২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

গণতন্ত্রের সঙ্কট দূর করতে হবেই

গণতন্ত্রের সঙ্কট দূর করতে হবেই - ছবি : নয়া দিগন্ত

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের হাইকমান্ড থেকে সম্প্রতি বলা হয়েছে, তারা দেশে গণতন্ত্র সুসংহত এবং উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ত্বরান্বিত করতে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছেন। কিছুকাল আগে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে এই মন্তব্য প্রকাশিত হয়েছে। অবশ্য এই মন্তব্য বর্তমান প্রেক্ষাপটে আশাবাদ জাগাতে পারবে না। দেশে গণতন্ত্রের যে হাল তাতে এখন গণতন্ত্র শক্তিশালী করার আন্দোলনের চেয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কথা বলাই সঙ্গত। গণতন্ত্র বলতে যদি কেবল শুধু সাজানো ও যেনতেন ধরনের ভোটকে মনে করা হয়, তবে সেটা গণতন্ত্রের সঠিক স্বরূপ বলা কোনো ক্রমেই সঠিক হবে না। গণতন্ত্র বলতে একটা ব্যাপক ধারণাকে বোঝা এবং এটা একটা স্বতন্ত্র সাংস্কৃতিক আচার-আচরণে, কর্মে ও সামগ্রিক জীবনবোধের সাথে তার নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। প্রশ্নমুক্ত নির্বাচনও এর অংশ। গণতন্ত্রকে বিকশিত করার ক্ষেত্রে কতগুলো প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের সুষ্ঠু কার্যক্রম পরিচালনার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের সফলতা নির্ভর করে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আদর্শ মতপার্থক্য সত্ত্বেও স্বাভাবিক সৌজন্যমূলক সম্পর্ক ও সমঝোতা গণতন্ত্রকে অর্থপূর্ণ করে তোলে। তাই শুধু মুখের কথায় গণতন্ত্র আসে না।

বাংলাদেশে জন্ম গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আন্দোলন ও তারপর সশস্ত্র যুদ্ধ-বিগ্রহের মধ্য দিয়ে। স্বাধীনতার আগে আমরা গণতন্ত্রের চর্চা করতে পারিনি। তাই উত্তরাধিকার সূত্রে গণতন্ত্রকে আত্মস্থ করার সুযোগ বাংলাদেশের জনগণ পায়নি। আজো কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করে চলেছে। গণতন্ত্রের প্রধান অনুশীলনটি হয়ে থাকে নির্বাচনের মাধ্যমে। কিন্তু দুর্ভাগ্য হচ্ছে, এখানে নির্বাচন নিয়ে রয়েছে অনিয়ম কারচুপির হাজারও অভিযোগ। পেশিশক্তিই এখন নির্বাচনের জয় পরাজয় নির্ধারণ করে থাকে, জনগণের ইচ্ছার কোনো মূল্য নেই। নির্বাচন পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান, নির্বাচন কমিশন সবসময় ক্ষমতাসীনদের ক্রীড়নক হিসেবে কাজ করে আসছে। এ পর্যন্ত যত নির্বাচন হয়েছে তার বেশির ভাগই হয়েছে অনিয়মে ভরা। এসব অনিয়মের প্রতিবাদ করে গণতন্ত্রের প্রাণ নির্বাচনকে প্রশ্নমুক্ত করার জন্য আন্দোলন হয়নি তা নয়, কিন্তু এমন আন্দোলন হয়ে থাকে মওসুমি। বিরোধী দলে যখন যারাই থাকেন তারা গণতন্ত্র তথা সুষ্ঠু নির্বাচনে আন্দোলন করেন বটে। কিন্তু ক্ষমতায় যাওয়ার পর এর কোনো বিহিত ব্যবস্থা না করে বলেন, তাদের ক্ষমতাসীন হওয়ার পর এখন গণতন্ত্র শতভাগ কায়েম হয়েছে। আর যারা ক্ষমতা হারিয়ে বিরোধী শিবিরে স্থান নেন তারা তখন গণতন্ত্রের জন্য সোচ্চার হয়ে ওঠেন। এমন তামাশা চলছে বহু দিন থেকে। আর গণতন্ত্রের প্রতি সত্যিকার প্রতিশ্রুতি কারো না থাকার কারণে এর জন্য বিলাপই এখন সর্বস্ব।

দেশে নামে এখন সংসদীয় গণতন্ত্র কায়েম রয়েছে। তাত্ত্বিকভাবে যদিও সংদীয় গণতন্ত্র অনেক বেশি জনমতের প্রতিফলন ঘটিয়ে থাকে, কিন্তু কার্যত এখন দেশে অনেক বেশি সংসদীয় গণতন্ত্রের ব্যত্যয় ঘটছে। একটি অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে সংসদ গঠিত হওয়াই এই ব্যবস্থার মূল চেতনা। কিন্তু বর্তমান সংসদ সেভাবে গঠিত হয়নি। বলতে গেলে বর্তমান সংসদের বেশির ভাগ সদস্যই নির্বাচন ছাড়াই এমপি হয়েছেন। ২০১৪ সালে এই সংসদের যখন নির্বাচন হয়েছিল, তখন দেশের প্রায় সব দলই সে নির্বাচন বর্জন করে। কারণ ছিল নির্বাচনকালীন সরকার গঠন নিয়ে। বিরোধী দল থেকে দাবি ছিল ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন অতীতে সম্ভব হয়নি, ভবিষ্যতে হবে না তাই নির্বাচনের আগে সরকারকে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে হবে। একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে তারা নির্বাচন চেয়েছিল। তেমন সরকার গঠনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ অস্বীকৃতি জানালে সবাই নির্বাচন বর্জন করেছিল।

এবারো নির্বাচন আসন্ন। এখনো বিরোধী দলের পক্ষ থেকে পুনরায় বলা হচ্ছে নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার গঠন করে তার অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে জবাব এসেছে, সংসদ ভাঙা হবে না। আর নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা হবে সংসদে যেসব দল রয়েছে তাদের নিয়ে। এমন বক্তব্য সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে সংসদের বাইরের সব দল বা দেশের প্রায় বেশির ভাগ রাজনৈতিক শক্তি। সংসদে যেসব দল রয়েছে তাদের নিয়ে সরকার গঠন করা, আর ক্ষমতাসীন সরকারের মধ্যে তো কোনো পার্থক্য নেই। কারণ সংসদে এখন আওয়ামী লীগ ও তার মিত্ররাই রয়েছে। তারাই সরকারেও আছে। তাই আওয়ামী লীগের প্রস্তাবকে বিরোধী দলের পক্ষে সমর্থন দেয়ার কোনো কারণ নেই। নির্বাচন কোন ধরনের সরকারের অধীনে তার যে জটিলতা, তা কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। দেশের ভেতর এবং বাইরে সবার কথা হচ্ছে আগামী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হতে হবে। সব দলের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়েই আগামী নির্বাচন হতে হলে এখন নির্বাচনকালীন সরকারের যে দাবি সব মহল থেকে এসেছে, তার সুরাহা হওয়া জরুরি।

নির্বাচনের সময় সরকারের ধরন নিয়ে যে গভীর মতপার্থক্য সৃষ্টি হয়ে আছে, তার সুরাহা হতে পারে একটি জাতীয় সংলাপের মাধ্যমে। এ ছাড়া আর কোনো ভিন্ন পথ নেই। কিন্তু এটা সবার জানা আছে, দেশের রাজনৈতিক দলের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক এতটা নাজুক যে, তাদের কারো পক্ষে এক টেবিলে বসে এই জটিল প্রশ্নে সমাধান করা কঠিন। কিছুকাল আগে একটা সংলাপ অনুষ্ঠানের জন্য একটি সম্ভাবনা রাজনৈতিক অঙ্গনে সৃষ্টি হয়েছিল।

আওয়ামী লীগ এখন কোনো সংলাপে অংশ না নেয়ার ব্যাপারে এতটা অনড় যে, সে সম্ভাবনা আর টেকেনি। রাজনৈতিক দল কোনো যৌক্তিক প্রশ্ন নিয়েও আলোচনায় যোগ দেয়ার ক্ষেত্রে নেতিবাচক অবস্থানে রয়েছে। আমাদের গণতান্ত্রিক চেতনার এটা একটা বড় দুর্বলতা। নীতি ও আদর্শের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য থাকাটা স্বাভাবিক। আর এই মতপার্থক্য গণতন্ত্র অনুশীলনের মধ্যে পরে। বহু মত ও বহু পথ নিয়ে পাশাপাশি সহাবস্থান করা গণতন্ত্রের শিক্ষা। আমাদের রাজনৈতিক অঙ্গনে সে শিক্ষার চর্চা নেই। রাজনীতিতে শিষ্টাচার বলে একটা কথা রয়েছে, সবার এটা অনুসরণ করে চলা উচিত। শালীনতা পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ সৌজন্যতা সহাবস্থানের নীতি অনুসরণ করা, যা আমাদের এখানে অনুপস্থিত। আমাদের রাজনৈতিক অঙ্গনে এই উল্লেখিত বিষয়গুলো না থাকার কারণে ন্যূনতম ইস্যুতে জাতীয় ঐক্যের সঙ্কট বিরাজ করছে। আগে উল্লেখ করা হয়েছে রাজনৈতিক দলের মধ্যে সংলাপের কথা। কতগুলো বিষয়ে এখন দলগুলোর মধ্যে আলোচনা ও ঐকমত্যে পৌঁছা জরুরি। বিএনপির পক্ষ থেকে এমন আলোচনা প্রস্তাব দেয়া হলেও ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে এমন আলোচনার প্রয়োজন বোধ করা হচ্ছে না। অথচ এ বিষয়গুলোকে এড়িয়ে গেলে আগামী নির্বাচনে এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া হবে। কিন্তু এখন বড় বেশি প্রয়োজন একটি প্রশ্নমুক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠান। প্রশ্নমুক্ত নির্বাচন হওয়াটা সম্ভব হলেই দেশে অন্যান্য সঙ্কট যা রয়েছে, সেগুলো দূর করা সম্ভব হবে।

আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড থেকে সম্প্রতি বলা হয়েছে, জনগণের সমর্থন পেলেই তারা ক্ষমতায় আসবেন, না হলে নয়। দেশে অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে জনগণের প্রকৃত রায়টা পাওয়া যাবে। আর তেমন নির্বাচন করার ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীনদের ভূমিকা অনেকখানি। যেমন অতীতের উদাহরণ টেনে বিরোধী দলের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ক্ষমতাসীনদের অধীনে অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন নয়। তাই তারা নির্বাচনের আগে সরকারের পদত্যাগ এবং নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি করছে। এখন তাই প্রশ্নমুক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠানের স্বার্থে তাদের পদত্যাগ করা সমীচীন হবে। নির্বাচন সবাই চাইছে তাই তাকে প্রশ্নমুক্ত করার ক্ষেত্রে কারো দ্বিমত করার কোনো অবকাশ নেই। গণতন্ত্রের যে সঙ্কটগুলোর কথা উল্লেখ করা হলো তাই শেষ নয়, আরো বহু সমস্যা দেশে বিরাজ করছে। এখন এখানে রাজনীতি আজকে অনেকটা পেশা হিসেবে পরিণত হয়েছে, অথচ এটা ঠিক নয়। রাজনীতিতে যারা আসবেন তাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত সর্বজনীন সুনীতি ও আদর্শ অনুসারে জনআকাক্সক্ষা পূরণ করা এবং একটি কল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠনে ব্রতী হওয়া।

আগেও দেশের রাজনীতিতে যারা প্রবেশ করতেন, তারা নিবেদিতপ্রাণ রাজনৈতিক কর্মী ছিলেন। কিন্তু আজ এই নিবেদিতপ্রাণ কর্মীর সংখ্যা কমে গেছে। রাজনীতিতে প্রবেশ করছেন ব্যবসায়ীরা, তারা রাজনীতিতে আসছেন সম্পদের পর এখন ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য। তাদের কাছে জনগণ কোনো বিষয় নয়। তারা অর্থকড়ি ব্যয় করে পেশিশক্তির সহায়তায় ক্ষমতার জগতে এসেছেন। সম্পদ ও ক্ষমতার সমন্বয়ে তারা নিজেদের জগতকে আরো বেশি সমৃদ্ধ করাই তাদের আদর্শ। দারিদ্র্য ও শিক্ষার অভাবও আমাদের গণতন্ত্রের জন্য সমস্যা হয়ে আছে। জনগণের দারিদ্র্য ও শিক্ষার অভাবের সুযোগ নিয়ে ভোট কিনে ফেলা হয়। তাই এখন আদর্শবান ও নিবেদিত রাজনৈতিক কর্মীরা পেরে উঠছেন না। এসব সমস্যার কারণে রাজনীতিতে জনকল্যাণের কথা বলা এখন নিরর্থক। রাজনীতিতে আগে ছিল আদর্শের ফেরি করা আর এখন চলছে অর্থকড়ির হিসাব। হালে ব্যক্তিস্বার্থ উদ্ধারের নিমিত্তই হয়েছে উঠেছে রাজনীতির লক্ষ্য। এই পরিস্থিতিতে দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণ কতটুকু হবে সেটা ভেবে দেখার বিষয়।

গণতন্ত্র চর্চার ক্ষেত্রে বিরোধী দলের শক্তিশালী অবস্থান জরুরি। এক হাতে যেমন তালি বাজেনা। তেমনি কেবল সরকার দিয়ে গণতন্ত্র সফল হয় না। সরকারের স্বার্থেই দরকার বিরোধী দলের। সরকার কেমনভাবে দেশ চালাচ্ছে, কোথায় তাদের ত্রুটিবিচ্যুতি এটা দেখার জন্য বিরোধী দলের ভূমিকা আর্শির মতো। বহু মত ও দলের অস্তিত্বই গণতন্ত্রের সার্থকতা। এখন দল আছে কিন্তু মত প্রকাশের এবং কার্যক্রম পরিচালনার অধিকার নেই। এ অবস্থা দূর না হলে গণতন্ত্রের জন্য বিরাজমান যে হুমকি, তা অপসারিত হবে না। মত প্রকাশের একটি জায়গা হচ্ছে সংসদ। কিন্তু সেখানে সবাই এখন একমতের, কোনো ভিন্ন মত নেই। সবাই একত্র হয়ে ক্ষমতাসীনদের পক্ষে কোরাস গাইছেন। দেশে মত প্রকাশের ক্ষেত্রে যে প্রতিবন্ধকতা রয়েছে তা নিয়ে এখন দেশে বিদেশে সবাই সঙ্কিত। সম্প্রতি জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে নিশ্চিত করতে হবে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার বলেছেন, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন করার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে জনগণের মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষার্থী ও সংবাদকর্মীরা সাম্প্রতিক মাসগুলোতে হামলা মামলা আটক ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যে নানামুখী তৎপরতা চালাচ্ছে তাতে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। অথচ বাংলাদেশের সংবিধানে গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারের ব্যাপারে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। আর যারা সরকারের দায়িত্বে আসেন, তার দায়িত্ব নেয়ার আগে সংবিধানের মর্যাদা রক্ষা এবং তা সংরক্ষণের শপথ নিয়ে থাকেন। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় এ ব্যাপারে তাদের তেমন কোনো দায়বোধ লক্ষ করা যায় না। সংবিধানের বিধিবিধান দেশের সর্বোচ্চ আইন। সেই আইনের প্রতি অবজ্ঞা করা হলে সেটা গুরুতর অপরাধ বলে গণ্য। কিন্তু আজকে দেশের যে পরিস্থিতি তাতে এসব ব্যত্যয় নিয়ে কথা বলা কারো পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না।

দেশের উন্নয়ন নিয়ে কোনো বিতর্ক থাকার কথা নয়। ব্যক্তি গোষ্ঠী সমাজ সবাই উন্নয়ন চায়। কিন্তু উন্নয়ন একা একা চলতে পারে না। উন্নয়নের পাশাপাশি তাই গণতন্ত্রের উপস্থিতি। উন্নয়নের সাথে অর্থকড়ির সম্পর্ক পরস্পর যুক্ত। আমাদের দেশের যে আর্থসামাজিক অবস্থা সেখানে অনিয়ম দুর্নীতি নতুন কোনো বিষয় নয়। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে যেসব দেশ সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত হিসাবে পরিচিত, বাংলাদেশ তার অন্যতম। তাই একটি জবাবদিহিমূলক ব্যবস্থা দেশে বিরাজ না করলে দুর্নীতির রাশ টানা যাবে না। আর গণতন্ত্রই দেশে একটি জবাবদিহিমূলক প্রশাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে পারে। কিন্তু এখন সেই ব্যবস্থা বর্তমান নেই। জাতীয় সংসদই দেশে জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা করবে, এটাই তাদের দায়িত্ব। কিন্তু এখন সংসদ তা করছে না। এই ত্রুটি দূর করা না হলে দেশ দুর্নীতিমুক্ত করা যাবে না। সরকারকে এই বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে। দেশের উন্নয়ন করতে হলে গণতন্ত্রের প্রতি নজর দেয়া উচিত হবে।
ndigantababor@gmail.com


আরো সংবাদ



premium cement