হজযাত্রার কাহিনী
- মীযানুল করীম
- ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২০:৫৪
(৪র্থ কিস্তি)
আমার এক নিকট আত্মীয় ঝিনাইদহের কোট চাঁদপুরের ম্যারিজ রেজিস্ট্রার ছিলেন। তিনিও আমার মতো সস্ত্রীক হজ করতে যান। হজ থেকে ফিরে আসার একদিন পরই আকস্মিকভাবে মৃত্যুবরণ করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। আমরা হজে থাকতেই আরেক নিকটআত্মীয় জানান যে, তিনি স্ত্রীসহ একটি হোটেলে অবস্থান করছেন আমাদের মতো। ওই নিকটআত্মীয় ফেসবুকে চমৎকার স্ট্যাটাস দেন হজের হাকিকত নিয়ে। আল্লাহ তায়ালা ওই মরহুম নিকটআত্মীয়কে বেহশত নসিব করুন। তিনি হজ করার পরপরই ইন্তেকাল করেছেন দেশে ফিরেই। মৃত্যুকালে ছেলে, মেয়ে ও স্ত্রী রেখে গেছেন। তিনি একজন আলেম ছিলেন।
আমরা হজে থাকাকালে একদিন জেদ্দায় যাই। জেদ্দা আধুনিক শহর। এখান থেকে টিভি সম্প্রচারিত হয় এবং আধুনিক সংবাদপত্র বের হয়। ম্যাপে মক্কার কাছাকাছি মনে হলেও অত কাছে না। দূরত্ব ৫০ কিলোমিটার দেখানো হলেও বাস্তবে অনেক বেশি। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের মতো মনে হলেও আসলে তা নয়। আমরা মক্কা থেকে দুপুরে গাড়িতে করে যাত্রা শুরু করে জেদ্দায় শেষ বিকেলে গিয়ে পৌঁছাই। জেদ্দা বিমানবন্দরটি গড়ে তোলা হয়েছে লোহিত সাগরের উপরে। সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদ থেকে অনেক দূরে অবস্থিত এক প্রধান বন্দরনগরী জেদ্দা, আমাদেরকে সৌদি পুলিশ সম্পর্কে যেমন বলা হয় না, ঠিক তেমনি জেদ্দার দূরত্ব সম্পর্কে বলা হয় না। যাওয়ার পথে বিমান অনেকক্ষণ ঘুরল জেদ্দায় সাগরের উপরে।
আমরা হজের সময় আরাফার ময়দান, মুজদালিফায় যাওয়ার পাশাপাশি কয়েকটি ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শন করেছি। বর্তমান সৌদি সরকারের সংস্কারের আওতায় এসব স্থান। এর কারণ ইসলামের দৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ এমন স্থানগুলোর কয়েকটি লিজ দেয়া হয়েছে। যেমন- হেরা গুহার পাহাড়সহ তালা মারা দেখলাম। প্রসিদ্ধ হেরা গুহা ও নূর গুহায় আমরা গিয়েছি। অনেক উঁচুতে অবস্থিত এ দু’টি গুহায় এখনো এ গরমে ঠাণ্ডা লাগে কুয়াশার কারণে। হেরা গুহায় বিবি খাদিজা রাসূল সা:-কে কিভাবে খাবার পৌঁছে দিতেন তা অবাক হওয়ার বিষয়। এত উঁচু পাহাড়-পথে কয়েকবার জিরাতে হয়। আর উনি ছিলেন মধ্যবয়সী মহিলা। নূর গুহায় হজরত আবু বকর রা: রাসূল সা:-এর সাথে ছিলেন হিজরতের আগে। এখানে একটি মাকড়সা জাল পেতে ছিল। এ দু’টি স্থানই ইসলামের দৃষ্টিতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
এটিও খুব উঁচু। রাসূল সা: ইসলাম প্রচারের জন্য কী পরিমাণ কষ্ট করেছেন এ দু’টি গুহা তার প্রমাণ।
এরপর আমাদের নেয়া হয় আরাফাতের ময়দানে, যেখানে আমাদের রাসূল সা: বিদায় হজের ভাষণ দিয়েছিলেন। সেই আরাফাতের ময়দানে ওঠার জন্য সিঁড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে (পাহাড় কেটে)। সেখানে মানুষ উঠতে পারছে সহজে। ওখান থেকে ফেরার পথে আমরা মিনার তাঁবুগুলো দেখতে পাই। আর এর উল্টা পাশে পাহাড়ের চূড়ায় দেখানো হয় ইসমাইল আ:-কে কোরবানি করার জন্য যেই স্থানে নেয়া হয়, সেই স্থানটি।
আরেক দিন আমাদের নেয়া হয়েছে তায়েফ নগরীতে। তায়েফ নগরীর আবহাওয়া মক্কার আবহাওয়া থেকে ভিন্ন। সেখানে আবহাওয়া বাংলাদেশের মতো নাতিশীতোষ্ণ, সেখানে আমরা আব্বাস নামে এক মসজিদে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করি। তায়েফে আব্বাস মসজিদের পাশে এক চায়ের দোকানে চা খেতে গিয়ে পরিচয় হয় এক বাঙালি ছেলের সাথে। তার সাথেই কাজ করছে কেরালার এক লোক। তারা দু’জন মিলে চা দোকানটি পরিচালনা করছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা