ষেত্রে যার নৈতিক ঘাটতি রয়েছে। তার ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতি পুরো পৃথিবীকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। ক্ষমতা গ্রহণ করেই তিনি বৈশ্বিক উষ্ণতা নিয়ন্ত্রণ সমঝোতা থেকে সরে এসেছেন। ইরানের সাথে পরমাণু চুক্তিও বাতিল করেছেন। প্রকাশ হয়ে পড়ছে ট্রাম্পের স্বেচ্ছাচারী আগ্রাসী মনোভাব। এ কারণে পৃথিবী আরেক বিশ্বযুদ্ধের কবলে পড়তে পারে।
jjshim146@yahoo.com


আরো সংবাদ



premium cement