২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

লক্ষ্য প্রকাশ্য, পথ গোপন

-

সঙ্কটহীন কাল বাংলাদেশের রাজনৈতিক, সামাজিক বা ধর্মীয় ইতিহাসে নেই। অবশ্য এ কথাও বলা যায়, বিশ্বের ইতিহাসে নেই। সাধারণ মানুষ এই সঙ্কটে সর্বদা থাকে বলে, তারা এ সঙ্কটকে একপর্যায়ে জীবনের এক অঙ্গ হিসেবে বিবেচনা করে। এখানেই সঙ্কট সৃষ্টিকারীদের কৃতিত্ব।

একজন অনুসন্ধানী লেখক প্রশ্ন করেছেন, যখন মত-পথ ছিল না, গোষ্ঠী ছিল না, তখন মানুষ কেমন ছিল। তিনি নিজেই তার একটা জবাব দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, তখন মানুষ সবচেয়ে আনন্দে ছিল। এ জবাবের সাথে সবাই একমত হবেন না অবশ্যই। অনেক কারণের মাঝে একটা কারণ হলো, মানুষ কখনোই একা থাকতে পছন্দ করে না। অবশ্য জীবকুলও করে না। তাই মত-পথের সৃষ্টি হলো। তাতেও সঙ্কটের আকৃতি ও প্রকৃতির নানা ডালপালা জুটল। ফলে নিরবচ্ছিন্ন শান্তি বলে কখনো কিছু ছিল না। বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব দেশের জন্য এ বক্তব্য প্রযোজ্য।

এই লেখক আরেকটি সত্য উচ্চারণ করেছেন। তা হলো- মানুষ ক্ষমতা পছন্দ করে। তাই ক্ষমতাবান হওয়ার পন্থাগুলো তার নিয়ন্ত্রণে আনতে চায়। এর ফলে সৃষ্টি হয় সঙ্ঘাত, সঙ্কট। এই অবস্থাকে ক্ষমতাবানেরা নিজের স্বার্থে ব্যবহার করে এবং জনগণকে তা সইতে হয়। এই ব্যবহারের বাহন হলো রাজনীতি। এ জন্যই রাজনীতি সবার কাছে এত পরিচিত এবং গ্রহণীয়ও।

এখন প্রশ্ন হলো, কেনো রাজনীতি? তবে এ প্রশ্নের জবাবের আগে বর্তমানের ও অতীতের এই রাজনীতির কথা ভাবা যায়। এক কথায় বলা যায় অতীতে এর নিয়ন্ত্রণের প্রধান বাহন ছিল শক্তির ব্যবহার আর এখন এই ব্যবহারটি হচ্ছে কৌশলে, নানা ছলে। বলা যায়, অপকৌশল।
আগেই বলা হয়েছে, এ দেশের জন্ম সঙ্ঘাত-সঙ্কটের মাঝ দিয়ে। তবে এ বক্তব্যটি অন্যভাবে দিলে মনে হবে যেন রাজনৈতিক বিষয়গুলো শুধু এই সঙ্কট-সঙ্ঘাতের মাঝ দিয়েই সামনে আসে। নতুবা সাধারণ জনগণ এ নিয়ে তেমন মাথা ঘামায় না। সে জন্যই তাদের মগজ ধোলাইকে ক্ষমতা দখল প্রত্যাশীরা প্রাধান্য দেয়। বিখ্যাত সমাজবিজ্ঞানী রবার্ট জে লিফটন তার ‘থট রিফর্ম’ গ্রন্থে এর বিশদ বর্ণনা দিয়েছেন। জনগণের মানসকে তৈরি করতে এবং নিজের স্বার্থে ব্যবহারের জন্য ছয়টি ব্যবস্থা নিতে তিনি পরামর্শ দিয়েছিলেন। আজকের বিশ্বের দিকে দৃকপাত করলে দেখা যাবে, এই প্রেসক্রিপশন ক্ষমতাপ্রত্যাশী এবং তার দখলদারেরা পুরোপুরি কাজে লাগিয়েছে।

এই ছয়টি পদ্ধতি হলো- ০১. দোষারোপ করা/অত্যচার করা, ০২. বড় বড় কথা বলা এবং কোনো বিষয়ে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে তোলা, ০৩. প্রতিপক্ষকে অপদেবতার স্থানে স্থাপন করা এবং সেই হিসাবে প্রতিভাত করা, ০৪. মেরুকরণ, ০৫. স্বর্গীয় অনুশাসন, ০৬. বিশাল প্রচারণা।
এই পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করলেই সহজেই জনগণকে তাদের অভীষ্ট পথে আনা যায় বলে লিফটন মন্তব্য করেছেন। একটু খতিয়ে দেখলেই কথাগুলোর সত্যতা অনুভব করা যায়। এ ব্যাপারে জার্মানির হিটলারের বক্তব্যগুলোও প্রণিধানযোগ্য। তার কয়েকটি এখানে উল্লেখ করা হলো। ০১. সত্য গুরুত্বপূর্ণ নয়, শুধু বিজয়, ০২. আমি বুঝি না কেন মানুষ প্রকৃতির মতো নিষ্ঠুর হবে না, ০৩. কোনো জাতিকে দখল করতে হলে, প্রথমে এর নাগরিকদের নিরস্ত্র ও কর্মহীন করতে হবে।

আসলে অতীতের রাষ্ট্রীয় নেতা ও চিন্তাবিদেরা জনগণকে শক্তি ছাড়া কেমনভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় তার পথ খুঁজেছেন। আবার জনগণকে উৎসাহও জুগিয়েছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিনের এমন উৎসাহের একটি মন্তব্য হলো- ‘স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ হলো সৃষ্টিকর্তার (গডের) বাধ্যানুগত হওয়া।’ আবার থমাস জেফারসন বলেছেন, ‘জনগণের সরকারি সাহায্যের প্রয়োজন ভুলের বিষয়ে, কারণ সত্য নিজ শক্তিতে দাঁড়াতে পারে।’ তাই শিরোনামটি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে- কী প্রকাশ্য এবং কী গোপন। জবাব মাত্র দু’টি শব্দ- গণতন্ত্র ও পন্থা। গণতন্ত্রের উদ্ভবের ইতিহাস সবার জানা। এটা এককেন্দ্রিক ক্ষমতার অপব্যবহার এবং অত্যাচারকে প্রতিরোধ করতে জনগণকে একত্র করার একটি পথ এবং এই বিষয়টির অগ্রগতির লক্ষ্যে সৃষ্টি করা হয়েছে পথ এবং পন্থা। কিন্তু যারা ক্ষমতালোভী তারা সর্বদা চেষ্টা করেছে এই পথ ও পন্থায় বিঘœ সৃষ্টি করতে। যার ফলে বিশ্বে এখনো গণতন্ত্র পুরোপুরি কায়েম হয়নি। তবে গণতন্ত্রের নামে নির্বাচন প্রথাটি চালু আছে। এখন এই নির্বাচনকে নিয়ন্ত্রণের কৌশল সবাই রপ্ত করতে ব্যস্ত।

এর ফলে উদ্ভব হয়েছে এমন এক সঙ্কর ব্যবস্থা যাকে সবাই ‘কর্তৃত্ববাদী গণতন্ত্র’ বলে অভিহিত করছেন। বিখ্যাত সমাজবিদ এন্ড্রিয়াস স্যাডলার তার এক মন্তব্যে বলেছেন, ‘এই ব্যবস্থায় যা চলে, তা হলো বহুদলীয় রাজনীতির খেলা’ এবং ‘নির্বাচন গণতন্ত্রের নয়, কর্তৃত্ববাদের হাতিয়ার হিসেবে পরিণত হয়েছে।

বাংলাদেশে এই ব্যবস্থা ২০১৪ সালের পরে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। সে বছর বিএনপি নানা অভিযোগে এবং নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না বলে বর্জন করেছিল। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজনৈতিক ধারার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যাবে না, বিএনপি সে নির্বাচনে যোগদান করলেও এই কর্তৃত্ববাদী ধারা আসত কি না। তবে এই ধারাটি প্রতিষ্ঠা হয়েছে সহজেই বিএনপির নির্বাচন বর্জনের মধ্য দিয়ে। স্যাডলার প্রমুখরা বলেছেন, ‘২০১৪ সালের নির্বাচনের পরই স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বিএনপিকে কোনো ক্রমেই রাজনীতিতে জায়গা দিতে আগ্রহী নয়।’ জাফর সোবহানও তার এক নিবন্ধে এই বক্তব্যই তুলে ধরেন। ‘কেবল একপক্ষই থাকতে পারবে’ শিরোনামের তার প্রবন্ধে সামগ্রিক অবস্থা বর্ণনা করে জাফর লিখেছিলেন, ‘ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের গেমপ্ল্যান খুব স্পষ্ট। চেপে ধরে বিএনপির প্রাণবায়ু বের করে ফেলা অব্যাহত রাখা (The game plan for the ruling Awami League is clear. The AL plan for the coming year is therefore straightforward : Continue to squeeze life out of the BNP), বর্তমান অবস্থার প্ররিপ্রেক্ষিতে জাফরের মন্তব্য যেন পরিস্থিতির প্রতিফলন।

কর্তৃত্ববাদী গণতন্ত্র যা এখন বাংলাদেশে কায়েম হয়েছে, তা নিয়ে অনেক গবেষণা এবং আলোচনা রয়েছে। বিজ্ঞজনেরা বলেছেন, আধুনিক ডিক্টেটররা এ ধরনের ব্যবস্থা পছন্দ করেন। কারণ এর সাথে গণতন্ত্রের গন্ধ আছে। গণতন্ত্র আছে যেখানে ডিক্টেটরই প্রধান। তাই এর এত আদর। বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্তত ৩৭টি দেশে এ ধরনের দো-আঁশলা গণতন্ত্র আছে বলে লন্ডনের বিখ্যাত ইকোনমিস্ট পত্রিকা মন্তব্য করেছে। তারা বলছে, সারা পৃথিবীতেই এখন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামে পিছু হটার পথ তৈরি হচ্ছে। উদাহরণ হিসেবে রাশিয়া, ভেনিজুয়েলা, ফিলিপাইন, তুরস্ক, কম্বোডিয়া, ইথিওপিয়াসহ দুই ডজন দেশের নাম তারা উল্লেখ করেছে। প্রথম দিকে বিশেষজ্ঞরা ভেবেছিলেন, এ অবস্থা সত্যিকারের গণতন্ত্রের উত্তরণের পথ হবে। পরে এ ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। এই দো-আঁশলা গণতন্ত্র প্রকাশ্যই কর্তৃত্ববাদে পরিণত হয়েছে।

দো-আঁশলা গণতন্ত্রের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো বর্ণনা করেছেন লেভিতস্কি, ওয়ে এবং একম্যান তাদের অসুসন্ধানে। তারা বলেছেন, এ ব্যবস্থায় নির্বাচন, নির্বাহী ও আইনসভা এবং বিচারব্যবস্থাকে নির্বাচনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণের আওতায় আনা হয়। বিশেষ করে বিচার বিভাগের কোনো স্বাধীনতা থাকে না।

ক্ষমতালোভীরা কেন নির্বাচনকে নিয়ন্ত্রণ করতে চায়? এর জবাবও সহজ। আজকের যুগে রাজতন্ত্র বা সেই ধারণার কোনো শাসন অচল। আন্তর্জাতিক পৃষ্ঠপোষকতা বা সমঝোতা ছাড়া ক্ষমতা দখল করে রাখা কঠিন। সে জন্যই নির্বাচন তাদের প্রয়োজন। আরো প্রয়োজন আরেকটি ধারণা সৃষ্টি করা। তা হলো তারা কোনো ক্রমেই নির্বাচনকে নিয়ন্ত্রণও করছেন না বা তার ফলাফল পাল্টাচ্ছেন না। একটু খেয়াল করলেই দেখা যাবে, এই কর্মকাণ্ডে নানা দেশ বিশাল কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। তারা বিশেষভাবে একটি প্রচারের দিকে লক্ষ রাখে- তা হলো, তাদের পরিচালিত ব্যবস্থায় যে নির্বাচন হচ্ছে, তা অবাধ এবং প্রভাবমুক্ত। এ কাজটি ক্ষমতাসীন দলগুলো খুব সহজেই করতে পারে। কারণ প্রচার এবং পরিচালনা পুরোপুরি তারাই নিয়ন্ত্রণ করে।

বাংলাদেশে গণতন্ত্র নিয়ে আন্দোলন, আলোচনা এবং নিয়ন্ত্রণের সব পন্থা গত কয়েক দশক ধরে চালু আছে। কিন্তু যে কাজটি গভীরতার সাথে করা প্রয়োজন সত্যিকারের গণতন্ত্রের জন্য, তা হচ্ছে না। এর কারণ অনেক। তার মধ্যে হলো, এ ব্যাপারে কোনো আলোচনা হোক, অথবা জনগণের মধ্যে তা বিস্তার ভালো করুক এমনটি হচ্ছে না। জনগণকে পুরোপুরি সম্পৃক্ত না করতে পারলে, অগণতান্ত্রিক শক্তি বিরাজ করতে থাকবে, অবশ্যই গণতন্ত্রের লেবাস পরে।

এটা সত্য, যারা ক্ষমতায় যেতে চায় তাদের কৌশলী হতে হবে। তার মধ্যে প্রধান হলো সত্য তথ্য যেন জনগণের কাছে পৌঁছে। সেটা যেমন করেই হোক না। এমনকি জসিমউদ্দীনের বর্ণিত পথে। পল্লী কবি জসিমউদ্দীনের কবিতার সেই বিখ্যাত মন্তব্য উল্লেখ করা যায়- ‘গুনগুনাগুন ছুটলো কথা, শুনশুনান তানে, গুনগুনাগুন সবাই শোনে, কিন্তু কানে কানে।’ এটা সত্য ক্ষমতাসীনেরা কখনই চাইবে না, জনগণ তাদের বক্তব্য ছাড়া অন্য বক্তব্য শুনুক। তবে এটাও সত্য আজকের টেকনোলজির যুগে এটা সম্ভব নয়। এমনকি অতীতেও ছিল না। কেবল কৌশল প্রয়োজন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে এই নজরদারি অত্যন্ত প্রযুক্তিনির্ভর। কথিত আছে সেখানে রাজনৈতিক পার্টির অনেক ছোট সংগঠন আছে যেখানে প্রযুক্তিবিদেরা প্রতিদিনের ঘটনাবলি বিশ্লেষণ করে সাম্ভাব্য প্রতিবিধান এবং বক্তব্য তৈরি করে পার্টির কাছে পাঠায়। পার্টির নেতারা তা বিবেচনা করে। তার প্রচার এবং কর্মকাণ্ডের আশ্রয় নেয়। এ দেশের রাজনৈতিক দলগুলো তেমন পরিশ্রম করে না। এর একটি কারণ হয়তোবা যে প্রযুক্তির বিকাশ এখানে তেমন নেই এবং জনগণ রাজনৈতিকভাবে সচেতন। এবং সে জন্যই এখানে গণতন্ত্র স্থাপনের প্রক্রিয়ায় নানা প্রতিবন্ধকতা দেখা গেছে বারবার। তবে সঠিক নেতৃত্ব এবং বক্তব্য জনগণের সামনে এলে তারা তার সমর্থন জানিয়েছে দ্রুত।

এ অবস্থার একটি বিপত্তি হলো ক্ষমতাবানেরা জনমত সৃষ্টি বা নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যবহার করে শক্তি। এটা কখনো ক্রুর, আবার খানিকটা কৌশলী। তবে এই কৌশলেও ক্ষমতার প্রয়োগ দেখা যায়। রাষ্ট্রসহ সবাই এর ব্যবহার করতে দেখা যায়। আরেকটি ভয়াবহ অবস্থা এখন প্রায় প্রতিদিনে স্বাভাবিক বিষয়, তা হলো খুন, জখম এবং আইন-শৃঙ্খলার নামে ধরপাড়ক।

এর ফলে সৃষ্টি হয়েছে সর্বস্তরের এক প্রকারের অসহিষ্ণুতা এবং সহিংসতা। গণতন্ত্র দুর্বল হওয়ার এই দুই প্রধান কারণের ব্যাপকতা বাংলাদেশে যেন ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলেছে। এর বিলুপ্তি বা কম হওয়ার প্রচেষ্টা কেউ নিচ্ছে না। বরং রাজনীতির অংশীদারেরা এর নানা ব্যবহারে লিপ্ত।

গণতন্ত্রের অন্যতম মূলভিত্তি হচ্ছে অংশগ্রহণমূলক রাজনীতি। কিন্তু বাংলাদেশে এর বিপরীতে নানা কৌশলী কর্মকাণ্ড চলছে। এটা ক্ষমতাসীনদের কর্মকাণ্ডেই কেবল সাহায্য করে থাকে। এতে গণতন্ত্র দুর্বল হয় এবং অগণতান্ত্রিক শক্তি শক্তিশালী হয়। আবার গণতান্ত্রিক পদ্ধতি যদি জনগণের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণের অংশ না হয়ে শুধু রাষ্ট্রপ্রতিষ্ঠানগুলোর হাতে ন্যস্ত থাকে, তখন জনগণের আগ্রহ কমে যায়।

গণতন্ত্র তখনই সুদৃঢ় হবে যখন জনগণ অনুভব করবে দেশের বা রাষ্ট্রের প্রচলিত শাসনব্যবস্থায় তাদের একটা বক্তব্য থাকবে বা স্থান থাকবে। কিন্তু ক্ষমতাসীনেরা সেটা চান না বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। বরং তাদের কর্মকাণ্ডে বিরাজমান দুর্নীতি আরো বিস্তার লাভ করছে। যার ফলে বিশ্বের মানচিত্র থেকে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকা থেকে বাংলাদেশ বাদ পড়ছে না। যেহেতু প্রচার এখন প্রায় একটি গোষ্ঠীর হাতে সীমাবদ্ধ, যারা ইসলাম এবং মুসলিম সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা পোষণ করে থাকে, তাই এই প্রচারের মূল বিষয় হয়ে থাকে ইসলাম- মুসলিম ভীতি। যেমন একটি মন্তব্য হলো- কয়েক দশকে সমাজজীবনে ইসলামের দৃশ্যমান উপস্থিতি বেড়েছে। অপূর্ব মন্তব্য।

যে দেশের শতকরা ৯২ ভাগ মুসলমান, তারা তাদের জীবনব্যবস্থা, পোশাক, আচরণ কি অন্যের নকল করবে? আমেরিকা-ইউরোপের লোকেরা কি মুসলিমদের মতো পাঁচবার নামাজ পড়ে? রাষ্ট্রধর্ম নিয়ে নানা কথা। যখন মার্কিন ডলার নিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য চলে, সেখানে কোনো কথা হয় না। অথচ ডলার নোটে লেখা আছে ‘ইনগড উই ট্রাস্ট’। সেটা কি সাম্প্রদায়িক বা ধার্মিক হলো না? বাংলাদেশের রাজনীতি আলোচনায় অবশ্যই ভারতের বিষয় আসবে। সম্প্রতি ‘বাংলাদেশ পলিটিকস অব রিভেঞ্জ অ্যান্ড ভেনজিয়ান্স’ নিবন্ধে বেনজামিন মেনডেস এর বিশদ বর্ণনা করেছেন। এশিয়ান ট্রিবিউনে প্রকাশিত এই নিবন্ধে যে চিত্র এসেছে, তা বিশাল চিন্তার খোরাক। তবে শেষ কথা হলো, জনগণকে এখনই সঙ্ঘবদ্ধ হতে হবে তাদের জীবনব্যবস্থা, বিশ্বাস এবং কর্মকাণ্ডকে নিজেদের মতো করে গড়ে তোলার জন্য। নতুবা ক্ষয়িষ্ণু নদীতীরের মতো জীবনটাই হারিয়ে যাবে এবং রাষ্ট্রও বিপদাপন্ন হবে। অতীতের ইতিহাস এর সাক্ষী। সেই বিখ্যাত উক্তিকে ভোলা উচিত নয়- ‘যে জাতি তার অতীতকে ভুলে যায়, সে অতীতে বারবার ফিরে আসে, তবে আরো ভয়ঙ্করভাবে।’


আরো সংবাদ



premium cement
রাজশাহীতে তেলের ডিপোতে আগুন বাংলাদেশে আবারো রোহিঙ্গা ঢলের শঙ্কা কতটা ‘প্রিয় মালতী' মুক্তির পর থেকেই প্রশংসায় ভাসছেন মেহজাবীন চৌধুরী রংপুরে তথ্যমেলায় শেখ হাসিনার বাণী সংবলিত লিফলেট প্রচার, তীব্র প্রতিবাদ বান্দরবানে বড়দিন উপলক্ষ্যে সেনাবাহিনীর নানা সহায়তা তুরস্কে হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত : পাইলটসহ নিহত ৪ দেশীয় ব্যাংকগুলোর সমন্বিত নিরীক্ষার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিশেষ বিধান জারি সব বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছে আসলে জবি রাজি, ব্যত্যয় হলে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা দক্ষিণ আফ্রিকায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে মিরসরাইয়ের আমজাদ নিহত কমিশনের সুপারিশ ঘিরে প্রশাসন ও অন্য ক্যাডারদের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাড়ছে বড়লেখায় বিএসএফের গুলিতে চাশ্রমিক নিহত, জিরো লাইন থেকে লাশ উদ্ধার

সকল