১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ২৯ পৌষ ১৪৩১, ১২ রজব ১৪৪৬
`

প্রশাসনে দায়িত্বশীলতার সংস্কার

- ছবি : নয়া দিগন্ত

জনপ্রশাসনকে এখন আর শুধু প্রশাসনিক কাজে নিবেদিত নিষ্ঠাবান প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখার সুযোগ নেই। কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র মূলত প্রশাসন ও অর্থব্যবস্থাপনার মিশেল, পারস্পরিক ও মিথস্ক্রিয়ার ব্যাপারটি তার বিভিন্ন ডিসকোর্সে ফুটে ওঠে। সম্রাট অশোক বলি আর মুহম্মদ বিন তুঘলক, শেরশাহ কিংবা মোগল সম্রাট মহামতি আকবরের নবরত্ন সভার সদস্য বিদ্যা বাচস্পতি আবুল ফজল, রাজস্ব সংস্কারক টোডরমলের মতে অর্থ ও প্রশাসনের সম্পর্ক অঙ্গাঙ্গি জড়িত ছিল বলে তাদের সময়কার প্রশাসনিক সাফল্যের চাইতে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বিষয় আশয় প্রাধান্য পেয়েছে ইতিহাসের পাতায়। ১৭ জন অশ্বারোহীর আচমকা উপস্থিতিতে লক্ষণ সেন পালাতে বাধ্য হয়েছিলেন তার প্রাসাদ প্রশাসনের অভ্যন্তরে প্রচণ্ড দুর্নীতি ও দুর্বলতার কারণে। তুঘলকের যেসব কর্মকাণ্ড তার এবং তার প্রশাসনের ভরাডুবি ঘটিয়েছিল তা তো তার অতি উৎসাহী পাগলামির উন্নয়ন ও রাজধানী দিল্লি থেকে দক্ষিণ-পশ্চিম ভারতের দূরপ্রান্তে স্থানান্তরের উচ্চাভিলাষী বিকেন্দ্রীকরণ ভূমিকার কারণে।

ভারতে ব্রিটিশ প্রশাসন রাজস্ব আয় এবং সম্পদ লুণ্ঠনের অর্থনৈতিক স্বার্থ উদ্ধারে ব্যতিব্যস্ত থাকলেও তারা আইনশৃঙ্খলা, বিচারব্যবস্থা ও জনকল্যাণ বা নাগরিক কল্যাণ কর্মকাণ্ডকে যতদূর সম্ভব পৃথকভাবে পরিপুষ্ট করতে পেরেছিল বলেই তারা ১৯০ বছর এ দেশে একটানা শাসন ও শোষণ চালাতে পেরেছিল। তারা আর যাই করুক একদলীয় শাসন, একদেশদর্শী প্রশাসনব্যবস্থা গড়ে উঠতে দেয়নি। জালিয়ানওয়ালা-বাগে জেনারেল ডায়ার নির্বিচারে গুলি চালিয়েছিল কিন্তু তাকেও কমিশন বসিয়ে গণহত্যার বিচারের সম্মুখীন করতে কসুর করেনি তদানীন্তন সরকার। পাকিস্তানের সংসার থেকে বেরিয়ে আসতে বাংলাদেশকে অনেক রক্ত দিতে হয়েছিল- সে তো পশ্চিম পাকিস্তানিদের অর্থনৈতিক ভেদবুদ্ধি সঞ্চারিত বণ্টন বৈষম্য সৃষ্টির কাফফারা। অর্থাৎ যখন অর্থনীতি ও প্রশাসন বড্ড কাছাকাছি চলে এসেছে ভেদবুদ্ধির কারণে দুর্নীতি যখন দুঃশাসনের প্রতিভূ হয়েছে তখন। মালয়েশিয়ার সংসার থেকে সিঙ্গাপুরকে তিন তালাক দিয়ে বের হওয়া সম্ভব হয়েছিল টেংকু আবদুর রহমান এবং লি কুয়াং এর দূরদর্শী দৃষ্টিভঙ্গির কারণে এক ফোঁটা রক্ত না ঝরিয়েই। কারণ তারা অর্থনীতিকে প্রাধান্য দিলেও গণবিরোধী বাহিনী প্রশাসনকে নাক গলাতে বা গলাগলি করতে দেয়নি।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশে ঔপনিবেশিক আমলের ‘ডেপুটি কমিশনার’ কিংবা ‘ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট বা কালেক্টর’কে বাংলায় জেলা প্রশাসক বলা সাব্যস্ত হওয়ায় বোঝা যায় জেলা প্রশাসকের ক্ষমতা তথা প্রশাসনিক গাম্ভীর্য বৃদ্ধির প্রয়াস বা অন্যান্য সব দফতরের ওপর প্রাধান্য প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হওয়ায় প্রশাসনে একটি একদেশদর্শী উন্নয়নে নেতৃত্ব দানকারী হিসেবে ক্ষমতার উচ্চ পর্যায়ের কর্তাব্যক্তিদের সরাসরি দৃষ্টিতে আসার এবং পরস্পর স্বার্থ ভাগাভাগিতে কিংবা গদিনশিন রাখতে সাহায্য সহযোগিতায় আসার পরিবেশ সৃষ্টি হয়।

১৯৯৬ সালে জনতার মঞ্চ গঠন, যেখানে ঊর্ধ্বতন সিভিল সার্ভেন্টদের সশরীরে ও ভাবগতভাবে উপস্থিতির মাধ্যমে সিভিল সার্ভিসের সংঘবদ্ধ শক্তিধারী কুলবধূর (স্পিরিট ডি কোর) ‘ঘরের বাহির’ হওয়ার সংস্কৃতির উদ্ভব ঘটে। এখান থেকে প্রশাসন দলীয়করণের খপ্পরে পড়া শুরু হয়। এখান থেকেই শুরু হয় একেক সরকারের আমলে হিরো ও জিরোকরণ প্রক্রিয়া। ১৯৯৬-২০০৬ সাল পর্যন্ত সময়ে ক্ষমতাসীন সরকারপন্থী হওয়ার প্রতিযোগিতা ও পরস্পরের অপসারণের প্রক্রিয়া শুরু হয়। ২০০১-২০০৬ সালে বিরোধীপক্ষের কর্মকর্তাদের ওএসডি ও বাধ্যতামূলক অপসারণ অবসর দেয়ার পরিমাণ আকার ও ব্যাপ্তিতে বেড়ে যায়। ২০০৯-২০২৪ সালে একটানা ১৫ বছর এক সরকার ক্ষমতায় থাকায় এ সময় প্রায় ১৪০০ উচ্চ মধ্য পর্যায়ের কর্মকর্তাকে বিপক্ষীয় ট্যাগ লাগিয়ে ওএসডি/অবসর প্রদান করা হয়। বিরোধীপক্ষীয় ট্যাগ লাগিয়ে ওএসডি করে অফিসারদের বসিয়ে বসিয়ে বেতন দেয়া হয় এবং ১০-১১ বছর চাকরিকাল শেষ করে তারা অবসরে যান। এ সময়ে প্রায় ২৫% কর্মকর্তাকে পদোন্নতিবঞ্চিত রাখা হয়। জনপ্রশাসনে মেধাশূন্য করার ক্ষেত্রে সুকৌশলে প্রণীত এই প্রথা সম্ভবত ইতিহাসে বিরল। ওএসডি, বাধ্যতামূলক অবসর ও পদোন্নতিবঞ্চিত করে দলীয় আনুগত্যের ভিত্তিতে অফিসারদের মুহুর্মুহু পদোন্নতি পুনর্বাসিত করার রাজনৈতিক উৎকোচ প্রথা চালু হয়। স্থলাভিষিক্তকরণসহ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে সব ঊর্ধ্বতন পদসমূহের স্ট্রেংথ ৪/৫ গুণ বাড়িয়ে পদোন্নতির পথ সুগম করা হয়। কিন্তু কাজের পরিধি একই থাকায় অধিকাংশ অফিসারকে ইনসিটো করা হয়। উপসচিবের ডেক্সে যুগ্মসচিব এমনকি অতিরিক্ত সচিবকে বসে কাজ করতে হয়। কাজের মান না বাড়লেও দুর্নীতি দুঃশাসনে সেরা ব্যক্তিদের শুদ্ধাচার ও সুশাসন পদক দিয়ে হালাল করা হয়। মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর কাজ ও দায়িত্ব রুলস অব বিজনেসে লেখা থাকলেও প্রতি বছর সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের সাথে মন্ত্রণালয়/বিভাগগুলোর মধ্যে ঘটা করে নতুন কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়। মন্ত্রণালয়ের সচিব বিভাগীয় কমিশনারদের সেরা কর্মসম্পাদনকারী হিসেবে পদক ও সনদ প্রদান করা হয়। অনুগত ও বশংবদ বাহিনীর কর্মকর্তাদের পদক বিতরণের হিড়িক পড়ে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে দায়মুক্তি দিয়ে অস্বচ্ছ ও জবাবদিহিবিহীন দুর্নীতি সহায়তাকারী মন্ত্রণালয় প্রধানদের ২০১২ সালের পর প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব, বিদেশী ভালো/লোভনীয় পদে এমনকি তাদের সংসদে ঠাঁই দিয়ে মন্ত্রীর মর্যাদায় আনার লোভ দেখানো হয়। একদিকে ট্যাগ লাগিয়ে অফিসারদের ওএসডি করে কর্মরতদের সামনে অযৌক্তিকভাবে হলেও সরকারের আনুগত্য প্রকাশে বাধ্য হওয়ার পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়। জনপ্রশাসনের মধ্যে আনুগত্য প্রদর্শন, অন্ধ অনুসরণ ও সাইকোফ্যান্সির এক অদ্ভুত অভিনব এবং অদম্য সংস্কৃতি শুরু বা চালু হয়। যা জনপ্রশাসনের ভাবগাম্ভীর্য, নিরপেক্ষতা ও নিষ্ঠাকে প্রশ্নের সম্মুখীন করে। খোদ জনপ্রশাসনে বিভেদ, বৈষম্য প্রকট আকার ধারণ করে।

মেধাবী কর্মকর্তাদের বিদেশে মিশনে যথাযথ মর্যাদা ও রাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্বকরণে যোগ্যতা ও দক্ষতা বিচার বিশ্লেষণের ও সমীক্ষার সুযোগ থাকা উচিত। দেশের ক্ষমতাসীন সরকারপ্রধানের জন্য সনদ বা ডিগ্রি অর্জনে, চেয়ার ও আবক্ষ প্রতিমূর্তি স্থাপনে তাদের মূল্যবান সময় ব্যয়িত হওয়া উচিত হয়নি। কর্মকর্তাগণ তাদের ওপর ব্যক্তিগত প্রভাব অনুগতকরণের মনস্তাত্তি¡ক অবস্থা সৃষ্টি- যাতে না হয় সেদিকে বা তার পর্যবেক্ষণ পর্যালোচনা ব্যবস্থা থাকা উচিত। দূতাবাসে লেবার, কমার্শিয়াল ও ইকোনমিক উইংয়ের কর্মকর্তারা স্ব স্ব মন্ত্রণালয়ের কাছে দায়বদ্ধ হলেও তাদের পুরো নিয়ন্ত্রক ক্যাপ্টেন হিসেবে সঙ্গত কারণে দূতাবাসপ্রধান। ফলে সেখানেও প্রায়ই আন্তঃদ্ব›দ্ব ও প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে অস্বস্তিকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এতে কূটনৈতিক দায়িত্ব পালনে সমস্যার সৃষ্টি হয়। বিশ্বায়নের এই যুগে অর্থনৈতিক কূটনীতিতেই ব্যবসা-বাণিজ্য বিনিয়োগ তথা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে উত্তরণে জোর তাগিদ থাকা উচিত। নিরীক্ষা ও হিসাব বিভাগকে ব্যয় নিয়ন্ত্রণ ও স্বচ্ছতা জবাবদিহির পরিবেশ দেখভালের সাংবিধানিক দায়িত্বসচেতন হওয়ার অবকাশ থাকলেও সাংবিধানিক দায়িত্ব ও ক্ষমতাধারী অডিটর জেনারেলের অনুমোদন ছাড়া নতুন নতুন ব্যয়ের খাত খোলা, এক খাতের টাকা অন্য খাতের হস্তান্তরের সুযোগ সৃষ্টি, ব্যাংকের কিংবা মেগা প্রকল্পের টাকা বেহাত হওয়া নিরীক্ষায় ধরা না পড়াটা দুঃখজনক দায়িত্বহীনতা। প্রজাতন্ত্রের যেকোনো খাত ক্ষেত্র বা বিষয়ে নিরীক্ষার দায়িত্ব সাংবিধানিক পদাধিকারী সিঅ্যান্ডএজির। তাই যদি হবে তাহলে বিগত ১৫ বছরে সংঘটিত সম্পাদিত ভূরি ভূরি আর্থিক অনিয়মের ওপর অডিট বিভাগের পর্যবেক্ষণ দেশবাসী জানতে পারেনি কেন? সংসদের পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটিতে অডিট আপত্তি উপস্থাপনের সুদীর্ঘ সময় নেয়া এবং বিরোধী দলশূন্য সংসদের কাছে জবাবদিহির ব্যবস্থা উপস্থাপনের এই দারুণ দুর্বলতা ও দীর্ঘসূত্রতা পাবলিক মানি যথেচ্ছাচার ও স্বেচ্ছাচারী ব্যবহারের পথ সুগম করেছে। আদর্শিক ও তাত্তি¡কভাবে অডিট বিভাগকে অবশ্যই সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হতে হলে অডিট দফতর সরকারের রাজনৈতিক পাবলিসিটি অফিসে পরিণত হতে পারে না। সাংবিধানিক পদে আসীন হওয়ার ঝুলানো মুলা ধরতে গিয়ে নিরীক্ষা ও হিসাব বিভাগ রাজনৈতিক উৎকোচ প্রত্যাশী হলে সেটি হবে সংবিধান, শপথ নিয়ে দেশ ও জাতির কাছে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতির বরখেলাপ।

রাষ্ট্রীয় তথা বিভিন্ন সংবিধিবদ্ধ সংস্থায় সুরম্য ভবন এবং লোকবলের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে বটে- কিন্তু পাবলিক মানি আয় ব্যয়ে স্বচ্ছতা, কৃচ্ছ্রতা ও ন্যায়নীতি নির্ভরতার পরিবেশ হয়েছে বিপন্ন। আর্থ-প্রশাসনিক সংস্কারে অডিট বিভাগ, সেক্টর করপোরেশন এবং আর্থিক ব্যবস্থাপনা বিভাগ বা রেগুলেটরকে (বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ বিভাগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, ইআরডি, প্ল্যানিং কমিশন) ঢেলে সাজানো তথা সেসবকে কর্ম ও দায়িত্বনিষ্ঠ করার বিকল্প নেই। রেগুলেটরি বডি যেমন সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশন, বেজা, বেপজা বাইডাকে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগে পোষক প্রতিষ্ঠান হতে আরো মজবুত ও সংস্কার করার আবশ্যকতা রয়েছে। সরাসরি সরকারপ্রধানের অফিসের নিয়ন্ত্রণ থাকলেও এই অফিসসমূহের মধ্যে সমন্বয়হীনতা পীড়াদায়ক। বেসরকারি বিনিয়োগ দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেরাই সরকারের বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান গড়ে বেসরকারি খাতের জন্য প্রতিযোগিতাপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করা সমীচীন হয় না।

প্রশাসনে মেধাবী কর্মকর্তাদের প্রবেশ এবং তাদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য এমন একটা ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে যেটা জাপানে প্রযোজ্য আছে। সেটা হলো বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে যারা শীর্ষস্থানীয় বা ভালো রেজাল্ট করেছে তাদের আগে থেকেই এই কনসার্ন মিনিস্ট্রি বা ডিপার্টমেন্ট, প্রাইভেট সেক্টর যারা আগে থেকেই যেমন অ্যাগ্রিকালচারের অ্যাগ্রিকালচার বিষয়ক, স্বাস্থ্যের, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের, আইন আইনের বিষয়ক যেসব প্রতিষ্ঠান আছে তারা আগে থেকেই এটা বলা থাকে যাদের ভালো রেজাল্ট হয় সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা দিয়ে ওই মন্ত্রণালয়ে বা দফতরে যোগ দেবে এবং ওই মন্ত্রণালয়ে থাকার ব্যবস্থা, তাদের অন্য মন্ত্রণালয় বা বিভাগে বদলির সুযোগ নেই। স্ব স্ব মন্ত্রণালয় বা বিভাগে থেকেই তারা উপরে উঠবে। এখানেই তাদের দক্ষতা বিকাশ হবে। বাংলাদেশে যেটা হয় পড়াশোনা করে এক বিষয়ে চাকরি হয় এক মন্ত্রণালয়ে পরের বছর দেখা যায় তাকে আরেক মন্ত্রণালয়ে দেয়া হলো। এতে দেখা যায় কোনো দক্ষতা গড়ে ওঠে না। জাপানে সিস্টেমটা হচ্ছে ইউনিভার্সিটির বেস্ট বয়দের আগে থেকেই টার্গেট করা হয়। বলা হয়, তুমি অ্যাগ্রিকালচার মিনিস্ট্রিরির জন্য, তুমি হেলথ মিনিস্ট্রির জন্য। আগে থেকেই সেসব প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ থাকে যাদের ভালো রেজাল্ট হয় তাদের সরাসরি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা, বিসিএস হোক আর যা হোক সে সেটা দিয়ে ওখানে সার্ভিসে যোগ দেয়। ওই মন্ত্রণালয়ে প্রথমে তার পোস্টিং হবে তারপর এবং সে ওখান থেকেই ধাপে ধাপে এগিয়ে উঠবে এবং সে সর্বোচ্চ পর্যায়ে যাবে। প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের জন্য একটি স্থায়ী পরামর্শক বা উপদেষ্টা কমিটি থাকতে পারে। এই কমিটিতে বেসরকারি ব্যবসায়ী নেতারা, সুশীলসমাজ প্রতিনিধি, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিশেষজ্ঞ শিক্ষক, পেশাদার ব্যক্তি, সাবেক কর্মকর্তারা থাকতে পারেন। বছরে অন্তত চারবার এই কমিটি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে নীতিগত বিষয় পরামর্শ দিতে পারবেন। জাপান, যুক্তরাষ্ট্রসহ বহু দেশ বা অঞ্চলে এ ব্যবস্থাপনা বিদ্যমান।

প্রশাসনের ভেতরে সুশাসন, দক্ষতা, শুদ্ধতা এগুলোর ব্যাপারে প্রথম থেকেই সিস্টেমটা তাদের সম্পদবিবরণী, তাদের এসসিআর দেয়ার ব্যাপারগুলোতে প্রযোজ্য সংস্কার আনা যায়, যাতে তাদের যথাযথ রিপোর্ট হয়, সেটার ভিত্তিতে তাদের পদোন্নতি বা অন্যান্য ব্যাপারগুলো ফলোআপ করা হয়। এটা এরকম যেন না হয়, এক পর্যায়ে গিয়ে কারো ব্যক্তিগত পছন্দ বা কোনো দলের পছন্দ কিংবা কারো দ্বারা বদলি করানো হলো। বদলির এমন সংস্কৃতি পরিহার করলে, প্রত্যেকের যার যার মন্ত্রণালয় তার নিজস্ব পদোন্নতি, বদলি, নিয়োগ এগুলো পদ্ধতি খুব স্পষ্ট থাকলে এবং তা অনুসৃত হলে গোটা জনপ্রশাসন সমৃদ্ধ হবে দায়িত্বশীলতায়। সব বিভাগের সব কর্মকর্তার মধ্যে যেন কোনো প্রকার বৈষম্যবোধ বা স্বজনপ্রীতি বা কোনো ধরনের মনোকষ্ট বা কোনো বিশেষ বাহিনী বা সার্ভিসের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠার দৃষ্টিভঙ্গিরও সংস্কার প্রয়োজন হবে।

লেখক : সাবেক সচিব, এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান


আরো সংবাদ



premium cement
শুল্ক হার বাড়ায় মিনিমাম প্রভাব পড়বে জুলাই বিপ্লবে নিহত মাহবুবের পরিবারের পাশে তারেক রহমান সীমান্ত সম্ভারে ৮ মিনিটে দিন-দুপুরে ১৫৯ ভরি স্বর্ণ চুরি সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব : নজরুল ইসলাম খান পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিচারকাজ কেরানীগঞ্জ কারাগারের অস্থায়ী আদালতে চলবে আমানতকারীদের স্বার্থে পর্ষদ সভায় ভূমিকা রাখছেন না স্বতন্ত্র পরিচালকরা এক নারীর শরীরে এইচএমপিভি শনাক্ত সুস্থ আছেন রুগ্ণ প্রতিষ্ঠান গুটিয়ে নেয়ার এক্সিট পলিসি চান ব্যবসায়ীরা নিউজিল্যান্ড ও আফগানিস্তান দল ঘোষণা পাটগ্রাম সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশী আহত তেল মারা বন্ধ করেন : সরকারি কর্মচারীদের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

সকল