প্রশাসনে পেশাদারিত্ব
- ড. আবদুল লতিফ মাসুম
- ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১:২৪
বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থায় ‘সিভিল সার্ভিস’ তথা প্রশাসনিক কর্মকর্তারা মূল চালিকাশক্তি। রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও লোকপ্রশাসন অধ্যয়নে এটি ‘আমলাতন্ত্র’ বলে চিহ্নিত। যখনই আমরা আমলাতন্ত্র শব্দটি উচ্চারণ করি সাথে সাথে কিছু নেতিবাচক চরিত্র ও বিষয় আমলে আসে। এসব অভিযোগের মধ্যে রয়েছে হামবড়া ভাব, অর্থাৎ কি হনু রে অবস্থা। এভাবে দাম্ভিকতা, অহঙ্কার ও জনবিচ্ছিন্নতার মনোভাব তাদের মধ্যে রয়েছে। ঔপনিবেশিক যুগে ইংরেজরা ছিল আমাদের প্রভু। আর আমরা ছিলাম গোলাম। আমাদের এতদ্দেশীয় পীত বর্ণের লোকেরা শ্বেতকায়দের এতই অনুগত ছিল যে, তারা ইতিহাসের খাতায় কালো নাম কুড়িয়েছে। পাকিস্তানের আন্তঃঔপনিবেশিক আমলে অবস্থার তেমন পরিবর্তন হয়নি। বাংলাদেশ আমলে আমূল পরিবর্তন হবে এমন আশা ছিল জনগণের। কিন্তু সে আশার গুড়েবালি পড়েছে। আমলাতন্ত্র আওয়ামী আমলে (১৯৭২-৭৫) নতুন বিষয় ও বৈশিষ্ট্য অর্জন করে। এটি নতুন দেশ গড়ার প্রাক্কালে একটি সুন্দর, স্বচ্ছ ও যোগ্যতর প্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়ার বদলে তারা তাদের চরিত্র অনুযায়ী প্রশাসনিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে। সে সময়ে এটি তোফায়েল সার্ভিস নামে খ্যাতি (!) অর্জন করে। তোফায়েল সাহেবের একটি স্লিপে লোকজন রাজা-উজির বনে যেত। কেউ বা ম্যাজিস্ট্রেট, কেউ বা সেকশন অফিসার আবার কেউ বা মুনসেফ হয়ে যেত সে সময়। ১৫ আগস্টের ঘটনাবলির পর স্বাভাবিকভাবেই এই দলতন্ত্রের অবসান ঘটে। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান দায়িত্ব নেয়ার পরপরই প্রশাসনিক কাঠামো পেশাদারিত্বে ভিত্তিতে পুনর্গঠন করেন। এখন যেসব বিশ্বস্ত ও দায়িত্বশীল কর্মকর্তা দেশের শীর্ষ পর্যায়ে দেখছেন তাদের অনেকেই ১৯৮১-৮২ সালের রিক্রুট। যাহোক, এরশাদ আমলে জিয়া অনুসৃত পেশাদারিত্ব বহাল থাকে। সেটি ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত প্রসারিত হয়। উল্লেখ্য, ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত সরকার বহাল ছিল। ১৯৯৬ সালে পঁচাত্তরের পরাজিত শক্তি ক্ষমতায় ফিরে আসে। তখনই আবার শুরু হয় দলতন্ত্র। নাজিবাদ-ফ্যাসিবাদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে (এ টু জেড) একক দলীয় কাঠামোতে কেন্দ্রীভূত করা। আওয়ামী লীগের কাছে পেশাদারিত্ব বলে কিছু নেই। তারা যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা ও নৈতিকতার কোনো ধার ধারে না। তাদের শুধুই দ্রষ্টব্য ব্যক্তি বা কর্মকর্তা তাদের দলের প্রতি কতটা আনুগত্য পোষণ করে। তবে ওই সময়ে তারা ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠিত পেশাদারিত্বকে সমূলে উৎপাটন করতে পারেনি।
পেশাদারিত্ব শব্দটির একটু ব্যাখ্যা প্রয়োজন। সাদামাটা ভাষায় বলা যায়, পেশাকেন্দ্রিক অক্ষুণ্ন্ন মনোযোগ, কর্তব্যনিষ্ঠা ও অভিজ্ঞতা সঞ্চয়পূর্বক আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালন করা। ওয়েবস্টার ডিকশনারিতে পেশাদারিত্বের ছয়টি গুণের কথা বলা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে ১. পেশাগত জ্ঞান; ২. বিনম্র আচরণ; ৩. পারদর্শিতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা; ৪. সততা ও ন্যায়পরায়ণতা; ৫. ইতিবাচক মনোভাব, ৬. দুর্বল ও দুষ্ট ব্যক্তিদের দ্বারা প্রভাবিত না হওয়া। বাংলাদেশের সমাজ ও সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে এরকম অসংখ্য মানুষ রয়েছেন যারা উপরোক্ত গুণগুলো পালন ও লালন করেন। বিশেষত প্রশাসনে দুর্নীতির দুর্বিনীত অবস্থানের বিপরীতে এমন সব মানুষদের কথা আমরা জানি যাদের অনেকেই দারিদ্র্যের মহান ব্রত ধারণ করেন। তবে দুর্ভাগ্যের বিষয় এই যে, কোনো সরকারই এ দুর্লভ ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক সম্মান প্রদর্শন করেনি। এ দেশে সততা সাহস ও সহজতা যেন চরিত্রের দুর্বল অংশমাত্র। বিশেষ করে বিগত ১৫ বছরের আওয়ামী দুঃশাসনের মূলমন্ত্র ছিল দুষ্টের লালন ও শিষ্টের দমন। অকারণে ও অহেতুকভাবে প্রশাসনে কর্মরত ধার্মিক মানুষকে অপমান-অপদস্থ করা হয়েছে। ২০২৪ সালের ৩৬ জুলাইয়ের বিপ্লবের পর কোনো কোনো ক্ষেত্রে এর প্রতিকার হয়েছে। শুনেছি, প্রতিকার প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে। আশা করা যায়, ভালো মানুষেরা সম্মানজনক স্থানে পুনর্বাসিত হবেন। তবে অভিযোগ আছে, অতীতের কিছু দুষ্ট লোক যারা অন্যায় করে শাস্তি পেয়েছে, তারাও পাইকারিভাবে লাভবান হয়েছে।
আসলে যে বিষয়টি নিয়ে বলতে গিয়ে এত দীর্ঘসূত্রতা, তা হলো সংবাদপত্রের ভাষায় ‘জনপ্রশাসনে’ অস্থিরতা। এর তাৎক্ষণিক কারণ হলো জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের খসড়া প্রস্তাবনা নিয়ে বিরোধ। জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন এখনো তাদের সুপারিশ চূড়ান্ত করেনি। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে এটি সম্পন্ন হওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। গত ২২ ডিসেম্বর জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন জনমত যাচাইয়ের জন্য কিছু প্রস্তাবনা জনসমক্ষে প্রকাশ করে। এর মধ্যে একটি বিষয় হচ্ছে উপসচিব পদে পদোন্নতিতে প্রশাসন ক্যাডার থেকে ৫০ এবং অন্য ক্যাডার থেকে ৫০ শতাংশ কর্মকর্তা নিয়োগের বিধান। বর্তমানে প্রশাসন থেকে ৭৫ এবং অন্য ক্যাডার থেকে ২৫ শতাংশ কর্মকর্তা নিয়োগের বিধান বহাল রয়েছে। সংস্কার কমিশনের এই প্রস্তাবে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা। তারা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। এ দিকে অন্য ২৫টি ক্যাডারের জোট ও কমিশনের সুপারিশে খুশি নয়। এদের সংগঠন আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ দাবি করছে, শতভাগ পদোন্নতিই লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে উপযুক্ততা যাচাই করে নিয়োগ করা হোক। এতে প্রশাসনের প্রাধান্যশীল প্রশাসন ক্যাডার ক্ষুব্ধ হয়েছে। তারা বরং উল্টো প্রস্তাব করেছে যে, শতভাগই প্রশাসনিক ক্যাডার থেকে পদোন্নতি প্রাপ্য। দৃশ্যত পদ-পদোন্নতিসহ চাকরিসংক্রান্ত নানা দাবিতে এখন পরস্পরবিরোধী অবস্থান নিয়েছেন বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসভুক্ত ক্যাডার কর্মকর্তারা। এসব দ্বন্দ্বের মাধ্যমে প্রশাসনিক দুর্বলতা, স্থবিরতা ও অস্থিরতার প্রকাশ ঘটছে। দ্বান্দ্বিক এ অবস্থায় সচিবালয়ের কার্যক্রমে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। প্রশাসন ক্যাডারের একাধিপত্যের প্রতিবাদে ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে এক ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন। তারা মানববন্ধন ও সমাবেশের ঘোষণাও দিয়েছেন। ২৫ ক্যাডারের মধ্যে কর্মকর্তার সংখ্যার দিক থেকে বড় ক্যাডার শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্যাডার। এর মধ্যে শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা প্রায় ১৬ হাজার। অন্য দিকে স্বাস্থ্য ক্যাডারের কর্মকর্তা সংখ্যা ৩০ হাজার। প্রশাসনিক সংস্কার কমিশন এই দুই ক্যাডারকে ক্যাডার সার্ভিসের বাইরে রাখার সুপারিশ করেছে। অথচ তারা দীর্ঘকাল ধরে ক্যাডার সার্ভিসের অন্তর্র্ভুক্ত হয়ে আছে। এর ফলে শিক্ষা ক্যাডারের মানগত উন্নতি হয়েছে। প্রশাসনিক দক্ষতা বেড়েছে। সীমিত আকারে হলেও এই দুই ক্যাডারের সদস্যরা উপসচিব ও পরবর্তী পদে পদোন্নতি পেয়ে আসছেন। এ দিকে স্বাস্থ্য ক্যাডার কর্মকর্তাদের সংগঠন বিসিএস হেলথ ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন দুটো দাবি জানিয়েছে। তাদের প্রথম দাবি হলো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সব পর্যায়ের নীতিনির্ধারণী পদে স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের পদায়ন করতে হবে। তাদের দ্বিতীয় দাবি হলো উপসচিব পুলে উন্মুক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ দিতে হবে। অন্য দিকে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার সমিতি অবিলম্বে সংস্কার কমিশনের সুপারিশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে। ২৯ ডিসেম্বরের মধ্যে তাদের দাবি মেনে নেয়া না হলে পরবর্তীকালে তারা আন্দোলনে যাবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তারা উপস্থাপিত সুপারিশকে আত্মঘাতীমূলক বলে বর্ণনা করেছেন। সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের নেতৃত্ব দাবি করে যে, তাদের ১৬ হাজার সদস্যের মধ্যে ইতোমধ্যেই অনিশ্চয়তা, উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। তারাও উপসচিব পদ উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে পূরণের আহ্বান জানান। সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার তাদের ক্যাডারের মানোন্নয়নের জন্য কতিপয় প্রস্তাব পেশ করে।
প্রশাসন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্যাডারের এই দ্বিবিধ বিরোধ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য বিব্রতকর অবস্থার সৃষ্টি করেছে। এমনিতেই নানা সুযোগ-সুবিধা নিয়ে আগে থেকেই সরকারি চাকরিতে বিভিন্ন ক্যাডার কর্মকর্তাদের মধ্যে মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ¦ ছিল। এখন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের কিছু প্রস্তাবনা নিয়ে দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে। দৃশ্যত পুরো প্রশাসন দু’ভাগে ভাগ হয়েছে। একপক্ষে আছে বিসিএস প্রশাসন, বিপরীতে আছে ২৫ ক্যাডারের বিবিধ কর্মকর্তা।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রশাসনসহ সর্বস্তরে সংস্কারের উদ্যোগ হিসেবে প্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠন করে। তাদের প্রদত্ত সুপারিশগুলো এখনো চূড়ান্ত নয়। তারা তাদের প্রস্তাবনার কিছু অংশ প্রকাশ করেছে মাত্র। এই খণ্ডকালীন চিত্র পাওয়ার পর যেভাবে প্রশাসনিক ক্যাডার ও অন্যান্য ক্যাডার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে, তা বিব্রতকর। তারা ভালো করেই জানে, তাদের চূড়ান্ত সুপারিশের ভিত্তিতেই অবশেষে সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়িত হবে। যেখানে শুধু আলোচনা-সমালোচনা ও প্রস্তাবনার মাধ্যমে বিষয়টির মীমাংসা সম্ভব, সেখানে তাদের প্রদর্শিত এই অস্থিরতা অগ্রহণযোগ্য। তা ছাড়া কমিশনপ্রধান ও এর সদস্যদের পদত্যাগ বা অপসারণ দাবি করে তারা শোভন কাজ করেনি। কমিশনে অন্তর্র্ভুক্ত সবাই সিভিল সার্ভিসের জ্যেষ্ঠতম ব্যক্তি। বিসিএস প্রশাসন যেভাবে উপসচিব পদে শতভাগ পদোন্নতি দাবি করেছে, তা সামাজিকভাবেও গ্রহণযোগ্য নয়। এই ক্যাডারের কর্মকর্তা রয়েছেন ছয় সহস্রাধিক। তারা এখন দাবি করছেন, সূচনা পদ থেকে শুরু করে সচিব পর্যন্ত পদের সমন্বয়ে ‘বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস’ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। অন্য ক্যাডাররা বলছে, কোটামুক্ত হোক উপসচিব পদ। সব ক্যাডারের কর্মকর্তা পরীক্ষা দিয়ে এই পদে পদোন্নতি পাবে। এর পাশাপাশি প্রতিটি মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট ক্যাডারের সদস্যদের দিয়ে পরিচালনা করতে হবে।
ক্যাডারগুলোর দ্বন্দ্ব-বিদ্বেষ মূলত ক্ষমতাকেন্দ্রিক। গোটা বাংলাদেশের সরকারব্যবস্থা কারা পরিচালনা করবেন, সেটিই মূল দ্বন্দ্ব। উন্নত দেশগুলোতে রাষ্ট্রীয় কাজে প্রযুক্তির প্রাধান্য লক্ষ করা যায়। সেখানে প্রশাসনিক ক্ষমতা সমন্বয়ের মধ্যেই সীমিত। সেসব দেশে ওসির দাপট, ডিসির চোটপাট নেই। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অনুন্নয়নের কারণে প্রশাসনকে ‘সব কাজের কাজী’ হতে হয়। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে দ্রুত সমাজ পরিবর্তন ঘটছে। ক্রমেই কর্তৃত্বের বিভাজন ও বিকেন্দ্রীকরণ ঘটছে। আগে যেখানে শুধুই প্রশাসন ও পুলিশের বিনোদন ছিল, এখন আর তা নেই। সরকারি কর্মকমিশন-পিএসসি তিন ধাপের নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে বিবিধ ক্যাডার কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেয়। চাকরিপ্রার্থীদের পাঠ্যক্রম ও পছন্দের ভিত্তিতে ক্যাডার বিভাজন হয়। এসব বিভাজিত ক্যাডার হলো প্রশাসন, পুলিশ, পররাষ্ট্র, কর, কৃষি, আনসার, নিরীক্ষা ও হিসাব, সমবায়, শুল্ক ও আবগারি, পরিবার পরিকল্পনা, মৎস্য, খাদ্য, বন, সাধারণ শিক্ষা, কারিগরি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, তথ্য, পশুসম্পদ, ডাক, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল, গণপূর্ত, রেলওয়ে প্রকৌশল, রেলওয়ে পরিবহন ও বাণিজ্যিক, সড়ক ও জনপথ, পরিসংখ্যান ও বাণিজ্য ক্যাডার। এসব বিভাজনের ফলে প্রশাসন সম্পদ সম্প্রসারিত হচ্ছে সর্বাত্মক। যেখানে নীতিগতভাবে সবারই প্রগতির পথে সহযোগিতার কথা, সেখানে এখন দেখা যাচ্ছে পদোন্নতি ও সুযোগ-সুবিধার ভিন্নতা নিয়ে বিরোধ। সবাই যদি দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও দলপ্রীতি অতিক্রম করে কেবল জ্ঞানের প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ক্ষমতা নির্ধারণ করে, তাহলেই পরে সমস্যার নীতিগত সমাধান হয়ে যায়।
সমাজে দ্বন্দ্ব-বিরোধ অস্বাভাবিক নয়। অস্বাভাবিক হচ্ছে স্থান, কাল, পাত্রভেদের পার্থক্য। বাংলাদেশ জাতিরাষ্ট্র এখন একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। গণবিপ্লবের পর একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশ শাসন করছে। এ সময়ে প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দুতে দ্বন্দ্ব-বিরোধ প্রশাসনিক ক্ষমতাকে হ্রাস করবে। অস্বীকার করার উপায় নেই, দীর্ঘ ১৫ বছর সাধারণ জনগণের মতো প্রশাসনের ভালো মানুষগুলো নিগৃহীত হয়েছেন। এখন সময় এসেছে পেশাদারিত্ব নিশ্চিত করার। ক্ষমতায়ন, সম্পদের বণ্টন ও কর্তৃত্বের প্রয়োগ সর্বত্রই এই পেশাদারিত্ব সব কিছুর মানদণ্ড হয়ে উঠবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
লেখক : অধ্যাপক (অব:), সরকার ও রাজনীতি বিভাগ,
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
[email protected]
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা