নববর্ষ আসে; কিন্তু বসে না
- মীযানুল করীম
- ২০ এপ্রিল ২০১৯, ২০:১৬
‘ছাত্রলীগের কোন্দলে’ বৈশাখী আয়োজন পুড়ে গেলেও কিংবা পয়লা বৈশাখে বিবাহবার্ষিকীর প্রাক্কালে গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ মিললেও অথবা আবহাওয়া অফিস সে দিন ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস দিলেও রোববার বাংলা নববর্ষ উদযাপনের উৎসাহের তোড়জোড় এবার কমেনি; বরং বেড়েছে। যারা আগে বর্ষবরণের প্রভাতী অনুষ্ঠানে কোনো দিন যাননি, তাদের অনেকে এবার নতুন পোশাকে সেজেছেন (এমনকি সকালের আহার পরিহার করে হলেও) রাবীন্দ্রিক আবাহনে শামিল হয়ে মনে করেছেন, বাঙালি জীবনমন এতদিনে ধন্য করা গেল। অপর দিকে ‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো’ বলে যতই সুরেলা কিংবা বেসুরো গলায় গাওয়া হোক না কেন, মাসটি শেষ হওয়ার অনেক আগেই আমাদের বিপুলগরিষ্ঠ বাঙালিজন বাংলা পঞ্জিকা নিস্মৃত হয়ে ইংরেজি মাসের হিসাবে তৃপ্তির ঢেঁকুর তোলেন। ‘বৈশাখ এলোরে’ গান বহুল প্রচলিত। বৈশাখ আসে; তবে বসে না। ‘এসো এসো এসো হে বৈশাখ’ বলে আবাহন করা হোক বা না হোক, নববর্ষ যথাসময়ে আসবেই। তবে কারো শত উপরোধেও ‘বসবে না’। কালের চিরন্তন বিবর্তনধারায় বৈশাখের পয়লা থেকে শেষ দিন পর্যন্ত অতিবাহিত হয়ে পথ করে দেয় পরবর্তী মাস জ্যৈষ্ঠকে।
নববর্ষের আগে থেকে ঢাকায় মৎস্য ভবনের গায়ে দীর্ঘ ব্যানার ঝুলতে দেখা গেছে। এতে লেখা ছিল, ‘বছরের এই প্রথম দিন/সবাই মিলে শপথ নিন/সংযমী হলে এই দিন/ইলিশ পাবো বহু দিন’। ‘মাছের রাজা’ এ সময়ে ধরা, বিক্রি করা ও কেনাকে নিরুৎসাহিত করে ‘বহু দিন’ ধরে ইলিশ খাওয়ার প্রতি আকর্ষণ সৃষ্টির উদ্যোগটি প্রয়োজনীয় ও প্রশংসনীয়। কিন্তু ক’জন এই আহ্বানে এ যাবৎ সাড়া দিয়েছেন, সেটাই দেখার বিষয়। তরকারি ছাড়া ভাত খাওয়া যায় না। পানি ছাড়া মানুষ বাঁচে না। তেমনি অনেক বাঙালির বিশ্বাস, ইলিশ ছাড়া পয়লা বৈশাখ উদযাপন অসম্ভব। ‘পান্তা-ইলিশ না খেলে কিসের বাঙালি’- এমন ভুল ধারণা এখন বহু মানুষের মনে দৃঢ়মূল।
তাই দাম যত হোক, ইলিশ কেনা চাই। এই হিড়িকে এবার চৈত্রের দ্বিতীয়ার্ধেই ইলিশের দাম চড়া হয়ে যায়। এতে অবশ্য নববর্ষপিয়াসী বঙ্গসন্তানদের মেজাজ চড়ে যায়নি। কথায় বলে, ‘হুজুগে বাঙাল/হিকমতে চীন।’ এখন বাঙালিপনার হুজুগ সবাই দেখছি, আর চীনাদের হিকমত কেমন, তা অন্তত এ অঞ্চলের সরকারগুলো টের পাচ্ছে। যারা সারা বছর পান্তার ধারে কাছেও নেই, পয়লা বৈশাখে তাদের পান্তার প্রেমে উদ্বেলিত হওয়া রহস্যজনক বটে। তাদের কাছে পান্তা-ইলিশের পান্তা, না ইলিশ ভাজিটা বেশি লোভনীয়, তা বলে দিতে হয় না। যারা বাংলা নববর্ষে ইলিশ কেনা বাধ্যতামূলক ভাবেন, তারা আসলে ‘ফুলিশ’ না আর কিছু, সেটা যত তাড়াতাড়ি নিজেরা টের পাবেন, ততই জাতির মঙ্গল। পয়লা বৈশাখে শাড়ির সাথে সালোয়ার-কামিজের কদর বাড়ছে। নববর্ষে প্যাঁচা, ময়ূর, বাঘ, বিড়াল, হাতির মুখোশ ও প্রতিকৃতির পাশাপাশি ঘোড়ার আদর ও কদর ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। তেমনি ইলিশেরও বিশেষ মর্যাদা যদি অচিরেই বিদায় নেয়, অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
ক্ষমতাসীন মহলের কোন্দলব্যাধি এখন কত ব্যাপক, তার একটি নজির নববর্ষ উপলক্ষে সবার নজর কেড়েছে। কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের লোকজনের কাছে ‘দল’-এর চেয়ে ‘উপদল’ বড় হয়ে উঠলে এর প্রভাব পড়ে অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনেও। পয়লা বৈশাখে বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রথম পৃষ্ঠার একটি শিরোনাম- ‘ঢাবিতে ছাত্রলীগের কোন্দলে আগুনে পুড়ল বৈশাখী আয়োজন।’ গত কিছু দিন ধরে চারদিকে একের পর এক আগুনের অঘটনের মাঝে এই ‘অগ্নিকাণ্ড’ অন্যরকম। পত্রিকাটির ভাষায় ‘ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার শীর্ষ নেতাদের বিরোধের জেরে পণ্ড হয়ে গেছে পয়লা বৈশাখের আয়োজন।’ ঢাবি ছাত্রলীগ ও নবনির্বাচিত ডাকসুর এটি ছিল যৌথ আয়োজন। শুক্রবার রাতে একটি গ্রুপ সেখানে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। ‘ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতিকে না জানিয়ে আয়োজন করা’ এর কারণ বলে পত্রিকাটি উল্লেখ করে।
কয়েকটি ব্যান্ডের সঙ্গীত পরিবেশন এবং মেলার প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছিল। তবে রাতে মঞ্চ, স্টল ও নানা উপকরণে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। রাতেই আবার আয়োজন শুরু হলেও সকালে হেলমেটধারী কয়েক ব্যক্তি এসে পেট্রলবোমা দিয়ে হামলা চালায়। এক কোটি টাকার ক্ষতির কথা জানাল অনুষ্ঠানের সহযোগী প্রতিষ্ঠান। ছাত্রলীগ সভাপতি বলেছেন, ‘আমাকে এ প্রোগ্রাম সম্পর্কে কিছুই জানানো হয়নি। হল শাখার নেতাকর্মীদের এর সাথে সমন্বয় না করার ফলে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটতে পারে। এদিকে, বৈশাখী আয়োজন পণ্ড করার জের ধরে জনৈক ছাত্রলীগ কর্মী আহত হলে তার মাথায় পাঁচটি সেলাই দিতে হয়েছে। একটি হলে এক নেতার রুম হয়েছে ভাঙচুরের শিকার। ডাকসুর নতুন ভিপি (ছাত্রলীগবহির্ভূত) জানান যে, তিনি নববর্ষের কনসার্টের ব্যাপারে কোনো কিছু জানেন না।’
বৈশাখ ঘনিয়ে এলেই নানা ক্ষেত্রে এমনকি ব্যবসায় বিপণন বিজ্ঞাপনেও বাংলা নববর্ষের যৌক্তিক-অযৌক্তিক ব্যবহার চোখে পড়ে। এবার একটি প্রতিষ্ঠানের বৈশাখী ছাড় বা অফার রয়েছে ৫০ শতাংশ কমিশনের। সোজা কথায়, অর্ধেক মূল্যে। এটা ইংরেজি ভাষা শেখানো সংক্রান্ত। বাংলা পঞ্জিকার প্রথম মাসের সাথে ইংরেজি শেখানোর কী সম্পর্ক, বোঝা গেল না। আরেক বিজ্ঞাপনে বৈশাখী ঝড়ো অফারের প্রলোভন দেখানো হয়েছে। এই ছাড়ের পরিমাণ মাত্র সাড়ে ৭ শতাংশ দেখে এক বেরসিকের বক্তব্য, ‘এটা বৈশাখী ঝড় না, সামান্য দমকা হাওয়া মাত্র।’
পান্তা-ইলিশের হাস্যকর বাতিক ছাড়ানো সহজ নয়। নানা হুঁশিয়ারি, নিষেধাজ্ঞা, উপদেশ, পরামর্শ সত্ত্বেও এ দেশে ইলিশ ধরা, এমনকি ইলিশের বাচ্চা কেনা ও খাওয়া পর্যন্ত বন্ধ হয় না। আর পয়লা বৈশাখ তো ইলিশখোরদের মহাহর্ষের উপলক্ষ। মজার ব্যাপার হলো-‘পান্তা-ইলিশ’ যারা চালু করেছিলেন, তারা বাঙালি জাতীয়তাবাদী নন, তথা বর্তমান সরকারি মহলের লোক নন। প্রধানত ‘বাংলাদেশী’ ঘরানার কয়েকজন মিলে বিশেষ এক পরিস্থিতিতে পান্তা-ইলিশের প্রচলন ঘটিয়েছিলেন। এখন বিপরীত রাজনৈতিক ঘরানার লোকজন এ নিয়ে বেশি মাতামাতি করেন। এদিকে সেই আদি প্রবর্তকরা প্রায় বিস্মৃতির পথে।
একজন কলামিস্ট এবার এক লেখায় জানিয়েছেন, ১৯৮৪ সালে অধুনালুপ্ত দৈনিক দেশ অফিসে পান্তা-ইলিশ ভাবনার জন্ম। এরশাদ সরকারের রোষানলে পত্রিকাটি তখন বন্ধ। মালিক ছিলেন মরহুম এ কে এম মাঈদুল ইসলাম। তিনি সে সময়কার বিএনপি নেতা এবং পরে জাতীয় পার্টির এমপি ও মন্ত্রী। ‘দেশ’ পত্রিকার সংস্কৃতি পাতা দেখতেন চিত্রপরিচালক শহীদুল হক খান। ’৮৪ সালে পয়লা বৈশাখের ক’দিন আগে অফিসের এক আড্ডায় তিনি বললেন, রমনা বটমূলে পান্তাভাতের দোকান দিলে কেমন হবে? তার এ কথা উপস্থিত অন্যরা লুফে নেন। শুরু হয় এ জন্য তোড়জোড়।
এ উদ্যোগে সম্পৃক্ত ছিলেন কবি মাহবুব হাসান (এখন প্রবাসে), রোজী ফেরদৌস, মকবুলা পারভীন প্রমুখ সাংবাদিক। ঠিক হলো, পয়লা বৈশাখ বটমূলের দোকানে লাল বিরই চালের ভাত এবং আলু ভর্তা, ডালের বড়া আর পেঁয়াজ মরিচ থাকবে। মাটির শানকিতে খাওয়ানো হবে ৫ টাকার বিনিময়ে। পরে সিদ্ধান্ত হয়েছিল ইলিশ ভাজা খাওয়ানোর; প্রতি টুকরো ১০ টাকা করে। ব্যানার টাঙিয়ে এ দোকান দেয়া হয়েছিল বৈশাখী সমাবেশে। উদ্যোক্তারা ৩০ টাকা করে এ ব্যবসায়ে বিনিয়োগ করেছিলেন। সেদিন দোকানে এসে আবেদ খান ও মাঈদুল ইসলামসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা পান্তা ভোজন করেছিলেন। পত্রিকায় এই পান্তা বিক্রি নিয়ে সরস সংবাদের পাশাপাশি সমালোচনাও শুনতে হয়েছিল। ‘এটাকে আমাদের গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর প্রাত্যহিক জীবনের সঙ্গে নিষ্ঠুর মশকরা বলে অভিহিত করা হয়। সে দিনের পান্তা-ইলিশ এখন কোথাওবা ৫০০ টাকা দামে কিনতে হচ্ছে।’
সর্ব প্রথম পান্তা-ইলিশ স্টলের একজন সহযোগী হয়েও কলামিস্ট মহিউদ্দিন খান মোহন বলেছেন, ‘পয়লা বৈশাখ পান্তা-ইলিশ খেতেই হবে, না হলে নববর্ষ উদযাপন হবে না- এমন কোনো কথা নেই। কারণ এটা ধর্মীয় কোনো বিধান বা রাষ্ট্রীয় আইন নয়।... শিকড়ের টান অনুভবের চেষ্টা সমর্থনযোগ্য। অবশ্য নববর্ষের সকালে পান্তা খেয়ে এক দিনের বাঙালি হয়ে কোনো লাভ নেই।’
বহু বছর পত্রিকার রিপোর্টার ছিলাম। তখন পয়লা বৈশাখের প্রধান আয়োজনগুলোতে প্রায় নিয়মিত হাজিরা দিতাম। নব্বইয়ের দশকে একবার দেখেছি, হোটেল ইন্টারকনের উত্তরে পুলিশ যানচলাচল ঠেকিয়ে রাখায় গাড়ি থেকে নেমে আবুল হায়াত পরিবার হেঁটে চলেছেন শাহবাগের উদ্দেশে। গ্রীষ্মের সেই প্রচণ্ড রোদে ঘেমে তেতে সবার মতো তারাও এগিয়ে যাচ্ছিলেন। তারা মানে, অভিনেতা আবুল হায়াত, তার স্ত্রী এবং দুই মেয়ে বিপাশা ও নাতাশা। বিপাশা তখন বোধহয় চারুকলার ছাত্রী। এবার এক সাক্ষাৎকারে প্রবীণ অভিনেতা প্রকৌশলী হায়াত জানালেন, এক সময়ে নববর্ষের অনুষ্ঠানে গেলেও এখন আর যাওয়া হয় না। অপর দিকে প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী ফেরদৌসী রহমান বাংলা নববর্ষের তোড়জোড় ‘কমার্শিয়ালাইজড’ হয়ে যাবার সমালোচনা করেছেন।
২০০১ সালের দিকে রমনা পার্কের মূল বৈশাখী অনুষ্ঠানের সমাবেশে ভয়াবহ বোমাবাজির সহিংসতা দশজনের জীবনপ্রদীপ নিভিয়ে দিয়েছিল। দেড় যুগেও এ ঘটনার বিচার অসমাপ্ত রয়ে গেছে। হাইকোর্টে শুনানির প্রতীক্ষার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ঠিকানায় নাকি মামলার সাক্ষীর হদিস মিলে না। মনে আছে, সেবার পয়লা বৈশাখের দিন বাসা থেকে বের হতে আমার দেরি হয়ে গিয়েছিল। ঘরের বাইরে পা রাখার মুহূর্তে টিভির খবর, রমনা বটমূলে ভয়াবহ বোমা হামলা।
গত রোববার ভোরে যথারীতি হাঁটতে বের হলাম। বাসার পাশে স্থানীয় বৈশাখী মেলা হবে। ভোরেই স্টলের লোকজন মালসামান নিয়ে আসতে দেখা গেল। যতই আগাতে থাকি, ততই চোখে পড়ে নতুন পোশাক সজ্জিত, নানা বয়সী নারী-পুরুষ একা বা একসঙ্গে যাচ্ছেন নববর্ষের বড় বড় অনুষ্ঠানে। নিত্যনতুন নকশার পাঞ্জাবি শিশু-কিশোর তরুণ ও মাঝ বয়সীদের গায়ে। বর্ষবরণ উৎসবের বদলে ‘পাঞ্জাবি উৎসব’ বলে ভ্রম হতে পারে এটা দেখে। তরুণীদের কারো কারো কপালে বড় টিপ; শিশুদের সজ্জা ঈদের মতো। শ্রেণী ও পেশানির্বিশেষে হেঁটে, সাইকেলে ও মোটরসাইকেলে, রিকশা ও অটোরিকশায়, বাস ও মিনিবাসে বৈশাখী যাত্রী ও পথচারীর সংখ্যা বাড়ছিল। কেউ কেউ যানের অভাবে মাল টানার ভ্যানে উঠেছেন। তবুও নববর্ষের মিলনমেলায় যত শিগগির পারা যায় পৌঁছাতে হবে; বাঙালি এক দিনের, না প্রতিদিনের- সেটা মুখ্য নয়। সদর রাস্তার ধারে নববর্ষের প্রভাতে নতুন ব্যানার।
একটি ১৭ এপ্রিল ‘মুজিব নগর দিবস’ উপলক্ষে; অন্যটি প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীবর্গ এবং তাদের দলীয় এমপিদের স্বাগত জানিয়ে। এর যৌথ উদ্যোক্তা তিন সংগঠন নিজেদের ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নকামী হিসেবে দাবি করেছে। তবে বাংলা নববর্ষের শুরুতেই এই অত্যুৎসাহী বাঙালি জাতীয়তাবাদীদের ব্যানারে মাতৃভাষা বাংলা লেখায় ভুলের ছড়াছড়ি ছিল খুব বিব্রতকর ও দৃষ্টিকটু। ব্যানারে এই ভ্রান্তির মাঝেই অভ্রান্তভাবে শোভা পাচ্ছিল সরকার প্রধানসহ প্রায় ৪০ জন মন্ত্রীর ছবি। পথে একজনকে দেখলাম, আনকোরা নতুন পাজামা-পাঞ্জাবি পরে ফুরফুরে মেজাজে মেলায় বা গান শুনতে যাচ্ছেন। তবে পাজামাটা একেবারে ধুতির মতো। এটা মানায় কলকাতার বাবুদের; ঢাকাইয়া সাহেবদের নয়।
পাদটীকা : পান্তা-ইলিশ দিয়ে নববর্ষ উদযাপন করা নিয়ে ঠাট্টা-মশকারিও কম করা হচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে ২টা বিজ্ঞাপনের নমুনা ছাপা হয়েছে রম্যপত্রে। (ক) বুয়া চাই : পান্তা বানাতে এক্সপার্ট - এ রকম একজন বুয়া চাই। পয়লা বৈশাখের দিন পান্তা বানিয়ে খাওয়াতে হবে। অভিজ্ঞতা থাকলে অগ্রাধিকার। বেতন আলোচনা সাপেক্ষে। (খ) সিট খালি : পান্তা খেয়ে পেট খারাপ? আর টেনশন নয়। আপনাদের জন্য আমরা আছি সদা প্রস্তুত। বৈশাখ উপলক্ষে পান্তা খাওয়া রোগীদের জন্য বিশেষ ছাড়। একই পরিবারের তিনজন রোগী ভর্তি হলে একজন ফ্রি। আখেরি হাসপাতাল লিমিটেড, গোরস্তানের পাশে।
পুনশ্চ : হালখাতার রেওয়াজ আজও আছে। তবে পয়লা বৈশাখে অনেকেই আগের বছরের দেনা শোধ না করায় পুরনো লাল খাতাটা দিয়ে নতুন বছরেও কাজ চালাতে হয়। তাই পুরনো ঢাকার একজন ব্যবসায়ী আফসোস করে বললেন, ‘পয়লা বৈশাখ পার অইয়া যায়, মাগার লাল খাতা শেষ অয়না।’
এ অবস্থায় একজন ক্ষুব্ধ দোকানির হালখাতার দাওয়াতনামার নতুনা কেমন হতে পারে? এর নমুনা ছাপা হয়েছে। তবে এমন ভাষায় দাওয়াত দিতে খুদে ব্যবসায়ী যেন বাধ্য না হন, সে জন্য সবার দায়িত্ববোধই প্রত্যাশিত। ওই দাওয়াতনামা : ‘বারবার বলার পরেও আপনি বাকি টাকা দিচ্ছেন না। পয়লা বৈশাখ হালখাতার দিনও যদি টাকা পরিশোধ না করেন, তাহলে আপনার টেংরি ভাইঙ্গা লুলা কইরা ফালামু।’
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা