ইসরাইলের যুদ্ধশক্তির বাস্তবতা ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্র
- মাসুম খলিলী
- ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০:৪১
ঘটনাবহুল ২০২৪ সাল বিদায় হয়ে নতুন বছর ২০২৫ সাল এলো। বিদায়ী বছরজুড়ে ফোকাসে ছিল মধ্যপ্রাচ্য। মধ্যপ্রাচ্য ব্যাপক এক যুদ্ধে ভেঙে পড়েছে। অঞ্চলজুড়ে শাসনব্যবস্থার পতন যুদ্ধের নতুন ফ্রন্ট খুলে দিয়েছে। ঐতিহাসিকভাবে, সেখানে এ ধরনের পরিস্থিতি ইসরাইলি সামরিক বাহিনী পরিচালনা করেছে। বাস্তবতা হলো ইসরাইল এই অঞ্চলে প্রভাবশালী সামরিক শক্তি রয়ে গেছে। তবে এখন সংঘর্ষের নতুন মাত্রা তৈরি হয়েছে। এই বিবেচনা এখন প্রবলভাবে সামনে আসছে যে ইসরাইলের সামরিক কৌশল এই অঞ্চলে একটি চূড়ান্ত অবয়ব দিতে পারে কি না অথবা বৃহত্তর অঞ্চলে শত্রুদের ওপর নিজের ইচ্ছা চাপিয়ে দেয়ার ক্ষমতা ইসরাইলের আছে কি না। ইসরাইলিরা কিছু বিকল্পের কথা বলছে যার কোনোটিই তেমন গ্রহণীয় হয়ে উঠছে না।
হামাসের ৭ অক্টোবরের হামলার পর ইসরাইল একটি সংশয়ের মুখোমুখি হয়েছিল। তেলআবিব বিশ্বাস করেছিল যে অপ্রতিরোধ্য উপায়ে হামাসকে ধ্বংস করতে হবে। তখন ইসরাইলি কৌশল ছিল হামাসের ওপর এমন একটি ব্যবস্থা চাপিয়ে দেয়া যা তাদের সক্ষমতা ধ্বংস করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। তাত্ত্বিকভাবে, এটি যুক্তিসঙ্গত বলে মনে হলেও বাস্তব অনুশীলনে, এটি কার্যকর করা কঠিনই ছিল। এর ফলে গাজাজুড়ে ব্যাপক হামলা হয়। ইসরাইল আরো সংযত হলে, কৌশলটি হয়তো কিছুটা কাজ করতে পারতো। পরিবর্তে, ক্রমবর্ধমান নিবিড় যুদ্ধে ইসরাইল ফিলিস্তিনিদের ওপর আক্রমণ করেছে যা হামাসকে কখনোই পরাভূত করতে পারেনি। হামাস যুদ্ধ করে করে নিজেকে টিকিয়ে রাখতে সক্ষম হয়েছে।
এই বিশ্লেষণ ফিলিস্তিনিদের প্রতি সহানুভূতিশীলরা কেবল করছেন তা নয়। খ্যাতনামা আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক জর্জ ফ্রিডম্যানও মনে করছেন, ‘ইসরাইল ভেবেছিল হামাসকে বারবার আঘাত করে তারা জিতবে। বাস্তবে তা হয়নি। ইসরাইলি পদ্ধতির দুর্বলতা ছিল যে, তারা একই ফলাফলে বারবার একই অপারেশন চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরাইল অতীতে এভাবে যুদ্ধ চালায়নি। এটি স্পষ্ট, সীমিত কৌশলগত সক্ষমতার সাথে ইসরাইল যুদ্ধ করেছিল। হামাসের ক্ষেত্রে, সেই স্পষ্টতা বিদ্যমান ছিল না। একাধিক ফ্রন্টে আক্রমণ করার ধারণাটি একটি নীতিতে পরিণত হয়েছিল। ইসরাইলের প্রয়োজন ছিল অপ্রয়োজনীয়তার ওপর নয় বরং সতর্ক পরিকল্পনার ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে একটি যুদ্ধ চালানো। এখন প্রশ্ন হলো, এখন ইসরাইল কী কৌশল নেবে। তারা হামাসকে ধ্বংস করতে ব্যর্থ হয়েছে এবং তার কৌশলগুলোকে বহু গুণ করে সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করেছে, আর এটি শত্রুকে টিকে থাকতে এবং অন্য একটি ব্যবস্থা তৈরি করার সুযোগ দিয়েছে।’
আমেরিকান ইহুদি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ ফ্রিডম্যানের মতে, গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ‘ইসরাইলের সীমিত ক্ষমতা রাজনৈতিক বিষয় হয়ে উঠেছে, বিভিন্ন উপাদান বিভিন্ন ধরনের আক্রমণের জন্য তর্ক করছে, যার কোনোটিই কার্যকর হয়নি। ইসরাইল সামঞ্জস্য করতে পারবে কি না তাও স্পষ্ট নয়। যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে একটি কৌশল পরিত্যাগ করা খুবই কঠিন। এটির ব্যর্থতায় বিশ্বাসকে প্রভাবিত করে তবে প্রায়ই এর কোনো স্পষ্ট উদ্দেশ্য থাকে না। এটাই এখন ইসরাইলের মূল সমস্যা। যুদ্ধ শেষ করার জন্য এই সময়ে ইসরাইলের পর্যাপ্ত বিজয়ী হওয়া উচিত, তবে দেশটি সেই অবস্থানে নেই বা সরকার যাই বলুক না কেন, বিজয়ের একটি ডিগ্রি অর্জনের জন্য এটি যুদ্ধের বোঝার পরিবর্তন করতেও সক্ষম নয়।’
অনেক দেশ এই সমস্যাটি অনুভব করেছে। কিন্তু ইসরাইলের অতীতে এই সমস্যা ছিল না। আর তাই এটি সামঞ্জস্য করা একটি বাস্তব চ্যালেঞ্জ। সামনের দিকে তাকালে, প্রশ্ন আসবে ইসরাইলের সামরিক বাহিনী এখান থেকে কোথায় যাবে। ইসরাইলের জন্য, সমাধানটি ভীতিজনক বলে মনে হচ্ছে : তবুও তারা চলমান কৌশলটিই চালিয়ে যাবে কারণ এটিকে তারা অন্যগুলোর চেয়ে ভালো বোঝে। কিন্তু প্রশ্ন হলো ইসরাইলি বাহিনী এই যুগে যুদ্ধে অবিরাম পুনরাবৃত্তিসহ আক্রমণ চালিয়ে যেতে সক্ষম কি না। যুদ্ধের নির্ণায়ক প্রযুক্তি এখন শুধু ইসরাইল বা তার মিত্রদের হাতে সীমিত নেই। আর তাই ভাবতে হচ্ছে যুদ্ধ জয় সম্ভব না হলে তাদের সামনে সমাধান কী?
ইসরাইলের জনগণ কি শান্তি চাইছে?
ইসরাইলের জনমতে হঠাৎ ইউটার্ন শুরু হয়েছে। সরকার সঙ্কটের একটি দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানকে অবরুদ্ধ করবে এমন আইন করতে চাইছে। কিন্তু ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কোনো ঐকমত্য দেখা যাচ্ছে না।
মার্কিন রাষ্ট্রপতির রূপান্তর যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই ইঙ্গিত বাড়ছে যে আগত ট্রাম্প প্রশাসন সৌদি আরব ও ইসরাইলের সাথে একটি আঞ্চলিক চুক্তি চাইবে। আব্রাহাম অ্যাকর্ডস এবং বিডেন দলের কাজের ওপর ভিত্তি করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের মধ্যে একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি, সৌদি আরব ও ইসরাইলের মধ্যে স্বাভাবিকীকরণ আর ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য ইসরাইল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে আলোচনা অন্তর্ভুক্ত থাকবে আলোচনায়।
এই প্রক্রিয়াটিকে অগ্রাহ্য করার জন্য, ইসরাইলি সংসদ-নেসেট এর সংবিধান, আইন ও বিচার কমিটির চেয়ারম্যান সিমচা রথম্যান একটি আইনের শুনানির ঘোষণা দিয়েছেন যা ফিলিস্তিনিদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে ইসরাইলের সমাধান অর্জনের পথে একটি উল্লেখযোগ্য নতুন বাধা তৈরি করবে। ইসরাইলের ল্যান্ড ককাস দ্বারা স্পনসর করা এই আইন, ইসরাইল নিরাপত্তা আইন ২০১৪ সালের মৌলিক আইনের পরিধিকে প্রসারিত করবে যাতে ইসরাইল, গোলান হাইটস, বা পূর্ব জেরুসালেমে ভূমি হস্তান্তর করে এমন কোনো আলোচনার চুক্তিতে একটি জাতীয় গণভোট বা আইন প্রণয়নকারী সর্বোচ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠতা বাধ্যতামূলক করে। প্রস্তাবিত পরিবর্তন পশ্চিম তীরকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আইনটিকে প্রসারিত করবে। ককাসের এক বিবৃতি অনুসারে, আইনটি পাস করা হলে এর প্রভাব ভবিষ্যতে যে কোনো ব্যবস্থায় ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা রোধ করবে।
ককাসের সহ-সভাপতি ইউলি এডেলস্টেইন এবং লিমোর সন হার-মেলেকের সাথে একটি যৌথ বিবৃতিতে, রথম্যান ঘোষণা করেন যে ‘ইসরাইলের সমাজে ব্যাপক ঐকমত্য রয়েছে’ যে একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা উচিত নয়। প্রস্তাবিত আইনটি ট্রাম্প প্রশাসনের চুক্তি রোধ করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে রথম্যান বলেন, ইসরাইলি কর্মকর্তাদের অবশ্যই একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের সম্ভাবনার বিরুদ্ধে ইসরাইলি সমাজে ‘বিশ্বের গভীর ঐকমত্যের প্রতিফলন’ করতে হবে।
কিন্তু প্রশ্ন হলো সত্যিই কি ইসরাইলি সমাজে এমন কোনো ঐকমত্য আছে? ৭ অক্টোবর হামাসের আক্রমণের পর ইসরাইলের প্রায় ১২০০ লোক নিহত হয়। ইসরাইলিদের মধ্যে দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের জন্য সমর্থন তখন কমে যায়। তেল আবিব ইউনিভার্সিটির পিস ইনডেক্স অনুসারে, ‘ইসরাইল এবং ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের মধ্যে শান্তির জন্য আলোচনার’ সমর্থন ২০২২ সালের জুলাই মাসে ৫৭% থেকে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ৩৩% এ নেমে আসে। তখনকার পরিস্থিতি ইসরাইলিদের মধ্যে এই অনুভূতিকে শক্তিশালী করেছিল যে ইহুদি জনগণ কেবল সামরিক শক্তির মাধ্যমেই ইসরাইলের ভূমিতে টিকে থাকতে পারে।
সেই বছর থেকে, ইসরাইলি রাজনীতিবিদ, পাবলিক ফিগার এবং নিউজ মিডিয়া যুদ্ধের তাড়নার ভিত্তিতে চলছে। কিন্তু যুদ্ধ রক্তক্ষয় অস্থিরতা বৃদ্ধির সাথে সাথে ইসরাইলি জনসাধারণ আরো মধ্যপন্থীর দিকে চলে গেছে। তেল আবিব ইউনিভার্সিটির নভেম্বর ২০২৪ সালের শান্তিসূচক সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনার জন্য সমর্থনকারী অংশ ১০ শতাংশ বেড়ে ৪৩% হয়েছে।
অন্যান্য সাম্প্রতিক জরিপগুলোতেও একটি আঞ্চলিক শান্তি চুক্তির প্রেক্ষাপটে একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র বিবেচনা করার জন্য ইসরাইলি জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে একটি প্রশ্ন সমসাময়িক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিশেষভাবে প্রাসঙ্গিক, যেখানে মার্কিন সরকার সৌদি আরব ও ইসরাইলের সাথে জড়িত একটি আঞ্চলিক চুক্তিকে শীর্ষ অগ্রাধিকার হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
আগস্ট ২০২৪ সালের একটি সমীক্ষায়, মিটভিম ইনস্টিটিউট দেখেছে যে আরো বেশি ইসরাইলি আঞ্চলিক চুক্তির (৩৭%) বিরোধিতা করার পরিবর্তে (৪৪%) সমর্থন করেছে, যার মধ্যে রয়েছে ‘সৌদি আরবের সাথে স্বাভাবিকীকরণ, হামাসের নিয়ন্ত্রণে নয় এমন একটি অসামরিক ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে একটি আঞ্চলিক প্রতিরক্ষা চুক্তি।’
জেরুসালেমের হিব্রু ইউনিভার্সিটি অ্যাকর্ড ইনস্টিটিউট ২০২৪ সালের অক্টোবরে একই ধরনের প্রশ্ন তুলেছিল। সমীক্ষায় উত্তরদাতাদের জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে ইসরাইলের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দ্বারা সমর্থিত একটি কূটনৈতিক ব্যবস্থা অনুসরণ করা উচিত কি না, যার মধ্যে আরব রাষ্ট্র দ্বারা স্বীকৃতির বিনিময়ে একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা এবং ইসরাইল ও আরব রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে স্বাভাবিকীকরণ চুক্তি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই প্রশ্নে, ইসরাইলি জনসাধারণ প্রায় সমানভাবে বিভক্ত, ৪৭% এর সমর্থন করেছে এবং ৫২% বিরোধিতা করেছে। এটি এমন একটি পার্থক্য যা সমীক্ষার ত্রুটির মার্জিনের মধ্যে রয়েছে।
জরিপগুলো ইসরাইলি, ইহুদি এবং আরবসহ জনসাধারণের প্রতিনিধিত্ব করা হয়েছে। কেউ কেউ যুক্তি দেন যে জাতীয় নিরাপত্তার ইস্যুতে ইহুদিদের মতামত আলাদাভাবে বিবেচনা করা উচিত। দেখা গেছে যে, ইহুদি ইসরাইলি মতামতও বিভক্ত। তেল আবিব বিশ্ববিদ্যালয়ের মতে নভেম্বর ২০২৪ এ করা সাম্প্রতিক পিস ইনডেক্স সমীক্ষায়, ইসরাইল ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের মধ্যে শান্তির জন্য আলোচনাকে সমর্থন করেছিল ৩৫% ইহুদি ইসরাইলি।
সাম্প্রতিক সমীক্ষায়, ইউনাইটেড কিংডম, কানাডা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইহুদিরা প্রায়ই উল্লেখযোগ্য সংখ্যাগরিষ্ঠ দ্বারা দ্বিরাষ্ট্র সমাধান সমর্থন করে চলেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম এবং সবচেয়ে প্রভাবশালী ইহুদি সংগঠনগুলো দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের জন্য স্পষ্ট সমর্থনকে একটি মৌলিক নীতিগত অবস্থানে পরিণত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে উত্তর আমেরিকার ইহুদি ফেডারেশন এবং সেই সাথে আমেরিকান ইহুদি কমিটি-আইপ্যাক, অ্যান্টি-ডেফামেশন লিগ এবং সংস্কার ও রক্ষণশীল আন্দোলনগুলো।
তেল আবিব বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট ফর ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্টাডিজের সিনিয়র ফেলো টেড স্যাসন মনে করেন, ইসরাইলের ক্ষমতাসীন জোটের সরকারে থাকাকালীন জাতীয় নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক নীতিগুলো গঠন করার চেষ্টা করার অধিকার রয়েছে। তবে সরকারের উচিত এমন পদক্ষেপ নেয়া থেকে বিরত থাকা, যা ভবিষ্যতের সরকারকে বাধাগ্রস্ত করবে। একটি জাতীয় ‘ঐকমত্য’ সম্পর্কে ভুল দাবির ভিত্তিতে তাদের অবশ্যই তা করা উচিত নয়। ভবিষ্যতে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনে বাধা দেয়ার জন্য ইসরাইলিদের মধ্যে কোনো ঐকমত্য নেই।
কী করবেন নেতানিয়াহু
এই প্রতিবেদন প্রকাশের সময় ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু প্রস্টেট ক্যান্সারের অপারেশন শেষে জেরুসালেমের একটি হাসপাতালের মাটির নিচে বাঙ্কারের পোস্ট অপারেটিভ কক্ষে রয়েছেন। তিনি এমন এক সময়ে এসে উপনীত হয়েছেন যে সময়টাতে ১৫ মাস যুদ্ধ করার পরও ইসরাইল পরাজিত করতে পারেনি হামাসকে। প্রায় অর্ধ লাখ ফিলিস্তিনিকে হত্যার পরও শতাধিক ইসরাইলি জিম্মি হামাসের হাতে বন্দী রয়ে গেছে। হিজবুল্লাহর সাথে যুদ্ধবিরতির পর গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য তীব্র চাপে আছেন তিনি। দেশের ভেতরেও যুদ্ধ বন্ধের চাপ বাড়ছে।
সিরিয়ায় বাশার আসাদ শাসনের অবসানের পর সেখানে হামাসের মতো ধ্যান ধারণার গ্রুপগুলো সরকার গঠন করেছে। ইসরাইলের ভেতরে সেনারা ক্লান্ত, নতুন যুদ্ধে পাঠানোর মতো লোক পাওয়া যাচ্ছে না সেখানে। ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার আগেই সেখানে যুদ্ধ বন্ধ করতে বলেছেন। নিজের শরীরে ক্যান্সার, সরকারের কোয়ালিশনে ভঙ্গুরতা, ইসরাইলের সামরিক সক্ষমতার মিথ ভেঙে যাওয়ার বাস্তবতায় যুক্তরাজ্য ও আমেরিকা চাইলে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র মেনে নেয়ার ধারণা উড়িয়ে দেয়া ইসরাইলের জন্য কঠিন হবে।
নেতানিয়াহু জেদ ধরলে অদূর ভবিষ্যতে ইরানের নেতৃত্বাধীন শিয়া প্রতিরোধ অক্ষের পাশাপাশি একটি সুন্নি অক্ষও ইসরাইলের সাথে যুদ্ধে জড়িয়ে যেতে পারে। সিরিয়ার পরিবর্তন সে সম্ভাবনাকে অনেক বাড়িয়ে তুলেছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা