২৩ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১, ১৯ রবিউস সানি ১৪৪৬
`
অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার

সমৃদ্ধিতে প্রতিষ্ঠানের প্রভাব

-

দেশের সমৃদ্ধিতে উপনিবেশীয় দেশের প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা নিয়ে গবেষণা করে অর্থনীতিতে ২০২৪ সালের নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির তুর্কি বংশোদ্ভূত অধ্যাপক ড্যারন অ্যাসেমোগলু, একই প্রতিষ্ঠানের ইংল্যান্ডের সাইমন জনসন এবং ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো, ইলিনয়ের অধ্যাপক আমেরিকার জেমস এ রবিনসন। তিনজনই অভিবাসী এবং আমেরিকার নাগরিক। মূলত সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলো কিভাবে তৈরি হয় এবং সামগ্রিক সমৃদ্ধিকে কিভাবে প্রভাবিত করে, সে বিষয়ে দীর্ঘ গবেষণা করেছেন তারা।

অর্থনীতিবিষয়ক নোবেল কমিটির চেয়ারম্যান জ্যাকব সভেনসন বলেছেন, ‘দুই দেশের মধ্যে আয়ের পার্থক্য কমানো এ সময়ের একটি বড় চ্যালেঞ্জ।’ এই তিন অর্থনীতিবিদ দেখিয়েছেন, সেই অসাম্য দূর করতে সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বড় ভূমিকা রয়েছে।

অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির ক্ষেত্রে কোনো দেশ এগিয়ে থাকে এবং কোনো দেশ কেন পিছিয়ে থাকে, সে বিষয়ে নতুন অন্তর্দৃষ্টি দিয়েছেন এবারের নোবেলবিজয়ী অর্থনীতিবিদরা। সমাজে সম্পদের বণ্টন কিভাবে হচ্ছে এবং সমাজে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা কার হাতে রয়েছে সেটিই সমৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। কখনো জনগণ একজোট হয়ে শাসকের বিরুদ্ধে লড়াই করে ক্ষমতা ছিনিয়ে নেয়; অর্থাৎ সঙ্ঘবদ্ধ সমাজের ক্ষমতা কখনো একচেটিয়া সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতার চেয়েও শক্তিশালী। এ পরিস্থিতি এড়াতে শাসক নানা স্বল্পমেয়াদি অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দেয়, ফলে দীর্ঘমেয়াদি পরিবর্তন হয় না। এই ব্যবধানের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতার ব্যবধান। ইউরোপীয় উপনিবেশবাদীরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যে রাজনৈতিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে, সেগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এই তিন অর্থনীতিবিদ প্রতিষ্ঠানের সাথে সমৃদ্ধির সম্পর্ক দেখিয়েছেন। একই সাথে তারা তাত্ত্বিক কাঠামো তৈরি করেছেন, যার বদৌলতে প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতার মধ্যকার ব্যবধান ও কিভাবে এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে বদলে দেয়া যায়, তার ব্যাখ্যা করা সম্ভব।

ইউরোপীয় উপনিবেশ ও তার প্রভাব
ইউরোপের নতুন যুগে প্রবেশের ক্ষেত্রে দু’টি বিশ্বযুদ্ধের স্মৃতি এখনো অম্লান। তারা তখন তাদের দেশে শান্তি এবং সমৃদ্ধি অব্যাহত থাকার সম্ভাবনার কথা বলেছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের দেশগুলো তাদের অর্থনীতি পুনর্গঠনের উপায় খুঁজে বের করতে বাধ্য হয়েছিল। সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড ও স্পেন যারা যুদ্ধের সময় নিরপেক্ষ ছিল, তারা একটু ভালো অবস্থায় ছিল। কিন্তু যেসব দেশ সামরিক কার্যক্রমের অগ্রভাগে ছিল তাদের জন্য পরিস্থিতি খুব খারাপ ছিল। ব্রিটেনের শিল্পগুলো প্রায় একচেটিয়াভাবে ছিল যুদ্ধ প্রচেষ্টার জন্য নিবেদিত এবং এর সাথে তার সাবেক উপনিবেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রভাবের ক্ষতির সাথে একটি দ্রুত পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা অসম্ভব মনে হয়েছিল। ইউরোপজুড়ে প্রত্যাশা ছিল স্বাভাবিকতা এবং অর্থনৈতিক শক্তিতে ফিরে আসার। তবে অল্প সময়ের ব্যবধানে এটি স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে কেবল আমেরিকান সাহায্যেই তাদের শান্তি ও সমৃদ্ধি অর্জিত হতে পারে। ইউরোপের ওই সময়ের পরবর্তী তিন বা চার বছরের জন্য বিদেশী খাদ্য ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় পণ্যের প্রয়োজনীয়তা তারা মিটিয়েছে আমেরিকা থেকে। যে সাহায্যের পরিমাণ ছিল তখন তাদের পরিশোধের ক্ষমতার তুলনায় অনেক বেশি। এত বেশি পরিমাণ অতিরিক্ত সহায়তা নিতে হয়েছিল যে, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক অবনতি খুব গুরুতর অবস্থায় পতিত হয়েছিল।

হয়তো এই গুরুতর অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবেলার জন্য দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মিত্রশক্তি হিসেবে পরিচিত পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলো যেমন- ব্রিটেন, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ড, ইতালি, স্পেন, পর্তুগালসহ কিছু দেশ বিশ্বের ক্ষমতায় দুর্বল অথচ প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর দেশগুলো দখল করে উপনিবেশ গড়ে তোলে। ইউরোপের এই দখলদার দেশগুলো অনেক দেশের সম্পদ লুট করে অনেক ধনী দেশকে দরিদ্র করে ফেলে। তবে কিছু উপনিবেশবাদী দেশ দখলকৃত দেশকে শোষণের পাশাপাশি উন্নয়ন কাজও করে। উল্লেখ্য, তখন পাক-ভারত উপমহাদেশেও ব্রিটিশরা উপনিবেশ গড়েছিল। তবে তা ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অনেক আগে এবং ১৯৪৭ সালে উপনিবেশ মুক্ত হয়।

উল্লেখ্য, ইউরোপীয়রা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলে উপনিবেশ স্থাপন করলে এসব দেশের সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলো বদলে যায়। নোবেলবিজয়ী অর্থনীতিবিদ ইউরোপীয়রা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উপনিবেশ স্থাপন করতে গিয়ে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর যে রাজনৈতিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে, সেগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সে দেশের প্রতিষ্ঠানের সাথে সমৃদ্ধির সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছেন। একই সাথে তারা প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতার তফাত নিরসন এবং এসব প্রতিষ্ঠানকে বদলে দেয়ার উপায়ও হাজির করেছেন। কখনো কখনো এসব পরিবর্তন নাটকীয়ভাবে হয়েছে। তবে তারা বলেছেন, সবখানে যে এই পরিবর্তন একইভাবে হয়েছে, তা নয়। কোনো অঞ্চলে উপনিবেশবাদীদের লক্ষ্য ছিল স্থানীয় জনগণকে শোষণ করে নিজেদের সুখ সমৃদ্ধি বৃদ্ধি করা। তবে অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, উপনিবেশবাদীরা অনেক দেশে ইউরোপীয় অভিবাসীদের দীর্ঘমেয়াদি কল্যাণের লক্ষ্যে অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে। এই যে উপনিবেশবাদীরা উপনিবেশগুলোতে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলল, তার মধ্য দিয়ে এসব দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির গতিপথ নির্ধারিত হয়েছে।

নোবেল পুরস্কার কমিটি বিশদে ব্যাখ্যা দিয়ে জানিয়েছে, যখন ইউরোপীয়রা বিশ্বের নানা দেশে নিজেদের উপনিবেশ বিস্তার করা শুরু করেছিল, তখন সেসব সমাজের প্রতিষ্ঠানগুলোতেও বদল আসে। সুবিধার জন্য সেসব দেশে নয়া রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলে ইউরোপীয়রাই। কিন্তু দেখা গেছে, যেসব উপনিবেশ সে সময় সমৃদ্ধ ছিল, সেগুলো এখন দরিদ্র; আর যেসব উপনিবেশে সে সময় দারিদ্র্য ছিল, সময়ের সাথে সাথে তারা সমৃদ্ধ হয়ে উঠেছে। তাদের গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে, শোষণকারী থাকলে সেই দেশের উন্নতি হয় না। যে সমাজে আইনের শাসন দুর্বল এবং যে সমাজে এমন প্রতিষ্ঠান আছে, যা জনগণকে শোষণ করে, সেসব সমাজ সমৃদ্ধশালী হয়ে উঠতে পারে না বা উন্নতির জন্য নিজেকে পরিবর্তন করতে পারবে না। তাদের গবেষণার মাধ্যমে আরো বোঝা যাবে যেকোনো দেশ কেন সাফল্য লাভ করেছে এবং কোনো দেশ কোনো ব্যর্থ হয়েছে।

নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদদের মতে, উপনিবেশ স্থাপনের সময় যেসব দেশ গরিব ছিল, সেখানে মূলত অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে। সময়ের পরিক্রমায় এসব দেশের মানুষের জীবনে সমৃদ্ধি এসেছে- সাধারণভাবে বিষয়টি এভাবেই ঘটেছে। যেসব দেশে শোষণমূলক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে, সেই দেশগুলোর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি তেমন একটি হয়নি এবং তারা সেই ফাঁদে আটকা পড়েছে। বিষয়টি হলো অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলে সেই সমাজের সবাই দীর্ঘমেয়াদি সুফল পায় কিন্তু শোষণমূলক ব্যবস্থা বা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলে অল্প কিছু মানুষ স্বল্প মেয়াদে লাভবান হয়। রাজনৈতিক ব্যবস্থা যদি এমন হয় যে হাতেগোনা কয়েকজন মানুষের হাতে সব কিছুর নিয়ন্ত্রণ থাকে তাহলে কেউই তাদের প্রতিশ্রুত ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক সংস্কারে আস্থা পায় না।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের নোবেল বিজয়ী তিন অর্থনীতিবিদের মধ্যে ড্যারন আসেমোগলু ও জেমস রবিনসন ‘হোয়াই নেশন্স ফেইল : দ্য অরিজিন্স অব পাওয়ার, প্রসপারিটি অ্যান্ড পোভার্টি’ শীর্ষক বিশ্বখ্যাত গ্রন্থের লেখক। অ্যাসেমোগলুর মতে, সমৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হলো, অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর সক্ষমতা বা এর অভাব। তার মতে, যখন কোনো রাষ্ট্রের প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলো অন্তর্ভুক্তিমূলক হয় এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নাগরিক সংশ্লিষ্টতা থাকে, তখন কোনো সমাজ বা রাষ্ট্র দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়নের ধারায় পা দিতে পারে।

লেখকদ্বয়ের মতে, একমাত্র মেধাভিত্তিক অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতিষ্ঠানগুলোই রাজনীতিবিদ বা আমলাদের দ্বারা রাষ্ট্রীয় সম্পদের লুণ্ঠন ঠেকাতে পারে। এতে দীর্ঘমেয়াদে হলেও অর্থনীতিতে এক ধরনের সমতা তৈরি হয় কিংবা মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন হয়। তারা দেখিয়েছেন, আফ্রিকার অনেক দেশে এখন আর সাদাদের রাজত্ব না থাকলেও অল্প কিছু ক্ষমতাশীল ব্যক্তি রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করে সম্পদ লুটে নিচ্ছে, যারা কেউই সাদা নন। এই বাস্তবতায় প্রতিষ্ঠানের কার্যকারিতায় তাদের এই গুরুত্বারোপ।

অর্থনীতিবিদ অ্যাসেমোগলু বলেন, ‘বৃহদাকারে বলতে গেলে আমরা যে কাজ করেছি, তা গণতন্ত্রের পক্ষে।’ তবে তিনি এ-ও বলেছেন, ‘গণতন্ত্র কোনো প্রতিষেধক নয়। গণতন্ত্র চালু করা খুব কঠিন কাজ। আপনি যখন নির্বাচন শুরু করেন, সেটি সঙ্ঘাতের সৃষ্টি করে।’ সেই সাথে তারা যে গবেষণা করেছেন, সেটির সাথে চীনের মতো দেশের আর্থিক উন্নতির বিষয়টি কিভাবে ব্যাখ্যা করা যায়, সেই প্রশ্নের জবাবে অর্থনীতিবিদ জানিয়েছেন, এরকম একনায়কতন্ত্রের দেশগুলো কঠিন সময়ের মুখে পড়বে। অ্যাসেমোগলু বলেন, সমৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হলে, অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর সক্ষমতা বা অক্ষমতা। তার মতে, কোনো রাষ্ট্রের প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলো অন্তর্ভুক্তিমূলক হলে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নাগরিকদের শরিক হওয়ার সুযোগ থাকলে, সে সমাজ বা রাষ্ট্র দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়নের ধারা সূচনা করতে পারে। কেবল মেধাভিত্তিক অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতিষ্ঠানই হতে পারে রাজনীতিক বা আমলাদের হাতে রাষ্ট্রীয় সম্পদের লুণ্ঠন ঠেকানোর রক্ষাকবজ।

এককথায়, এবারের পুরস্কারবিজয়ীরা মূলত ধনী-গরিব বৈষম্যের নিদান ও দাওয়াই আবিষ্কার করেছেন। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির ক্ষেত্রে কোনো দেশ এগিয়ে থাকে, আবার কোনো দেশ পিছিয়ে থাকে। বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ২০ শতাংশ দেশ এখন সবচেয়ে দরিদ্র ২০ শতাংশের চেয়ে প্রায় ৩০ গুণ বেশি ধনী। যদিও গরিব দেশগুলো আরো ধনী হয়েছে, তবু তারা সবচেয়ে ধনী দেশগুলোর সাথে তাল মেলাতে পারে না। একটি বিচ্ছিরি ব্যবধান নাছোড়বান্দার মতো লেগেই থাকে। এই বৈষম্যের নিদান খুঁজতে গিয়ে নতুন অন্তর্দৃষ্টি দিয়েছেন এবারের নোবেলবিজয়ী তিন অর্থনীতিবিদ। নতুন ও বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ খুঁজে পেয়েছেন যা হলো সমাজিক প্রতিষ্ঠানের হেরফের।

উপসংহারে বলা যায়, অর্থনীতির নোবেল কমিটির চেয়ারম্যান জ্যাকব সভেনসনের মতে, বিভিন্ন দেশে কিছু মানুষ খুব ধনী আর কিছু মানুষ খুব গরিব। এই ফারাক কমানো সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। নোবেলবিজয়ীদের দেখানো পথে সমাজের কাঠামো ঠিক করলেই এ সমস্যার সমাধান হবে। তাদের মতে, যে সমাজে দুর্বল আইনের শাসন রয়েছে এবং যেখানে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শোষণের ঘটনা ঘটে সেখানে প্রবৃদ্ধি হয় না, কিংবা সেই সমাজ উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যেতে পারে না। এ ছাড়াও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলে সেই সমাজের সবাই দীর্ঘমেয়াদি সুফল পায়; তবে শোষণমূলক ব্যবস্থা বা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলে কেবল হাতেগোনা কিছু ক্ষমতাধর মানুষ স্বল্প মেয়াদে লাভবান হয়। রাজনৈতিক ব্যবস্থায় সব কিছুর নিয়ন্ত্রণ গুটিকতক মানুষের হাতে থাকলে কেউই তাদের প্রতিশ্রুত ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক সংস্কারে ভরসা পায় না।

লেখক : অর্থনীতিবিদ, গবেষক ও কলামিস্ট
ই-মেল : mizan12bd@yahoo.com


আরো সংবাদ



premium cement