২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

বই পড়ে আলো ছড়াও

বই পড়ে আলো ছড়াও - ছবি : সংগ্রহ

বাংলা একাডেমির অমর একুশের গ্রন্থমেলা ২০১৯ পয়লা ফেব্রুয়ারি উদ্বোধনের পর বেশ জমে উঠেছে। মেলার মাঠে দল বেঁধে পড়–য়াদের ঘুরতে দেখা যাচ্ছে। স্টলে স্টলে গিয়ে তারা বই দেখছেন, বই কিনছেন। এবারের মেলা অন্যবারের চেয়ে একটু আলাদা। ছিমছাম সুন্দর। আর দৃষ্টিনন্দন বিন্যাসের কারণে ভিড়েও মানুষের জটলা বোঝা যায় না। তেমনি স্টলগুলোকে ঘিঞ্জি মনে হচ্ছে না।

মেলায় ৪৯৯টি প্রতিষ্ঠানের ৭৭০টি ইউনিট এবং বাংলা একাডেমিসহ ২৪টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের ২৪টি প্যাভিলিয়ন রয়েছে। মেলার একাডেমি প্রাঙ্গণটির নামকরণ করা হয়েছে ভাষা শহীদ বরকতের নামে। মূল অংশ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রাঙ্গণকে চারটি ভাগ করে উৎসর্গ করা হয়েছে ভাষা শহীদ সালাম, রফিক, জব্বার ও শফিউরের নামে। উদ্যানের পূর্ব দিকে ‘লেখক বলছি’ নামে একটি মঞ্চও করা হয়েছে। নতুন পুরনো লেখকরা এখানে বই নিয়ে কথা বলেন। প্রতিদিন মেলায় গড়ে দেড়শ’ করে নতুন বই আসছে। সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, গুরুত্বপূর্ণ সব বইমেলার প্রথম সপ্তাহেই এসে যাবে। কবিতার বই বেশি, এর পরেই আছে উপন্যাস। প্রবন্ধের বইও বিক্রি হচ্ছে ভালো। তেমনি ছোটদের বইও।

একুশের মেলায় ঘুরতে গিয়ে দেশবরেণ্য কবি শামসুর রাহমানের কথা মনে পড়ছে। তিনি বলতেন, ‘বেশি বেশি বই পড়ো।’ ২০০৫ সালে তিনি আমার স্কুল পড়–য়া মেয়ে শামাকে ‘সেরা শামসুর রাহমান’ বইটি উপহার দিয়ে লিখে দেন- ‘জীবনে আলো ছড়াও’। তেমনি আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যারের উপদেশের কথা মনে পড়ছে। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের স্বপ্নদ্রষ্টা মানুষ সায়ীদ স্যার ‘আলোকিত মানুষ চাই’ স্লোগান নিয়ে ১৯৭৮ সালে শুরু করেন বই পড়ার আন্দোলন। সেই আন্দোলন এখন দেশের অন্যতম সফলতার কাহিনী। এ কর্মসূচিতে প্রতি বছর ২৫ লাখ পাঠক বই পড়ার সুযোগ পাচ্ছে।

বাংলা একাডেমির একুশে বইমেলা তো আমাদের প্রাণের মেলা। একে কেন্দ্র করে ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে নতুন বই বের হওয়ার পাশাপাশি লেখক, পাঠক ও প্রকাশকের যে সম্মিলন ঘটে তার তুলনা হয় না। বই দেখা, বই কেনা এবং বই পড়ার এক অপূর্ব সুযোগ এই মেলা।
কবি শামসুর রাহমানের আলো ছড়ানোর উপদেশ, সায়ীদ স্যারের আলোকিত মানুষ হওয়ার স্লোগান কিংবা একুশের এই বইমেলা; সার কথা হচ্ছে- বই। বই পড়লে যোগ্যতা অর্জন করা যায়, নিজেকে বিকশিত করা যায়, আলোকিত মানুষ হওয়া যায়। শ্রেষ্ঠ বইগুলো পড়তে পারলে চেতনা জগৎকে বড় করে তোলা যায়। এ জন্যেই বইয়ের কাছে যেতে হবে।

বই নিয়ে মনীষীদের বহু উক্তি আছে। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বইকে ‘অতীত ও ভবিষ্যতের মধ্যে সাঁকো’ বলে বর্ণনা করেছেন। তার উক্তিটি হচ্ছে- ‘মানুষ বই নিয়ে অতীত ও ভবিষ্যতের মধ্যে সাঁকো বেঁধে দিয়েছে।’ চার্লস ল্যাম্বের উক্তি হচ্ছে- ‘বই পড়তে যে ভালোবাসে, তার শত্রু কম।’ বইকে সুন্দরের প্রতীক রূপে উল্লেখ করে সিডনি স্মিথের উক্তি- ‘গৃহের কোনো আবসাবপত্রই বইয়ের মতো সুন্দর নয়।’ বই নিয়ে লিও টলস্টয়ের বিখ্যাত উক্তি- ‘জীবনে মাত্র তিনটি জিনিসের প্রয়োজন- বই, বই এবং বই।’ প্রমথ চৌধুরীর ‘বইপড়া’ প্রবন্ধটি একসময় পাঠ্যবইয়ে ছিল। সেখানে বই কেনার গুরুত্ব উল্লেখ করে লেখকের উক্তি- ‘বই কিনে কেউ কেনোদিন দেউলে হয় না’। অর্থাৎ যত পারো বই কেনো। বই তোমাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে না। ইবসেন যথার্থই বলেছেন- ‘যার বাড়িতে একটি লাইব্রেরি আছে, মানসিক ঐশ্বর্যের দিক দিয়ে সে অনেক বড়।’ আর লাইব্রেরি থাকার অর্থই হচ্ছে, বই থাকা।

বই পড়া যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ মনীষীরা সবই বলে দিয়েছেন। জীবনে আলো ছড়াতে হলে বই পড়তে হবে। আলোকিত মানুষ হতে হলে বইয়ের কাছে যেতে হবে। বড় মানুষ, সম্পন্ন মানুষেরাই শুধু পারে একটি বড় দেশ, বড় জাতি ও আলোকিত সমাজ গড়ে তুলতে। তাই বড় দেশ আর বড় জাতি গড়ার কথা ভাবলে আগে নিজের গুণগত সমৃদ্ধি প্রয়োজন। এজন্য বই পড়তে হবে।

প্রতি বছর একুশের বইমেলা এ ক্ষেত্রে আমাদের সবার জন্য একটা বড় সুযোগ। পছন্দের বইটি সেখান থেকে সহজেই আমরা সংগ্রহ করতে পারি। স্টল ঘুরে ঘুরে, দেখে দেখে, খুঁজে খুঁজে ভালো বই কেনার সুবর্ণ সুযোগ এটা।

ভাষা আন্দোলন তথা একুশের চেতনা ধারণ করেই বাংলা একাডেমিতে প্রতি বছর হচ্ছে অমর একুশে গ্রন্থমেলা। এ মেলা এখন বাংলা একাডেমির চত্বর পেরিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। এ মেলারও আছে মজার ইতিহাস। মরহুম কথাসাহিত্যিক সরদার জয়েনউদ্দীন ‘ওয়ানডারফুল ওয়ার্ল্ড অব বুকস’ নামে একটি বই পড়ে দু’টি শব্দ দেখে কৌতূহলী হন। শব্দ দু’টি হলো- 'ইড়ড়শ' এবং 'ঋধরৎ'।

কত কিছুর মেলা হয়! বইয়েরও যে মেলা হতে পারে এবং বইয়ের প্রসারে এই মেলার যে গুরুত্ব আছে তা তিনি উপলব্ধি করেছিলেন। জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক থাকাকালে তিনি ১৯৬৫ সালে বর্তমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরির সামনে একটি শিশু বইমেলার আয়োজন করেন। এতে পুরোপুরি তৃপ্ত হতে পারেননি। ১৯৭০ সালে তিনি নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সহযোগিতায় সেখানে বইমেলা করেন। প্রচুর বইও বিক্রি হয়। ১৯৭২ সালকে ইউনেস্কো ‘আন্তর্জাতিক গ্রন্থবর্ষ’ ঘোষণা করলে তিনি বাংলা একাডেমির সামনে ওই বছর ডিসেম্বরে একটি বইমেলার আয়োজন করেন।

ফেব্রুয়ারির বইমেলার আয়োজন শুরু হয় প্রকাশনা সংস্থা ‘মুক্তধারা’র প্রতিষ্ঠাতা চিত্তরঞ্জন সাহার উদ্যোগ, উৎসাহ ও তৎপরতার কারণে। তিনি বাংলা একাডেমির বর্ধমান হাউজের বটতলায় ১৯৭২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি এক টুকরো চট বিছিয়ে তার ওপর ৩২টি বই সাজিয়ে মেলার সূচনা করেন। ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত একাই বইমেলা করেন। এরপর অন্যান্য প্রকাশনা সংস্থাও যোগ দেয়। ১৯৭৮ সালে বাংলা একাডেমির তৎকালীন মহাপরিচালক ড. আশরাফ সিদ্দিকী বাংলা একাডেমিকে ওই মেলার সঙ্গে সম্পৃক্ত করেন। ১৯৭৯ সালে মেলায় যুক্ত হয় বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি। ১৯৮৩ সালে বাংলা একাডেমির তৎকালীন মহাপরিচালক মনজুরে মওলা একুশের চেতনার সাথে সম্পৃক্ত করে মেলার নাম দেন ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’।

১৯৮৪ সাল থেকে সাড়ম্বরে এ মেলা হতে থাকে। এখন এই মেলা এত বিশাল হয়েছে যে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পর্যন্ত বিস্তৃত। মেলাকে কেন্দ্র করে বিপুলসংখ্যক নতুন বই প্রকাশিত হয়। নানা শ্রেণীর পাঠকের সমাগম ঘটে মেলায়। বাবা-মা খুব উৎসাহে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে বইমেলায় যাচ্ছেন। এটা খুবই ভালো দিক। বাংলা একাডেমিকে অনুসরণ করে এখন বিভিন্ন জায়গায় বইমেলার আয়োজন হচ্ছে। এটা শুভ উদ্যোগ। পাঠকদের বই মেলায় যাওয়াটা আরো বাড়াতে হবে। যেসব বাবা-মা এখনো তাদের সন্তানদের নিয়ে বইমেলায় যাননি, তাদেরও যেতে হবে। বইয়ের সঙ্গে সন্তানদের নিবিড় সান্নিধ্য গড়ে তুলতে হবে। সন্তানরা একবার বই পড়ার মজা পেয়ে গেলে বই-ই হবে তাদের সঙ্গী। হেনরি ওয়ার্ড বিশার ঠিকই বলেছেন, ‘বইয়ের মতো ভালো সঙ্গী আর কিছু নেই। বইয়ের সঙ্গে কথা বলা যায়, বই উপদেশ দেয়, কিন্তু কিছু করতে বাধ্য করে না।’

পাঠ্যপুস্তক তথা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পড়া ডিগ্রিও জীবিকার জন্য প্রয়োজন। তবে পাঠ্যপুস্তক পড়ে প্রতিভা পুরোপুরি বিকশিত হয় না। নিজের বিকাশের জন্য, সৃজনশীলতা ও জ্ঞানের ভাণ্ডার আয়ত্ত করার জন্য নানা ধরনের ভালো বই পড়তে হবে। স্বাধীনভাবে বই পড়তে হবে। বই পড়াকে আনন্দে পরিণত করতে হবে।

উন্নত দেশ তথা পাশ্চাত্যের দেশের লোকেরা বেশি বেশি বই পড়ে। তাই দেখা যায় তাদের লেখকদের বই লাখ লাখ কপি বিক্রি হয়। ব্রিটিশ লেখিকা জে কে রাউলিংয়ের কথাই ধরা যাক। তার শিশুতোষ কাল্পনিক উপন্যাস ‘হ্যারি পটার’-এর সাতটি সিরিজের প্রথম ছয়টি বই ২০০৭ সাল পর্যন্ত ৩২৫ মিলিয়ন কপি বিক্রয় হয়েছে। বইয়ের টাকায় এই লেখিকা বিলিয়নিয়ার, ভাবা যায়!

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা প্রচুর বই পড়েন। ‘হ্যারি পটার’ সিরিজের সব বই তিনি পড়ে ফেলেছেন। তেমনি স্পাইডারম্যান, কোনান দ্য বারবারিয়ান ইত্যাদি কমিকসের বইগুলোর বিরাট কালেকশন রয়েছে তার। ওবামা বই লিখেনও। তার ‘অডাসিটি অব হোপ’ বইটি বেস্টসেলার হয়েছে। এ বইয়ের সম্মানী বাবদ তিনি ৮.৮ মিলিয়ন ডলার আয় করেছেন। প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালনের পর অবসরে ওবামা স্ত্রী মিশেলকে সাথে নিয়ে ‘স্মৃতিকথা’ লিখছেন। প্রকাশনা সংস্থা পেঙ্গুইন থেকে এ বইয়ের জন্য তাদের সাথে ৬০ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি হওয়ার ব্যাপারে কথাবার্তা চলছে। বিল ক্লিনটন এবং হিলারি ক্লিনটনও বই পড়েন এবং বই লেখেন। তাদের বইয়ের কাটতিও প্রচুর। চীনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের অন্যতম শখ বই পড়া। রাশিয়ার গল্পের বই থেকে চীনের কবিতার বই পর্যন্ত কোনো কিছুই তার পড়ার তালিকা থেকে বাদ যায় না। কানাডার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ছেলেবেলা থেকেই বই পড়েন। গল্পের বইয়ের তিনি একজন তুখোড় পাঠক।

বিশ্বের এক নম্বর ধনী ব্যক্তি বিল গেটস শুধু মাইক্রোসফট নিয়েই পড়ে থাকেন না বরং তাকে বলা যায় বইয়ের পোকা বা গ্রন্থকীট। বছরে তিনি ৫০টি বই পড়ে থাকেন। প্রতি বছরই তিনি তার দৃষ্টিতে ‘সেরা ১০টি বই’ পড়তে সবাইকে উৎসাহিত করেন। যুক্তরাষ্ট্রের বিজনেস ম্যাগনেট, আরেক সেরা ধনী ব্যক্তি ওয়ারেন বাফেট প্রতিদিন ৬০০ থেকে ১০০০ পৃষ্ঠা বই পড়েন। ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী ও সহপ্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ প্রতি দু’সপ্তাহে একটি বই পড়ে শেষ করেন। জাকারবার্গ বলেন, ‘আমি ক্লাসে যতটা শিখেছি, তার চেয়ে অনেক বেশি শিখেছি ক্লাসের বাইরে, বিশ্ববিদ্যালয় কোর্স বা অফিসিয়াল কাজের বাইরে।’ সাড়া জাগানো পপ তারকা মাইকেল জ্যাকসনও প্রচুর বই পড়তেন। প্রায় ১০ হাজার ভালো বইয়ের একটি লাইব্রেরিও ছিল তার।

আমাদের বই পড়ার অভ্যাস এমনিতেই কম। এখন আরো কমে গেছে। এ বিষয়টির প্রতি বাবা-মাদের বিশেষ নজর দিতে হবে। বাবা-মা আপনাদের বলছি। সন্তানদের বেশি বেশি বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। কাগজের বইয়ের পাশাপাশি এখন ই-বুক জনপ্রিয়। ই-বুক বা ডিজিটাল ভার্সনে বই পড়াও উৎসাহিত করুন। সৃজনশীল লেখকদের বই খুঁজে খুঁজে শিশুদের পড়তে উৎসাহ দিন। হুমায়ূন আহমেদ এত জনপ্রিয় লেখক এমনিতেই হননি। তিনিও অনেক বই পড়েছেন। তিনি ছেলেবেলায় কী কী বই পড়েছেন, তার ভালো ভালো বই কী আছে, কিনে দিন সন্তানদের। তেমনি রবীন্দ্রনাথ, নজরুলের বয়স উপযোগী বইগুলো কিনে দিন সন্তানদের। বইমেলায় বা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বড় বড় লেখক, জনপ্রিয় কবি সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবীরা এসে থাকেন। তাদের কাছ থেকে জেনে নিন পছন্দের বইয়ের নাম।

অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে বই পড়া কর্মসূচিতে কোন শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীর জন্য কোন কোন বই পড়া ভালো সেই তালিকা করে দিয়েছেন। এগুলো সংগ্রহ করে সন্তানদের দিন। ভালো ছড়ার বই, কবিতার বই, বিজ্ঞানের বই, ইতিহাস, জীবনীগ্রন্থ, গল্প উপন্যাস, ভ্রমণ কাহিনী, কমিকস, কার্টুন বেছে বেছে এখনই কিনে ফেলুন। বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত শামসুল হকের লেখা ‘বই পড়া ভারি মজা’ বইটি অবশ্যই কিনে দিন সন্তানকে। তেমনি শওকত ওসমানের ‘কথা রচনার কথা’ বইটি তাদের পড়াতে একেবারেই ভুলবেন না। সেদিন জনপ্রিয় এক ছড়াকারের একটি ছড়া পড়ছিলাম। সহজ ভাষায় ছোট্ট একটি ছড়ায় ভাষা আন্দোলনের পুরো ইতিহাসটাই উঠে এসেছে। আপনার সন্তান ছড়াটি পড়লে তার মনে গেঁথে যাবে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস। ছড়াটি পড়তে বিরক্তও হবে না। এভাবেই ভালো লেখকের ভালো বই আপনার সন্তানকে কিনে দিন, পড়তে দিন। ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, বই কল্পনাশক্তিকে উসকে দেয়। বই দিয়ে আপনার সন্তানের কল্পনা শক্তিকেও উসকে দিন না! বইমেলায় সন্তানকে নিয়ে যান। দেখুন কী অপূর্ব সুন্দর মলাটের বই, নতুন বইয়ের গন্ধে মোহিত হবেন আপনারা।

শিশু-কিশোরদের বলছি। পারলে বাবা-মাকে নিয়ে সপ্তাহে অন্তত একদিন বইয়ের দোকানে যাও; বই মেলা হলে সেখানে যাও। পছন্দ করে বই কেনো। বাড়িতে তোমরা একটা লাইব্রেরি করে ফেলো। আর এভাবেই বই কিনে, বই পড়ে আলো ছড়াও।

লেখক : ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, কিশোর মাসিক টুনটুনি ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক, জাতীয় প্রেস ক্লাব।


আরো সংবাদ



premium cement