২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

নির্বাচনে বৈষম্য থাকছেই!

-

বাংলাদেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক জীবনে নানাভাবে যে বঞ্চনা বৈষম্য বিরাজ করছে, তা মেনে নিয়েই আমরা চলছি। এর প্রতিবাদ প্রতিকারের প্রয়োজন বা আবশ্যকতা নিয়ে কেবল মৌখিকভাবে সুশীল সমাজের পক্ষ থেকে কদাচিৎ বক্তব্য উচ্চারিত হয়। কিন্তু বাস্তবে যাদের এসবের অবসানের জন্য কাজ করাটা দায়িত্ব, সেই রাজনৈতিক অঙ্গনের মানুষগুলোর কোনো দায়বোধ রয়েছে বলে মনে হয় না। এ কারণে দেশের বেশির ভাগ মানুষ সব ক্ষেত্রে বঞ্চনার শিকার নানাভাবে। অপর দিকে, ক্ষমতা ও প্রতিপত্তির আধিকারীরা সমাজের যা কিছু ভালো, তা নিজের করে নিচ্ছে।

এ দিকে, জাতীয় নির্বাচন নিয়ে দেশের গোটা পরিবেশ পাল্টে যাচ্ছে। শহর-বন্দর-গ্রামগঞ্জসহ ভোটের হাওয়ায় জেগে উঠছে সকল জনপদ। বাংলাদেশের মানুষ বরাবর নির্বাচনকে এক প্রকার উৎসব হিসেবে গ্রহণ করে থাকে। নির্বাচনী মিছিল ও সমাবেশে ব্যাপকভাবে জনসমাবেশ লক্ষ করা যায়। এ দিকে, দেশের বিপুলসংখ্যক মানুষ দরিদ্রতা নিয়ে বসবাস করে আসছে। যারা এসব নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত হয়, যে প্রার্থী অর্থকড়ি বেশি খরচ করে তাদের সমাবেশেই যোগ দেয় তারা। ফলে প্রার্থীতে প্রার্থীতে বৈষম্য সৃষ্টি হয়। দেশে দরিদ্রতা বিদ্যমান ও সচেতনতার অভাব থাকায় নির্বাচনে অর্থ বহু অনর্থই ঘটিয়ে থাকে। এর ফলে প্রার্থীর যোগ্যতা, ন্যায়নিষ্ঠ ও ত্যাগের মতো গুণাবলি ভোটে কোনো কাজ করে না। তাই নির্বাচনেও অর্থকড়ি বৈষম্য ঘটিয়ে থাকে। আর অর্থকড়ি ‘খরচ’ করে যারা বিজয়ী হয়, তারা ক্ষমতায় আসীন হয়ে সেই অর্থ ‘সুদে আসলে’ রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে অন্যায়ভাবে হলেও আদায় করে নেয়।

ফলে রাষ্ট্রীয় অর্থ জনকল্যাণে ব্যয় না হয়ে কিছু ব্যক্তিকে পরিপুষ্ট করে তোলে। এতে সমাজে বৈষম্য বেড়ে যায়। ধনী মানুষের সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পায়। এর বিপরীতে, দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী মানুষ উপরে উঠে আসতে পারে না। এ অবস্থায় সাধারণ মানুষের ভাগ্যের চাকা আর এগিয়ে যেতে পারে না। তদুপরি, নির্বাচনের সময় হতভাগ্য ওইসব মানুষের সাথে প্রতারণাও করা হয়। ভাগ্যবানদের দল থেকে নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করে হতদরিদ্র মানুষকে ভোলানোর জন্য নানা প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়ে থাকে। নির্বাচনের পর ক্ষমতায় গিয়ে এসব ইশতেহারের আলোকে উন্নয়ন পরিকল্পনা তৈরি না করে ধনীকে আরো পরিপুষ্ট করে তোলার কর্মসূচি নেয়া হয়। ক্ষমতাসীনেরা সবসময় স্বার্থান্বেষী মহলের স্বার্থের দিকে নজর রাখে বিধায় সমাজ ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতিতে ভরে উঠেছে। বাংলাদেশ তাই এখন আন্তর্জাতিক সমাজের কাছে একটি দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবেই বেশি পরিচিত।

ইদানীং, মানুষের ভোটাধিকার খর্ব হওয়ার একটি দেশ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে বাংলাদেশ। কারণ বিশেষত, দশ বছর ধরে মানুষ ভোটহারা হয়ে আছে। শুধু ২০১৪ সালে জাতীয় সংসদের নির্বাচনেই তারা ভোট দেয়া থেকে বঞ্চিত হয়নি। এ সময়ের মধ্যে বিভিন্ন স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের যতগুলো নির্বাচন হয়েছে, সেসব নির্বাচনেও বহু অনিয়ম ও কারচুপি ঘটায় জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে সক্ষম হয়নি। জাতীয় ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচনে এমন অন্যায় ঘটায় দেশের বহু নবীন ভোটার নির্বাচন প্রক্রিয়ায় আজো অংশ নিতে পারেনি। এতে তরুণ সমাজ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রতি ক্রমশ বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়ছে। অথচ এই তরুণ সমাজ যদি রাজনীতি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে দেশ পরিচালনায় পরিবর্তনের কাক্সিক্ষত সূচনা হবে না।

শুধু তাই নয়; নেতৃত্বে মারাত্মক সঙ্কট দেখা দেবে। হালের নেতারা সমাজ ও রাষ্ট্রকে যা দেয়ার দিয়েছেন। তাই এখন দেশের নতুন নেতৃত্বের জন্য তাদের অবশ্যই পথ করে দিতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। নির্বাচন এসেছে, বিরোধী দল সঙ্গতভাবেই তাদের প্রতি বৈষম্য দূর করে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রতিষ্ঠার দাবি জানাচ্ছে। ইতোমধ্যে সরকারি দল ও তাদের সহযোগীরা মিছিল মিটিং করে মাঠ ময়দান রাজপথ সরগরম করে তুলেছে। এতে বাহ্যত মনে হতে পারে, অন্যান্য দলের কোনো প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেই। এসব কিছু নির্বাচনী বিধির পরিপন্থী। নির্বাচন কমিশন এ ব্যাপারে ব্যবস্থা না নিয়ে তাদের পক্ষপাতহীনতা প্রমাণ, তথা দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হচ্ছে। নির্বাচনের সময় যদি বিরোধী দল এসব বৈষ্যমের শিকার হয় তাহলে পরিবেশের হেরফের কী হলো? এর আগেও তো তাদের রাজনৈতিক অধিকার দীর্ঘদিন ভোগ করতে দেয়া হয়নি। মাঠে ময়দানে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনায় নানা বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। আর বিরোধী দলের বহু নেতানেত্রীকে কয়েক হাজার মামলায় জড়িয়ে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। সম্প্রতি ক্ষমতাসীনদের ইশারায় পুলিশ প্রশাসন বিরোধী দলের, বিশেষ করে বিএনপি ও জামায়াতের হাজার হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ‘গায়েবি’ মামলা দায়ের করেছে। এ জন্য দল দুটি নির্বাচনী প্রচার চালাতে গিয়ে সঙ্কটে পড়েছে। অথচ বিরোধী দলকে এই বৈষম্য নিয়েই সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে হচ্ছে।

এ দিকে, বিরোধী দলের উপর্যুপরি দাবি সত্ত্বেও তাদের কোনো সময় না দিয়েই নির্বাচন কমিশন সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণাসহ নির্বাচনে যাওয়ার প্রস্তুতি শেষ করছে। এর আগে এমন নজির রয়েছে, নির্বাচনের দিন তারিখ নির্ধারণসহ খুঁটিনাটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলের সাথে আলোচনায় বসে তাদের মতামত গ্রহণ করা হয়েছে। ফলে অন্তত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে এখনকার মতো মতবিরোধ দেখা দেয়নি। নির্বাচনে আসতে বিরোধী দলকে যথেষ্ট সময় না দিতে নির্বাচন কমিশনের মতো সরকার নানা কৌশল করেছে। বিশেষ করে, সরকারের সাথে বিরোধী দল যে সংলাপের দাবি করেছিল, সে ক্ষেত্রে তাদের সময় দিতে ক্ষমতাসীনেরা কালক্ষেপণ করেছেন। নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার আগে নিরপেক্ষ বডি হিসেবে সংস্থা কমিশনের ভাবা উচিত ছিল যে, বিরোধী পক্ষ তথা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সরকারের সাথে যে সংলাপে বসেছে, তাতে তাদের কোনো দাবিই তারা মেনে নেননি। এসব দাবি ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনে কোনো অতিরিক্ত সুবিধা হাসিলের জন্য ছিল না। বরং এসব দাবির মূল লক্ষ্য হলো- এই নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ করা।

সরকার এসব দাবি বিবেচনার ক্ষেত্রে ন্যায্যতা ও যৌক্তিকতার মূল্য না দিয়ে নিজেদের নির্বাচনী স্বার্থকেই প্রাধান্য দিয়েছে। ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড সৃষ্টির দাবি করেছিল। নির্বাচন কমিশনের যে সাংবিধানিক দায়িত্ব, তার মূল লক্ষ্য হচ্ছে নির্বাচনে প্রার্থী নির্বিশেষে সবাই যাতে সমান অবস্থানে থেকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ পান। কমিশনের দায়িত্ব ও ঐক্যফ্রন্টের দাবি বলতে গেলে, এক মেরুতেই। তাই নির্বাচন কমিশন যদি ক্ষমতাসীনদের মতো ঐক্যফ্রন্টের দাবি অগ্রাহ্য না করতো, তবে সেটা নিরপেক্ষভাবে কাজ করার সাংবিধানিক দায়িত্বের সম্পূরক হতো। তাই এটা বলা যায় যে, নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বৈষম্য নিয়েই অংশ নিতে যাচ্ছে। আর নিরপেক্ষ বডি হিসেবে কমিশনের জন্য এটা কোনো স্বস্তির বিষয় হতে পারে না।

বাংলাদেশের নির্বাচন অবাধ নিরপেক্ষ, তথা সব প্রার্থীর জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি বহুবার উপেক্ষিত হতে দেখা গেছে। সরকারি দলের প্রার্থী তথা ক্ষমতাসীনদের পক্ষে নির্বাচন কেন্দ্রে ক্ষমতার প্রশ্রয়ে পেশিশক্তি যেভাবে দৌরাত্ম্য চালায়, তাতে অন্যান্য প্রার্থীর কর্মীদের ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করা সম্ভব হয় না মোটেও। কেন্দ্রগুলো শুধু নির্বাচনী কর্মীদের জন্যই অনিরাপদ হয়ে ওঠে না, ভোটারদের পক্ষেও ভোট দিতে কেন্দ্রের কাছে যাওয়াও সম্ভব হয় না। তখন ক্ষমতাশালীরা তাদের সমর্থকদের জালভোট দিয়ে ব্যালট বাক্স ভরে তোলেন। ভোট পরিচালনার সাথে সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তারা ‘ওপরের’ নির্দেশে এসব প্রার্থীকে এ ধরনের অনিয়মের কোনো বিহিত ব্যবস্থা করতে পারেন না। ভোটকেন্দ্রে নিরাপত্তা বিধান করা এবং ভোটারেরা যাতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট দিতে পারে তা নিশ্চিত করা কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব। কিন্তু ভোটের সময় এসব নিয়মশৃঙ্খলা বহাল রাখা হয় না। ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিযুক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা গুরুতর অনিয়ম দেখেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেন না। ফলে নির্বাচনে জনমতের প্রকৃত প্রতিফলন ঘটা সম্ভব হয় না।

এই বৈষম্য দূর করতে সবসময় দাবি উঠলেও নির্বাচন কমিশন কখনো তা আমলে নেয় না। এবারো নির্বাচনের সময় কেন্দ্রের নিরাপত্তা বিধানের জন্য যথাযথ ক্ষমতা দিয়ে সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি বারবার উঠলেও তা উপেক্ষিত হয়েছে। বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে সেনা মোতায়েনের যে আবেদন ঐক্যফ্রন্ট করেছিল, তা কমিশন গ্রহণ করেনি। এবার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যাতে প্রশ্নহীন হয় সে আবেদন সব মহল থেকেই করা হয়েছিল; কিন্তু তা পূরণ হলো না।

এবার একাদশ জাতীয় নির্বাচন নিয়ে দেশের বাইরেও ব্যাপক কৌতূহল রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ জাতিসঙ্ঘ বাংলাদেশের এই নির্বাচনের ব্যাপারে প্রথম থেকেই খোঁজখবর নিচ্ছে। আন্তর্জাতিক মহল এখানে অবাধ নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে আগ্রহের কথা প্রকাশ করেছে। এর আগে ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদের একতরফা নির্বাচনকে তারা ভালোভাবে গ্রহণ করেননি। এবারের ভোট এবং এর আয়োজন সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা নেয়ার জন্য যাতে বিদেশী পর্যবেক্ষকেরা দেশে আসতে পারেন, সে জন্য নির্বাচন কমিশন এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এখন থেকেই যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে হবে।

পাশাপাশি দেশীয় পর্যবেক্ষকেরাও যাতে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে কোনো বাধায় সম্মুখীন না হন, তা দেখা দরকার। বহু ক্ষেত্রে দেখা যায়, এসব পর্যবেক্ষক বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধাপ্রাপ্ত হন। এতে তাদের পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনায় বিঘœ ঘটে। অথচ তাদের পর্যবেক্ষণের মাধ্যমেই আন্তর্জাতিক সমাজ জানতে পারবে বাংলাদেশে গণতন্ত্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অনুশীলন হিসেবে ভোট কার্যক্রম কিভাবে সম্পন্ন হয়েছে। বাংলাদেশ এই অঞ্চলে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র। এর ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে এখানে গণতন্ত্র ও শক্তিশালী নেতৃত্বের প্রয়োজন অত্যধিক। সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমেই কেবল জনপ্রিয় ও শক্তিশালী নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। আর সে কারণে নির্বাচন নিয়ে এমন উদ্যোগ আয়োজন করতে হবে, যাতে কোথাও এর ত্রুটি না থাকে।

এবার নির্বাচন ঘিরে উত্তাপ উত্তেজনা অনেক বেশি। ক্ষমতাসীন দলের বক্তব্য ও কার্যক্রম লক্ষ্য করলে এটা উপলব্ধি করা যায় যে, তারা যে কোনোভাবে বিজয়ী হতে বদ্ধপরিকর। পক্ষান্তরে, বিরোধী পক্ষ দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার স্বার্থে এই নির্বাচনকে প্রশ্নমুক্ত করার ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে। ফলে স্বাভাবিকভাবে এটা অনুভব করা যায়, ভোট নিয়ে অতীতের যেকোনো সময় চেয়ে এবারের উত্তাপ ও আগ্রহ বেশি। এ ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক ও নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করা জরুরি। তাদের উচিত নির্বাচনের বিধিঅনুসারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হিসেবে নির্বাচন কমিশনের ‘মাইন্ড রিড’ করে চলতে। আগাম কিছু করে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ মাথায় নেয়া ঠিক হবে না। মনে রাখতে হবে, তারা বিশেষ দলের নয়, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। বিএনপি কার্যালয়ের সামনে যে অ্যাকশন তারা নিয়েছেন, তা বিধিবহির্ভূতভাবে করেছেন বলে নির্বাচন কমিশন মনে করে। এ বিষয়টি একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা হিসেবে গ্রহণ করা উচিত।

ক্ষমতাসীনেরা এবার নির্বাচন কার্যক্রমে অংশ নেয়া থেকে বিরত রাখার জন্য বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা করে তাদের কারারুদ্ধ করে রেখেছেন। এক মামলায় জামিন পেলে অন্য মামলা দিয়ে তাদের মুক্তির পথে বাধা সৃষ্টি করছেন। অসাধু পদক্ষেপ গ্রহণ করে ক্ষমতাসীনেরা নির্বাচনে বিরোধী দলের অংশ নেয়ার ক্ষেত্রে অসুবিধায় ফেলার এহেন অপচেষ্টা সংশ্লিষ্ট সবার উপলব্ধি করা উচিত। সেই সাথে, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যাতে একটা অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হয় সবার উচিত সে ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করা। বিশেষ করে কারারুদ্ধ নেতাদের জামিন নিয়ে সরকার যে কলকাঠি নাড়ছে, সেটা বন্ধ হওয়া উচিত। বিচার বিভাগের এই বিষয়গুলো বিবেচনায় নেয়া দরকার।


আরো সংবাদ



premium cement