২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

জলবায়ু পরিবর্তন : বিশ্বে এর প্রভাব

- ছবি : সংগৃহীত

ক্রমবর্ধমান জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব একটি বৈশ্বিক সমস্যা। সামাজিক ও রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে জলবায়ু পরিবর্তন বলতে পৃথিবীতে সাম্প্রতিককালের মনুষ্যসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনকেই বোঝানো হয়। এর প্রভাবে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা, বায়ুচাপ ও বাতাসসহ বিভিন্ন সূচকের পরিবর্তন হয় ও পৃথিবীপৃষ্ঠে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। পরিবেশ বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন অনুসন্ধান, গবেষণা ও তত্ত্বীয় প্রকল্পের মাধ্যমে অতীত এবং ভবিষ্যতের জলবায়ু উপলব্ধি করতে কাজ করছেন।

জলবায়ু পরিবর্তন প্রক্রিয়ায় ভূমণ্ডলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৈজ্ঞানিক ভাষায় এটিই ‘গ্রিন হাউজ প্রভাব’। ভূমণ্ডলের উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে অতি বৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, আকস্মিক বন্যা, অনাকাক্সিক্ষত খরা, জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড়প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে পৃথিবীর পরিবেশ বিপর্যয়সহ জীবন ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি বাড়ছে আশঙ্কাজনকভাবে।

‘জলবায়ু পরিবর্তনের ধরন, প্রভাব, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও পরিণতি নিয়ে রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের সাথে সমাজবিজ্ঞানী ও পরিবেশবাদীদের বিস্তর মতপার্থক্য। পরিবেশবিদদের ভাষায়, মনুষ্যসৃষ্ট আবহাওয়া পরিবর্তন আর পৃথিবীর নিজস্ব নিয়মে জলবায়ু পরিবর্তন এক বিষয় নয়। বৈশ্বিক উষ্ণতা শব্দটি কেবল ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বৃদ্ধিকে নির্দেশ করে, যেখানে জলবায়ু পরিবর্তনের মধ্যে বৈশ্বিক উষ্ণতা থেকে শুরু করে গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণের মাত্রা বৃদ্ধির কারণগুলোকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

২০১৫ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বরে প্যারিসে জাতিসঙ্ঘের জলবায়ু পরিবর্তন-বিষয়ক কনফারেন্স কপ-২২ বা সিএমপি-১১-এর কথা উল্লেখ করা জরুরি। সেই কনফারেন্সে নীতিনির্ধারকদের আলোচনা বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোকে খানিকটা আশাবাদী করেছিল। সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা গ্রিন হাউজ গ্যাস নির্গমন প্রশমিত করতে একটি সমঝোতায় পৌঁছেন। কার্বন নির্গমনের মাত্রা কমিয়ে বৈশ্বিক উষ্ণতা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমানোর জন্য সম্মত হন তারা। চুক্তির সম্মতিপত্র বাস্তবায়নের ব্যাপারে হতাশা সত্ত্বেও সার্বিকভাবে সব পক্ষই একমত, কার্বন নিঃসরণ কমানোর বিষয়টি অনেকটাই নির্ভর করছে ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের ওপর।

এ দুই ক্ষমতাধর দেশের প্রতিনিধিরা যদি বিদ্যুৎ ও জীবাশ্ম জ্বালানি শক্তি উৎপাদনের ক্ষেত্রে ‘ডি-কার্বোনাইজ’ পদ্ধতিকে সক্রিয়ভাবে গ্রহণ করে, তাহলে কার্বন নিঃসরণের অগ্রগতিতে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে। এ বিষয়ে জার্মানি ও ফ্রান্সের নামও উল্লেখ করার মতো। কারণ, দেশ দু’টি নবায়নযোগ্য ও বায়ুশক্তি ব্যবহার করে কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ অনেকটাই কমিয়ে এনেছে। পরবর্তী বছরে মরক্কোয় অনুষ্ঠিত জলবায়ু-বিষয়ক সম্মেলন বিগত সময়ের তুলনায় ২০১৬ সালকে সবচেয়ে উষ্ণ বছর হিসেবে উল্লেখ করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাসের পরিমাণ ক্রমেই বাড়ছে; ২০১৫ সালে যা বৃদ্ধি পেয়ে ৪০০ পিপিএম (পার্টস পার মিলিয়ন) পৌঁছেছে।

মরক্কোর জলবায়ু সম্মেলনকে ঘিরে বিশ্বনেতাদের বিভিন্ন ধরনের ইতিবাচক প্রচেষ্টা গ্রহণের মধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ডামাডোল শুরু হয়। ফলে বিষয়টি নিয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। জলবায়ু পরিবর্তনের কুপ্রভাবকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্রেফ গুজব হিসেবে অভিহিত করেন। এমনকি তিনি প্যারিস চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নাম প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। ২০১৫ সালে প্যারিস চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রসহ ১৮৭টি দেশ মিলে বৈশ্বিক উষ্ণতার মাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমানোর অঙ্গীকারের বিপরীতে ট্রাম্পের অবস্থান বিশ্বনেতারা ইতিবাচক মনে করেননি। এ বিষয়ে ট্রাম্পের বক্তব্য হলো, প্যারিস চুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ‘অতিরিক্ত অর্থনৈতিক বোঝা’ চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। তিনি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় জাতিসঙ্ঘের গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ডে অর্থায়ন না করার ঘোষণা দেন। ট্রাম্পের এমন অবস্থান ১৯৯২ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশের কিয়োটো প্রটোকল থেকে সরে আসার কথা মনে করিয়ে দেয়। সে সময় এ কারণে জলবায়ু পরিবর্তন-বিষয়ক একটি কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য দুই দশক অপেক্ষা করতে হয়েছিল।

পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, কপ-২২এ যে ‘গ্লোবাল কার্বন বাজেট ২০১৬’ ঘোষণা করা হয়, তার লক্ষ্য ছিল যেসব দেশ অভিযোজন ও প্রমোশনের চেষ্টা করছে, তাদের সাহায্য করা। কিন্তু প্রতিশ্রুতি মোতাবেক অনেক দেশ সাহায্য না করায় এ লক্ষ্য প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। কার্বন-বিষয়ক জটিলতা নিয়ন্ত্রণে যেসব পদক্ষেপ নেয়া উচিত ছিল, সে বিষয়ে অনেক দেশই ছিল খুব উদাসীন। সাধারণভাবে জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোয় পুনর্বনায়ন, কার্বন স্টোরেজ, বায়োগ্যাস ব্যবহার বৃদ্ধি ও উপকূলে বাঁধ প্রকল্প বাস্তবায়নে ফান্ড নিতান্তই অপ্রতুল।

সার্বিক বিবেচনায় জলবাযু পরিবর্তনে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর অন্যতম বাংলাদেশ কপ-২২ গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করেছে। জাতিসঙ্ঘের ১৯৭টি দেশের মধ্যে ১০৯টি প্যারিস চুক্তি অনুমোদন করেছে এবং এটি কার্যকর হয়েছে ৪ নভেম্বর, ২০১৬ থেকে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ প্যারিস চুক্তির ‘ইন্সট্রুমেন্ট অব র‌্যাটিফিকেশন’ জাতিসঙ্ঘের মহাসচিবের কাছে হস্তান্তর করেছে। বাংলাদেশ নিজ উদ্যোগে নিজস্ব আর্থিক সম্পদ দিয়ে ৪০০ মিলিয়ন ডলার তহবিলের ‘ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্ট ফান্ড’ গঠন করেছে।

গ্লোবাল ওয়ার্মিং হ্রাস নিয়ে অনেক দেশের নতুন করে চিন্তাভাবনার পেছনে অনুঘটক হিসেবে কাজ করছে ট্রাম্প প্রশাসনের পদক্ষেপ। ২০১৭ সালের মার্চের শেষ সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক নির্বাহী আদেশে সই করেন। এতে ‘কয়লার বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ ও ‘কর্মসংস্থান হত্যাকারী নিয়মগুলো’ ইতি টানার কথা জোরালোভাবে উল্লেখ করা হয়। এই এনার্জি ইনডিপেনডেন্স এক্সিকিউটিভ অর্ডারের মাধ্যমে পূর্বসূরিদের নেয়া আধা ডজনের বেশি পদক্ষেপ স্থগিত করা হলো। দুঃখজনক যে, ব্যবসায়িক গ্রুপগুলো যারা নির্বাচনের সময় ট্রাম্পকে সহযোগিতা করেছিল তারা ট্রাম্প প্রশাসনের পদক্ষেপের প্রশংসা করছে।

পরিবেশ নিয়ে পূর্বসূরি ওবামার চেয়ে একেবারে ভিন্ন পদ্ধতি গ্রহণ করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। ওবামা মনে করতেন, জলবায়ু ‘পরিবর্তন সত্যিই হচ্ছে এবং এটিকে উপেক্ষা করা যায় না’। এখন যেসব উদ্যোগ বাতিল করা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে ক্লিন পাওয়ার প্লান্ট। এটিতে রাজ্যগুলোকে কার্বন নিঃসরণ কমানোর কথা বলা হয়েছে প্যারিস চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পূরণের স্বার্থে। ট্রাম্পের সমর্থনকারীরা বলছেন, ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত তেল ও গ্যাস খাতে লাখো কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহারের নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্দেশ করেননি। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে চার বছর লাগতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের এ সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বড় ধরনের হতাশা সৃষ্টি করেছে। কানাডা, ফ্রান্স, জাপান, জার্মানি, চীন, ভারত এবং ইইউ প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নে নিজেদের পণ ও সর্বোচ্চ রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি বহাল রাখার কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জাতিসঙ্ঘের মুখপাত্র বলছেন, গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণ হ্রাস ও বৈশ্বিক নিরাপত্তা উন্নীত করার বৈশ্বিক প্রচেষ্টার জন্য এটি চরম হতাশার বিষয়।

গত ডিসেম্বরে পোল্যান্ডের কাতোভিচে হয়েছে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৪ হয়েছে। ১৯৬টি দেশের প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেন। বৈশ্বিক উষ্ণায়ন মোকাবেলায় ২০১৫ সালে প্যারিসে অনুষ্ঠিত কপ-২২-এর প্রতিশ্রুতি কতটা পূরণ করা যায় সেটাই ছিল কপ-২৪-এর উত্তেজনা আর দুশ্চিন্তার বিষয়। প্যারিস সম্মেলনে প্রায় ২০০টি দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি শিল্পযুগের আগের তুলনায় দুই ডিগ্রির মধ্যে এমনকি সম্ভব হলে দেড় ডিগ্রির মধ্যে রাখার বিষয়ে একমত হয়েছিলেন। কিন্তু সময় যত গড়াচ্ছে, প্যারিস জলবায়ু চুক্তি তত ঝুঁকির মুখে পড়ছে। জাতিসঙ্ঘ বলছে, এই লক্ষ্য অর্জন করতে ২০৩০ সাল নাগাদ বৈশ্বিক গ্রিন হাউজ গ্যাসের নিঃসরণ বর্তমানের তুলনায় ৫৫ শতাংশ কমিয়ে আনতে হবে। যে হারে কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ হচ্ছে তাতে চলতি শতকের শেষ নাগাদ বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা ৩.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পাবে।

পোল্যান্ডের সম্মেলনে জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পরিবেশ বিপর্যয়ের হুমকিতে থাকা দেশগুলোকে রক্ষার জন্য সবচেয়ে বেশি কার্বন নিঃসরণ করা এবং ধনী দেশগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় এ খাতের বৈশ্বিক কর্মসূচি পরিচালনায় বিশ্বব্যাংক ২০ হাজার কোটি ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এই অর্থ ২০২১-২৫ সালে ব্যয় করা হবে।

প্যারিস চুক্তিতে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ২ ডিগ্রি বা ১.৫ ডিগ্রির মধ্যে রাখা এবং জলবায়ু তহবিল গঠন ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের মধ্যে ছিল গাছ, মাটি ও সমুদ্র প্রাকৃতিকভাবে যতটা গ্রিন হাউজ গ্যাস শোষণ করতে পারে, ২১০০ থেকে ২০৫০ সালের মধ্যে কৃত্রিমভাবে এ গ্যাসের নিঃসরণ সেই পর্যায়ে নামিয়ে আনা, যা আগামী পৃথিবী ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য খুবই জরুরি।

কপ-২৪ সম্মেলন শুরু হওয়ার আগেই বিশেষজ্ঞরা স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা বিশ্বকে রক্ষার প্রস্তুতি নেয়ার সময় প্রায় শেষ হয়ে আসছে। প্যারিস চুক্তির লক্ষ্যগুলোর পুরোপুরি বাস্তবায়নের চেয়েও বেশি কিছু করা দরকার। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রত্যক্ষ হুমকিতে থাকা দেশ ও দ্বীপরাষ্ট্রগুলো তাই আন্তরিকভাবেই চেষ্টা করেছিল কপ-২৪-এ যেন প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এর আগে আর্জেন্টিনার বুয়েনেস আইরেসে ২০১৮ সালের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত জি-২০ সম্মেলনেও বিশ্বনেতারা ঘোষণা দিয়েছিলেন, ‘প্যারিস চুক্তি অমান্য করার কোনো সুযোগ নেই’। কিন্তু এতে বাদ সাধে যুক্তরাষ্ট্র।

ডোনাল্ড ট্রাম্প আগের বছরই প্যারিস চুক্তি থেকে সরে আসার ঘোষণা দিয়েছিলেন। কপ-২৪-এ যুক্তরাষ্ট্রের সাথে অন্য ক’টি তেল উৎপাদনকারী দেশ যোগ দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, কুয়েত ও রাশিয়া ইন্টার গভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জের (আইপিসিসি) প্রাপ্ত বৈজ্ঞানিক ডাটার দিকেই আঙুল তুলেছে। এর অন্তর্নিহিত অর্থ, যুক্তরাষ্ট্র ও তার সঙ্গী তিন দেশ জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমানোর বিপক্ষে যাচ্ছে, মানে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখার সর্বসম্মত চুক্তির বিরোধিতা করা। এটা স্পষ্ট হয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্র প্যারিস চুক্তিতে থাকছে না।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল এবারের সম্মেলনে দাবিও জানিয়েছিল যে, গ্রিন হাউজ নিঃসরণকারী দেশগুলোকে তাদের বর্তমান নিঃসরণের হারের ভিত্তিতে জলবায়ু পরিবর্তনে অর্থায়ন করতে হবে এবং এ ক্ষেত্রে অতীতের নিঃসরণের কোনো হিসাব-নিকাশ করা যাবে না। সম্মেলনের একেবারে শেষ দিকে কার্বন ক্রেডিট মনিটরিং নিয়ে ব্রাজিলের সাথে অন্যান্য দেশের মতের ভিন্নতা দেখা দেয়। এসব কারণে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বেশ কিছু বিষয়ে নির্ধারিত সময়ে ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়নি।

কপ-২৪ সমাপ্তি ঘটেছে প্যারিস চুক্তি ‘বাস্তবায়ন নির্দেশিকা’ গ্রহণের মধ্য দিয়ে। এখন সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব হলো, চুক্তি বাস্তবায়ন করা; যাতে আগামী দিনের মানুষসহ প্রাণীকুল একটি সুস্থ-সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন পৃথিবীতে স্বাচ্ছন্দ্যে নিঃশ্বাস নিতে পারে। এ ক্ষেত্রে কোনো পক্ষের উদাসীনতা বা নির্লিপ্ততা নয়, বরং সবাইকেই দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।
smmjoy@gmail.com


আরো সংবাদ



premium cement