নুসরাতের মৃত্যু এবং সমাজের দায়
- ড. আবদুল লতিফ মাসুম
- ১৭ এপ্রিল ২০১৯, ১৮:৫৪
একটি পারিবারিক মৃত্যুর শোক অতিক্রম করতে না করতেই এলো জাতীয় পর্যায়ের এই দুঃসংবাদ, তথা শোক সংবাদ। প্রায় প্রতিদিনই এ ধরনের সংবাদ শুনতে শুনতে গা-সহা হয়ে যাচ্ছে সব কিছু। তবুও কিছু কিছু ঘটনা, কিছু কিছু মৃত্যু সমাজকে আন্দোলিত করে। বিবেককে করে বেদনাতুর। নুসরাত জাহান রাফির মৃত্যু এমন একটি ঘটনা, যা দেশবাসীকে কাঁদিয়েছে। নুসরাত যখন মৃত্যুর সাথে লড়ছে, তখন লাখ মানুষের মতো আমার চোখ-কান অস্থির ছিল গভীর উদ্বিগ্নতায়। অবশেষে শেষ সংবাদ এলো। নিজের অজান্তেই দু’চোখ ভরে গেল কান্নায়। তার মৃত্যুর পর টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়ায় মানুষের যে আহাজারি শুনেছি, তাতে সম্বিৎ ফিরে পাই- তাহলে বিবেক বলে এখনো কিছু অবশিষ্ট আছে। সেই সাথে হাজারো প্রশ্ন, কেন ঘটছে এসব ঘটনা? দিন দিন কেন বেড়ে যাচ্ছে মানুষের পাশবিকতা? বিচার কেন হয় না এসব ঘৃণ্য অপরাধীদের? কারা আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় এসব এই নরপশুকে? সংবাদপত্রে তথা গণমাধ্যমে আর কত খবরই বা ছাপা হয়? কোটি কোটি মানুষের এই দেশে ‘জীবন পাতার অনেক খবর রয়ে যায় অগোচরে’। একটি জরিপে দেখা যাচ্ছে- ২০১৮ সালে এই দেশে এক হাজারেরও বেশি ধর্ষণ-গণধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটেছে। আর নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে চার হাজারেরও বেশি। আর মেয়েদের স্কুলগুলোর যাতায়াত পথে নিত্যদিন অসংখ্য বখাটের উৎপাত চলছে। শহরের পথে-ঘাটে এক শ্রেণীর বদলোকের মধ্যে ক্রমেই সংক্রমিত হচ্ছে এ রোগ। ‘ছায়া সুনিবিড় শান্তির নীড়, ছোট ছোট গ্রামগুলোতে’ এই অশান্তির উপদ্রব ক্রমবর্ধমানভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। তাহলে এই মহামারী থেকে রক্ষার কি কোনো উপায় নেই?
রাসূলে করিম সা:-এর আগে ‘আইয়ামে জাহেলিয়াত’-এর কথা শুনেছি। গোটা বিশ্বে নব্য জাহেলিয়াতের সয়লাব চলছে। বাংলাদেশ পাশ্চাত্যের এই জাহেলিয়াতের প্রতিযোগিতায় নিমজ্জিত হয়েছে। নীতি-নৈতিকতা, আদর্শ-মূল্যবোধ, সামাজিক বিধিনিষেধের এতটাই অবনতি ঘটেছে যে, এসব অপরাধী অবাধে অপরাধ করার দুঃসাহস দেখাচ্ছে। সমাজের আইনকানুন, রীতি-রেওয়াজ ও দায়-দায়িত্বে এতটাই ধস নেমেছে যে, প্রচলিত মান্যতা ও জ্যেষ্ঠতা অকার্যকর হয়ে পড়েছে। সমাজে এক ধরনের তরুণ নেতৃত্বের বিকাশ হয়েছে, যারা সন্ত্রাসকেই তাদের নেতৃত্বের চাবিকাঠি মনে করছে। তারা অভিভাবকদের অবজ্ঞা করছে। এরা দুর্নীতির মাধ্যমে টাকার পাহাড় গড়ে তুলছে। কিছুই পরোয়া করছে না এরা। স্থানীয় এবং জাতীয় নির্বাচনে এদের প্রভুত্ব লক্ষ করা যাচ্ছে। মনীষী প্লেটোর ভাষায়- ‘এরা ঔদ্ধত্যকে অভিহিত করে আভিজাত্য বলে, অরাজকতাকে বলে স্বাধীনতা এবং অপব্যয়কে মহানুভবতা আর মূর্খতাকে বলে বিক্রম। (রিপাবলিক ৮ : ৫৬০)। সমাজের এ সামগ্রিক বিপর্যয়ের সাথে যুক্ত হয়েছে শাসককুলের অপশাসন। এ অবস্থা এক দিনে শেষ হয়নি। আর আমি কোনো নির্দিষ্ট শাসকগোষ্ঠীকে এ জন্য দায়ী করতে চাই না। এ দায় সবার। সমাজের সব মানুষের।
বাংলাদেশের মতো গরিব দেশে সরকার যেহেতু ‘সকল সম্পদ বণ্টনের কর্তৃত্বে আসীন’ সেহেতু সব জনগণ সরকার মুখাপেক্ষী। উন্নত দেশে সরকারের সমান্তরাল প্রতিষ্ঠান আছে। আলোর পথ দেখানোর লোকজন আছে। সে কারণে সেখানে সিভিল সোসাইটি বা সুশীলসমাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বাংলাদেশের শিক্ষিত তথা বিদ্বজ্জনদের সংখ্যাও কম নয়। কিন্তু প্রথমত রাজনীতিকরণ বা দলীয়করণ; দ্বিতীয়ত সুবিধাবাদী মানসিকতা এবং তৃতীয়ত সাহসী মনোভাবের অভাবে সুশীলসমাজ কাক্সিক্ষত ভূমিকা পালন করতে পারছে না। বিশ^ব্যাপী ইসলামী পুনর্জাগরণের কারণে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা ইসলামী সুশীলসমাজ নিয়ে গবেষণা করছেন। এদের মধ্যে রয়েছে- ওলামায়ে কেরাম, ইসলামি পণ্ডিতবর্গ ও সমাজের নেতৃত্বশীল ইসলামি অংশ। বাংলাদেশে সেকুলারদের তুলনায় এদের ভূমিকা হতাশাজনক। নুসরাত জাহান রাফির হত্যাকাণ্ডকে যদি একটি টেস্ট কেস হিসেবে ধরা হয় তাহলে, এদের তেমন কোনো ভূমিকাই লক্ষ করা যায়নি। সে তুলনায় বামধারার ভূমিকা উল্লেখযোগ্য।
অপরাধী সোনাগাজী মাদরাসার অধ্যক্ষ একজন তথাকথিত আলেম। তাকে বরং জালেম বলাই শ্রেয়। সে আলেম হওয়ার কারণে আলেমদের তরফ থেকে প্রতিবাদটি সবচেয়ে বেশি জোরালো হওয়া উচিত ছিল। তার কারণ সে আলেম হলেও ছিল গোমরাহ। আমার জানা মতে, একজন আলেম যখন গোমরাহ হয় তখন সাধারণ মানুষের চেয়েও সে বেপরোয়া হয়ে থাকে। এর আরেকটি উদাহরণ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের হাফেজে কুরআন ছাত্রটি, যে আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূল সম্পর্কে কটুবাক্য বলে আসছিল। এ ধরনের লোকেরা সব সময়ই ক্ষমতাসীন দলের আশ্রয়-প্রশ্রয় নিয়ে থাকে।
মাওলানা সিরাজ উদদৌলার ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। সর্বশেষ সংবাদে বলা হয়েছে, তার সবচেয়ে সহযোগী সোনাগাজী পৌরসভা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক, পৌর কাউন্সিলর এবং মাদরাসা পরিচালনা পরিষদের সদস্য মোকসুদ আলমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর আগে আরো এক ডজন লোককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের প্রায় প্রত্যেকের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ততা রয়েছে। এ মামলায় আরো এতজন গুরুত্বপূর্ণ আসামি সাহাদাত হোসেন শামিম। সে মাদরাসা ছাত্রলীগের সভাপতি। সে নুসরাতকে প্রেম নিবেদন করতে ব্যর্থ হওয়ায় ব্যক্তিগত ক্ষোভ ছিল। অপরাধী অধ্যক্ষ এদের মাধ্যমে বেপরোয়াভাবে তার অন্যায় অপকর্ম চালিয়ে আসছিল। ক্ষমতাসীন দলের সাথে অধ্যক্ষের যোগসাজশের কারণে তার বিরুদ্ধে তেমন কোনো ব্যবস্থা নেয়া যায়নি। পুলিশও ক্ষমতাসীনদেরই তুষ্ট করতে ব্যস্ত থাকে। এ ক্ষেত্রে আরো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। সোনাগাজী থানার ওসি নুসরাতকে জিজ্ঞাসাবাদের নামে রীতিমতো যৌন হয়রানি করেছেন। ওসি শেষ পর্যন্ত হত্যাকে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করেছেন। অভিযোগ পাওয়ার পর তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি। এ ধরনের কর্মকাণ্ডের জন্য সংশ্লিষ্ট ওসিকেও বিচারের আওতায় আনতে হবে।
বাংলাদেশে সমাজের এ ধরনের অবক্ষয় দীর্ঘকালের। কিন্তু এটি মহামারী আকারে বিস্তৃত হয়েছে বিগত এক যুগে। এর বড় কারণ বিচারহীনতার সংস্কৃতি। এই সময়ে অপরাধের ভয়ঙ্কর রাজনীতিকরণ ঘটেছে। ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা খুন, যখম, সন্ত্রাস ও দুর্নীতি যা-ই করুক না কেন, ‘সাত খুন মাফ’। আর যদি অপরাধী বিরোধী দলের হয় তাহলে আর রক্ষা নেই। পুলিশ তার চৌদ্দগোষ্ঠী উদ্ধার করে ছাড়বে। গত এক যুগে ক্ষমতাসীনেরা খুনের আসামিকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমা পাইয়ে দিয়েছে। আর সামান্য অপরাধে জেল-জুলুম ভোগ করছেন বিরোধী নেতানেত্রীরা। যদি পরিসংখ্যান নেয়া হয় তাহলে দেখা যাবে, এ দেশে বেশির ভাগ অপরাধের সাথে ক্ষমতাসীনেরা জড়িত।
পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে মামলা নিতে চায় না। এই সেদিনও খবর বের হয়েছে, মামলা নেয়ার জন্য এক ব্যক্তিকে হাইকোর্টের আদেশ নিতে হয়েছে। মামলা দিয়েও লাভ নেই। অভিযোগে প্রকাশ নিম্ন আদালতে সরকারের ইশারা-ইঙ্গিত ছাড়া গাছের পাতাটিও নড়ে না। উচ্চ আদালতেরও প্রায় একই অবস্থা। সুতরাং সাধারণ মানুষ আজ বড় অসহায়। নুসরাত মামলায় গ্রেফতার হওয়া নূর উদ্দিন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানিয়েছে- ‘এর আগে অনেক ঘটনা সামাল দেয়া গেছে। তাদের ধারণা ছিল, এবারের ঘটনাও সামলানো যাবে। এর আগে ২০১৭ সালের জুন মাসে নুসরাতের চোখে চুন মাখিয়ে দিয়েছিল সে। ওই ঘটনাটিও থামাচাপা দেয়া গেছে। তাই নুসরাতের গায়ে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে মারতে পারলেও কিছু হবে না- এমনটি ভেবেই তারা কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে ছিল।’
অ্যারিস্টটল মনে করেন, রাষ্ট্র একটি নৈতিক প্রতিষ্ঠান। রাষ্ট্রের কর্তব্য তার নাগরিকদের সৎ, সাহসী, কর্তব্যপরায়ণ এবং দেশপ্রেমিক মানুষ হিসেবে তৈরি করা। এ ধরনের মানুষ গড়ার প্রক্রিয়াকে ‘সামজিকীকরণ’ তথা ‘সুসংস্কৃতিকরণ’ বলা হয়। এর মাধ্যমে শিশুকাল থেকে যৌবনকাল পর্যন্ত রাষ্ট্র তার নাগরিকদের গড়ার জন্য নানা প্রক্রিয়া অবলম্বন করে। এগুলোর মধ্যে প্রধান হচ্ছে ক. শিক্ষাব্যবস্থা- এর মাধ্যমে গোটা জীবন ধরে নাগরিকেরা নীতিনৈতিকতা শিখবে। খ. ধর্ম- ধর্ম হচ্ছে নৈতিকতার প্রধান উৎস। শৈশবকাল থেকে প্রত্যেক নাগরিককে যদি নিজ নিজ ধর্মের আদর্শে গড়ে তোলা হয় তাহলে সে ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে উঠবে। গ. গণমাধ্যম- সংবাদপত্র, সিনেমা, নাটক ও টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকদের মহৎ ও সুন্দর জীবন গড়ার প্রেরণা দেয়া যায়।
‘খুনি শিকদার’ সিনেমা দেখে কেউ মহৎ শিকদার হবে না। ঘ. রাজনৈতিক দলগুলো- যদি তার নেতাকর্মীদের ভালো নাগরিক হিসেবে দেখতে চায় তাহলে সে রকম দীক্ষাই তারা দেবে। বাংলাদেশের ক্যাডারভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলো উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। ঙ. পরিবার- বলা হয়ে থাকে ‘চ্যারিটি বিগিন্স অ্যাট হোম’। পরিবার সভ্যতার সুপ্রভাত থেকে সুনাগরিক গড়ার দায়িত্ব পালন করছে। এসব বিষয় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার অপেক্ষা রাখে। নুসরাতের মৃত্যু আমাদের এসব বিষয় ভাবতে শিখিয়েছে।
মূল্যবোধ ও সামাজিক শাসন একটি ধারণাগত বিষয়। দীর্ঘকাল ধরে অনুশীলনের ফলে একটি প্রথা-পদ্ধতি গড়ে ওঠে। গভর্নেন্স বা শাসনব্যবস্থা একে সংরক্ষণ করে। সমাজের অভিভাবকেরা এটি লালন করে। বাংলাদেশে দীর্ঘকাল ধরে একটি সামাজিক বিধিব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। দেশের আলেম-ওলামা, পীর-মাশায়েখরা এই বিধিব্যবস্থাকে কার্যকর রেখেছেন। প্রতিটি গ্রামে পারিবারিক শাসন ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করেন গ্রামের মসজিদের ইমাম, মাদরাসার শিক্ষক ও অন্য মুরব্বিরা। প্রায় দুই দশক ধরে গ্রামের শাসন কাঠামোতে তরুণ নেতৃত্বের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে, তা আগেই বলা হয়েছে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন হওয়ার পর গ্রামীণ শাসনকাঠামোতে ধস নেমেছে। গ্রামে কোনো ধর্ষণ, মেয়েদের প্রতি অপমান ও অপকাণ্ড ঘটলে সামাজিক বিচার হতো। স্থানীয় আলেম সম্প্রদায় সেখানে প্রধান ভূমিকা পালন করতেন। এখন তাদের সে ব্যবস্থা থেকে নির্বাসন দেয়া হয়েছে। আলেম-ওলামারা তথাকথিত রাজনীতিকদের চোখে এখন অচ্ছুত। আলেমরা বিচার করতে গিয়ে অসংখ্য ঘটনায় অপমানিত, নিগৃহীত ও জুলুমের শিকার হয়েছেন। জেল-জরিমানার সম্মুখীন হয়েছেন। গ্রামের রক্ষণশীল অভিভাবকেরা এখন বিতাড়িত। তাই সর্বত্র নারী নির্যাতনে সয়লাব। গভর্নেন্স বা শাসন কর্তৃপক্ষ নারী স্বাধীনতার নামে স্বেচ্ছাচারিতা চালু করেছে। মনীষী রুশো বলেন, ‘মানুষ স্বাধীন, তবে সর্বত্রই সে নিয়মকানুন ও শৃঙ্খলার দ্বারা আবদ্ধ।’ আমাদের কর্তাব্যক্তিরা স্বাধীনতা ও স্বেচ্ছাচারিতার মধ্যে পার্থক্য বোঝেন না। তাই উচ্চ আদালত আলেমদের ‘ফতোয়া’ দেয়ার বিরুদ্ধে রায় দেন। সে কারণে আজ এই দুরবস্থা। নুসরাতের বিষয়টিও এই সামাজিক অনাচারের অংশ। অপরাধী অধ্যক্ষ মাওলানা উপাধি ধারণ করলেও সে মূলত অবাধ স্বাধীনতাকামীদেরই লোক। ইসলামের দুশমনেরা এ ঘটনাকে আলেম সমাজের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার অপচেষ্টা করছে। অথচ সে রাজনৈতিকভাবে আলেম সমাজের বিরোধী অংশের সাথেই আছে। সরকার বিষয়টির ভাবাবেগের প্রতি লক্ষ রেখে আপাতত ‘লিপ সার্ভিস’ দিচ্ছে। অবশেষে দেখা যাবে, ক্ষমতাসীনদের দলের লোক হওয়ার কারণে আসামিদের কোনো শাস্তি হয়নি। এ রকম অসংখ্য প্রমাণ কোর্টে মজুদ রয়েছে। ইতোমধ্যে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন যে রিপোর্ট দিয়েছে, তাতে প্রশাসনিক ব্যর্থতা প্রমাণিত হয়েছে। এসপি সাহেব যখন ওসি সাহেবের পক্ষে সাফাই গেয়ে চিঠি দেন, তখন সহজেই বোঝা যায় তারা কোন পক্ষে রয়েছেন।
সবাই বোঝে সরকার চাইলে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হতে পারে। সারা দেশে এ ধরনের অপরাধের অবসান ঘটতে পারে। সেজন্য চাই ধর্মীয় মূল্যবোধের পুনরুজ্জীবন। এই পরিকল্পনার আওতায় জনগণকে সচেতন ও সম্পৃক্ত করার জন্য ‘জাতীয় মূল্যবোধ পক্ষ’ পালিত হতে পারে। ঘরে ঘরে পুলিশ মোতায়েন না করে ঘরে ঘরে ‘মানুষ’ তৈরি করার কর্মসূচি নিতে পারে সরকার। অবশ্য যে সরকার গাছের গোড়া কেটে ডগায় পানি দেয় অথবা সব কিছুর মধ্যে রাজনীতি খোঁজে, তাদের দ্বারা পরিবর্তন সম্ভব নয়। এই নব্য জাহেলিয়াতের পরিবর্তন চাইলে সামগ্রিক পরিবর্তনই কাম্য। তাই স্লোগান হোক- ‘এ সমাজ পচাগলা, এ সমাজ ভাঙতে হবে। নৈতিকতার নতুন সমাজ গড়তে হবে।’
লেখক : অধ্যাপক, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
Mal55ju@yahoo.com
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা