২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

সুশাসন, গণতন্ত্র ও সংবিধান

- ছবি : সংগৃহীত

গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালীকরণ, স্বাধীনভাবে মতামত দেয়ার সুযোগ সৃষ্টি, আর অর্থনৈতিক উন্নয়ন- এই তিনটি বিষয়ের ওপর জাতির সাফল্য-ব্যর্থতা নির্ভর করে। বাংলাদেশের অর্থনীতি বৈচিত্র্যময় এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের অর্জনও কম নয়। কিন্তু সুশাসনের অনুপস্থিতির কারণে ম্লান হয়ে যাচ্ছে সব অর্জন। টেকসই উন্নয়ন ও গণমুখী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য সুশাসন প্রতিষ্ঠার তাগিদ বেশ জোরালো। অর্থনৈতিক উন্নয়ন, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের বিষয় নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে নানা প্রশ্নের। বিভিন্নভাবে ব্যাহত হচ্ছে সুশাসন। সুশাসনের ক্ষেত্রে মাত্রাতিরিক্ত বিচ্যুতি বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় পেছনে ফেলে দিয়েছে আমাদের।

শাসন কাজে দুর্বলতা থেকে উত্তরণের ভাবনা থেকেই সুশাসনের ধারণার সৃষ্টি। মূলত ল্যাটিন আমেরিকা ও আফ্রিকা মহাদেশে বিশ্বব্যাংকের উপর্যুপরি ব্যর্থতার কারণে ১৯৮৯ সালে বিশ্বব্যাংক কর্তৃক ‘সুশাসন’বিষয়ক ধারণাটির উদ্ভব। এটি বিশ্বব্যাংকের প্রেসক্রিপশন নামেও পরিচিতি লাভ করেছে। ‘সুশাসন’ একটি অংশগ্রহণমূলক শাসনব্যবস্থা। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে ‘সুশাসন’ কথাটি ব্যাপকভাবে আলোচিত এবং জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। এর গুরুত্ব উপলব্ধি করেই ১৯৯৫ সালে এডিবি এবং ১৯৯৮ সালে আইডিএ সুশাসনের ওপর প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে এবং বাধা-প্রতিবন্ধকতাকে কাটিয়ে জনগণের সর্বাধিক কল্যাণ সাধনই সুশাসনের প্রধান লক্ষ্য হিসেবে নির্ধারণ করা হয়।

কোনো সমাজ বা রাষ্ট্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হলে নাগরিক অধিকারের বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব পায়। আর সুশাসনের জন্য দরকার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা। মূলত সুশাসন একটি দ্বিমুখী প্রত্যয়। প্লেটোর ‘রিপাবলিক’ গ্রন্থে সর্বপ্রথম এর ধারণা পাওয়া গিয়েছিল। এখানে একপক্ষে জনগণ ও অন্যপক্ষে সরকার। সুশাসন নাগরিকদের অধিকার ভোগ করার নিশ্চয়তা দেয়। তাই সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হলে নাগরিকেরা আশা-আকাক্সক্ষা, অবারিত প্রকাশ এবং সংবিধিবদ্ধ অধিকার ভোগ করতে পারে। তখন শাসক-শাসিতের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। ফলে রাষ্ট্রাচারও হয় গতিশীল ও সুশৃঙ্খল।

আইএমএফের মতে, ‘দেশের উন্নয়নে প্রতিটি স্তরের জন্য সুশাসন আবশ্যক’। জাতিসঙ্ঘের ভাষায়, ‘সুশাসনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো, মৌলিক স্বাধীনতার উন্নয়ন’। ম্যাককরনির মতে, ‘সুশাসন বলতে রাষ্ট্রের সাথে সুশীলসমাজের, সরকারের সাথে জনগণের, শাসকের সাথে শাসিতের সম্পর্ক বোঝায়’। আইনের শাসন, মানবাধিকার সংরক্ষণ, শাসনব্যবস্থায় স্বচ্ছতা, প্রশাসনিক জবাবদিহিতা, সব ক্ষেত্রে সমতা, সবার প্রতি ন্যায়পরায়ণতা, জনগণের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা ও জাতীয় শুদ্ধাচার সুশাসনের চালিকাশক্তি। কিন্তু এসব ক্ষেত্রে আমাদের দেশ পশ্চাৎপদই বলতে হবে।

আর্থ-সামাজিক নানা সূচকে বাংলাদেশ উন্নতি করেছে। কিন্তু সুশাসন, মানবাধিকার ও নৈতিকতার সূচকে পিছিয়ে পড়েছে বলে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মহলে জোরালো প্রশ্ন উপস্থাপন করা হচ্ছে। এসব সূচকে উন্নতি করতে গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বাংলাদেশ নানা ক্ষেত্রে, নানা সূচকে বিশ্বে দৃঢ় অবস্থান তৈরি করে নিয়েছে বলে দাবি করা হয়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, সুশাসন এবং মানবাধিকারের ক্ষেত্রে আমরা এমন দাবি করতে পারি না কিছুতেই। তাই আমাদের স্বাধীনতা যেমন পুরোপুরি অর্থবহ হচ্ছে না, তেমনি আমরা সুশাসনের সূচকেও ক্রমেই নিম্নগামী হচ্ছি।

আমাদের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রশ্নাতীত না হওয়ার কারণেই সুশাসন ও মানবাধিকার বিষয়ে সাফল্য নিয়ে আশাবাদী হওয়া যাচ্ছে না। কারণ, জনগণকে শাসন কাজে সম্পৃক্ত করা যায়নি। আর গণসম্পৃক্ততাহীন রাজনীতি ও রাষ্ট্রীয় কাঠামো কখনো সর্বজনীন হয়ে ওঠে না। আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক হলো জনগণ। সপ্তদশ শতক থেকেই আধুনিক প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রে নির্বাচন একটি অপরিহার্য বাস্তবতা। নির্বাচনের মাধ্যমে আইন সভা, আঞ্চলিক এবং স্থানীয় সরকারে জনপ্রতিনিধি বাছাই করা হয়।

আধুনিক গণতন্ত্রে প্রতিনিধি বাছাইয়ের পন্থা হচ্ছে নির্বাচন। গ্রিসে গণতন্ত্রের আদি চেহারায় নির্বাচনকে যেভাবে ব্যবহার করা হতো এখন তার পরিবর্তন হয়েছে। অতীতে নির্বাচনকে শাসকগোষ্ঠীর একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচনা করা হতো। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে সে অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে। স্থান, কাল ও পাত্রভেদে জনমতের গুরুত্ব ও গণতন্ত্রের স্বরূপ ভিন্ন।

গণরায়ের ভিত্তিতে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের ঐতিহ্য প্রাচীনই বলা যায়। প্রাচীন গ্রিস ও রোমে নির্বাচন পদ্ধতির প্রয়োগ ছিল সীমিত। পুরো মধ্যযুগেও রোমান সম্রাট ও পোপের মতো শাসক বাছাই করতেও নির্বাচনপদ্ধতি অনুসরণ করা হতো। তবে আধুনিক ‘নির্বাচন’ হলো জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচন। সপ্তদশ শতাব্দীর একেবারে শুরুর দিকে ইউরোপে যখন প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার গঠনের ধারণা এলো, তার আগে জনসাধারণকে দিয়ে সরকারি পদাধিকারী বাছাইয়ের এই আধুনিক ‘নির্বাচন’ বিষয়টির আবির্ভাব হয়নি।

গণতন্ত্রের অভিযাত্রা বেশ পুরনো হলেও ভারতীয় উপমহাদেশে এর ইতিহাস খুব বেশি দিনের নয়। কিন্তু ১৯৪৭ সালে ইংরেজ শাসনের অবসান ও ভারত বিভাজনের পর ভারতীয় উপমহাদেশে আধুনিক গণতন্ত্রের সূচনা হয়। ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি ভারত একটি প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয় এবং নতুন সংবিধান প্রবর্তিত হয়েছিল। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের চর্চার কারণেই স্বাধীনতার পরে ভারতের ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে। ফলে ভারত বিশ্বের ‘বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। কিন্তু একই সাথে স্বাধীনতা লাভ করলেও গণতন্ত্র চর্চায় পাকিস্তান তেমন সাফল্য দেখাতে পারেনি।

এ ক্ষেত্রে পাকিস্তান ভারতের চেয়ে অনেক ক্ষেত্রে আজো পিছিয়ে। ১৯৫৪ সালে পূর্ব পাকিস্তানে প্রথম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৬২ সালের শাসনতন্ত্রে প্রত্যক্ষ ভোটের প্রথা রহিত করে ‘ইলেকটোরাল’ কলেজ প্রথা সৃষ্টি করা হয়। এই পদ্ধতির মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট ও জাতীয় এবং প্রাদেশিক সংসদের সদস্যদের নির্বাচিত করা হয়। ১৯৭০ সালে তদানীন্তন পাকিস্তানে প্রথমবারের মতো জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু সে নির্বাচনে গণরায়ের প্রতি শাসকচক্র শ্রদ্ধা ও সম্মান দেখাতে পারেননি। গণতন্ত্র, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও সুশাসনের অনুপস্থিতিতে পাকিস্তান রাষ্ট্র আর অখণ্ড থাকতে পারনি। এক অনিবার্য বাস্তবতায় ১৯৭১ সালে বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশ নতুন এক রাষ্ট্রের পরিচয়ে অভ্যুদয় লাভ করেছে।

আমাদের স্বাধীনতার অন্যতম চেতনা ছিল উদার গণতন্ত্র এবং সব ক্ষেত্রেই সুশাসন নিশ্চিতকরণ। কিন্তু সে লক্ষ্য আমাদের কাছে আজও অনেকটাই অধরা। এ দেশের গণতন্ত্র চলেছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে, সুশাসনের সূচকেও আমরা অনেকটাই পিছিয়ে। গণতন্ত্রকে নির্বিঘœ করে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য অনেকবারই রাজপথে নামতে হয়েছে। এজন্য আমরা বেশ মূল্যও দিয়েছি। এ ক্ষেত্রে আমাদের সাফল্যও এসেছিল। কিন্তু তার ধারাবাহিকতা আমরা রক্ষা করতে পারিনি। ফলে গণতন্ত্রের সঙ্কটও কেটে যায়নি; সুশাসনের ভিত্তিও মজবুত হয়নি। সংবিধানে গণতন্ত্রকে অন্যতম প্রধান মূলনীতি হিসেবে ঘোষণা করা হলেও এর প্রায়োগিক দিক বিতর্কমুক্ত নয়। সংবিধানে গণতন্ত্র আছে; নির্দিষ্ট মেয়াদান্তে নির্বাচনও হচ্ছে। কিন্তু সে গণতন্ত্র ও নির্বাচনে জনমতের প্রতিফলন নেই- এমন অভিযোগ সাম্প্রতিক সময়ে বেশ জোরালো। সুশাসনের বিচ্যুতি এবং বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে নাগরিকেরা থাকছে অধিকারবঞ্চিত। ফলে নুসরাত, তনু ও সাগর-রুনিরা প্রতিনিয়ত মর্মান্তিক হত্যাযজ্ঞের শিকার। কিন্তু স্বজনরা বিচারের প্রহর গুনলেও তা তাদের কাছে অধরাই থেকে যাচ্ছে।

সম্প্রতি গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ নিয়ে এসব অভিযোগের মাত্রা আরো বেড়েছে। বিশেষ করে গত ৩০ ডিসেম্বরের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও তৎপরবর্তী উপজেলা নির্বচন সে আগুনে নতুন করে ‘ঘি ঢেলে দিয়েছে’। তা রাষ্ট্র ও সরকার এবং নির্বাচকমণ্ডলীর মধ্যে একটা বড় ধরনের ব্যবধান সৃষ্টি করেছে। অধ্যাপক গেটেলের মতে, ‘গণতান্ত্রিকব্যবস্থা কোন পর্যায়ে আছে, তা বোঝা যায় নির্বাচকমণ্ডলী সরকারের ওপর কতটুকু প্রভাব বিস্তার করছে আর সরকারের অন্যান্য বিভাগের সাথে তার সম্বন্ধ কিরূপ তা থেকে।’

রাষ্ট্রকে কল্যাণকামী ও গণমুখী করতে সুশাসন প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। এটি অন্য দেশের সংবিধানের মতো আমাদের সংবিধানেও আছে। সংবিধানের ১১ অনুচ্ছেদে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। যেহেতু গণতন্ত্র হলো ‘সুশাসনের প্রাণ’। তাই বলা হয়, এই অনুচ্ছেদে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের স্বীকৃতির মাধ্যমে রাষ্ট্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠার নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠা (৫৯ অনুচ্ছেদ) ও এর ক্ষমতা (অনুচ্ছেদ ৬০) সম্পর্কে বলা হয়েছে। গণতন্ত্র মানেই জনগণের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ এবং স্থানীয় সরকারব্যবস্থা জনগণের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণের নিশ্চয়তা। তাই এসব অনুচ্ছেদের মাধ্যমে সুশাসনের নিশ্চয়তাই দেয়া হয়েছে।

সংবিধানের ৭৭ অনুচ্ছেদে সরকারি কর্মচারীদের দুর্নীতি প্রতিরোধ করার ব্যবস্থা হিসেবে ন্যায়পাল নিয়োগের বিধান রয়েছে। ১৮০৯ সালে সুইডেনে সর্বপ্রথম ন্যায়পালের বিধান জারি করা হয়েছিল। পরে ১৯৮০ সালে বাংলাদেশের সংবিধানে এই বিধান যুক্ত করা হয়। তবে এটি কার্যকর করা হয়নি। সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে এটিকেও বড় ধরনের একটি অন্তরায় বলে মনে করা হচ্ছে। এ ছাড়া সংবিধানের তৃতীয় ভাগে (অনুচ্ছেদ ২৬-৪৭) নাগরিকদের মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে এবং অষ্টম ভাগে (অনুচ্ছেদ ১২৭-১৩২) সরকারি অর্থের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা জন্য মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের বিধান যুক্ত করা হয়েছে। সুতরাং বলা যায়, দেশে সুশাসন বাস্তবায়নে সব ধরনের সাংবিধানিক নিশ্চয়তা (ঈড়হংঃরঃঁঃরড়হধষ মঁধৎধহঃবব) আমাদের সংবিধানে সন্নিবেশিত করা হয়েছে। তবুও পশ্চাৎপদ মানসিকতার কারণে এর সুফল আমরা পাইনি।

আমাদের দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ভঙ্গুর গণতান্ত্রিক পদ্ধতিকে প্রধানত দায়ী করা হয়। আমাদের দেশে গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ বিকশিত হয়নি এবং সুশাসনের সোনার হরিণও রয়ে গেছে। অতীতে দীর্ঘ দিন পর্যন্ত দেশে রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসন চালু ছিল। এরপর যখন সংসদীয় সরকারপদ্ধতি ফিরে এলো, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী Floor Crossing সমস্যা রয়ে গেছে। তা সুশাসনের অন্তরায় বটে।

সুশাসন প্রতিষ্ঠায় প্রতিবন্ধকতার ক্ষেত্রে আইন প্রণয়নে পক্ষপাতদুষ্টতা, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, বিরোধী দলের ওপর নিপীড়ন, মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করা প্রভৃতিকে উপেক্ষা করার সুযোগ নেই। তা ছাড়া আইন প্রণয়নে বাস্তব অবস্থা বিবেচনায় না আনা, টেকনিক্যাল বিষয়গুলো খোলামেলা আলোচনা না করা এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সম্পৃক্ত না করাও আমাদের দেশে সুশাসনের পথে অন্তরায়।

এ ক্ষেত্রে একশ্রেণীর রাজনীতিক ও জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে মূল্যবোধ ও গণতান্ত্রিক মানসিকতার অভাব এবং আইন মান্য করার ব্যাপারে উদাসীনতাও কম দায়ী নয়। এমন অভিযোগ জোরালো যে, সাম্প্রতিককালে দেশের নির্বাচনগুলো পুরোপুরি অংশগ্রহণমূলক ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে হয়নি। আর নির্বাচন যদি সুষ্ঠু না হয়, তাহলে জবাবদিহিতা অবশিষ্ট থাকে না। এমতাবস্থায় সুশাসন ধারণাটাও অসাড় হয়ে যায়। তাই সুশাসনের ক্ষেত্রে সংবিধানে নিশ্চয়তা সত্ত্বেও শুধু উদারনৈতিক গণতন্ত্র চর্চা ও আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাবেই আমরা এ ক্ষেত্রে ব্যর্থতার শৃঙ্খলেই আবদ্ধ রয়ে গেছি।

smmjoy@gmail.com


আরো সংবাদ



premium cement