২০ অক্টোবর ২০২৪, ৪ কার্তিক ১৪৩০, ১৬ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

জনস্বার্থ যেভাবে ধুলায় লুটিয়েছে পতিত সরকার

লেখক সালাহউদ্দিন বাবর - ছবি : নয়া দিগন্ত

৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ‚তপূর্ব ও ঐতিহাসিক বিপ্লবের পর গণমানুষের আশা-আকাক্সক্ষা বহু গুণে বিস্তৃত হয়েছে। এটা যেমন সত্য, ঠিক ততটাই বাস্তব গত প্রায় ষোলোটি বছর এই মানুষগুলোই তাদের অপ্রাপ্তির দহন-যন্ত্রণা বুকের পাঁজরে আটকে রেখেছিল। স্বপ্ন দেখা ভুলে গিয়ে তারা কেবল দুঃস্বপ্নই দেখত। মাত্র দু’মাসের ব্যবধানে আমরা দুঃস্বপ্ন থেকে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছি। বুকের পাঁজরে আবদ্ধ যত কথা ছিল, বলতে শুরু করেছি। এটাকে কেউ খুব বড় করে দেখতে না চাইলে কিছু বলার নেই।

আজকের এই উন্মুক্ত পরিবেশ রচনার জন্য কতশত প্রাণ বুকে গুলি পেতে নিয়েছে, কত হাজারো প্রাণ অধিকারের সংগ্রামে আহত হয়ে দুঃসহ যন্ত্রণা সইছে। অবশ্যই তাদের এতবড় ত্যাগ, নিছক নিজেদের জন্য ছিল না, দেশের ১৮ কোটি প্রাণের স্বপ্নসাধ পূরণের জন্য উৎসর্গীকৃত ছিল। এর স্বীকৃতি কোনো পোস্টারে বা ব্যানারে নয়, প্রতিটি মনে গেঁথে রাখতে হবে। যেমন : ‘পাথরে লিখো নাম, সে নাম ক্ষয়ে যাবে, হৃদয়ে লিখো নাম, সে নাম রয়ে যাবে।’

যাই হোক, আজ এই মুহূর্তে মানুষ যে স্বপ্নের যত জাল বুনছে তাকে যদি একত্র করা হয়, তাহলে যে সাধারণ ধারণাটা তৈরি হতে পারে এক কথায় তা হলো, একটি জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র নির্মাণ এখন সবার চাহিদা। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার আগে, এ ভূখণ্ডে রাষ্ট্রের প্রকৃত স্বরূপটি কেমন ছিল? হয়তো এ কথাই বলা হবে স্বৈরতান্ত্রিক এক ব্যবস্থা। আর স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে আমাদের জন্য যে রাষ্ট্রচিন্তা সংবিধানে সংযুক্ত হলো সেটিকে ব্রিটেনের রাষ্ট্রচিন্তার সাথে খানিকটা সম্পর্কযুক্ত বলা হলেও সেখানে আসলে অন্য কারো রাষ্ট্রচিন্তারই অনুপ্রবেশ ঘটেছিল অতি সূক্ষ্মভাবে। ব্রিটেনের রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রথম অগ্রাধিকার হচ্ছে জনকল্যাণ। সেখানে দ্বিদলীয় ব্যবস্থা থাকলেও উভয় দলের ভেতরে গভীরভাবে প্রোথিত রাষ্ট্রচিন্তার মূলে রয়েছে জনকল্যাণ বা জনস্বার্থের চিন্তাই। পক্ষান্তরে আমাদের এখানে স্থবির হয়ে থাকা যে সংবিধান তাকে ওই একই ছাঁচের মধ্যে ঢেলে তৈরি করা হয়েছিল। গণতন্ত্রের মোড়কে স্বৈরতন্ত্র বিকাশ ও বিস্তৃতির পথ উন্মুক্ত রাখা হয়। একটি কথা স্মরণ রাখার জন্য অনুরোধ করছি। সবখানেই স্বৈরশাসকের জনবিচ্ছিন্নতা হচ্ছে তার অন্যতম বৈশিষ্ট্য। গণবিচ্ছিন্ন কোনো ব্যক্তি বা রাষ্ট্র্রকে সব সময় পরমুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হয়। তার জ্বলন্ত উদাহরণ, সদ্য পতিত সরকারের প্রতিটি মুহূর্ত তারা আমাদের সীমান্তের পাশের দেশ ভারতের মুখাপেক্ষী হয়েছিল। এমন মুখাপেক্ষিতা নিজের সক্রিয়তা-স্বাতন্ত্র্য, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পরিপন্থী।

আমরা দেখেছি, গত জানুয়ারির (২০২৪) তথাকথিত এবং আগে আরো দুইবার ওই রকম নির্বাচনে কাদের কাঁধে ভর করে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়েছিল। সেই পুতুলখেলার নির্বাচনে কারা প্রথম বগল বাজিয়ে হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছিল। সে সময় হাসিনার আঁচলে বাঁধা তথাকথিত নির্বাচন কমিশন আওয়ামী লীগ প্রার্থীর দেশের সার্বভৌমত্ববিরোধী বক্তব্যের পরও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা দূরের কথা, তার একটি কেশ পর্যন্ত স্পর্শ করতে পারেনি। আওয়ামী লীগের সে প্রার্থী গর্বভরে উচ্চারণ করেছিল, ‘আমি তো ভারতের মনোনীত প্রার্থী’। কী ভয়ঙ্কর কথা। নির্বাচন হচ্ছে বাংলাদেশে, সেখানে প্রার্থী মনোনয়ন দেয় ভারত।

যাক অন্য কথায় আসি, বর্তমান জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্রচিন্তা বহুদাবিভক্ত বা মিশ্ররূপে বিরাজ করছে। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় কল্যাণের ধারণাটা স্থিরীকৃত হয় সমাজরাষ্ট্রের সব শ্রেণী-পেশার মানুষের কল্যাণধারণাকে কেন্দ্র করে। সেখানে ব্যক্তিস্বাধীনতা, স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকার ওই রাষ্ট্রের কল্যাণচিন্তার সাথে গাঁথা। আর যেখানে রাষ্ট্রযন্ত্র স্বয়ং জনগণের কল্যাণকর বলে মনে করে, সেটিই তখন স্থিরীকৃত হয়। দুই ধারার কল্যাণচিন্তার মধ্যে বিস্তর ফারাক। পার্থক্য আরো স্থানে বিশেষ করে গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতার ক্ষেত্রে। এখন দেখা যেতে পারে, কল্যাণরাষ্ট্রের চিন্তায় বাংলাদেশের অবস্থানটা কোথায় ছিল। কেউ কেউ মনে করেন, আমাদের অবস্থানটা ছিল ‘না ঘরকা না ঘাটকা।’ অর্থাৎ আমরা কোথাও নেই। এখন যে প্রশ্নটির সুরাহা হয়নি, সেটি শুধু জটিলই নয়, স্পর্শকাতর বটে! আমাদের স্বাধীনতা-উত্তর রাজনৈতিক নেতৃত্ব গণতন্ত্রের প্রশ্নে কতটা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বা অনুরক্ত ছিলেন তা তাদের পরবর্তী কার্যক্রম থেকে কখনোই বোঝা যায়নি। সংবিধান বলে কোনো বস্তু এখানে রয়েছে বলে তারা মনে করেন না।

তবে বিপদ-আপদের মুহূর্তে সংবিধান হয়ে উঠত মহামূল্যবান সোনার পাথরবাটি। তাদের স্বার্থ চরিতার্থের জন্য সংবিধানের অপব্যাখ্যায় তাদের কোনো জুড়ি ছিল না। আজ এসবের জন্য তাদের জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসা কি আবশ্যক নয়!

বারবার বহুবার উপলব্ধি করা গেছে ’৭২ সালের পর আপামর মানুষের লালিত স্বপ্ন ছিল একটি কল্যাণ রাষ্ট্র রচনার। যার প্রতিশ্রুতিও ছিল স্বাধীনতা-পরবর্তী সরকারের।

কল্যাণমূলক রাষ্ট্র বলতে সাধারণত বিশ্বজনীন যে ধারণা কাজ করে সেটি হলো, রাষ্ট্র হবে এমন এক ব্যবস্থা, যা জনগণের সামগ্রিক কল্যাণে নিবেদিত। জাতিসঙ্ঘের এক ঘোষণা অনুসারে, ‘‘কোনো রাষ্ট্রকে তখনই কল্যাণমূলক রাষ্ট্র বলা যেতে পারে, যখন রাষ্ট্র তার ‘প্রতিটি’ নাগরিকের খাদ্য, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষার সুযোগ-সুবিধা প্রদান করে এবং বেকারত্ব অসুস্থতা, বৈধব্য অথবা অন্য কোনো কারণে জীবিকা অর্জনে অক্ষমতার ক্ষেত্রে সামাজিক নিরাপত্তার নিশ্চয়তার বিধান করে।’’ বাংলাদেশের সংবিধানের ১৫ নং অনুচ্ছেদে ঠিক অভিন্ন কথাই রয়েছে। আর ১৩ নং অনুচ্ছেদে রয়েছে এ রাষ্ট্রের মালিক হচ্ছে ১৮ কোটি মানুষ। অথচ এই ১৮ কোটি মানুষের জন্য রাষ্ট্রের পক্ষে সম্প্রতি পতিত সরকারের কোনো উদ্যোগ বা দায়িত্ব সেটিই ছিল না। অথচ গত ১৫ বছরে ওই পাঁচটি মৌলিক চাহিদা পূরণের অঙ্গীকার জাতীয় বাজেটে আদৌ ছিল না। সাধ্যমতো বিনিয়োগ হয়নি সেখানে। এর সহজ অর্থ গত ১৫ বছরে পাঁচটি মৌলিক চাহিদা পূরণের কোনো এজেন্ডা ছিল না।

তবে বাজেট বহির্ভূত হাজারো কোটি টাকা ছিল গোষ্ঠীবিশেষের জন্য। ১৮ কোটি মানুষের জন্য নয়। অথচ ওই সরকার ঋণ করে বিপুল অর্থ যেসব বিনিয়োগ করেছে সেগুলো ছিল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ওই সব অর্থের দশ আনাই আত্মসাৎ ও গোষ্ঠীবিশেষের অর্থপাচারের নিমিত্ত মাত্র। আজ যারা দেশ থেকে পালিয়েছে তারা সবাই দেশের বাইরে বসে রাজার হালে জীবন কাটাবে। সেখানে কি তাদের চৌদ্দপুরুষের কোনো জমিদারি ছিল।
রাষ্ট্রীয় অর্থের এমন লুটপাট, পাচার আত্মসাতের ফল এখন ভোগ করছে গোটা জাতি। রাষ্ট্রীয় কোষাগার শূন্য হয়ে যাওয়ার কারণে নতুন সরকার অতিপ্রয়োজনীয় কোনো স্থানেও অর্থ ব্যয় করতে পারছে না। সরকারের বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে অনেক দক্ষ যোগ্য লোকদের বসিয়েও কোনো কিনারা করতে পারছে না। কারণ তাদের হাতে আলাদিনের চেরাগ নেই। আর্থিক ক্ষেত্রে স্থিতি আনতে কিছু সময় তো লাগবেই। এখানে পরিস্থিতি উপলব্ধি করে কিছু সময় সবার ধৈর্য ধরতে হবে। আমাদের নির্ভরতা এখনো শুধু মাত্র দুটো খাতে। রেমিট্যান্স ও পোশাক রফতানি।

মাত্র এই দুই খাতের ওপর নির্ভরশীলতা দেশের জন্য যথেষ্ট নয়। বাণিজ্য বহুমুখীকরণ করতে পারলে রফতানি আয় বাড়বে, সাথে কর্মসংস্থানের পরিধি বিস্তৃত হবে। এমন গোলকধাঁধা থেকে বের হতে না পারলে আমাদের অর্থনীতির ভিত্তিটা কখনোই মজবুত হবে না। আর এ বিষয় বিগত দিনে কখনো ভাবা হয়নি। এখন বিপুল অদক্ষ জনশক্তি বিদেশে পাঠিয়ে যে রেমিট্যান্স দেশে আসছে, তার চার ভাগের এক ভাগ দক্ষ জনশক্তি পাঠালে তার চেয়ে বহুগুণ বেশি রেমিট্যান্স দেশে আসবে। দেশের ভাবমর্যাদায় ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। আমাদের শ্রমঘন খাত হচ্ছে পোশাক খাত। কিন্তু এখানে কাপড় সেলাই করা আমার আয়কে পুরিপুষ্ট করতে পারবে না। এখানে আরো নিজস্ব কিছু ইমপুট দেয়া সম্ভব হলে পোশাকশিল্প থেকে আয় বৃদ্ধি পাবে। সে দিকে অতীতে নজর দেয়া হয়নি। এখন সময় এসেছে। তাই সবকিছু রিকাস্ট করতে হবে। আমরা মনে করি বর্তমান সরকারের এসব এজেন্ডা তাদের মস্তিষ্কে রয়েছে। আমরা কখনো পুরনো বলে কখনো কাউকে উপেক্ষা করতে চাই না। ওল্ড ইজ গোল্ড; কিন্তু তরুণরা হলো ডায়মন্ড। উভয়ের একটি হ্যাপি কমবিনেশন সর্বোত্তম।

জাস্টিস ডিলেড জাস্টিজ ডিনাইড। এটা নতুন কোনো কথা নয়। তবে এখানে ছোট্ট একটি কথা আছে। আমাদের কল্যাণরাষ্ট্রের চিন্তু যদি ডিলেড হয় তবে অনেকের জন্যই সেটি কিন্তু ডিনাইড রূপ পরিগ্রহ করতে পারে। স্বার্থান্বেষী মহল তাকে ডিলেড করতে কসুর করবে না। অথচ তারাই কিন্তু গত পনেরো বছর সবকিছু ডিনাই করে এসেছে। সে কথা ভুলিয়ে দিয়ে মানুষের প্রেমে বিগলিত হয়ে তাদের ডিলেড করতে ক্ষণকাল দেরি করবে না। তাই যা কিছু হোক, দৃশ্যমান কিছু কাজকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। চক্ষুসুখ অনেক ক্ষেত্রেই চিত্তের সুখকে অতিক্রম করে যায়। তা স্থায়ী হোক বা না হোক। অনেকটা নগদ যা পাও হাত পেতে নাও। এ প্রসঙ্গে একটি কথা সবাই অবগত আছি- এ দেশ ষড়ঋতুর দেশ। এই ছয় ঋতুতে অন্তত ১২ ধরনের রোগবালাই প্রতি বছর আমাদের ঢুঁ মেরে যায়। লাখ লাখ মানুষ তাতে আক্রান্ত হয়। চিকিৎসা নিতে না পারলে মানুষের কষ্টের সীমা থাকে না।

পতিত সরকার সবার কর্ম বিনষ্ট করেছে এই বয়ান দিয়ে যে, অচিরেই বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হচ্ছে। হাজারো অসত্য বয়ানের মতোই এটাও ছিল অসত্য। আমাদের দারিদ্রসীমার নিচে যত মানুষ আছেন তাদের ন্যূনতম চিকিৎসাব্যবস্থাটা নিশ্চিত করা জরুরি। এটি একজন নাগরিকের মৌলিক অধিকার। এখন মানুষ ভয়ানকভাবে আক্রান্ত হচ্ছে ডেঙ্গুতে। ডেঙ্গুর চিকিৎসা কি ব্যয়বহুল? এটা বিবেচনায় নিয়ে ভাবতে হবে স্বল্প খরচে বিকল্প কার্যকর কোনো চিকিৎসাব্যবস্থার কথা। গোটা দুনিয়া এখন দেশজ চিকিৎসার দিকে নজর দিয়েছে। আমরা সে দুয়ার বন্ধ করে আছি। যদিও হোমিওপ্যাথি ও ইউনানিকে সে অর্থে দেশী চিকিৎসাব্যবস্থা বলা যায় না, উভয় চিকিৎসাশাস্ত্র দুটো বিশ্বের বহু দেশেই প্রচলিত এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। তথাপি এই দুই চিকিৎসাব্যবস্থা এ দেশে সরকারি কোনো সহায়তা পায় না। হোমিওপ্যাথির মাধ্যমে চিকিৎসা নেয়া অনেক সাশ্রয়ী। ঢাকার একটি হোমিও ল্যাবরোটরি ভার্টেক্স ডেঙ্গুর কার্যকর একটি ওষুধ ‘ফেরাম ফসফরিকাম’ সরকারি অনুমোদন নিয়ে বাজারজাত করেছে। খুবই সাশ্রয়। বাংলাদেশ হামদর্দও ‘কোভিডের’ একটি ওষুধও বাজারজাত করেছিল। সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিষয়গুলো দেখা উচিত জনস্বার্থ ও জনস্বাস্থ্যের বিবেচনায়। আমরা তো ভুলে যাইনি কোভিডের ভয়াবহ দিনগুলোর কথা। সে সময় গণস্বাস্থ্যের পক্ষ থেকে কোভিড ‘কিট’ আবিষ্কার করেছিল; কিন্তু তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার সেই আবিষ্কার নিয়ে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেছে। অবশ্য তার কারণও ছিল। শোনা গেছে, কোভিডের টিকা কেনা নিয়ে বিরাট বাণিজ্যস্বার্থ ছিল। ওই স্বার্থ বিঘিœত হবে বিধায় আর সব কিছু উপেক্ষিত হয়।

কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্যসমূহ হচ্ছে, কল্যাণমূলক কাজ : জনসাধারণের জন্য বিভিন্ন ধরনের কল্যাণমূলক কাজ করা কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের প্রথম ও প্রধান কাজ। তাই যে রাষ্ট্র এ ধরনের কাজ বেশি করবে, সে রাষ্ট্র তত বেশি কল্যাণমূলক যেমন- শিক্ষাব্যবস্থাকে গণমুখী করা, শিক্ষা ব্যয় হ্রাস করা, দরিদ্র জনগণের কাছে শিক্ষা সহজলভ্য করা, শিক্ষাব্যবস্থাকে জীবনের উপযোগী করা। কিছু বিষয়ে সরকারকে প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে হয়। যেমন ব্যক্তির কল্যাণার্থে রাষ্ট্র জনগণের সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও অন্যান্য ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষভাবে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা। এটি প্রণিধানযোগ্য যে, এসব ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণের একমাত্র মানদণ্ড হলো জনগণের কল্যাণ। কল্যাণরাষ্ট্র সবসময় অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করে থাকে। জনকল্যাণের স্বার্থে রাষ্ট্র অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করে। জীবনের প্রয়োজন মেটানোর জন্য দরিদ্র ও দুস্থদের জন্য মৌলিক চাহিদা পূরণের ব্যবস্থা করে। একই উদ্দেশ্যে রাষ্ট্র বেকারদের জন্য বেকারভাতা, কর্মহীনদের কর্মসংস্থান না হওয়া পর্যন্ত সাহায্য দান, দরিদ্রদের জন্য স্বাস্থ্যবীমা, প্রবীণ ও বৃদ্ধ নাগরিকদের সংস্থান, দুর্ঘটনাকবলিতদের জন্য ভাতা, গৃহহীনদের জন্য সর্বনিম্নমানের বাসস্থানের ব্যবস্থা করে এই লক্ষ্যে অর্থ আদায়ের জন্য সমাজের বিত্তবানদের ওপর করারোপ, শিল্প-বাণিজ্যের ওপর নিয়ন্ত্রণ এবং ক্ষুদ্র শিল্পমালিকদের স্বার্থ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করে।

কল্যাণরাষ্ট্রের আরো অনেক দায়দায়িত্ব থাকে। তার জন্য বিস্তৃত আলোচনার অবকাশ রয়েছে। আর শেষ কথা হচ্ছে, আওয়ামী লীগ কোনো ক্ষেত্রে জাতির কল্যাণচিন্তার সাথে সম্পৃক্ত ছিল না। এসব মনে রাখতে হবে।

ndigantababar@gmail.com


আরো সংবাদ



premium cement
‘উপজেলা নির্দেশিকা’ বই না ছাপিয়ে টাকা উত্তোলন ফুলকুঁড়ি আসরের সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব সম্পন্ন শীতলক্ষ্যা নদীর দূষণ কমাতে সবাইকে কাজ করতে হবে : পরিবেশ অধিদফতর দেশের উন্নয়নে মীর কাসেম আলীর মতো ব্যবসায়ীর খুবই প্রয়োজন বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে খায়রুল হক : কায়সার কামাল উপদেষ্টা পরিষদের আকার বৃদ্ধির দাবি অ্যাডভোকেট শাহ খসরুজ্জামানের আনুপাতিক নির্বাচন হলে দেশে ভোট নিয়ে সন্ত্রাসী কার্যক্রম হবে না : ডা. আবদুল্লাহ তাহের হাসিনা সরকারের পতন ভারত হজম করতে পারেনি : বদরুদ্দীন উমর শাসনতন্ত্র সংস্কারের অধিকার তাদেরই যারা পরিবর্তন এনেছেন : বিচারপতি আবদুল মতিন আনুপাতিক ভোটে এমপি নির্ধারণে একমত নয় জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম আজ ভাষাসৈনিক অলি আহাদের মৃত্যুবার্ষিকী

সকল