১০ জানুয়ারি ২০২৫, ২৬ পৌষ ১৪৩১, ৯ রজব ১৪৪৬
`

দেশের অর্থনীতিতে প্রাণিসম্পদের অবদান

-

কৃষির অনেক খাত থাকলেও অন্যতম খাত হলো শস্য, সবজি, ফল, মৎস্য, প্রাণিসম্পদ এবং বনায়ন। আমার আজকের লেখা কৃষি সেক্টরের প্রাণিসম্পদ খাতের ব্যবস্থাপনা, তার চ্যালেঞ্জ এবং অর্থনীতিতে তার অবদান নিয়ে। প্রাণিসম্পদের কাজ প্রাথমিকভাবে একটি পারিবারিক উদ্যোগ ছিল এবং এখনো তা বেশির ভাগ দেশেই রয়েছে। তবে উন্নত অঞ্চলে আরো বড় আকারের দক্ষ অপারেশনগুলো ছোট পারিবারিক খামারের গণ্ডি ছাড়িয়ে বাণিজ্যিক ফার্মিংয়ের দিকে এগিয়েছে। বিশ্বে পশুসম্পদকাজের বিশাল পরিসর রয়েছে। কিছু দেশ উচ্চ প্রযুক্তি এবং উন্নত পদ্ধতি ব্যবহার করে, পশুসম্পদ তাদের প্রয়োজনের চেয়ে বেশি উৎপাদন করে। অন্যরা, যারা কম উন্নত এবং দরিদ্র তারা তাদের দেশের জনসংখ্যার প্রয়োজন অনুযায়ী পর্যাপ্ত উৎপাদন করে না। ফলে উন্নত প্রাণিসম্পদ উৎপাদনের দেশগুলো প্রায়ই কম উন্নত অঞ্চলের উৎপাদনশীলতা উন্নত করতে সহায়তা করে।

প্রাণিসম্পদ খাতের সফলতা

মানুষের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে প্রাণিজ খাদ্যের বিরাট ভূমিকা রয়েছে। প্রাণিসম্পদ যেমন মুরগি, গরু ও ছাগল পালনেও বাংলাদেশে বিপ্লব হয়েছে। কয়েক বছর ধরে প্রাণিজ আমিষ যেমন দুধ, গোশত ও ডিম উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশের মোট জিডিপিতে প্রাণিসম্পদ খাতের অবদান মাত্র ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ। বর্তমানে দেশের প্রক্রিয়াজাত শিল্পে পোলট্রি ও দুধজাতীয় খাদ্য রফতানি করা হয়। বাংলাদেশের জনসংখ্যার প্রায় ২০ শতাংশ গবাদি প্রাণী, হাঁস-মুরগি পালন ও প্রজনন কর্মসূচির আওতায় জীবিকা নির্বাহ করে। জমিচাষ, ভারবহন এবং গোবরের সার ও জ্বালানি সরবরাহ প্রাণিসম্পদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান। প্রাণিসম্পদ চামড়া ও সারের জোগান দেয় যা রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব।

বাংলাদেশের ৮৩ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবার গৃহপালিত প্রাণী পালন করছে। প্রতিটি পরিবারে গড়ে ১.৫ গরু-মহিষ, ০.৯টি ছাগল-ভেড়া ও ৬.৮ হাঁস-মুরগি রয়েছে। বর্তমানে দেশে প্রতি একর আবাদযোগ্য জমিতে প্রাণী-পাখির ঘনত্ব ৭.৩৭ যা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। পৃথিবীর অনেক দেশের তুলনায় হেক্টর-প্রতি প্রাণী-পাখির ঘনত্ব বাংলাদেশে বেশি। বাংলাদেশে পোলট্রি খাতে গত এক দশকে প্রায় ১৮ শতাংশ করে প্রবৃদ্ধি ঘটেছে। এ ক্ষেত্রে আরো উন্নযন সম্ভব। এই প্রবৃদ্ধির মূল কারণ হচ্ছে দেশে মুরগির গোশত ও ডিমের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে।

প্রাণিসম্পদ খাতের দুগ্ধশিল্পও দেশের টেকসই উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। দুধে রয়েছে উন্নতমানের আমিষ, রয়েছে ৪০ শতাংশ অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড ও অপরিহার্য ফ্যাটি এসিড যা শরীরকে শক্তি জোগায়। অস্থি গঠনে ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়ামের অবদান অনস্বীকার্য। বাংলাদেশে প্রতি বছর ১৫৪ লাখ মেট্রিক টন দুধের চাহিদা রয়েছে। বর্তমানে দুধের ঘাটতি বছরে ২৩ লাখ মেট্রিক টনের কিছু বেশি। দেশে প্রথম সারির ১৪টি দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাত কোম্পানি প্রতিদিন সাত-আট লাখ টন তরল দুধ প্রক্রিয়াজাত করে পাস্তুরিত দুধ, মিল্ক পাউডার, মিষ্টি, দই, ঘি, পনির, চিজ ও বাটার ইত্যাদি উৎপাদন করছে। এ ছাড়াও লাখ লাখ মানুষ এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত।

দেশে গবাদিপশু ও পোলট্রি সম্পদের একমাত্র জাতীয় গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই); এ প্রতিষ্ঠানটি দেশের প্রাণিসম্পদ উন্নয়নসম্পর্কিত প্রযুক্তি উদ্ভাবনে কাজ করে যাচ্ছে। এর মধ্যে অন্যতম আবিষ্কার গরু মোটাতাজাকরণ, উন্নত গরুর জাত উদ্ভাবন, ঘাস সংরক্ষণের প্রযুক্তি, উচ্চফলনশীল ঘাসের জাত উদ্ভাবন, বিভিন্ন ভ্যাকসিন আবিষ্কার, দেশী মুরগির জাতের উন্নয়ন, মাল্টি কালার মিট টাইপ চিকেন ইত্যাদি কৃষকপর্যায়ে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ ছাড়াও গোশত, দুধ এবং ডিম উৎপাদনেও প্রতিষ্ঠানটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। কৃত্রিম প্রজনন কৌশলে জেনেটিক্যালি উচ্চতর ষাঁড়ের শুক্রাণু হাজার হাজার গাভীর গর্ভধারণের জন্য ব্যবহার করা হয়। আশির দশকের মাঝামাঝি ইউনিসেফের আর্থিক সহায়তায় অনেক বাড়িতে হাঁস-মুরগি পালন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সরকার ও হাঁস-মুরগি ব্যবসায়ীদের গৃহীত সম্প্রসারণ উদ্যোগের ফলে দেশে এই জাতীয় খামার ক্রমাগত বাড়ছে। প্রাণী-পাখির গবেষণা ও সম্প্রসারণ খাতে প্রতি এক টাকা বিনিয়োগ করা হলে বছরে গড়ে আয় হবে পণ্যভেদে এক টাকা ৪২ পয়সা থেকে তিন টাকা ১৫ পয়সা।

দুধ, গোশত ও ডিমের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ এবং গ্রামের দরিদ্র মানুষের কর্মসংস্থান ও আয় বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ সরকার প্রাণিসম্পদ উন্নয়নে অগ্রাধিকার দিয়েছে। এই কর্মকাণ্ডের প্রায়োগিক দিকগুলো কার্যকর করার জন্য বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও দেশের অন্যান্য প্রাণিবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের মতো নানা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রয়োজনীয় দক্ষ কর্মীদের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। বর্ধিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার দুধের গাভী পালনে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের বিভিন্ন সহায়তা দিয়ে থাকে। টিকা ও কৃত্রিম গর্ভধারণেও সরকার যথেষ্ট সহযোগিতা করে।

প্রাণিসম্পদ খাতের চ্যালেঞ্জ

বাংলাদেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং দারিদ্র্যমুক্ত জাতি গঠন, সবার জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও আমিষের চাহিদা নিশ্চিতকরণের মতো লক্ষ্যগুলোর সাথে প্রাণিসম্পদ সরাসরি সম্পৃক্ত। তবে প্রাণিজ খাদ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ ও বণ্টন-প্রক্রিয়া অন্যান্য খাতের চেয়ে ভিন্ন ও জটিল। এ প্রক্রিয়া সমন্বিতভাবে গড়ে তুলতে না পারলে জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যাবে। নতুন রোগ উদ্ভব হবে, মারাত্মক রোগ ও ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দেবে। দেশ গোশত ও দুধের চাহিদা পূরণের জন্য বিদেশী গরুর জাতের ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল হয়ে পড়বে। গো-খাদ্যের দাম অত্যন্ত চড়া হওয়ার ফলে দুধ উৎপাদনে মোট ব্যয়ের ৭০ শতাংশ পর্যন্ত চলে যায়। দেশের গাভীগুলোর দৈনিক উৎপাদন ক্ষমতা গড়ে পাঁচ-ছয় লিটার যা উন্নত দেশগুলোর তুলনায় অনেক কম। প্রান্তিক পর্যায়ে দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণ সুবিধার অভাব রয়েছে, ফলে গ্রামের দুধ উৎপাদনকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হন। বাংলাদেশে জলবায়ু নিয়ন্ত্রণের ওপর গবেষণা এবং একাধিক জন্মের সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে গরুর গোশতের উৎপাদন উন্নত হচ্ছে। খামারের পশুদের সামগ্রিক স্বাস্থ্য সরকার, শিল্প এবং ভোক্তাদের উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠেছে।

চ্যালেঞ্জ উত্তরণে করণীয় এসব চ্যালেঞ্জ উত্তরণে সুপরিকল্পিত উদ্যোগ গ্রহণ প্রয়োজন।

আশার কথা, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠান এ লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। পোলট্র্রি খাতে নতুন বিনিয়োগকারী আকৃষ্ট করতে এ খাতের ব্যবসায়ীদের কথা ভেবে এই খাতকে শুল্কমুক্ত করে আগের স্থানে নিয়ে যাওয়া উচিত। সারা দেশের পোলট্র্রি খামারগুলো নিয়ে একটি জেলাভিত্তিক ডেটাবেস তৈরি করা দরকার। কোনো খামারে কী পরিমাণ মুরগি রয়েছে সে বিষয়ে সঠিক তথ্য না থাকলে এত বিশাল খাতের সমস্যা মোকাবেলা ভবিষ্যতে কঠিন হয়ে পড়বে। পোলট্র্রি খাতের দ্রুত ও টেকসই উন্নয়নের জন্য একটি পোলট্র্রি বোর্ড গঠন করা অত্যন্ত জরুরি। হাঁস-মুরগির নতুন জাত উদ্ভাবন করতে হবে যে মুরগি অনেক বেশি ডিম দেয় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি। গবাদিপশুর বিভিন্ন মারাত্মক রোগের জন্য বিদেশী প্রতিষেধকের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনতে সরকারি-বেসরকারি ও ব্যক্তিগত খাতসহ বাংলাদেশে নানা সংস্থার প্রাণিসম্পদ উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে। বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন কার্যক্রমে শরিক হতে পারে।

২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়নের জন্য যে ১৭টি লক্ষ্যমাত্রা আমাদের সামনে রয়েছে, এর ৯টির সাথে প্রাণিসম্পদ সরাসরি বা পরোক্ষভাবে জড়িত। ক্ষুধা দূরীকরণ, দারিদ্র্যমুক্ত জাতি গঠন, সবার জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি নিশ্চিতকরণের মতো লক্ষ্যগুলোর সাথে প্রাণিসম্পদ সরাসরি সম্পৃক্ত। দেশের সার্বিক উন্নয়নে এবং টেকসই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রে প্রাণিসম্পদ খাতের গুরুত্ব সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করে তোলার জন্য প্রাণিসম্পদ অধিদফতরকে কাজ করতে হবে। দেশের গোশত ও দুধের চাহিদা পূরণের জন্য বিদেশী গরুর ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল হলে চলবে না। আমাদের দেশীয় গরুর জাত যেমন চিটাগাং ক্যাটেল, মুন্সীগঞ্জ ক্যাটেল, পাবনা, এনজিবি ও হিলব্ল্যক নেত্রকোনা, এই জাতগুলোর উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশে রেড মিটের উৎস হলো গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া যা দেশের মোট গোশতের চাহিদার ৫২ শতাংশ। ঈদুল আজহা এবং ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানে রেড মিটের চাহিদা এ ক্ষেত্রে বড় অবদান রাখে। মানুষের খাদ্য বৃদ্ধির সাথে সাথে শস্যের প্রয়োজনীয়তা গবাদিপশু এবং অন্যান্য গবাদিপশুর খাদ্যের নতুন উৎস উদ্ভব হতে পারে। বিগত এক দশকে বাংলাদেশে রেড মিট উৎপাদনে নীরব বিপ্লব ঘটেছে। ভারতে সরকার জীবিত গরু রফতানি না করার সিদ্ধান্ত নিলে কোরবানির সময় আমাদের দেশে ভারতীয় গরু আসা বন্ধ হয়ে যায়। ব্যাপক চাহিদা থাকায় সারা দেশে ব্যাপক হারে গরু পালন শুরু হয়। ফলে আমরা উৎপাদনে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণতার কাছাকাছি চলে এসেছি।

পোলট্রি খাতে সরাসরি ও পরোক্ষভাবে বর্তমানে প্রায় ৬৬ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে। ২০৩০ সাল নাগাদ এই সংখ্যা এক কোটি ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই বিরাট কর্মসংস্থানের সম্ভাবনাময় একটি খাতকে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিতে হলে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা, সহজলভ্যতা, নির্ভরযোগ্যতা ও টেকসই উন্নয়ন প্রয়োজন। সব খামারকে নিবন্ধনের আওতায় এনে সেগুলোকে সঠিক নীতিমালায় মেনে পোলট্র্রি উৎপাদন করতে সহায়তা করতে হবে। প্রাণিদেহ থেকে যেসব রোগ মানবদেহে সংক্রমিত হয়, সেগুলো যদি আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে চাই, তাহলে এই খাতের সাথে সংশ্লিষ্টদের সচেতন হলেই হবে না; বরং ভোক্তাদেরকেও সচেতন করতে হবে। সারা বিশ্বের মানুষেরই অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স হয়ে ওঠার ঝুঁকি রয়েছে। এর জন্য মানুষের খাদ্যাভ্যাস অনেকাংশে দায়ী। কোনো প্রাণী যদি নির্দিষ্ট কোনো অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ প্রতিরোধী হয়ে থাকে, তাহলে সেই প্রাণীর প্রোটিন খেয়ে মানুষেরও একই সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। নতুন নতুন যে জাত উদ্ভাবন হচ্ছে, তা খামারিপর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার কোনো বিকল্প নেই। প্রাণিসম্পদ খাতে টেকসই উন্নয়নের জন্য সরকারি কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি বেসরকারি বিনিয়োগকেও উৎসাহিত করতে হবে। এর জন্য প্রাণিসম্পদ গবেষণায় বাজেট বরাদ্দ বাড়ানো ছাড়া এই খাতে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়।

দেশের মানুষ এবং অর্থনীতিতে প্রাণিসম্পদের অবদান অপরিসীম। এই অবদান ধরে রেখে চাহিদামাফিক আরো বৃদ্ধির জন্য প্রাণীর জাত উন্নয়নে কৃত্রিম প্রজনন কার্যক্রম জোরদারকরণ ও দেশী উন্নত জাতগুলো সংরক্ষণ করা প্রয়োজন। উন্নত ঘাস চাষ সম্প্রসারণ ও প্রাণিখাদ্য প্রস্তুতকারী কারখানা স্থাপনে উৎসাহ প্রদান; টিকা উৎপাদন, প্রদান ও চিকিৎসাব্যবস্থা সম্প্রসারণ দরকার। প্রাণিজাত সামগ্রীর চাহিদা ও সরবরাহ ঘাটতি এখনো অনেক বেশি এবং যেহেতু জনপ্রতি আয় ক্রমেই বাড়ছে, সেহেতু এই খাত আরো অনেক দিন লাভজনক থাকবে; সুতরাং বাণিজ্যিক উৎপাদন আরো বৃদ্ধি করা লাভজনক হবে। পশুর রোগগুলো সরকার ও বিজ্ঞানীদের প্রকৃত উদ্বেগ, কারণ তাদের ঘটনা মানবস্বাস্থ্য এবং বিশ্ব-অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। বিশ্বজুড়ে গবেষকরা বর্তমানে আরো ভালো ডায়াগনস্টিক পদ্ধতি ও ভ্যাকসিন বিকাশের চেষ্টা করছে যেন গবাদিপশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা যায়। পাশাপাশি চর্বিহীন গরুর গোশত এবং আরো পুষ্টিকর ডিম ও মাছ উৎপাদনের চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।

লেখক : অর্থনীতিবিদ, গবেষক ও কলামিস্ট
ই-মেল : [email protected]


আরো সংবাদ



premium cement