০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৩ মাঘ ১৪২৩১, ৬ শাবান ১৪৪৬
`

ট্রাম্পনীতির প্রভাব বিশ্ব অর্থনীতিতে

-

‘আমেরিকা সবার আগে’ এই স্লোগান নিয়েই ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসীন। বাণিজ্যিক সুরক্ষা, কর কর্তন ও মার্কিন শিল্পখাত উৎসাহিত করার স্লোগান নিয়ে প্রথম মেয়াদ শেষ করেছে ট্রাম্প। আর একই নীতি আরো শক্তভাবে বাস্তবায়নের আভাস দিয়ে দ্বিতীয় মেয়াদ শুরু করেছেন। এই মেয়াদেও তার এই নীতি ব্যাপক প্রভাব বিশ্ববাণিজ্য ও অর্থনীতিতে আরো শক্তিশালীভাবে পড়ার আলামত ইতোমধ্যে দেখা যাচ্ছে।

শুল্ক আরোপ দেশে দেশে

শুরুতেই ট্রাম্পের প্রশাসন সব ধরনের ফেডারেল অনুদান ও ঋণ স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছে। ফলে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা, আবাসন সহায়তা, দুর্যোগ ও ত্রাণ এবং অন্যান্য অনেক প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, ফেডারেল সরকার ২০২৪ অর্থবছরে প্রায় ১০ ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে। যার মধ্যে তিন ট্রিলিয়নের বেশি অনুদান ও ঋণ গেছে আর্থিক সহায়তা হিসেবে। ট্রাম্পের স্থগিতাদেশে কেবল দেশী নয়; বরং বিদেশী সহায়তা ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর (এনজিও) জন্য বরাদ্দও অন্তর্ভুক্ত। তবে সামাজিক নিরাপত্তা বা চিকিৎসাসেবার অর্থ, খাদ্যসহায়তা ও প্রতিবন্ধী ভাতার মতো ব্যক্তিগত সহায়তা এই নির্দেশের বাইরে থাকবে।
ট্রাম্প ইতোমধ্যে কানাডা, মেক্সিকো ও চীন থেকে আসা পণ্যের ওপর নতুন শুল্ক আরোপের নির্বাহী আদেশ দিয়েছেন। শুল্কের পাশাপাশি অবৈধ অভিবাসন ও মাদক চোরাচালান রোধ করতে কানাডা ও মেক্সিকো থেকে আসা সব পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ এবং চীনের পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন। যদিও মাদক পাচারকারী গোষ্ঠীগুলোর সাথে মেক্সিকো ও চীনের সম্পর্কের অভিযোগ উভয় সরকার প্রত্যাখ্যান করেছে।

ট্রাম্প জানিয়েছেন, প্রয়োজনে চীনের পণ্যে আরোপিত শুল্কের হার ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। এ ছাড়াও ট্রাম্প ইতোমধ্যেই ৬০ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং কিছু গাড়ির আমদানির ওপর ২০০ শতাংশ কর আরোপের পরিকল্পনাও করেছেন।
ট্রাম্প কেবল শুল্ক আরোপ করেই ক্ষান্ত হননি; বরং শুল্ক আরোপের ফলে যদি কোনো দেশ প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে, তা হলে যুক্তরাষ্ট্র আরো কঠোর শুল্ক আরোপের মাধ্যমে পাল্টা ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দেয়। জাস্টিন ট্রুডোর মতে, এই শুল্ক আরোপ যুক্তরাষ্ট্রের চাকরির বাজারে প্রভাব ফেলবে এবং সম্ভবত মার্কিন গাড়ি সংযোজন কারখানা ও অন্যান্য উৎপাদন কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাবে। এটি খাদ্যপণ্য ও জ্বালানির দাম বাড়িয়ে দেবে। তাই ট্রাম্পের ভীতিকে তোয়াক্কা না করে ইতোমধ্যে জাস্টিন ট্রুডো ১৫৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করার কথা বলেন। এর মধ্যে এখনই ৩০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন পণ্যের ওপর এই শুল্ক কার্যকর হবে। আর বাকি ১২৫ বিলিয়ন ডলারের মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক কার্যকর হবে ২১ দিনের মধ্যে। মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট পাল্টা শুল্ক আরোপের পাশাপাশি অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘শুল্ক আরোপের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হয় না, বরং আলোচনা ও সংলাপের মাধ্যমে হয়।’

চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও মার্কিন পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা ও বিরোধিতা করে জানিয়েছে, নিজেদের অধিকার রক্ষায় প্রয়োজনীয় পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে চীন আমেরিকার পণ্যের উপরেও ১০ থেকে ১৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করার কথা ভাবছে। চীন আমেরিকা থেকে আসা কয়লা ও প্রাকৃতিক গ্যাসের ওপর ১৫ শতাংশ এবং অপরিশোধিত তেল, কৃষি সরঞ্জাম ও বড় গাড়ির ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে। পাশাপাশি গুগলের বিরুদ্ধে বিশ্বাস ভঙ্গের অভিযোগ এনে এর প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করার কথা বলে।

ট্রাম্পের শুল্কের প্রভাব যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য দেশে

শুল্ক আরোপকে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান রক্ষা এবং রাজস্ব বাড়ানোর উপায় হিসেবে দেখেন। এই শুল্ক আমেরিকার জন্য কোনো খরচ হবে না; বরং এটি অন্য শুল্ক আরোপকারী দেশের জন্য খরচ হয়ে দাঁড়াবে বলে উল্লেখ করেন। যদিও ট্রাম্পের শুল্কের ওপর এই ব্যাখ্যাকে সব অর্থনীতিবিদ বিভ্রান্তিকর আখ্যায়িত করেছেন। তারা বলেন, শুল্ক হলো একটি অভ্যন্তরীণ কর, যা আমদানি করা পণ্যের ওপর আরোপ করা হয়। এই শুল্ক মূলত দেশে পণ্য আমদানি করা কোম্পানি পরিশোধ করে। পণ্য রফতানি করা বিদেশী কোম্পানিকে এই শুল্ক দিতে হয় না। অতএব, এটি এমন একটি কর যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ প্রতিষ্ঠানগুলো পরিশোধ করে।
অনেক অর্থনীতিবিদ ইতোমধ্যেই বলেছেন, ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের এ পদক্ষেপ মুদ্রাস্ফীতি বাড়াবে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমিয়ে দেবে। এমনকি তা মার্কিন কর্মী-শ্রমিকদের ক্ষতি করবে। ট্রাম্পের শুল্কের জন্য খোদ মার্কিন ভোক্তাদেরই মাশুল গুনতে হবে।

অর্থনীতির অধ্যাপক জোসেফ স্টিগলিৎজ বলেন, শুল্কের প্রভাব আমেরিকা তো বটেই, বিশ্বের জন্যও খুব খারাপ হবে। অর্থনীতিবিদরা কানাডা, মেক্সিকো ও চীনের ওপর ট্রাম্পের শুল্ক আরোপে বিশ্বজুড়ে মন্দার আশঙ্কা করছেন। অনেক অর্থনীতিবিদ ইতোমধ্যে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, ট্রাম্পের শুল্ক অনেক মার্কিন উৎপাদনকারী, কৃষক ও কর্মী-শ্রমিকদের ক্ষতি করবে।

অনেক গবেষণা প্রতিষ্ঠান অনুমান করেছে, ট্রাম্পের নতুন প্রস্তাবিত শুল্ক মার্কিন নাগরিকদের আয় কমিয়ে দেবে, যেখানে সবচেয়ে গরিব ২০ শতাংশ জনগণের আয় প্রায় ৪ শতাংশ কমবে এবং সবচেয়ে ধনী ২০ শতাংশ জনগণের আয় ২ শতাংশ কমবে। প্রতিষ্ঠানটির অনুমান অনুযায়ী, মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর বছরে প্রায় এক হাজার ৭০০ ডলার ক্ষতি হতে পারে। সেন্টার ফর আমেরিকান প্রগ্রেসের হিসাব অনুযায়ী, একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের দুই হাজার ৫০০ থেকে তিন হাজার ৯০০ ডলার ক্ষতি হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের পূর্ব অভিজ্ঞতা বলে, যুক্তরাষ্ট্র ২০২৩ সালের মধ্যে প্রায় ৩.১ ট্রিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য আমদানি করেছে, যা মার্কিন মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রায় ১১ শতাংশের সমান। অন্য দিকে শুল্কের মাধ্যমে ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র ৮০ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে, যা মোট কর রাজস্বের প্রায় ২ শতাংশ। ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ২০১৭ থেকে ২০২০ পর্যন্ত শুল্কের প্রভাব নিয়ে একাধিক অর্থনৈতিক গবেষণা থেকে জানা যায়, অধিকাংশ অর্থনৈতিক বোঝা আসলে মার্কিন ভোক্তাদের ওপর পড়েছে। সে সময় শুল্কের প্রভাব নিয়ে গবেষণায় দেখা গেছে, এসব শুল্কে যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদন খাতে চাকরি তৈরি হয়নি। অর্থনীতিবিদদের মতে, এর একটি কারণ হলো ট্রাম্পের শুল্কের কারণে মার্কিন ডলারের আন্তর্জাতিক মূল্য বেড়ে যাওয়ায় বিদেশী মুদ্রার চাহিদা কমিয়ে দেয় এবং এর ফলে মার্কিন রফতানি পণ্য বৈশ্বিকভাবে কম প্রতিযোগিতামূলক হয়ে পড়ে।

ট্রাম্পের ঘোষণায় শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রভাব তৈরির আশঙ্কা রয়েছে। গোল্ডম্যান স্যাকসের পূর্বাভাস অনুসারে, কানাডা ও মেক্সিকোর ওপর এ শুল্কের ফলে যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি দশমিক ৭ শতাংশ বাড়বে এবং জিডিপি দশমিক ৮ শতাংশ কমবে। সিটেরা ফাইন্যান্সিয়াল গ্রুপের প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা জিন গোল্ডম্যান বলেছেন, ‘উচ্চ মূল্যায়ন, শুল্কের প্রভাব ও ফেডের নীতির কারণে শেয়ারবাজারে পতন দেখা যেতে পারে।’ এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক সর্বোচ্চ স্তরের কাছাকাছি রয়েছে এবং বিশ্লেষকরা অনুমান করছেন, বাজার ৩-৫ শতাংশ পর্যন্ত ওঠানামা করতে পারে।

তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্পের অর্থনৈতিক কৌশলের মূলে রয়েছে রাজনীতি। প্রথম মেয়াদেও তিনি চীন, মেক্সিকো, কানাডা ও ইউরোপের দেশগুলোর বিরুদ্ধে আগ্রাসী বাণিজ্য কৌশল অবলম্বন করেছিলেন। চীনও তখন মার্কিন পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করে। এতে মার্কিন খামারিরা বড় আকারে ক্ষতির মুখে পড়েন। এবার দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসেও একইভাবে শুল্কযুদ্ধ শুরু করেছেন ট্রাম্প। আর এর মধ্য দিয়ে তিনি অপর পক্ষকে আলোচনায় টেনে আনতে চাইছেন। ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠরা দাবি করছেন, দরকষাকষির টেবিলে শুল্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ। এর যথোপযুক্ত ব্যবহারে বাণিজ্য অংশীদারদের কাছ থেকে বাড়তি সুবিধা আদায় করতে পারবে ওয়াশিংটন। পাশাপাশি বিদেশী পণ্যের দাম বেড়ে গেলে মার্কিন উৎপাদনমুখী প্রতিষ্ঠানগুলোও উপকৃত হবে।

মার্কিন সহায়তা বন্ধে বাংলাদেশে প্রভাব

বিদেশে মার্কিন সহায়তা স্থগিত করতে ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের প্রভাবে ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে বাংলাদেশের চলমান প্রকল্পের কাজ বন্ধ বা স্থগিতের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ২০১৮ সাল থেকে বাংলাদেশকে প্রতি বছর ৫০০ মিলিয়ন বা ৫০ কোটি ডলারের কাছাকাছি সহায়তা দেয়। ২০২৪ সালে এই দেয় প্রায় ৪৯০ মিলিয়ন ডলার।

ইউএসএইডের মাধ্যমে বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রকল্পের মাধ্যমে পুষ্টিকর খাদ্যপ্রাপ্তির সুযোগ মেলে প্রকল্পের আওতাধীন প্রান্তিক মানুষের। এ ছাড়া জলবায়ু সহনশীল কৃষি প্রযুক্তি উন্নয়নেও সহায়তা করে তারা। দক্ষিণাঞ্চলে ২৩টি জেলায় এমন প্রকল্প পরিচালিত হচ্ছে। বাংলাদেশে সুশাসন ও জবাবদিহি, নাগরিকদের আস্থা বাড়ানো এবং মানবাধিকার রক্ষায় ইউএসএইডের বিভিন্ন প্রকল্প চলমান রয়েছে। সংস্থাটি সরকারের প্রতি পরিবেশ ও জ্বালানি প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ এবং জ্বালানি নিরাপত্তা উন্নয়নে কাজ করে, যা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় সহায়ক। মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিশ্চিত করতে এবং সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার মান উন্নয়ন, শিক্ষার্থীদের উন্নত শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি এবং শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ প্রদানের কাজ করে ইউএসএইড।

অন্যান্য বরাদ্দ বন্ধ হয়ে গেলেও রোহিঙ্গাদের খাদ্য ও পুষ্টি কার্যক্রমের অর্থায়ন বজায় থাকবে। যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণার পর বিশ্বের বৃহত্তম বেসরকারি ও অলাভজনক উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক বাংলাদেশসহ মোট চারটি দেশে ৯টি কর্মসূচি স্থগিত করেছে। মার্কিন অর্থায়নের ছয়টি প্রকল্প স্থগিত হয়েছে বাংলাদেশে। এ ছাড়া ইন্দোনেশিয়া, আফগানিস্তান ও লাইবেরিয়াতে ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের চলমান তিনটি প্রজেক্টও আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। ডিরেক্ট ফান্ডের প্রজেক্টগুলো আপাতত স্থগিত রাখায় এসব প্রকল্পের অন্তত ৩৫ লাখ মানুষ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন।

ট্রাম্প দায়িত্ব নেয়ার পর ইউএসএআইডির অফিসিয়াল ওয়েবসাইট হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেছে। এমনকি সংস্থার এক্স (টুইটার) অ্যাকাউন্টও আর পাওয়া যাচ্ছে না। ধারণা করা হচ্ছে, ট্রাম্প প্রশাসন ইউএসএআইডির স্বাধীনতা কেড়ে নিয়ে সংস্থাটিকে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের অধীনে আনার পরিকল্পনা করছে। এর ফলে বিশ্বজুড়ে ৪২ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার মূল্যের মানবিক সহায়তা আপাতত স্থগিত থাকবে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি মূলত সংস্থাটিকে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির হাতিয়ার বানানোর ইঙ্গিত।

ইউএসএআইডি বন্ধের ঘোষণা বাংলাদেশসহ গোটা ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের উন্নয়ন সহযোগিতা পরিকল্পনাকে বড় অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দিয়েছে। এশীয় উন্নয়ন কর্মকর্তারা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে মিলে চীনা সহায়তার বিকল্প তৈরির যে পরিকল্পনা নেয়া হয়েছিল, তা এখন হুমকির মুখে পড়েছে। এটি এতটা আকস্মিক হয়েছে যে, অনেকেই হতবাক। এর ফলে ২০২৩ সালের ক্যাম্প ডেভিড শীর্ষ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে উন্নয়ন সহযোগিতা জোরদার এবং সমৃদ্ধি বৃদ্ধির যে প্রতিশ্রুতি দেয় তাও অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রের এ সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগের। এ বিষয়ে এখন থেকেই নিতে হবে কূটনৈতিক উদ্যোগ। যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে। তাদের বোঝাতে হবে, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক সহযোগী দেশ।

আশার কথা, শেষ মুহূর্তে জানা গেছে, কানাডা ও মেক্সিকোর পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ হারে শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্ত আপাতত ৩০ দিনের জন্য স্থগিত রাখছে আমেরিকা। ইতোমধ্যে ধারণা করা হচ্ছে কানাডা ও মেক্সিকোর আবহেই জিনপিংয়ের সাথে বৈঠক অর্থবহ হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্পের এই অর্থনৈতিক কৌশলের মূলে রয়েছে রাজনীতি। এটি তার বাণিজ্য কৌশল যার মাধ্যমে দরকষাকষি করবেন তিনি। সুতরাং রাজনীতি করে হলেও যদি তিনি তার এই বাণিজ্যযুদ্ধ থেকে ফিরে আসেন তাহলে বিশ্ব তথা বাংলাদেশ হয়তো সম্ভাব্য অর্থনৈতিক বিপর্যায় থেকে বেঁচে যাবে।

লেখক : অর্থনীতিবিদ, গবেষক ও কলামিস্ট
ইমেইল : [email protected]


আরো সংবাদ



premium cement
প্রশাসনে অতি উৎসাহীদের বিদায় করা হবে : সিনিয়র সচিব ‘দেশের ক্রান্তিলগ্নে অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকায় কাজ করেছে ছাত্রশিবির’ রিপোর্টে নারী ফুটবলারদের শৃঙ্খলা ভঙ্গই উঠে এসেছে কৃষকের ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করবে বিএনপি : শহিদুল ইসলাম বাবুল আইসিটি (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫ উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিককে পঙ্গু করে রেখেছিল : ড. মাসুদ সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্রের বাড়িতে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ৩ পল্লী উন্নয়ন অ্যাকাডেমি থেকে বাদ গেল শেখ পরিবারের নাম বইমেলায় ৮ ও ১৫ ফেব্রুয়ারি সময় পরিবর্তন হচ্ছে, থাকছে না শিশুপ্রহর রাখাইন স্টেট : ঘুমধুমে স্থলবন্দর করার চিন্তা করছে সরকার ফ্যাসিবাদ উৎখাত করেছে ছাত্ররা আর তাদের সাহস জুগিয়েছেন শিক্ষকরা

সকল