মানবাধিকারের কথকতা
- সৈয়দ মাসুদ মোস্তফা
- ০৩ মে ২০১৯, ২০:১৩
মানুষের সর্বজনীন, সহজাত, অহস্তান্তরযোগ্য এবং অলঙ্ঘনীয় অধিকারই হলো ‘মানবাধিকার’। সব মানুষের জন্য মানবাধিকার একই ধরনের; যা জন্মগত ও অবিচ্ছেদ্য। তবে এর চর্চা অন্যের ক্ষতিসাধন ও প্রশান্তি বিনষ্ট করা হবে না। কারণ এসব কথা কেতাবে থাকলেও বাস্তব প্রতিফলনটা গৌণ। আঞ্চলিক যুদ্ধ, সঙ্ঘাত, হানাহানি, শ্রেণিবিশেষের উচ্চাভিলাষ ও স্বার্থপরতার কারণে প্রতিনিয়ত উপেক্ষিত হচ্ছে মানুষের অধিকার। পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো কেউ নিজ ক্ষেত্রে মানবাধিকারের নিশ্চয়তা দিতে পারছে না। সব ধর্মে মানবাধিকারকে গুরুত্ব প্রদান করার কথা বলা হলেও ধর্মের যথাযথ অনুশীলন ও মূল্যবোধের চর্চার অভাবে এর সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।
জাতিসঙ্ঘের 'Universal Declaration of Human Rights' এর প্রথম অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, 'All human beings are bornfree and equal in dignity and rights.' অর্থাৎ ‘জন্মগতভাবে সব মানুষ স্বাধীন, সমান সম্মান ও অধিকার লাভের অধিকারী।’ মানবাধিকারবিষয়ক ধারণাটি অলঙ্ঘনীয় হলেও সভ্যতার প্রারম্ভিক কাল থেকেই এ নিয়ে চলছে বাকবিতণ্ডা ও দ্বন্দ্ব-সঙ্ঘাত। মানবাধিকারের সংজ্ঞা ও সীমারেখা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে, অন্য দিকে ক্ষমতাধর শাসকরা দেশে দেশে নাগরিকদের স্বীকৃত অধিকারগুলো অবাধে হরণ ও দমন করে চলছেন।
মানবাধিকারবিষয়ক ধারণা বেশ প্রাচীন। জানা যায়, ৫৩৯ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে পারস্যের রাজা দ্বিতীয় সাইরাস (সাইরাস দ্য গ্রেট) ব্যাবিলন আক্রমণ করেছিলেন। এর তিনি ব্যাবিলনীয়দের দিয়ে নির্যাতিত দাস জনগোষ্ঠীকে মুক্ত করে দিয়েছিলেন। এরপর সাইরাসের নির্দেশে একটি সিলিন্ডার তৈরি করা হয় যা, ‘সাইরাস সিলিন্ডার’ নামে অভিহিত। এতে সাম্রাজ্যজুড়ে ধর্মীয় স্বাধীনতা, সহিষ্ণুতা ও মানবাধিকার বাস্তবায়নের কথা বলা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা দাবি করছেন, এটিই বিশ্বের প্রথম মানবাধিকার সনদ।
বস্তুত মানবাধিকারের প্রধান ভিত্তি স্থাপিত হয়েছিল ৬২২ সালে মহানবী হজরত মুহাম্মদ সা:-এর ‘মদিনা সনদ’ ঘোষণার মাধ্যমে। এটি পৃথিবীর প্রথম পূর্ণাঙ্গ লিখিত সংবিধান হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এ সনদে মোট ৪৭টি অনুচ্ছেদ রয়েছে, যেগুলোতে মানবাধিকারের বিষয়গুলো সর্বপ্রথম সুস্পষ্টভাবে বিবৃত করা হয়েছে। এর উল্লেখযোগ্য অনুচ্ছেদ হচ্ছে- সনদে স্বাক্ষরকারী সব সম্প্রদায় একটি অভিন্ন জাতি গঠন করবে এবং সব সম্প্রদায় সমান নাগরিক অধিকার ভোগ করবে।
সব নাগরিক পূর্ণ ধর্মীয় স্বাধীনতা ভোগ করবে। কেউ কারো ধর্মে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। নাগরিকদের অধিকার ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাষ্ট্র নিশ্চিত করবে। সব ধরনের রক্তক্ষয়, হত্যা ও ধর্ষণ নিষিদ্ধ। কোনো লোক ব্যক্তিগত অপরাধ করলে, তা ব্যক্তিগত অপরাধ হিসেবেই বিবেচিত হবে। তার কারণে অপরাধীর সম্প্রদায়কে দায়ী করা যাবে না। দুর্বল ও অসহায়দের সর্বতোভাবে সাহায্য সহযোগিতা করতে হবে।
মানবাধিকারবিষয়ক ধারণার ক্রমবিকাশের ক্ষেত্রে ‘ম্যাগনা কার্টা’ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত। এটি ছিল ইংল্যান্ডের রাজা জন এবং বিত্তশালী ব্যারনদের মধ্যে ১২১৫ সালে সম্পাদিত চুক্তি। এতে নিশ্চয়তা দেয়া হয়, জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের পূর্ব অনুমতি ব্যতিরেকে স্বেচ্ছাচারীভাবে জনগণের ওপর করারোপ করা যাবে না। রাজ কর্মকর্তারা যথেচ্ছভাবে জনগণের ভূ-সম্পত্তি অধিগ্রহণ করতে পারবেন না। কোনো স্বাধীন মানুষকে বিচারিক রায় বা আইনানুযায়ী ব্যতীত গ্রেফতার, কারারুদ্ধকরণ, সম্পত্তিচ্যুত, দীপান্তরিত বা নির্বাসিত কিংবা হয়রানির শিকার করা যাবে না।
বস্তুত, ‘ম্যাগনা কার্টা’র মধ্য দিয়েই সংসদীয় গণতন্ত্রের পাশাপাশি আইনের শাসনের ধারণার সূচনা হয়। এই সনদেই সর্বপ্রথম ঘোষণা করা হয়েছে, রাজাসহ দেশের সবাই রাষ্ট্রীয় আইনের অধীন; অর্থাৎ কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নন। প্রজাদের অধিকার ও রাজার ক্ষমতা হ্রাসের যৌক্তিক এ দলিল পরবর্তীকালে যুক্তরাষ্ট্রসহ বহু দেশে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায়ও জনগণের ক্ষমতায়নে গুরুত্বপূর্ণ পথনির্দেশক হিসেকে কাজ করেছে।
ষোড়শ শতকে ব্রিটিশ জনগণের আন্দোলনের ফলে প্রথম যে তাৎপর্যপূর্ণ দলিলের সৃষ্টি হয় তা ‘পিটিশন অব রাইটস’ নামে অভিহিত। ১৬২৮ সালে ‘পিটিশন অব রাইটস’ সংসদের মাধ্যমে আইনের আকারে গৃহীত হয়েছিল। পার্লামেন্টের সম্মতি ছাড়া করারোপ, বিনা অপরাধে কারারুদ্ধকরণ, ব্যক্তিগত বাসস্থানে স্বেচ্ছাচারী অনুপ্রবেশ এবং সামরিক আইনের প্রয়োগ থেকে জনগণকে সুরক্ষা দিয়েছিল এ গুরুত্বপূর্ণ দলিলটি।
১৬৮৯ সালে ‘বিল অব রাইটস’ ব্রিটিশ পার্লামেন্টে গৃহীত ও বিধিবদ্ধ আইনে রূপান্তরিত হয়। প্রখ্যাত ফরাসি দার্শনিক ভল্টেয়ারের মতে, ‘বিল অব রাইটস’ প্রত্যেক মানুষকে সেসব প্রাকৃতিক অধিকার পুনরুদ্ধার করে দিয়েছে, যেগুলো থেকে তারা দীর্ঘ দিন ধরে শাসকগোষ্ঠী দ্বারা বঞ্চিত ছিল। যেমন- জীবন ও সম্পত্তি রক্ষার পূর্ণ স্বাধীনতা, লেখনীর অধিকার, স্বাধীন লোকদের দিয়ে গঠিত জুরি ছাড়া ফৌজদারি অভিযোগে বিচারের সম্মুখীন না হওয়ার স্বাধীনতা এবং শান্তিপূর্ণভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালনের স্বাধীনতা। শুধু তাই নয়, ‘বিল অব রাইটস’ বলা হয়, পার্লামেন্টের পূর্বানুমতি ব্যতিরেকে রাজা যদি কোনো আইনকে স্থগিত বা ভঙ্গ করেন অথবা রাজা তার খরচের জন্য ইচ্ছেমতো করারোপ করেন বা রাজ-কমিশন বা রাজ-আদালত গঠন করেন, তাহলে এগুলো হবে বেআইনি ও ধ্বংসাত্মক।
গণতন্ত্র, মানবিক মূল্যবোধ ও প্রগতিশীলতার সাথে মানবাধিকার ও সুশাসনের সম্পর্ক যেমন অবিচ্ছেদ্য, তেমনি তা প্রযোজ্য উন্নয়নের ক্ষেত্রেও। বিশেষ উদ্দেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের চেয়ে উন্নয়নকেই গুরুত্ব দেয়া জরুরি বলে দাবি করা হচ্ছে। কিন্তু গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের বোধবর্জিত উন্নয়ন কখনো অর্থবহ হয়ে ওঠে না। মানুষ যেখানে অধিকারবঞ্চিত, আতঙ্কিত, অনিরাপদ ও অরক্ষিত বোধ করে, সেখানে উন্নয়নও হয়ে যায় নিষ্ফলা।
অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা হচ্ছে মানুষের মৌলিক অধিকার। কিন্তু শুধু এগুলোই মানুষের জীবনকে সুন্দর ও সাবলীল করে না। স্বাধীনভাবে ও স্বাচ্ছন্দ্যে মতপ্রকাশের অধিকার, নির্বিঘ্নে চলাফেরার অধিকার, জীবনধারণের অধিকার, শান্তিতে বসবাস করার অধিকার, জুলুম-অত্যাচার ও নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচার অধিকার, মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা থেকে বাঁচার অধিকার, সন্তানদের নৈতিক শিক্ষায় গড়ে তোলার পরিবেশ পাওয়ার অধিকারসহ অনেক কিছুই মানবাধিকারের আওতাভুক্ত।
মানবাধিকারের বিষয়ক ধারণাটি অতিপ্রাচীন হলেও আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় তা আরো পরিশীলিত আকারে গৃহীত হয়েছে। আমাদের সংবিধানেও অবাধ গণতন্ত্র ও মৌলিক মানবাধিকারের নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে। সংবিধানের ১১ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘The Republic Shall be a democracy in which fundamental human rights and freedoms and respect for the dignity and worth of the human person shall be guaranteed...’ অর্থাৎ ‘প্রজাতন্ত্র হইবে একটি গণতন্ত্র যেখানে মৌলিক মানবাধিকার ও স্বাধীনতার নিশ্চয়তা থাকিবে, মানবসত্তার মর্যাদা ও মূল্যের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ নিশ্চিত হইবে....’।
জাতিসঙ্ঘের সর্বজনীন মানবাধিকারের ঘোষণাপত্র অনুযায়ী বিশ্বের ছোট বড়, ধনী-দরিদ্র প্রায় সব দেশ এখন মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় সোচ্চার ভূমিকা পালন করছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, আন্তঃরাষ্ট্রীয়, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে এবং আমাদের সংবিধানে মানবাধিকারের নিশ্চয়তা দেয়া হলেও এ ক্ষেত্রে আমাদের অর্জন ও অভিজ্ঞতা মোটেই স্বস্তিকর নয়।
আমাদের দেশে আইন ও সাংবিধানিক শাসন এবং মানবাধিকার নিয়ে প্রশ্ন তোলা নতুন কিছু নয়। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। বস্তুত রাজনৈতিক সঙ্কট ও স্থিতিশীলতার অভাব, আইনের শাসনের দুর্বলতা, শ্রেণিবিশেষের আইন মানার বিষয়ে অনীহা, আইনের অপপ্রয়োগ এবং বিচারহীনতার অপসংস্কৃতির কারণেই বাংলাদেশে সার্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি ক্রমাবনতিশীল। রাষ্ট্র ও সরকার নাগরিকদের অধিকারের নিশ্চয়তা দিতে পারছে না। এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগও আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। ফলে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি একেবারে প্রান্তিক পর্যায়ে নেমে এসেছে।
মানবাধিকার সংস্থারগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুধু ২০১৭ সালেই ধর্ষণের শিকার হয়েছে প্রায় ৮০০ নারী। ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের পরিসংখ্যানে আরো ভয়াবহ চিত্র ফুটে উঠেছে। এতে বলা হয়, ২০১৭ সালে দুই হাজারেরও অধিক নারী শারীরিকভাবে আক্রমণের শিকার হয়েছেন। অপরাধীরা শাস্তির আওতায় এসেছে হাজারে দু’জনেরও কম। ‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ হয়েছে’ বলে সরকারের পক্ষে দাবি করা হলেও সে সময় প্রতিদিনই ‘বন্দুকযুদ্ধে’র নামে মানুষ নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
২০১৮ সালে সে অবস্থার আরো অবনতি হয়েছে বলে দাবি করছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) দাবি করেছে, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকারের ক্ষেত্রে বিগত বছরগুলোর অগ্রগতির ধারা ২০১৮ সালে অব্যাহত থাকলেও মানবাধিকারের সূচকে নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারের ক্ষেত্রে আশানুরূপ অগ্রগতি হয়নি, বরং বড় ধরনের অবনতিই ঘটেছে।
এতে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালজুড়ে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, বিশেষ করে ক্রসফায়ার, কথিত বন্দুকযুদ্ধ ও গুম-গুপ্তহত্যার ঘটনা অব্যাহত ছিল। বিশেষত গত বছরের মে মাস থেকে শুরু হওয়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাদকবিরোধী অভিযানকে কেন্দ্র করে ক্রসফায়ার ও বন্দুকযুদ্ধে দেশজুড়ে ২৯২ জন নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ২০১৮ সালের আরেকটি উদ্বেগজনক বিষয় ছিল বেআইনি আটক, গণগ্রেফতার এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যুর মতো ঘটনা।
‘আসক’ দাবি করেছে, ২০১৮ সালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে বন্দুকযুদ্ধ, ক্রসফায়ার, গুলিবিনিময়, নিরাপত্তা হেফাজতে মোট ৪৬৬ জন নিহত হয়েছে। এর সংখ্যা ২০১৭ সালে ছিল ১৬২। ২০১৮ সালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নেয়ার পর গুম হয়েছেন ৩৪ জন। এর মধ্যে পরে ১৯ জনের সন্ধান পাওয়া গেছে, যাদের বেশির ভাগই বিভিন্ন মামলায় আটক আছেন বলে নিশ্চিত করা হয়েছে।
এমনকি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে গত ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কমপক্ষে ৪৭০টি সহিংসতার ঘটনায় ৩৪ জন নিহত হয়েছেন। ২০১৮ সালে সারা দেশে ধর্ষণ ও গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৭৩২ জন। ধর্ষণ-পরবর্তী হত্যার শিকার ৬৩ জন, ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছেন সাতজন। ২০১৭ সালে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৮১৮ জন। আর ২০১৬ সালে এই সংখ্যা ছিল ৭২৪।
মূলত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড আগের তুলনায় আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। নারী ও শিশু ধর্ষণসংক্রান্ত নির্যাতনও বেড়েছে একইভাবে। ২০১৮ সালে সারা দেশে ৪৩৩টি শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ধর্ষণের শিকার হয়ে এর মধ্যে মারা গেছে ২২ শিশু। ধর্ষণ, যৌন নির্যাতন, হত্যা ও শারীরিক নির্যাতনের কারণে মারা গেছে ২৭১ জন শিশু। বেসরকারি সংস্থা ‘মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’ তথ্যগুলো জানিয়েছে।
ক্রমবর্ধমান অপরাধপ্রবণতায় মানবাধিকার লঙ্ঘন এখন উদ্বেগজনক পর্যায়ে। কিন্তু রাষ্ট্র বা সরকার এর প্রতিবিধান করতে পারছে না বরং রাষ্ট্রীয়ভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর অভিযোগও রয়েছে। গত বছরের শেষ দিক থেকে সরকারবিরোধী মহলগুলো জোরালো অভিযোগ করে আসছে, সরকার ভিন্ন মত দমনের জন্য রাজনৈতিক নিপীড়নের পথ বেছে নিয়েছে। এজন্য বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের নামে ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মামলা দেয়া হয়েছে।
প্রতিটি মামলা ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫(৩) এবং ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের ৩(ক) ধারায় রুজু করা হচ্ছে। মৃত, বিদেশে অবস্থানরত ব্যক্তি, অসুস্থ হয়ে বাড়ি বা হাসপাতালে রয়েছে যারা তাদেরও মামলার আসামি করে এজাহারভুক্ত করা হয়েছে। এটা শুধু মানবাধিকারের লঙ্ঘনই নয়, রাষ্ট্রাচারেরও চরম বিচ্যুতি বলতে হয়।
গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটলের মতে, ‘রাষ্ট্র হলো কয়েকটি পরিবার ও গ্রামের সমষ্টি, যার উদ্দেশ্য স্বয়ংসম্পূর্ণ জীবন।’ কিন্তু রাষ্ট্র নাগরিকদের জন্য সে স্বয়ংসম্পূর্ণ জীবনের নিশ্চয়তা দিতে পারছে না। তাই রাষ্ট্র সম্পর্কে নাগরিকদের অনীহা সৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিক। মূলত রাষ্ট্র একটি চিরস্থায়ী প্রতিষ্ঠান। রাষ্ট্রের পরিবর্তন ঘটতে পারে, কিন্তু বিনাশ হয় না। তাই রাষ্ট্রকেই গণমানুষের সব অধিকারের নিশ্চয়তা দিতে হবে। অন্যথায় রাষ্ট্রের কার্যকারিতা ও উপযোগিতা প্রশ্নবিদ্ধ হবেই।
smmjoy@gmail.com
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা